মনোহরা পর্ব-১০

0
1037

#মনোহরা
#পর্বঃ ১০
#লেখিকাঃনির্মলা

কথাটা শোনা মাএ কিছু সময়ের জন্য পুরো বাড়ি থ মেরে গেলো।শান তখনি বলে উঠলো
শানঃ মা আমাকে এখনই যেতে হবে
শানের মাঃ কোথায় যাবি তুই (অস্থির হয়ে)
শানঃ ইশাকে খুঁজতে
শানের বাবাঃ শান শান্ত হও কি শুনতে কি শুনেছো তুমি আমি একবার ও বাড়িতে ফোন করে দেখি
শানঃ না বাবা আমি কিছু ভূল শুনেনি ঠিক শুনছি
রুসাঃ শান please একটু চুপ কর আঙ্কেলকে আগে ইশাদের বাড়িতে কল করতে দে।
অহনাঃ হ্যাঁ ভাইয়া তুমি একটু শান্ত হও। বাবাকে কথা বলতে দেও

ওদিকে ইশার মা কান্না কাটি শুরু করে দিয়েছে। জিসানের যেনো বিশ্বাস হচ্ছে না তার বোন এমন কিছু করতে পারে। আত্নীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশীরা তাদের মধ্যে কানাকানি করতে লাগলো ইশাকে নিয়ে।ঠিক তখন ইশা, ইশার বাবা, আর নীলা বাড়িতে ডুকলো।দেখলো বাড়িটা পুরো নিরব।এক একজন এক এক জায়গায় মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। ইশার বাবা সেটা দেখে বলে উঠলো
ইশার বাবাঃ কি হলো তোমরা এভাবে বসে আসো কেনো।
ইশার বাবার আওয়াজ পেয়ে সবাই দরজার দিকে তাকাল। দেখলো ইশার বাবা তার পাশে ইশা দাড়িয়ে আছে। সবাই তো ইশাকে দেখে পুরো অবাক। ইশা তার মাকে এভাবে কান্না করতে দেখে ত তার বাবাকে বলে উঠলো ।
ইশাঃ কি হয়েছে বাবা মা এভাবে কান্না করছে কেনো আর ভাইয়া বাকি সবাই এভাবে কি দেখছে
ইশার বাবাঃ দাড়া মা আমি দেখছি

ইশার বাবা ভেতরে ডুকতে ডুকতে বলল
ইশার বাবাঃ তোমরা এভাবে বসে আছো কেনো। আর ইশার মা তুমি কান্না করছো কেনো।
ইশা আর তার বান্ধবী ও ভেতরে ঢুুকলো
ইশার মা ইশাকে ভেতরে ঢুকতে দেখে দ্রুত পায়ে ইশার কাছে গিয়ে ইশার দুই কাঁধ ধরে ঝাকিয়ে বললতে লাগলো
ইশার মাঃ কোথায় গিয়েছিলিস তুই ইশা

ইশা তার মায়েকে থেকে এমন কথা শুনে পুরো অবাক।
তখনই জিসান তার বোনের দিকে এগিয়ে এসে বলল
জিসানঃ কি হলো মায়ের কথার উওর দিছিস না কেনো।তুই জানিস তোকে না পেয়ে এখানের অবস্থা কি হয়েছে।
ইশার বাবা তখন পাশ থেকে বলে উঠলো।
ইশার বাবাঃ আমি বলছি, ইশার আর নীলা দুজনো পুকুর ঘাটে বসে ছিলো। আমি বাড়ি আসছিলাম তখন দেখলাম তাই সাথে করে নিয়ে আসছি তাতে কি হয়েছে।
কথাটা শুনা মাএ বাড়ি ভর্তি লোক সবাই তো পুরো অবাক কারন এত সময় ধরে ইশাকে সবাই না পেয়ে যে যার মতন কানা কানি করছিলো কেউ কেউ তো আবার ভেবেছিলো ইশা পালিয়েছে( পাঠকেরাও🤪)

ইশার মাঃ কি হয়েছে মানে ও বাড়ি থেকে বেড়িয়েছে কাউকে বলে নি সবাই তো চিন্তা হয় নাকি
ইশার বাবা ইশার দিকে তাকিয়ে বলল
ইশার বাবাঃ ইশা মা তুমি কাউকে বলে বেড় হও নি
ইশাঃ বলেছি তো বাবা (মাথা নিচু করে)
ইশার বাবাঃ কাকে
ইশাঃ ভাইয়াকে (জিসানের দিকে তাকিয়ে)
কথাটা শোনা মাএ সবাই জিসানের দিকে তাকালো।জিসান সেটা দেখে অবাক হয়ে বলল

জিসানঃ আমাকে কখন
ইশাঃ তুমি যখন সোফায় বসে গেইম খেলছিলে তখন। আমি বললাম ভাইয়া একটু পুকুর পাড় থেকে ঘুরে আসবো, তুমি তো তখন বললেন ঠিকাছে যা ( জিসানের দিকে তাকিয়)
জিসানঃ কি
পাশ থেকে নীলা বলে উঠলো
নীলাঃ হ্যাঁ ভাইয়া আমরা তো আপনাকে বলেই বেড় হলাম।

জিসান মাথায় হাত দিয়ে ভাবতে লাগলো। এরা আবার কখন বলল। তারপর বলল
জিসানঃ এই আমার তো কিছু মনে পড়ছেনা

তখনই ইশার বাবার ফোনে কল আসলে ইশার বাবা দেখলো শানের বাবা কল করেছে।ইশার বাবা কলটা রিসিভ করে বলল

ইশার বাবাঃ hello ভাইজান বলেন
শানে বাবাঃ hello ইশা কোথায়
ইশার বাবাঃ এই তো আমার পাশে কেনো ভাইজান কি হয়েছে।
কথাটা শোনা মাএ শানের বাবা শানের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকালো শান সেটা দেখে বলে উঠলো
শানঃ কি হয়েছে বাবা ইশাকে পেয়েছে নাকি আমাকে
আর কিছু বলতে পারলো না শান তার আগে শানের বাবা শানকে ইশারা দিয়ে চুপ করিয়ে দিয়ে। শানের দিক থেকে চোখ সরিয়ে শানের বাবা বলে উঠলো
শানের বাবাঃ না এমনি আসলে একটু আগে শান আর জিসান ফোনে কথা বলছি তখন শান শুনেছে ইশা বাড়িতে নেই
ইশার বাবাঃ ও হ্যাঁ ছিলো নাই তো ইশা একটু বাহিরে গিয়েছিলো তার বান্ধবীকে নিয়ে । সেটা অবশ্য জিসানকে বলেছিলো।কিন্তু ছেলে আমার গেইম খেলতে এত ব্যাস্ত যে তার বোনের কথা শুনেও শোনেনি তাই আর কি
শানের বাবাঃ ও আচ্ছা এই ব্যাপার
ইশার বাবাঃ হুম
শানের বাবাঃ ঠিকাছে তাহলে ভালো থাকেন কাল দেখা হচ্ছে
ইশারা বাবাঃ জি ভালো থাকেন

শানের বাবা কথাটা শেষ করে ফোনটা রেখে শানের মাকে উদ্দেশ্য করে বলল
শানের বাবাঃ তোমার ছেলেকে একটু রাগ কমাতে বলো না হলে কিন্ত ওকে পস্তাতে হবে।ইশা বাড়িতেই আছে
শানঃ কিন্তু আমি তো
শানের বাবাঃ তুমি কি শুনতে কি শুনেছো যাই হোক বাদ দেও তোমরা হলুদের অনুষ্ঠান শুরু করো
এই বলে তিনি চলে গেলেন

গায়ে হলুদের পার্ট হয়ে গেছে। সবাই খাওয়া দাওয়া শেষে যে যার রুমে চলে গেলো নিতু রিয়া ইশার রুমে ইশার সাথে এসেছে।তারা আজ তিন বোন এক সাথে ঘুমাবে বলে।রিয়া আর নিতু আগে fresh হয়ে বেড়িয়েছে।ওদের বের হবার পর ইশা washroom ঢুকলো।কিছু সময় পর বেড়িয়ে দেখলো।রিয়া আর নিতু তাদের ফোন নিয়ে কি যেনো দেখছে আর হাসছে।ইশা তার হাতে থাকা তাওয়ালটা সাইডে রেখে ওদের কাছে যেতেই ওরা ইশার হাত ধরে টেনে বিছানায় বসিয়ে বলল
রিয়াঃ আপু নি দেখো জিজু Facebook এ ছবি দিয়েছে
নিতুঃ কি যে সুন্দর লাগছে হায় আমি তো ছবি দেখেই . ফিদা হয়ে গেলাম।
রিয়াঃ হুম আমি ও
ওদের মুখ থেকে এমন কথা শুনে ইশা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলল
ইশাঃ তোদের দুজনের মধ্যে কেউ একজন উনাকে বিয়ে কর তাহলে আমি বেঁচে যাবো
সেটা শুনে নিতু বলে উঠলো
নিতুঃ পারলে কি করতাম না আপুনি কি তাই না রিয়া।
রিয়াঃ হুম 🤤
নিতুঃ কিন্তু জিজু তো তোমাকে ভালো বাসে আমাদের না
ইশা মনে মনে ভাবতে রাগলো ভালোবাসে না ছাই । হুম খালি রাগ মেজাজ আর জেদ
রিয়াঃ আরে এই আপুনি (ইশাকে ধাক্কা দিয়ে)
ইশাঃ আহ্ ধাক্কা মারছিস কেনো কি হইছে
রিয়াঃ বলছি যে বাসর রাতে কি প্লান হুম
এটা শুনে ইশার চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেছে। ইশা তাই বলে উঠলো
ইশাঃ চুপ করে ঘুমা তোরা ছি এসব বলতে লজ্জা করে না।
ইশার এদের দুজনের ভাব ভালো ঠেকলো না তাই সে আর কথা না বাড়িয়ে ওদের মাঝখানে গিয়ে শুয়ে পড়লো। কিন্তু মাঝ রাতে নিতু আর রিয়া ইশাকে জোরিয়ে ধরেছে সেটা বুঝতে পাড়াতে ইশার ঘুম ভেঙ্গে যায় ইশার আর ঘুম আসছে না।পুরো রাত জেগে থাকে। ভোরের দিকে তার একটু ঘুম আসে সে ঘুমিয়ে পড়ে।

নিতু আর রিয়া সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে যায়। ইশাকে অনেক বার ডাকে কিন্তু ইশা উঠতে চাই নি। তাই তারা নিজেদের মতন fresh হয়ে। ইশার রুম থেকে বেড়িয়ে গেছে। গিয়ে তারা ইশার মাকে ডেকে এনে ইশাকে জোর করে ঘুম থেকে উঠিয়ে দেয়।

_______________________________________

বিয়ের সাজে ইশাকে আজ সাজানো হচ্ছে লাল বেনারসি, গা ভর্তি সোনার অলংকার, হালকা মেকাপ, তাকে বেশ সুন্দর লাগছে। ইশাকে সাজাতে সাজাতে রিয়া, নিতু, নীলা তিন জনে ইশার রুমে দৌড়ে ঢুকতে ঢুকতে বলল

বর এসেছে বর এসেছে! “””””

কথাটা শোনা মাএ ইশার বুকের ধুকপুক আনি শুরু হয়ে গেলো। গাঁ হাত পা সব যেনো কাজ করা বন্ধ হয়ে গেলো।তখই রিয়া বলে উঠলো

চলবে………..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে