প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_৪৪

1
2044

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_৪৪
#Writer_Afnan_Lara
?
ইন্টারেস্ট নেই তো এখনও এখানে কি করতেসেন?বের হোন বলতেসি,অসভ্য লোক একটা!
মুখের উপর দরজা লাগিয়ে দিলো আহানা
দরজা দিয়েই হেসে দিলো
শান্ত দরজার ওপারে থেকে হেসে দিলো
হাসতে হাসতে বাসা থেকে নামতে গিয়ে দেখলো দাদা কুলি করতেসে বাইরে দাঁড়িয়ে
ইস কি ঝামেলা,এবার বাড়ি ফিরবো কি করে ধুর!
.
দাদা কুলি করে উপরের দিকে তাকিয়ে দোয়া পড়তে যাবেন তখনই দেখলেন শান্ত দাঁত কেলিয়ে চেয়ে আছে উনার দিকে
হাতের মগটা ঝুলিয়ে এগিয়ে এসে মাথা বাঁকা করে উপরের তলার দিকে তাকালেন,দরজা দেখি বন্ধ
শান্ত?তুমি এখানে কি করো?এত রাতে কই যাও?
.
না মানে আসলে!
.
আসলে কি?যাও বউয়ের কাছে যাও,বউরে একা রেখে কই যাও এই অবেলায়?
.
শান্ত একটু কেশে নিলো
কিছু বলার উপায় পাচ্ছে না সে,এদিক ওদিক তাকিয়ে কোনো ছুঁতো বের করার চেষ্টা করতেসে
শেষে দাদা চোখ রাঙিয়ে বললেন আহানা তোমারে কিছু কইসে?চলো তো দেখি,ওরে বুঝানো উচিত যে তোমাদের বিয়ে হয়ে গেছে
.
না না আহানা আমাকে কিছু বলেনি,এমনি নিচে নেমেছিলাম
যাচ্ছি যাচ্ছি!!
শান্ত আবার ফিরে এসে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে রইলো দাদা ৩সিঁড়ি উঠে ব্রু কুঁচকে বললেন কি ব্যাপার?ভিতরে যাচ্ছো না কেন?
.
শান্ত মাথা নাড়িয়ে দরজায় টোকা দিলো
.
আহানা বিছানা করতেসিলো তখন
ভাবলো এই অসময়ে আবার কে?
উঠে এসে দরজা খুলে দেখলো শান্ত দাঁড়িয়ে আছে,একি আপনি?এখানে?আবার?
.
shhhhh!চুপ
.
আহানা কিছু বলতে যাবে তার আগেই শান্ত ভিতরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো
.
এই এসব কি হ্যাঁ??আপনি কিন্তু কাগজে সই করেছেন,আমাকে টাচ করতে পারবেন না,আমার কাছে কাগজটা আছে দাঁড়ান দেখাচ্ছি
.
দেখাতে হবে না!দাদা দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে বাধ্য হয়ে আসছি,তোমার সাথে এক রুমে থাকার কোনো ইচ্ছা নাই আমার
.
তো কতক্ষণ এমন থাকবেন,খবরদার আমি আপনাকে আমার সাথে আমার বাসায় এক রাতও কাটাতে দিব না!
.
দিও না,আমি থাকবো ও না,দাদা চলে গেলে আমিও চলে যাব
.
শান্ত বারান্দায় দাঁড়িয়ে উঁকি দিতেছে
আর আহানা তার বিছানার উপর বসে চুপ করে চেয়ে আছে শান্তর দিকে
.
শান্ত ফিরে এসে ধপ করে ফ্লোরে বসে গেলো
.
কি হয়েছে?গেছে দাদা?
.
জি না,উল্টো দাদিকে নিয়ে বাসার সামনে চেয়ারে বসে চা খাচ্ছে
.
কিহহ!
.
তুমি টেনসন নিও না,রাত ১টা বাজলেও আমি চলে যাব
এর ভিতরে নওশাদ ফোন দিসে এখন কি বলবো ওরে!
.
হ্যালো নওশাদ
.
হারামি তুই কই??ডিনার করবি না?
.
না করসি,আমি তমালের বাসায় একটা কাজে আসছি তোরা ডিনার করে নে
.
ওহ,তাড়াতাড়ি ফিরিস
.
ঠিক আছে!
শান্ত ফোন পকেটে ঢুকিয়ে দেখলো আহানা ওর দিকে চেয়ে আছে
.
কি এমন করে চেয়ে আছো কেন?কাগজের শর্ত বদলানোর কোনো ইঙ্গিত দিতেসো নাকি?
.
চুপ!এমনি তাকাইসি,কাগজের শর্ত আমি দিসি,আমি কেন বদলাবো,আপনার দিকে কি তাকাতেও পারবো না?
.
হুম পারো,সব পারো,এখন তো তুমি আমার পাতানো বউ থেকে রিয়েল বৈধ বউ হয়ে গেসো!

আহানা গুটিশুটি মেরে রুমের এক কোণায় ফ্লোরে বসে আছে
.
শান্ত সিগারেট ধরাতে ধরাতে বললো এখানে শোও?
.
হুম
.
আমি যে দেনমোহরের টাকা দিসি সেটা দিয়ে একটা ভালো খাট কিনবা,না পারলে আমি কিনে দিব
.
লাগবে না,এই বিয়েটা কোনো বিয়ে নয়,আপনার টাকা আপনি নিয়ে যান
.
এটা তোমার টাকা বরং আমি নিলে আমার গুনাহ হবে,তুমি এটা দিয়ে যা খুশি করো,শোও ফ্লোরে!আমার কি?
.
আহানা প্রচুর ক্লান্ত হয়ে গেছে কোণায় হাত পা মুড়িয়ে ঘুমিয়ে গেছে সে ততক্ষণে
শান্ত ২টা সিগারেট শেষ করেছে সবে
বারান্দায় এসে দাদা দাদিকে লক্ষ করে দেখতেসে তারা চলে গেছে কিনা
বরাবর ১২টা ১০মিনিটে তারা চেয়ার নিয়ে চলে গেলেন,শান্ত স্বস্তির একটা নিশ্বাস ফেলে পকেটে হাত ঢুকিয়ে চলে যেতে যেতে বললো আহানা দরজা লাগাও!!
আহানার সারাশব্দ না পেয়ে পিছন ফিরে চেয়ে দেখলো আহানা গভীর ঘুমে
দরজা তো এভাবে খোলা রেখেও যাওয়া যাবে না
ওরে ঘুম থেকে জাগাবো?সারাদিনে ওর কত দখল গেছে আর আমার এভাবে দাঁড়িয়ে থাকাও তো পসিবল নাহ
শান্ত এগিয়ে এসে আহানা বলে ২বার ডাক দিলো,আহানা কাঁথা টেনে মুখ ঢেকে ঘুমাচ্ছে
.
শান্ত কাঁথাটা জোরে টান দিতেই আহানার ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো,চোখ মেলে দেখলো শান্ত ওর দিকে চেয়ে বসে আছে
আহানা উঠে দূরে সরে গেলো,কোমড় থেকে কাগজ বের করিয়ে শান্তর দিকে বাড়িয়ে ধরলো
.
এই শুনো!তোমার সবসময় কেন মনে হয় আমি তোমাকে টাচ করতে এসেছি?বলদা গার্ডেন একটা!
আমি যাচ্ছি দরজা লাগাও
শান্ত ব্রু কুঁচকে উঠে চলে গেলো
আহানা দরজা লাগিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে শান্তর চলে যাওয়া দেখছে,শান্ত একবারও তাকায় নি,ফোনে কিসব করতেসে সে,তখনই আহানার ফোনে টুংটাং করে একটা সাউন্ড হলো
আহানা ফোনটা এনে দেখলো শান্তর মেসেজ
লিখা আছে-এভাবে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকতে হবে না,নতুন বরকে তো নিজের বাসায় জায়গা দাওনি,এখন চলে যাচ্ছি তো তোমার কেন জ্বলেরে বন্ধু?তোমার কেন জ্বলে?
.
উফ অসভ্য একটা লোক,৩০রকমের কথা বলবে!
ফোন রেখে আহানা শুয়ে পড়লো
.
শান্ত বাসায় ঢুকতেই দেখলো নওশাদ,রিয়াজ আর সূর্য সোফায় পায়ের উপর পা তুলে ওর দিকে চেয়ে আছে
শান্ত হালকা কাশ দিয়ে পাঞ্জাবির হাতা নামাতে নামাতে নিজের রুমের দিকে যাচ্ছে আর বলতেসে তোরা এত রাতে ড্রয়িং রুমে কি করিস?
.
“শুভ বিবাহ” ছবিটা দেখতেসি এই আর কি?তুই দেখবি নাকি?
.
শান্ত তার রুমের দরজায় হাত দিতেই নওশাদের কথায় থেমে গিয়ে মাথা বাঁকিয়ে ওদের দিকে তাকালো
.
হ্যাঁরে নওশাদ জানিস,আজ নাকি ঐ ইমামের বাড়িতে কার যেন বিয়ে হয়েছে,সেখানে বরের নাম ও নাকি শান্ত ছিল!
.
তাই নাকি রিয়াজ??কিরে শান্ত তুই শুনেছিস এই কথা?
.
শান্ত ডাইনিং টেবিল থেকে পানি নিয়ে খেতে খেতে চলে গেলো
কিছু বললো না,কারন সে জানে কিছু বললেই ওরা এনাকোন্ডার মত পেঁচিয়ে ধরবে তাকে
রুমে এসে পাঞ্জাবি খুলতেই রিয়াজ আর নওশাদ ছোঁ মেরে ওর পাঞ্জাবি হাতে নিয়ে নিলো
.
কি সমস্যা তোদের?
.
এই রিয়াজ ভালো করে শুঁকে দেখ তো মেয়েদের গায়ের গন্ধ আসে কিনা
.
আজব তো,আমি কি বাসর করে এসেছি নাকি,এটা কেমন কাজকর্ম,মদ কি বেশি খেয়েছিস তোরা?
.
নাহ রে নওশাদ ওর পাঞ্জাবি থেকে শুধু ওরই পারফিউমের ঘ্রান আসতেসে
.
ওহ আচ্ছা
দুজনে ব্রু কুঁচকে পাঞ্জাবি রেখে চলে গেলো
.
এদের মত ডিটেক্টিভ বন্ধু আমার কপালেই জুটতে গেছে
.
ফ্রেশ হয়ে এসে দুম করে খাটের উপর শুতেই রাজ্যের ঘুম এসে গেলো শান্তর

পরেরদিন সকালবেলায় আহানা মিষ্টিকে পড়িয়ে শান্তর বাসার দিকে একবার তাকালো,দরজা বন্ধ
চুপচাপ লিফটের বাটনে টিপ দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো,তারপর লিফট খুলতেই ভিতরে এসে চুপচাপ নিচতলার বাটনে টিপ দিয়ে পাশে তাকাতেই শিউরে উঠলো ভয় পেয়ে
শান্ত বিরক্তি নিয়ে বললো কি?আমাকে চিনো না?নাকি নতুন দেখতেসো?
.
এমন করেন কেন,এমন ভিজা বিড়ালের মত দাঁড়িয়ে থাকলে ভয় পাওয়ারই কথা
.
তুমি লিফটে ডুকার সময় দেখে ঢুকলেই হয় তাহলে আর ভূত দেখার মত ভয় পেতে না
.
কই যাচ্ছেন এখন?
.
Now আই এম ম্যারিড,আমার বিয়ে করা নতুন বউ আছে,সে আমাকে সকালের নাস্তা বানিয়ে খাওয়াবে
.
মঘেরমুলক আর কি!আমি পারবো না
.
কেন পারবে না?কেস করবো তোমার নামে,বলবো আমার বিয়ে করা বউ আমাকে নাস্তা বানিয়ে খাওয়ায় না
.
এসবের জন্য জোর করে বিয়ে করেছেন তাই না?
.
জি না,নিহাল থেকে তোমাকে বাঁচাতে বিয়ে করেছি
.
নিহাল অন্তত সকালের নাস্তার জন্য আমাকে ফোর্স করতো না
.
হ্যাঁ করতো না,শুধু নাস্তা কেন,তোমাকে দিয়ে ঘর ও মুছাইতো,যেটা আমি করাচ্ছি না,চুপচাপ আমাকে নাস্তা বানায় খাওয়াবা,সাথে চা
.
দুধের গুড়ি নাই ওকে?চিনিও নাই,চা পাতাও নাই
.
তুমি বাসায় গিয়ে চা বসাও আমি ওগুলা আনতেসি,পানি ফুটার আগেই আমি পৌঁছে যাব
.
হুহ!
আহানা হনহনিয়ে বাসার ভেতর চলে গেলো আর শান্ত দোকানের দিকে যাচ্ছে
তখনই আহানার মনে পড়লো শান্ত তো ভাত নুন দিয়ে এখন খেতে পারবে না ওর মতন
রুটি বানাতে হবে,আহানা দৌড়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ালো,এই যে শুনুন!
.
শান্ত থেমে গিয়ে উপরে তাকালো,হেসে দিয়ে বললো হ্যাঁ বলো বউ,এখন থেকে এই “যে শুনুন” ডাকতে পারো,আমি তোমাকে বাধা দিব না
.
আহানা মুখ বাঁকিয়ে বললো আটা আনতে আর ডিম ২টা,পেঁয়াজ আধা কেজি
.
আচ্ছা ফাইন
.
১০মিনিট পর সব নিয়ে শান্ত হাজির
আহানা আটার প্যাকেট দাঁত দিয়ে খুলতেসে
খুলতেসে না দেখে দাঁত লাগিয়ে জোরে এক টান দিতেই কিছু আটা গিয়ে শান্তর মুখে পড়লো শান্ত তখন তাক থেকে বিসকিটের বোয়াম নিচ্ছিলো
হাত দিয়ে গাল মুছতে মুছতে বললো ইচ্ছে করে করেছো তাই না?তোমার বিসকিট ধরতেসি বলে?
.
ইচ্ছে করে কেন করবো,হাত দিয়ে খুলতেসে না বলেই তো দাঁত দিয়ে খুলতে গেলাম,এভাবে উড়ে গিয়ে আপনার মুখে পড়বে আমি কি জানি
.
তুমি ইচ্ছে করেই করেছো
.
আমি ইচ্ছে করে করিনি ওকে?সকাল সকাল ঝগড়া করবেন না একদম
.
আমি ঝগড়া করতেসি??
কথাটা বলে শান্ত এগিয়ে এসে আহানার দুপাশে হাত নিয়ে তাকের উপর রাখলো
ভয়ে আহানার কলিজা নড়ে উঠতেসে
হাত নিয়ে কোমড় থেকে কাগজটা বের করতে যাবে তার আগেই শান্ত এক হাত দিয়ে আহানার হাত ধরে ফেললো
মাথা নিচু করে তার গালের আটা আহানার কপালে লাগিয়ে দিয়ে বিসকিটের বোয়াম নিয়ে চলে গেলো রান্নাঘর থেকে
.
আহানা থ মেরে দাঁড়িয়ে থেকে দাঁতে দাঁত চেপে বললো আপনি বলছেন টাচ করবেন না!
.
হ্যাঁ,টাচ করিনি,কাগজে লিখা নাই তুমি ইচ্ছে করে আমাকে রাগালে আমি তোমাকে টাচ করতে পারবো না
.
আপনি একটা বেয়াদব!
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
বকরবকর না করে নাস্তা বানাও,ভার্সিটিতে যেতে হবে জানো না?
.
হুম!
আহানা আটা বোয়ামে ঢেলে রুটি ৫টা বানালো,তারপর পেঁয়াজ কেটে লবণ মরিচের গুড়ো দিয়ে ডিম ফেটিয়ে ভেজে নিলো,শান্তর প্লেটে ৩টা রুটি একটা ডিম,আর আহানার প্লেটে রুটি ২টা আর একটা ডিম
.
একি?আমাকে ৩টা দিসো কেন?
.
(আপনি খাওয়াল ,পেটুক,বস্তি,খাটাশ তাই!)
.
কি বললে তুমি?
.
কিছু না,আপনি কত পরিশ্রম করেন তাই একটা বারতি দিলাম
.
ওহ??
.
আহানা একটা রুটি খেয়ে উঠে গিয়ে চা দেখে আসলো
আচ্ছা?আপনি এত দুধের গুড়ি,চা পাতা,চিনি এনেছেন কেন?
.
কারণ প্রতিদিন আমি এখানে এসে নাস্তা করবো
.
?পারবো না নাস্তা বানাতে
.
ওকে একদিন তুমি একদিন আমি
.
আপনার রান্না একদিন খেয়ে রান্নার উপর থেকে আমার ইচ্ছা মরে কবরে চলে গেছে,আর দয়া করে আমাকে আপনার রান্না টেস্ট করাবেন না প্লিস!
.
আরেহ শুনো এটা তো ইজি রান্না,আমি ইউটিউব না দেখেই বানাতে পারবো
.
আহানা এগিয়ে এসে দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে বললো বলেন তো রুটি কেমনে বানায়?
.
ওকে এটা একটা ইজি প্রশ্ন!
প্রথমে একটা বাটিতে পানি দিয়ে চামচ দিয়ে আটা আর পানি গুলতে হবে
.
তারপর?
.
তারপর ছোট ছোট করে নিয়ে বেলে নিতে হবে
.
বাহ বাহ বাহ,কত্ত সহজ
.
হ্যাঁ আমি তো তাই বললাম,রুটি বানানো অনেক সহজ
.
আহানা চা এনে রাখলো,শান্ত দাঁত কেলিয়ে চায়ের কাপটা নিলো
.
কি?
.
তোমার কপালে আটা লেগে আছে?
.
আপনার গালেও আটা লেগে আছে হুহ!
.
শান্ত আহানার ওড়না টেনে গাল মুছে নিলো
.
আহানা রেগে শান্তর টিশার্ট টেনে কপাল মুছলো
.
দুজনেই একসাথে হেসে দিলো
.
আচ্ছা আমি যাই,রেডি হয়ে থেকো আমার সাথে ভার্সিটিতে যাবা
.
কেন?আপনার সাথে কেন যাবো আমি?
.
কারণ আমি তোমার হাসবেন্ড!আমার কথা শুনতে তুমি বাধ্য!
.
এই বিয়ে মানি না আমি,আপনি বলছেন আমার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবেন না
.
হেঁটে হেঁটে ভার্সিটিতে যাওয়া স্বাধীনতা?
.
হ্যাঁ
.
ফাইন!
.
কে যেন দরজা নক করলো,শান্ত ফ্লোর থেকে উঠে গিয়ে দরজা খুললো
আরেহহহ আপনারা আসেন আসেন,ভিতরে আসেন
.
আহানা উঁকি দিয়ে দেখলো ৪জন লোক কাঁধে করে কাঠ জাতীয় কিছু নিয়ে ঢুকতেসে এক এক করে
.
এরা কারা?
.
ওয়েট করো দেখতে পাবা!
.
লোকগুলো নিমিষেই তাদের কাজ শেষ করলো,খাট এনে সেটা সেট আপ করে দিয়ে চলে গেলো তারা
আহানা রেগে বললো আপনাকে বললাম না আমি আমার বেতনের টাকা দিয়ে কিনবো?
.
এটা কি আমি তোমার জন্য কিনেছি নাকি?
আমি যে মাঝেমাঝে আসি,ফ্লোরে বসতে আমার কষ্ট হয় তাই বেড আনাইসি
.
চেয়ার আনলেই হতো,বেডের দরকার ছিল না
.
আমি বেডে বসবো,তোমার কোনো সমস্যা?
.
আনছেন ভালো কথা,বেডরুমে কেন?সোফার রুমে রাখলেই হতো যেহেতু আপনি আসলে বেডে বসবেন
.
না হতো না,সোফার রুমে সোফা থাকবে
.
আমার বেতনের টাকায় সোফা কেনা সম্ভব হবে না কোনোদিন
.
আমার বেতনে তো হবে?
.
এটা আমার বাসা
.
এটা আমারও বাসা,চুপ থাকো তুমি,ইদানিং বেশি কথা বলতেসো
.
আহানা মুখ ঘুরিয়ে রান্নাঘরের দিকে চলে গেলো,শান্ত দরজা খুলে চলে গেলো
ফোনে তোষকের দোকানদারের সাথে কথা বলতে বলতে বাসার দিকে গেলো সে,তোষক সন্ধ্যায় চলে আসবে
.
আহানা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে বেডরুমে গিয়ে খাটের দিকে চেয়ে আছে,ইয়া বড় এক খাট আনিয়েছে শান্ত,টাকা খরচ করতে পিছু পা হয় না,আমি ১টাকার জন্য যুদ্ধ করি আর উনি ১হাজার টাকা হারিয়ে ফেললেও চিন্তা করেন না
আকাশ পাতাল তফাৎ আমাদের
এর মাঝে আমরা স্বামী স্ত্রী ও হয়ে গেলাম,হোয়াট এ ভাগ্য!
চলবে♥

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে