ফাল্গুনের_ফুল last_part_8

4
3110
ফাল্গুনের_ফুল
last_part_8
#writer_Farzana

১০ মি: হলো বসে আছি। আমার দুষ্টু বউটাকে এখনো দেখতে পেলাম না। আগে বিয়ে করে নেই তারপর চোখের আড়ালই হতে দেবোনা ?। আমার heartbeat বেড়ে যাচ্ছে, কিভাবে যে propose করবো ?। গত ৭ দিন ধরে যখনই সময় পাচ্ছি তখনই আয়নার সামনে যেয়ে rehearsal দিচ্ছি। ইতিমধ্যে খাবার নিয়ে এলো। খাবার আনার কি দরকার ছিল, তারচেয়ে আমার সোনা বউটাকে নিয়ে আসলেই তো পারতো। খাওয়ার পর্ব শেষ। তারপর বাবা বললো-
তাহলে আমার বউমাকে একটু নিয়ে আসেন দেখি ?
অবশেষে আমার দুষ্টু বউটার দেখা পেলাম তাহলে। Omg, একি ?! এতো শাড়ি পড়েনি। normal ১টা থ্রি-পিছ পড়েছে, মাথায় ঘোমটা। লতা ধরে নিয়ে এসেছে। বসানোর আগেই লতার হাতটা কাধ থেকে সরিয়ে বসে পড়লো। বোঝাই যাচ্ছে খুব রাগ। আল্লাহই জানে আমার কপালে আজ কি আছে! আমার দুষ্টু বউটার কপালে রাগ আর বিরক্তির রেখাও ফুটে উঠেছে দেখছি ?। এর মধ্যে বাবা প্রশ্ন করা শুরু করলো। বাবাকে আগেই বলে রেখেছি বেশী প্রশ্ন যেন না করে, ছোট মানুষ ভয় পেতে পারে। তাই বাবা নামটা ছাড়া আর কিছুই জিঙ্গেস করেনি। আমার দুষ্টু বউটার সাথে আমার একটু কথা বলা দরকার। না হলে আয়নার সামনে এই ৭ দিনের দেয়া rehearsal বিফলে যাবে। তা তো হতে দেয়া যায় না। আর আমার দুষ্টু বউটার মতটা কি সেটাও তো জানতে হবে, তাইনা? রাজি না হলে রাজি করানোর চেষ্টা করতে হবে। তাই লজ্জার মাথা খেয়ে বলেই ফেললাম- আপনারা কেউ যদি মনে কিছু না করেন তাহলে আমি ফাল্গুনীর সাথে একা একটু কথা বলতে চাই। এই কথা বলার সাথে সাথে আমার দুষ্টু বউটা মাথা তুলে আমার দিকে তাকিয়ে ভূবন ভুলানো মিষ্টি একটা হাসি দিলো। মনে হলো যেন আমার জন্যেই wait করছিল। আর এই কথা বলায় আমার হবু শ্বাশুড়ি অগ্নিমূর্তির রুপ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। দেখেই কলিজা শুকিয়ে যাচ্ছে। কেউ হ্যা বলার আগেই আমার দুষ্টু বউটা কিন্তু উঠে দাড়িয়েছে। আমি sure ওর মায়ের মুখটা দেখলে ও উঠে দাড়াতো না। যাই হোক ওর পিছে পিছে একটা রুমে গেলাম। তারপর নিরবতা শুরু হওয়ার আগেই আমি কথা শুরু করলাম।
আমি: তোমার জন্য কিছু gift এনেছি, দেখেছো?
দুষ্টু বউ: না তো, আমি তো জানিই না। কি gift 
আমি: chocolate’s, beauty box, dairy আর কিছু cartoon এর CD… জানিনা তোমার পছন্দ হবে কিনা?…..
দুষ্টু বউ: আমার তো শুনেই খুব পছন্দ ?
কথাটা শোনার সাথে সাথে হাটু গেড়ে বসে দুই হাত জোড় করে বললাম।-
আমি: Plz আমাকে ফিরিয়ে দিওনা। আমি তোমাকে খুব ভালো রাখবো, খুব ভালো বাসবো। সব সময় chocolate এনে দেবো, cartoon এর channel এনে দেবো যেন সব সময় cartoon দেখতে পারো। কিচ্ছু করতে হবে না তোমার, সব কাজ আমি করবো। প্রত্যেক সপ্তাহে market-এ নিয়ে যাব। যখন যা চাবে তাই কিনে দেবো। তোমার সব কথা শুনবো। কক্ষনো তোমাকে বকা দেবোনা, রাগ করবো না, কাঁদাবো না। তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসবো। আমায় বিয়ে করবো Plz… (বলে ওর দিকে তাকালাম, সম্মতি পাওয়ার আশায়)
দুষ্টু বউ: আমি কি রাগ করার মতো কোন মেয়ে নাকি, যে রাগ করবেন? আমি তো ভালোবাসার মতো একটা মেয়ে 
আমি: হ্যা..?(বাব্বাহ, আমার দুষ্টু বউটা দেখি কথাও জানে)
দুষ্টু বউ: আপনাকে বিয়ে করলে কি দেবেন আপনি আমাকে?
আমি: A bugs’ life animation movie- এর bangla version টা বিয়ের দিন gift করবো।
দুষ্টু বউ: তাহলে চলেন কালই বিয়ে করি ?
আমি: কাল কিভাবে করবো! বিয়ের shopping করতে হবে না? শাড়ী কিনতে হবে আরও কত্তো কিছু কিনতে হবে।
দুষ্টু বউ: শাড়ী? কিন্তু আমি তো শাড়ী পরবো না।
আমি: তাহলে কি পরবে?
দুষ্টু বউ: লেহেঙ্গা…
আমি: আচ্ছা, তাই কিনে দেব। India থেকে নিয়ে আসবো, ওখানে ভালো লেহেঙ্গা পাওয়া যায়।
দুষ্টু বউ: না দেখে আমার ওসব পছন্দ হবে না। আমি দেখে পছন্দ করে কিনতে চাই।
আমি: OK, তাই হবে। আর শোনো, বিয়ের পরে যেহেতু আমার সাথে ঢাকা থাকছো তাই ওখানকার কলেজেই ভর্তি করে দেবো, ওখানেই পড়বে।
দুষ্টু বউ: কি? বিয়ের পরে পড়বো মানে? না, বিয়ের পরে আমি পড়তে পারবো না।
আমি: ইন্জিনিয়ারের বউ… অন্তত HSC টা তো দেবে..
দুষ্টু বউ: না, তাহলে বিয়েই করবো না আমি ?
আমি: আচ্ছা, আচ্ছা.. পড়তে হবে না তোমার। দরকার হয় যা পড়েছো সেগুলিও ভুলে যাও। তাও না করোনা বিয়েতে Plz….
দুষ্টু বউ: বিয়ের পরে আবার পড়তে বলবেন না তো ?
আমি: নাহ, কক্ষনো না।
দুষ্টু বউ: এবার উঠুন.. সামনের সপ্তাহে বিয়ের date fixed করুন।
আমি: কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে সবকিছু manage করবো ?। (উঠে দাড়াতে দাড়াতে বললাম)
দুষ্টু বউ: এই না বললেন আমার সব কথা শুনবেন ?, এখন তো দেখছি….
আমি: আরে না না.. বিয়ে সামনের সপ্তাহেই হবে।
দুষ্টু বউ: বিয়ের দিনই যেন cartoon এর cd টা পাই। নাহলে কিন্তু কবুল বলবো না….?
আমি: OK… সময় যেহেতু কম তাই আমি কাল বাসায় যেয়েই টাকা পাঠিয়ে দেবো। তুমি তোমার পছন্দ মত ornaments আর বিয়ের shopping টা করে নিও। আর বিয়ের দিন পার্লারে যেতে হবে না, আগে থেকেই বলে আাসবে যেন এসে সাজিয়ে দিয়ে যায়। ১০ লাখ দিলে চলবে?
দুষ্টু বউ: হুম, কিন্তু আপনি থাকবেন না shopping এর সময়?
আমি: না, ওদিকেও তো সব manage করতে হবে তাইনা? সেজন্যে আসতে পারবো না। তুমি তোমার আপু আর আম্মুর সাথে shopping টা করে নিও। (আসলে আমার দুষ্টু বউটার আম্মুকে দেখলে আমার ভীষণ ভয় লাগে, তাই একেবারে বিয়ের দিনই আসবো)
দুষ্টু বউ: হুম….
আমি: এখন চলো যাই, বাইরে সবাই wait করছে আমাদের জন্যে..
দুষ্টু বউ: হুম, চলেন ?….
আমি: আর যাই করো, বিয়ের দিন বেশী সেজোনা যেন। নাহলে heart attack করে মরে যাবো ??। ( যেতে যেতে ওর দিকে না তাকিয়েই বললাম)
দুষ্টু বউ: ???
তারপর বিয়ের date fixed করে চলে আসলাম ???

l’m really impressed.. এতো বড় একটা মানুষ যে এভাবে request করতে পারে আমার জানা ছিল না ?। আজ TT করে টাকা পাঠিয়েছে shopping এর জন্যে। আপু এসেছে, কাল shopping এ যাব। পুরো বাড়ীতে বিয়ের আমেজ। কেমন যেন ঈদ ঈদ লাগছে ?। এখন শুধু অপেক্ষা বিয়ের। বিয়ে হলেই তো CD টা পাবো ?
?????: অবশেষে মধ্যাকর্ষনে ঝুলে থাকা আমার অপেক্ষার মুহুর্তটা চলেই এলো। বিয়েটাও হয়ে গেল। সত্যি.. CD টা না দেখে কিন্তু কবুল বলেনি ?। ভাগ্যিস সাথে করে নিয়ে এসেছিলাম। বিদায়ের পর গাড়িতে বসে আছি। শুনেছি সব মেয়েরা নাকি শ্বশুড় বাড়ী যাওয়ার সময় বাবা-মার জন্যে অনেক কান্না করে। আমার দুষ্টু বউটা কিন্তু একদম ব্যতিক্রম, একটুও কাঁদেনি। গাড়িতে আমার পাশে বসে আছে, আর গাড়ি ছাড়ার জন্যে আমাকে তাড়া দিচ্ছে। ওর কাছে বিয়েটা মানে cartoon দেখা, এ জন্যেই মনেহয় এত তাড়া।
দীর্ঘ journey শেষে বাসায় পৌছলাম। সবাইকে আগে থেকেই বলে রেখেছিলাম কেউ যেন আমার দুষ্টু বউটা কে বিরক্ত না করে, সাথে আমাকেও। তাই রাত ১০ টার মধ্যে পৌছে গেলাম বাসর ঘরে। আমি শুনেছি সব মেয়েরা নাকি তাদের বর ঘরে ঢোকার সাথে সাথে উঠে এসে সালাম করে। আর আমার বউ ঢোকার সাথে সাথে ঘোমটা তুলে বললো।-
দুষ্টু বউ: আমি কিন্তু তোমাকে আপনি করে বলতে পারবো না, তুমি করে বলবো। এই আপনি বলাটা না আমার স্বভাবের সাথে যায় না।
আমি: আচ্ছা…?
দুষ্টু বউ: এবার বলো, এতো দেরী হলো কেন আসতে ??
আমি: Sorry….Sorry..
দুষ্টু বউ: ঘরটা ভীষণ সুন্দর করে সাজিয়েছো। গোলাপ আর রজনীগন্ধা ভীষণ পছন্দ আমার।
আমি: ছাদটাও অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছি, যাবে? চল যাই..
দুষ্টু বউ: নাহ, এখন না। পরে যাব…
(সব মেয়েরা নাকি বিয়ের রাতে চাঁদ দেখে। এই মেয়ে দেখি আমার সব ধারনা ভুল প্রমাণিত করছে। মনে করেছিলাম আমার বউ মনে হয় ছাদে যেয়ে দোলনায় বসে চাঁদ দেখবে। অবশ্য সবাই মনে হয় বাসর রাতে চাঁদ দেখে তাদের ছেলে-মেয়ে হলে যেন সুন্দর হয় এই জন্য। আমার দুষ্টু বউটা এমনি অনেক..অনেক.. অনেক বেশী সুন্দর। আমার ছেলে-মেয়ে এমনিতেই অনেক সুন্দর হবে)
আমি: তাহলে..
দুষ্টু বউ: CD টা play করো, দেখবো..
আমি: OK….তাহলে dress change করে fresh হয়ে এসে বসো।
দুষ্টু বউ: আল্লাহ, কি বলো তুমি ?! Dress change করবো কেন? এতো কষ্ট করে সাজলাম, দেখবে না তুমি ?
আমি: হ্যা দেখবোই তো ?
দুষ্টু বউ: আর তাছাড়া বিয়ের dress কি রোজ রোজ পড়বো নাকি। নতুন dress পড়লে আমার change করতে ইচ্ছা করে না। এটা আমি ৩ দিন পড়ে থাকবো।
আমি: ( বলে কি এই মেয়ে ?) গোসল করবে না তুমি।
দুষ্টু বউ: নাহ, কোন problem তোমার?
আমি: একদম নাহ ?….
দুষ্টু বউ: তাহলে CD টা play করো।
আমি: আচ্ছা, আমি তাহলে dress টা change করে আসি..
দুষ্টু বউ: না, পড়ে থাকো। একদম change করবে না।
আমি: OK.. (Laptop এনে CD টা play করলাম)
দুষ্টু বউ: এই আমার না খুব ক্ষুধা লেগেছে, খাবো…
আমি: OK..তুমি cartoon দেখো, আমি খাবার নিয়ে আসি। (খাবার নিয়ে এসে খাইয়ে দিতে লাগলাম। আর ও কোন সংকোচ ছাড়াই খেতে থাকলো। যেন আগে থেকেই জানতো যে আমি ওকে খাইয়ে দেবো….খাওয়া শেষ.. ও cartoon দেখছে আর আমি ওকে দেখছি। ঘরে কোন আলো নেই, শুধু laptop এর আলো। এই আলোতেই আমি আমার দুষ্টু বউটাকে দেখছি। অসম্ভব সুন্দর লাগছে, যা বলার ব্যাখ্যা রাখে না। ওকে দেখলেই আমার ভালো লাগার অনুভূতি গুলি খুব বেশী কাজ করে ?। মানুষ এতো সুন্দর হয়। ওকে না দেখলে জানতামই না। আমি তো মন্ত্রমুগ্ধের মতো আমার দুষ্টু বউ টাকে দেখছি, এর মধ্যে cartoon যে কখন শেষ হয়েছে, বুঝতেই পারিনি)
দুষ্টু বউ: এই যে cartoon তো শেষ এখন চলো ছাদে যাই। ( আমার মুখের সামনে হাত এনে তুড়ি দিয়ে বললো কথাটা)
আমি: হ্যা চলো..(ছাদে এসে তো ও ভীষণ খুশি)
দুষ্টু বউ: ছাদটা সবসময় এমন lighting করে রাখবে, ঠিক আছে ☺?
আমি: তুমি যা বলবে তাই হবে, আমার সোনা বউ ?…
ঘন্টা খানেকের মতো ছিলাম ছাদে। আমার দুষ্টু বউটা অনেক সুন্দর করে কথা বলে, শুধু শুনতেই ইচ্ছা করে। ওর expression গুলি অনেক attractive..আমার মুগ্ধতা ভাঙিয়ে আমার দুষ্টু বউ টা বলে উঠলো।-
দুষ্টু বউ: রাত তো অনেক হলো। ঘুম পাচ্ছে খুব, চলো শুয়ে পড়ি ☺।
আমি: হুম চলো। (এখন tension হচ্ছে, আমাকে আবার খাটে শুতে দেবে তো ?। ভয়ে ভয়ে খাটে যেয়ে বসলাম। ও চুড়িগুলি খুলছে আর আড়চোখে আমাকে দেখছে। তারপর আমাকে বললো- শুধু তাকিয়েই থাকবে নাকি ornaments গুলি খুলতে আমাকে একটু help করবে, কোনটা ??
আমি: অবশ্যই help করবো ?…(ornaments গুলি খুলে দিলাম, সাথে চুলের খোপাটাও..অসাধারন লাগছে দেখতে ?। সত্যি করেই ও dress change করলো না, আর আমাকেও করতে দিলো না। বালিশ ঠিক করে লক্ষী ছেলের মত শুয়ে পড়লাম,যদিও জড়িয়ে ধরে শুতে খুব ইচ্ছা করছে)
দুষ্টু বউটা আমার একদম কাছে এসে বসেছে। মনে হচ্ছে এখন যদি জড়িয়ে না ধরি তাহলে মনেহয় মরেই যাবো ?। তারপরও নিজেকে control করলাম। বউ হারানোর চেয়ে নিজেকে control করা অনেক ভালো। হাতটা বুকের উপর রেখে শুয়ে আছি। বউ আমার বালিশে না শুয়ে আমার হাতটা সোজা করে হাতের উপর শুয়ে আমাকে ধরে গালে একটা ছোট্ট kiss করে বললো ?- cartoon টা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। (লজ্জা মাখা হাসি দিয়ে বললো)
তারপর light টা off করে দিতে বললো। যেহেতু ও আমাকে ধরে শুয়েছে তাই Bed switch টা off করে দিয়ে জড়িয়ে ধরে ওকে support করলাম। আমার জন্য আপাতঃত এইটুকুই enough.. __

Cartoon দেখলে কি হবে, সারারাত জড়িয়ে ধরেই শুয়ে ছিল। একটা সেকেন্ডের জন্যও আমাকে ছাড়েনি। এরকম মুহুর্ত পাওয়ার জন্য আমি রোজ ১টা করে cartoon এর CD এতে দিতে রাজি আছি ???…

: যা ভাবছেন তা না, নামাজ বাদ দেইনি। দুই জনই নামাজ পড়েছি। আল্লাহ কে কথা দিয়েছি রাখতে তো হবেই, তাইনা ??
আজ শ্বশুড়বাড়ি থেকে আমাদের নিতে আসবে। কিন্তু আমার দুষ্টু বউটা কিছুতেই যেতে রাজি না। আমি সহ বাড়ির সবাই তাকে রাজি করাতে অক্ষম। বলেছে সে এতো journey করতে পারবেনা। আর তাছাড়া বাড়িতে তো dish line নেই বাড়িতে গেলে cartoon দেখবে কিভাবে? তাই বাড়িতে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। ১০ দিন পরে যাবে, বিয়েটা মানে cartoon দেখা কিনা ?। শ্বশুড় বাড়িতে phn করে কথাটা জানালাম। বললাম সবাই যেন এসে দেখে যায়। আর ১০ দিন পর আমরা একাই যাবো। এভাবে আসতে তারা রাজি না, একেবারে ১০ দিন পরেই আসবে আমাদের নিতে। কিন্তু আমি তো আগে থেকেই সব কিছু arrange করে ফেলেছি, এই কথা বলতেই আসতে রাজি হলো তারা। আমার কথা সবাই শোনে, আর আমি শুনি আমার দুষ্টু বউটার কথা। কি করবো ভীষণ ভালোবাসি যে ?। আর তাছাড়া আমার দুষ্টু বউটা আমার কাছে কোন অন্যায় আবদারও করে না….
?????: অপেক্ষার মুহূর্তগুলি মধ্যাকর্ষনে আটকে থাকে, আর সুখের মুহূর্তগুলি পানির স্রোতের মতো ভেসে চলে যায়। দেখতে দেখতে আমাদের বিয়েরও ৫ টা বছর পূর্ণ হয়ে গেল। কিন্তু এখনও রোজ রাতে ছাদে ঠিক তেমনই আলোর ফোয়ারা ছোটে যেমনটা ছুটেছিলো বিয়ের রাতে ?। এখন আর আমার দুষ্টু বউটা cartoon দেখে না। কি ভাবছেন, movie দেখে? না তার আর দরকার হয়না। কারণ রোজ রাতেই আমাদের ঘরে romantic movie হয় ?। TV তে খবর দেখা আমার পছন্দ না। ঘরের খবর যদি আমি না জানি, তাহলে কি করবো আমি দেশের খবর জেনে। সময়ই পাই শুধু একটু ছুটির দিনে আর cricket, football match দেখে আমি সময়টা নষ্ট করতে চাইনা.. আমি আমার পুরো সময়টা আমার লক্ষী j@@n টাকে দিতে চাই ?। রান্না টা প্রথমে আমিই করতাম, ও শুধু help করতো। Job করি বলে আমাকে এখন আর রান্না করতে দেয়না, help করি আমি। কিন্তু ছুটির দিন টা রান্নাঘরে ওর প্রবেশ নিষেধ, এই দিনে রান্নাটা আমি করি তাই। পড়াশোনার প্রতি ও আর কোনদিন কোন আগ্রহ দেখায়নি। তাই আমিও আর সে প্রসঙ্গ তুলে ওকে হারাতে চাইনি। মানুষ পড়াশোনার কথা জিঙ্গেস করলে বলি…(এতো সুন্দর বউ আমার, বাইরে যে পড়তে দেবো.. যদি কেউ আমার সোনা বউটাকে নিয়ে যায়, তখন আমার কি হবে? তাই safe এ রেখেছি ?।)
আমি আমার এই দুষ্টু বউটা কে ভীষণ ভালোবাসি। বিয়ের আগে আমি ওকে যে কথা দিয়েছি তা আমি রেখেছি, আর রাখার চেষ্টা করবো শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত।
ও বলাই তো হয়নি, কাল আমার একটা দুষ্টু মেয়ে হয়েছে ?☺। দুষ্টু হলে কি হবে, খুব sweet ওর মায়ের মতোই। প্রচুর tension-এ ছিলাম ?। কারণ আমার দুষ্টু বউটা সিজার করতে নারাজ। তাই আমাদের sweet baby টা নরমালেই হয়েছে। খুব কষ্ট হয়েছে ওর। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটা baby-ই enough, আর দরকার নেই। চৈত্র মাসে হয়েছে তাই নাম রাখতে চাইলাম চৈতালী। ফাল্গুনীর মেয়ে চৈতালী ?। কিন্তু আমার দুষ্টু বউটা তা রাখতে দিলো না। বললো- তুমি যেমন আমাকে ফাল্গুনের ফুল বলে ডাকো তেমন তোমার মেয়ে কে সবাই চৈত্রের খরা বলে ডাকবে। সেটা কি ভালো শুনাবে? তাই আমার দুষ্টু বউটা আমার দুষ্টু মেয়ের নাম রাখলো Samayra, আমার নামের সাথে মিলিয়ে ?…. যেহেতু আমি এখন আমার শ্বশুড়বাড়িতে অবস্থান করছি, তাই গ্রামের সব মহিলা আমার sweet baby টাকে দেখতে এসেছে। এদের মধ্যে একজন বলে উঠলো- মেয়ে হয়েছে, তাহলে তো বিয়ে দিয়ে শ্বশুড়বাড়ি তেই পাঠিয়ে দিতে হবে।
আমি: আমার শ্বশুড়ের তো দুই মেয়ে। তাই বিয়ে দিয়ে শ্বশুড়বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমার তো একটাই মেয়ে। আমি ঘর জামাই রাখবো, বিয়ের পূর্ব শর্ত হচ্ছে ঘরজামাই থাকতে হবে। নাহলে মেয়ে দেবোনা। মেয়ে হচ্ছে আমার কলিজার টুকরা, ওকে ছাড়া তো আমি থাকতেই পারবো না। (মেয়েকে কোলে আগলে ধরে চুমু খেয়ে বললাম)…
দুষ্টু বউ: তোমার মেয়ে যদি কলিজার টুকরা হয় তাহলে আমি কি, হ্যা? (আস্তে আস্তে বললো)
আমি: আমার কলিজার দুইটা part, তুমি জানোনা? 1st part হচ্ছো তুমি আর 2nd part হচ্ছে আমাদের আদরের এই রাজকণ্যাটা ?।
দুষ্টু বউ: হুম, জানি তো ?।
আমার life এ আমি ভীষণ happy.. আমার দুষ্টু বউটা আমার অন্নেক take-care করে। আসলে আমি এমন একজন কে ভালোবাসি যার হৃদয় জুড়ে শুধুই আমি ?। আল্লাহর কাছে শুধু এতটুকু চাওয়া আমার.. এই সুখময় মূহুর্তগুলি যেন আমার জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত থাকে ???…..(সমাপ্ত)
Some words for viewers: যারা গল্পে twist পছন্দ করেন, তাদের জন্যে আমার এই গল্প না। প্রত্যেকটা মানুষের জীবনেই কষ্ট আছে। সে কম হোক আর বেশী হোক। তাই কষ্টের কোন গল্প লিখে তাদের জীবনের কষ্টগুলি আর বাড়াতে চাইনি। চেয়েছি যাদের জীবনে কষ্ট আছে তারা যেন আমার লেখা গল্পটা পড়ে কিছুটা সময়ের জন্যে হলেও নিজের জীবনের কষ্টগুলিকে ভুলে থাকতে পারে। জানিনা আমার চাওয়া টাকে আমি পূর্ণতা দিতে পেরেছি কিনা। সেটা বিচার করার ভার নাহয় আমি আপনাদের হাতেই দিলাম।…..
?Farzana?

 

4 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে