হ্যাকারের_লুকোচুরি সিজন_২পর্ব-১১

3
1441

হ্যাকারের_লুকোচুরি সিজন_২পর্ব-১১
রাফি সীটবেল্ট বেঁধে নিয়ে জানালার দিকে তাকায়। বিমানটি রানওয়ের দিকে যাচ্ছে আর রাফিও এগিয়ে যাচ্ছে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে।
অবশেষে বিমানটি আবার আকাশে উড়লো, রুহী জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখছে আর রাফি দেখছে রুহীকে। এই পুচকী মেয়েটা মাফিয়া গার্লের এসিস্টেন্ট! এ এখানে কি করছে! কয়েক হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এই মরুভূমির দেশে এসে বসে আছে রাফিকে এসিস্ট করার জন্য! নাহ ব্যপারটা কিছুতেই হজম হচ্ছে না রাফির। একগাদা প্রশ্ন মাথার ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছে রাফির কিন্তু রুহীর স্বভাব রাফির একটু হলেও মনে আছে, “যতটুকু ঠিক ততটুকু” টাইপ। তাই হয়তো কি দিয়ে শুরু করলে সব প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে সেটাই ভাবছে রাফি। রাফি ভাবতে ভাবতে,
রুহী – দেখুন, আমি জানি আপনার মনে একগাদা প্রশ্ন জমা হয়ে আছে। সেক্ষেত্রে অপ্রাস‌ঙ্গিক কোন প্রশ্ন বা টপিক এড়িয়ে চলাটাই আপনার জন্য মঙ্গলজনক হবে।
রাফি – কিন্তু কিছু প্রশ্নের জবাব না পেলেই নয়। কম সময় ধরে জ্বালাচ্ছে না প্রশ্নগুলো যেগুলোর জবাব পাওয়া জরুরী।
রুহী – আচ্ছা? Let me guess your first question? মাফিয়া গার্ল কে? তাইতো? ঠিক বলেছি?
রাফি তব্দা খেয়ে বসে থাকে, রুহীর সোজাসাপটা জবাব এর আগেও শুনেছে রাফি। কিন্তু রাফি সুযোগ পেলে এই প্রশ্নটিই করতো রুহীকে।
রাফি – প্রশ্নটি মনে জাগাটা স্বাভাবিক নয় কি?
রুহী – তার আগে আমার একটা প্রশ্নের জবাব দিন, ধরেন আপনি জানতে পারলেন মাফিয়া গার্ল কে, তারপর কি?
রাফি – মানে?
রুহী – মানে কি, ধরুন আমি মাফিয়া গার্ল, আপনি জেনে গেলেন, এখন কি!
রাফি – আপনি মানে তুমিই মাফিয়া গার্ল!!!!
রুহী – আমি কখন বললাম আমি মাফিয়া গার্ল, ধরে নিতে বলেছি মানে কি আমাকেই মাফিয়া গার্ল হতে হবে?
রাফি – ধরে নেয়া তো দূর কেউ কখনো স্বপ্নেও বলে নি মাফিয়া গার্ল কে। তাই হঠাৎ কথাটি শুনে আসলে নিজেকে কন্ট্রোল রাখতে পারি নি।
রুহী – হয়েছে হয়েছে, এখন বলেন কি হবে জেনে কে এই মাফিয়া গার্ল!
রাফি – বাহ, এতদিন ধরে যে আমাকে গার্ডিয়ান এন্জেলের মত সাহায্য করে চলেছে তাকে চিনতে চাইতে পারি না!
রুহী – আমার প্রশ্ন ছিলো চেনা জানার পর কি?সেটা বলেন? চিনে ফেলার পর কি? প্রেম করবেন? আমি ত যতদূর জানি আপনি বিবাহিত, তাহলে কি? পরকীয়া?
রাফি আসলেই এক গোলকধাঁধাঁয় পড়ে যায়। আসলেই তো! রাফি তো মাফিয়া গার্লকে চিনতোই না, মাফিয়া গার্ল ই মাফিয়া বয় থেকে রাফিকে খুজে পেয়েছে আর সেধেপড়ে এখনো সাহায্য করছে। কিন্তু মাফিয়া গার্ল কেন এভাবে সাহায্য করবে রাফিকে সেটা বোঝার জন্য হলেও তো মাফিয়া গার্লকে চিনতে হবে রাফিকে, একবার রাফিকেই চেয়ে বসা মেয়েটা আর কি উদ্দেশ্যে রাফিকে সাহায্য করতে পারে?
রাফি – আজিব, প্রেম ভালোবাসা ছাড়া কি দুনিয়ায় আর কিছু নেই! নাকি শুধুমাত্র প্রেম ভালোবাসার জন্যই কেউ কাউকে চিনতে চায়! আমি মাফিয়া গার্লকে চিনতে চাই কারন বুঝতে চাই যে কেন একজন মানুষকে এভাবে সাহায্য করবে সে।
রুহী – একজন! মানে আপনি মনে করেন আপনাকে ছাড়া আর কাউকে হেল্প করে না MG?
রাফি – MG!
রুহী – Mafia Girl এর শর্ট MG. তো নিজেকে এতোটাই স্পেশাল মনে করেন? হুহ
রাফি – স্পেশাল ভাবতে যাবো কেন? মাফিয়া গার্ল যেভাবে দিনে রাতে আমাকে সাহায্য করে তাতে মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক যে আমিই একমাত্র ব্যক্তি।
রুহী – যদি তাই ই হতো তাহলে আপনি এই বিমানে থাকতেন না আর আমিও না। সাইবার দুনিয়ায় মানুষগুলো হয়তো আপনাকে মাফিয়া বয় হিসেবে চেনে কিন্তু রিয়েল লাইফ টা তো সম্পূর্ণ আলাদা আর এতদিনে আশা করি আপনার সে ধারনা হয়ে গেছে!
রাফি – আমার কেন সন্দেহ হচ্ছে যে আমি হয়তো মাফিয়া গার্লের সামনেই বসে আছি।
রুহী – সন্দেহ হওয়াটাই স্বাভাবিক, কিন্তু MG আপনার ব্যপারে আমাকে খুব সুন্দরভাবে ব্রিফিং দিয়েছেন এবং আমরা এতক্ষণ যে প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলছি সেই প্রসঙ্গ এরিয়ে যাওয়ার জন্য হাজারবার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। নির্দেশনা না মানার ফল কি হতে পারে তা এখন আন্দাজ করতে পারছি আমি। আর হ্যাঁ, MG র একটা পার্সোনাল লাইফ আছে, তাছাড়া সে যদি এখন আপনার সামনে বসে বকবক করতে থাকে তাহলে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দেশে গিয়ে আপনারা দুইজন কি করবেন না করবেন সেটা কে ঠিক করে দেবে?
রাফি বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে, এই চাকরিতে যোগদান করার পর থেকে সন্দেহের বাতিক হয়েছে রাফির। কোন ধরনের অসংলগ্নতা দেখলেই কেমন যেন সিগন্যাল দেয়।
রুহী – আপনার কৌতুহলবসত প্রশ্নসমূহ বাদে অন্য কোন প্রশ্ন থাকলে জানতে পারেন।
রুহীকে মাফিয়া গার্লের এসিস্টেন্ট হিসেবে দেখে রাফি ভেবেছিলো হয়তো রুহী বলতে পারবে মাফিয়া গার্ল কে, কিন্তু একে তো জিলাপির প্যাঁচ মেরে পাঠিয়ে দিয়েছে রাফির কাছে। চাইলেও কোন জবাব পাওয়া সম্ভব না। তাই কৌশল অবলম্বন করতে চাইলো রাফি।
ফোন বের করে *6666# ডায়াল করলো আর খুবই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে রুহীর দিকে তাকিয়া রইলো এটা বুঝতে যে নিজের করা সন্দেহ সত্যি কি না।
কিন্তু রুহীর কাছে না কোন মেসেজ আসা আর না কোন সিগন্যাল, উল্টো রাফির ফোনে মেসেজ আসে,
“I gave you a live assistant coz I have to do my work. She will help, you don’t have to worry.”
রুহী হঠাৎ নড়ে ওঠে, পকেট থেকে ফোন বের করে কি যেন চেক করে, তারপর ড্যাবড্যাব করে রাফির দিকে তাঁকিয়ে থাকে। রাফি বিব্রতবোধ করে চাহনীটা ইগনোর করতে চাইলেও মুখোমুখি বসে থাকা দুইজন মানুষের চাহনী ইগনোর করা খুবই কষ্টসাধ্য। অগত্যা রুহী নিজেই বলে উঠলো,
রুহী – MG আমাকে এখানে পাঠিয়েছে আপনাকে এসিস্ট করার জন্য, সেটা কি আপনার পচ্ছন্দ হচ্ছে না?
রাফি – কেন? পচ্ছন্দ হবে না কেন!

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/



রুহী – তাহলে এটা কি?
বলে রুহী তার মোবাইলটা রাফির দিকে ঘুরিয়ে ধরলো, রাফি চেয়ার থেকে একটু সামনে ঝুকে রুহীর স্ক্রীনটা চোখের সামনে নিয়ে আসে। একটা মেসেজ, MG থেকে,
“HE IS YOUR RESPONSIBILITY TILL NEXT DESTINATION , IF HE NEEDS ME TILL THEN, THAT MEANS YOU ARE NOT DOING YOUR TASK PROPERLY. SHOULD I REPLACE YOU? I HAVE OPTIONS.”
রাফি বড়সড় একটা ঢোক গেলে। সামনে বসা মেয়েটা মাফিয়া গার্ল কিনা সেটা কনফার্ম না হলেও রাফি যে আর চালাকি করতে পারবে না সেটা বুঝে গেলো।
রুহী – MG কে আমার বিরুদ্ধে রাগিয়ে দিয়ে কি হাসিল করতে চান আপনি? এমনিতেই আপনাকে ডোনারদের ডিটেলস দিতে গিয়েছিলাম জেনে MG ক্ষেপে গিয়েছিলো, তার উপর আজ আবার…………. আমার দায়িত্ব শেষ হোক তারপর যা ইচ্ছা তাই কইরেন MG র সাথে।
রাফি ভদ্র ছেলের মত বকাগুলো শুনে বসে থাকে। চাইলেই জবাব দিতে পারতো দাঁতভাঙ্গা কিন্তু তর্ক করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না ভেবে চুপ মেরে গেলো রাফি।
বাকী যাত্রায় টুকটাক কথা হলেও লম্বা কনভার্সেশন হলো না আর। বেশীরভাগ সময়েই রুহী মোবাইলে অথবা নোটপ্যাডে সময় দিচ্ছিলো অথবা জানালা দিয়ে মেঘের ওড়াউড়ি দেখেছিলো। আর রাফি সেই ল্যাপটপটা নিয়ে দেশ ছাড়ার পর ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর আপডেট নিতে থাকলো।
বেশ লম্বা যাত্রা শেষে সেই কাঙ্ক্ষিত দেশের ল্যান্ড করলো বিমানটি। রাফি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে এটা কোন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট নয়, আসেপাসের পরিবেশ সেটা বলছে না
রাফি – এ কোথায় ল্যান্ড করলাম আমরা!
রুহী – অস্ত্র ব্যবসায়ীর পার্সোনাল রানওয়েতে। তাড়াতাড়ি নামতে হবে কারন স্যাটেলাইটে এই বিমান ধরা পড়লে পুলিশ মিলিটারি সব একসাথে এখানে চলে আসবে।
কিন্তু এখানে ঘটলো আর এক বিপত্তি, এতক্ষন বিমানের ভেতরে এসিতে কিচ্ছু বোঝা না গেলেও শহরের তাপমাত্রা এককের ঘরে, যাকে বলা যায় হাঁড়কাঁপানো শীত। রুহী মোটামুটি প্রস্তুত থাকলেও রাফি কোনভাবেই এমন পরিস্থিতির জন্য তৈরী ছিলো না। রুহী হয়তো বাড়ি থেকে নিজের জন্য একটা জ্যাকেট নিয়ে আসলেও রাফির কাছে তেমন কিছুই ছিলো না।
রাফি – (অস্থিরতা নিয়ে) তাড়াতাড়ি নামতে হবে তো বুঝলাম কিন্তু নামবো কিভাবে! শীতের কোন কাপড় নেই আমার কাছে আর এই যে ভয়াবহ ঠান্ডা।।।
রুহী – ( দীর্ঘস্বাস ছেড়ে উপরে তাকিয়ে) Ohh God, why you create boys? Why?
রাফি – আমার সাথে জ্যাকেট নেই বলে সোজাসুজি উপরওয়ালার কাছে নালিশ ঠুকে দিলেন! এখানে আসতে হবে জানলে দেশ থেকে গরম কাপড় প্যাক করে নিয়ে আসতাম।
রুহী একটা অদ্ভুত বিরক্তিকর কেয়ারলেস একটা লুক দিয়ে বলে
রুহী – রিয়েলি!
রাফি আর কোন কথা না বাড়িয়ে পাইলটের চেম্বারের দিকে যায়, কিছুক্ষণ কথা বলার পর সহকারী পাইলটকে হাত দিয়ে বিমানের পিছনের অংশে কি যেন দেখিয়ে দেয়।
সহকারী পাইলট বিমানের পেছনের অংশে একটা আলমারির মত অংশ খুলে রাফিকে বেশ মোটাসোটা একটা জ্যাকেট বের করে দিলো। রুহী ততক্ষণে জ্যাকেট পরে নিজের ব্যাকপ্যাক ঘাড়ে আর কোমরে ঝোলানো একটা ব্যাগ নিয়ে নামতে তৈরী। রাফিকে মোটা জ্যাকেটটা পড়া অবস্থায় দেখে রুহী হেঁসে দিলো। অদ্ভুত সাইজের জ্যাকেটটা পড়লে যে কাউকেই হাস্যকর লাগবে যদি দর্শক স্বদেশী কেউ হয়, এই দেশে হয়তো এটা কোনো ব্যাপারই না।
রাফি ঝটপট ব্যাকপ্যাক ঘাড়ে আর লেদার ব্যাগটা হাতে নিয়ে নেমে পড়লো। ঠান্ডা হাওয়ায় প্রথম ছোঁয়াটা এতটা ভয়াল হবে বুঝতে পারে নি, শীতকাল ভালো লাগতো রাফির কিন্তু আজ থেকে আর নয়।
রাফি – মানুষ বেঁচে থাকে কিভাবে, এত ঠান্ডায়?
রুহী – কিছুদিন পর তুষারপাত শুরু হবে, সেটা দেখতে আরো বেশী সুন্দর।
রাফি প্রশ্নের সাথে জবাবের মিল না পেয়ে আর কোন কথাই বলে না। রুহী আগে আগে হেঁটে যেতে থাকে আর রাফি অনুসরণ করতে থাকে।
কিছুদূর যাওয়ার পর একটা গ্যারেজ জাতীয় কিছু চোখে বাধে দুইজনেরই, রুহীর হাঁটার ধরন বলে দিচ্ছে গন্তব্য আপাতত ওই গ্যারেজটি।
রাফি আশেপাশের পরিবেশে চোখ বুলাতে থাকে, গাছপালা এখনো সবুজ হয়ে আছে, এত ঠান্ডায় প্রকৃতির এমন রুপ। গ্রাম অথবা জঙ্গল ই বলা যায় এই এলাকাকে। গ্যারেজের অন্য পাশে একটা বাড়ি দেখা যাচ্ছে। একটা মাত্রই বাড়ি পুরো এলাকাতে। হেঁটে যেতে যেতে পেছন থেকে সাঁই করে প্রাইভেট জেটটি উড়ে গেলো।
রুহী ঝটপট গ্যারেজের কাছে এসে কিছু না বলে রাফির কাছে হাত পাতে। রাফি বুঝতে পারে না যে রুহী কি চায়। নজর ঘোরায় রাফি। গ্যারেজের সাইডডোরে তালা লাগানো আর রুহী হয়তো চাবি চাইছে, কিন্তু কেউ ত রাফিকে কোন চাবি দেয় নি!
রাফি – কি! আমার কাছে কোন চাবি নেই।
রুহী বিড়বিড় করে কি যেন বলতে বলতে রাফির ল্যাদার ব্যাগটি হাতে নিয়ে নিলো। ছোট্ট একটা পকেট যেখানে এক দুই পয়সার কয়েন রাখা যায় সেখান থেকে দুইটা চাবি টেনে বের করলো।
রাফি ত নিজেই অবাক। ব্যাগেই ওইরকম পিচ্চি একটা পকেটে এমন জরুরী চাবি থাকতে পারে তা যে কারো ভাবনাচিন্তার বাইরে থাকাটাই স্বাভাবিক।
রুহী চাবি নিয়ে গ্যারেজের তালা খুলে ফেললো। ভেতরটা এমন অন্ধকার যে নাকের সামনে কিছু থাকলেও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না।
রুহী – হাদারামের মত দাড়িয়ে না থেকে আলোর সুইচটা খুঁজে বের করা যাচ্ছে না! দরজার আশেপাশেই থাকার কথা।
রাফি দরজার পাশে হাত বাড়াতেই আলোর সুইচটা পেয়ে যায়। অন করে দেয় সুইচটা। বেশ ভালো জিনিসপত্র রয়েছে ম্যাকানিক্সের আর পর্দা দিয়ে ঢাকা একটা গাড়ি।
রাফি এগিয়ে গিয়ে পর্দা সরিয়ে ফেলে। বেশ চকচকে গাড়িটা। দেশের নামকরা ব্রান্ডের।
রুহীর কাছে থাকা অন্য চাবিটা দিয়ে গাড়ির দরজা খুলে রাফিকে ড্রাইভ করতে বললো।
রাফি সীটবেল্ট বেঁধে রুহীর কাছে গন্তব্য জানতে চায়। রুহী গাড়ির জিপিএস এ লোকাল ভাষায় একটা ঠিকানা ইনপুট দিয়ে সীটবেল্টটা বেঁধে নিলো। রাফি আর কথা না বাড়িয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলো। বেশ লম্বা যাত্রা তাই রাফি যেন ড্রাইভ করতে করতে ঘুমিয়ে না পড়ে সেজন্য রুহী মাঝে মাঝেই বিভিন্ন প্রসংগ টেনে কথা বলতে লাগলো। রাফি প্রসংগ ঘুরিয়ে যতবারই মাফিয়া গার্লের নাম নিয়েছে ঠিক ততবারই রুহী প্রসংগ এড়িয়ে গেছে।
অবশেষে গন্তব্যে পৌছায় রাফি এবং রুহী।
রুহী – এখানে রাখতে হবে।
রাফি গাড়ি পার্ক করে রাখে একটা ক্যাফের পার্কিংএ রুহী গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির চাবি চায় রাফির কাছে। রাফি গাড়ি থেকে জিনিসপত্র বের করে লক করে দেয় গাড়িটা আর চাবি তুলে দেয় রুহীর কাছে।
রুহী – এখানেই অপেক্ষা করুন। কোথাও যাবেন না।
রুহী ক্যাফের ভেতরে গিয়ে কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে আসে।
রুহী – অস্ত্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সাহায্য নেয়া শেষ হলো। এখন আমরা আমাদের মত।
রাফি – আমরা আমাদের মত তো বুঝলাম কিন্তু কোথায় যাবো!
রুহী রাস্তার পাশে দাড়িয়ে একটা গাড়ির কাছে লিফট চায়। গাড়ির ড্রাইভারের সাথে লোকাল ভাষায় কথা বলে রুহী। ড্রাইভারকে খুব খুশি মনে হলো আর রুহীকে …………
এই মেয়ে মানুষ ফুসলাতে ওস্তাদ। কি না কি বলে ড্রাইভারকে পটিয়ে ফেললো গন্তব্য পর্যন্ত পৌছে দেয়ার জন্য। রুহী সামনে ড্রাইভারের পাশের সীটে বসলো আর রাফি বসলো পেছনে। রুহী আর ড্রাইভার দুইজনে লোকাল ভাষায় খোসগল্পে মেতে ওঠে আর লোকাল ভাষার কিছুই বুঝতে না পারা রাফি বসে বসে জানালা দিয়ে প্রকৃতি দেখতে থাকে। আসলেই অনেককিছু জানা বাকী রাফির, অনেক কিছু করা বাকী।

3 মন্তব্য

  1. অপেক্ষা জিনিসটা অপ্রিয় হলেও আমাদের সেটাই ভালোলাগে।
    অনেক ইন্টারেস্টিং এবং কোতুহলী গল্প,
    পরের পার্টগুলো দেয়ার জন্য অনুরোধ রইল।
    ধন্যবাদ।।।।।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে