LOVE part:25(last part)

2
3168

LOVE❤
part:25(last part)
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)

-আশফিইইই গাড়ি বের কর

আবেগ রিদিতা কে কোলে তুলে নিল

-আআআআ আবেগগ আমার বাচ্চা
-কিছু হবে না রিদি কিছু হবে না

আবেগ রিদিতা কে নিয়ে গাড়ি র পেছন সিটে শুইয়ে দিয়ে রিদিতা র মাথা নিজের কোলে তুলে নিল।আশফি ড্রাইভি করছে।আবেগের বাবা অন্য গাড়ি তে বাকি সবাইকে নিয়ে আসছে।সবার কান্না আরো বেরে যাচ্ছে

-আবেগগ আমার বাচ্চা
-কিছু হবে না রিদি।আমি আছি তো।আমরা এক্খুনি হসপিটাল এ চলে যাব।আশফি সামনে যেখানে হসপিটাল পাস সেখানে যা।দ্রুত গাড়ি চালা
-চালাচ্ছি আবেগ।তুই ভাবীকে দেখ

আশফি একটা কমিউনিটি ক্লিনিক এ গাড়ি থামালো।আবেগের বাবা ও ফলো করে সবাইকে নিয়ে চলে এসেছে

-আশফি তুই গিয়ে ডক্টর রকে দেখ।আমি রিদি কে নিয়ে আসছি

আবেগ রিদিতা কে কোলে তুলে হসপিটাল এর ভেতর চলে গেল

-আবেগ আমার #LOVE❤ এর কিছু হবে না তো ।আবেগ ওর কিছু হলে আমি বাচবো না
-কিছু হবে না রিদি।তুমি শান্ত হও

আশফি গিয়ে স্ট্রেচার নিয়ে এলো।ডক্টর ও এলেন

-ওহ নো।ওনার এই অবস্থা কি করে হলো।সিস্টার ওটি রেডি করুন এক্খুনি সিজারিং করতে হবে

রিদিতা কে ওটি তে নিয়ে যাবে

-আবেগ পানির তেষ্টা পেয়েছে ।আমি পানি খাব আবেগ
-দাঁড়াও দেখছি
-না মি,চৌধুরি ।ওনাকে এখন অপারেশন করতে হবে।কিছু খেতে দেওয়া যাবে না
-কিন্তু ডক্টর
-সরি মি,চৌধুরি

রিদিতা কে ওটি তে নিয়ে যাচ্ছে আবেগ রিদিতার হাত ছারছে না।মনে হচ্ছে যেন চিরদিনের মতো চলে যাবে রিদিতা হাত ছেড়ে দিল।ওটির দরজা বন্ধ হয়ে গেল

কিছুক্ষণ পর ডক্টর বেরিয়ে এলেন

-মি,চৌধুরি
-ডক্টর কি হয়েছে আমার রিদিতা,,,,
-মি,চৌধুরি আপনার ওয়াইফ এর কন্ডিশন ভালো না।সব কিছু আল্লাহ্ র হাতে।কিন্তু এই পরিস্থিতিতে আপনাকে ডিসিশন আপনাকে নিতে হবে।আপনার ওয়াইফ কে জিজ্ঞাসা করেছি উনি বলেছেন ওনার বাচ্চা কে বাচাতে।আমরা আপনার ডিসিশন চাই।ওয়াইফ অথবা বাচ্চা যে কোন একজনকে বাছতে হবে আপনার
-কি বলছেন ডক্টর ।আমি,,,,
-মি,চৌধুরি আমাদের হাতে সময় নেই আপনি উওর দিন
-আমার ওয়াইফ কে চাই আমি।আমার রিদিতা কে চাই

হঠাত্ একজন নার্স বেরিয়ে এলেন

-ডক্টর ওনার ওয়াইফ ওনার সাথে কথা বলতে চান
-মি,চৌধুরি আপনি যান।কিন্তু দ্রুত কথা শেষ করবেন আমাদের হাতে সময় নেই

আবেগ ওটিতে গেল।রিদিতা কে শুইয়ে রেখেছে।পাশে স্যালাইন চলছে

-নার্স আপনি একটু বাইরে যান আমি আমার হাসবেন্ড এর সাথে কথা বলতে চাই
-ওকে আমি যাচ্ছি

নার্স বেরিয়ে গেলে আবেগ গিয়ে রিদিতা র বেডের পাশে বসলো

-রিদি
-আবেগ
-রিদি তুমি কেনো বাচ্চা র কথা বললে
-আবেগ তুমি আমার সিদ্ধান্ত এ রাজী হও
-এসব কি বলছো তুমি রিদি ।তোমাকে ছাড়া আমি কিভাবে থাকবো।তুমি থাকলে আমরা পরেও বাচ্চা নিতে পারবো।আমার সিদ্ধান্ত আমি বদলাবো না রিদিতা
-তোমাকে বদলাতে হবে।কেউ না জানলে ও আমি জানি আমার বাচ্চা র ওপর তোমার কোন অধিকার নেই।ওর জীবনের সিদ্ধান্ত তুমি নিতে পারো না
-রিদিতা আআআ
-হ্যাঁ আবেগ এটা সত্যি ।যখন তোমাকে দরকার ছিল আমার তখন তুমি আমার পাশে ছিলে না ।ও ছিল সব সময় প্রতি সেকেন্ডে ।অনেক বার আমি ভেবেছি নিজেকে শেষ করে দিতে।বাঁচার ইচ্ছে ছিল না আমার ।শুধু ওর জন্য আমি নিজেকে বাঁচিয়ে রেখেছি প্রতি মূহুর্তে সব কিছুর সাথে সংগ্রাম করেছি।ওকে চাই আমি আবেগ।আমি নিজের জন্য ওকে হারাতে পারব না।আল্লাহ্ যদি চান তবে দুজনেই ফিরবো।যদি তা না হয় আমার বাচ্চা কে চাই আমি আবেগ আমার বাচ্চা কে চাই।তুমি কোন কথা বলো না আবেগ।তুমি এই সিদ্ধান্ত ডক্টর র কে জানিয়ে দেও
-রিদিতা আমি কি করে,,,,,
-আমি জানিনা আবেগ।একদিন তোমার জন্য সব হারিয়ে ছি আমি আজ তোমার কথাতে আমার সন্তান কে হারাতে পারব না।আমি মা হতে চাই আবেগ আমি আমার বাচ্চা র কান্না শুনতে চাই আবেগ।তোমার পায়ে পরি আমাকে ফিরিয়ে দিও না আবেগ
-রিদি তুমি আমাকে ক্ষমা করতে পারো নি তাই না।এজন্য এসব বলছো।রিদি আমি তোমাকে ছাড়া কিভাবে বাচবো
-জানিনা আবেগ
-রিদি আমাকে ক্ষমা করে দেও
-আবেগ তোমাকে খুব ভালোবাসতাম আবেগ খুব।সেদিন আমি সইতে পারিনি তোমাকে থাপ্পড় মেরেছি ।তুমি ক্ষমা করে দেও আবেগ আমাকে ক্ষমা করে দেও
-রিদি আর লজ্জা দিও না আমাকে।ক্ষমা করে দেও ।আমি তোমাকে ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারব না।এতো বড় শাস্তি দিও না আমাকে
-আবেগ জানিনা বেচে থাকবো কি না।যদি বেচে ফিরি আর আমার বাচ্চা আমার কোলে না থাকে মনে রেখো কখনো তোমাকে ক্ষমা করবো না।
-রিদিতা আআ
-হ্যাঁ আবেগ।আমি আমার বাচ্চা যদি ভালো হয়ে ফিরি তো আমি ওকে নিয়ে দূরে চলে যাব তোমার থেকে দূরে কখনো ক্ষমা করবো না আবেগ
-রিদিতা আআআ
-হ্যাঁ আবেগ।তুমি ক্ষমা চাও বলো।আমি যদি মরে যাই তো মনে রেখো তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি।বেচে থাকতে তোমাকে ক্ষমা করতে পারব না আবেগ পারব না।অনেক ভালোবেসে ছিলাম তোমাকে তুমি আমাকে অনেক নিচে নামিয়ে ছো।একজন বেশ্যা পর্যন্ত বলেছো।তোমাকে বেচে থাকতে কিভাবে ক্ষমা করবো আবেগ
-রিদিতা এতো বড় শাস্তি দিও না।আমি তোমাকে ভালোবাসি রিদিতা ।তোমার পাঠানো ডিভোর্স পেপার এ আমি আজো সাইন করি নি
-মানে
-হ্যাঁ রিদিতা ডিভোর্স পেপার তুমি আমাকে পাঠিয়েছিলে আমি না
-আমি তো নিজের শেষ আত্মসম্মান টা রাখার জন্য আমি পাঠিয়েছিলাম আবেগ
-রিদি তাহলে কেন এই শাস্তি র কথা বলছো
-আবেগ একটু জরিয়ে ধরবে আমাকে
-এভাবে কেন বলছো তুমি
-যদি আর কখনো বলতে না পারি তোমার বুকে একবার জায়গা দেও না আবেগ

আবেগ সজোরে রিদিতা কে জরিয়ে ধরলো

-আবেগ একটু তোমার মুখটা কাছে নিয়ে এসো না।অনেক দিন তোমার কপালে আদর করিনা।একটু এগিয়ে এসো না

আবেগ রিদিতার দিকে এগিয়ে গেল।রিদিতা আসতে করে আবেগের কপালে নিজের ঠোট ছোয়ালো ।আবেগ আর পারলো না আটকে রাখতে নিজেকে।কাঁদতে কাঁদতে রিদিতা কে জরিয়ে ধরে চোখে মুখে রিদিতা র পুরো গালে নিজের ঠোট ছুইয়ে দিল আবেগ

-আবেগ আমাকে একটা কথা দেবে
-কি বলো
-আবেগ আমি যদি মরে যাই আমার বাচ্চা টাকে তুমি দেখো আবেগ।তুমি কখনো বিয়ে করোনা আবেগ।যদি তুমি বিয়ে ই করো তাহলে আমার বাচ্চা টাকে কোন অনাথ আশ্রমে দিয়ে এসো
-রিদি চুপ কর কি বলছো তুমি ।আমার সন্তান কে কেন আমি অনাথ আশ্রমে দেব
-আবেগ জানো আমার বাচ্চা টা না আমার গর্ভ এ থাকা কালীন অনেক কষ্ট পেয়ে ছে।নিজের মায়ের সাথে সাথে ও ও না কুকুর এর মুখে দেওয়া খাবার খেয়েছে।আমার বাচ্চা টা কে আমি তেমন ভালো খাবার ও দিতে পারিনি খেতে।ওর মায়ের সাথে ও ও অনেক কষ্ট সহ্য করেছে।তুমি প্লিজ সৎ মা নামক ঐ কষ্ট টা আমার বাচ্চা টাকে দিও না
-রিদি তা কেনো এই কথা বলছো ।তুমি ও তো থাকবে আমার সাথে
-হয়তো থাক আ হবে না আবেগ।মানুষ মৃত্যুর আগে তার শেষ সময় টা বুঝে যায় আবেগ।আমার শেষ সময় বোধ হয় চলে এসেছে আবেগ
-রিদিতা চুপ করো।কিছু হবে না তোমার
-আবেগ আমার আরেকটা কথা রাখবে বলো
-কি বলো
-আবেগ আমি মরে গেলে তুমি একটা মসজিদের পাশে কবর দিও।আর শোন প্রতি শুক্রবার আমার কবরের কাছে তুমি আসবে।আমার বাচ্চা কেও নিয়ে আসবে আবেগ আমি তোমাদের দেখবো।আবেগ শোন তুমি কিন্তু আমার প্রত্যেক মৃতবারষিকিতে কিন্তু তুমি আসবে আর আমার #LOVE ❤ কে নিয়ে আসবে ।শোন তুমি না আমার কবরের সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের #LOVE❤ এর জন্মদিন পালন করবে আমি দেখবো।তুমি কিন্তু ঐ নীল পানজাবি টা পরে আসবে আবেগ ঐ যে বৃষ্টি র দিন তোমাকে দিয়ে ছিলাম ।ঐটা ।আমি যত্ন করে রেখেছি আবেগ।জানো তুমি গায়ে দেওয়ার পর ওটা আমি ওয়াশ করিনি।ওতে তোমার গায়ে র গন্ধ লেগে আছে আমি প্রতিদিন তোমার গন্ধ শুকতাম
-রিদিতা চুপ করবে।কিছু হবে না তোমার শুনতে পেয়েছো তুমি কিছু হবে না
-আবেগ তুমি আমার মরা মুখ দেখতে চেয়ে ছিলে তাই না
-রিদিতা আমি সেদিন মুখ ফসকে বলেছিলাম ।আমি মন থেকে বলিনি।তুমি মরলে আমি কি নিয়ে থাকবো
-আবেগ জানো বন্দুক এর গুলি আর মানুষের মুখের কথা এক।একবার বেরোলে আর ফেরে না
-রিদিতা তোমাকে ছাড়া আমি কি নিয়ে বাচবো বলো। I ❤ u রিদিতা I ❤ u
– I ❤ u too আবেগ I ❤ u too
-তাহলে কেন এই কথা বলছো
-আবেগ বাইরে যাও।ডক্টর কে পাঠাও।আর অপেক্ষা করো আমাদের #LOVE ❤ এর জন্য আর আমার মরা মুখ দেখার জন্য
-রিদিতা আর আমাকে কষ্ট দিও না।আর শাস্তি দিও না
-আবেগ আমার খুব কষ্ট হচ্ছে আবেগ।আমার হাতে সময় নেই।তুমি ডক্টর কে পাঠাও
-এক্খুনি পাঠাচ্ছি

আবেগ উঠে চলে যাচ্ছে সে সময় রিদিতা হাত টেনে ধরে।আবেগ পেছনে ফেরে

-আবেগ ডক্টর কে সিদ্ধান্ত জানিও দিও।আমার সিদ্ধান্ত তোমার সিদ্ধান্ত আমাদের #LOVE❤ এর সিদ্ধান্ত
-রিদিতা আমি,,,,,
-আবেগ ভালোবাসি খুব অনেক বেশি
-রিদিতা আমি ও ভালোবাসি খুব খুব খুব।ভালোবেসে যাব
-আমিও ভালোবেসে যাব
-আমিও
-খোদা হাফেজ আবেগ।অপেক্ষা করো
-খোদা হাফেজ

আবেগ বেরোচ্ছে আর পেছন ঘুরে রিদিতা কে দেখছে।রিদিতা হাত নাড়িয়ে আবেগকে বিদায় দিল।আবেগ কান্না ভরা চোখে রিদিতা কে দেখে বেরিয়ে গেল।আবেগ তখনো জানে না রিদিতা তাকে শেষ বিদায় দিল

-আল্লাহ্ আমি প্রতি রাতে তাহাজ্জুদের নামাজে তোমাকে ডেকেছি।আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিও না।আমার সন্তান কে তুমি হেফাজত করো।আমি যা যা পাপ করেছি তুমি মাফ করে দেও

আবেগ ডক্টর এর কাছে গেল

-মি,চৌধুরি আপনার ডিসিশন

বুক ফেটে যাচ্ছে তবুও আবেগ কে বলতে হলো

-আমার সন্তান কে বাঁচান ডক্টর
-are you sure মি,চৌধুরি
-yes,I am sure
-okay

ডক্টর ভেতরে চলে গেলেন।ওটির আলো জলে উঠেছে

অপারেশন শেষে র দিকে।ডক্টর নার্স রা একবার রিদিতা র দিকে তাকাচ্ছেন আরেক বার স্ক্রিন এর দিকে।রিদিতা র পালস ক্রমশ কমে আসছে

হঠাত্ কান্না র আওয়াজ হলো।রিদিতা চোখ একটু নড়ছে।রিদিতা চোখ খুলতে পারছে না।চারিদিক অন্ধকার হয়ে আসছে।শেষ বারের মতো রিদিতা র কানে শেষ কথা গুলো গেল।নিজের সন্তান এর কানের আওয়াজ আর নার্স এর কথা

-মিসেস চৌধুরি আপনার একটা ফুটফুটে মেয়ে হয়ে ছে।শুনছেন আপনি।মিসেস চৌধুরি ।স্যার স্যার ওনার পালস

ডক্টর নার্স স্ক্রিন এর দিকে তাকালো রিদিতা র পালস থেমে গেছে।রিদিতা আসতে আসতে ঘুমিয়ে গেল চিরকালের মতো।আর শোনা হলো না মা ডাক দেখতে পারলো না একবারের জন্য তার #LOVE❤ কে

-আল্লাহ্ র কি খেল।ওনার বেবির লাইফ রিস্ক বেশি ছিল।আর সেখানে উনি,,,,সিস্টার বেবিকে ক্লিন করে আনুন আমি ওনাদের খবর দিই

ওটির লাইট বন্ধ হয়ে গেল।বাইরে সবাই অপেক্ষা করছে।আশফি আবেগ ডক্টর কে দেখে বেরিয়ে এলো

-ডক্টর আমার রিদিতা
-,,,,,,,
-ডক্টর কথা বলুন আমার রিদিতা
-মি,চৌধুরি সবার হায়াত আল্লাহ্ র হাতে
-কি সব বলছেন আপনি।বলুন আমার রিদিতা,,,,,
-she is no more

আবেগের পুরো পৃথিবী ওখানেই থমকে গেল।রিদিতা র পরিবার এর সবাই কাঁদছে

-নাহহহহ

আবেগ ডক্টর কে ঠেলে ফেলিয়ে ওটিতে ঢুকলো।রিদিতা র মুখ সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা।আবেগ গিয়ে কাপড় তুলে ফেললো

-এই রিদি এই রিদি ওঠো না।এই রিদি দেখো ডক্টর কি বাজে কথা বলছে।এই রিদি ওঠো।এই ওঠ না।এই রিদিতা ।এই তোকে ছাড়া আমি কিভাবে বাচবো এই আমিতো মরে যাব।তুই শুনেছিস না।ওঠ এই রিদিতা ।এই আমি কি করবো তোকে ছাড়া ।এতো বড় শাস্তি দিস না আমাকে।ওরে আমি মরে যাব তুই বুঝেছিস না এই রিদিতা

আবেগ কাঁদছে আর এই কথা বলছে।আবেগ এর কথা শুনে ডক্টর দের চোখে পানি চলে এলো।নার্স এসে বাচ্চা টাকে আশফি র কোলে দিল

-আপনারা বাচ্চা টাকে নিন।ওর কান্না থামছেই না

আশফি বেবি কে কোলে নিয়ে গিয়ে আবেগ এর কাছে গেলো

-আবেগ দেখ তোর বাচ্চা ।আবেগ তোর আর রিদিতা ভাবির ভালোবাসা আবেগ ও কাঁদছে ওকে ধর

আবেগ ছোট্ট বেবিকে কোলে নিয়ে রিদিতা র কাছে গেল।অবাক ব্যাপার আবেগের কোলে গিয়ে বেবির কান্না থেমে গেল

-এই রিদি বুঝেছি আমার ওপর রাগ করেছো না।দেখো আমাদের সন্তান আমাদের ভালোবাসা রিদি আমাদের #LOVE❤।রিদি চোখ খোলো না।এই রিদি চলো আমাদের ছোট্ট সংসার হবে।এই রিদি শুনছো না।ওঠো না।এই রিদিতা ।এই এই দুধের শিশুকে নিয়ে কি করবো আমি ওর যে তোমাকে প্রয়োজন রিদিতা ওর তোমাকে প্রয়োজন

আবেগ কাঁদতে কাঁদতে বসে পরলো।আশফি আবেগের পাশে গিয়ে কাঁধে হাত দিলো

-আবেগ রিদি ভাবি নেই আবেগ।চলে গেছে।মেনে নে আবেগ।দেখ তোর বাচ্চা টা তোর কাছে গিয়ে কান্না থামিয়ে দিয়ে ছে।দেখ তোর বাচ্চা টা তোকে ছোট চোখ দিয়ে দেখছে আবেগ।আবেগ তুই যদি ভেঙে পরিস ওর কি হবে।কোথায় যাবে ও।ও তো দুনিয়া তে এসেই মা কে হারালো।ওর কি হবে

আবেগ ছোট্ট #LOVE❤ কে বুকে জরিয়ে নিল

-না ও আমার #LOVE ❤।আমাদের #LOVE❤।ওর কিছু হতে দেব না আমি।ও যে আমার রিদিতা র শেষ স্মৃতি ।ওর কিছু হবে না ।আল্লাহ্ এ কি শাস্তি দিলে তুমি আমাকে।এ কি শাস্তি দিলে।রিদিতা আআ এই ক্ষমা র দরকার ছিলো না আমার রিদিতা আআআআআ

আজ আবেগ পৃথিবী র সবচেয়ে অসহায় ।রিদিতা র কথা সত্যি হলো।আবেগ আজ হাজার চাইলে ও রিদিতা কে পাবে না

৩ বছর পর

-বাবাই আমার তিলিপ লাদিয়ে দেও
-এই তো মামোনি হয়ে গেছে
-আমার দুতো
-দেখি পা দেখি।এই তো হয়ে গেছে।কি সুন্দর লাগছে আমার প্রিনসেন্স কে
-বাবাই তলো এবার মামোনির তাছে দাব
-যাবো তো
-বাবাই তলো মামোনি কে হামি দেব
-এসো

ছোট্ট লাভ রিদিতা র ছবিতে গিয়ে চুমু দিল

-লাবু উ মামোনি
-নেও বাবাইকে দেব এ না

লাভ বাবা র গালে পাপ্পি দিল

-লাবু উ বাবাই
-লাভ ইউ টু আমার প্রিনসেন্স

হ্যাঁ আজ আবেগ চৌধুরি আর রিদিতা চৌধুরি র মেয়ে আবেদিতা(আবেগ+রিদিতা) চৌধুরি #LOVE❤ এর জন্মদিন ।আজ #LOVE❤ তিন বছরে পা রাখলো।আর আজ রিদিতা র তৃতীয় মৃত্যু বার্ষিকী

এই তিন বছরে অনেক কিছু পালটেছে

আবেগ আজ একজন পরিপূর্ণ বাবা।আশফি দিশা কে বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করেছে।নিশিতা প্রেগন্যান্ট ।ওর দ্বিতীয় বাচ্চা এটা।আজাদ চৌধুরি আবেগ চৌধুরি #LOVE❤ কে নিয়ে তাদের তিনজনে র ছোট সংসার গড়েছে

আর হ্যাঁ তারাও শাস্তি পেয়েছে ।নোভা কে দেখলে মনে হয় এখন পন্বাশ বছরের বুড়ি।নোভা র স্কিন ক্যান্সার হয়ে ছে।শুধু তাই না অতিরিক্ত পিল খাওয়ার কারণে নোভা র জরায়ুতে টিউমার হয়ে ছে।নোভা প্রতিক্ষণ এ নিজের মৃত্যুর প্রহর গুনতে চায় ।আজ সে বুঝেছে তার পাপের শাস্তি ।আর লাবনি সেদিন রিদিতা কে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি তে এক্সিডেন্ট করে।তারপর লাবনি র এক পা কেটে ফেলা হয়েছে ।লাবনি আজ ঢাকা শহরের পঙ্গু ভিক্ষুক ।লাবনি যেই হাত দিয়ে রিদিতা কে ধাক্কা দিয়ে ছিল সেই হাত গ্যাঙ্গার রোগে পচে গেছে।মাংস খসে পরছে।আর নোভা র বাবা তাকে আবেগের বাবা মহিলাদের দিয়ে জুতো পিটিয়ে মুখে চুনকালি মাখিয়ে ছেড়ে ছে।সেই শোকে তিনি আত্মহত্যা করেছেন

আশফি আবেগের ঘরে এলো

– #LOVE❤ আরে কি সুন্দর লাগছে আমার প্রিনসেন্স কে

লাভ নীল রঙে র জামা পরেছে।আর ওর বাবা আবেগ সেই নীল পানজাবি ।লাভ নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে একবার ঘুরপাক দিলো।আশফি ওকে কোলে তুলে নিল

-ওরে আমার প্রিনসেন্স রে
-মামাই তলো আমরা মামোনি র কাছে যাই
-চলো।আবেগ আয়
-তুই ওকে নিয়ে যা আমি আসছি

আশফি লাভকে নিয়ে চলে গেল

আবেগ কাপড় দিয়ে রিদিতা র ছবিটা মুছে দিল।পুরো ঘরে রিদিতা র ছবি রেখেছে আবেগ।সব ছবিতেই রিদিতা র হাসি মাখা মুখ

আবেগ বেরিয়ে গেল

রিদিতা র মা বাবা নিশিতা দিশা সবাই এসেছে রিদিতা র কবরের কাছে দাঁড়িয়ে আছে।মসজিদের পাশেই আবেগ রিদিতার কবর দিয়ে ছে

-বাবাই মামোনি র কাতে দাব।নামিয়ে দেও

আবেগ কোল থেকে মেয়ে কে নামিয়ে দিল

-মামোনি তুমি কিন্তু কোথাও যাবে না।আমরা একটু দোআ করি তুমি এখানে থাকো
-তিত আতে

আবেগ আর সবাই মোনাজাত তুললো রিদিতা র কবর যিয়ারত করার জন্য ।ছোট্ট লাভ ছোট ছোট পায়ে রিদিতা র কবরের খুঁটির কাছে।ছোট্ট থেকে সে এটা জানে তার মামোনি এখানে থাকে দিনে আর রাতে তারা হয়ে আকাশে থাকে।ও বোঝে না ওর মা কোথায় আছে

সবাই মোনাজাত এ ব্যস্ত ।লাভ গিয়ে রিদিতা কবরের খুঁটি ধরেছে

-মামোনি দেতো আমি এতেছি ।মামোনি তুমি কবে দাবে আমার তাছে।বাবাই বলে তুমি আতবে ।কবে আতবে।ও মামোনি

সবাই মোনাজাত শেষ করে ছোট লাভের কথা শুনে চোখে র পানি ফেলছে।আশফি গিয়ে লাভ কে কোলে তুলে নিল

-প্রিনসেন্স মামোনি আসবে দেখো।তুমি বড় হও তখন আসবে
-আততা মামাই তবাই আমাকে গিফত দেয়।মামোনি দেয় না কেন
-প্রিনসেন্স তোমার মামোনি তোমাকে সবচেয়ে বড় গিফট দিয়ে গেছে।তুমি যখন বড় হবে তখন বুঝবে তোমার মামোনি তোমাকে কি দিয়ে গেছে।চলো আমরা কেক কাটবো
-তলো তলো
-আবেগ চল
-আশফি তুই ওকে নিয়ে যা আমি আসছি

সবাই চলে গেল।আবেগ রিদিতা র কবরের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।প্রতি শুক্রবার সে তার মেয়ে কে নিয়ে আসে এখানে।কিন্তু এই দিন কষ্ট টা বেশি হয়।এই দিন রিদিতা চলে গেছে আবেগ কে ছেড়ে

-কেমন আছো রিদি।খুব ভাল লাগছে তাই না আমাকে এভাবে দেখে।জানো রিদি মেয়ে টা খুব পাজি হয়ে ছে তোমার মতো।প্রতিদিন তিন বেলা ওর জন্য রাঁধতে হয়।অফিস করতে হয় ।সারাদিন এ হাঁপিয়ে যাই আমি।কিন্তু কি জানো দিন শেষে আমার প্রিনসেন্স কে দেখে সব কষ্ট মুছে যায় ।শোন এখন কিন্তু বলতে পারবেনা ও র ওপর আমার কোন অধিকার নেই।তুমি তো ফাঁকি দিয়ে চলে গেছো ওকে কিন্তু আমিই মানুষ করছি।যান প্রতি রাতে লাভ কে তোমার গল্প শোনাতে হয়।মামোনি র গল্প না শুনলে তার ঘুম আসে না

এদিকে ছোট্ট লাভ ব্যস্ত হয়ে গেছে

-ও বাবাই এতো না তেত ঠান্ডা হয়ে দাচ্ছে ।আমি তেত কাতবো না।ও বাবাই

ছোট্ট লাভ এর কথা শুনে সবাই হেসে পরলো
আবেগ পেছন এ ফিরলো

-আসছি মামোনি।দেখেছো কি দুষ্টু হয়ে ছে ও।কেক বলে ঠান্ডা হয়ে গেছে।শোন আমি আসবো তুমি কিন্তু অপেক্ষা করবে আমার জন্য একালে তো হলো না হয় হবে ওপারে দেখা জান্নাতে

আবেগ গিয়ে ছোট্ট লাভকে কোলে তুলে নিল।হাতে ছুরি ধরিয়ে দিল।কেক কাটা হলো।সবাই লাভকে উইশ করছে।আবেগের সাথে সাথে ঐ দূরে কবর থেকে মা ও দোআ করে যায় নিজের মৃত্যু ভুলে নিজের সন্তান এর শুভ কামনা করে আবেগ এর সাথে

“”HAPPY BIRTHDAY TO OUR #LOVE ❤”””

——————————সমাপ্ত——————————

সব গল্প এর এনডিং হ্যাপি হয় না।এই গল্প এ সব চরিত্র কাল্পনিক ।রিদিতা র মৃত্যু আবেগ এর সবচেয়ে বড় শাস্তি ।এই গল্প দিয়ে আমি একজন মেয়ে র জীবনের বাস্তব অবস্থা ও রিদিতা র মধ্যে দিয়ে একজন মায়ের ত্যাগ ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।আবেগ রিদিতা র মাধ্যমে স্বামী স্ত্রী র পবিত্র ভালোবাসা।জানিনা কেমন হয় এছে ।আপনাদের সাড়া পেলে আল্লাহ্ বাঁচালে 2020 এ আনবো #LOVE_season_2❤ ….
“”””সবাই নামাজ কায়েম করুন “””””””

2 মন্তব্য

  1. সত্যি অসাধারণ ছিল গল্পটা। যদিও tragic ending ছিল। তবুও এটার দরকার ছিল। পারফেক্ট এন্ডিং।বলা হয় যে যার যার কর্মফল সে সে ভোগ করবে কিন্তু এটা শুধু পরকালের জন্য। ইহকালে একজনের পাপ চেইন রি-এ্যাকশনের মতো আশেপাশের সবাইকে ভোগায়।ধন্যবাদ আপনাকে এই গল্পটার জন্য। শুভ কামনা রইল আপনার পরবর্তী গল্পের জন্য।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে