মাতৃত্বের স্বাদ পর্ব – ১৫ (সমাপ্তি পর্ব)

1
3452

#মাতৃত্বের স্বাদ
#পর্ব-১৫
#সমাপ্তি পর্ব
#লেখায়-নামিরা নূর নিদ্রা

৪৮.

গোধূলি লগ্ন! লালিমা আভায় ছেয়ে আছে আকাশ। দখিনা হাওয়া বইছে চারিদিকে। সেই হাওয়ায় একজন রমণীর শাড়ির আঁচল উড়ছে। এ যেন আকাশ থেকে এক চমৎকার হলুদিয়া পাখির আগমন ঘটেছে ধরণীর বুকে!

“হলুদিয়া পাখি!”

কোনো এক পুরুষালি কন্ঠে এমন ডাক শুনে পেছন ফিরে তাকালো অজান্তা।

অজান্তার সামনে তানভীর দাঁড়িয়ে আছে। পড়নে সাদা পাঞ্জাবি। চুলগুলো এলোমেলো। খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি। আর মায়ায় জড়ানো সেই চোখ দুটো। এই চোখের মায়ায় ই তো পড়েছিল অজান্তা।

“কি হলো? চুপ করে আছো যে? কিছু বলবে না আমায়?

তানভীরের ডাকে ঘোর কাটে অজান্তার।

” আপনি এখানে কী করছেন?”

“আজ পহেলা ফাল্গুন। এইদিনে তো আমি প্রতিবার এই নদীর তীরে আসি।”

“কোনো এক বসন্তে ঠিক এই জায়গাতেই আপনার সাথে আমার দেখা হয়েছিল।”

“সাথে রাজ ও ছিল।”

“হুম।”

এরপর বেশ কিছুক্ষণ নিরবতা। নিরবতা কাটিয়ে তানভীর নিজেই বলে উঠলো,

“কেমন আছো হলুদিয়া পাখি?”

“সেটা নিশ্চয়ই অজানা নয় আপনার।”

“এভাবে কেন বলছো?”

“নিজের বোনের খু*নিকে আর কীভাবে বলবো বলুন তো?”

“অজান্তা বিশ্বাস করো আমি ইচ্ছা করে কিছু করিনি।”

“প্রতিশোধ নিলেন তো? আপনাকে ঠকানোর প্রতিশোধ?”

“না অজান্তা। তুমি ভুল বুঝছো। সেদিন অনু রায়ানকে গু*লি করার সময় আমি বাধ্য হয়ে অনুর হাতে গু*লি করি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত গু*লিটা অনুর বুকের ডান পাশে লেগে যায়।”

“আপনি চাইলেই পারতেন আমার বোনকে বাঁচাতে। কিন্তু আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার বোনকে মে*রেছেন।”

“কিন্তু কেন এমনটা করবো আমি?”

“আপনার বিয়ের প্রপোজাল রিজেক্ট করে আপনারই বেস্ট ফ্রেন্ডকে বিয়ে করেছিলাম আমি। হয়তো এটারই প্রতিশোধ নিলেন আপনি।”

“ছিঃ অজান্তা। আমি এতটাও নিচ নই যে এমন কিছু করবো। আর আমি জানতাম রাজ যেভাবেই হোক তোমাকে ওর করে নিতো। কারণ রাজ নামেই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল। ওও সব সময় আমার জীবন থেকে আমার প্রিয় জিনিসগুলো কেড়ে নিয়েছে। তুমিও তার ব্যতিক্রম নও। সবকিছু জেনেও আমি কেন এমন করবো বলো?”

তানভীরের কথা শুনে অজান্তা কিছু না বলে আকাশের দিকে তাকালো। চোখের পাতা ফেলতেই দু’ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো অজান্তার চোখ থেকে। তানভীর করুণ চোখে তাকালো অজান্তার দিকে। তানভীরের নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে। আজ তার জন্যই এসব হলো।

“তানভীর জানেন আমি আমার বোনকে খুব ভালোবাসি। আমার যখন তিন বছর বয়স তখন আমার খেলার সাথী হয়ে এই পৃথিবীর বুকে আসে একটা ছোট্ট পুতুল। সেই পুতুলের নামকরণ হয় আমার নামের সাথে মিলিয়ে। অজান্তার বোন অনু। ছোট থেকেই আমরা দু’জন একে-অপরকে ছাড়া থাকতে পারতাম না। আমাদের দুজনের মতো দুষ্টু মিষ্টি সম্পর্ক খুব কমই দেখা যায়। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আঠারো ঘন্টাই আমরা ঝগড়া করতাম। কিন্তু তার মাঝেও আমাদের দুজনের একে-অপরের প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা ছিল। স্কুল জীবনে থাকতে সবাই আমাদের দেখে অবাক হতো। সাধারণত এক বোন খুব চঞ্চল হলে আরেক বোন শান্ত হয়। কিন্তু আমি আর অনু, আমরা দু’জনেই চঞ্চল ছিলাম। আমরা যেখানেই যেতাম সেই জায়গার মধ্যমনি হতাম আমরা। আমাদের জীবন ভালোই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ এক দমকা হাওয়ায় সব শেষ হয়ে যায়। যেদিন আমি আমার বোনকে বস্ত্র*হীন অবস্থায় একটা পরিত্যক্ত গোডাউনে পড়ে থাকতে দেখি সেদিনই আমার পুরো দুনিয়া উল্টে যায়। আমার বোনের দিকে তাকাতে পারছিলাম না আমি। সেই ভেজা চোখ দুটো আমাকে এক মুহূর্তের জন্য শান্তিতে থাকতে দিতো না। আমার চঞ্চল প্রাণবন্ত বোনটা নিমিষেই গুটিয়ে নেয় নিজেকে অন্ধকারচ্ছন্ন চার দেয়ালের মাঝে। সব সময় চুপচাপ থাকতো। আয়না দেখতো না অনু। আমার রূপচর্চা নিয়ে পাগল হওয়া বোনটা একমাসে একবারও আয়না দেখতো না জানেন। আমি এসব মানতে পারিনি। বাধ্য হয়ে আমরা আমাদের আগের বাড়ি, শহর, সবকিছু ছেড়ে নতুন শহরে চলে আসি। বোনের মুখের প্লাস্টিক সার্জারি করাই। যেন কেউ আমার বোনকে চিনতে না পারে। কেউ যেন আমার বোনের দিকে আঙ্গুল তুলে বলতে না পারে সে ধর্ষি*তা। যেদিন অনুকে আমি সেই পরিত্যক্ত গোডাউনে পাই সেদিনই প্রতিজ্ঞা করি, আমার বোনের এত বড়ো ক্ষতি যে করেছে তার জীবন শে*ষ করে ছাড়বো। আপনাকে যেদিন এখানে প্রথম দেখি সেদিনই ভালো লেগে গিয়েছিল। কিন্তু যখন জানতে পারলাম আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড রাজ। তখন আমি আবারো ধাক্কা খেয়েছিলাম। পরে সিদ্ধান্ত নিই রাজকে বিয়ে করার। ওর জীবনে গিয়ে তিলে তিলে মার*তে চেয়েছিলাম আমি ওকে। আমি ভেবেছিলাম রাজ আমাকেও শুধু নিজের চাহিদা মেটানোর জন্য বিয়ে করেছে। তবে আমার সমস্ত ভাবনা ভুল প্রমাণিত করে রাজ আমাকে সত্যি সত্যি ভালোবাসতে শুরু করে। সব আমার প্ল্যান মতোই চলছিল। কিন্তু একদিন রাজ আমাকে একটা ছেলের সাথে নির্জন জায়গায় দেখে ফেলে। ছেলেটা রায়ান ছিল। রাজ সেসব না বুঝেই আমাকে ভুল বোঝে। ওও ভেবেছিল আমি ওকে ছেড়ে অন্য কারোর সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছি। আসল কাহিনি তো সে জানতো না। এরপর থেকেই রাজ আমার উপর রেগে ছিল। রাগ আরো গাঢ় হয় আমাকে ওর পেইন্টিং রুমে দেখে। সেখানে অনেকগুলো প্রমাণ পাই আমি। রাজ আমাকে ভালোবাসে বলে মারতে পারেনি। তাই তো কৌশলে আমাকে ছাড়ার জন্য রিংকিসহ আরো মেয়েদের সাথে মেলামেশা শুরু করে। যেন আমি ওকে নিজ ইচ্ছায় ডিভোর্স দিই। সেই ইচ্ছা পূরণ হওয়ার জন্য আরো বড়ো কাজ হলো আমার মা না হতে পারা। অবশ্য এটাও আমার বুদ্ধি ছিল। আমি ইচ্ছা করেই নকল রিপোর্ট বের করি যাতে রাজ সবার সামনে খারাপ হয়ে যায়। মা হতে পারবো না বলে সে পর*কীয়া শুরু করে। পরবর্তীতে আমাকে ডিভোর্স দেয়। এমনটাই জানে সবাই। এক্ষেত্রে রাজকে সবাই ঘৃণা করবে এটাই স্বাভাবিক।”

এক নাগাড়ে কথাগুলো বলেই থামলো অজান্তা। তানভীর চরম বিস্ময় নিয়ে অজান্তার দিকে তাকিয়ে আছে।

“তার মানে এইাব কিছুর মাস্টার মাইন্ড তুমি?”

অজান্তা মুচকি হেসে উত্তর দেয়,

“হ্যা।”

“কিন্তু মা হতে না পারার নাটক টা কেন করলে?”

“একজন মেয়ে হয়ে এমন মিথ্যা নাটক করা কতটা কষ্টের সেটা হয়তো আমার থেকে বেশি ভালো কেউ জানে না। কিন্তু আমি নিরুপায় ছিলাম। সবাই বলে মায়ের পর বড়ো বোনই সব। আমিও আমার বোনের জন্য জীবন দিতে পারি। আর সেখানে এই মিথ্যা বলাটা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। জানি, সবাই আমাকে খারাপ বলবে। কিন্তু আমি আমার বোনের জন্য সব করতে পারি। সব মানে সব।”

“আমাকেও কী মানবে না?”

তানভীরের এমন আকুতিভরা কন্ঠস্বরকে উপেক্ষা করে অজান্তা বলে উঠলো,

“আপনি তো আমার বোনকে একেবারে কেড়েই নিলেন আমার থেকে। আপনাকে আমি কখনোই মাফ করবো না তানভীর। হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবে মারে*ননি। কিন্তু মেরে*ছেন তো।”

অজান্তার কথা শুনে তানভীর আর কিছু বলার ভাষা খুঁজে পেল না। অজান্তা মুচকি হেসে তানভীরের দিকে তাকালো।

“আচ্ছা নন্দিনী চলে যাওয়ার পরও আপনি এতটা স্বাভাবিক কীভাবে? কষ্ট হয়না আপনার বউয়ের জন্য?”

“না। কারণ সে নিজের কর্মফল পেয়েছে।”

“মানে?”

“মানে নন্দিনী আদৌও কোনো সাধারণ মেয়ে নয়। সে অত্যন্ত স্বার্থলোভী একজন মেয়ে। আমার বাবার সমস্ত সম্পত্তি নিজের আয়ত্তে আনার জন্য আমার বড়ো ভাইয়াকে মার*তে চেয়েছিল। যেন আমার ভাইয়ের কোনো সন্তান না হয়। আর এই সম্পত্তির ভাগও কাউকে দিতে না হয়। ভাইয়া প্রতিদিন রাতে মাইগ্রেন এর মেডিসিন নেয়। এটা নন্দিনী জানতো। তাই নন্দিনী কৌশলে ডক্টরকে টাকা দিয়ে মাইগ্রেন এর মেডিসিনের বদলে ”Slow Poison” লিখিয়ে নেয়। আমি সব জানতাম। ভাইয়াকে সঠিক মেডিসিন ঠিকই দিয়েছি আমি। কিন্তু সব জেনেও চুপ ছিলাম আমি। অপেক্ষায় ছিলাম বেবি হওয়ার। তারপরই নন্দিনীর সব অপ*কর্মের ঘটনা প্রকাশ্যে আনতাম। কিন্তু তার আগেই সে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল।”

“আপনার মেয়ে এখন কোথায় তাহলে?”

“মাহিফা ভাবির কাছে। ভাবি ওকে নিজের সন্তান মনে করেই মানুষ করছে। মাহিফা ভাবি তো তুলি বলতে পাগ*ল।”

“মেয়ের নাম বুঝি তুলি রেখেছেন?”

“হ্যা।”

“বাহ সুন্দর নাম।”

“হুম।”

“আসি তবে!”

তানভীরের সামর্থ্য নেই অজান্তাকে আটকানোর। তাই আর কিছু না বলে অজান্তার দিকে একবার তাকিয়ে উল্টো পথে হাঁটা দিলো। আজ আবারো নিজের প্রেয়সীকে হারিয়ে ফেললো সে। এতসব খেলার মধ্যে বদলে গেল সবার জীবন। কেউ কেউ সত্যিকারের ভালোবেসেও পেল না নিজের প্রিয়জনকে। নিয়তি বড়োই অদ্ভুত!

৪৯.

“মাতৃত্বের স্বাদ!”
প্রতিটা মেয়ের আশা থাকে মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহণ করার। কেউ কেউ নিজের স্বার্থে একটা নিষ্পাপ প্রাণ নিয়ে খেলে। আবার কেউ কেউ নিজের আপন জনকে ভালো রাখতে নিজের স্বপ্ন বিসর্জন দেয়।

একদিকে নন্দিনী নিজের স্বার্থে মা হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলো। কিন্তু দিনশেষে কোনোকিছু ভোগ করতে পারলো না।
অন্যদিকে অজান্তা নিজের বোনের সাথে হওয়া অন্যায়ের প্রতি*শোধ নেওয়ার জন্য মা হওয়া থেকেই বঞ্চিত হলো।

একটা মেয়ের জন্য মা হওয়া কতটা আনন্দের সেটা প্রতিটা নারীই উপলব্ধি করতে পারে। এই দুনিয়াতে অনেক রকমের মানুষ আছে। কেউ সন্তান হয় না বলে কাঁদে। আবার কেউ সন্তান নিতেই চায় না।

অজান্তা আর নন্দিনী সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর দুইজন মানুষ। একজন নিজের স্বার্থের জন্য সন্তান নিলো। আরেকজন প্রতিশোধের নেশায় মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহণ করা থেকেই বঞ্চিত হলো।

সবার মনে প্রশ্ন আসতে পারে,

“এমন হওয়া কী সম্ভব?

এর উত্তর হবে,

“হ্যা সম্ভব। কারণ পৃথিবীতে এমন কিছু নেই যা সম্ভব নয়। পৃথিবীর মানুষগুলো একেক জন একেক রকম। সবার চাহিদা, ইচ্ছা, আকাঙ্খা, স্বপ্ন আলাদা। তাই পৃথিবীতে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।”

৫০.

অজান্তা, রাজ, তানভীর, নন্দিনী, অনু, রায়ান। এই ছয়জনের জীবন একে-অপরের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। তবুও কোনো এক অদৃশ্য সুতোর বাঁধনে আটকা পড়ে সবাই একই জায়গায় এসে থমকে দাঁড়িয়েছে।

অজান্তা এমন একজন মেয়ে যে কিনা তার বোনের জন্য সব করতে পারে। বোনের জন্য নিজের জীবনের সুখ, শান্তি, ভালোবাসা, ভালোলাগা, সবকিছু বিসর্জন দিতে প্রস্তুত সে।

রাজ চরিত্রটা খুব রহস্যময়। প্রথমে তার নেশা ছিল টাকা আর মেয়ে। কিন্তু এক মায়াবিনীকে দেখে এক পলকেই নিজেকে পাল্টে ফেললো সে। তবুও আগের সকল পাপের শাস্তি তাকে পেতেই হতো। নিজের ভালোবাসার মানুষই তাকে মৃ*ত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। রাজ সবকিছু জেনেও চুপ করে ছিল। কারণ ভালোবাসার মানুষের জন্য ম*রতে পারলেও শান্তি। তাইতো নিজের ভাই আর বউয়ের নতুন রূপ দেখেও নিরব থেকে বরণ করে নিয়েছে মৃ*ত্যুকে।

তানভীর চরিত্রটা সবচেয়ে বেশি চমকপ্রদ। কারণ তানভীর নামক সেই ছেলেটা এতটা ঠান্ডা মাথার মানুষ। যার মন এবং মস্তিষ্কে কখন কি চলে সেটা একমাত্র সেই জানে। মানুষ সব পরিস্থিতিতে এতটা শান্ত থাকতে পারে তা প্রমাণ করার জন্য তানভীর নামটাই যথেষ্ট।

নন্দিনী! মানুষ কতোটা স্বার্থলোভী হতে পারে এবং নিজের স্বার্থেের জন্য কতোটা নিচে নামতে পারে তার এক জ্বলন্ত প্রমাণ নন্দিনী। নিজের পেটের সন্তানকে পর্যন্ত নিজের খেলার গুটি হিসেবে ব্যবহার করেছে সে। কথাটা শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই সত্যি। যে সম্পত্তির জন্য এতকিছু। সেই সম্পত্তি পাওয়ার লোভে এক অজানা গন্তব্যে ছুটতে ছুটতে পৃথিবীর বাইরেই চলে গেল সে। এজন্যই হয়তো বলে,

“পাপ তার বা*পকেও ছাড়ে না!”

অনু! পুরো গল্পের সূচনা এবং সমাপ্তি এই একজনের মাঝেই নিহিত। অনুর প্রতি অজান্তার ভালোবাসা এই গল্পের মূল কাহিনি। দুই বোনের এক অনন্য ভালোবাসার দৃষ্টান্ত অনু এবং অজান্তা। কিন্তু অনুর পাগ*লামিগুলো অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ার ফলে তাকেও মৃ*ত্যুর কোলে ঢোলে পড়তে হয়েছে। সবকিছু উপেক্ষা করেও অনুর মৃ*ত্যু স্বার্থক। কারণ সে তার প্রিয় মানুষটার বুকেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যা*গ করেছে।

রায়ান নামক ছেলেটার করুণ পরিণতির মাধ্যমেই এই গল্পের সমাপ্তি। কারণ সে যেমন একদিকে নিজের আপন ভাইকে হারিয়েছে। তেমনি আরেকদিকে নিজের ভালোবাসাকে হারিয়েছে। নিজের চোখে ভাইয়ের মৃ*ত্যু দেখা। আর নিজের কোলে প্রিয় মানুষকে মৃ*ত্যুর কোলে ঢোলে পড়তে দেখা। তার বুকেই ভালোবাসার মানুষের শেষ নিঃশ্বাস ত্যা*গ করা। এসবকিছুর শিকা*র রায়ান। একজন মানুষের ধৈর্যের চরম এক পরিক্ষার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত ছিল রায়ান নামের চরিত্রটি।

ভালোবাসা, প্রতিশোধ, লোভ, নেশা, রহস্য আর হিং*স্রতার সংমিশ্রণে গঠিত এক গল্প “মাতৃত্বের স্বাদ”। যার সূচনা এবং সমাপ্তি দুটোই এক। কষ্ট আর ভাঙ্গনের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছিল ” মাতৃত্বের স্বাদ” গল্পটির। সেই কষ্টকে আরো কয়েক ধাপ বাড়িয়ে দিয়ে সকলের করুণ পরিণতির মাধ্যমেই শেষ হলো এই গল্প “মাতৃত্বের স্বাদ”!

★সমাপ্ত★

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে