শুকনো ঘাস ফুল part: 6

1
1330

#শুকনো_ঘাস_ফুল?
#natasa_islam_muntaha
#part::6

??
?

আহাদ আহিবার কান্ড দেখে হেসে দেয় তবে আহিবাকে বুঝতে দেয় না …

তখন ওখানে রাফি আসে

রাফি:আরে ব্রো বউয়ের কাছেই থাকবা নাকি …আর হায় পুচকে কি করছো
আহাদ:রাফি সে তোর ভাবি হয় সম্মান দিয়ে কথা বল
রাফি:বাট ব্রো সে আমার থেকে ছোট …
আহাদ:সে যাই হোক ওকে তুই ভাবি বলে ডাকবি ব্যাস
রাফি :ওকে [হুম ভাবি বলতে বয়েই গেছে ইসস কি ফিগার একটা রাত না পেলেই নয় …আমার তো রাতের ঘুম হারাম করে দিলো উফফ ইচ্চা করে এখনই (মনে মনে)]

আহাদ ভালোই বুঝতে পারছে রাফি মুখে যতোই বলুক ওর চোখে লালসা ভরা

আহাদ:রাফি সামনে চল
রাফি:হুম চলো

আহাদ রাফিকে নিয়ে সামনে চলে যায়

সুমি:আফা ঐ ব্যাডায় এতো লুচ্চা কেন
আহিবা:কে
সুমি:আরে ঐ যে ছোট সাহেবের লগে আইলো .ব্যাডার খালি চোখটা শকুনের মতো ঘোরে
আহিবা:আমিও খেয়াল করছি রে
সুমি:তয় আম্মে কিছু কন না কেন
আহিবা:আমি কি বলবো বল…তারা এই বাড়ির অতিথী যে
সুমি:হয় তাও ঠিক ..

আহিবা রান্না শেষ করে সুমিকে নিয়ে খাবার টেবিলে সব রেডী করে নেয় এত্তোক্ষন রান্না করতে গিয়ে আহিবা ভিজে গেছে ঘামে শাড়ির কিছু অংশ ঘামে গায়ের সাথে মিশে গেছে আহিবা সামনে দাদীর কাছে যায়

দাদী:কি রে নাত বউ তুই তো একদম ভিজে গেছিস আহারে
আহিবা:দাদী রান্নাঘরে ছিলাম তো এই জন্য তা তোমরা কি এখনই খাবে না পরে
রাফি:আমার তো খুদা লাগছে (ইসস আর কিছুক্ষন এভাবে দেখতে পারলে ইসসস কি যে.লাগছে না .)
আহিবা:দাদী তুমিও কি এখন খাবে
চাচা:সবাই এক সাথেই খাই
আহিবা:চলো সবাইকে খাবার দিয়ে নেই
আহাদ:আগে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নাও ঘামিয়ে গেছো
আহিবা:কিন্তু
আহাদ:আমি যেতে বলেছি ৫ মিনিট পরে খেলে কিছু হবে না তখন এক বারে সবাই খাবো
দাদী:হুম তাই ভালো
আহিবা:আচ্ছা

আহিবা রুমে চলে যায় ফ্রেস হতে ..কিছুক্ষন পর ফ্রেস হয়ে অন্য একটা শাড়ি পরে নিচে আসে সবাইকে খাওয়ার জন্য টেবিলে নিয়ে যায় দাদী তার পরে আহাদ বসে আর তার পাশেই রাফি বসে পরে তারপর একটা চেয়ার খালি রেখে আহাদ এর চাচা চাচি …রাফি এর জন্য ওখানে বসেছে যাতে আহিবা বসলে ওর পাশে বসতে হয় আর রাফি যাতে তাকে কারন অকারনে স্পর্স করতে পারে ….
আহিবা সবাই কে দিয়ে খাওয়াচ্ছে

রাফি:ভাবি তুমিও বসো
আহিবা:নাহ থাক আপনারা খেয়ে নিন আমি পরে খাবো
চাচা:বউমা বসো না

আহিবা কি করবে বুঝে পাচ্ছে না …চাচার উপরেও কিছু বলতে পারছে না আবার রাফির পাশেও বসতে পারছে না ..

আহাদ:কাকাই ও পরে সুমিকে নিয়ে বসবে না হলে সুমি আধ খাওয়াই উঠে যাবে
কাকিয়া:আহ থাক না ও ওর সময় মতো বসবে

?????

আহিবা যেন হাপ ছেরে বাচলো আহিবার প্রচন্ড রকমের একটা ধন্যবাদ জানাতে ইচ্ছা করছে আহাদ কে তার জন্য বার বার বেচে যাচ্ছে | রাফিকে আহিবার একদমই ভালো লাগছে না | সবার খাওয়া শেষ হলে আহিবা আর সুমিও খেয়ে নেয় ওদের দাদী তারাতরি ঘুমায় দেখে তাকে তার রুমে দিয়ে আসে ..ওর চাচা চাচিকেও তাদের রুম দেখিয়ে দেয় আর রাফি সে আহাদ আর এনি যে রুমে থাকতো ঐ রুমে থাকবে …আহিবা আর আহাদ পরেছে ভালো ঝামেলায় তাদের যে এক রুমে থাকতে হবে বাসায় এক্সটা রুম থাকলেও সেখানে থাকতে পারবে না তাহলে সবাই সন্দেহ করবে …রুমে তো চলে এসেছে দুজন …এখন আহাদ এক পাশে আর আহিবা এক পাশে দারিয়ে আছে

আহাদ আর আহিবা একসাথেই বলে ওঠে:আপনি খাটে শোন আমি নিচে শুচ্ছি

আহাদ আহিবা দুজনেই আবার চুপ হয়ে যায়

আহাদ আহিবা:আমি নিচে আবার চুপ
আহিবা:আমি নিচে শুচ্ছি আপনি খাটে ঘুমান
আহাদ:নাহ থাক
আহিবা:সমস্যা নেই কোনো বলেই ……..

বিছানা ঠিক করতে থাকে …বিছানা ঠিক করে খাটের পাশেই ..তারপর কয়েল জ্বালিয়ে শুয়ে পরে আহিবা আহাদ ও গিয়ে খাটে শুয়ে পরে

আহাদ লাইট অফ করে ড্রিম লাইট অন করে দিয়ে শুয়ে পরে রুমের জানালা খোলা আকাশে চাদটা আজ পরিপূর্ন ভাবে বিরাজমান আর তার আলো এসে পরছে আহিবার গায়ে …..আহাদ জানালা টা লাগিয়ে দিতে গিয়েও দিলো.না চুপ করে এসে সুয়ে পরলো খাটের পাশে চোখ যেতেই দেখে আহিবা পুরা ঘুম হয়তো সারা দিন অনেক কষ্ট করে ক্লান্ত সে …আহাদ এর চোখ যায় আহিবার মুখের উপর যেখানে চাদের আলোটা পরেছে আহাদ আস্তে করে রুমের ড্রিম লাইট টা অফ করে দেয় …তার রুমটা চাদের আলোয় আলোকিত হচ্ছে

আহাদ:কখনও এমন করে দেখা হয়নি কিন্তু তোমার মুখটাও যে সম্পূর্ন মায়ায় ঘেরা ছিহহহহ আহাদ কি করছিস এগুলো.তুই …ছিহহহহ ….তের এনিকে ফোন দেয়া উচিত

আহাদ ফোনটা নিয়ে এনির নাম্বার ডায়াল করে তাকে ফোন দেয় কিন্তু বার বারই ফোনটা সুইস্ট অফ বলছে

এক সময় বিরক্ত হয়ে ফোনটা পাশে ফেলে রেখেই ঘুমিয়ে পরে …

??

রাফি তার চোখে ঘুম নেই সে পাগল হয়ে আছে আহিবাকে পাওয়ার জন্য

রাফি:নাহ আমার চোখের ঘুম সব কেরে নিয়েছে এই মেয়ে নাহ একে তো আমার চাই চাই…দেখেতো মনে হয় না…. আহাদ আর আহিবার মধ্যে কোনো কিছু আছে ….ইসসস ওকে আমার চাই চাই আর সেটা কালই …যে কোরে হোক যেমন করে হোক …..আপোশে আসবে নয়তো জোর করে হলেও চাই ……

??

পরের দিন সকালে …

আহিবা নামাজ পরে আবার একটু সুয়েই ঘুমিয়ে পরে …ওদের রুমের দরজায় …এসে ওর দাদী নক করে

দাদী:দাদুভাই নাতবউ উঠেছিস তোর

আহাদ এক লাফ দিয়ে উঠে বসে

আহাদ:হ্যা দাদী
দাদী:দরজা খোল তো
আহাদ:এই রে এখন কি করি আহিবা তো ঘুমে দাদী যদি এটা দেখে তাইলে সর্বোনাশ ..কি করি ..? হুম পেয়েছি …

আহাদ আহিবাকে কোলে করে খাটের উপরে সুইয়ে দেয় আর খাটের পাশে যে বিছানকরেছে রাতে ওটা কোনো ভাবে গোছ করে লুকিয়ে রাখে নিজের চুল গুলোও ঠিক করে গিয়ে দৌড়ে দরজা খোলে

আহাদ:দাদী আশো
দাদী:কি রে নাতবউ উঠে নি
আহাদ:নামায পরে আবার সুয়েছে তাই ঘুমিয়ে গেছে আমি উঠিয়ে দিচ্চি
দাদী:থাক তুই ফ্রেস হ গিয়ে আমি ওকে উঠাচ্ছি
আহাদ:ওকে

আহাদ একটা টাওয়াল নিয়ে ফ্রেস হতে চলে যায় দাদী গিয়ে আহিবার পাশে বসে আহিবার মাথায় হাত দিয়ে আস্তে আস্তে ঘুম থেকে তোলে

দাদীর মুখে দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে

দাদী:কি রে এখন ঘুমাচ্চিস রাতে বুঝি ঘুমাতে দেয়নি

আহিবা এমন কথায় হা হয়ে যায় নিজেকে সামলে নি :আরে দাদী তেমন কিছু না একটু চোখ লেগে এসেছিল
দাদী:বুঝি বুঝি আমাদের ও তো বিয়ে হয়েছিল …
আহিবা :দাদী
দাদী:থাক লজ্জা পেতে হবে না আমি তো আগেই বুঝেছি …তা একটা বালিসে বুঝি দুজন ঘুমাস বলেই চোখ মারে

আহিবা হামাব মতো একবার দাদীর দিকে আর একবার বালিশের দিকে তাকায়

আহিবা(আরে আমি নিচে ছিলাম তাহলে উপরে উনি উঠিয়েছেন…বলিশটা উঠাতে ভুলে গেছেন আল্লাহ কি লজ্জা টাই না দিচ্চে এই দাদী ছিহহহ )

দাদী :হয়েছে হয়েছে নতুন বিয়ে স্বামীর তো সোহাগ এখন বেশীই পাবা

আহাদ ও ওয়াশ রুম থেকে বার হয় ওর দাদীর কথা শুনে নিজেই হা হয়ে গেছে

আহাদ:দাদী
দাদী:আরে তোর হয়ে গেছে ..যা যা নাতবউ তুই ও গিয়ে গোসল করে আয় ….বেলা তো কম হলো না

আহিবা এখনও হাবার মতো করে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে বলে কি এই দাদী

দাদী:কি রে যা…

?
আহিবাকে একটা শাড়ি নিয়ে এক প্রকার জোর করেই গোসলে পাঠিয়ে দেয় …আহাদ ও হা করে ওর দাদীর কাজ কারবার দেখছে

দাদী:নিচে চল
আহাদ:হুম চলো

আহাদ ওর দাদীকে নিয়ে নিচে চলে যায় আহিবা বাধ্য হয়ে গোসল করে একটা কালো কাপড় গোল্ডেন পার এর …সেটা পরে বার হয় …আয়নার সামনে গিয়ে চোখে কাজল দিচ্ছিলো ..রাফি মাএ ঘুম থেকে উঠে নিচে যাওয়ার জন্য পা বারায় তখনই চোখ যায় আহিবার ভেজা চুলের দিকে সেন থেকে টপ টপ.করে পানি পরছে যা আহিবার কোমরের শাড়ি অনেকটাই ভিজিয়ে দিয়েছে ..আহাদ রুমের সামনে এসে রাফিকে দেখে মেজাজ বিগরে যায় রাফিকে কিছু না বলে রুমে গিয়ে ঠাসস করে দরজা লাগিয়ে দেয় …আহিবার হাতের চিরুনীটাও পরে যায়

আহাদ:দরজা লাগিয়ে কাজ করা যায় না …
আহিবা:আসলে চুল আচরাচ্ছিলাম তো তাই ..

আহাদ আহিবার দিকে তাকিয়ে হা …কালো শাড়িতে যেন এই শ্যমলা বর্নের মেয়েটার রুপ বাড়িয়ে দিয়েছে হাজার গুনে সাথে হাটুর নিচ অবদি ভেজা চুল গুলো …আহাদ অনেক কষ্টে নিজের চোখকে সামলে নেয় ..

আহিবা চুল ঠিক করে চোখে কাজল ঠিক করে নিচে যায় আর তার সাথে.সাথে আহাদ ও …..

??

আহাদ আর আহিবা এক সাথে সিরি নিয়ে নিচে নামছিল হঠাৎ ওদের চোখ যায় সদর দরজার দিকে যেখানে ছল ছল চোখে এনি দারিয়ে ছিল

এনি :আহাদ আমি এক দিন না থাকায়ই …নাহ আমি আর ফিরবো না আর না

(আসলে এনি এসেছিল আহাদ এর সাথে কথা বলতে সে কি করবে জানতে…আর এসেই দেখে আহাদ আর আহিবা এক সাথে সিরি দিয়ে নামছে সাথে আহিবার ভেজা চুল )

আহাদ একবার আহিবার দিকে আর একবার এনির দিকে তাকায় এনির কাছে যাওয়ার জন্য পা বারায় আহাদ কিন্তু এনি ওখান থেকে দৌড়ে চলে যায় আহাদ যেতে নিলে তার কাকা এসে সামনে পরে ..আহাদকে টেনে নিয়ে সোফায় বসিয়ে দেয় আর তাদের সাথে গল্প করতে বলে ….আহিবা সবটা দেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রান্না ঘরে চলে যায় সকালের নাস্তা বানাতে …

চলবে,,,,,,,,,,

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে