নিস্তব্ধ শহর পর্বঃ ০৫ (শেষ)

4
3705

নিস্তব্ধ শহর পর্বঃ ০৫ (শেষ)
লেখকঃ আবির খান

জান্নাতের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে, গলাটা কেমন শুকিয়ে আসছে, খুব অস্থির হয়ে পরে ও৷ ওর মাথায় শুধু এখন একটাই কথা,

~ আবির ঠিক আছে তো?

সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ৮ টা বাজে। আবিরের ফোন এখনো বন্ধ। জান্নাত অন্তত হলেও ১০০ বার কল দিয়েছে। মেয়েটার ভয়ে আর চিন্তায় অবস্থা খারাপ। মুখ শুকিয়ে ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছে। আল্লাহর নাম নিতে নিতে মেয়েটার গলা শুকিয়ে কাঠ। জান্নাতের মনে হচ্ছে ও অজ্ঞান হয়ে যাবে। কিন্তু হঠাৎই কলিংটা বেল বেজে ওঠে। জান্নাত তড়িৎ গতিতে উঠে দ্রুত দরজা খুলে। আবির দাঁড়িয়ে আছে।

আবির জান্নাতকে দেখে রীতিমতো ভয় পেয়ে যায়। মেয়েটার চোখে পানি, মুখ শুকিয়ে ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছে। আবির কিছু বলার আগেই জান্নাত হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে খুব অস্থির হয়ে বলে ওঠে,

~ আপনি ঠিক আছেন? কি হয়েছে আপনার? কই ছিলেন এত্তোক্ষণ? ফোন অফ কেন? আপনার এত্তো দেরী হলো কেন?
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


আবির জান্নাতের এ অবস্থা দেখে ওকে বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। আবির মা দূর থেকে দাঁড়িয়ে জান্নাতকে নিয়ে উপরে যেতে বলে। ইশারায় বলে দেয় ও খুব ভয় পেয়েছে। আবির মাথা নাড়িয়ে বুঝিয়ে দেয় ও সামলে নিবে৷ জান্নাত খুব কান্না করছে। ও আবিরের বুকের সাথে মিশেই কান্না করতে করতে বলছে,

~ আমি কত্তো ভয় পেয়েছি জানেন? হাত পা সব অবস হয়ে আসছে আমার। বললেন ৭ টায় আর এখন বাজে ৮ টা। কি হয়েছিল আপনার?

আবির আর কিছু না বলে জান্নাতকে হুট করে ওর বাহুদ্বয়ে তুলে নেয়। জান্নাত অবাক হয়ে যায়। আর সত্যি বলতে ওর হেঁটে যাওয়ার শক্তিও ছিল না। আবির জান্নাতকে নিয়ে ওদের রুমে যায়। ওকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে আবির দ্রুত হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে একগ্লাস পানি খেয়ে বউয়ের জন্যও পানি নিয়ে আসে। জান্নাত পানিটুকু খায়। আবির গ্লাসটা পাশে রেখে জান্নাতকে ওর দিকে ঘুরিয়ে ও বিছানায় বসে। জান্নাত কিছু বলতে নিলে আবির থামিয়ে দেয়। আর বলে,

– সব বলব আর সব শুনবো। তার আগে চোখটা বন্ধ করো।

~ কেন?

– আহ! করতে বলেছি।

~ আচ্ছা করলাম।

আবির ওর পকেট থেকে একটা বক্স বের করে সেখান থেকে গোল্ডের চেইনটা জান্নাতের গলায় পরিয়ে দেয়। জান্নাত গলায় হাত দিয়ে চেইওনের স্পর্শ পেতেই চোখ খুলে তাকায়। আবির জান্নাতকে ধরে আয়নার সামনে নিয়ে যায়। ওকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে,

– এটা আনতেই যা একটু দেরী হলো। আর রইলো ফোন? সেটার চার্চ নাই বলে ঘুমিয়ে গেছে ঘুমের দেশে। তাও সব কিছুর জন্য সরিইই।

জান্নাত ঘুরে ছলছল চোখে আবিরের দিকে মায়াবী মুখখানা তুলে তাকিয়ে বলে,

~ কে বলেছে আপনাকে এসব আনতে? আমার এসব চাইনা। আমার শুধু আপনাকে চাই। শুধু আপনাকে। (কান্নাসিক্ত কণ্ঠে)

– বোকা মেয়ে। এটা তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম। বাট এতো লেট হবে আর তুমি এরকম অস্থির হয়ে পড়বে আমি ভাবিই নি।

~ আচ্ছা সমস্যা নেই। কিন্তু এরপর থেকে ফোনটা যেন আর না ঘুমায় যায় তাহলে কিন্তু আমি এরকম হয়ে যাবো।

– আচ্ছা বাবা মনে থাকবে।

~ চেইনটা খুব সুন্দর হয়েছে। আমার অনেক পছন্দ হয়েছে। (মিষ্টি হাসি দিয়ে)

– হাহা জানতাম। সামর্থ্য অনুযায়ী এনেছি। আমার গল্পের মতো ডায়মন্ডের আনতে পারি নি। আসলে কি জানো, গল্পে সব সম্ভব। কারণ গল্পটা কাল্পনিক আমি লিখি মন মতো। কিন্তু জীবন? সে এক চরম বাস্তবতা। যেটা লেখার মালিক একমাত্র ওই উপরওয়ালা। তাই গল্পের সাথে বাস্তব জীবন যে হুবহু মিলে যাবে তা কিন্তু নয়। তবে হ্যাঁ অনেক কিছু আবার মিলেও যেতে পারে। কারণ গল্পতো বাস্তব জীবন থেকেই নেওয়া। কি বুঝলে তো?

~ হুম। আমার গল্পের মতো কাল্পনিক জীবন না হলেও বাস্তবিক এই জীবনটা খুব সুন্দর। স্বল্প অল্প বিলাসিতাহীন হাসি খুশী আর আপনার স্পর্শ নিয়ে এই জীবনটাই ভালো লাগে। গল্পের কাল্পনিক জীবন আর বাস্তবের জীবনের সাথে যে আকাশ পাতাল পার্থক্য আছে তা আমি জানি। তাইতো সেদিন আপনার জীবন সঙ্গী হতে চাওয়ার জন্য জোর করিনি। শুধু বন্ধু হয়ে তোমাকে দূর থেকে ভালবাসতে চেয়েছি।

– হুম৷ আর আমাদের বিয়েটা হয়েছে কারণ আমাদের ভাগ্য একসাথে লিখা ছিল। তুমি আমার জন্য লিখা ছিলে বলেই আজ তুমি আমার স্ত্রী আর আমি তোমার স্বামী।

~ জ্বী। সবই ওই উপরওয়ালার ইচ্ছা।

সেদিনের পর থেকে দুটো মাস কেটে যায়। জান্নাত আজ অসম্ভব খুশী। আবিরের কাছে ও একটা জিনিস চেয়েছিল। সেটা ও পেয়েছে। আর সেটা হলো ওদের সন্তান। হ্যাঁ জান্নাত মা হতে যাচ্ছে। ওর পেটে আবিরের সন্তান। জান্নাত একটু আগেই পরীক্ষা করে তা বুঝতে পেরেছে। আবির এখনো ঘুমে। বেচারা এত্তো বড় খুশীর সংবাদ কীভাবে নিবে আল্লাহ জানে।

জান্নাত ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে গুটিগুটি পায়ে ঘুমন্ত আবিরের কাছে এগিয়ে যায়। আস্তে করে খুব সাবধানে আবিরের পাশে আসন করে বসে আবিরকে ডাক দেয়,

~ বাবুর আব্বু…এই যে বাবুর আব্বু উঠেন সকাল হয়েছে তো। বাবুর আব্বুউউ…

– উহুম আরেকটু ঘুমাবো। পরে উঠি প্লিজ।

~ ৮ বাজতে চলছে বাবুর আব্বু। এখন তো উঠতেই হবে।

– না আর এক….

আবির ঠাস করে চোখ খুলে তাকায়। একলাফে উঠে বসে জান্নাতের দিকে রোদ্দুর উজ্জ্বল হাসি মুখ করে দ্রুত বলে,

– তুমি একটু আগে কি বললা আমাকে?

~ কেন বলছি ঘুম থেকে উঠতে। (লজ্জাসিক্ত কণ্ঠে)

– না না৷ কি বলে ডাকলা? আবার বলো তো? (অস্থির হয়ে)

~ বলছি বাবুর আব্বু উঠেন সকাল হয়েছে। (খুব লজ্জা পেয়ে)

– সত্যিইইই?

জান্নাত খুব লজ্জাসিক্ত হয়ে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে। আর মুহূর্তেই আবির যেন খুশীতে আটখানা হয়ে যায়। বিছানা ছেড়ে নাচানাচি শুরু করে। আবার মুহূর্তেই দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া আদায় করে। আবার খুশীতে নাচানাচি। মানে ও কি করবে বুঝতে পারছে না। জান্নাত আবিরকে এর আগে কখনো এত্তো খুশী হতে দেখেনি। ও নিজে কি খুশী হবে আবিরের খুশী দেখেই ও অবাক। আবির জান্নাতের কাছে এসে বলে,

– জান্নাতততত আমি যে আজ কি খুশীইইইই। আমি বাবা হবো। সত্যিইই আমি বাবা হবো?

~ আল্লাহ চাইলে সত্যিইই হবেন।

– আল্লাহ তোমার কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া। দেখো আমার কোন ছেলে বা মেয়ে আলাদা কোন চাওয়া নাই। আল্লাহ খুশী হয়ে আমাকে যা দিবে আমি তাতেই খুশী। অন্যদের মতো তোমাকে কখনো বলবো না যে আমার একটা মেয়েই চাই বা একটা ছেলে। একটা হলেই হলো। ইসস! আমি বাবা হবো। ইয়েএএ।

~ আহ! আপনি শান্ত হন।

– কীভাবে হই বলোতো। এই খুশী তোমাকে বুঝাতে পারবোনা। এই এই দাঁড়াও। বাবা-মাকে বলে আসি।

আবির উঠে পরে দৌঁড়। একটু পরেই তিন জন খুশিতে পাগলের হুল্লোড় পড়ে জান্নাতের উপর। জান্নাত অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। ও কল্পনাও করে নি সবাই এত্তো খুশী হবে। আবিরের মা,

~ আবিরের বাবা শুনছো আমরা দাদা-দাদি হবো। আমাদের নাতি আমাদের কোলে বড় হবে। বউমা তোমার সব কাজ আজ থেকে বন্ধ। আবির তুই সারাদিন বউমার কাছে থাকবি। ওর যা লাগে যা চায় সব এনে দিবি।

– তা আর বলতে হয় অবশ্যই।

– আমি কিন্তু সবার আগে দাদাভাইকে কোলে নিব। তোমরা কেউ চাবা না। (বাবা)

~ হ্যাঁ আসছে আরেকজন। বাপের আগে দাদা কোলে নিবে৷ দেখছো মা কি বল….একি তুমি কাঁদছো কেন? আল্লাহ কি হলো বউমা?

আবির অস্থির হয়ে জান্নাতের কাছে এসে বলে,

– কি হয়েছে জান্নাত তুমি কাঁদছো কেন? শরীর খারাপ লাগছে? ডাক্তার ডাক দিব?

– দে দে। ওর মনে হয় খারাপ লাগছে। (বাবা)

জান্নাত কাঁদতে কাঁদতে বলে,

~ না না। আসলে আমি কল্পনাও করিনি আমি এতো সৌভাগ্যবান একটা মেয়ে। আপনাদের মতো এত্তো ভালো স্বামী, শ্বশুর শ্বাশুড়ি পাবো কখনো কল্পনাও করিনি। আপনাদের এত্তো ভালবাসা আর যত্ন দেখে চোখে পানি চলে আসছে। সত্যিই চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। আপনারা খুব ভালো খুব।

~ দেখো দেখিনি মেয়েটার কথা। (চোখে মুছে দিয়ে) বোকা মেয়ে। তুই আমাদের পরিবারের বংশধরকে আনতে যাচ্ছিস আল্লাহ ইচ্ছায়। তোর যত্ন করবো নাতো কার যত্ন করবো বল? বোকা কান্না করিস না। আয় মায়ের বুকে আয়।

আবিরের মা জান্নাতকে বুকে জড়িয়ে নেয়৷ অন্যদিকে আবির বলে,

– আবির বাবা-মাকে ভিডিও কল দেই। তারাও জেনে অনেক খুশী হবে৷

– হ্যাঁ দে। বেয়াই সাবরে খবরটা আমি বলবো। ভিডিও কল দে। (বাবা)

আবির ভিডিও কলে জান্নাতের বাবা-মাকে এই খুশীর সংবাদটা জানায়। তারাও খুশীতে উৎফুল্ল হয়ে যায়। জান্নাত একসাথে অনেকগুলো মানুষকে খুশী করে ফেলে। আর এরপর থেকেই শুরু হয় জান্নাতের স্পেশাল কেয়ার।

আবির ওর যাবতীয় কাজ মানে লেখালিখি সব জান্নাতের পাশে বসেই করে। বাইরে থেকে লোকেরা বাসায় এসে কাজ বুঝে নিয়ে যায়। তাও জান্নাতকে একা করে না আবির। কারণ এসময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ জান্নাতের। সন্তান পেটে থাকা অবস্থায় একটা মেয়ের খুব মুড সুইং হতে পারে। উল্টো পাল্টো আজব সব চিন্তা ভাবনা তার মাথায় ঘুরতে পারে৷ গবেষণায় দেখা যায়, এসময় মা’রা যদি একা থাকে কারো সঙ্গ না পায় তাহলে বাচ্চার অনেক ক্ষতি হতে পারে৷ আর তারচেয়ে বেশী ক্ষতি পারে মায়ের। কারণ এই একাকিত্ব মাকে বিষন্ন করে তুলবে। হঠাৎ করেই তার মধ্যে এক অজানা ভয় বাসা বাঁধবে৷ আরও অনেক কিছু তার উপর ভর করবে। ফলে তার শরীর খারাপ হবে। আর যার দরুন বাচ্চারও ক্ষতি হবে। তাই মাকে কোনভাবেই একা রাখা যাবে না। তার কি ভালো লাগে কি করতে মন চায় তার সবকিছুর খেয়াল রাখতে হবে৷ তার আশপাশে সবসময় সবকিছু পজিটিভ রাখতে হবে৷ কোন ভয় বা চিন্তা তার মনে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। আর সেই কাজটাই আবির জান্নাতের পাশে থেকে করছে। ওর সাথে গল্প, দুষ্টুমি, আড্ডা, হাসি-ঠাট্টা একটু রোমাঞ্চ করে ওকে ব্যস্ত রাখছে৷ এছাড়া এসবের পাশাপাশি জান্নাতের শরীরের খুব খেয়াল রাখছে। নিয়মিত জান্নাতের চেকআপ, খাবার দাবার, পোশাক আশাক সব কিছুর খেয়াল রাখছে ও নিজেই। এসময়টায় একজন গর্ভবতী মা একমাত্র তার স্বামীর উপর পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করে। বাকিদের দেখলে তার বিশ্বাস হয়না। কারণ স্বামীর কাছে সে যা বলতে পারবে তা আর অন্য কারো কাছে বলতে পারবে না।

কিন্তু আমাদের সমাজের চিত্র এর সম্পূর্ণ উল্টো। একটা মেয়ে গর্ভবতী হলেই তাকে তার বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বা আগের চেয়ে তার উপর সংসারের চাপ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। স্বামীতো স্ত্রীর খেয়াল রাখেই না শ্বশুর শ্বাশুড়িও কোন খোঁজ নেয় না৷ কিন্তু বাচ্চা যখন ভূমিষ্ট হয় সবার আগে তারাই কোলে তুলে নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে যায়। আর মেয়ের বাবা-মা অসহায়ের মতো পাশে নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কিছু বলতে পারে না শুধুমাত্র মেয়ের খুশীর জন্য৷ এরপর যদি আল্লাহ না করুক বাচ্চার কোন ক্ষতি হয় তাহলে আর কোন কথাই নাই সম্পূর্ণ দোষ মার আর মার পরিবারের। অথচ যাদের দায়িত্ব ছিল তারা দায়িত্ব পালন না করে উল্টো উঁচু গলায় নিরীহদের উপর দোষ চাপাচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ ভুল। এটা একটি বাস্তব চিত্র। আমাদের আশেপাশে প্রতিনিয়ত এমন হচ্ছে৷ তবে হ্যাঁ আবিরের মতো কিছু পরিবার আছে যারা মায়ের পূর্ণ খেয়াল রাখে। তারা একটি আর্দশ পরিবার। আমাদের উচিৎ এই নির্মম বাস্তব চিত্রটাকে পরিবর্তন করা। সমাজে প্রচলিত এই ধারায় পরিবর্তন এনে স্বামীর উচিৎ তার স্ত্রীর যত্ন করা। হ্যাঁ এখানে কথা আছে যে, মধ্যেবিত্ত কিংবা গরীব যারা তারা তো আর কাজ ফেলে স্ত্রীর পাশে সারাদিন বসে থাকতে পারবে না। ঠিক তখনই মায়ের দায়িত্বটা তুলে নিবে স্বামীর পরিবারবর্গ। এভাবেই মাকে ভালো রেখে একটা সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়া সম্ভব।

ঠিক যেমন আজ জান্নাতের ডেলিভারি হচ্ছে। আবির, আবিরের পরিবার আর জান্নাতের বাবা-মা অধীর হয়ে আল্লাহকে ডাকছেন। তাদের চাওয়া শুধু একটাই। মা আর সন্তান যেন ভালো থাকে। আল্লাহ আল্লাহ করতে করতে তাদের সবার দোয়া কবুল হয়। নার্স এসে আবিরকে জানায়,

~ আপনার একটি মেয়ে সন্তান হয়েছে।

আর সাথে সাথে সবাই অনেক খুশী হয়ে বলে,

– মাশাল্লাহ।

মেয়ের বাবা একটা জান্নাত পেয়েছে। কারণ মেয়ের বাবা হওয়া মানের তার জন্য একটা জান্নাত রেডি থাকে। আবির তো খুশীতে পাগল। পুরো হাসপাতালে মিষ্টি বিতরণ হচ্ছে। আবিরের মেয়েটা ঠিক জান্নাতের মতো হয়েছে। মায়াবতী। আবির জান্নাতকে বলে,

– তুমি আমাকে একটা জান্নাত দিলে। আমার নিস্তব্ধ শহরের আজ আমার মেয়ের হাসি কান্নায় ভরে যাবে। আর সাথে রবে তুমি আর আমাদের অফুরন্ত ভালবাসা। অসংখ্য ধন্যবাদ তোমাকে। আর অসংখ্য কোটি শুকরিয়া আল্লাহর কাছে।

– সমাপ্ত।

পুরো গল্পটি কেমন লেগেছে আপনাদের তা জানবেন কিন্তু। আমি অপেক্ষায় থাকবো আমার প্রিয় পাঠক/পাঠিকাদের মূল্যবান মন্তব্যের আশায়। ধন্যবাদ সবাইকে এতোটা সময় ধরে সাথে থাকার জন্য। সামনেও থাকবেন আশা করি। আর,

বাসায় থাকুন-আল্লাহর ইবাদত করুন-সবার জন্য দোয়া করুন।

© আবির খান।

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

4 মন্তব্য

  1. Vishon sundor….apni manushtao hoyto ato tai sundor tai ato vlo akta byakkha tule dhorelen….khusi holam dhonnobad apnake asonkho dhonnobad….apni valo thakun nijer poribar porijon k niye sukhe thakun.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে