অধিকার পর্ব-১৬ এবং শেষ পর্ব

2
4669

#অধিকার
#শেষ_প্রহর
#লিখাঃ #Yasira_Abisha (#Fatha)

সারারাত রুহি ঘুমাতে পারেনি,, ফজরের নামাজের পরে নাজমা একটা ঘুমের ঔষধ খাইয়েছে রুহিকে জোর করে,, মেয়েটা এতক্ষণে ঘুমিয়েছে নাজমার খুব মায়া হচ্ছে একদম নিজের নাতনির মত লাগছে মেয়েটাকে,, রুহির পাশে নাজমাও ঘুমিয়ে গেলো,,

প্রায় ৭ঃ৩০টার দিকে রহিমা এসে নাজমা কে আস্তে আস্তে ডাক দিয়ে ঘুম থেকে উঠতে বললো,,
-খালা খালা উঠো,, জরুরি কথা আসে,
– বলো মা,
-বাইরে আসো
– হ্যাঁ এখন বলো,,
– খালা মেয়েটা আমাদের ম্যাডাম,, ইরাদ স্যারের বউ। উনার ঠিকঠাক যত্ন করতে হবে,,
– আমি জানি,, কিন্তু তুমি জানলা কিভাবে?
– ডাক্তার ম্যাডাম ফোন করসিলো,, স্যারের সাথে নাকি ম্যাডামের ভুল বুঝাবুঝি হইসে তাই উনি রাগ করে বেড় হয়ে গেসেন বাসা থেকে। কিন্তু আপনি কিভাবে জানলেন এগুলো?
– আমাকে ম্যাডামই বলছে,, উনি জানতো না এই আশ্রম স্যারের।
– আচ্ছা খালা শুনেন একটা প্ল্যান আছে,,
সবটা রহিমা বুঝিয়ে দিলো নাজমা কে ,, নাজমার খুব ভালো লাগছে সবটা শুনে,, ইরাদ আর রুহি মিলে যাক এইটাই ও চাচ্ছিল এতক্ষণ ধরে,,

প্রায় ১২ঃ৩০ টার দিকে রুহির ঘুম ভাংলো,, চোখ ডলতে ডলতে ও ঘুম থেকে উঠে চারদিকে তাকিয়ে মনে পরে গেলো গতদিনের সব কিছু,, মনের ভিতরটা আবারো ভারী হয়ে গেলো,, আজ ও বাড়ি ফিরে যাবে,, সবাইকে সবটা সত্যি জানাতে হবে,, আর ইরাদের থেকে তো দূরেও চলে যেতে হবে।
রুহি ফ্রেশ হয়ে বেড় হলো বাথরুম থেকে তখন নাজমা ঘরে এসে একটা হাসি দিয়ে বললো,,

-আরে দাদু উঠে গেছো?
-জ্বী,, আচ্ছা দাদু ট্রেন স্টেশনটা কোথায়?
– কেন? আসলে আমার বাড়ি চট্টগ্রাম। আজই চলে যেতে চাচ্ছি,, কিন্তু কিছু চিনি না তাই জিজ্ঞেস করছিলাম।
– আজ তো যাওয়া যাবে না,
– কেন দাদু??
– আমার জন্মদিন আজকে, থাকা লাগবে তোমার ও।
– হ্যাপি বার্থডে দাদু বলে রুহি তাকে জড়িয়ে ধরে আরো বলল
– দাদু আজ যাই আমার খুব খারাপ লাগছে এই শহরে।
– আমি জানি কিন্তু এই বুড়ি কয়দিন বাচিঁ তার ঠিক ঠিকানা নেই,, এই ছোট একটা আবদার রাখতে পারবে না?
রুহি কিছুক্ষণ ভেবে থাকার জন্য রাজি হয়ে গেলো,,
“নাজমা দাদুকে দেখলে নিজের দাদুর কথা মনে পরে রুহির, খুব অমায়িক আর মায়াবী একজন মানুষ ”
– আসো দাদু নাস্তা করবে।
– খেতে ইচ্ছে করছেনা দাদু
– খেতে হবে আসো এখনি,,
– নামাজ তা পরে নিই?
– ঠিক আছে দাদি নাতনি মিলেই নামাজ পরি।
রুহি মোনাজাতে খুব কান্না করলো,,
নাজমা ও আল্লাহার কাছে বললো,,
তাড়াতাড়ি যেন এই সরল মনের মেয়েটার সকল কষ্ট দূর হয়ে ইরাদের সাথে মিল হয়ে যায়।

এদিকে ইরাদ বার বার ঘড়িতে তাকাচ্ছে আর পায়চারি করছে এই পর্যন্ত ৫বার ডেকোরেটর ফোন করেছে,, সব যেন সুন্দর মত গুছিয়ে করে,, তাড়াতাড়ি যেন সব শেষ করে,, রুহি আর ইরাদের ছবি সহ একটা বিশাল আর্ডার করেছে ইরাদ,, যেই ছবিটা রুহির মোবাইলের স্ক্রিনে ছিলো সেটাই। রুহিকে আজকে নিজের সাধ্যের মধ্যে যা আছে সেই সব কিছু দিয়ে বরণ করতে ইচ্ছে করছে ইরাদের। সময় যেন কাটছে না আজকে,,, এত দিন রুহিকে চোখের সামনে দেখতে দেখতে এখন দূরে থাকতে আর ভালো লাগছেনা,,

সুরাইয়া আব্দুল্লাহ বাসায় ফিরতেই মাহিরা এক দৌড়ে তাদের সামনে এসে জিজ্ঞেস করলো,,
– পাওয়া গেছে ওই মেয়ে কে?
-না,, (সুরাইয়া)
আব্দুল্লাহ আর সুরাইয়া কিছু না বলে ঘরে চলে গেলো,,
মাহিরার এসব একদম ভালো লাগছেনা তাদের,, এমনিতেই সারা রাত ঘুমায়নি। আব্দুল্লাহ সুরাইয়া গোসল সেড়ে এক ঘুম দিয়ে দিলো,, বয়স হয়ে গেছে,, এই সময় সারারাত জাগা কষ্টকর হয়ে যায়।
মাহিরা একা বিড়বিড় করে বলছে,
-থ্যানক গড,, এই মেয়ে মরে যাক,,
দুই দিনের একটা মেয়ে আসাতে ইরাদ আমাকে কিভাবে ভুলে গেলো? আই হ্যাভ টু ফাইন্ড দিস আউট।
আপাতত গোসল করতে হবে,, ইরাদের সাথে দেখা করতে যাবো আজকে রাতে এখন একটু রূপচর্চা করা লাগবে,,
টুনি,, এদিকে আয় তো,

রাত থেকে টুনিকে বিরক্ত করে ফেলেছে মাহিরা বরাবরের মত। এটা করে দে ওটা করে দে।
টুনির কথা হলো
” ইরাদ ভাই যখন হেরে ছাইরাই দিসে তাইলে আবার আইসা আমগো জালায় কেন? দাদি যে কেন ঠাই দিসে হেরে, আর হের নতুন জামাই কই গেলো আমগো জীবনে আইসা জ্বালাতন করতাসে”
কথা গুলো বিড়বিড় করতে করতে টুনি উত্তর দিলো,,
-আইতাসি আপা।
-কি রে টুনি আমাকে আপা ডাকিস কেন?
– তাইলে কি ডাকুম?
– কেন জানিস না? ভাবী ডাকবি
– আপনি তো এহন আর ভাবী না,,
– বেশি কথা বলবিনা। তুই অনেক বেড়ে গেসিস, আমার জন্য বেসন আর লেবু নিয়ে আয়।
-আনতাসি।
মাহিরার খুব রাগ লাগছে,, কাজের মেয়ের কত বড় সাহস ওকে এভাবে মুখে মুখে উত্তর করে, ইরাদ ঠিক হোক তারপর যাকে যাকে শিক্ষা দেওয়ার তাকে তাকে মাহিরা উচিত শিক্ষা দিবে।
রাগে মাহিরা কান্না করতে শুরু করে দিয়েছে,,
সব কিছু মনে পরে গেছে শরীর রাগে কাপছে,,
রাগটা টুনির ওপরে কম তামিমের ব্যাবহার মনে পরে বেশি লাগছে আর এইজন্যই ২দিন ধরে সব কিছুই অসহ্য লাগছে মাহিরার।
তামিম ওকে ছেড়ে দিয়েছে যখন ও বলেছে ওকে বিয়ে করতে,, তামিমের উক্তি এমন ছিলো যে
” তুমি ওয়াইফ ম্যাটেরিয়াল না,, তোমার সাথে এভাবে রিলেশনশিপ ঠিক আছে,, আর এখন আমি তোমার সাথে থাকতে চাইনা,, কত চেষ্টা করেছে তামিমকে নিজের করার কিন্তু সে শুনে নি মাহিরার একটা ও কথা,, যার জন্য ও নিজের স্বামী কে ছাড়লো ওই মাহিরাকে ও ছেড়ে দিলো অন্য এক মেয়ের জন্য। মাহিরা নাকি বউ হবার যোগ্যতা রাখেনা, ও একটা দুশ্চরিত্রা মেয়ে,, কথাটা অনেক গায়ে লেগেছে ওর। মাহিরা তাই আবারো ইরাদের স্ত্রী হয়ে তামিমকে দেখিয়ে দিবে ও স্ত্রী হতে পারবে কি না?? এত বাজে ভাবে তামিম ওকে ছেড়ে দিবে এটা কখনোই মাহিরা ভাবতে পারেনি,, ইচ্ছে করছে নিজের চুল নিজে ছীড়তে।আর ২দিন ধরে ও বুঝেছে ইরাদই ওর জন্য পারফেক্ট ছিলো,, ওকে অনেক ভালোবাসা দিয়েছিলো, যত্ন নিতো,, এই ছেলে এত পাগল ছিলো ওর জন্য,, হুট করে অন্য কাউকে ভালোবেসে ফেলবে। এটা তো মাহিরার কল্পনাতে ও ছিলো না,, তারপরেও এত বছরের সম্পর্ক এত তাড়াতাড়ি ওকে ভুলে যাবে নাকি কিছুদিনের আগত এক মেয়ের জন্য? এটা মাহিরা হতে দিবেনা নিজের অধিকার নিজ নিয়েই ছাড়বে, এই মনোস্থ করেই ও ফিরে এসেছে আর যাওয়ার ও তো কোনো জায়গা ওর নেই। মা বাবা বলেছে তাদের সাথে থাকতে পারবেনা,, তামিম ওকে ছেড়ে দিয়েছে আছে এখন শেষ সম্বল হচ্ছে ইরাদ। ওকে ইরাদের মেনে নিতেই হবে।

-এইজে আপা নেন,,, বলে টুনি বাটিটা হাতে দিয়ে চলে গেলো মাহিরাকে।

রুহি কোন মত খেয়ে উঠলো ,, নাজমার জোরে না খেয়ে থাকতে পারলো না।
ইরাদ কি করছে এখন? ও ঠিকমতো খেয়েছে তো।মাথায় শুধু এগুলোই ঘুরছে। স্বামী সংসার সব বরই অদ্ভুত জিনিস,, যতই দূরে থাকা হয়,, স্বীকৃতি নাই বা পাওয়া হয় তারপরেও একটা টান থাকে।
অজানা একটা ভালোবাসা,, কাজ করে।
আচ্ছা ইরাদের কি একটা বার ও আমার কথা মনে পরেছে? নাকি ভালোই আছে মাহিরা কে নিয়ে? আচ্ছা আল্লাহ পাক কি আমাকে ওর জীবনে আগে দিতে পারতো না? হয়তো আজকে আমি ওর স্ত্রী থাকতাম মাঝে কেউ থাকতো না,, আচ্ছা আমি কি ওদের মাঝে এসেছি? হ্যাঁ আমিই তো,, ইরাদের মনে তো আমি জায়গা করতে পারিনি,, পারলে হয়তো দ্বিতীয়া হতাম না,, বিছানার এক কোণে শুয়ে রুহি কথা গুলো ভাবছিলো প্রায় দুপুর শেষের দিকে,,
রহিমা এসে রুহিকে জিজ্ঞেস করলো
– ঘুমিয়েছেন?
– না আন্টি
– উঠে নেন রেডি হবেন না?
– কেন? ওইজে প্রোগ্রাম আছে,, মানে খালার জন্মদিন।
– না আন্টি এভাবেই ঠিক আছি।
– না হবেনা আমার জন্মদিন উপলক্ষে তোমার সাজতেই হবে।
– দাদু আমার জামা নেই কোনো এখানে,,
– আমার তো আছে দেখো এগুলো পরে নাও
– এগুলো কেন?
– পরেন,,
রহিমা এক প্রকার অনুরোধ করেই বললো,,
রুহির কাছে যথেষ্ট অবাক লাগলো রহিমার এত সম্মান আর যত্নশীল আচরণ,, তারপরেও ভাবলো হয়তো নাজমা ওকে আদর করে তাই এমন করছে।
নিজের জন্য না হলেও নাজমার জন্য তৈরী হলো রুহি,, গোলাপি একটা জর্জেটের শাড়ি ঠোঁটে গোলাপি লিপস্টিক। এর বেশি কিছুই করার ইচ্ছে হচ্ছেনা ওর। যদিও বেশ কিছু মেকাপ আছে ব্যাগটায়।
-মাশাল্লাহ কত সুন্দর লাগছে,, আপনি একদম পরীর মত দেখতে। রহিমা বললো রুহিকে দেখে।
– ধন্যবাদ আন্টি।

আব্দুল্লাহ আর সুরাইয়া কে তৈরি হতে দেখে মাহিরা জিজ্ঞেস করলো
” কোথাও যাচ্ছেন?”
“হ্যাঁ ইরাদ তো কিছু খায় নি ওকে খেতে দিবো”
“তুমি থাকো” আমরা আসছি
কথা কোনোমতে বলে সুরাইয়া আর আব্দুল্লাহ চলে গেলো।

ইরাদের প্রতিক্ষার পালা শেষ,, এসে পরেছি রুহির কাছে,, বিকেলের সূর্য সোনালী বরণে, আকাশে হালকা লালছে ভাব ধারণ করেছে।
সুরাইয়া বললো
“আমরা সবাই ভিতরে বসবো তুমি আর রুহি একান্তে কথা বলো সব ঠিক করো তারপর সবাই ওপরে যাবে।”
ইরাদকে দেখে রহিমা সালাম দিয়ে বললো,
-স্যার আপনি যান আমি ম্যাডামকে পাঠাচ্ছি।
ইরাদ ছাদে চলে গেলো,,
রহিমা নাজমাকে ইশারা করাতেই বুঝে গেলো ইরাদ চলে গেছে ওপরে।
-ছাদে কি সব ঠিকঠাক করেছো রহিমা?(নাজমা)
– আমিতো দেখিনাই,, কেউ গিয়ে একটু দেখে আসবে?? মামণি আপনি যাবেন??(রহিমা)
-আচ্ছা ঠিক আছে আমি দেখে আসি।
-মামণী আপনি আর আই আইসেন না,, আমরা এখনি সবাই আসতেসি আপনি যান আগে।
-ঠিক আছে তাড়াতাড়ি আসেন সবাই।

রুহি ওপরে এসে দেখে খুবই অবাক হলো এত সুন্দর করে সব কিছু সাজানো হয়েছে,, মনে হচ্ছে বড় কোনো ডেকোরেশন এজেন্সি দিয়ে করানো হয়েছে,, চোখ ধাধানো সৌন্দর্য,, পুরোটা লাল দিয়ে ডেকোরেশন করা হয়েছে। রুহি ভেতরে গিয়ে দেখলো তেমন কেউ নেই,, ওই মনে হয় প্রথমে এসেছে।
রেলিং এর সামনে গিয়ে দাড়িয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে ও সব কিছু কত অপরূপ লাগছে কিন্তু ওর মন ফাকা ফাকা লাগছে,, আজকে ইরাদ পাশে থাকলে হয়তো সব ভালো লাগতো কিন্তু এ তো আর সম্ভব না,, ইরাদ কে ছাড়া কিছুই ভালো লাগেনা তবুও মনকে মানাতে হবে,,
মৃদু আওয়াজে গান চলছে,,

“পৃথিবীর যত সুখ, যত ভালবাসা
সবই যে তোমায় দেব, একটাই আশা
তুমি ভুলে যেও না আমাকে
আমি ভালবাসি তোমাকে।

ভাবিনি কখনো, এ হৃদয় রাঙানো
ভালবাসা দেবে তুমি
দুয়ারে দাঁড়িয়ে, দু’বাহু বাড়িয়ে
সুখেতে জড়াব আমি
সেই সুখেরই ভেলায়
ভেসে স্বপ্ন ডানা মেলব এসে
এক পলকে পৌঁছে যাব, রুপকথারই দেশে
তুমি ভুলে যেও না আমাকে
আমি ভালবাসি তোমাকে।।”

সেই দিনটার কথা মনে পরে গেলো রুহির,,
কেমন যেন অস্থির লাগছে,, মনে হচ্ছে ইরাদ এখানে কোথাও আছে।
ও যদিও জানে ইরাদ তো আসবে না এখানে তবুও এমন লাগছে কেন জানি,,
চোখ থেকে পানি পরতে শুরু করেছে ওর,,
চোখটা বন্ধ করে পানি আটকানোর বৃথা চেষ্টা করছে ও।
পুরুষ কন্ঠ শুরু হতেই মনে হলো এখন কেউ বুঝি সামনাসামনি গানটা করছে,, কি সুন্দর আওয়াজ,, মনটা শীতল হয়ে যাওয়ার মতো।
পেছন থেকেই আওয়াজটা এখন আসা শুরু করেছে,, ধীরে ধীরে কন্ঠটা কানের কাছে এসে পরেছে,,
রুহির পেছন থেকে অনুভব করলো কে যেন ওকে জড়িয়ে ধরেছে,, পেছনে ঘাড় ঘুরে তাকাতেই অবাক হয়ে গেলো,, কারণ ইরাদ ওকে জড়িয়ে ধরে বাকি লাইন গুলো গাইলো,,
রুহির চোখে চোখ রেখেই।

রয়েছে এখনো এ বুকে লুকানো
রাত জাগা স্বপ্ন ঘুমিয়ে
মেঘেতে দাঁড়িয়ে, আকাশে হারিয়ে
যতনে রেখ গো তুমি
সেই মেঘেরই আঁচল এনে
আমায় তুমি নাও গো টেনে
রং–তুলিতে আঁকব ক্ষণ
রুপ কুমারের দেশে

তুমি ভুলে যেও না আমাকে
আমি ভালবাসি তোমাকে।।

“ভালোবাসি ঝড়ের রাতে আগত পরী,, অনেক ভালোবাসি,, ”
রুহি ইরাদকে জড়িয়ে ধরে বললো,,
“আমিও ভালোবাসি,, অনেক বেশি অনেক”
“আমাকে আপনি ফেলে চলে গেলেন এভাবে কিচ্ছু না বলেই, আমি যে সহ্য করতে পারবোনা,,, আপনি কি একটুও বুঝতে পারেম নি?? কেন এমন করলেন আমার সাথে?? আমি পাগলপ্রায় হয়ে গিয়েছিলাম,,
“কাল আপনি উনাকে বলছিলেন ভালোবাসি আরো কিছু কথা আমি দরজার ওপাশে গিয়েছিলাম আপনার সাথে কথা বলার জন্যই গিফট গুলো দেখার পর,, এগুলো শুনে আমি আর সহ্য করতে না পেরে চলে যাই”
” ওগুলো মাহিরার ফোনে রেকর্ডিং ছিলো,, ম্যাসেঞ্জার থেকে ডাউনলোড করে নিয়েছিলো আমার আগের কথা ওগুলো আর গিফট তোমার জন্য এনেছিলাম আমি পিতা হতে পারবো না কখনো এই অক্ষমতার জন্য আপনার প্রতি ভালোবাসা ও প্রকাশ করিনি আমি,, আমাকে মেনে নিলে আপনি মা হতে পারবেন না কখনো…
কথাটা বলার সাথে সাথে রুহি ইরাদের মুখ চেপে ধরলো,,
“আল্লাহ যদি এটা চায় আপনি আমি কে অমান্য করার?? বাচ্চা আল্লাহার নেয়ামত যদি উনি দেয় তাহলে হবে নাহলে নাই,, এর কারনে কি স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা কমে যাবে? আমি মনে করিনা। আমি আপনাকে ভালোবাসি,, এর বেশি কিচ্ছু জানিনা,, আপনাকেই চাই আমি। ”
রুহি কথাটা বলে ইরাদের বুকে মুখ গুজলো,,
ইরাদ ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেছে, প্রায় অনেক ক্ষন এভাবে থাকার পরে ইরাদ বললো,,
“আমাকে রেখে যাবেন আর কখনো?”
“উহুম আর কোনোদিন যাবো না”
“ডান হাতটা দিন”
ইরাদ রুহিকে একটা সুন্দর আংটি পড়িয়ে দিলো ডায়মন্ডের। বললো,,
“আমাদের ভালোবাসার স্মৃতি এটা,, সব সময় হাতে পরে থাকবেন”
রুহি নিজের হাতে একদম প্লেইন একটা পাতলা গোল্ডের রিং খুলে ইরাদকে পরিয়ে দিয়ে বললো,,
“আর এটা আপনার,, আমার দাদা আমাকে দিয়েছিলো এটা,, উনি পরতেন সব সময় আজ আপনাকে আমি এটা দিলাম কখনো খুলবেন না”

ইরাদ মিষ্টি করে হেসে রুহিকে বললো
আচ্ছা আসেন এখন কেক কাটি,, এরপর সবাই উপরে আসলো রুহি কেক আর বাকি সব কিছু দেখে অবাক,,
ইরাদ এত কিছু ওর জন্য করেছে, সবাই জানতো এসব কিছু ভীষণ লজ্জা ও লাগছে ওর।
রাত পর্যন্ত ওরা আশ্রমেই রইলো,, সবাই ইরাদকে কত ভালোবাসে রুহির অনেক ভালো লাগছে সব কিছুই,,
একবারে খাওয়া দাওয়া শেষ করে কিছুক্ষণ পরেই ওরা বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে যাবে,,
এমন সময় মাহিরা এসে হাজির।
সুরাইয়ার ল্যান্ডলাইনে টুনিকে আরিশা ফোন করেছিলো ওদের সাথে এসে হেল্প করার জন্য ইরাদ আর রুহির বাসর সাজানোর জন্য এমন সময় মাহিরা কথা গুলো শুনে ফেলে,, আর টুনিকে জোর করে জেনে নেয় ওরা কোথায় আছে।
মাহিরা- ইরাদ ফাইনালি এই মেয়েকে খুঁজে বেড় করেই ফেলেছো? এই মেয়ে তুমি যাওয়ার অন্য কোনো জায়গা পাওনি? আমার হাসবেন্ড এর কাছে আসছো কেন?
ইরাদ- রুহিকে নিয়ে একটা কথাও না মাহিরা,,
তুমি চলে যাও আমাদেরকে আমাদের মত থাকতে দাও।
মাহিরা- যাবো না আমি,, তুমি শুধু আমার। আমার একমাত্র অধিকার তোমার ওপরে।
রুহি- ছিলেন,,
উনি আপনার ছিলেন ততদিন যতদিন আপনি তাকে ডিভোর্স দেন নি। এখন আমার স্বামী উনি,,
মাহিরা- মানিনা এই বিয়ে,, বললেই হয়ে যাবে?
রুহি- হ্যাঁ বললেই হবে না ঠিক বলেছেন,, কাগজ কথা বলবে,, আপনার আর উনার ডিভোর্স পেপারস কথা বলবে,,
এবার মাহিরা ইরাদের সামনে গেলো এক ঝাটকায় ওকে জড়িয়ে ধরতে যাবে এমন সময় রুহি এসে মাঝে দাড়ায়,
রুহি- আমার স্বামীর সাথে পরনারীর মেলামেশা আমার পছন্দ না একদমই,, কিছু বলার থাকলে দূর থেকে বলেন,
রুহির এমন উত্তরে সেখানে থাকা প্রত্যেকের ভালো লাগলো,,
যে এত জঘন্য একটা কাজ করেছে,, এত দিন কোনো মর্ম দেয়নি এমন একটা স্বামীর,, যখন ইরাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ হচ্ছিলো তখন সে অন্যজনের সাথে আবৈধ সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলো,
আর সে আজ এসেছে ইরাদের কাছে ফিরতে,, এমন মানুষ কখনোই ক্ষমার যোগ্য না,,
মাহিরা করুণ হয়ে ইরাদের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,,
-আমি ভুল করেছি মানি,, কিন্তু আমার কষ্টে কি তোমার একটুও কষ্ট হচ্ছে না ইরাদ?? এত কঠিন কবে থেকে হলে তুমি?? তুমি ছাড়া আমার আর কোনো উপায় নেই ইরাদ,, আমাকে কেউ তাদের কাছে রাখতে চাচ্ছেনা, তামিম বলেছে আমি চরিত্রহিনা,, মা বাবা আমাকে রাখলে আমার কারণে নাকি তাদের মানসম্মান শেষ হয়ে যাবে তাই তারাও বলেছে কখনো যেন ফিরে না যাই,, তুমি না রাখলে আমি কোথায় যাবো? আমাকে একটা সুযোগ দাও ইরাদ? আমি আমার পুরোটা দিয়ে চেষ্টা করবো তোমাকে খুশি রাখার।
রুহি এবার কিছু বললো না ও চাচ্ছে ইরাদের মন থেকে যা আসে ও যেন তাই বলে।
রুহি শুধু ইরাদের চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো,,
ইরাদ- মাহিরা তোমার জন্য আমার খারাপ লাগছে,,, কিন্তু ভালোবাসাটা এখন আর নেই,, কারণ পুরোটা তুমি নিজের হাতেই শেষ করে দিয়েছো,, আর আমার প্রতি তোমার কোনো অধিকার নেই, না আছে আমার ভালোবাসার প্রতি। আধিকার জিনিসটা কখনো আপেক্ষিক থাকেনা , কিন্তু আমরা একটা সম্পর্ক নষ্ট করে দিয়ে তাকে শেষ করে দেই।
আমার প্রতি এখন তোমার আর কোনো অধিকার নেই।
রুহি- আপু একটা কথা বলি, সামনের পথ চলায় হয়তো কাজে আসবে আপনার,, যতদিন একটা সম্পর্ক থাকে ঠিক ততদিনই অধিকার থাকে।
আপনি নিজের জায়গা ছেড়ে গেলে সেখানে অন্য কেউ আসবে এবং অধিকারটা তখন তার হয়ে যাবে এটা আমার কথা না এটা দুনিয়ার নিয়ম।
মাহিরা- ইরাদ এটাই তোমার শেষ কথা?
ইরাদ- হ্যাঁ আশা করবো তুমি আমাদের জীবন থেকে দূরে চলে যাবে।
মাহিরা- আমার যাওয়ার সত্যি কোনো জায়গা নেই।
সুরাইয়া – মাহিরা এখন এটা ইরাদের দেখার বিষয় না,, তোমার কথা গুলো খারাপ লাগলেও এটা সত্যি।
-তাহলে আমি চলে যাবো??
রুহি ইরাদের দিকে তাকিয়ে বললো,,
১০ হাজার টাকা দেন,,
ইরাদ ওকে দেওয়ার পরে সেটা রুহি মাহিরার হাতে দিয়ে বললো
-আপু এটা নিয়ে যান,, এর বেশি কিছু করতে পারছিনা আমরা,, আর আশা করছি আপনি আমাদের জীবনে ফিরে আসবেন না কোনোদিন।
মাহিরার খুব কষ্ট হচ্ছে,, একটা সময় ও রুহির জায়গায় ছিলো,, কষ্টে এটা নিতে ইচ্ছা করছেনা,, কিন্তু এই টাকার ওর অনেক দরকার এখন তাই ও নিয়ে চলে গেলো,,
এক অজানা গন্তব্যের দিকে,, আজ ও বাড়িঘর ছাড়া,, না কারো স্ত্রী,, না কারো মেয়ে,, না কারো প্রেমিকা। নিজের দোষেই আর ওর পরিনতি এমন।

ইরাদের খারাপ লাগলো মাহিরার জন্য,, কিন্তু রুহির হাতটা শক্ত করে ধরলো ও। কারণ অতীত কে ফিরিয়ে আনার মানে হয়না আর এই মেয়েটার সাথে ওর আগামী জীবনের পথচলা। ওর কালো অন্ধকার রাতের সমাপ্তি ঘটেছে ভোর এসে উঁকি দিচ্ছে,, এই নতুন জীবনটার মানুষটা ওকে খুব করে চায়,, ওকে আগলে রেখেছে,, ভেঙে পরতে দেয়নি,,
পুরোটা জীবন এর সাথেই ওর পার করতে হবে,, আর মাহিরার এই জীবন মাহিরাই বেছে নিয়েছে এখানে ইরাদের কিছুই করার নেই।
আব্দুল্লাহ – চল এবার নাতিবউ নিয়ে বাড়ি যাই,,
সুরাইয়া – হ্যাঁ চল চল বাড়ি যাই।
রুহি সবার থেকে বিদায় নিলো,, নাজমা কে বললো আবার আসবে দেখা করতে।

গাড়িতে আসার সময় রুহি ইরাদকে জিজ্ঞেস করলো আরিশা কি ওকে ফোন করেছিলো কি না?
– আরিশারা সব জানে রাত থেকেই।
– তাহলে আজ আসলো না যে?
– ওরা আমাদের বাসায়ই, জরুরি কাজ করছে।
– এখানে আসা থেকে বেশি কি এমন কাজ হলো তাদের?
– আমাদের বাসর ঘর সাজাচ্ছে।
ইরাদ কথাটা একটা দুষ্ট হাসি দিয়ে বললো,
রুহি একদম লজ্জায় লাল হয়ে গেলো,,
“উনি যে কিসের মধ্যে কি বলে,, একদম লজ্জা নেই”
কথাগুলো রুহি মনে মনে বললো,,
কিন্তু ইরাদ উত্তর দিলো,,
– হ্যাঁ লজ্জা নেই আসলেই,, কিন্তু আমি নির্লজ্জ শুধু আপনার কাছেই।

“মনের কথা ও শুনে ফেললো এখন আর কিছুই ভাববো না” রুহি আবারো মনে মনে বললো,,

– কিছু ভাববেন না এখন আর?

রুহি এবার বড় বড় চোখ করে ইরাদের দিকে দেখছে,,
– আমার বউকে আমি বুঝি।
এবার রুহি একটা লাজুক হাসি দিলো ,,

পিয়াল আরিশা টুনি মিলে রুহিকে বরণ করে নিলো, আরিশা টুনি মিলে রুহিকে রেডি হতে সাহায্য করলো,,
রুহি লাল সেই শাড়িটাই পরলো যেটা ইরাদ ওর জন্য কাল এনেছিলো,,
ঠোঁটে লাল লিপস্টিক দিলো গালে ব্ল্যাশঅন দিলো,, চুল গুলো ছেড়ে দিয়েছে এভাবেই মনে হচ্ছে একটা লাল পরী।
ইরাদ সাদা একটা পাঞ্জাবি পরেছে,, চুল গুলো ব্যাকব্রাশ করে জেল দিয়ে সেট করেছে,, খোচা খোচা দাড়ি মুখে
পিয়াল বললো,,
-একদম নায়ক লাগতেসে ভাবী তো আজকে পুরাই ঘায়েল হয়ে যাবে।
– হ্যাঁ তোরা যা এবার,, কাবাবে হাড্ডি
– কি খারাপ বউ পেয়ে আমাকে ভুলে গেলি?
– হ্যাঁ তোর বউ নিয়ে যা তুই আমাকে শান্তি মত বউকে নিয়ে বসে কথা বলতে দে।
– কত যে কথা বলবি আজকে, জানা আছে এগুলা আমাদের
এই বলেই আরিশা ঘরে ঢুকলো,,
এবং সাথে সাথে হেসে দিলো পিয়াল আর আরিশা,,
-পিয়াল বেবি চল চলে যাই,, নিউ কাপল কে আজকে রোমান্স করতে দেই।
– হ্যাঁ ডার্লিং চল।
-ইরাদ শোন তোর বউকে ঘরে দিয়ে এসেছি।
আরিশা আর পিয়াল চলে গেলো,,

রুহি বেড রুমে এসে আরো অবাক হয়েছে কারণ ওর আর ইরাদের বড় একটা ছবি বিছানার ওপরের দিকটায় লাগানো হয়েছে,, পুরো ঘরটা বেলি গোলাপ আর রজনীগন্ধা দিয়ে সাজানো হয়েছে,, খুবই মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। আজকের আমেজটাই যেন বলছে আজ ভালোবাসার রাত,, এক হওয়ার রাত।
রুহি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে ইরাদ ঘরে এসে রুহিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো,,
এতে রুহির পুরো শরীরে যেন এক প্রকার বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়ে গেলো,, ইরাদ ওকে আস্তে করে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো,, রুহি লজ্জায় ওকে ছাড়িয়ে ঘরের ভিতরে যেতে চাইলো তখন ইরাদ ওর হাত ধরে ফেললো,, কাছে টেনে নিয়ে হাত দুটো নিজের হাতে নিয়ে চোখে চোখ রেখে বললো,,
-আপনি যতদিন না চাইবেন ততদিন কিছু করবো না,, যতটা ইচ্ছে সময় নিতে পারেন।
রুহি ইরাদের চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো,, কি সুন্দর হাসি এই লোকটার দেখলে শুধু দেখতেই ইচ্ছে করে,, এখন তো কোনো বাধা নেই,, এখন এই মানুষটাকে ভালোবাসাই যায়,, খুব করে ভালোবাসা যায়,,
রুহি এবার ইরাদের হাত দুটো নিজের কোমড়ে দিয়ে ওর গলা জড়িয়ে ধরে চোখে চোখ রেখে ঠোঁটে ঠোঁট জোড়া আলতো করে গুজে দিলো,, ইরাদ খুব অবাক হয়ে গেলো,, কিন্তু ভালো লাগছে,, ভালোবাসার গভীরতায় ডুবে যেতে,, উভয়ের হৃদস্পন্দন বেড়ে গেছে,,
রুহি কিছুক্ষণ পরে ইরাদের ঠোঁট ছেড়ে বললো,,
“এতটা ভালো হওয়া ও কিন্তু ভালো না,,”
কথাটার অর্থ ইরাদের বুঝতে বাকি নেই,, একটা সুন্দর হাসি দিয়ে রুহিকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো,,
“একটু খারাপ হওয়াই যায় তাহলে”
রুহি লজ্জার বিছানায় মুখ গুজে দিলো,, ইরাদ ওকে ঘুরিয়ে নিজের দিকে,, শাড়িটা খুলে ফেললো,,
ইরাদের প্রতিটি স্পর্শ রুহিকে নতুন করে জাগ্রত করছে,, এ যেন এক নতুন কেউ,, আজ রুহি পূর্ণতা পাচ্ছে,,
একে অপরকে ওরা আবিষ্কার করছে,,
ভালোবাসার গভীরতায় ডুবে যাচ্ছে,, যতটা সম্ভব অতটা দিয়েই আজ একে অপরকে আপন করে নিচ্ছে ওরা। ইরাদের ক্ষত বিক্ষত মনটায় এক রাশ সুখ আর শান্তি নিয়ে এসেছে ওর ঝড়ের রাতে আগত পরী,, আজ ভালোবাসায় কোনো বাধা নেই,,
আজ আছে পুরোপুরি আধিকার,, আছে ভালোবাসা,, আছে পুর্ণতা,, আছে বৈধতা।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আপনারা জানেন ইয়াসিরা আবিশা ফাৎহার গল্প মানেই গল্পের শেষে একটা ম্যেসেজ থাকে আপনাদের জন্য,, অধিকার নিয়ে আজ এতটুকু বলবো,, মাহিরার মত পুরুষ / নারী যদি কারো জীবনে থেকে থাকে তারা কখনো ২য় সুযোগ ডিজার্ভ করেনা,, তাদের থেকে সরে আসাটাই বুদ্ধিমানের কাজ,, ভালোবাসা ভালো কিন্তু যারা এর মর্যাদা দিতে পারেনা তাদের ভালোবাসতে নেই। তাকেই অধিকার দিন যে এর মর্যাদা রাখতে পারবে। আর একবার অধিকার হারিয়ে গেলে তা ফিরে পাওয়া যায় না। তাই সময় থাকতে বুঝে শুনে যে কোমো নির্ণয় নিন, সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। ( এবং ২য় সিজনে রুহির পারিবারিক সমস্যা গুলোর রহস্য উদঘাটন করা হবে এবং সমস্যা গুলোর সমাধান দেওয়া হবে)

2 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে