তবু আছি কাছাকাছি (Doctors love) Last Part

1
3466

#তবু_আছি_কাছাকাছি(Doctors love)?
#writer_Sumaia_Islam_Mim
#part_last
?
.
.
দাদীর কোলে বসে অবাক হয়ে কথা শুনছে সায়রা! তার চোখে আকাশ সমান বিষ্ময়! তাদের কথার মাঝেই উপস্থিত হলো আহানা! দাদী এবং সায়রা দুজনেরই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আহানার দিকে। হাতে চকলেট কেক। এসেই তার প্রথম কথা,

আহানাঃ নানুমনি! তুমি সায়রাকে মামীমার কথা বলছিলে তাই না?(হালকা হেসে)

দাদীঃ তা নয়তো কি? রোজই এক গল্প শুনবে সে। অন্য কোন গল্প শুনবেই না। নিজের মা বাবার গল্প শুনেই তার চোখ দুটো আনন্দে ছলছল করে।

আহানাঃ ও কি বুঝে নানুমনি? বয়স তো মাত্র দেড় বছর! হাহাহা!

তাদের কথার মাঝেই আগমন ঘটলো
সাদের! আর তার পিছনে সাদ! সাদ! বলে চেঁচাতে চেঁচাতে আসছে সুমু! এই ছেলেকে নিয়ে সে আর পারে না। খাবার সময় তার যত বাহানা! দৌড়াতে দৌড়াতে দাদীর কাছে এসে তার পিছনে লুকিয়ে পড়লো সে।

—(বেশ রেগে) সাদ! ভালোয় ভালোয় বেরিয়ে আসো বলছি। খাবার খাওয়ার পরেই আহানা আপুর মতো তোমাকেও চকলেট কেক দেওয়া হবে। তার আগে কিছুতেই না। সকাল থেকে বাহানা করছো শুধু!

সাদঃ মাম্মা! বলেছি তো খাবো তার আগে আমার সামনে কেকটা হাজির করো! তারপর খাবো!

—আপনি যে কেক পেয়ে খাবারটা কিছুতেই খাবেন না তা আমার চেয়ে ভালো কেউ জানে না তাই চুপচাপ খাবারটা খেয়ে নাও! একটু পর পাপা চলে আসবে, তার আগে শেষ করো! দেখেছো সায়রা লক্ষ্মী মেয়ের মতো সবার আগে খাওয়া শেষ করেছে?

সাদঃ মাম্মা! সায়রা বেবী তো শুধু ছেরেলাক খায় তাই তাড়াতাড়ি হয়ে যায়।

—কথা কম বলে খেতে আসো চুপচাপ।

এই মা ছেলের ঘটনা প্রতিদিনের। যেমন তাদের ভালোবাসা তেমন তাদের ঝগড়া। আর তাদের ছেলে সাদ এবং মেয়ে সায়রা। ছেলে পুরো বাবার মতো আর মেয়েটা একদম ঠান্ডা হয়েছে মামুর মতো। নীলেরও একটা মেয়ে হয়েছে। সায়মা আপুর আরেকটা ছেলে হয়েছে নাম এমিন।

এবার বলি, সুমু সেদিন বেঁচে গিয়েছিলো আল্লাহর রহমতে। সাদি সবসময়েই একটা কথা বলতো যে, সে কখনোই সুমুকে পায় নি বরং সে সুমুকে অর্জন করেছে। সেদিন রাকিব আর সাদি মিলেই সুমুর অপারেশন করে।

.
সব ডাক্তার যখন হাল ছেড়ে দিয়েছিলো তখন সাদি হুট করে বলে সে নিজে রিস্ক নিয়ে সুমুর অপারেশন করবে৷ এবং রাকিবও সায় দেয়। এই প্রথম সাদির হাত কাঁপছে সার্জারী করতে এসে। তাও মনে মনে কয়েক লক্ষ বার আল্লাহকে স্মরণ করে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করেছিলো সে। আর বেরিয়ে এসেছিলো হাসিমুখে কেননা সে তার ভালোবাসাকে হারতে দেয় নি। আবারও সে তার সুমুকে অর্জন করেছে। সুমুকে বেডে শিফট করে তবে ফ্রেশ হয়ে নিজের ছেলেকে কোলে নিয়েছে সে। ছেলেকে কোলে নেওয়া মাত্র তার যেন মনে হলো পৃথিবীটা বড্ড বেশিই সুন্দর। এই সুন্দর পৃথিবীটা সে তার সুমু এবং ছেলেকে নিয়ে দেখতে পারবে। আবারও সুমুর হাত ধরে রাস্তায় চলতে পারবে, আবারও সুমুর সাথে একসাথে ফুচকা খেতে পারবে। প্রায় ২০ ঘন্টা পর সুমুর জ্ঞান ফিরে। পাশে ছোট্ট একটা বাবুকে কোলে নিয়ে বসা সাদির দিকে নজর গেলো। এখন সুমু বাবুকে কোলে নিতে পারবে না। এমন কি ফিডারিং ও কারো সাহায্য নিয়ে করাতে হবে। সুমুর জ্ঞান ফিরেছে দেখে সাদি হেসে দিলো, এক তৃপ্তিময় হাসি।

.
ঘড়ির কাটা দশের কোঠায়। তখনি বেজে উঠলো কলিং বেল। সুমু মুচকি হেসে এগিয়ে গেলো তার প্রিয়তমকে সাদরে গ্রহন করতে। দরজা খুলতেই সুমুকে দেখে সাদি একটা প্রশস্ত হাসি দিলো। সাথে সাথে পিছন থেকে বেরিয়ে এলো আরেকটা মুখ, সাদ আর তারপর পিছন থেকে গুটি গুটি পায়ে সবাইকে টপকে নিজের পাপার কাছে চলে গেলো সায়রা। তার কান্ড দেখে সবাই হেসে দিলো। সাদিও তাকে বুকের সাথে লেপ্টে নিলো।

–––––––––সমাপ্ত–––––––––

সবাইকে ধন্যবাদ এতো ধৈর্য ধরে গল্পটা পড়ার জন্য।

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে