বৈধ নাকি অবৈধ পর্ব 10

1
1749

বৈধ নাকি অবৈধ পর্ব 10
জামিয়া পারভীন তানি

বাইরে প্রচণ্ড রোদের তাপ, চোখ যেনো ঝলসিয়ে যায়। এতো রোদের ভিতর একা দাঁড়িয়ে আছে নাইম। তূবা দেখেও না দেখার ভান করে ঘরে শুয়ে আছে। এতো অত্যাচার সহ্য করার পর যতটুকু ভালোবাসা ছিলো তার ৯০% মরে গেছে। সে তার ভুল বুঝতে পেরেছে নিশ্চয়ই, বুঝুক কতটা কষ্ট দিয়েছে সে আমাকে। ভালোই হয়েছে, অন্তত জানতে তো পেরেছে আমি খারাপ মেয়ে না বা তাকে কখনো ধোঁকা ও দিইনি।

“ ম্যাম, এই খাম টা আপনার। ” তূবার ভাবনার ছেদ পড়ে। একজন নার্স একটা খাম হাতে নিয়ে তূবার দিকে এগিয়ে ধরে আছে। তূবা চুপচাপ খাম টা হাতে নিলো। জানে কে পাঠিয়েছে, তাই না খুলে বুকের মাঝে চেপে ধরে রাখলো।
খাম টা খুব সুন্দর করে সাজানো, অনেক গুলো কার্টুন আঁকানো। দুটো লাল রঙের আর আরেকটা বাচ্চা কার্টুন, যেটা কিনা নীল রঙের। এই খাম টা অনেক বছর আগেই নাইম তূবাকে গিফট দিয়েছিলো। তূবা জিজ্ঞেস করেছিলো, “ দুটো লাল একটা নীল কেনো?”
“ লাল দুটো তুই আর আমি, আর নীল টা আমাদের বাচ্চা। ” বলেই নাইম খিলখিল করে হাসছিলো।
তূবা নাইমের মাথায় গাট্টা মেরে বলেছিলো,
“ আমি তো নিজেই এখনো বাচ্চা। ”
“ দূর হ পাগলি, তুই জানিস দাদুর বিয়ের সময় দাদুর বয়স ছিলো মাত্র ১০ বছর। ”
“ নানীর বয়স কম ছিলো তো আমার কি? তুমি কি বলতে চাচ্ছো আমি এখুনি বাচ্চার মা হবো!”
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/



নাইমে শয়তানি হাসি দিয়ে পালিয়ে যায়, তূবা রাগ করে খাম টা নাইমের টেবিলের উপর রেখে চলে যায়।

এতো বছর পর তূবা খাম টা দেখে যতটা না অবাক হয়, তার চেয়ে বেশী আনন্দিত হয়। নাইম এতটা বছর একটা খাম পর্যন্ত আগলে রেখে দিয়েছে।
তূবা আর কিছুই না ভেবে খাম টা খুলে চিঠি টা বের করে। একটা অনেক পুরনো চিঠির সাথে নতুন একটা চিঠি দেখতে পায়। তূবা আগে পুরনো চিঠি টা ই খোলে। সেদিন রাগ করে দেখায় হয়নি কি ছিলো ভিতরে। আজ দেখে পুরোপুরি অবাক হয়ে গেছে।
“ জানিস তূবা, তোকে ছাড়া আমি পুরো পুরি অসহায়।
তুই ভুলেও আমাকে ছেড়ে যাস না। ”
ইতি
নাইম

তূবা মুচকি হাসে, আসলেই নাইম ওকে অনেক ভালোবাসতো। কি যেনো চিন্তা করে কিছুক্ষণ, হয়তো হারিয়ে যাওয়া অতীত গুলো।
হটাৎ খেয়াল আসতেই নতুন চিঠি টা খোলে।

প্রিয় তূবা
তোকে ভালোবেসে আমি এতোটাই অন্ধ হয়ে গেছিলাম, যে যাচাই না করে তোর উপর আরোপ করা মিথ্যা অপবাদ বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম। তার শাস্তি আজ এতটা বছর ধরে পাচ্ছি। ক্ষমা কি করে দেওয়া যায় না! একটা বার কি ভালোবাসা যায় না! মানলাম আমি খারাপ, তাই বলে কি এতোটাই খারাপ!
ইতি
নাইম

তূবা আবার জানালার দিকে তাকালো। নাইম পুরো দুই ঘন্টা ধরে এই রোদে দাঁড়িয়ে আছে। ইশারায় নাইম কে ডাকলো তূবা। তূবার উঠার ক্ষমতা থাকলে ওই ই যেতো। কিন্তু ও নিজে এখন খুব দূর্বল।

নাইম এসে তূবার বাম পাশে বসে, বাম হাত টা ধরে ফুঁপিয়ে কান্না শুরু করে। আর কেঁদে কেঁদে বলে,
“ তোর আর আমার সম্পর্কের মাঝে নিজ জন্মদাতা ই যে ভিলেন হয়ে যাবে সেটা কখনো ই বুঝতে পারিনি রে।”
“ আল্লাহ হয়তো এতেই আমার ভালো চেয়েছিলো। ”
“ এতো কষ্ট দিয়ে!”
তুমি জানোনা আল্লাহ তায়ালা নিজেই বলেছেন,
“ আমি অবশ্যই তোমাদেরকে কিছু না কিছু দিয়ে পরীক্ষায় ফেলবোই: মাঝে মধ্যে তোমাদেরকে বিপদের আতঙ্ক, ক্ষুধার কষ্ট দিয়ে, সম্পদ, জীবন, পণ্য-ফল-ফসল হারানোর মধ্য দিয়ে। আর যারা কষ্টের মধ্যেও ধৈর্য-নিষ্ঠার সাথে চেষ্টা করে, তাদেরকে সুখবর দাও। [আল-বাক্বারাহ ১৫৫] ”

“ হুমম। ”
“ যাই হোক, তোমার আমার মিলন সেদিনই হবে যেদিন মামা আমাদের মেনে নিবে। তুমি তোমার বউ হিসেবে আমাকে সেদিনই পাবে, যেদিন মামা হাসি মুখে আমায় ভালোবেসে বরণ করে নিবে। ”
“ উনি কখনো ই রাজি হবেনা তূবা। আর নিজের মায়ের খুনী কে কিভাবে ক্ষমা করতে পারো তুমি তূবা? ”
“ ভূল তো মানুষ মাত্রই হয় নাইম, উনি অহংকারের বশে অন্ধ হয়ে গেছিলো। একবার সুযোগ দেওয়া ও তো উচিৎ। ”

“ তাই হবে, মাত্র একবার সুযোগ দিবো। কিন্তু তোমাকে নিয়ে বিদেশেই থাকবো আমি ।”
“ কিন্তু, তোমার মা কে কে দেখবে? উনার তো বয়স হয়েছে, উনার কষ্ট ও তোমার বোঝা উচিৎ নাইম। ”
“ আমি তো কিছুই বুঝিনা, যা বোঝার সব বোঝো তুমি।

তূবা কে নিজ হাতে মারার জন্য এসেছিলো ওর মামা। কিন্তু তূবার এতো সহনশীলতা দেখে চোখ দুটো দিয়ে পানি পড়তে শুরু করে। নিজের করা অন্যায় গুলোর জন্য অনুশোচনা শুরু করে। কিন্তু অহংকার বশত তূবার কাছে গেলো না৷ যে পিস্তল টা সাথে করে নিয়ে এসেছিলো তূবাকে হত্যা করতে সেটা নিজের মাথায় চালিয়ে দেয়।

বিকট শব্দ তে যেনো হসপিটালের চারিদিক কেঁপে ওঠে। তূবা নাইমের বুকে নিজেকে লুকিয়ে ফেলে ভয়ে। নাইম তূবাকে সরিয়ে বাবার কাছে গেলে নাইমের গালে হাত রেখে বলে,
“ তোর ভালোবাসা তোওঅঅকে ফিইইরিইয়েএ দিইইলায়াম।”
দেখতে দেখতে একটা বছর পার হয়ে গেলো, আজ তূবার প্রথম বিবাহ বার্ষিকী। ছেলেকে ঘুম পাড়িয়ে তূবা নাইমের পাশে এসে শোয়। নাইমের নাক বরাবর খামচি দেয় তূবা।
নাইম তূবাকে বলে,
“ প্রতিদিন একটা করে আঁচড় না দিলে শান্তি পাও না?”
“ মনে করো প্রতিদিন এক্টু করে প্রতিশোধ নিইই। ”
“ তাই বুঝিইইই।”
বলতেই তূবার ঠোঁট নিজের দখলে নিয়ে নেয় নাইম। ওদের ভালোবাসার রাজ্যে হারিয়ে যায় ওরা।

সমাপ্ত

আগেই ভেবেছিলাম এই গল্প ওত বড় করবোনা। তাই খুব ছোট করেই শেষ করে দিলাম। জানি ভালো হয়নি খুব একটা।
যাই হোক, আমি নিজ দায়িত্বে সেল্ফ আইসোলেশনে আছি। যানিনা কখন কার কি হবে। যদিও আমি সম্পূর্ণ সুস্থ। তারপর ও ভয় কাজ করছে। সবাই সবার জন্য দোয়া করবেন।
আল্লাহ হাফেজ

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে