ভালবাসার ঘর পর্ব-০৭ (শেষ পর্ব)

1
1609

#ভালবাসার_ঘর।
#বিন্দু_মালীনি।
#পর্ব_৭_শেষ।

এক দিকে ব্যথা,আর অন্য দিকে ভয়,
আমার রণ কে ছেড়ে চিরতরে চলে যেতে হবে না তো?

_বিধাতা,তুমি আমার স্ত্রী সন্তানকে ভালো রেখো।প্লিজ ভালো রেখো।

কিছু ক্ষণ পর ডাক্তার বেড়িয়ে এসে রণকে জানান।
_কংগ্রাচুলেশনস!আপনাদের একটি ফুটফুটে মেয়ে হয়েছে।
_আলহামদুলিল্লাহ্‌!আর আমার ওয়াইফ?ও কেমন আছে?ও ঠিক আছে তো?
_ভয় নেই,আপনার ওয়াইফও ভালো আছে।
কিছু ক্ষণ পরই তাকে বেডে দেয়া হবে।

একজন নার্স এসে আমাদের মেয়েকে রণর কোলে দেয়।

রণর চোখ ভিজে যাচ্ছে।

_কিরে আজ তো খুশির দিন।তুই কাঁদছিস কেন?
_এ যে খুশির কান্না মা।এ যে খুশির কান্না।

আমাকে বেডে দেয়া হয়।

রণ আমাদের মেয়েকে নিয়ে রুমে ঢুকে।

আমি রণকে দেখে অল্প একটু হাসি।
রণ আমার কপালে চুমু এঁকে দেয়।

_লাভ ইউ সো মাচ কলিজা।
লাভ ইউ সো মাচ।
_লাভ ইউ টু নীরার বাবা।
_বলেছিলাম না আমাদের মেয়ে হবে?
দেখেছো আমাদের নীরা হয়েছে।
আল্লাহ্‌ আমাদের নীরা দিয়েছেন।
_হুম।আল্লাহ্‌ তোমার ইচ্ছে পূরণ করেছেন।

_যাক বাবা,এখন তো তোদের কান্নাকাটির পালা শেষ হলো।
সব সময় মন মরা মুখ দেখতে দেখতে ভুলেই গেছি তোদের হাসি ভরা মুখ কেমন।

এখন তো অন্তত তোদের হাসি ভরা মুখ দেখতে পাবো।
নাকি তা ও পাবোনা?

_কি যে বলোনা মা।
_কিরে তোর শরীর কেমন লাগছে বিন্দু?
খারাপ লাগছে?
_না মা ঠিক আছি।

বাসার সবাই খুশি নীরা আসাতে।
বেলাতো আসলে আর যেতেই চায়না এখন নীরাকে ছেড়ে।

নীরা ধীরেধীরে বড় হচ্ছে।

আজ নীরার ৫ বছর পূর্ণ হলো।
মেয়ে তার বাবার চোখ পেয়েছে।
চুল গুলোও বাবার মত স্ট্রেইট।
নাক টাও বাবার মত।হাসিটাও বাবার মত মাশাআল্লাহ্‌!হাসি দেখলেই প্রাণ জুড়িয়ে যায়।

_রণ, দেখোতো এত দিন পেটে রাখলাম আমি।জন্ম দিলাম আমি।লালনপালন করছি আমি।
আর মেয়ে কিনা হলো তোমার মত।তার বাবার মত।
বাবার মেয়ে বাবার মত হইছে।
আমার মত কেন হলোনা?আমার সাথে তো কিছুই মিলেনা।

_কে বলেছে মিলেনা?
_মেয়ের গায়ের রঙ যে তার মায়ের মত সেটা কি চোখে পড়ে না?
আর ঠোঁট,
ঠোঁটের নিচের তিল।মায়ের মত না তো কার মত?
আমার কি ঠোঁটের নিচে তিল আছে ম্যাডাম?তিল টা তো আপনারই পেয়েছে।
আর হাতের আঙুল,পায়ের আঙুলও তার মায়ের আঙুলের মত পিচ্চি পিচ্চি।
কে বলেছে মেয়ে তোমার মত হয়নি?

আমার আর তোমার দুজনের মত হয়েছে আমাদের নীরা।

আর তখনই নীরা এসে আমাকে আর রণকে জড়িয়ে ধরলো।

আগে রণকে একটা চুমু দিলো।
তারপর আমাকে।

_দেখেছো দেখেছো?চুমুটাও আগে তোমাকে দিলো।
আমাকে কেউ ভালই বাসেনা।

_আম্মু,তুমি সব চেয়ে বেশি কাকে ভালবাসো?
_কেন বাবা,তোমাকে.
_দেখেছো?আমাকে ভালই বাসেনা কেউ।
_আম্মু তুমি খুব পঁচা,মিথ্যে বলো কেন?
_আমি মিথ্যে বললাম?
_বল্লেইতো।বাবা তোমাকে ভালবাসেনা?বাবা তোমাকে ভালবাসে আর আমি ভালবাসি বাবাকে।
তাই না বাবা?
_হুম মা।
_লাভ ইউ বাবা।
_লাভ ইউ টু মা।
_আমি দাদুর কাছে যাচ্ছি।
_আচ্ছা যাও।

_বলছিলাম কি,এত ফুলতে হবেনা।
এখনই তো মনে হচ্ছে ব্রাস্ট হয়ে যাবে।
_চুপ করো।
_উঁহু,চুপ তো করবোনা।
বলছি যে,
যে তোমাকে বেশি ভালবাসবে তাকে আনলেই তো হয় এখন।আমার মেয়ে আমাকে ভালবাসবে আর সে তোমাকে।
_কে আর কাকে?
_কাকে আবার,নীরার ভাইকে।নীরা তো এখন বড়ই হয়েছে।এখন তো ওর ভাই কে আনাই যায় তাইনা?
_যাও দুষ্টু।
আমিও মায়ের কাছে গেলাম থাকো তুমি।
_এই কই যাও কই যাও,দাঁড়াও দাঁড়াও।
_হুম বলো।
_ভালবাসি বউ টা।
আমার ভালবাসার ঘর টাকে ভালবাসা দিয়ে পরিপূর্ণ করে তুলার জন্য ধন্যবাদ।
_আর আমাকে এই বুকের মাঝে সকল বাধা বিপদ বিপত্তি থেকে আগলে রাখার জন্য ভালবাসা।

রণ আর আমি খুব ভালো আছি আমাদের মেয়ে নীরাকে নিয়ে।
এখন আল্লাহ্‌র কাছে একটাই প্রার্থনা জীবনের বাকি দিন গুলোও যেন রণর বুকে মাথা রেখে নিশ্চিন্তে কাটিয়ে দিতে পারি।
আমাদের ভালবাসার ঘর যেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভালবাসায় ভরপুর থাকে।

সমাপ্ত..

ভুল গুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন।
গল্প টা কেমন লেগেছে জানাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে