প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_৪৫

0
2071

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_৪৫
#Writer_Afnan_Lara
?
রেডি হয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে হাঁটা ধরলো সে
পথেই দেখা হয়ে গেলো শান্তর সাথে
শান্ত দাঁত কেলিয়ে বাইক স্টার্ট দিতেছে আর আহানার দিকে তাকিয়ে হাসতেসে
আহানা ওকে না দেখার ভান করে পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে
.
কেউ চাইলে বাইকে উঠতে পারে,সিট কিন্তু খালি!
.
আহানা মুখ বাঁকিয়ে চলে গেলো
ভার্সিটিতে আহানার আগেই শান্ত এসে পড়লো,এসে বটতলায় গিয়ে বসলো
.
আহানা গেট দিয়ে ঢুকার সময় দেখলো এলিনা দৌড়ে শান্তর দিকে যাচ্ছে
আহানা তাকিয়ে থেকে দেখতে লাগলো এলিনা কি করে
এলিনা দৌড়ে এসে শান্তকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো
আহানার বুকটা সাথে সাথে কেঁপে উঠলো,ভেতরটা হুট করে খুব জ্বলতেসে,না জানা এক ব্যাথায় আহানার হাত কেঁপে উঠলো
শান্ত এলিনাকে ছাড়িয়ে আহানার দিকে তাকাতেই আহানা চলে গেলো ক্লাসের দিকে
.
শান্ত জানো আমি কি করেছি?
.
কি?
.
আমি বাবাকে তোমার কথা বলেছি,বাবা বলেছে তুমি ভালো জব পেলে আমাদের বিয়ে পাক্কা করে দিবে
.
এখন গিয়ে ক্যানচেল করে দাও!!
.
কেন?কি সমস্যা?
.
আমি তোমাকে লাভ করি না,আর বিয়েও করতে চাই না,এরপর থেকে জীবনে আর আমাকে এসব লাভ- বিয়ে নিয়ে ধরবা না প্লিস!
.
এলিনা চুপ করে থেকে আহানাদের ক্লাসের দিকে একবার তাকিয়ে চলে গেলো
আহানা ক্লাসে বসে জানালা দিয়ে শান্তর দিকে চেয়ে আছে
শান্ত তমাল আর সূর্যর সাথে হাসি মজা করতেসে বটতলায় বসে
আহানা নিজের অজান্তেই মুচকি হেসে দিলো ওর দিকে চেয়ে
.
জানিস আহানা আজ নাকি এলিনা শান্ত ভাইয়াকে বিয়ের প্রোপোজাল দিয়েছে,সে নাকি তার বাবাকে রাজিও করিয়েছে
কথাটা শুনে মূহুর্তেই আহানার মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেলো,রুপার দিকে তাকিয়ে বললো তোহ?উনি উত্তরে কি বলেছেন?
.
সেটা তো জানি না,বাট শুনলাম এলিনা নাকি খুশিতে আত্নহারা হয়ে গেছে,তার মানে নিশ্চয় শান্ত ভাইয়া রাজি হয়েছে!
সবার বিয়ে হয়ে যাবে তার পর তোরেও বিয়া করাই দিবো
.
রুপার কথায় কান না দিয়ে আহানা ব্যাগ নিয়ে ক্লাস থেকে বেরিয়ে চলে গেলো

কৃষ্ণচূড়া গাছটার নিচে বসে ফুল কুড়িয়ে সেগুলো ফেলতেসে আবার কুড়াচ্ছে
কিছুক্ষন পর সেগুলো রেখে মাটি থেকে কঙ্কর নিয়ে পানিতে ফেলতে লাগলো এক এক করে
কঙ্কর ফেলা বন্ধ করে ব্যাগ থেকে শান্তর সই করা কাগজটা নিয়ে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষন তারপর ছুঁড়ে মারলো দূরে
কাগজটা শান্তর পায়ের কাছে গিয়ে পড়লো,সে নিচ থেকে নিয়ে দেখলো এটা সেই কাগজ যেটাতে সে সই করেছিলো,আর আহানা কাঁদতেসে কেন?
শান্ত এগিয়ে আসতে গিয়েও আসলো না,দাঁড়িয়ে থাকলো
আহানা নিঃশব্দে কাঁদতেসে,শুধু চোখের পানি পড়তেসে,কেন পড়তেসে তা সে জানে না
খালি মনে হচ্ছে বুকের ভেতরটা পুড়ে যাচ্ছে কোনো এক আঘাতে!
শান্ত ওর পাশে এসে বসলো
আহানা শান্তকে দেখে একটু সরে বসলো
.
কি হয়েছে আবার?যতদূর বুঝলাম আমার সম্পর্কিত কিছু হয়েছে নাহলে এই মূল্যবান কাগজ রাস্তায় ফেলতে না
তবে আমি তো কিছু করিনি তাহলে এরকম কাঁদতেসো কেন
.
আপনার জানতে হবে না
আহানা কাগজটা ফেলে রেখেই চলে গেলো একটি বারের জন্য ও থামলো না
শান্ত কিছু বুঝে উঠে পারতেসে না দেখে সোজা রুপার কাছে গেলো রুপা তখন নওশাদের সাথে ক্যামপাসে ঘুরতেসিলো
শান্ত এগিয়ে এসে বললো আহানার কি হয়েছে?তুমি জানো?
.
কই কি হয়েছে?
.
তুমি ওরে কিছু বলছিলা?
.
আমি তো!!ওহহ হ্যাঁ,আমি বলছিলাম এলিনা আপনাকে বিয়ের প্রোপোজাল দিসে,আর আপনি রাজি হয়েছেন,এটা বলছিলাম জাস্ট!
.
কিন্তু আমি রাজি হইনি!
.
এলিনা তো সবাইকে বলে বেড়াচ্ছে যে আপনি রাজি হয়েছেন
.
মিথ্যাবাদি একটা!
শান্ত বাইকে উঠে সোজা অফিসে গেলো,ভাবলো আহানা সেখানে হতে পারে
কিন্তু অফিস তো বন্ধ,কারণ এখন সকাল ১১টা বাজে,আর অফিস খুলবে দুপুর ১২:৩০এ
তারমানে আহানা বাড়ি ফিরে গেছে
শান্ত এবার সোজা আহানার বাসার দিকে গেলো
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
আহানা বাসায় ফিরে বেডরুমের এক কোণায় ফ্লোরে বসে বেডের দিকে তাকিয়ে আছে
আমি তো এটাই চাইতাম,উনার থেকে মুক্তি তাহলে এরকম কেন লাগতেসে উফ!
আহানা উঠে গিয়ে বাথরুমের দিকে গেলো,ঝর্না ছেড়ে নিচে বসে রইলো,মাথা ঘুরতেসে
আহানা ডাকটা কানের কাছে এসে বাজতেসে,এটা শান্তর গলা,তবে ওর ডাকটা স্পষ্ট আসতেসে,আমি তো দরজা লাগিয়েছিলাম,তাহলে?
আহানা উঠে ঝর্না অফ করে তোয়ালেটা ভেজা জামার উপর জড়িয়ে বেরিয়ে দেখলো শান্ত ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে
.
আপনি এখানে আসলেন কি করে,আমি তো দরজা!
.
দাদি আমাকে এক্সট্রা চাবিটা দিয়ে দিসিলো ঐদিন,তোমাকে ডাকলাম শুনতেসো না দেখে ঢুকছি
পরে রুমে এসে বুঝলাম তুমি শাওয়ার নিচ্ছো
.
যান এখান থেকে,কেন এসেছেন?
.
কথা বাদ দিয়ে চেঞ্জ করে আসো না হলে ঠাণ্ডা লাগবে তোমার,আমি বারান্দায় আছি
কথাটা বলে শান্ত নিচের দিকে তাকিয়ে চলে গেলো
.
আহানা ২মিনিট চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে শুকনো জামা একটা নিয়ে পরে বাইরে আসলো
শান্ত বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিলো,আহানাকে দেখতে পেয়ে ভিতরে ফিরে আসলো,নাও ধরো
.
কি?
.
তোমার কাগজ,দরকার পড়বে তোমার
.
কিসের দরকার?আপনার এলিনার সাথে বিয়ে হবে তো এটা আমার আর কিসের দরকার হতে পারে?
.
বিয়ের পরেও যদি তোমাকে টাচ করতে আসি?
.
আহানা মুখটা ছোট করে ভিতরের রুমের দিকে চলে যেতে নিতেই শান্ত ওর হাতের কব্জি ধরে টান দিয়ে বুকে নিয়ে আনলো
শক্ত করে জড়িয়ে রাখলো ওকে,ওর সারা গা ঠাণ্ডা বরফ হয়ে আছে,চুলগুলোর থেকে এক ফোটা পানিও ঝরায়নি মনে হয়
শান্তর বুকে এসে আহানার মনে হচ্ছে সে সকল ক্রোধ, অভিমান ভুলে গেছে
চুপ করে থেকে রুপার কথাগুলো মনে পড়তেই শান্তর জ্যাকেট এক হাত দিয়ে ধরে কেঁদে দিলো,খুব কষ্ট হচ্ছে
.
কেন কাঁদতেসো আহানা?
.
কাঁদতে কাঁদতে আহানা শান্তর প্রশ্নে থতমত খেয়ে গেলো,ছেড়ে দিলো ওর জ্যাকেট
দূরে সরে গেলো তার থেকে
জিভ দিয়ে ঠোঁটটা ভিজিয়ে শক্ত হয়ে বললো কই কাঁদতেসি না আমি
আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরেছেন কেন?চলে যান এখান থেকে
কথাটা বলে আহানা নিজের রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিলো
শান্ত ঠাঁই দাঁড়িয়ে থেকে একটা কলম খুঁজে ফ্লোরে বসলো কাগজটা নিয়ে
আহানা যে শর্ত লিখেছিলো তার নিচে একটা লাইনের মত খালি জায়গা বাকি আছে,শান্ত সেখানে আরেকটা শর্ত যোগ করে দিলো,কাগজটা রান্নাঘরের চালের বালতির ভিতরে রেখে দরজা লাগিয়ে চলে গেলো
দুপুর ১২টা বাজে
আহানা এবার উঠে দরজা খুলে বের হলো রুম থেকে
রান্নাঘরের দিকে গিয়ে জানালা দিয়ে শান্তর বারান্দার দিকে চেয়ে রইলো কিছুক্ষন
এরপর একটা পাতিলে পানি দিয়ে চুলায় বসালো তারপর চালের বালতির ঢাকনা খুললো চাল নেওয়ার জন্য,সেখানে ঐ কাগজটা দেখতে পেলো
আহানা সেটা নিয়ে ফেলতে যেতেই কি মনে করে ফেললো না
তাকের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে কাগজটা ভাঁজ থেকে খুললো
ভিতরে সব শর্তর সাথে আজ একটা নতুন শর্ত দেখতে পেলো আহানা
শর্তটা হলো-আমি শাহরিয়ার শান্ত আহানাকে রেখে কখনও দ্বিতীয় বিয়ে করবো না
আহানা সেটা দেখে হেসে দিলো,চোখ থেকে পানি পড়তেসে তবে এটা কষ্টের না,নাম না জানা এক ভালো লাগার অশ্রু
কাগজটা ভাঁজ করে আবার কোমড়ে ঢুকিয়ে নিলো সে
এতক্ষণ ধরে শুধু কেঁদেছিল আর এখন শুধু হাসতেসে
ভাত খেয়ে অফিসের জন্য রওনা হলো এবার
অফিসে এসে রুমের ভিতরে পা রাখতেই নিহাল এসে সামনে দাঁড়ালো
.
আহানা?আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই প্লিস না করিও না প্লিস,আমি তোমায় সুখে রাখবো অনেক,আই লাভ ইউ সো মাচ
.
এই নেপাল!!থুক্কু নিহাল!
.
নিহাল পিছন ফিরে তাকালো,শান্ত কম্পিউটারে আর্টিকেল টাইপ করতে করতে বললো সি ইজ ম্যারিড
.
হোয়াট?!বোকা বানাচ্ছো কেন আমাকে?
.
মিসেস আহানা ওখানে না দাঁড়িয়ে থেকে এখানে এসে বসুন,কাজের অভাব নাই,আজ যেতে যেতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে কাজ কমপ্লিট না করলে
.
আহানা সোজা এসে চেয়ারে বসে ফাইলে হাত দিতেই নিহাল ওর হাত ধরে ফেললো
এসব কি আহানা?তুমি কিছু বলতেসো না কেন?এসব কি সত্যি?
শান্ত আহানার হাত থেকে নিহালের হাত সরিয়ে চোখ রাঙিয়ে বললো খবরদার ওকে ধরবা না
.
তুমি এমন ভাব করতেসো যেন তোমারই ওয়াইফ?
.
সরি টু সে দ্যাট আহানা সত্যি সত্যি আমারই ওয়াইফ
.
কথাটা শুনে নিহাল হা করে চেয়ে শান্তর থেকে চোখ সরিয়ে আহানার দিকে তাকালো,আহানার নিরবতা শান্তর উক্তির হ্যাঁ সূচক বর্ননা দেয়
নিহাল টেবিলে ঠাস করে এক বাড়ি দিয়ে চলে গেলো তার কেবিনের দিকে
.
হাহা,আর কোনোদিন তোমার দিকে চোখ তুলেও তাকাবে না দেখিও
.
আহানা চুপ করে ফাইল সেভ করতেসে কম্পিউটারে,শান্তর দিকে তাকাচ্ছে না
.
শান্ত বকবক করেই যাচ্ছে,শেষে আহানার কোনো রিয়েকশান না পেয়ে ওর চেয়ার টেনে এক ঝাঁকুনি দিলো
.
শুনুন,অফিস এটা,বাসা নয়,এরকম করেন কেন?
.
কি করছি?তুমি আমার সাথে কথা বলতেসো না কেন?
.
আমি কি করবো না করবো সেটাও আপানকে জিজ্ঞেস করতে হবে?
.
শান্তর চোখ লাল হয়ে আসলো,খুব রাগ আসতেসে,এলিনাকে বিয়ে করবো না জেনেও এমন কেন করতেসে,ও কি কাগজটা দেখেনি নাকি বুঝেনি
হাত নিয়ে আহানার ওড়না টান দিয়ে গিট্টু দিতে দিতে সে ভাবতেসে চুপ করে
আহানা বিরক্ত হয়ে ওড়না এক টান দিয়ে শান্তর হাত থেকে নিয়ে নিলো
শান্তর তো আরও রাগ বেড়ে গেলো
সে পুরো ওড়নাটাই টেনে নিয়ে নিলো আহানার গায়ের থেকে,হাত নিয়ে আহানার খোঁপা খুলে দিয়ে আরেকদিকে ফিরে বসলো
.
আমার ওড়না দিন,ফালতু মজা করার সময় নেই আমার!
.
কেন?তোমার তো চুল আছে,ওড়না দিব না আমি
.
বাচ্চামি করতেসেন কেন বলুনতো?
.
কিসের বাচ্চামি,তুমি হুদাই আমার সাথে রাগ করে আছো ওড়না দিয়ে কি আমি আগে গিট্টু বানাতাম না?নাকি আজ নতুন দেখছো?
.
আপনার সাথে সিধা কথা বললেও আমার দোষ হয়ে যায়
.
ব্রেক টাইম শুরু
আহানা শান্তকে পুরো অফিসে দৌড়ানি দিচ্ছে,শান্ত ওড়না দিবেই না,কারণ হলো আহানা কোন সাহসে ওর থেকে ওড়না টান দিয়ে নিয়ে গেছে,আহানার ওড়নায় আহানার ৪০% ভাগ আর শান্তর ৬০% ভাগ
.
দিবেন না তো?
.
না দিব না
শান্ত হাত উঠিয়ে উপর করে রাখছে,আহানা যাতে ওড়নার নাগাল না পায়
.
ঠিক আছে,দিয়েন না
.
আহানা এগিয়ে এসে শান্তর জ্যাকেটের চেইন টান দিয়ে জ্যাকেট খুলে নিয়ে গেলো,এখন ওর গায়ে একটা টি শার্ট মাত্র!
শান্ত ইয়া বড় হা করে চেয়ে চেয়ে আহানার চলে যাওয়া দেখছে
কি সাহস এই মেয়েটার,আমার জ্যাকেট দিয়ে কি করবে ও?
শান্ত কেবিনে ফ্লোরে ঢুকে দেখলো আহানা জ্যাকেট পরে চেইন টানতেসে লাগাতে পারছে না
.
শান্ত আহানার ওড়না গলায় পেঁচিয়ে এগিয়ে আসলো,আহানা শান্তর এগিয়ে আসা দেখে একটু পিছিয়ে দাঁড়ালো
শান্ত মুখটা রাগিয়ে তুললো,যাতে আহানা ভয় পায়
কিন্তু মনের ভেতর যে দুষ্টুমি খেলা করছে তা আহানা জানে না
শান্ত খুব কাছে এসে জ্যাকেটের চেইনে হাত দিয়ে টান দিয়ে উপরে উঠিয়ে দিলো
আহানার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো
Now you look like Mrs. Shahriar!!!
.
আহানা চমকে শান্তর দিকে তাকিয়ে আছে,শান্ত তার গলা থেকে আহানার ওড়না নিয়ে আহানার মাথায় ঘোমটা করে দিলো
তারপর নিজের টি-শার্টের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে আহানার হাত ধরে ক্যানটিনের দিকে চললো
.
এই আমাকে কই নিয়ে যাচ্ছেন?
.
বিকালের নাস্তা করবো
.
না আমি খাব না
.
তুমি খাবে না আশ্রমের সব বাচ্চারা খাবে

কথা বলতে বলতে ক্যানটিনে পা রাখতেই বাকি কলিগেরা আহানা আর শান্তর দিকে ভূত দেখার মত চেয়ে রইলো,কারণ শান্তর জ্যাকেট আহানার গায়ে দেখে এমন অবাক হওয়ারই কথা
নিহাল জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে,এই প্রথম কোনো বাজি সে হেরে গেলো,রেগেমেগে উঠে চলে গেলো সে
আহানা চেয়ারে বসে জ্যাকেটটা খুলে শান্তকে দিয়ে দিলো,কারণ সবাই এতক্ষণ তো তাকিয়েছিল সেটা সমস্যা ছিল না কিন্তু তারা এখন গসিপ শুরু করে দিসে ওদেরকে নিয়ে তাই আহানা জ্যাকেটটা খুলতে বাধ্য হয়েছে
.
স্যান্ডুইচ খাবা?
.
সেটা কি?
.
ওকে বুঝলাম,মামা ২টা স্যান্ডুইচ আর ২টা চা
.
না
.
কি?
.
চা টংয়ের থেকে খাবো বাড়ি ফিরার সময়
.
কিহহহ?মানে সিরিয়াসলি? তুমি আমার সাথে বাড়ি ফিরবে?
.
?কেন?
.
না কদিন তো আমার সাথে জেদ করে একা হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরেছেন তো তাই বললাম
.
হুহ!

ব্রেক টাইম শেষে যে যার কাজে ফিরে গেলো,আহানা শান্তর দিকে চেয়ে আছে শান্ত কম্পিউটারে ফাইল এডিট করতে করতে সেন্টার ফ্রেশ চিবাচ্ছে
আহানা মনে মনে ভাবলো এভাবে দিনে ১০/১২টা সিগারেট আবার ৪/৫টা সেন্টার ফ্রেশ খায়,ওয়াক,এরে কে কিস করবে,সেন্টার ফ্রেশের ঘ্রান শুঁকলেও আমার বমি পায়
আর আমারে তো নাকি ছোটবেলায় এই বান্দরটা কিস ও করেছে,অবশ্য তখন তো এসব খেতো না নিশ্চয়!
আচ্ছা আপনি কি ছোট থেকেই সেন্টার ফ্রেশ খান?
.
হ্যাঁ,আমার অনেক ফেভারিট এটা
.
শান্তর মুখে এমন কথা শুনে আহানার কাশি উঠে গেলো
বোতল নিয়ে পানি খেয়ে কপালের ঘাম মুছে নিজের কাজে মন দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে সে
শান্তর মাথায় উপর দিয়ে গেলো পুরো ব্যাপারটা,হুট করে আমার ছোটবেলার কথা জিগাইলো কেন?
ওহহহহ আচ্ছা আচ্ছা!!ছোটবেলায় তো ওর সাথে আমার সম্পর্ক ছিল,আমার পাতানো বউ ছিল সে,তাহলে সেন্টার ফ্রেশ খাওয়ার কথা কেন জিজ্ঞেস করলো?
কিস!!!!!
.
কিহহহ?এত চেঁচান কেন?কি হইসে,কে কারে কিস করছে?
.
শান্ত মুখটা বাঁকিয়ে হেসে দিয়ে বললো আমি তোমাকে করেছি
.
আহানা ঢোক গিলে আরেকদিকে চোখ ফিরিয়ে নিলো এত তাড়াতাড়ি মনের কথা কি করে বুঝতে পারে কে জানে,ইস কি লজ্জা!
.
এই যে ম্যাডাম?অফিস ছুটি,চলুন বাসায় ফিরি
.
আহানা ব্যাগ হাতে নিয়ে শান্তর পিছু পিছু আসতেসে আর লজ্জায় লাল টমেটো হয়ে যাচ্ছে
শান্ত লিফটের বাটনে টিপ দিয়ে হাতের ঘড়ি ঠিক করতে করতে বললো যখন আমি তোমাকে কিস করেছিলাম তখন সেন্টার ফ্রেশের সাথে সিগারেট ও খাইতাম
Beginner ছিলাম?
.
আহানা রেগে দুম করে কিল বসিয়ে দিলো শান্তর পিঠে

আপনি একটা অসভ্য লোক!আপনি!!
আপনার সাহস হলো কি করে তখন একটা ছোট্ট মেয়েকে কিস করার,লজ্জা করে না এখন আবার এসব বলতেসেন?
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে