মনোহরা পর্ব-১৫

0
1080

#মনোহরা
#পর্বঃ১৫
#লেখিকাঃনির্মলা

আর কিছু বলতে পারলো না শান ইশা শানের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো। ইশার এমন কাজে শানের চোখ দাড়িয়ে গেলো।তার যেনো বিশ্বাসই হচ্ছে না ইশা এমন কাজ করতে পারে।এ দিকে ইশা শানের গলা দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরেলো। সেটা দেখে শান চোখ বন্ধ করে ইশা কোমড় দুই হাত দিয়ে আকড়ে ধরে ইশার তালেতাল মিলাতে লাগলো

এদিকে শান ইশার কোমড়ে হাত দেওয়াতে ইশা হুস ফিরলো সে ভাবতে লাগলো এটা সে কি করছে ।ইশা নিজের কাজে নিজেই অবাক হয়ে গেলো। সে বুঝতে পারলো সে কি করছে সাথে সাথে চোখ খুলে শানকে ছেড়ে দিতেই শান সেটা বুঝতে পেরে ইশার দিকে তাকালো।ইশা শানের দিক থেকে চোখ সরিয়ে ফট করে উঠে দাড়ালো ।তারপর এক দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো।

ইশার এমন কান্ড দেখে শান মূর্তির মতন সেখানে বসে রইলো।সে বুঝতেই পারলো না ইশা এভাবে কেনো দৌড়ে চলে গেলো।

ইশা দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছিলো তখনই কারও সাথে সে ধাক্কা খেলো
ইশাঃ আউচ,,,,, কে রে
বলেই সামনে তাকাতেই দেখলো অহনা মেঝেতে পড়ে গেছে।ইশা দ্রুত পায়ে অহনার কাছে গিয়ে বলল
ইশাঃ sorry sorrry আসলে আমি দেখতে পাইনি
অহনাঃ ও বাবা গো আমার কোমড়টা বোধয় ভেঙে গেছে ভাবি।
ইশাঃইস sorry গো
বলে ইশা অহনাকে টেনে তুললো।অহনা উঠে কোমড়ে হাত দিয়ে বলল
অহনাঃ এভাবে দৌড়ে নামছিলেন কেনো ভাবি কি হয়েছে
অহনার এমন প্রশ্নে ইশা কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না।তখনই অহনা আবার বলে উঠলো
অহনাঃ কি হলো ভাবি কিছু বলো
ইশা কিছু না ভেবেই বলে উঠলো
ইশাঃ ও হ্যাঁ আসলে তেলাপোকা
তেলাপোকা কথাটা শুনে অহনা চিৎকার করা আরম্ভ করে দিলো
অহনাঃ আহ্ কোথায় তেলাপোকা, কোথায়, কোথায় ও বাবা গো (চিৎকার করে)
এই বলে অহনা দৌড়ে সোফায় গিয়ে দাড়ালো তারপর মা মা বলে চিল্লাতে লাগলো।ইশাতো এবার পড়ে গেছে মহা বিপাকে। কারন সে ভেবেছিলো হয়তো এটা বললে অহনা আর কোন প্রশ্ন করবে না। কিন্তু অহনা যে তেলাপোকা এতটা ভয় পায় সেটা তার জানা ছিলো না।অহনার চিল্লানিতে শানের মা, শান, আর কাজের মেয়েটা সবাই সেখানে এসে উপস্থিত হলো। শান সিঁড়ি দিয়ে নেমে একবার ইশার দিকে তাকালো তারপর বলল
শানঃ কি হলো ছুটকি এভাবে চিল্লাছিস কেনো
আমি উনার গলা পেয়ে কিছুটা কেঁপে উঠলাম।এরই মধ্যে আমার শাশুড়ী মাও বলে উঠলো
শানের মাঃ কি হয়েছে এভাবে সোফায় উঠে দাড়িয়েছিস কেনো অহনা আর এত চেচামেচি করছিস কেনো।
কাজের মেয়েঃ খালাম্মা আফা মনে হয় ভয় পাইছে দেহেন উনার মুখ খানা কেমনে হুগাই গেছে। ও নতুন বউ কি হয়েছে অহনা আফার
শানের মাঃ হ্যাঁরে ইশা মা তুই তো কিছু বল

আমি দেখলাম সবাই আমার দিকে জিজ্ঞেসা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আছে। আমি জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে আমতা আমতা করে বললাম
ইশাঃইয়ে মানে!!!!মা আমি
তখনই অহনা জোরে চিৎকার করে বলল
অহনাঃ মা বাড়িতে তেলাপোকা
শানের মাঃ তেলাপোকা, কি যা তা বলছিস তেলাপোকা কোথা থেকে আসবে
কাজের মেয়েঃ কন কি আফা তেলাপোকা আইবো কোথা থাইকা
অহনা ভয়ে আর কাতর গলায় বলল
অহনাঃ আছে, আছে, ভাবি দেখেছে
সবাই আমার দিকে তাকালো আমি এখন কি করবো বুঝতে পারছি না সবাই আমার দিকে প্রশ্ন সূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি একটা ঢোক গিলে বলল
ইশাঃ না মানে অহনা আমি কি দেখতে কি দেখেছি তার ঠিক আছে কিন্তু মনে হলো তেলাপোকার মতন
শানের মাঃ শুনেছিস তো এবার নিচে নাম বাবা
অহনা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
অহনাঃ কিন্তু তুমি তো বললে তেলাপোকা
ইশাঃ হ্যাঁরে বাবা বলে ছিলাম তবে যে বললাম ঠিক মতন দেখি নি।তুমি নিচে নামো তো অহনা

আমার কথা শুনে অহনা আপু কিছুটা সাহস পেলো তাই সোফা ছেড়ে আস্তে করে নিচে নেমে এলো।অহনা নিচে নামতেই আমার শাশুড়ী মা তার কাছে গিয়ে বলল
শানের মাঃ দিন দিন বড় হচ্ছি আর ছোট দের মতন ব্যবহার করিস( মাথায় গাট্টা মেরে)
অহনাঃ আহ্ মা ব্যাথা পাইতো
শানের মাঃ যা গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে আয় সবাই এক সাথে খাবি।
বলেই আমার শাশুড়ী মা আর কাজের মেয়েটা রান্না ঘরে গেলো।আর অহনা আপু রুমে চলে গেলো।আমি সেটা দেখে বুকে হাত দিয়ে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে পেছনে ঘুরতেই।আমি কারও সাথে ধাক্কা খেলাম। ধক্কা খেয়ে সামনে তাকাতেই দেখলাম উনি আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে দাড়িয়ে আছে।আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম উনি এখনও যায় নি।আমি তো ভেবেছিলাম উনি চলে গেছে।আমি একটা ঢোক গিলে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলেই উনি আবার আমার সামনে চলে এলেন। আমি সেটা দেখে নরম শুরে বললাম
ইশাঃ আমাকে যেতে দিন
শানঃ তুমি সত্যই তেলাপোকা দেখেছো নাকি (সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল)
ইশাঃ না
শানঃ তাহলে মিথ্যা বললে কেনো
আমি এবার রেগে বলল
ইশাঃ আপনার জন্য
উনি ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন
শানঃ আমার জন্য মানে

আমি উনার চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম
ইশাঃ তখনকার ঘটনার জন্য এটা হয়েছে
শানঃ তো সেটা কি আমি করেছি নাকি তুমি করছো।

উনার মুখ থেকে এমন কথা শুনে আমার এখন মনে হচ্ছে লজ্জায় আমি মাটিতে মিশে যাচ্ছি। আমি কোন কথা না বলেই দৌড়ে সেখান থেকে অহনার ঘরে চলে গেলাম। আর রুমে গেলাম না। শুধু দুপুরে খাবার জন্য নিচে গেলাম।তারপর আবার অহনার রুমে গেলাম। কারন আজ আর উনি অফিসে যায় নি বাড়িতে ছিলো।তাই আমিও রুমে যাইনি।

রাতে…….

রাতে খাবার টেবিলে সকলে এক সাথে খাচ্ছিলো তখনই শানের বাবা শানকে উদ্দেশ্য করে বলল।
শানের বাবাঃ শান,,, তোমাকে কিছু বলার ছিলো
শানঃ জি বলো বাবা
শানের বাবাঃ কাল সকাল সকাল তুমি আর ইশা মা ওদের বাড়িতে যাবে
ইশা তো কথাটা শুনে খুশি হয়ে গেলো
শানঃ কিন্তু বাবা আমি তো সবে অফিসে জয়েন করলাম তো এর মধ্যে
শানের বাবাঃ শান আমি কিছু শুনতে চাই না এটাই নিয়ম বিয়ের পর শশুড় বাড়ি যেতে হয়

আমি মুখ ভেংচি দিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললাম
ইশাঃ দেখো তো!!! আরে আপনি না গেলে না যাবেন আমি কালই যাবো।

উনি একবার আমার দিকে তাকিয়ে আবার ও বলে উঠলেন
শানঃ ঠিকাছে কাল যাবে,
আমি তো পুরো খুশি হয়ে টেবিল ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে পড়লাম আর বললাম
ইশাঃ আমার খাওয়া শেষ আমি রুমে গেলাম ব্যাগ গুছাতে হবে না। (৩২ টা দাঁত বেড় করে)
উনি বাদে সবাই হেসে উঠলো আমার কথা শুনে। আমি ও সবাই সাথে হেসে উঠলাম কিন্তু উনার দিকে তাকাতেই আমার হাসি গায়েব হয়ে গেলো।কারন উনি আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।তো তাতে আমার কি আমি একটা ভাব নিয়ে রুমে চলে গেলাম।রুমে গিয়ে আমি গান গুনগুনিয়ে ব্যাগ গোছাচ্ছিলাম ঠিক তখনই পিছন থেকে উনি ভারী গলায় বললেন
শানঃ খুব খুশি না বাড়ি যাবার কথা শুনে

[[[লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]

চলবে……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে