ভালবাসার অন্যরূপ পর্ব-০৪

0
1282

#ভালবাসার_অন্যরূপ 🍁

#লেখিকা:- Nishi Chowdhury

#চতুর্থ_খন্ড

সময় ও নদীর স্রোত কারোর জন্য অপেক্ষা করে না। সে তার নিজের নিয়মে আপন গতিতে চলতে থাকে। যেমনিভাবে এই এক সপ্তাহ চোখের পলকে কিভাবে যে শেষ হয়ে নগেল তা বুঝে উঠতে পারল না আরিশা অবশেষে আরিশার পুরো পরিবারের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আরিশার বিয়ের দিন চলে আসলো।

এই এক সপ্তাহ পুরোটা সময় কেমন ঘরের মধ্যে কেটে গেছে আরিসার। পুরোটা সময় নিজেকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখেছে সে। ইউনিভার্সিটি তো দূর, প্রয়োজন ছাড়া নিজের ঘরের বাইরে বের হয়নি আরিশা মাথা জুড়ে শুধু একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে

তা হল যে ওর এত বড় ভুল কিভাবে হল মানুষ চিনতে। তার এত বড় ভুল হয়েছে বিষয়টা এখনো কেন যেন মেনে নিতে পারছে না সে আবার অভির বিরুদ্ধে এত বড় অভিযোগ টা যে করেছে তার কথা ও তো অবিশ্বাস করা একদম অসম্ভব ব্যাপার তার কারণ তার মাকে সে চেনে কঠিন পরিস্থিতিতে চোখে চোখ রেখে সত্যকথা বলতে তার মা পিছপা হয় না।

তার মা ই বা কেন মিথ্যা বলবে। ওভি তো কোন বেকার বাউণ্ডুলে ছেলে নয়। যে মেয়ে বিয়ে দেবে না বলেই মিথ্যে বলে বিয়েটা ভেঙে দিচ্ছে সে একটা নামকরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় টিচার নিঃসন্দেহে ভালো ছেলে। তাহলে কে মিথ্যে কথা বলছে? আরিশার মস্তিষ্ক বলছে মা মিথ্যে বলতে পারেনা আবার হৃদয় মস্তিষ্ককে প্রশ্নবিদ্ধ করছে অভি এত নিখুত অভিনয় করলো কিভাবে?

এসব চিন্তা করতে করতে এই 1 সপ্তাহে মাথা ছিড়ে যাওয়ার জোগাড় হয়েছে আরিশার আর তার মাও এই বিষয় নিয়ে মেয়েকে চাপ দেননি নিজেকে নিজের মত নিজেকে সামলে নিতে সুযোগ দিয়েছেন।

তার পুরো পরিবার তো বাড়ির ছোট মেয়ের বিয়ে নিয়ে অত্যাধিক ব্যস্ততায় দিন পার করছে। ঘরোয়া বিয়ের আয়োজন করলেও বিয়েতে কোনো ত্রুটিই রাখছেন না তারা। 2 দিন আগে পুরো বাড়িটা ডেকোরেট করে ফেলেছেন বিভিন্ন রকম লাইটিং দিয়ে। গত সন্ধ্যায় হলুদ ও মেহেন্দি অনুষ্ঠান করা হয়েছিল জাঁকজমকভাবে।

ঘরোয়াভাবে অনুষ্ঠান করা হলেও পরিবারের প্রত্যেক সদস্য এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল। হলুদ জামদানি শাড়ি ও গাঁদা ও গোলাপ ফুলের সংমিশ্রণে সেজেছিল আরিশা। মুখে কোন মেকআপ ছিল না শুধুমাত্র ফুলের সাজে সজ্জিত করা হয়েছিল আরিশা কে তাতেই অপরূপা লাগছিল তাকে। ড্রইংরুমে সোফা সেটের ওপর চুপ করে বসে দেখছিল দুই পরিবারের আনন্দে হই হুল্লোড়ে মেতে উঠা হলুদ সন্ধ্যার অনুষ্ঠান। ছেলের বাড়ি থেকে হলুদ আসার পর অনুষ্ঠানটা আরো বেশি মোহনীয় হয়ে উঠেছিল।

অনুষ্ঠান শেষ হতে আরিশা নিজের বেডরুমে চলে আসে তারপর ফ্রেশ হয়ে বিছানায় এলিয়ে দেয় তার ক্লান্ত শরীরটা। শরীরের থেকে তার মনটাই বেশি ক্লান্ত আজ। এরকম একটা হলুদ সন্ধ্যার কল্পনা এঁকেছিল নিজের মনে।

কিন্তু যে মানুষটার সাথে নিজেকে কল্পনা করেছিল তার পরিবর্তে অন্য কারোর হলুদ ছোঁয়ালো আজ নিজের গায়ে। হঠাৎ চোখের কার্নিশে দু ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল বালিশের উপর। সত্যি ভুল মানুষকে ভালবাসলে অশ্রু হয় তার একমাত্র সম্বল।

চোখ দুটো ব্যথা করছে তার এই 1 সপ্তাহ কম অশ্রু ঝরে নিয়েই চোখ দিয়ে। আজ সত্যিই একটু বিশ্রামের প্রয়োজন। তাই চোখ বন্ধ করে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমানো আরিশা। না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছিল আরিশা। আরিশার আম্মু দরজায় নক করতে এসে দেখে দরজাটা চাপানো। দরজাটা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখে মেয়ে ঘুমিয়ে গেছে তাই আর বিরক্ত করলেন না। চলে আসলেন নিজের রুমে।

🌺 🌸 🌺

কোন কিছু নতুন উদ্দমে শুরু করার জন্য সর্বোত্তম মাধ্যম হচ্ছে একটি শুভ সকাল।

ফজরের নামাজ শেষে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভোরের মিষ্টি আবহাওয়া গায়ে মাখছে আরিশা। ভোরের মৃদু মন্দ শীতল বাতাস তার শরীরে কাঁপন সৃষ্টি করছে। অগ্নিঝরা মার্চের প্রথম সপ্তাহ। পুরো শহর জুড়ে এখনো মানুষ ভোরের এই সময়টাতে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমায়। কত সুন্দর নির্মল ঝিরঝির বাতাস বইছে চারপাশে। পাখিগুলো কিচিরমিচির শব্দ তুলে উড়ে যাচ্ছে দূর আকাশে। কিছু মুহূর্তের জন্য নিজের সব অভিমান রাগ দুঃখ সব কিছুকে সাইডে রেখে এই পরিবেশটাকে উপভোগ করছে আরিশা।

কিছুক্ষণ আগে সূর্য উদয় হয়েছে পূর্বাকাশে। মিষ্টি রোদের আলিঙ্গনে মুহূর্তে পৃথিবীতে কিঞ্চিৎ উষ্ণতা ছড়াচ্ছে সে। কতক্ষণ যে এভাবে সময় পার করে দিল আরিশা তা হয়তো তার গুণের রাখা হয়নি।

দরজায় নক করার শব্দে বারান্দা থেকে নিজের রুমে প্রবেশ করে আরিশা। দরজা খুলে মায়ের মিষ্টি মুখটা দেখতে পেয়ে একটা মুচকি হাসি উপহার দেয় তার মাকে। মেয়ের এমন আমূল পরিবর্তন দেখে খুব খুশি হন তিনি। ভিতরে ঢুকে সেন্টার টেবিলের ওপর সকালের নাস্তা রেখে মেয়েকে কাছে টেনে নিয়ে কপালে চুমু খেয়ে বললেন,

— মাশাল্লাহ আমার মেয়েকে আজ অন্যরকম সুন্দর লাগছে সেই আগের আরিশার মতো। এভাবেই সবসময় হাসিখুশি থাক তুই।

আরিশা হালকা হেসে মাথা ঝাকিয়ে সম্মতি জানালো। আরিসার আম্মু এবার মেয়ের হাত ধরে টেনে সোফায় বসিয়ে বললেন,

— কাল এসে দেখলাম তুমি ঘুমিয়ে পড়েছিলে তাই আর ডিস্টার্ব করিনি। না খেয়ে ঘুমিয়ে ছিলি, নিশ্চয়ই খিদে পেয়েছে। আয় তাড়াতাড়ি নাস্তা করেনে।আমার অনেক কাজ আছে মা। এরপরে আমি আর সময় পাবো না। আজ তোকে যদি নিজের হাতে না খাওয়াই আমি যে সারাটা দিন শান্তি পাবও না।

আরিসার চোখজোড়া পানিতে ভরে উঠলো। সত্যি কত বড় ভুল করতে যাচ্ছিলো সে। তার কাছে এখন সবকিছু পানির মত পরিস্কার হয়ে গেছে। বিগত এক সপ্তাহের অভি তার সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেনি। আরিশা তার মায়ের ফোন দিয়ে কয়েকবার ওই নাম্বারে ডায়াল করেছিল কিন্তু কোনোরকম রেসপন্স পাইনি।

যাকে সে এত ভালোবাসলো, মা-বাবার বিরুদ্ধেও সে যেতে চেয়েছিল এক সপ্তাহের ব্যবধানে কোথায় হারিয়ে গেল সে। বরং তার চিন্তায় যখন সে নাওয়া খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল তখন তার মা ই তাকে তিনবেলা করে নিজের হাতে খাইয়ে দিয়ে গেছে। তার সাথে গল্প করেছে হাসানোর চেষ্টা করেছে। বন্ধুর মতো সবসময় সাপোর্ট করে গেছে। সত্যি মা বাবা প্রতিটি সন্তানের জন্য নেয়ামত। তারা যে সিদ্ধান্তগুলো নেন সন্তানের মঙ্গলের জন্য নেন। তাই প্রত্যেকটা সন্তানের উচিত মা বাবার কথা শুনে চলা‌।

🌺 🌸 🌺

নিজের রুমে বসে ড্রইংরুমের কোলাহল শুনতে পাচ্ছে আলিশা। কিছুক্ষণ আগে জুম্মার নামাজ পড়ে আহনাফ তার পরিবার নিয়ে এসেছে আরিশার বাড়িতে। আরিশার পুরো পরিবার তাদের আপ্যায়নে পুরোপুরিভাবে মশগুল হয়ে পড়ল।

পার্লারের মেয়েরা আরিশাকে সাজাচ্ছে তার রুমে বসে। পুরো বিষয়টা তদারকি করছে উর্মি। খয়রি লাল বেনারসিটা খুব সুন্দর করে সেটিং করে পড়ানো হয়েছে আরিশা কে গা ভর্তি সোনার গয়না। মাথায় গোল্ডেন কাতানের সিল্কের ওড়না যার ভেতরে গোল্ডেন সুতোর কাজ করা। খোপার গোলাপ ও বেলি ফুলের গাজরা দিয়ে সাজানো হয়েছে। সাজানো কমপ্লিট হয়ে গেছে।আয়নার দিকে তাকিয়ে আরিশা নিজেকে দেখে নিজেকে কেমন যেন অবাক হয়ে গেল। নিত্যদিনের সালোয়ার-কামিজ পরিহিতা মেয়েটি আজ নববধূর সাজে সত্যি হুর পরীকে হার মানিয়েছে।

এমন সময় ঘরের ভিতরে প্রবেশ করল আরিয়ান। বোনের দিকে একদৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে সামনের ড্রেসিং টেবিলের ওপর থেকে নিজের ফোনটা পকেটেই ঢুকাতে ঢুকাতে বললো,

— হায় হায় এমনিতো প্রত্যেকদিন পেত্নীর মতো দেখতে লাগে আজকে তো একেবারে শাকচুন্নি সাজিয়ে দিয়েছেন। ভাইয়া না একে দেখে লেজ গুটিয়ে পালায়। ভাইয়াকে যা আজ লাগছে না। লাল খইরি শেরওয়ানি তো একেবারে মারাত্মক লাগছে। পুরো কিলার লুক নিয়ে এসেছে। তার পাশে আজ এইসব শাকচুন্নি কে মোটেও মানাবে না।

আরিশা ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে একটা শয়তানী হাসি দিয়ে বলল,

— আমাকে না মানালেও তোকে ঠিক মানাবে। আমাকে জাস্ট দশটা মিনিট সময় দেন এই শাড়ি ব্লাউজ আর পেটিকোট পরিয়ে তোকে তোর ভাইয়ের পাশে গিয়ে বসিয়ে দেবো। দেখবি দারুণ মানাবে মেড ফর ইচ আদার।

পার্লারের মেয়েগুলো হো হো করে হেসে উঠলো। তাদের মধ্যে একজন বলে উঠল,

— এখন কিন্তু ডিসকাউন্ট চলছে কনের এর সাথে একজন ভাই অথবা বোন ফ্রী সাজতে পারবে। তো এসো তোমাকেও সাজিয়ে দিই।

আরিয়ান বিরক্তির স্বরে বলল,

–না না থাক তোমাদের কই শাকচুন্নি মার্কা সাজগোজ এই দুই পেত্নী কে সাজাও। আমার আবার এসব লাগেনা। আমি নাচুরাল বিউটিফুল। এমনিতেই আমি আজ যা সেজেছি সবাইতো আজ আমাকেই দেখবে।

এতক্ষণে আরিশা ভালো করে তার ভাইয়ের দিকে তাকালো। সত্যি তার ভাইকে আজ দারুন লাগছে। সেও শেরওয়ানি পড়েছে। কিন্তু মেরুন কালারের। সত্যি বলতে যদি ছেলে পক্ষ থেকে আজ কোন মেয়ে এসে থাকে এর কিলার লুক দেখে সত্যিই কিল হয়ে যাবে সে।

আরিয়ান আরিয়ান হাত ধরে টেনে নিয়ে বলল,

— দেখি পেত্নী হাত টা দে তো এদিকে।

— কেন কি করবি?

— মচকায় ভাঙবো। এ হাত কোন কাজে আসে না খালি আমাকে মারা ছাড়া। দে

পকেট থেকে চিকন লম্বা একটা লাল রঙের বক্স বের করে সেটা খুলে একটা ব্রেসলেট বের করল আরিয়ান। অসম্ভব সুন্দর ডিজাইন করা একটি ব্রেসলেট। যাতে আরিয়ান ও আরিশার নাম ক্যালিগ্ৰাফি করে লেখা আছে। প্রথম দেখাতেই বোঝা যাচ্ছে এটা একটা স্বর্ণের ব্রেসলেট। কিন্তু এটা বানাতে তো অনেক টাকা খরচ হয়েছে এত টাকা ও পেল কোথায়?

চিন্তা নেই আম্মু আব্বুর কাছ থেকে নেই নি। আমি গোপনে দুটো টিউশনি পড়াতাম। সেই টাকা আর আমার একটা চিকন স্বর্ণের ব্রেসলেট ছিল। ছেলেদের সোনা পরা জায়েজ নাই। তাই তা দিয়ে তোর জন্যই ব্রেসলেটটা বানিয়ে এয়েছি।

আরিশা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ভাইয়ের দিকে। স্বর্ণের ব্রেসলেট এর উপর খুব শখ ছিল আরিশার। চেয়েছিলাম নিজের জমানো টাকা দিয়ে তৈরি করবে একটা সমস্যার কারণেও জমানো টাকাগুলো ওর মাকে দিয়ে দিয়েছিল। তাই সে ব্রেসলেটের আর কেনা হয়নি। সেই ব্রেসলেট এর কথা আরিয়ানের মনে আছে। তার ভাই কবে এত বড় হয়ে গেল। ব্রেসলেট পড়ানো শেষ হতেই আরিশা আরিয়ান কে জরিয়ে ধরল। দুই ভাই-বোনের চোখজোড়া অশ্রুতে পরিপূর্ণ। কারোর মুখে কোন কথা নেই। এভাবেই কেটে গেল কিছুক্ষণ। হঠাৎ আরিয়ান আরিশার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে বলল,

— ইশ…! কি দুর্গন্ধ। গোসল করিস না কয়দিন তুই।এই প্যাকাটি মার্কা সাজের আগে গোসল করে নিতে পারলি না। নে এই পারফিউম দিয়েই এখন কাজ চালা। বিয়ের শেষ হয়ে গেলে সোজা আগে গিয়ে বাথরুমে ঢুকে গোসল করবি। ভাইয়াটার কপালটাই খারাপ ইশ শেষে কিনা তোর মত একটা গন্ধযুক্ত প্যাকাটি জুটলো কার কপালে?

কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলে আর মোটেও দাঁড়ালো না আরিয়ান আর মুখের মুখের দিকে তাকালেই না। যদি তার বোন তার চোখের পানি দেখে ফেলে। তীর বেগে বেরিয়ে গেল বোনের রুম থেকে। আরিশাও অশ্রুসিক্ত নয়নে ভাইয়ের জাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।

উর্মি আরিশার কাঁধে হাত রেখে বলল,

— কাঁদিস না। না হলে এতক্ষনে পরিশ্রম সব মাটিতে মিশে যাবে। আমি জানি তোর কষ্ট হচ্ছে।

তারপর আয়নার দিকে তাকিয়ে আফসোসের সুরে বলল,

— জীবনে আজ প্রথমবার মেয়ে হয়ে জন্ম আফসোস হচ্ছে জানিস। ইস যদি ছেলে হয়ে জন্ম নিতাম আজকে তোকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করতাম। হায়..! এত রূপ দেখে আজ না ডাক্তারবাবু ভীমরি খেয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। আমারই তো কিছুক্ষণ তোর দিকে তাকিয়ে চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে। বরবাবুর কি হবে কে জানে বলে উচ্চ শব্দ ভেসে উঠলো উর্মি। লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলল আরিশা।

চলবে…..🌼🌼

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে