The_Villain_Lover Part_10

0
2623

The_Villain_Lover
Part_10
#Writer:#Tisha_Islam_Nabila

কথাগুলো বলার সময় সম্রাটে’র চোখ থেকে….টপটপ করে পানি পড়ছে হ্যা কান্না করছে সম্রাট….৭বছর আগে সম্রাট লাস্ট কান্না করেছিলো….আর আজ আবার কান্না করছে….সম্রাট চোখের পানি মুছে রুম থেকে চলে যায়….তখন ওর দাদুভাই ডাকে..!!

সম্রাটঃ হ্যা দাদু বলো……

দাদুভাইঃ শুভ তুই..!!

সম্রাট ওনাকে থামিয়ে বলে……

—-আর শুভ বলতে হবেনা….এখন থেকে আমাকে আমার নামেই ডাকবে..!!

দাদুভাইঃ কিন্তুু তুই যে বলেছিলি??

সম্রাটঃ হ্যা আবার আমিই বলছি……

এরমাঝে নিলয় এসে বলে..!!

—-ভাই কি নিয়ে কথা হচ্ছে??

সম্রাটঃ না তেমন কিছুনা……

নিলয়ঃ ওয়েল আমি তাহলে যাচ্ছি..!!

দাদুভাইঃ কোথায় যাচ্ছিস??

নিলয়ঃ দাদু বাড়ি বসে বোর লাগছে….তাই একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসছি বাই দাদু বাই ভাই……

সম্রাট সোফায় বসে আছে….চোখ ছলছল করছে ওর..!!

দাদুভাইঃ দাদুভাই কি হয়েছে তোর??

সম্রাটঃ দাদু জানো??আজকে মম, ড্যাড আর শ্রেয়া কে….খুব খুব বেশী মনে পড়ছে….কেন হলো এমন??

শ্রেয়া সম্রাটে’র একমাএ বোন ছিলো……

দাদুভাইঃ মন খারাপ করিস না দাদু….তুই কান্না করলে কি ওরা ফিরে আসবে??

সম্রাটঃ আমি কান্না করছি না……

বলে সম্রাট রুমে চলে যায়….আর ওর দাদুভাই মলিন ভাবে তাকায়….সম্রাট রুমে গিয়ে দেখে তিশা বসে আছে….সম্রাট যেন নিজের জান ফিরে পেয়েছে….দৌড়ে গিয়ে তিশা কে জড়িয়ে ধরে বলে..!!

—-জান তুমি ঠিক আছো??আমি কতটা টেনশন করছিলাম….তুমি বসো আমি খাবার নিয়ে আসছি….তোমাকে নিজের হাতে খাইয়ে দেবো…….

—-তোর মতো জানোয়ারের হাতে….আমি কিছুতেই খাবার খাবোনা….এরথেকে বিষ খাওয়া আমি বেশী পছন্দ করবো..!!

তিশা’র কথায় সম্রাট দাড়িয়ে পড়ে….সম্রাটে’র রাগ উঠে যায় আর তিশা’র….বিষ খাওয়ার কথা শুনে তো রাগে থরথর করে কাঁপছে….চোখদুটো রক্ত বর্ন ধারন করেছে….উল্টো দিকে ঘুরে যেতে গিয়েছিলো….তিশা’র কথা শুনে চট করে ফেরে ওর দিকে….সম্রাট কে দেখে তিশা’র জান যায় অবস্থা তবুও বলে…….

—-আমাকে মারতে এসেছিস না??নে আমাকে মেরে ফেল অন্তত তোর থেকে মুক্তি তো পাবো..!!

সম্রাট তিশা’র কাছে এসে….ঠাস করে তিশা কে থাপ্পর মেরে চেচিয়ে বলে…….

—-আমি তোকে কেন মারবো??আমি তোকে ভালবাসি তুই কেন বুঝিস না??আর কি বললি আমি জানোয়ার??আমার হাতে খাওয়ার থেকে….তুই বিষ খাওয়া বেশী পছন্দ করবি??দাড়া তুই তোকে তো আমার হাতেই খেতে হবে..!!

বলে সম্রাট পাগলের মতো হাসে….তিশা কাঁচুমাচু হয়ে তাকিয়ে আছে…….

সম্রাটঃ জান তুমি বসো আমি খাবার নিয়ে আসছি..!!

সম্রাট খাবার আনতে যায়….আর তিশা কান্না করতে করতে বলে……

—-আল্লাহ কেন এমন হলো??কোন পাপের শাস্তি পাচ্ছি আমি??শেষে কি না একটা পাগল আমার স্বামী??একটা পাগল, সাইকো কে আমি ভালবাসলাম??কি করবো এখন আমি??তুমি আমাকে পথ দেখাও..!!

—-কিছুই করতে পারবে না জান…….

রুমে ঢুকতে ঢুকতে সম্রাট বলে..!!

তিশাঃ আমাকে যেতে দাও……

সম্রাট রাগী দৃষ্টিতে তাকায়….ভয় পেয়ে তিশা চুপ হয়ে যায়….সম্রাট খাবার নিয়ে তিশা’র পাশে বসে..!!

সম্রাটঃ দেখি জান হা করো…….

তিশাঃ বলেছি না আমি খাবোনা..!!

সম্রাট শান্ত গলায় বলে…….

—-বেবী আমি হা করতে বলেছি..!!

তিশাঃ আমি খাবোনা শুনেছো??

সম্রাটঃ মাই লাভ হা করো..!!

তিশাঃ খাবোনা খাবোনা…….

সম্রাটঃ আমি হা করতে বলেছি হা কর..!!

চিৎকার করে বলে সম্রাট….ভয়তে তিশা তাড়াতাড়ি হা করে….সম্রাট মুচকি হেসে তিশা কে খাইয়ে দেয়….তিশাও লক্ষী মেয়ের মতো খেয়ে নেয়….খাওয়া শেষে সম্রাট নিচে যায় প্লেট রাখতে….ফোনটা রুমেই রেখে যায় এই সুযোগে….তিশা ফোন নিয়ে নীল কে ফোন দেয়….নীল ফোন রিসিব করতেই তিশা বলে…….

—-ভাইয়া কোথায় তোমরা??আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও….শুভ একটুও ভাল না ও আমাকে মারে….ও একটা পাগল ভাইয়া নিয়ে যাও….আর শুভ আসলে সম্রা..!!

সম্রাট এসে ছো মেরে ফোন নিয়ে নেয়….তিশা ও আর বলতে পারেনা শুভ আসলে সম্রাট….সম্রাট রেগে তিশা কে ধরে বলে…….

—-কি করছিলে তুমি??

তিশাঃ ঠিকই করেছি আমি থাকবো না..!!

সম্রাটঃ থাকতে তো তোমাকে হবেই জান…….

বলে সম্রাট বাঁকা হাসে..!!

২ ঘন্টা পরই নীল, অভি, আবির আর কল্লোল চলে আসে….এসেই তিশা কে ডাকতে থাকে….ওদের মাথায় রক্ত চেপে গিয়েছে….যখন তিশা বলেছে শুভ ওকে মারে……

এদিকে রুমে..!!

সম্রাটঃ প্লিজ জান আমাকে ছেড়ে যেয়োনা…….

তিশা কিছু না বলে নিচে যায়….ওর ভাইয়াদের দেখে জড়িয়ে ধরে..!!

নীলঃ মিষ্টি কলিজা শুভ কোথায়??

আবিরঃ হ্যা মিষ্টি কোথায় শুভ??

অভিঃ ওর সাহস কি করে হয়??তোমার গায়ে হাত তোলে….আজতো ওর হাত আমি ভেঙে ফেলবো……

এরমাঝে সম্রাট নেমে আসে….সম্রাট কে দেখেই অভি এগিয়ে যায়….আর তিশা হঠাৎ খিলখিল করে হেসে ওঠে….তিশা’র হাসি দেখে সবাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়….শুধু সম্রাট ছাড়া সম্রাট বাঁকা হাসি দেয়..!!

অভিঃ বোন তুমি হাসছো কেন??

তিশাঃ আমার কথা তোমরা সত্যি ভেবেছো??

কল্লোলঃ মানে কি মিষ্টি সোনা??

তিশাঃ আসলে তোমাদের অনেকদিন দেখিনা….এমনি বললে হয়তো আসতে না তাই নাটক করলাম….তোমরা বিশ্বাস ও করে নিলে??

বলে আবার হাসে তিশা……

—-ঠাসসসসসস..!!

তিশা গালে হাত দিয়ে….ছলছল চোখে তাকিয়ে বলে..!!

—-ভাইয়া তুমি আমাকে মারলে??

সম্রাট হাতের মুঠি বন্ধ করে নেয়….ওর চোয়াল শক্ত হয়ে গিয়েছে….তবুও নিজেকে কন্ট্রোল করে রেখেছে…….

আবিরঃ ভাইয়া কি করলে তুমি??

নীলঃ আবির তুই চুপ কর….আর হ্যা মারলাম তোমাকে আর আমি কোনো ভুল করিনি….এভাবে মিথ্যে কেন বললে তুমি??তুমি জানো তোমার মিথ্যে শুনে……

নীল কিছু একটা ভেবে থেমে আবার বললো..!!

—-মিষ্টি কলিজা আই এম সরি….আমার তোমাকে থাপ্পর মারা উচিত হয়নি….এবার তুমি বলোতো সত্যিটা কি??তুমি সত্যি মজা করেছো তো??নাকি ফোনে যেটা বলেছো সেটা ঠিক??

সম্রাট এবার ঘাবড়ে গেলো….নীলে’র কাছে এসে অভিনয় করে বললো…….

—-ভাইয়া এসব কি বলছো তুমি??তোমার মনে হয় আমি বেবী কে মারবো??বেবী তুমি কিছু বলবে না??

তিশাঃ হ্যা আমি মজা করেছি..!!

কল্লোলঃ তাহলে আমরা আসি আজ……

সম্রাটঃ আরে না কি বলছো??আজকে থাকো প্লিজ..!!

অভিঃ না আজ যেতে হবে কাজ আছে……
.
.
.
.
.
.
ওরা ৪জন চলে যায়….তিশা রুমে গিয়ে কান্না করতে থাকে….সম্রাট রুমে এসে তিশা’র পাশে বসে….তিশা সম্রাটে’র কলার ধরে বলে..!!

—-খুশি হয়েছো তুমি??এটাই তো চেয়েছিলে না??আমার ভাইয়া আমাকে মারুক??তোমার জন্য আমি আজ প্রথমবার….আমার ভাইয়াদের কাছে মিথ্যে বললাম……

এবার ভাবছেন তো??তিশা মিথ্যে কেন বললো??চলুন দেখে নেই কি হয়েছিলো..!!

#একটুআগে……

সম্রাট বাঁকা হেসে ড্রয়ার থেকে….একটা পিস্তল বের করে তিশা ভয় পেয়ে….দু কদম পিছিয়ে যায় তা দেখে সম্রাট বলে..!!

—-রিল্যাক্স জান ভয় পেয়োনা….এটা তো তোমার জন্য না……

তিশাঃ তা তাহলে??

সম্রাটঃ এটা তোমার ৪ভাইয়াদের জন্য..!!

তিশাঃ মা মানে??

সম্রাটঃ জানালা দিয়ে নিচে তাকাও……

তিশা নিচে তাকিয়ে দেখে ওর ভাইয়ারা….তিশা ভয় পেয়ে যায় কারন সম্রাট খুনি….সো ও খুন করতেই পারে..!!

সম্রাটঃ এটা দিয়ে ওদের উপরে পাঠিয়ে দেবো…….

তিশাঃ না তুমি কিছু করবে না..!!

সম্রাটঃ তাহলে আমি যা বলছি সেটা করো….নাহলে তুমি ওদের কাছে পৌছাবে….আমি যে মাফিয়া সম্রাট খাঁন সেটাও বলবে….বাট ওরা কিছু করতে পারবে না কারন….আমি ওদের এই পিস্তলের ৪টা গুলি দিয়ে….এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেবো…….

তিশাঃ না তুমি যা বলবে আমি করবো..!!

সম্রাটঃ গুড সো কাম উইথ মি…….

এরপর কি হয়েছে সবার জানা..!!

#এখন……

তিশাঃ আমি তোমাকে ঘৃনা করি..!!

বলে বেলকনিতে চলে যায়….সম্রাট একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে….রাতে সম্রাট ছাদে দাড়িয়ে আছে….রাত এখন ১টা সম্রাটে’র চোখে ঘুম নেই….যে কদিন শুভ হয়ে তিশা’র ভালবাসা পেয়েছিলো….সেই কয়দিন ঘুমোতে পেরেছিলো….চোখের কোনায় পানি জমে আছে…….

সম্রাটঃ ভালবাসা কি আমার জন্য না??ভালবাসা কি পাপ আমার জন্য??কেন এমন হয় আমার সাথে??কিন্তুু আমি তোমাকে হারাতে পারবো না জান….তুমি কোথাও যেতে পারবে না….যেদিন তুমি চলে যাবে সেদিন আমি তোমাকে মেরে ফেলবো….তবে তুমি ভেবোনা তোমাকে মেরে….আমি সুখে শান্তিতে বেঁচে থাকবো….তোমাকে মেরে আমিও মরবো….তুমি যেতে চেওনা জান প্লিজ..!!

সম্রাট পুড়ো বাড়ি গার্ড দিয়ে ঘিরে রেখেছে….যাতে তিশা না পালাতে পারে……

১০দিন পর……

সম্রাট তিশা কে অনেক বুঝিয়েছে….কিন্তুু ৭বছর আগে কি হয়েছিলো….সেটা চেয়েও বলতে পারেনি তিশা শোনেনি….নিলয় আর ওর বাবা আবার বিদেশ চলে গিয়েছে….সম্রাট অফিস থেকে এসে রুমে গিয়ে অবাক….তিশা লাল রঙের একটা শাড়ি পড়েছে….ঠোটে লাল লিপস্টিক চোখে কাজল..!!

সম্রাটঃ আমি কি স্বপ্ন দেখছি??

তিশাঃ মোটেও না এটা সত্যি……

সম্রাট আবারও অবাক হলো..!!

তিশাঃ এবার বলো আমাকে কেমন লাগছে??

সম্রাটঃ জান তুমি সেজেছো??তুমি আমার সাথে ঠিকমত কথা বলছো??

তিশাঃ হ্যা সম্রাট আমি বুঝেছি….তুমি আমাকে সত্যি ভালবাসো….তাই আমি ঠিক করেছি আমি এখানেই থাকবো……

সম্রাট তিশা কে জড়িয়ে ধরে বললো..!!

—-আই লাভ ইউ সো মাচ জান….আমি যে কতটা খুশি হয়েছি….তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না……

তিশাঃ আই লাভ মোর দেন ইউ..!!

সম্রাট মুচকি হাসলো……

তিশাঃ এখন যাও ফ্রেশ হয়ে এসো..!!

সম্রাটঃ জ্বি ম্যাডাম……

সম্রাট ফ্রেশ হতে গেলো….তিশা সম্রাটে’র কোট ঠিক করে রাখলো….সম্রাট ফ্রেশ হয়ে আসার পর তিশা বললো..!!

—-চলো তোমার পছন্দের….সব খাবার তৈরী হয়েছে আজ……

সম্রাটঃ রিয়েলী??

তিশাঃ হুম চলো দেখতে পাবে..!!

সম্রাটঃ খেতেও পারবো……

তিশাঃ পাগল এখন চলো..!!
.
.
.
.
.
.
এরপর ওরা একসাথে নিচে যায়….তিশা সম্রাটে’র দাদুভাই কে ডেকে আনে….এরপর ৩জন খাওয়া শেষ করে….সম্রাট আজ অনেক খুশি….তিশা ওকে বুঝেছে ওর ভালবাসা বুঝেছে…….

সম্রাটঃ থ্যাংক ইউ আল্লাহ..!!

তিশাঃ সম্রাট চলো না বাইরে যাই……

সম্রাটঃ কেন??

তিশাঃ ঘুরতে প্লিজ..!!

সম্রাটঃ ওকে চলো……

সম্রাট তিশা কে নিয়ে বাইরে যায়….সম্রাট ভেবেছিলো তিশা পালাতে চাইবে….কিন্তুু না যতক্ষণ ওরা বাইরে হেটেছে….ততক্ষণ তিশা সম্রাটে’র হাত ধরে রেখেছিলো….সম্রাট সস্তির নিঃশ্বাস ফেললো..!!

সম্রাটঃ তাহলে জান আর পালাবে না….সত্যি জান আমার সাথে থাকবে…..[মনে মনে]

ওরা ঘুরে বাড়ি চলে আসে….সম্রাট গার্ডদের রাখে বাট তিশা কে….আগের মতো পাহাড়া দিতে বারন করে….তিশা কলেজে যেতে চাইলে ওকে যেতে দিতে বলে..!!

এভাবে আরো ১০দিন কেটে গেলো…….

আজকে সম্রাট বাইরে যাচ্ছে….তবে অফিসে না একজন কে খুন করতে….তিশা মুখ ফুলিয়ে বসে আছে……

সম্রাটঃ কি হলো জান??

তিশাঃ তুমি অফিসে না গেলে হয়না আজ??

সম্রাট তো খুশিতে গদগদ….বাট ওর যেতেই হবে তাই বললো..!!

—-না জান আমার যেতে হবে……

তিশা নিজের ব্যাগ নিয়ে এসে বললো..!!

—-তাহলে আমাকে কলেজে পৌছে দিতে হবে……

সম্রাটঃ ওকে জান আমি তোমাকে নিয়েও আসবো..!!

সম্রাট তিশা কে কলেজে দিয়ে….নিজের কাজে গেলো এদিকে তিশা রহস্যময় হাসি দিয়ে বললো……

—-বাই মাই ডিয়ার ক্রাশ হাসবেন্ড..!!

তিশা বেরিয়ে নিজেদের বাড়ি গেলো…….

তিশাঃ ভাইয়া আমি রেডি..!!

অভিঃ ওকে তাড়াতাড়ি চলো……

ওরা ৪ ভাই আর তিশা এয়ারপোর্ট গেলো….তিশা এই ১০দিন সম্রাটে’র সাথে নাটক করেছে….যাতে সম্রাট ওকে বাইরে একা ছাড়ে….আর ওর ভাইয়াদেরও বলে সব….কিন্তুু ও চায়না সম্রাটে’র কোনো ক্ষতি ওর ভাইয়ারা করুক….তাই ও দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করে….তিশা প্লেনে বসে আছে থাইল্যান্ড চলে যাচ্ছে….একটুপর প্লেন ছেড়ে দেয় আর সম্রাট জানতেও পারলো না..!!

নিজের কাজ শেষ করে সম্রাট কলেজে আসে….কলেজে এসে জানে তিশা নাকি ক্লাসে যায়নি….গেট থেকেই বাড়ি চলে গিয়েছে….সম্রাট ভাবে তিশা হয়তো অসুস্থ ছিলো….তাই তাড়াতাড়ি গাড়ি নিয়ে বাড়ি চলে যায়….বাড়ি গিয়ে শোনে তিশা বাড়ি আসেনি….সম্রাট তবুও রুমে চলে যায়….হঠাৎ ওর চোখ যায় বিছানায় থাকা….একটা কাগজের দিকে এটা তিশা….রুম থেকে বের হওয়ার সময় রেখেছে….যেটা সম্রাট তখন দেখেনি কারন সম্রাট আগে বের হয়েছিলো….সম্রাট কাগজটা খুলে দেখে কিছু লেখা…….

—-সরি মাই ডিয়ার হাসবেন্ড….আমি তোমার সাথে থাকতে পারলাম না….কারন তোমার মতো পাগলের সাথে….কোনো সুস্থ মানুষ থাকতে পারেনা….আমি তোমার সাথে এই ১০দিন নাটক করেছি….যাতে আমি বাইরে বের হতে পারি….তুমি আর আমাকে খুজে পাবেনা….কারন আমি চলে যাচ্ছি গুড বাই..!!

চিরকুটটা পড়ে সম্রাট স্তব্ধ হয়ে গেলো….চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ছে নোনা পানি….ধপ করে বিছানায় বসে পড়লো……..

সম্রাটঃ নাটক করলে জান??আমাকে ফেলে চলে গেলে??কি নিয়ে বাঁচবো আমি??

সম্রাট বিরবির করছে একা….হঠাৎ চোখের পানি মুছে বললো..!!

—-আমি তোমাকে খুজে বের করবো জান…….
.
.
.
.
.
.
৩ ঘন্টা পর ওরা থাইল্যান্ড গিয়ে পৌছালো….বাংলাদেশ থেকে সরাসরি থ্যাইল্যান্ড যেতে ৩ঘন্টা লাগে….ওরা প্রথমদিন তাই থাইল্যান্ডে’র “নাম নাকা”হোটেলে গেলো….এটা থাইল্যান্ডে’র “টপ স্টাফ এন্ড সার্ভিস ফার্স্ট হোটেল”….ওরা রুম বুক করে রেস্ট করলো….পরেরদিন ব্রেকফাস্ট শেষ করে নিজেদের….থাইল্যান্ডে যেই বাড়ি আছে সেখানে চলে গেলো….এদিকে সম্রাট তিশা কে খুজছে….কিন্তুু পাচ্ছেনা পাবে কি করে??তিশা তো বাংলাদেশেই নেই….সম্রাট পাগলের মতো হয়ে গিয়েছে….তিশা’র বাবা, মা কে রিকোয়েস্ট করেছে….যাতে ওনারা বলে তিশা কোথায়….ওনারা মিথ্যে বলেছে তিশা বাংলাদেশে আছে পারলে খুজে নাও….এভাবে কেটে গিয়েছে ১ মাস….কল্লোল আর আবির বাংলাদেশে চলে এসেছে….অভি আর নীল থেকে গিয়েছে..!!

সম্রাট বিদেশেও খুজেছে তিশা কে….কত খুজবে??সম্রাট বাড়ি ভাঙচুর করছে….আর পাগলের মতো চিৎকার করে কান্না করছে….সম্রাটে’র দাদুভাই আটকাতে এসে….এসব দেখে উনি স্ট্রোক করে বসে….সম্রাট ছুটে আসে ওনার কাছে…….

দাদুভাইঃ এমন করিস না সম্রাট..!!

আর বলতে পারেনা চোখ বন্ধ করে নেয়….সম্রাট যেহেতু ডক্টর তাই ও চেক করে যা বোঝে….দাদু বলে একটা চিৎকার দেয়….কারন ওর দাদু মারা গিয়েছে….এতকিছু সম্রাটে’র এই অবস্থা মানতে পারেনি উনি……..

সম্রাটঃ দাদু প্লিজ তাকাও প্লিজ….আমাকে এভাবে একা ফেলে যেওনা….দাদু আমি একা হয়ে যাবো ওপেন ইউআর আইস..!!

সম্রাট এরপর আরো হিংস্র হয়ে যায়……

৩ বছর পর..!!

তিশা বসে আছে থাইল্যান্ডে’র….”মাহিদোল ইউনিভার্সিটি তে” ওয়েট করছে নিজের ফ্রেন্ডের….অতঃপর এসে হাজির হয় সেই ফ্রেন্ড সৌহাদ্র….সৌহাদ্র একজন বাঙালী ছেলে….তিশা এখন সব বুঝতে শিখেছে বয়স ১৯ এখন….সৌহাদ্র কে দেখে তিশা বললো……

—-লুকিং সো নাইস..!!

সৌহাদ্রঃ ইয়া তুমিও……

তিশাঃ আমি কালকে বাংলাদেশে যাচ্ছি..!!

সৌহাদ্র মুখ কালো করে বলে…….

—-আবার কবে আসবে??

তিশাঃ পাপা সুস্থ হলেই চলে আসবো..!!

ওরা কথা বলে অনেকক্ষণ….এরপর তিশা চলে আসে পরেরদিন বাংলাদেশে চলে আসে….সবাই অনেক খুশি হয় তিশা ভাবে….রুপে’র সাথে দেখা করতে যাবে….যেই ভাবা রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে….কালো শার্ট আর কালো জিন্স প্যান্ট পড়ে….গাড়ির চাবি নিয়ে নিজে ড্রাইভ করে বেরিয়ে যায়….তিশা হয়তো ভাবেনি কি অপেক্ষা করছে ওর জন্য….বিকেলে রুপ’দের বাড়ি যাওয়ায়….ওখান থেকে আসতে আসতে রাত হয়ে যায়….ব্রিজের উপরে যখন গাড়ি নিয়ে আসে….তখনি সামনে দেখতে পায় একটা গাড়ি….যেটা ওর রাস্তা আটকেছে….তিশা রেগে গাড়ি থেকে নেমে বলে……

—-হেই ওয়াট দ্যা হেল??আর ইউ ম্যাড??

গাড়ি থেকে যে বেরিয়ে আসে….তাকে দেখে তিশা ভয় পেয়ে যায়..!!

তিশাঃ স সম্রাট??

সম্রাট আগের থেকে যেমন হিংস্র হয়েছে….তেমন কিউটও হয়েছে তিশা হা করে তাকিয়ে আছে……

সম্রাটঃ যাক চিনেছো তাহলে??

বলে সম্রাট এগোতে থাকে….তিশা ব্রিজের রেলিং ধরে আছে….সম্রাট তিশা’র সামনে এসে বলে……

—-ভালবেসেছি তোমাকে বিনিময়ে….তুমি আমাকে ধোকা দিয়েছো….ওয়াও জান তুমিতো আগের থেকে হট, সেক্সি হয়ে গিয়েছো..!!

তিশাঃ সাট আপ আমাকে যেতে দাও……

সম্রাটঃ যাবেতো তবে উপরে..!!

তিশা ভয়ে ভয়ে বলে…….

—-মা মা মানে??

সম্রাট নিজের পিস্তল বের করে….তিশা’র থেকে একটু দুরে গিয়ে তাক করে বলে..!!

—-তোর জন্য আমি দাদু কে হারিয়েছি….তুই আমার বিশ্বাস ভেঙেছিস….আমি বলেছিলাম নিজেকে যে তুই আমাকে ছেড়ে গেলে….আমি তোকে মেরে ফেলবো সো গুড বাই……

তিশা মুচকি হেসে বলে..!!

—-তুমি আমাকে মারবে না আমি জানি……

কিছুক্ষণে’র মাঝেই তিশা’র ধারনা ভুল প্রমানিত হয়….যখন একটা বুলেট ওর বুকে লাগে….তিশা ছলছল চোখে সম্রাট কে বলে..!!

—-তুমি আমাকে মেরে ফেললে??

আরো একবার তিশা কে গুলি করে….তিশা ব্রিজ থেকে নিচে পড়ে যায়….সম্রাট হাটু গেড়ে বসে পড়ে…….

—-আমি আরো একটা কথা বলেছিলাম….তোমাকে মেরে আমিও মরে যাবো..!!

সম্রাট উঠে দাড়িয়ে নিজের বুকে গুলি ধরে….এরপরই আরো একটা গুলির আওয়াজে….সবকিছু স্তব্ধ হয়ে যায় রাস্তায় পড়ে আছে সম্রাট….সারা শরীর রক্তে ভিজে আছে……..

#To_Be_Continued…..♣♣

[সরি গতকাল ফোন কিনে গল্প দেয়ার কথা ছিলো….ফোন গতকালই কিনেছি কিন্তুু গল্প দিতে পারিনি….কারন মাথা ব্যথা করছিলো….আর অনেকে জানতে চেয়েছেন….আমার জামাই’র নাম কি????
আমার জামাই’র নাম #সম্রাট…..??]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে