প্রেম প্রেম পায়রা পর্ব-০৮

0
303

#প্রেম_প্রেম_পায়রা
#পর্ব_৮
#গোলাপী_আক্তার_সোনালী

“নুর সত্যি করে বলতো তুমি কাউকে ভালোবাসো না?

” তুমিও শুরু করলে মায়ের মতো। আমার জীবনে কেউ নেই।

“তাহলে তো আর কিছুই বলার নেই।তাহলে সাহিল ভাইকে অবশ্যই পছন্দ হবে তোমার।আগে দেখেছো কখনো?

” ছোট বেলায় হয়তো দেখেছি।আমার ঠিক মনে নেই।
এর মধ্যেই নাহার বেগমের ডাক পরলো।নুরকে নিয়ে যেতে বলছে নুহাশ।

“চলো তোমার ডাক পরে গেছে।

নুর লক্ষ্য করলো তার পা দুটো এগোতে চাইছে না।না চাইতেই চোখে অবাধ্য পানি এসে ভর করছে।নিজেকে আটকে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেই যাচ্ছে নুর।ছোয়া সবটাই খেয়াল করেছে কিন্তু মুখে কিছুই বললো না।সে অপেক্ষা করছে সঠিক সময়ের জন্য।

নুর সবাইকে সালাম দিলো।সাহিলের মা নুরকে নিজের পাশে বসালেন।

” নুরকে তো আমাদের পছন্দ হয়েছে। বাবা নুহাশ আমরা চাইছিলাম আজই আংটি পরিয়ে যেতে যদি তোমাদের মত থাকে।

“হ্যাঁ অবশ্যই। আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

” কিন্তু আমার আপত্তি আছে।এই বিয়ে হবে না।

“একি আপনি এখানে?

” হ্যাঁ আমি।

“এতক্ষণে তোমার আসার সময় হলো রোহিত।তুমি একাই এসেছো?

” না মাও এসেছেন বাইরেই আছেন।

“এসবের মানে কি ছোয়া।তুমি ওনাকে ডেকেছো?

” ঠিক ডাকিনি জানিয়েছি শুধু।

“একমিনিট। কি বলছো আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।

” আমি বলছি।আসলে নুর আমাকে ভালোবাসে।সেটা আজ থেকে নয় কলেজ পড়ার সময় থেকে।নুরের জীবনে যা ঘটে গেছে তার জন্য প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে আমি দায়ী।

“এসব কি নুর?তুই আমাকে আগে কেন সব বলিসনি?

” আ..আমি আসলে।

“নুর তুমি এই বিয়েতে রাজি?

” হ্যাঁ। ভাইয়া যাকে বলবে আমি তাকেই বিয়ে করবো।আপনি কেন এসেছেন এখানে?

“কেন এসেছি তুমি বুঝতে পারছো না।এই যে তোমার পিছনে দিনের পর দিন পাগলের মতো ঘুরছি তবুও তুমি বুঝতে পারছো না নাকি বুঝতে চাইছো না?নুর তুমি কি তোমার ভাইকে ভয় পাচ্ছো? দেখো আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি।প্লিজ আমায় শাস্তি হিসেবে অন্য যে কোনো শাস্তি দাও আমি মেনে নিবো কিন্তু অন্যকারো হবার চেষ্টাও করো না।

” হাত ছাড়ুন লাগছে আমার।

” অনেক হয়েছে মিঃ রোহিত আপনি এক্ষুণি এখান থেকে বেরিয়ে যাবেন।নুর আমার পছন্দ করা ছেলেকেই বিয়ে করবে।

“সরি মিঃ নুহাশ।আপনি একজনকে আমার থেকে কেরে নিয়েছেন তখন আমি কিছু করতে পারিনি ঠিকি কিন্তু নুরকে আমি হারাতে চাই না।

দুজনেই খুব রেগে।এদের না থামালে যা কিছু হয়ে যাবে তা বুঝতে বাকি নেই কারোর।ছোয়া এবার মুখ খুললো।

” নুহাশ আপনার সাথে আমার কথা আছে প্লিজ একটু ঘরে চলুন।

“যা বলার এখানেই বলো।

” বিষয়টা সিরিয়াস প্লিজ।

ছোয়া নুহাশের সাথে কথা বলছে অনেকটা সময় হলো।কিন্তু কেউ বের হচ্ছে না ঘর থেকে।সাহিলকেও ডেকে নিয়েছে এক ফাকে।রোহিত এখনো নুরের হাত ধরে আছে।ছাড়ানোর চেষ্টা করেও নুর ব্যার্থ। রোহিতের কোনো হেলদোল নেই।আজ যা কিছু হয়ে যাক নুরের হাত সে ছাড়বে না ঠিক করে নিয়েছে।

“এতো কিছু হয়ে গেছে আর আমি কিছুই জানি না।আমার বোনটা এভাবে শেষ হয়েছে আর আমি ভাই হয়ে কিছুই জানি না।তুমি আগে আমাকে কেন বলনি ছোয়া।

” আসলে আমি নিজেও আজই জেনেছি সবকিছু।

“আমি সাহিলের পরিবারকে কি বলবো?

” এক কাজ করলে কেমন হয় সাহিল ভাইকে ডেকে সবকিছু বুঝিয়ে বলি।আমি শিওর উনি ঠিক বুঝতে পারবেন এবং আংকেল আংটিকে বুঝিয়ে বলিতে পারবে।

“হ্যাঁ তাই করি।

সেই থেকেই তিনজন আলাপ করেই যাচ্ছে।এমন নয় যে সাহিল নুরকে ভালোবাসে।অনেক দিন ধরেই বিয়ের জন্য মেয়ে খুজছিলো বাবা মা তাই নুরকে দেখতে আশা।তাই খুব সহজেই সবটা মেনে নিয়েছে সাহিল।

এতোকিছুর পরেও রোহিত একবারের জন্যও নুরের হাত ছাড়েনি। বরং আরো শক্ত করে আগলে নিয়েছে। এবার নুরের খুব খারাপ লাগছে।বাড়িতে এতোগুলো মানুষের সামনে।

” হাতটা কি ছিড়ে ফেলবেন ছাড়ুন।

“একবার যখন ধরেইছি আর ছাড়ছি না।অনেক কষ্ট পেয়েছো আর না।

” এবার একটু বেশি বেশিই হচ্ছে না।

“একদম না।এবারই ঠিক হচ্ছে।

সবার অবসান ঘটিয়ে ছোয়া নুহাশ এলো সাথে সাহিল। সাহিল নিজের বাবা মাকে সবটা বুঝিয়ে বলেছে।সবার থেকে বিদায় নিয়ে চলেও গেছে।

” মিঃ রোহিত আপনি আপনার মা কে নিয়ে আসুন। আংটিবদল টা আজই সেরে ফেলি।

“কিন্তু আমি ওনাকে বিয়ে করতে চাই না।অন্য কারো ভালোবাসায় ভাগ বসাতে চাই না আমি।কারো দয়া নিয়েও বাঁচতে চাই না।

” নুর শোন।

নুহাশ যেতে নিলে ছোয়া আটকে দেয়।
“যাবেন না।এটা ওদের দুজনের ব্যাপার। ওরাই মিটিয়ে নিবে।আমরা বরং এদিকটায় সব মেনেজ করি রোহিত ঠিক নুরকে বুঝিয়ে নিয়ে আসবে।

এতোক্ষণ সব নিরব চোখে দেখছিলেন নাহার বেগম।এবার আর চুপ করে থাকতে পারলো না।

” তোমরা আমায় একটু বলবে এখানে কি হচ্ছে?এসবের মানে কি। আর ওই ছেলেটার সাথেই বা নুরের কি সম্পর্ক?

ছোয়া শাশুড়ি মাকে সব খুলে বললো।সব শুনে নাহার বেগম ভেঙ্গে পরেন।আদরের মেয়ের সাথে এতো কিছু হয়ে গেলো আর মা হয়ে তিনি মেয়ের মনের খবর রাখতে পারেন নি।মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়েও কিছুই বুঝতে পারে নি।তবে কি মা হিসেবে তিনি ব্যার্থ?

“এভাবে কেন ভাবছেন আম্মা।এখানে কারো কোনো হাত নেই।এই দেখুন না যদি রোহিত আগে আমার সাথে এই বিষয় টা নিয়ে কথা বলতো আমি কি এসব কিছু হতে দিতাম।বা আপনারা জানলে কি আজ নুরের এতো কিছু হতো? না তো।কিন্তু হয়ে গেছে আর যা হয়ে গেছে তা নিয়ে তো ভেবে লাভ নেই।আমরা বরং যাতে আর খারাপ কিছু না হয় সেটা করি।নুর রোহিতকে ছাড়া ভালো থাকতে পারবে না আম্মা।আর রোহিত ওর ভুল বুঝতে পেরেছে।ও নুরকে সত্যিই খুব ভালোবাসে।

রোহিত নুরের পিছন পিছন ওর রুম পর্যন্ত চলে এসেছে।নুর দরজা বন্ধ করার আগেই রোহিত আটকে দিলো।

” এই মেয়ে সমস্যা কি তোমার হ্যা? এতো করে বুঝাচ্ছি বুঝতে পারছো না?

রোহিত বুঝতে পারলো সে একটু বেশি রিয়েক্ট করছে তাই নিজেকে যথাসম্ভব শান্ত রাখলো।এবার নরম সুরেই বললো-

” আচ্ছা ঠিক আছে তুমি এখন রেগে আছো।চলো আমরা ঠান্ডা মাথায় একটু বসে কথা বলি? প্লিজ।

নুর কোনো কথা বললো না।চুপচাপ বিছানার একপাশে গিয়ে বসে পরলো।রোহিত একটা চেয়ার টেনে নুরের সামনে বসে আছে।মেয়েটা কাঁদছে।মুখটা অসম্ভব লাল হয়ে আছে।নাহার বেগমের গায়ের রঙ পেয়েছে মেয়েটা।একটু রেগে গেলে বা কান্না করলেই চোখমুখ লাল হয়ে যায় তার।রোহিত নুরের হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে নেয়।নুর ছাড়াতে গেলে রোহিত তা সফল হতে দেয় না।

“আমি জানি নুর তুমি কি ভাবছ।তুমি হয়তো ভাবছ ছোয়াকে না পেয়ে আমি তোমাকে চাইছি।ছোয়াকে আমি এখনো ভালোবাসি। কিন্তু এটা সত্যি নয়।হ্যাঁ আমি মানছি ছোয়াকে আমি পছন্দ করতাম।কিন্তু তখন আমি বুঝিনি যে মনের অজান্তে আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি।তুমি জানো না তোমাকে আমি অনেক খুজেছি।মিস করেছি খুব কিন্তু তা বাইরে প্রকাশ করিনি।সেদিন তোমাকে দেখে আমি নতুন করে তোমাকে নিয়ে ভেবেছি।ছোয়াকে নিয়েও ভেবেছি।কিন্তু তোমাকে নিয়ে ভাবতে যা ফিল করেছি ছোয়াকে নিয়ে তা ফিল করিনি।অনেক দেরি হলেও আমি বুঝতে পেরেছি যে ছোয়া নয় তুমিই আমার ভালোবাসার মানুষ। আমাকে শেষ বারের মতো একটা সুযোগ দাও। কথা দিচ্ছি আর কোনো কষ্ট পেতে দেবো না তোমায়। তোমার সাথে যা যা হয়েছে সবকিছুর জন্য আমি দায়ী। আমাকে একটু প্রায়শ্চিত্ত করতে দাও।

একাধারে কথা গুলো বলে থামল রোহিত।নুর তখনও চুপ।তা দেখে রোহিত হতাশ কিন্তু হাল ছাড়ল না।

” এখনো চুপ থাকবে কিছুই বলবে না?

“আপনি সত্যিই ছোয়া ভাবিকে ভালোবাসেন না!

” একেবারে বাসি না সেটা বললে ভুল হবে।কিন্তু তোমার মতো হয়তো না।আমাদের অনেকদিনের সম্পর্ক নুর একটু তো সময় লাগবে তাই না?

“ঠিক আছে আমি রাজি।কিন্তু ভাইয়া রাজি হলে তবেই।

” সত্যি বলছো! তোমার ভাইয়াকে ছোয়া রাজি করিয়ে নিবে।দরকার পরলে আমি তার এসিস্ট্যান্ট এর কাজ করবো তবুও তোমাকে আমার লাগবেই।

“আমার ভাইয়া অতটাও খারাপ নয়।যে ওকে চিনতে পারে না তার মতো বোকা আর কেউ নেই।

” আচ্ছা ঠিক আছে এবার নিচে চলো সবাই অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।

পারিবারিক ভাবে নুর রোহিতের আংটিবদল হয়ে গেলো।সবাই বিদায় নিয়ে চলে গেছে অনেক সময় হলো।নুর নিজের ঘরে ঘুমোচ্ছে। অনেক দিন একটু শান্তিতে ঘুমায় না সে।আজ যেন শান্তির ঘুম দিচ্ছে।নাহার বেগম মেয়ের পাশে বসে ছিলেন।সবেই নিজের ঘরে গেছেন।

তার মেয়েটার ওপর দিয়ে অনেক কিছু গেছে। আজ যদি রোহিত না আসতো, যদি নুরকে মেনে না নিতো।কি জানি নুরের কি হতো। ও তো মন থেকে বিয়েটা মেনে নিতে পারতো না।একটু একটু করে রোজ মারা যেত।

রাত গভীর। নুহাশ ছাদে বসে আছে।ছোয়া অপেক্ষা করছে নুহাশের।বিকেলের ঘটনার পর থেকে নুহাশ কেমন চুপচাপ হয়ে আছে।ভালো করে কথা বলছে না।

সারাক্ষণ যার ভয়ে সবাই গুটিয়ে থাকে।হুট করে তার গুটিয়ে যাওয়া ছোয়া মেনে নিতে পারছে না।তার চেয়ে তাকে সারাক্ষণ বকাবকি করলেই বেশি ভালো লাগে।লোকটা কি বেশিই কষ্ট পেয়েছে? এতো রাত হলো এখনো আসছে না কেন? ছাদে গিয়ে দেখবো একবার?
যেই ভাবা সেই কাজ।ছোয়া ছাদে গিয়ে দেখলো নুহাশ ছাদের এক কিনারায় চুপটি করে বসে আছে।

“এভাবে বসে আছেন যে ঘরে যাবেন না?

” তুমিও বসো না একটু আমার পাশে।

ছোয়া কিছুই বললো না।গুটি গুটি পায়ে নুহাশের পাশে গিয়ে বসলো।

“এখানে আর কতক্ষণ বসে থাকবেন।রাতের খাবারও তো খাননি।ঘরে চলুন খেয়ে একটু রেস্ট করবেন।
আপনি কি নুরের বিষয় নিয়ে নিজেকে দোষ দিচ্ছেন? কিন্তু এতে তো আপনার কোনো হাত নেই।

” দোষ দিচ্ছি না ভাবিছি।আমি হয়তো ওর ভাই হয়ে উঠতে পারিনি ছোয়া।যদি পারতাম অবশ্যই ওকে এতো কষ্ট পেতে হতো না।এতো গুলো বছর ও নিজের মধ্যে সব চেপে রেখেছে অথচ আমি বুঝতেই পারিনি।আমি আমার বোনের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবো না।ওর দিকে তাকালে নিজেকে কেমন অপরাধী মনে হয়।আমি হয়তো ওর নিজের ভাই হতে পারিনি।

“কি সব বলছেন আপনি।এখানে আপনার কোনো দোষ নেই নুহাশ।আর নিজের ভাই মানে কি বলতে চাইছেন আপনি?

” তুমি একটা সত্যি জানো না ছোয়া।তোমার থেকে লুকিয়েছি আমি।কিন্তু এখন মনে হচ্ছে কাজটা ঠিক হয়নি

“কি কথা?

” আমি এবাড়ির কেউ নই ছোয়া।বাবা আমাকে এক বৃষ্টির রাতে ডাস্টবিন থেকে কুরিয়ে পেয়েছিলেন।তখন আমি সবে তিন কি দুদিনের বাচ্চা।আমি জানি না আমার মা কে।আমার বাবা কে।তখন থেকেই আমি এই পরিবারের বড় ছেলের পরিচয়ে বেরে উঠি।বাবা আমাকে কখনোই পর ভাবেন নি।এমনকি আম্মাও আমাকে কখনও সেই নজরে দেখেনি।নুর আর আমাকে কখনো আলাদা ভাবেন নি।আম্মাকে আমি অনেক ভালোবাসি।আর নুর আমার অনেক আদরের।এই পরিবার আমাকে এতোটা দিয়েছে বিনিময়ে আমি কি দিলাম? না বাবাকে বাঁচাতে পেরেছি। না তার খুনিকে ধরতে পেরেছি।আর না নিজের বোনকে বুঝেছি।আর সবচেয়ে বড় অন্যায় করেছি তোমার সাথে।
একটু থামলো নুহাশ।আবার বলতে শুরু করলো-

আসলে একদিন শপিংমলে তোমাকে দেখেছিলাম। তখন থেকেই তোমার জন্য আলাদা একটা যায়গা আমার মনে তৈরি করেছিলাম।তারপর কাজের চাপে প্রায় ভুলেই যাই তোমার কথা।তারপর তুমি সেদিন বিপুলকে যখন মারলে তখন তোমাকে দেখে আমি আবার সেই পুরনো অনুভূতি খুজে পাই।তাই কোনো কিছু না ভেবেই তোমাকে বিয়ে করে ফেলি।
তোমাকে এভাবে বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল না আমার কিন্তু তোমার ব্যবহার আমাকে এমনটা করতে বাধ্য করেছে। যখন রোহিতের সাথে দেখা করতে তোমার হাস্যজ্বল মুখ দেখে আমার খুব কষ্ট হতো।তাই এমন ভাবে তোমায় বিয়ে করেছি ।তোমাকে আমার আসল পরিচয় অনেকবার বলতে যেয়েও বলতে পারিনি।যদি সত্যিটা জানার পর তুমি চলে যেতে যাও এই ভয়ে।আমায় ক্ষমা করে দাও ছোয়া।

বাবাকে খুব ভালোবাসতাম।বাবা যেদিন খুন হলো সেদিন কারোর জন্য অপেক্ষা করছিলো। বাবা খুব অস্থির ছিলো সেদিন।আমার একটা জরুরি কাজ চলে আসায় রাতেই যেতে হয়েছিলো।তারপর ফিরে আর বাবাকে পাইনি।বাবা বলেছিলো সব সময় আমার পাশে থাকবে।কিন্তু বাবা কথা রাখেনি।বাবার মৃত্যুর পর অনেক ভেঙ্গে পরি কিন্তু সেটা নুর বা আম্মাকে বুঝতে দিতাম না।

“আপনাকে কি করে বলি সেদিন আমার সাথেই বাবার দেখা করার কথা ছিলো কিন্তু আমি আসার আগেই কেউ তাকে মেরে ফেলে।

” আচ্ছা সব তো বলেই দিলাম।তুমি কি আমায় ছেড়ে চলে যাবে?

“এসব কথা এখন থাক।অনেক রাত হয়েছে ঘরে চলুন।

” তার মানে তুমি থাকবে না তাই না?যাবেই তো আমার তো কোনো পরিচয় নেই।হয়তো কারো পাপের ফল আমি।চলে যাও তুমি।আমি তোমায় আর বাধা দিবো না।

“সব নিজের মতো করে কেন ভাবছেন।শুনুন মিঃ নুহাশ আপনাকে ছেড়ে আমি কোথাও যাবো না।এবার চলুন।খবরদার আর নিজেকে এমন ভাববেন না।আপনি যাই হোন না কেন।না থাকুক আপনার আসল পরিচয়। আপনার একটাই পরিচয় আপনি এবাড়ির ছেলে, আমার স্বামী।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে