প্রিয়তার প্রহর পর্ব-০১

0
715

#প্রিয়তার_প্রহর
সূচনা পর্ব (১)
লেখনীতেঃ বৃষ্টি শেখ

আমার আব্বু আম্মুর মাঝে যখন বিবাহ বিচ্ছেদের সূচনা ঘটে তখন আমার বয়স ষোল, আর আমার ছোট্ট ভাইটার বয়স দুই। এত বড় একটা মেয়ে আর ছোট্ট, মিষ্টি একটা ছেলে থাকতেও আমার আম্মু পরকিয়ায় জড়িয়েছিল তারই অফিসের এক কলিগের সাথে। আব্বু বুঝে গিয়েছিল আম্মু আর তার নেই। প্রথম দিকে আব্বু আম্মুকে খুব বোঝানোর চেষ্টা করতো। কিন্তু ততদিনে আম্মু ভালোবেসে ফেলেছিল ওই লোককে। কোনোমতেই এ অবৈধ সম্পর্ক থেকে ফিরে আসতে চায়নি আম্মু। এজন্য আব্বু-আম্মুর মাঝে বনিবনা হচ্ছিল না কোনভাবেই। একসাথে থেকেও দুরত্ব ক্রমশ বাড়ছিল। তাই তো আব্বুও নিজের পথ বেছে নিয়ে অন্য নারীতে বিমোহিত হলো। দুজন যখন দু পথে পা বাড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করলো, তখন আমি আর আমার ভাই তাদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ালাম। তারা না পারল আমাদের ছাড়তে, না পারল আগলে নিতে। এছাড়া সমাজের মানুষ, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন কি বলবে তা ভেবে এই দম্পতি তাদের নতুন জীবনে পা রাখতে পারছিল না। তাইতো এখনো তারা এক সাথে বসবাস করছে, দুজনেই পরকিয়াতে নিজেদের ব্যস্ত রেখেছে। তাদের দুজনের ইচ্ছা খুব শীঘ্রই আমার বিয়ে হোক, আমার ভাইটাকে আব্বু তার নতুন স্ত্রীর কোলে দিক। হয়তো বা একসময় এ দম্পতি আলাদা হবে এবং দু দিকে ঘুরেও যাবে। কিন্তু আমার আর আমার ভাইয়ের কি হবে? সৎ মায়ের অত্যাচার মানতে পারবে ছেলেটা? ওর বয়স এখন পাঁচ আর আমার ঊনিশ। এতগুলো দিন ধরে একই ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। তিক্ততা বেড়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। শীঘ্রই বোধহয় আমরা আমাদের জীবনের বাঁকে হারিয়ে যাবো। উত্থান পতন ঘটবে নিশ্চয়ই।

২৬-০৮-২০২৩
(প্রিয়তা)

উক্ত কথাটুকু ডায়েরিতে লিখে সেই পৃষ্ঠায় বুকমার্ক রেখে ডায়েরিটি বন্ধ করলো প্রিয়তা। বাইরে বৃষ্টি পড়ছে। বাতাসের বেগের কারণে বৃষ্টির ছোট ছোট ফোঁটা জানালায় শব্দ করছে। জানালায় লেগে পানির কণা ছিটকে ঘরে এসে পড়ছে। প্রিয়তা মুগ্ধ দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করলো প্রকৃতি। হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করলো মাদকতাময় পৃথিবীতে। প্রিয়তা মনে করে একবার যে পৃথিবীর সুখ অনুভব করে সে আর পৃথিবী ছাড়তে চায় না। প্রিয়তার জীবনে সুখ নেই বছর দু-তিন হয়েছে। তবুও সে বাঁচতে চায় তার ভাইটার কারণে। বাড়িতে একা একা থাকে ছেলেটা। আব্বু আম্মু দুজনই যায় অফিসে, সে যায় ভার্সিটিতে। আগে বাড়ির কাজের মহিলার কাছে থাকতো আরহাম। তবে দুষ্টুমি করার কারনে বাচ্চাটার গায়ে কয়েকবার হাত তুলেছে বাড়িতে কর্মরত মহিলা। জানার পর থেকে থেকে প্রিয়তা আর আরহামকে কারো কাছে ছেড়ে দেয় না। মূলত সাহস পায় না।

ভাবনার জগতে হারিয়ে থাকা রমণীর ধ্যান ভাঙল। দুজন মানব-মানবীর কর্কশ আওয়াজে কান ভো ভো করলো প্রিয়তার। বিরক্তিতে মুখ থেকে শব্দ বের হলো। ছুটে আরহামের কাছে গেল সে। বাচ্চাটা নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে। বাতাসে পাতলা চুলগুলো উড়ছে বারবার। প্রিয়তার রাগ হলো খানিক। এত আওয়াজে তো ছেলেটার ঘুম ভেঙে যাবে। কোন কান্ডজ্ঞান নেই কারো?

প্রিয়তা নিজের ঘর ছেড়ে পা বাড়াল। পাশের ঘরের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইল খানিকক্ষণ। অতঃপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবনা চিন্তা করে দরজায় টোকা দিল। মুহুর্তেই ঘরের ভেতরে থাকা পুরুষ ও মহিলার কণ্ঠের আওয়াজ থেমে গেল। নিশ্চুপ হলো দুজনের কণ্ঠস্বর। প্রিয়তা নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে ঘরের ভিতরে ঢুকল। তির্যক চোখে নম্র কণ্ঠে বললো,

” বাচ্চাটা ঘুমোচ্ছে, রোজ রোজ একই কাহিনী করছো। ছেলেটা এমনিতেই খুব অশান্তিতে থাকে? তোমাদের মায়া হয় না ছেলেটার উপর? কেন এত শব্দ করছো?

প্রীতিলতা ক্ষেপে উঠল মেয়ের কথায়। ভ্রু কুঁচকে ফেলল। প্রিয়তার আগমনে যে সে বেজায় বিরক্ত হয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। গাম্ভীর্য বজায় রেখে বলে উঠল,

” ভালো না লাগলে বেরিয়ে যাও বাড়ি থেকে। থাকতে বলেছি এখানে? বয়স তো আঠারো পেরিয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক হয়েও বাবা-মায়ের ইনকামে চলছো। লজ্জা করে না তোমার? আবার বড় বড় কথা বলো।

প্রিয়তা হাসল। ভিষণ মজা পেল কথাটায়। কোনো মা তার মেয়েকে প্রাপ্তবয়স্ক হবার জন্য বাড়ি থেকে চলে যেতে বলে? জানা নেই প্রিয়তার। এমন ঘটনা শোনেওনি কখনো। একটু হেসে সে বললো,

” তোমার লজ্জা করল না এত বড় একটা মেয়ে থাকতেও অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হতে? যেখানে তুমি জানোই আরহাম বা আমাকে তোমার প্রেমিক কখনোই মেনে নিবে না, আমাদের সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি দিবে না।

প্রীতিলতা আরো ক্ষেপে গেল। দাঁতে দাঁত চেপে ধরল। দ্রুত এগিয়ে এসে চুলের মুঠি ধরে ফেলল প্রিয়তার। ব্যথায় কুঁকড়ে উঠল প্রিয়তা। আপনা আপনি চুলে হাত গেল তার। ব্যথায় ঝিমঝিম করে উঠলো মাথাটা। মস্তিষ্ক অচল হয়ে এলো। তবুও কাঁদল না সে, অভিব্যক্তি দেখাল না। মুখ দিয়ে কোনো শব্দ করল না। চোখ বড় করে তাকিয়ে রইল পাষণ্ড মায়ের দিকে। প্রীতিলতা উচ্চস্বরে বলল,

” পার্সোনাল লাইফে এন্টাফেয়ার করার সাহস তোমাকে কে দিয়েছে? ঠিকমতো খেতে দিচ্ছি, শুতে দিচ্ছি। এমনকি পড়াশোনার খরচ ও বহন করছি। আর কত চাই? বেরিয়ে যাও বাড়ি থেকে। তোমাদের জন্যই আমাদের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছে। তোমরা না থাকলে এতদিনে আমাদের মাঝে কোন সম্পর্ক থাকতো না। আর সম্পর্ক না থাকলে ঝগড়াও হতো না।

” আমি যা চাই তা তুমি আমায় কখনোই দিতে পারবে না। ঠিকই চলে যাবো আমি। তখন চাইলেও ফেরাতে পারবে না।

প্রীতিলতা ছেড়ে দিল মেয়েকে। পাশের সোফায় বসে পড়ল। আরিফ হোসাইন সবটা দেখেও চুপ রইল। তার প্রেমিকা কখনোই প্রিয়তাকে মানবে না। যদিও মহিলা(আরিফের প্রেমিকা) অনেক বিচার বিশ্লেষণের পর আরহামকে মেনে নিয়েছে। কিন্তু প্রিয়তার একটা ব্যবস্থা না হলে কোনকিছুই ঠিক হবে না। প্রীতিলতা আহমেদ আর আরিফ হোসাইনের বয়স অনেক হলেও শারীরিক গঠন নিয়ন্ত্রণ করে চলে দুজনেই। দুজনকেই খুব কম বয়সী লাগে। হুট করে দেখে কেউ বলতে পারবে না দুজনের এত বড় একটা মেয়ে আর ছেলে আছে। এত সৌন্দর্যের কারণেই হয়তো এ বয়সে দুজনের নতুন প্রেমে পড়ার আনন্দ উপভোগ করতে ইচ্ছে হয়েছে।।

প্রিয়তা নিজের ঘরে ফিরল। আলগোছে সবার আড়ালে চোখ মুছে নিল সে। ঘরের বিছানার দিকে তাকিয়ে অবাক হলো খানিক। আরহাম ইতিমধ্যেই ঘুম থেকে উঠে পড়েছে। বিছানার ঠিক মাঝখানে আড়াআড়ি পা ভাঁজ করে বসে আছে সে। আপুকে দেখেই মুখে হাসি ফুটল আরহামের। প্রিয়তা এগিয়ে এসে আরহামের গালে হাত রাখল। আরহাম ভূমিষ্ঠ হয়েছিল সঠিক সময়ের আগেই। দশমাসের বদলে সাত মাস আঠারো দিন রাতে জন্ম হয়েছিল ছেলেটার। দীর্ঘদিন হাসপাতালে ছিল ছেলেটা। এরপর একটু পুষ্ট হবার পর বাড়িতে আনা হয়েছিল। এজন্য পাঁচ বছর হলেও আরহামকে দেখে মনে হয় বয়স চার বছরের অধিক হবে না। আরহামের মায়া মায়া মুখ, চিকন নাক, বড় বড় গোলাকৃতির চোখ, ফোলা ফোলা গাল দেখে যে কেউ বাচ্চাটাকে ভালোবেসে ফেলবে। অথচ আরহামের সবচেয়ে আপন তার পিতামাতাই তাকে সহ্য করতে পারে না। আরিফ হোসাইনের ভবিষ্যত স্ত্রী চায় প্রিয়তাকে বিয়ে দিয়ে দিতে। আরহামকে প্রথমে মেনে নিতে চাইতো না মহিলা। আরিফকে বলেছিল ছেলেটাকে অন্য কাউকে দিয়ে দিয়ে। কিন্তু সন্তানের মায়া একটু হলেও ছিল বলে আরিফ অনুরোধ করে আরহামকে নিজের কাছে রাখার। সব শেষে রাজি হয় সেই মহিলা। এখন বিয়ের প্রস্তুতি মনে মনে নিচ্ছে এরা। এ ঘটনায় প্রিয়তার বিয়ে নিয়ে বেশ দৌড়াদৌড়ি করছে আরিফ। প্রিয়তা যাবে কোথায়? প্রীতিলতা কস্মিনকালেও তাকে নিজের নতুন সংসারে জড়াবে না। এ মুহুর্তে ভাইকে রেখে বিয়েও করবে না প্রিয়তা।

প্রিয়তা অতসব ভাবল না। আলতো করে গাল টানল ভাইয়ের। মিষ্টি হেসে কাঁথা ভাঁজ করতে করতে বললো,
“একটু আগেই ঘুমোলে। এখনই উঠে গেলে?

আরহাম পিটপিট করে তাকাল। বললো,
” শব্দ লাগে। ঘুম হয় না।

প্রিয়তা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। মনটা খারাপ হলো তার। রোজ রোজ এক অশান্তি আর ভালো লাগে না। আরহাম ব্যতিত আর কারো প্রতিই এখন টান অনুভব করে না প্রিয়তা। বাবা মায়ের প্রতি প্রচন্ড রাগ হয়। দুজনের সংসারের প্রতি হেয়ালিপনা না থাকলে আজ তাদের সুখী একটা পরিবার হতো। একটা সুস্থ পরিবার পেত আরহাম।

প্রিয়তা মন খারাপের দিকটা ধরতে দিল না আরহামকে। বিছানায় বসে হাত বাড়িয়ে ছেলেটাকে কোলে নিল। শব্দ করে চুমু খেয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। বললো,

” আম্মু খুব রেগে আছে। যাও তাকে আদর দিয়ে আসো।

আরহাম নড়ল না। বিড়াল ছানার মতো গুটিয়ে রইল ফোনের বাহুডোরে। আরো বোধহয় আঁকড়ে ধরলো প্রিয়তার বাহু। বুকে মুখ গুঁজে বসে রইল। আরহামকে উঠতে না দেখে আবার ও একই কথা বললো প্রিয়তা। আরহাম আতঙ্কিত কণ্ঠে মিনমিনিয়ে বললো,

” আম্মু বকে। যাবো না। এখানেই থাকি।

প্রিয়তার কপালে ভাঁজ পড়ল। আরহাম ও আজ বুঝতে পারছে তার মা তাকে ভালোবাসছে না। আরিফ হাসান যত দ্রত সম্ভব প্রিয়তাকে বিয়ে দিয়ে তাড়িয়ে দিবে। প্রীতিলতা তার প্রেমিকার সাথে ঘর বাঁধবে। আরহাম নতুন মায়ের সাথে থাকতেই পারবে না। পড়ালেখায় প্রিয়তা যথেষ্ট মেধাবি। এইচ এস সি তে একটুর জন্য গোল্ডেন মিস করেছে। জীবন নিয়ে অনেক ভাবনা তার। এখন আকস্মিক বিয়ে মানে স্বপ্নের বিসর্জন, ভাইয়ের প্রতি অত্যাচার।
প্রিয়তা বুঝল এই বাড়ি ছাড়ার সময় এসেছে। বাবা মায়ের নতুন জীবনে সে কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ও সরে গেলেই সকলের শান্তি।
প্রিয়তা স্থির কণ্ঠে গাম্ভীর্য এনে আরহামের দিকে তাকিয়ে বললো,
“চল ভাই, আমরা দুরে কোথাও হারিয়ে যাই। যেখানে গেলে বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের যন্ত্রণা আমাদের ছুঁতে পারবে না”।

ভাইকে জড়িয়ে ধরল প্রিয়তা। স্বভাবগত ভাবে আরহাম ছেলেটা ভারী চঞ্চল। ছোট্ট, ফর্সা মুখটা গরমে লাল হয়ে গিয়েছে আরহামের। নরম নরম হাতে বোনের গলা জড়িয়ে ধরল সে। প্রিয়তার কথা শুনে বাচ্চাটা কি বুঝলো কে জানে? ঘাড় কাত করে হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়ল। প্রিয়তা ছোট ভাইয়ের এই না বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভঙ্গি দেখে নরম হয়ে উঠল। তপ্ত নোনা পানি গাল বেয়ে গড়াল। জীবনের এই জটিলতা বাচ্চাটা কিভাবে সামলাবে? ভাবতেই কম্পিত হলো প্রিয়তার হৃদয়। ছোট্ট বাচ্চাটার গালে গাল রাখল সে। ভাইয়ের গালে শব্দ করে চুমু খেল। ছেলেটা আদুরে ভঙ্গিতে পানি মুছে দিয়ে বললো,

” কাঁদে না আপু। আমাদের একদিন সবাই ভালোবাসবে।

প্রিয়তা হাসল। আরহামকে বিছানায় বসিয়ে ততক্ষণাৎ বালিশের নিচে রাখা ফোনটা তুলে নিল হাতে। চোখের পানি মুছে ফেলল। নির্দিষ্ট একটা নাম্বারে ফোন করল। প্রথমে ওপাশের লোকটা ফোন ধরল না ফোন। আবার ও কল করায় কেটে দিল জলদি। সাথে সাথেই কল ব্যাক করল। তা দেখে হাসল প্রিয়তা। ছেলেটা এমনই। কখনো কল ধরবে না। নিজে কল দিবে।
” কিরে, ফোন ধরিস না কেন? কটা বাজে জানিস? এখনো ঘুমোচ্ছিস? বললো প্রিয়তা।

ওপাশে থাকা ছেলেটির নাম তন্ময়। সাদামাটা এই ছেলেটা হিন্দু ধর্মের। কলেজের দ্বিতীয় দিন থেকে তন্ময়ের সাথে বন্ধুত্ব প্রিয়তার। সরল আর সাধাসিধা এই ছেলেটি সবসময় প্রিয়তার পাশে থাকে। ছেলেটা বোধহয় ঘুমিয়েছিল। হাই তুলে ঘুম ঘুম কণ্ঠে তন্ময় বলে উঠল, “সারা রাত গেম খেলেছি। এখন সেই ঘুম পাচ্ছে। কি হয়েছে? এত সকালে কল করলি”?

প্রিয়তা উপলব্ধি করল তন্ময়কে সবটা বলতে উদ্যোত হতে একটুও সংকোচ বোধ হচ্ছে না। বরং পুরো ঘটনা বিশ্লেষণ করতে ইচ্ছে করছে। আলতো হেসে সাবলিল নারী কণ্ঠে প্রিয়তা বললো,
” তুই যে বাড়ি থাকিস ওই বাড়িতে ঘর খালি আছে রে?

তন্ময় বিস্মিত হলো। ঘুম ঘুম ভাব কেটে গেল মুহুর্তেই। বললো, “কেন রে? ঘর খালি দিয়ে তুই কি করবি? তোর বাপের তো বিরাট বড় বাড়ি”।

” বড় বাড়ি দিয়ে কি করবো? বাড়িতে তো সুখ নেই, ভালোবাসা নেই। নম্র কণ্ঠে বললো প্রিয়তা।

আবার ও শ্বাস ফেলে বললো,
“তুই সবটাই জানিস তন্ময়। আমাকে এবার নিজের পথ নিজেকে খুঁজতে হবে। আমি এ বাড়িতে আরহামকে আর রাখবো না। বাবা-মায়ের এমন বিচ্ছেদ ছেলেটার ব্যক্তিজীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। আমি আর ছোট নই। নিজের ব্যবস্থা নিজে করতে পারবো। কিন্তু আরহামের একটা সুস্থ পরিবেশ দরকার। স্বাধীনভাবে বাঁচার জন্য,শেখার জন্য পরিবেশ বিষয়য়টা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এই অসুস্থ পরিবেশ ওকে নিঃস্ব করে দিবে।

তন্ময় মনোযোগ দিয়ে অবলোকন করলো প্রিয়তার কথাগুলো। মেয়েটার মানসিকভাবে ভেঙে পরা স্বাভাবিক। আরহামকে প্রিয়তা বড্ড বেশি ভালোবাসে। সে না হয় বিয়ে করে চলে যাবে, কিন্তু আরহামের কি হবে? তন্ময় ও দুশ্চিন্তায় পরলো। বললো, ” কি করতে চাইছিস”?

” আমার জমানো কিছু টাকা আছে। সেসব নিয়ে আপাতত বাড়ি ছাড়তে চাইছি। বাকিটা পরে দেখা যাবে। বললো প্রিয়তা।

” আমি যে বাসায় থাকি এখানকার অনেক নিয়ম কানুন আছে। চিৎকার-চেঁচামেচি করা যাবে না, রান্না করা যাবে না, ময়লা ফেলার জন্য আলাদা বিল, লাইট বেশিক্ষণ জ্বালিয়ে রাখা যাবে না, আরো কত কি। আরহামকে নিয়ে তো তুই এসব মানতে পারবি না। এছাড়া ব্যাচেলর বাড়িতে আরহামকে নিয়ে থাকা যাবে না। ব্যাচমেটদের সাথে একা থাকতে হবে।

” তাহলে অন্য বাসা খুঁজতে হবে। তবুও এই বাড়িতে থাকবো না আর।

” আমি তোর পাশে আছি প্রিয়তা। তবে বাড়ি খোঁজার সময় আমি তোর সাথে যাবো না। একেকজন একেক কথা বলবে। তাতে আমার যায় না আসলেও তোর জন্য ব্যাপারটা ক্ষতিকর। এত বড় পৃথিবীতে একা কিভাবে থাকবি তুই? একটা মেয়ের সাথে তার বন্ধু ঘর খুঁজতে গেলে সবার চোখে তা দৃষ্টিকটু দেখাবে। তাই যাওয়া উচিত হবে না। কিন্তু তোর যদি এতে কোন সমস্যা না হয় তাহলে আমি যাবো।

” না না, তোকে আমি নিবো না। বাড়ি থেকে বের হচ্ছি। তোকে জানালাম। তুই ছাড়া আর বলার মতো কে আছে আমার?

“শোন, কোন সমস্যায় পরলে ততক্ষণাৎ আমাকে জানাবি। আর্থিক কোন সাহায্য দরকার হলে বলবি।

হাসল প্রিয়তা। কল কাটল। লাগেজ টা গুছিয়ে নিল। পরিপাটি বড় একটা সুটকেস খুলে সেখান থেকে কিছু টাকা বের করল। আরহামকে একটা ঢিলেঢালা শার্ট আর হাঁটু অবধি প্যান্ট পরিয়ে দিল। নিজেও একটা সুতির ফ্রক গায়ে জড়িয়ে নিল। পায়ে ম্যাচিং করে পার্পেল রঙের কেস পরে নিল। পিঠে ষোল ইঞ্চির একটা ব্যাগ ঝুলিয়ে রাখল। আরহাম শুধু পিটপিট করে তাকিয়ে রইল আপুর দিকে। তা দেখে মুচকি হাসল প্রিয়তা। শেষবারের মত জিজ্ঞেস করলো, “তুমি আমার সাথে যাবে? নাকি বাবা-মায়ের সাথে এখানে থাকবে”?

আরহাম কিছু ভাবল না। আলতো হাতে জড়িয়ে ধরলো প্রিয়তার কাঁধ। বললো, ” তোমার সাথে যাবো”।

লাগেজ নিয়ে ঘর থেকে বের হতেই প্রীতিলতা আড়চোখে দেখল মেয়েকে। তাচ্ছিল্যের হাসি হাসল সে। বোঝাতে চাইল তারা ছাড়া প্রিয়তার আর কোন গতি নেই। ঘুরেফিরে এখানেই আসতে হবে প্রিয়তাকে। কিন্তু প্রিয়তা এই ভঙ্গি দেখে মোটেই দুঃখ পেল না। আরহামের দিকে চেয়ে হাসিমুখে বের হলো ঘর থেকে। যাওয়ার আগে আরিফ হোসাইনের দিকে চেয়ে বললো, ” “আমাদের জীবনটা একটা যুদ্ধক্ষেত্র আব্বু। এ যুদ্ধক্ষেত্রে সবসময় সংগ্রাম করে যেতে হয়। তুমি এই যুদ্ধে হেরে গিয়েছো। আশা করি তোমার পরবর্তী জীবন তোমাকে সুখী করবে”।

হেরে যাওয়ার কথাটা বুঝল না আরিফ। চলে যেতেও নিষেধ করলো না প্রিয়তাকে। হয়তো সেও ভাবে প্রিয়তা ঠিকই ফিরে আসবে। এত বড় ভূপৃষ্ঠের আনাচে-কানাচে কোথাও টিকে থাকতে পারবে না প্রিয়তা। এতই কি সহজ জীবন?

________________
আকাশ আজ মেঘলা। মৃদু বাতাস বইছে। ক্ষণে ক্ষণে বাতাসের ঝাপটায় কেঁপে উঠছে আরহাম। নতুন এক লক্ষ্যে এগোনোর জন্য প্রতি পদে পদে সংগ্রাম করার মানসিকতা থাকতে হয়। প্রিয়তার তা থাকার কথা নয়। তবুও এক নতুন জীবনের প্রতি আগ্রহ জন্মেছে প্রিয়তার।
প্রিয়তা এমন একটা বাড়ি খুঁজছে যেখানে ভাড়াটিয়ারা তাদের পরিবার নিয়ে থাকে। তবে দেখা গেল কোনো বাড়িতে ঘর ভাড়া বেশি, কোনোটায় একা একটা মেয়েকে ঘর ভাড়া দিবে না, কোনো বাড়ির পরিবেশ আবার ভালো না। প্রিয়তা সবাইকে বলেছে আরহামই তার পরিবার। কিন্তু সবাই প্রিয়তার দিকটা বুঝতে নারাজ। পরিবার অর্থাৎ মা-বাবাকে নিয়ে আসতে হবে। নইলে ঘর ভাড়া দেওয়া হবে না।

প্রিয়তা আরহামকে কোলে নিল। সিঁথি কেটে নেওয়া চুলের আগা গোলাপি রঙ করা। সামনের চুলগুলোও ভ্রু অবধি কেটেছে প্রিয়তা। ফ্রক হাঁটু অবধি নেমে এসেছে। পিঠের ব্যাগটা ভালোমতো ধরে প্রিয়তা ফুটপাতের একটি দোকানে এসে দাঁড়াল। দোকানের সামনে ঝুলিয়ে রাখা রুটি আর কলা কিনে আরহামের হাতে দিয়ে রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে রইল। ছোট হাতে রুটি ছিঁড়ে কলা দিয়ে রুটিটুকু খেয়ে ফেলল আরহাম। লাগেজে থাকা পানির বোতল বের করে খেয়ে তৃপ্তি পেল খানিক। অতঃপর কোল থেকে নেমে প্রিয়তার হাত ধরে হাঁটতে লাগল। দু ভাইবোনের হাঁটার অভ্যেস নেই। বাস থেকে সিলেটের মৌলভিবাজারে নেমে আধঘন্টা হাঁটতেই ক্লান্ত হয়ে গেছে দুজন। আগে মায়ের গাড়ি চড়ে অতদুরে ভার্সিটিতে যেত প্রিয়তা। এখন ভার্সিটি আরো কাছে হলো ভেবে ভালো লাগলো প্রিয়তার। দু তিন বাড়ি ঘুরেও ঘরের ব্যবস্থা হয়নি। সন্ধ্যে নেমে এসেছে। প্রিয়তা ঠিক করল ঘর ভাড়া বেশি চাইলেও শীঘ্রই এক বাড়িতে উঠবে তারা। কিন্তু মেঘলা আকাশ তাতে সায় জানাল না। ঝুমঝুমিয়ে বড় বড় ফোঁটায় রাস্তা ভিজিয়ে দিল মুহুর্তেই। তাড়াহুড়ো করে আরহামকে নিয়ে এক রেস্টুরেন্টের সামনে এসে দাঁড়াল প্রিয়তা। প্রকৃতির প্রতি ভিষণ রাগ হলো তার। এখন ভিজে ভিজে বাড়ি খুঁজতে হবে নাকি? নিজের বোকামিতে নিজেই বিরক্ত হলো প্রিয়তা। আগে থেকেই ঘর ঠিক করে রাখা উচিত ছিল। হুট করে মন মতো বাড়ি পাওয়া বেশ কঠিন এটা বোঝা উচিত ছিল।

সন্ধ্যা বেলার উত্তাল বাতাস, বৃষ্টির কণার তুমুল ঝংকারে মুগ্ধ হলো প্রিয়তা। ভাইকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে বসে পরল বাইরের বেঞ্চে। প্রকৃতি উপভোগ করতে লাগল দু জন। আরহাম চোখের পলক ফেলল বারবার। একটু ঠান্ডা লাগতেই আটশাট হয়ে বোনের কোলে বসে রইল। কয়েক মুহুর্ত কাটতেই হুড়মুড় করে একটি বাইক এসে থামল রেস্টুরেন্টের সামনে। বাইকের মালিক বাইকটাকে কোনরকমে রাস্তার পাশে রেখে রেস্টুরেন্টের বারান্দায় এসে দাঁড়াল। গায়ে তার পুলিশের ইউনিফর্ম। নেমপ্লেটে মোটা আর বাংলা মাঝারি অক্ষরে লেখা আজওয়াদ ইশতিয়াক। লম্বা আর পেটানো শরীরের পুলিশের মুখের গড়ন অমায়িক। চিকন, সরু নাকে পানির কণা বিদ্যমান। প্রিয়তা দৃঢ় তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে নামটা আওড়াল মনে মনে। লোকটা ফোনটাকে শুকোনোর জন্য ব্যস্ত হয়ে হুট বসে পড়ল প্রিয়তার পাশে। প্যান্টের পকেটে থাকা রুমাল দিয়ে ফোন মুছল। অনাকাঙিক্ষত বৃষ্টিতে লোকটা হুশজ্ঞান হারিয়েছে বলে মনে হলো প্রিয়তার।
পুলিশ হয়ে অনুমতি ব্যতিত একটা মেয়ের পাশে বসে পড়ল? এটা কেমন স্বভাব?প্রিয়তা আরহামের দিকে একবার তাকিয়ে পাশে বসা সুদর্শন পুলিশের দিকে তাকাল। বললো,
” হেই, পুলিশ ম্যান। পাশে বসার জন্য অনুমতি চাইতে হয়। জানেন না?

নারী কণ্ঠ আলাদা রকমের সুন্দর হয়। চিকন নম্র সুরে উক্ত বাক্যটি বলা মেয়েটার কথা কুহরে পৌঁছাল আজওয়াদের। ঘাড় কাত করে মেয়েটির দিকে তাকাল আজওয়াদ। ব্যক্তিগত ভাবে পুলিশে কর্মরত সকলেই আজওয়াদের সাথে তেমন ভাবে কথা বলে না। আসলে হাজার কথার পরিপ্রেক্ষিতে একটা উত্তর সবার জন্য বিরক্তিকর বলেই এমনটা করে সকলে। এই মেয়ে এত অচেনা হয়েও প্রথম সাক্ষাতে পুলিশ অফিসারকে এভাবে কথা শোনাবে এ যেন এক বিস্ময়। কথার মর্মার্থ বুঝতে পেরে আরো অবাক হলো আজওয়াদ। চুলের পানি কপাল বেয়ে গড়াল তার। খানিক গম্ভীর পুরুষালি কণ্ঠে আজওয়াদ বললো, ” আমি আপনার গা ঘেঁষে বসিনি। অনেকটা ডিসট্যান্স আছে। এখানে আপনি যেমন আশ্রয়ের জন্য এসেছেন, আমিও তেমনি আশ্রয়ের জন্যই এসেছি। বারান্দার এই বেঞ্চ সবার জন্য উন্মুক্ত। তাই অনুমতি দরকার হবে বলে মনে হয়নি।

থতমত খেল প্রিয়তা। লোকটার গম্ভীরতা দেখে চুপসে গেল। ঠিকই তো! এই বেঞ্চটা সবার জন্য উন্মুক্ত। এছাড়া আজওয়াদ দুরত্ব রেখেই বসেছে। পুলিশের সাথে অনেক ভেবে চিন্তে কথা বলা উচিত। নইলে বিনা অপরাধে কখন যে থানায় টেনে নিয়ে যাবে তার কোন টাইম টেবিল নেই। প্রিয়তা ওষ্ঠজোড়া চেপে ধরল। জিভ দিয়ে ওষ্ঠদ্বয় ভিজিয়ে নিল। আরহামের পাতলা চুলে বিলি কেটে অস্বস্তি নিয়ে পুলিশের উদ্দেশ্যে বললো ” আমি ভেবেছিলাম আপনি অনুমতি নেবেন। পুলিশ হিসেবে…

কথাটুকু বলতে দিল না আজওয়াদ। বললো,” পুলিশের নিয়মনীতির মাঝে এটা নেইই। চেক করতে পারেন”।

প্রিয়তার মনে হলো লোকটার সাথে তর্কে না গিয়ে সাহায্য করার কথা বলা উচিত। সন্ধ্যে নেমেছে অনেকক্ষণ। অন্ধকার হয়ে আছে আশপাশ। বারান্দার বাল্পটি আলো দিচ্ছে রাস্তায়। বৃষ্টির বেগ কমেছে। কোলাহল বাড়তে শুরু করেছে। রাস্তার লোকজন আড়চোখে দেখছে প্রিয়তাকে। এলাকায় নতুন মানুষ দেখলে সবাই এভাবে তাকিয়ে থাকে বোধহয়। কোথাও উঠতে না পারলে লোকজন বাজে ভাববে তাকে। এ মুহূর্তে পুলিশ লোকটাকে ভরসা করাই উত্তম বলে মনে হলো প্রিয়তার। সহসা বোকা হেসে সে বললো, ” আসলে আমি এ এলাকায় নতুন। আশেপাশে কোন ভালো বাড়ি বা হোস্টেল আছে? আমি ভালো ঘর খুঁজে পাচ্ছি না। আপনি কি আমায় সাহায্য করবেন?

আজওয়াদ ঘাড় কাত করে প্রিয়তাকে দেখল। আশপাশে নজর বুলিয়ে প্রিয়তাকে পর্যবেক্ষণ করলো। খানিক বিরক্তির সহিত বললো,
” যে এলাকায় এসেছেন সেই এলাকা সম্পর্কে আগে থেকে জেনে নেওয়া প্রয়োজন ছিল আপনার। আশেপাশে হোস্টেল নেই। তবে ভালো বাড়ি পাওয়া যেতে পারে।

পিনপিন নীরবতা চললো কিছুক্ষণ। পুরোপুরি বৃষ্টির ফোঁটা উধাও হলে আজওয়াদ উঠলো বেঞ্চ থেকে। বাইকের চাবি আঙ্গুলে নিয়ে ঘোরাতে ঘোরাতে হেঁটে গেল সামনে। প্রিয়তার দিকে না তাকিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বললো ” আমার সাথে আসুন।

প্রিয়তা লাগেজ আর আরহামকে নিয়ে উঠতে পারল না। আরহাম ঘুমিয়ে গেছে। ভারী না হওয়ার পরেও হাত পা ছেড়ে দেওয়ায় ছেলেটাকে সামলাতে কষ্ট হলো প্রিয়তার। তার উপর লাগেজ টানতেই হাতে চিনচিন ব্যথা অনুভব করল। পেটে মোচড় দিয়ে উঠল। অনেকক্ষণ বসে থাকায় উঠতে গিয়ে চোখে সব অন্ধকার দেখতে পেল। মাথা কেমন ঝিমঝিম করে উঠল। আরহামকে ভালোভাবে বুকে জড়িয়ে নিল প্রিয়তা। আজওয়াদ বাইক রেখেই হেঁটে যাচ্ছে। প্রিয়তা পেছনে আসছে কিনা তা দেখার প্রয়োজন বোধ করছে না লোকটা। প্রিয়তা ডাক দিল,
” শুনুন।

আজওয়াদ থেমে পেছনে তাকাল। কৌতুহল নিয়ে তাকিয়ে রইল প্রিয়তার দিকে। প্রিয়তা কোনরুপ অস্বস্তি ছাড়াই বললো, “একটু লাগেজ টা নিয়ে যান না। বাচ্চাটাকে নিয়ে লাগেজ টানতে হিমশিম খাচ্ছি”।

আজওয়াদ পিছু ফিরে প্রিয়তার সামনে এসে লাগেজ হাতে নিল। মৃদু হাওয়ায় প্রিয়তার কপালে থাকা চুলগুলো উড়ছে। শর্ট ফ্রক হওয়ায় পা উন্মুক্ত হয়ে আছে। যে কেউ দেখলে বুঝে যাবে প্রিয়তা ধনী পরিবারের মেয়ে। পোশাকআসাক পর্যবেক্ষণ করলেই জানা যাবে প্রিয়তার আর্থিক অবস্থা ভালো, কোন উচ্চবিত্ত পরিবার থেকে এসেছে। কিন্তু নতুন এলাকায় চার-পাঁচ বছরের ছেলে নিয়ে ঘর খুঁজতে এসেছে কেন? সন্দেহ হলো আজওয়াদ-এর। পরক্ষণেই বোধ হলো মানুষের জীবনে অনেক ধরনের প্রতিবন্ধকতা আসে। বিত্তশালী লোকদের কখনো কখনো হুট করে রাস্তায় নামতে হয়। এই মেয়েটার জীবনেও বোধহয় কোন জটিলতা রয়েছে।

______________________

চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে