প্রতারক part-8

0
1460

প্রতারক part-8
#Roja_islam

ক্লাস করে ভার্সিটি থেকে বেরিয়েই দেখি রাহুল উনার কার এর সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছেন । পড়নে সব ব্ল্যাক ছেলেটার । ব্ল্যাক টি শার্ট এর উপর ব্ল্যাক শার্ট। ব্ল্যাক পেন্ট, ব্লাক সু, সাথে ব্ল্যাক ওয়াচ সিল্কি চুল গুলা বাঁকা হয়ে কপালে পড়ে আছে। কিন্তু ব্যাপার টা অদ্ভুত আমি যতবার উনাকে দেখেছি এই ব্ল্যাক পরিহিত ই দেখেছি! ব্যাটার কি ব্ল্যাক ছাড়া আর কিছু নেই পরার মতো?? যাইহোক এই অসভ্য ছেলে হেব্বি ভাব নিয়ে চোখে সানগ্লাস পড়ে দাঁড়িয়ে কেনো??কে জানে তবে হ্যান্ডছাম লাগছে? ফিসফিস শুনে এক্টু পাশে তাকাতেই দেখলাম এই অসভ্য হ্যান্ডছাম টাকে মেয়েরা চোখদিয়ে গিলে খাচ্ছে। পাড়লে উনার কোলে গিয়ে বসে সেল্ফি তুলতো। কিন্তু ওরা তো আর জানে না এই ছেলে কত্ত লুচু আর অসভ্য!! আমি ভার্সিটির গেইটে দাঁড়িয়ে ভাবছি এই অসভ্যটার কাছে যাবো নাকি না। সে কথা বলায় বিজি থাকায় আমায় দেখেনি। তার দিকে তাকিয়ে । অনেক ভেবে চিন্তে ঠিক করলাম না। আজ ব্যাটাকে একটা থ্যাংকস দিতেই হয়!! কিন্তু পরক্ষনেই ঐদিনের ওয়াশরুমের কথা মনে পড়তেইই আমি বাসার পথে হাটা দিলাম। কোনো দরকার নেই এই ছেলেকে থ্যাংকস বলার না জানি কি করে বসে। ভাবতেই ভয় করে এই ছেলে লনির থেকে কম খারাপ না!!
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন


ওহ লনি লনি কই?? সকালে বলেছে মেরেফেলেছে সত্যি কি তাই!! কিভাবে জানবো কি করেছে যদি জানতে হয় তো এই ছেলে কাছে যেতে হবে কিন্তু আমার ভালোলাগে না অসভ্য টাকে…….!ভাবনার মধ্যেই। কেউ পিছন থেকে হর্ন দিয়ে কান জ্বালাফালা করে দিচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে ভাবনা বাদ দিয়ে পিছন ফিরে দেখি। রাহুল রাগী ফেইস নিয়ে তাকিয়ে আছে। উফফ সেই তীক্ষ্ণ চাহনি দেখেই শুকনো ঢোক গিললাম। রাহুল গাড়ী আমার পাশে ব্রেক করে নেমে আমায় টেনে গাড়ীতে বসিয়ে দিলো! উনার ফেইস দেখে আর কিছু বলতে পারলাম না আমি।চুপচাপ বসে আছি বারবার হাত কচলাচ্ছি। রাহুল ড্রাইভ করছে ব্যস্ত। গাড়ী আপন গতিতে চলছে।
.
— হাত ছিঁড়ে ফেলার প্লান আছে??
— মানে??
— মানে এভাবে হাত কচলাচ্ছো কেনো??
— আমরা কই যাচ্ছি। তা জিজ্ঞেস করতে??
— জিজ্ঞেস করতে হলে হাত কচলাতে হয়?
.
বলেই উনি ড্রাইভ করতে করতে হেসে যাচ্ছেন মাঝেমাঝে একহাতে চুল ঠিক করছেন। আমি অবাক হয়ে উনার হাসি দেখছি। অদ্ভুত সুন্দর হাসি যেকেউ মুগ্ধ হবে এই হাসিতে। বাট কে বলবে এই ছেলে এতো অসভ্য। আমার তাকিয়ে থাকা দেখে উনি হাসি থামিয়ে বাঁকা হেসে বলে উঠলেন।
— এভাবে তাকিয়ে থাকলে প্রেমে পড়ে যাবে কিন্তু!!
.
আমি উনার কথায় থতমত খেয়ে চরম অস্বস্তিতে পড়ে আবার সেই কাশী শুরু হয়ে গেলো আমার।লজ্জায় শেষ আমি জালানার দিকে তাকিয়ে রইলাম। আড়চোখে দেখছি রাহুল বাঁকা হাসছে। এই বাঁকা হাসিটা দেখলে আমার গাঁ পিত্তি জ্বলে যায়। মহূর্তে লজ্জা অস্বস্তি গিয়ে একরাশ রাগ উঠে গেলো মাথায়। তাই কিছুটা রেগে বললাম।
— আমরা কই যাচ্ছি বলুন?
–……..!
— কথায় নিয়ে যাচ্ছেন বলছেন না কেনো?
–……
!
.
এই ছেলে মন দিয়ে ড্রাইভ করছে জেনো তার পাশে কেউ নেই। সে একাই এই গাড়ীতে বসে আছে। আমার রাগ জেদে পরিণত হলো তাই বললাম।
— আমি যাবো না নামিয়ে দিন প্লিজ!!
— আই ডোন্ট ক্যায়ার। তুমি যেতে চাও কি না চাও!! আমি নিয়ে যাচ্ছি মানে যেতে হবে।
— আপনি!!
— শাট আপ হীর। কই আমায় একটা থ্যাংকস দিবে তা না তুমি ঝগড়া করছো??
— আমি ঝগড়া করছি?
— তা নয় তো কি??
— উফফ আপনি আমায় কনফিউজড করে দিচ্ছে আমি ঝগড়া করছিনা। আমি বলছি আমি যাবো না?
— কই যাবা না!!
— মানে?
— মানে তুমি কি জানো আমি তোমায় কোথায় নিয়ে যাচ্ছি??
— না!!
— তাহলে বললে কেনো!! আমি যাবো না??
— উফফ আল্লাহ আপনি!!
— উফফ আল্লাহ কি?? পাগপ করো কেনো আমায় এসব বলে??
— মানে?
— মানে তোমার ভয়েজ খেয়ে ফেলতে ইচ্ছা করে!!
— যত্তসব!!
— হীর!!
.
আমি অবাক হয়ে উনার দিকে তাকালাম হঠাৎ নাম ধরে কেনো ডাকলো। কেমন যেনো লাগলো নাম ধরে ডাকায়। প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে উনার দিকে তাকিয়ে আছি উনি আপন মনে ড্রাইভ করেই যাচ্ছে!! রিরক্ত হয়ে যেই মাথা ঘুরিয়ে নিবো উনার থেকে তখনি উনি বললো।
— পূর্নি কে চিনো??
.
আমি অবাক হলাম এমন প্রশ্নে। কারণ পূর্নি আর কেউ না রাহুলের এক মাত্র ছোট বোন। পূর্নি আগে যেতো আমাদের ফ্লাটে এই সেই কথার মধ্যে শুধু আমার ভাইয়ার কথা জিজ্ঞেস করতো। কেনো তা আল্লাহ জানে। আমি পূর্নির কাছেই শুনেছিলাম ওর একটা ভাই আছে সেটা যে রাহুল তা জানতাম না। রাহুল তার ফ্যামিলির সাথে থাকতো না। তাই আমি কেনো আমাদের বিল্ডিং এর কেউ চিনে না রাহুল কে। আর ইদানীং পূর্নিকেও দেখিনা আমাদের ফ্লাটেও যায় না। কলেজেও দেখিনা। পূর্নি আমার সাথেই পড়ে একি কলেজ। কিন্তু ডিপার্টমেন্ট আলাদা। আমাকে চুপ থাকতে দেখে রাহুল চেঁচিয়ে উঠলো।
— কোথায় হারিয়ে গেলে??
— না না.. মানে চিনি পূর্নি কে!! পূর্নি আপনার বোন তাই তো!!
— হ্যাঁ!!
— আমায় কেনো জিজ্ঞেস করলেন চিনি কি না??
— কিছু বলবো ওর ব্যাপারে তাই!!
— বলুণ??
— এখন না!!
— আচ্ছা!!
.
রাহুল সেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আমার দিকে একবার তাকিয়ে ড্রাইভিং এ মন দেয়। আমি এই চাহনির মানে আদো বুঝিনা। মাঝে মধ্যে মনে হয় এই ছেলে গুন্ডা খারাপ অসভ্য আবার মনে হয়। অন্য কিছু কিন্তু কোনো টাই স্থায়ই রাখতে পারিনা রাহুলের আচরণে।
.
অল্পদিনের দেখাসাক্ষাৎ এও অনেক প্রশ্ন আছে আমার ছেলেটার কাছে।।
লনি কই? আমার ব্যাপার এই বা এতো কিছু কিভাবে জানে যে শিহাব আর নিতু আমার সাথে প্রতারণা করেছে এই ব্যাপার এ তো আমি কাউকে কিছুই বলিনি!! তাহলে?? মাথায় আসেনা কিছু। আদো আমি আমার সব প্রশ্নের উত্তর পাবো??
.
কিছুক্ষণ চুপ থেকে হাজার হিসাবনিকেশ করার পড় একটা বড় শ্বাস নিয়ে আমি সামনের দিকে তাকিয়েই বলে উঠলাম।
— থ্যাংকস ঐদিন এর জন্য। যদিও অনেক প্রশ্ন আপনার কাছে আমার তাও থ্যাংকস দিতেই হয় একটা। ঐদিন লনির থেকে আমায় না বাঁচালে আজ……..!
— ঐদিন তোমায় না বাঁচাতে পাড়লে লনিকে মেরে তোমাকেও মেরে ফেলতাম তাই থ্যাংকস দেওয়ার কিছুই নেই!!
.
আমি চট করে উনার দিকে তাকালাম। কি বলে এই ছেলে??উনার মুখ দেখে স্পট বুঝা যাচ্ছে উনি রেগে টইটুম্বুর যা দেখে। আমার আর একটি কথাও মুখ ফস্কে বেরুলো না। যদি আমায় কিছুকরে বসে!! কই নিয়ে যাচ্ছে তাও জানিনা! কিছুবলতেও পারবো না কি যন্ত্রণা?? একসময় আমি আকাশপাতাল চিন্তা করতে করতে আমি সিটে হেলান দিয়েই ঘুমিয়ে পড়লাম।
.
রাহুল এবার প্রাণ খুলে দেখছে হীরকে। এই সময়টারি জেনো ওয়েট করছিলো রাহুল।রাহুল যানে হীর রাতে ঘুমায়নি। তাই সে চুপ করে ছিলো জেনো হীর ঘুমিয়ে যায়! রাহুল একটান দিয়ে ঘুমন্ত হীর কে নিজের সাথে মিসিয়ে নেয়।হীর রাহুলের বুকে গুটিসুটি মেরে ঘুমিয়ে থাকে হীরের ঘুমের জেনো আরাম হলো। রাহুল তা দেখে বাঁকা হেসে ড্রাইভিং এ মন দেয় আর ফাঁকেফাঁকে হীরকে দেখে।
.
অন্যদিকে নিতু বাসায় গিয়ে নাক মুখ ফুলিয়ে বসে আছে। তা দেখে শিহাব ভ্রু কুঁচকে এগিয়ে গিয়ে জরিয়ে ধরলো।
— কি হয়েছে মাই জান?? ঐ থার্ডক্লাস মেয়ের কথায় তুমি মুখ ফুলিয়ে রাখবে??
.
নিতু ভাব নিয়ে বললো।
— ভুল তো বলেনি?
— উফফ বাদ দাও চলো শপিং এ যাই। তুমি যা চাও কিনে দিবো হ্যাপি?
.
এই কথা শুনে খুশী তে গদগদ করে নিতু শিহাবের গলায় ঝুলে পড়ে।
— লাভ ইউ বেবি এত্ত গুলা ভাবোবাসি।
— সেম হ্যায়ার। নাউ গোঁ রেডী হয়ে আসো।
— ইয়াপ!!
.
বলেই নিতু দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে। নিতুর হীর এর কথায় মুখ ফুলিয়ে ছিলো না।হীর এর কথা তার মাথায়ই নেই। তার নিও বয়ফ্রেন্ড এর সাথে রাতে পার্টীতে যাবে। তার জন্য স্পেশাল ড্রেস এর প্রয়োজন যা নিতুর নেই। তাই চিন্তিত সে মুখ ফুলিয়ে বসে ছিলো। আর শিহাব বেচারা অন্য কিছু ভেবে তার চিন্তা দূর করে দিলো। নিতু ওয়াশরুমে দাঁড়িয়ে বললো। গাধা একটা!!
এক্টু পড় রেডী হয়ে দুজন বেরিয়ে পড়ে শপিং এ। নিতু প্রায় অনেক টাকার শপিং করেছে বসুন্ধরা থেকে। নিতু এতো টাকার শপিং করতে পেরে খুশীতে গদগদ। শিহাব কিছু বলতে চাইলেও নিতুর গদগদ থেকে কিছুই বলেনি শুধু কপালের ঘাম মুচেছে। শিহাব এখনো পড়াশোনাই করে যা খরচ করে সব বাপের টাকা। তার জন্য অনেক কথা শুনতে হয় বাপের কাছে শিহাবের। বাট তার মা সামাল দেয় সব। কিন্তু আজ এতো টাকার শপিং নিতু করছে তা জানলে বাবা কি করবে তাই ভাবছে শিহাব।নিতুকে শিহাবের বাবা পছব্দ করেননি। তিনি ছেলে আর শিহাবের চাপে রাজী হয়েছেন শুধু এখন যদি জানেন নিতুকে এতো টাকার শপিং করে দিয়েছে শিহাব তাহলে বাবা কি করবে কে জানে। তাও হাসি মুখে নিতু যা চাইছে কিনে দিচ্ছে।
.
শপিং করে রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে একগাদা খাবার অর্ডার করে নিতু। শিহাব চুপচাপ শুধু খাবারের দিকে তাকিয়ে ছিলো। খেয়েদেয়ে বিরিয়ে পড়ে বাসার উদ্দেশ্যে কিন্তু মাঝপথে নিতু বলে উঠে।
.
— বেবি মা আমাকে দেখতে চায়। যেতে বলেছে অনেক করে আমায় তুমি এখানেই নামিয়ে দাও আমি টেক্সি করে চলে যাবো।
— নো প্রবলেম আমিও চলি??
— না না… মানে কি বলছি শিহাব আমি মা তো শপিং নিয়েই পড়ে থাকবো। মানে কি কিনেছি এসব নিয়ে আর কি। তোমার ক্যায়ার নিতে পারবোনা। তাই তুমি বাসায় চলে যাও আমি দুদিন থেকে চলে আসবো কেমন।
.
শিহাব অনেকটা অপমানিত ফিল করলো। কিন্তু কিছু বললোনা। চুপচাপ নিতুকে নামিয়ে দিলো সেখানে তারপর চলে গেলো। নিতু বুঝলো শিহাব রাগ করেছে!! কিন্তু তাতে তারকি?? তার তো কাজ হয়েছেনা। আজ নিতু তার নিউ বয়ফ্রেন্ড এর সাথে প্রথম মিট করবে সেটাই শুধু ভাবছে নিতু। বয় ফ্রেন্ড বললে ভুল হবে ছেলেটা নিতুর প্রথম ক্রাশ। নিতু খুশী খুশী বাড়ি গিয়ে মাকে শিহাবের গাধা হওয়ার কাহিনী শুনায়। সে কি হাসি মা মেয়ের শিহাব কে গাধা বানাতে পেরে।
.
৪ টা বাজে জায়গা মতো পৌঁছে। গাড়ী থামিয়ে হীরকে দেখতে থাকে রাহুল একদৃষ্টে। মেয়েটা অসম্ভব সুন্দরী। রাহুল ভাবে শিহাব কি করে এইমেয়ের সাথে এমন করলো?? ভেবে পায় না রাহুল। এই মেয়ের মুখ মায়ার সাগর যে কেউ হীর এর চোখে একবার তাকালে হারিয়ে যাবে অন্য কোনো রাজ্যে। বড়বড় চোখ গুলা মায়ার ছোঁয়া। রাহুল ঘুমন্ত হীর কে পুরো স্কেন করছে । পড়েই ভাবে না না ঘুমের মধ্যে একটা মেয়েকে এভাবে গিলে খাওয়া মোটেও ঠিক না। তাই রাহুল ফোন হাতে গেমস খেলায় মেতে উঠে। আর হীরের ঘুম ভাঙা অপেক্ষা করতে থাকে।
.
ঘুম ভাঙতেই রাহুলের চেহারা ভাসে চোখে। একটু পড় বুঝতে পাড়ি আমি রাহুলের ঘাড়ে শুয়ে আছি। ভূত দেখার মত চমকে ছিটকে সরে যাই তার থেকে। জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। পাঁচ বছর প্রেম করার পড়েও আমি শিহাবের এতো কাছে যাইনি আর আজ!! আর ভাবতে পারলাম না।কিন্তু ওখানে গেলাম কি করে আমি??
ভাবতে ভাবতেই রাহুলে কণ্ঠ কানে এলো!!
.
— কিভাবে আবার উঁড়ে উঁড়ে!!
.
বিস্ফারিত চোখে তাকাই তার দিকে কি বলে এই ছেলে??
বুঝে কেমনে মনের কথা। আমতাআমতা করে বললাম।
— মানে??
.
রাহুল আমার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসে তারপর সামনে থেকে পানি বোতল দেয় হাতে।
— খেয়ে নাও ৩ ঘণ্টা ধরে ঘুমাচ্ছো। ঘুমাতে এনেছি তোমাকে এখানে??
— ঘুমানোর টাইম ৩ ঘণ্টা কি কিরে হলো আশ্চর্য।
.
বলেই বাইরে তাকিয়ে দেখি রোদ পড়ে গেছে। কিছু দূর একটা চিকন মাঝারি সাইজের আকাবাকা রাস্তা তার সামনে ইয়া বড় পাঁচ তালার একটা বিল্ডিং। আর আশেপাশে বড়বড় ক্ষেত। আশেপাশে ছোটছোট কুড়ে ঘর আর টিনের চালের ঘর।সামনের বিশাল বিল্ডিং টা ভালো করে দেখে বুঝলাম এটা কোনো গ্রামের হস্পিটাল। আমি অবাক চোখে রাহুলের দিকে তাকাতেই দেখি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
.
— সাইডসিং শেষ ?? পানিটা খেতে বলেছি কানে যায় নি??
— আশ্চর্য প্রফেসারা ও তো এভাবে ধমকায় না??
— হ্যাঁ প্রফেসার ধমকায় না আমি প্রফেসার এর বাপ! আমি কি করি দেখাবো??
— না না খাচ্ছি!! গুন্ডা একটা।
বিড়বিড় করে।
— কিছু বললে?
— না তো!!
.
পানি খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম কার থেকে দুজন। অসম্ভব সুন্দর আশপাশের যায়গা গুলা খোলা আকাশ মুক্ত বাতাস গাঁ ছুঁয়ে দিচ্ছে। আকাশে পাখি উঁরছে আর বাতাসে ক্ষেতের ঘাস গুলা দুলছে সে কি সুন্দর দৃশ্য।আমি মুগ্ধ হয়ে দেখছি আর রাহুলের পিছুপিছু হাটছি। তারপর আমায় নিয়ে হস্পিটাল ঢুকে রাহুল আর আমার ভয় শুরু হয়ে যায় সব মুগ্ধতা শেষ হয়ে যায়। কি দেখাতে এনেছে এখানে?? লনিকে?? উফফ কি জানি করেছে ছেলেটাকে ভাবতে ঐদিন এর মারের দৃশ্য ভেসে উঠলো চোখে। ঐদৃশ্য মনে পড়লে আমার পৃথবীর সব চাইতে রাহুল কেই ভয় করে!! নিতে নিতে আমায় পাঁচ তালায় নিলো। হস্পিটাল টায় আমাদের শহরের মতো এতো ভিড় নেই একদম অল্প মানুষ যার মধ্যে ডক্টর থেকে নার্স অনেকেই রাহুলকে সালাম দিলো। এতো সম্মান কেনো দিচ্ছে তাকে বুঝলাম না। হয় তো আগে থেকে চিনে। অবশেষ একটা রুমে আমায় নিয়ে গেলো। সেখানে একটা সিটে কেউ শয়ে আছে আমার ভয় করছে তাই আমি রাহুলের শার্ট পিছন থেকে খামচে ধরলাম!! সাথে সাথে রাহুল আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো। ভয়ে আমি জড়সড় হয়ে ছেড়ে দিলাম তার শার্ট। সাথে সাথে সে আমার হাত খপ করে ধরে ফেললো আর নিয়ে গেলো ঐ সিটের সামনে। শুয়ে থাকা রোগী কে দেখে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। আমি ঝল ঝল চোখে অবাক হয়ে রাহুলের দিকে তাকালাম………
.
.
চলবে?
[ আমি একদম ইচ্ছে করে লেইট করছিনা। আমার ফোনটা খুব ডিস্টার্ব দিচ্ছে! ফোন একটা না অবশ্য কিন্তু যেটা দিয়ে গল্প লিখি সেটা ছাড়া লিখতে ভালোলাগে না | তাই অল্প অল্প করে লিখছি এর জন্য লেইট হচ্ছে দিতে। অনেকেই অপেক্ষা করে থাকেন জানি কিন্তু আমি নিরুপায় আর দুঃখিত তার জন্য?।]
Roja Islam

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে