প্রতারক last_part

0
1974

প্রতারক last_part
#Roja_islam

রাহুল মাথা নুইয়ে চুপ করে আছে কিছু বলছেনা। হীর ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো!!
.
— কি হলো বলছেন না কেনো??
— রাহুল মুচকি হাসলো তারপর মাথা তুলে বললো। আমি তোমায় ছাদে ফার্স্ট দেখিনি হীর!!
— হীর অবাক হয়ে বললো তো কবে দেখেছেন??
— পূর্ণি পিক দিয়েছিলো যখন আমি লন্ডন ছিলাম তখন পূর্ণি আমায় হিরা আর তার কথা জানায়। আর আমি হিরাকে দেখতে চাই তখন হিরা আর তোমার আলাদা দুইটা পিক দেয় পিকটায় ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলে তুমি!! একটা কুসুন জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে ছিলে পরনে ব্ল্যাক টি শার্ট ছিলো!! উফফ ঘুমের মধ্যে একদম ইনোসেন্ট লাগছিলো!! পুড়াই আইসক্রিম মন চাইছিলো…. ইয়ে মানে খেয়ে ফেলি!! আর হ্যাঁ ঐ পিক দেখেই মনে হয়েছে আমার যে তুমি ঘুম কাতুরে! না হলে এতো আরাম করে কেউ ঘুমোতে পাড়ে??তাই স্লিপিংকুইন ডাকি!
— হীর স্তব্ধ হয়ে চেয়ে আছে রাহুলের দিকে!! মাথায় কিছু প্রশ্ন ও ঘুরপাক খাচ্ছে! তাই জিজ্ঞেস করেই বসলো! রাহুল তুমি আমায় ঐ পিক দেখেই ভালোবাসতে শুরু করেছিলে তাই না???
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন


রাহুল হীরের কথার উত্তর দিলোনা। হীর তার উত্তর পেয়ে গেলো চট করে। এটাও বুঝলো কি লুকিয়েছে রাহুল। ঠোঁটে হাসি ফুটলো হীরের।রাহুল হীর ওভাবে ই দাঁড়িয়ে রইলো পাশাপাশি বেশ কিছুক্ষণ। সন্ধে হয়ে গেছে আশপাশ অন্ধকার ছেয়ে গেছে নিরিবিলি পরিবেশ কিছুক্ষণ পড় পড় ধমকা বাতাশ গা ছুঁয়ে দিচ্ছে দু জনের। রাহুল হীর উপর থেকে নিচ টা দেখে উপভোগ করছে।পাহারের উপর থেকে নিচ টা বরাবরি আরো বেশী সুন্দর। দূরে দূরে আলো দেখা যাচ্ছে যেটা নিভু নিভু করে জ্বলছে। আর রাস্তার পাশের টঙ দোকান্টায় আড্ডা বসেছে। মুরুব্বিরা চা – পান খেতে ব্যস্ত। এসব দেখার মাঝেও দু জনের মনে অনেক কিছু চলছে। যা ধরা ছোঁয়া যায় না বুঝা যায় না!! চেষ্টা করলে সামনের ব্যক্তি বুঝতে পারে!! কিন্তু তার জন্যেও গভীর ভালোবাসার প্রয়জোন। হীর মনে মনে অনেক কথা আউরাচ্ছে!! কিছুক্ষণ বাদে হীর বলে উঠলো!
.
— রাহুল!!!
— রাহুল মুচকি হেসে বললো। জানি কি বলবে তুমি!!
— রাহুলের এই কথায় হীর শক খেলো! নিজেকে সামলে বললো! তাও আমি বলতে চাই!!
— রাহুল হীরকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো তারপর বললো। বল শুনছি!!
— হীর ঢোগ গিলে বললো। আমার মনে পড়ে শিহাবকে!! ঐ টাকে মিস করা বলে নাকি অন্য কিছু জানিনা কিন্তু মনে পড়ে আমার তার কথা!! না চাইলেও মাঝেমধ্যে বুঝিনা কেনো তার কথা আমার মনে পড়ে! এমন কেনো হয় রাহুল! আমি দুঃখিত আমি……!
— হীর আবার??? আমায় জবাব কেনো দিবে তুমি হোয়ায়??কেনো দুঃখিত বলছো?? আমি হতে পাড়ি তোমার হবু বর বাট। তুমি কাকে মিস করবে বা করবেনা সেটা সম্পূর্ণ তোমার ব্যাপার তোমার পাস্ট থাকতেই পারে তাই না??আমারো ছিলো হয় ত তার জন্য এভাবে বলার মানে হয়না ? কিন্তু হ্যাঁ তুমি যদি জিজ্ঞেস করো আমায় কেনো তোমার শিহাবের কথা মনে পড়ে? তাহলে আমি বলবো এটা স্বাভাবিক হীর!! কারণ যেমনি ছিলো এক্টা সম্পর্ক ছিলো তোমার শিহাবের সাথে! শিহাবের ভালোবাসায় খাদ থাকলেও তোমার ভালোবাসায় খাদ ছিলোনা। তুমি সত্যি শিহাব কে ভালোবেসে ছিলে! আর শিহাব তোমার প্রথম প্রেম ছিলো। প্রথম প্রেম, আবেগ মিশ্রিত থাকে সহজে ভুলা যায় না বুঝেছ?? তাই তোমার শিহাব কে মনে পড়া মিস করা স্বাভাবিক হীর। ডোন্ট সরি ফর দ্যাট!!
— হু ঠিক বলেছ!!
— হু বলে হীরকে জরিয়ে ধরে পিছন থেকে রাহুল!!
— আচ্ছা রাহুল তুমি আমায় এখনো বললেনা!! লনি কই??
— হস্পিটাল সে কমায় ছিলো ৮ মাস। ভালো হলে বাড়ী পাঠিয়ে দেই। ঐ ফাজিল টাকে মেরে ফেলতে পারলে ভালো লাগতো
— হীর মুচকি হেসে বললো। হু!! আচ্ছা তোমার ভয় হয় না আমি যদি শিহাবের কাছে আবার চলে যাই তো???
.
রাহুলের মুড মুহূর্তেই বিগ্রে গেলো এক ঝটকায় হীরে ছেড়ে দাঁড়ালো। হীর দ্রুত রাহুলের দিকে তাকালো! তাকিয়্রেই ঢোগ গিললো! কারণ রাহুল তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে হীরকে গিলে খাচ্ছে!! রাহুল হীরের আর এক্টু কাছে গিয়ে হিসহিসিয়ে বললো।
.
— তাহলে মেরে ফেলবো তোমায়! আমি এতো ভালো ও নই যতো টা তুমি বা সবাই ভাবে!! মাইন্ড ইট!!
.
বলেই রাহুল তরতর করে পাহাড় থেকে নিচে নামতে লাগলো! হীরকে ফেলে রেখেই! হীর বুকে একটা ফু দিয়ে চেঁচিয়ে বললো!
.
— আরে আমায় নিয়ে তো যাও!! ভূত নিয়ে যাবে আমায়!! উফফ এতো রাগ কেনো? আল্লাহ জানে বাকি জীবন কি আছে কপালে!!
.
হীর এসব বলতে বলতে রাহুলের পিছে দৌড়ে নামছে। রাহুলের কোনো দিকে পাত্তা নেই। শিহাব এর কথা লনির কথা রাহুল মেনে নিলেও। হীর শিহাবের কাছে চলে যাবে এই কথা এক্টু ও পছন্দ হয়নি রাহুলের। নিচে নেমে রিকশা না পেয়ে সেই রাতে দুজনের হেটে বাড়ী ফিরতে হয়! আর সারা রাস্তা রাহুল গাল ফুলিয়ে ছিলো!! হীর অনেক চেষ্টা করেও রাগ ভাঙাতে পারেনি রাহুলের!!
রাহুল হীরকে বাড়ী পৌঁছে দিয়ে সোজা নিজের বাসায় রৌনা দেয় কোনো কথা বলার সুযোগ দেয় না হীরকে!! হীর নিজের মাথায় চাপড় মারে কেনো সে ঐ কথা বলতে গেলো!!এখন ঠেলা বুঝো!
.
.
.
শিহাব জব লেটার হাতে বসে আছে! চোখে হাল্কা পানি চিকচিক করছে শিহাবের! হাতের লেটার টা শুধু একটা কাগজ নয় অনেক কিছু তার জন্য!! তিন্টে বছর কষ্টের ফল তার!!
.
তিন বছর আগে শিহাব বাসা থেকে বেরিয়ে নিতুর বাসায় যায়। অখানে ২ সাপ্তাহ থেকে নিতুকে সুস্থ করে নিয়ে নিজে ভাড়া বাসায় উঠে।বন্ধুর সাহায্যে পড়ালেখার পাশাপাশি পার্ট টাইম জব আর টিউশন নিয়ে সে তার পড়াশোনা কমপ্লিট করে!! এবং সংসার চালায়!! অনেক কষ্ট গিয়েছে প্রথম বছর তার!! মাস্টারস কমপ্লিট করে ২ বছর একটা জব এর জন্য ট্রায় করতে থাকে শিহাব। কিন্তু হচ্ছিলো না কোনো জব!! তাতে কোনো প্রবলেম ছিলোনা শিহাবের সে ভালোই চলছিলো টিউশন আর ঐ ছোট খাটো জব টা নিয়ে।
.
এই তিন বছর শিহাব তার মার সাথে কথা বলেছে শুধু কিন্তু একবারের জন্যেও দেখা করে নি তাদের সাথে! তার মা ফোন দিলেই শুধু কাঁদে। বাবাও বলে তাকে ফিরে যেতে তাও শিহাব ধৈর্য ধরছিলো!! আর আজ সে সফল ও হয়েছে অনেকটা। আজ রাতে বাসায় এলেই নিতু লেটার টা দেয় তাকে। শিহাবের খুশী দেখে কে!! শিহাব কিচেনে গেলো লেটার হাতে!!
নিতু চা করছে শিহাবের জন্য!! শিহাব পিছনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো নিতুকে!!
.
— তুমি খুশী হোও নি????
— নিতু মলিন হেসে বললো। আমি অনেক খুশী শিহাব তোমার জন্য!!
— তোমার জন্য মানে বলো আমাদের জন্য!
— হু!!
— তুমি এতো কম কথা এখন কিভাবে বলো?? তুমি কি পুড়নো সব ভুলবে না কোন দিন???
— চাইলেই সব পাড়া যায় না শিহাব!!
— তিন বছর অনেক বুঝিয়েছি তোমায় এবার আমি ক্লান্ত নিতু!! প্লিজ সব ভুলে যাও!!
— হু নাও চা খাও!!
.
শিহাব আর কিছু বললোনা। নিতুর দেওয়া চা নিয়ে সে চলে গেলো মন খারাপ করে!! এখনের নিতু আর আগের নিতুর মধ্যে আকাশ পাথাল ডিফারেন্স!! নিতুর মধ্যে আগের কোন সভাব নেই!! আগেও যে নিতু কোনদিন ঐ রকম হিংসুটে ছিলো কেউ এখন নিতুকে দেখে বিশ্বাস ও করবেনা সেটা! ! নিতু ঐ সুইসাইড করার দিন থেকে একদম চুপচাপ হয়ে গেছে ২ সাপ্তাহ শিহাব যখন নিতুর বাড়ী ছিলো প্রতিদিন শিহাবের কাছে ক্ষমা চাইতো নিতু!! শিহাব অনেক বুঝায় নিতুকে যে সে ক্ষমা করে দিয়েছে তাকে!! কিন্তু তাও নিতু আস্তে আস্তে আরো চুপচাপ হতে শুরু করে!! প্রায় টাইম রাতে ঘুম থেকে উঠে কান্নাকাটি করে শিহাবের কাছে ক্ষমা চাইতো!! নিতুর এই ক্ষমা চাওয়া নিয়ে শিহাব প্রায় বিরক্ত হয়েগিয়েছিলো!! কিন্তু নিতুর কোন পরিবর্তন নেই সে দিনদিন আরো অন্যরকম হয়ে যাচ্ছে!! একা থাকতেই ভালোবাসে সে!! শিহাবের সাথেও প্রয়জোন ছাড়া কথা বলেনা! মাঝেমধ্যে নামাজে বসে একা একা কাঁদে!! রাতে নিতু শিহাব খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে!! সকালে ঘুম ভাঙে দরজা ধাক্কানোর শব্দে! শিহাব উঠে দরজা খুলতে যায়! নিতু হুরমুরিয়ে উঠে ওয়াশরুমে ঢুকে!!সে এখন বাইরের মানুষের সামনে যায়না!!
শিহাব দরজা খুলে দেখে রাহুল দাঁড়িয়ে আছে পকেটে দু হাত ভরে!! শিহাব রাহুল কে দেখে চমকে যায় প্রথম তার পর বলে উঠে??
.
— তুমি??
— রাহুল হাল্কা হেসে বলে উঠে। কেনো আসতে মানা আছে আমার???
— না না আসো ভিতরে এসো!!
.
শিহাব ভিতরে ঢুকে রাহুল কে ভিতরে ঢুকতে জায়গা করে দেয়। রাহুল ঢুকে শিহাবের ঘর টায় চোখ বুলায়! ছোট একটা ঘর পাশেই বারান্দার মত ওখানেই কিচেন ওয়াশরুম বুঝা যাচ্ছে!! ঘরে তেমন কিছু বলার মতন নেই! কোন রকম যা দরকার তাই আছে! শিহাব মলিন স্বরে বলে উঠে!!
.
— দুঃখিত তেমন কিছুই নেই গরিবের ঘরে নাও এই ভাঙা চেয়ার টাতেই বসো!! বলেই একটা চেয়ার এগিয়ে দেয় শিহাব!
— রাহুল চেয়ারে বসে বলে উঠে!! তুমি গরিব নও মজা করোনা!!
— শিহাব হাল্কা হাসে। হ্যাঁ গরিব নই কিন্তু নিজেকে গরছি এই আর কি!!
— নিজেকে গড়ার প্রয়জোন আছে শিহাব!!তুমি যা করছ ভালো করছ!! কষ্ট হলেও ভালো কিছু পাবে আশা করি!!
— শিহাব মাথা নাড়িয়ে বলে উঠে!! কিছু কথা বলা হয়নি ঐদিন। তোমাকে ধন্যবাদ রাহুল ঐ ক্রিমিনাল টাকে ধরতে সাহায্য করার জন্য!! তোমার সাহায্য ছাড়া নিতুকে বাঁচাতে পাড়তাম না হয়ত ছেলেটাকে ধরা কঠিন ছিলো!!
— ধন্যবাদ দিয়ে ছোট কর না!ঐটা আমার কর্তব্য ছিলো মানুষ হিসেবে তোমার পাশে দাঁড়ানো আমি তাই করেছি!!
— ঠিক আছে তা হঠাৎ আমার কাছে কি মনে করে এলে?? হীর ভালো আছে??
— রাহুল হাল্কা হাসলো!! আমার কাছে আছে তো ভালোই থাকবে!!
— তা ঠিক তুমি মানুষ টাই ভালো!!
— আচ্ছা বাদ দাও!! ইনভাইটেশন কার্ড দিতে এসেছি তোমাকে আমার আর হীরের বিয়ের!!
— শিহাব উচ্ছাসিত মুখে বললো। এ তো ভালো কথা!! কবে করছ এই শুভ কাজ??
— রাহুল তার পিছনের পকেট থেকে একটা ইনভেনশনস কার্ড শিহাবের হাতে দিলো। ৪ দিন পড়!! শুধু আমাদের না হিরা আর পূর্ণি আমার বোনের ও বিয়ে আমরা এক সাথে বিয়ে করছি!!
— এতো বিশাল ব্যাপার কিন্তু আমি আর নিতু যেতে পাড়বো না হয়ত রাহুল!!
— রাহুল ভ্রু কুচকে বললো!! কেনো??
— হীর ওর সামনে কোনদিন যেতে আমায় নিষেধ করেছিলো!! ওর বিয়ে তে কি করে যাই??
— আমি ওর হবু বর আমি বলছি তুমি যেও ও খুশী হবে!! যেও না তুমি যাবে কথা দাও আমায় ??
— শিহাব কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললো। আচ্ছা আমি যাবো নিতুকে নিয়ে!!
— রাহুল এবার হেসে বললো!! আমি খুশী হলাম আজ তাহলে আশি!!
— চা ত খেয়ে যাও আমি খুশী হব!!
— রাহুল না করলোনা। ঠিক আছে!!
.
শিহাব এর বাসায় চা করে বিদায় নিলো রাহুল। রাহুল অবাক হলো নিতু তার সামনে আসেনি একবারের জন্য ও না!! মানুষ কত বদলে যায় রাহুল এই মেয়েটাকে কত নোংরা ভাবেও দেখেছে অথচ আজ তার কি পরিবর্তন। শিহাবের ব্যাবহার এ ও রাহুল অবাক!! শিহাব যখন নিতুর ঐ বয় ফ্রেন্ড কে হন্য হয়েও খুঁজে ও পাচ্ছিলো না কিন্তু ছেলেটার ডিস্টার্ব এ নিতু পাগল হয়ে যাচ্ছিলো তখন রাহুল তাকে হেল্প করে!! খুঁজে বের করতে এবং সেই ছেলে এখন জেলে আছে!!
.
.
.
আজ রাহুল হীর পূর্ণি হিরার বিয়ে!! কাল রাতে দুই বাড়ীতেই হৈ হলৌ ওর সাথে গায়ে হলুদ হয়েছে! হিরার বাসায় সবাই হিরা আর হীর কে হলুদ ছুঁইয়েছে আর রাহুলের বাসায় রাহুল আর পূর্ণিকে!! ভাই বোন এর এভাবে হলুদ করায় সবাই আনন্দ ধীগুন নিয়েছে। ব্যাপার টা নতুন ছিলো সবার জন্য ! আজ বিয়ে!! বিয়ে সেন্টার এ হবে চার জনের এক সাথে!!
.
সারা রাত সবাই হলুদে নাচ গান করেছে!! আবার ৬ টাই বিয়ের আয়জন এ দৌড়া দৌড়ি শুরু। হীর তার ঘরে বসে কাঁদছে তার ফোন কানে!!
.
— এই কান্না বন্ধ কর তুমি!!
— হীর কেঁদে কেঁদে বললো!! তুমি কি আমাদের বিয়ের দিনের রাগ করে থাকবে!! কি এমন বলেছি আমি!!
— রাহুল রেগেই বললো!! সেটা তুমিই জানো!!
— এ্যায়ায়ায়ায়ায়া ঐটা ৬ দিন আগে বলেছি এখনো মনে রাখতে হয়?? সরি তো বলছি আমি তাইনা!!
— সরি বললে হবে না আমার কিছু চাই???
— কি চাই বলেই নাক টানলো হীর!! দেখো যা চাই দেবো ৬ দিন ধরে কষ্ট পাচ্ছি!! নিজের হলুদেও কেঁদেছি একটু ও মজা করতে পারিনি!! আর আজ বিদায়ে এমনি কাঁদবো!! এখন এক্টু শান্তি চাই বুঝেছ???
— একটা ফ্লাইং কিস দাও
— এ্যায়ায়া নিষ্ঠুর ছেলে এটা আগে বললে কি হত আমি দেখিস বিয়ের পড় তোকে ঝালাবো!!
— বেবি আমার রোমেন্টিক টর্চার এর থেকে তুমি বাঁচলে তো আমায় জ্বালাবে!! তিন বছর ধরে ওয়েট করছি আচ্ছা বেবি কখন রাত হবে বলো তো আমি আর ওয়েট করতে পারছিনা ??
— ছিঃ লুচু আমি রাখছি লাগবে না ক্ষমা!!
.
বলেই হীর ফোন কেটে করে দেয়!! রাহুল হেসে ফোনের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে!!
.
— ফোন কেটে কই পালাবা বেবি আসতে আমারি কাছে হবে!!
.
.
দুপুর ১টায় হীর, পূর্ণি পার্লার থেকে সেন্টার পৌঁছে যায়!! হীর শুধু সেন্টার টায় এক বার চোখ বুলায় তারপর হাল্কা হেসে ভিতরে ঢুকে পূর্ণির হাত ধরে পূর্ণি তো মহা খুশী। আজ তার সপ্নের দিন আজ পুরোপুরি হিরা কে নিজের করে পাবে সে ভাবা যায়!! দু জনকে নিয়ে তাদের কাজিন ফ্রেন্ডসরা ষ্টেজ এ বসায়!! বসাতেই একে একে সবাই বৌদের সাথে ছবি তুলতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে!! হীর পূর্ণি দুজনি তাদের হবু বরকে খুঁজছে!! কিন্তু তাদের দেখতে পাচ্ছে না!!পূর্ণি হীরকে বললো!!
.
— ভাইয়ারা কই দেখছিনা কেনো????
— আমি নিজেও খুজছি!!
— ভালোলাগেনা!! যার জন্য সং সেজে বসে আছি তারি খবর নাই।
— হাহা কি কথা!!
— তুই কি বুঝবি দুুঃখ!!
.
একটু পড় পূর্ণি দেখল!! রাহুল, হিরা আর নিতু শিহাব অদের দিকেই আসছে একসাথে!! পূর্ণির মুখের হাসি শিহাব নিতুকে দেখে চলে গেলো।পূর্ণি চট করে হীরের দিকে তাকালো পূর্ণি বিস্মিত হলো হীরের দিকে তাকিয়ে কারণ হীর শিহাব আর নিতুর দিকে তাকিয়েই আছে হেসে!! পূর্ণি এটা মোটেই আসা করেনি সে ভেবেছিলো হীর হয়ত মন খারাপ করবে কিন্তু হীরকে পূর্ণির খুশীই দেখাচ্ছে। যাইহোক পূর্ণি স্বস্তি পেলো!! বিয়ের দিন মন মানিল্য হোক পূর্ণি চায়না!!
.
রাহুল হিরা তাদের হবু বৌ দের বিস্মিত চোখে দেখছে!! হীর পূর্ণিকে দুই টা পরির মত লাগছে!! রাহুলের পছন্দের লেহেঙ্গায়!! হ্যাঁ রাহুল হীরের চাওয়াই পূর্ণ করেছে। ভারী লেহেঙ্গা আর চমৎকার সাজে এ এক অন্য হীরকে দেখছে রাহুল। হিরার ও সেম অবস্থা!
রাহুল হিরা স্টেজ এ উঠে হীর পূর্ণির পাশে দাঁড়ায়!! রাহুল হীরের কানের কাছে গিয়ে বলে উঠে!!
.
— পাগল হয়ে যাবো আমি পাগল হয়ে যাবো!!
— অসভ্য গুণ্ডা!!
— তোমারি!! গর্জিয়াছ লাগছে মাই স্লিপিংকুইন!!
— তোমাকেও!!
.
— পূর্ণি হিরার কে ফিসফিস করে বললো! হট লাগছে শেরওয়ানীতে।
— হিরা বিস্মিত চেয়ে বললো। কিহহ??
— চুপ আস্তে!!
.
হিরা রাহুল সেইম শেরওয়ানী পরেছে ব্ল্যাক কালার দুজনেই ব্ল্যাফকে দারুণ লাগছে!!সাথে মেচিং ঘড়ি, জুতো! শিহাব অনেক টা খুশী মুখেই স্টেযে যায় হীরের সাথে কথা বলতে। কিন্তু নিতু লজ্জায় মাথাই তুলে তাকাতে পারছেনা হীরের দিকে!! নিতু এখানে আসতেই চায় নি। শিহাব রাহুলকে কথা দিয়েছে তাই জোড় করেই নিতুকে নিয়ে এসেছে। শিহাব নিতু হাত ধরেই হীরের কাছে গিয়ে বলে উঠে!
.
— কংগ্রেস হীর!!
— ধন্যবাদ শিহাব ভালো আছো?
— দেখতেই পাচ্ছো!!
— হীর এবার নিতুর দিকে তাকিয়ে বলে উঠে। নিতু আমার সাথে কথা বলবিনা!!
.
নিতু এবার সবার সামনেই ঝরঝর করে কেঁদে দেয় হীরের হাত ধরে!! একদিন এই সেন্টারই!! হীর ও সবার সামনে কেঁদে দিয়েছিলো!! হ্যাঁ এটা সেই সেন্টার যেখানে নিতু আর শিহাবের বিয়ে হয়েছিলো। সে দিন হীর কেঁদেছিলো আজ নিতু কাদছে।যেই মেয়েটা হীরের কাঁদার কারণ!! ঐদিন হীরের পাশে কেউ ছিলোনা ইভেন তার ভালোবাসার মানুষটাও না। কিন্তু আজ নিতুর কাধে হীর হাত রেখে নিতুর পাশে দাঁড়ায়।নিতুকে আরো বুঝতে পারে নিতু কত বড় অন্যায় করেছে হীরের সাথে। হীর কান্না করা নিতুর হাত ধরে একটা ফাঁকা রুমে নিয়ে যায়!!
.
শিহাব অবাক হয়ে তাকিয়ে রয় তাদের যাওয়ার দিকে শিহাব ভাবেনি হীর এমন কিছু করবে এতকিছুর পড়েও!! রাহুল পূর্ণি মুচকি হাসে তবে হিরার মুখটা একটু কালো!! রাহুল শিহাব কে কানেকানে বললো।
.
— হিরার কাছে সরি বলতে পারো!!
— শিহাব আকাশ থেকে পড়ার মতন ভাবে বললো। তুমি আমাদের এতো হেল্প কেনো করছ???
— কারণ তোমাদের জন্যই আমি হীরকে পেয়েছি চাই না তোমরা খারাপ থাকো সব ভুলরি ক্ষমা আছে!!
— শিহাব হেসে বললো। হীর সত্যি ভাগ্যবতী! তোমাকে পেয়ে!!
.
রাহুল হাসলো শিহাব হিরার কাছে ক্ষমা চাইলো তার বোন কে কষ্ট দেওয়ায়।পূর্ণি চোখের ইশারায় বুঝায় ক্ষমা করে দিতে সেও ভাবে। হীরই অদের ক্ষমা করে দিলো সে আর ক্ষমা না করে কি করবে সেও ক্ষমা করে দিলো। এদিকে হীর রেস্ট রুমে আসতেই নিতু হীরের পা ধরে বসে পড়ে মাথা নুইয়ে!!
.
— হীর। আমায় ক্ষমা কর প্লিজ আমার জন্য তোকে অনেক কষ্ট পেতে হয়েছে। বিশ্বাস কর এই তিন বছর আমি তার শাস্তি পেয়েছি। আমি একদিন ও ঘুমুতে পারিনি তোর কাছে ক্ষমা না চেয়ে!!
— হীর প্রায় চিৎকার করে বললো। নিতু উঠ দাড়া তুই!! বলে নিজেই টেনে উঠায় নিতুকে তারপর নিতুর হাত ধরে বলে উঠে। দেখ আমি তোকে সেই কবেই ক্ষমা করে দিয়েছি!!যেখানে শিহাবকে ক্ষমা করেছি তোকে করবোনা??
— তুই সত্যি বলছিস হীর?? আমায় ক্ষমা করেছিস তুই??
— হ্যাঁ নিতু আমি ক্ষমা করেছি সেই কবেই কাদিস না প্লিজ!!
— তুই ওতো ভালো কেনো হীর কেনো??
— কান্না বন্ধ কর। তোর জন্যই একটা সঠিক মানুষ আমি আমার জীবনে পেয়েছি। না হলে হারিয়ে ফেলতাম তাকে!!
— আমি দোয়া করি হীর তুই অনেক ভালো থাক। তুই জানিস না তুই আমায় ক্ষ্মা করেছিস শুনে আমার মন থেকে কত বড় পাথর নেমেছে আজ।
— আমি সব ভুলে গিয়েছি আজকে পড় আমি আর ভুলেও কিছু মনে করতে চাইনা আমার অতীত। তুই ও ভুলে যা শিহাব ভালো ছেলে তুই ভালো থাকবি!!
.
.
নিতু মাথা নাড়ায়! অনেক হাসি মজা খাওয়া দাওয়া মেহমান সেল্ফির মাঝেই বাকি সময় টা পাড় হয়ে যায়!! বিয়ে পড়ানো সময় চলে আসে!! চার জনকে এক সাথে বসানো হয়। মাঝ খানে পর্দা দিয়ে এক পাশে ছেলে এক পাশে মেয়ে! বিয়ে পড়ানো শুরু হয়। প্রথমে রাহুলের হীরের বিয়ে পড়ানো হয়। কাজী রাহুল কে কবুল বলতে বললে। রাহুল এক নিশ্বাস এ বলে দেয়।
.
— কবুল, কবুল, কবুল!!
— আস্তে দস্ত কাজী পালাচ্ছেনা !! নিহাদ বলে উঠে!!
.
সবাই হেসে দেয় নিহাদের কথায়। রাহুলের তাতে কোন রিয়্যাকশন বুঝা গেলো না সে তার মতন বসে রইলো হীর লজ্জা পেলো রাহুলের কাজে। তারপর হীর কে কাজী কবুল বলতে বললে সে ধীরেসুস্থে বলে দেয়। অদের টা শেষ হলে হিরা আর পূর্ণির বিয়ে পড়ানো হয় হিরা কবুল ধীরেসুস্থেই বলে কিন্তু পূর্ণি ভাইয়ের মতন গরগর করে বলে ফেলে। এই বার হাসির রোল পড়ে যায়!! সবাই এই বলে হেসে উঠে ভাই বোন বিয়ের পাগল। রাহুল নিজেই হেসে ফেলে বোনের কাজে!! নিহাদ গড়াগড়ি খাওয়ার অবস্থা। হীর হিরাও হাসছে। পূর্ণি লজ্জায় শেষ নিজের বোকামি তে। নিতু এসব দেখে না হেসে পারেনা। শিহাব মুদ্ধ হয়েই আড়ালে থেকে দেখে নিতুর হাসি। কারণ এভাবে লাস্ট অদের বিয়ের আগেই নিতুকে হাসতে দেখেছিলো শিহাব।
.
অবশেষে বিদায়ের পালা আসে বিদায় টা অদের কষ্টের হয়। কারন হীর যাবে রাহুলের বাড়ী। আর পূর্ণি যাবে হিরার। তাই কষ্ট টা দুই পরিবারের। দুই ঘরি একদিকে খালি হবে একদিকে ভরবে!! পূর্ণি ভাইকে মাকে ধরে কেদে দেয়। হীর ও হিরা তার মাকে ধরে কাদছে। বোনের বিদায়ে দুই ভাইয়ের চোখেই পানি!! এই প্রথম বিয়েতে বোধহয় বর রাও কাঁদছে যদিও কান্নার কারণ টা বোন হারানোর জন্য!!
গাড়ীতে উঠার আগে। হিরা জরিয়ে ধরে রাহুলকে বলে উঠে।
.
— পূর্ণি ভালো থাকবে আমার কাছে ভাইয়া হীরকে দেখেন!!
— তুমি সব জানো!!
— হ্যাঁ জানি হীর অনেক ভালো থাকবে আপনার কাছে !! আশি??
.
অবশেষ এ দুই পরিবারি মন খারাপ করে গাড়ীতে উঠে। উদ্দেশ্য বাড়ী!! দুই গাড়ী দুই পথে যাবে!! হীর কাঁদতে কাঁদতে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে গাড়ীতে। ঐ দিকে পূর্ণির ও একি অবস্থা!হিরা পূর্ণিকে জরিয়ে ধরে শান্তনা দেয়!
.
— পূর্ণি কেঁদো না প্লিজ আমি মা আছি তো রাহুল ভাইয়া রোজ আসবে বাসায়!!
— পূর্ণি নাক টেনে বললো। সত্যি আসবে?? আমি কি করে থাকবো ভাইয়াকে ছাড়া??
— বলছিতো আমি মা আছি তো আর ভাইয়া রোজ আসবে!! কেঁদো না!!
— আচ্ছা!!
.
.
.
হীরকে রাহুল কোলে করে গাড়ী থেকে নামায়!!মেয়েটা সেন্সলেস হয়ে গেছে অতিরিক্ত কান্না করায়!! রাহুল কোলে করেই নিজের রুমে নিয়ে শুইয়ে দেয় হীরকে ফুলে মৌ মৌ করা রুমে!! রাহুল বাইরে আসে তার মাকে দেখতে!!
.
পূর্ণি কে হিরার কাজিনরা হিরার ঘরে বসিয়ে রেখে গেছে। রাত বাজে ১ টা। পূর্ণি ঘোমটা টেনে বসে আছে। এভাবে সিনেমেটিক ভাবে বসে থাকতে তার নিজেরি হাসি পাচ্ছে কিন্তু সে এভাবেই বসে থাকবে হিরা এতো লেট করছে আসতে তার শাস্তিও দিবে!! ভেবেই পৈশাচীক হাসি দিলো পূর্ণি!!!
.
এদিকে ঘুম টা হাল্কা হওয়ায়!! নাকে কড়া ফুলের গন্ধে যাওয়ায় ঘুম ভেঙে গেলো হীরের!! হঠাৎ ই ধুপ করে উঠে বসলো সে!! আশেপাশে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করছে!! কই আছে সে?? রুমে চোখ বুলিয়ে দেখলো গলাপ ফুলে ঘরটা ভর্তি প্রায়!! এটা দেখেই সব মনে পড়ে গেলো হীরের!! উঠে দাঁড়ালো হীর খুঁজতে লাগলো রাহুল কে!! বারান্দায় গিয়ে দেখলো রাহুল বসে আছে ব্যাতের সোফায়!! হীর বুঝলো রাহুলের মন খারাপ বোনের জন্য। হীর রাহুল কে টেনে রুমে এনে বললো নামাজ পরবো অজু করে আসুন। রাহুল মাথা নারলো!! ফ্রেস হয়ে নামাজ পরে নিলো দুজন। রাহুল বারান্দায় গেলো হীরকে চেঞ্জ করতে বলে। হীর চেঞ্জ করে একটা কালো শাড়ী পড়ে বারান্দায় গেলো রাহুল আগের মত মন খারাপ করে বসে আছে সোফায়।
হীর গিয়ে ধপ করে রাহুলের কোলে বসে পড়লো!! রাহুল চমকে গিয়ে বললো।
.
— হয়ে গেছে চেঞ্জ চলো ঘুমাই? তোমায় টায়ার্ড লাগছে?
— বাসর ঘরে ঘুমাবো সারারাত পড়ে পড়ে???
— রাহুল দুষ্টু হেসে বললো!! তো কি করবে??
— আদর নিবো হিহি!!
— রাহুল ভ্রু কুঁচকে বললো!! এতো ভূতের মুখে রামনাম হইছে কি তোমার কিছু খাও নি তো তুমি??
— কি খাবো ছাড়ুন এসব কথা আমি আদর চাই! এখুনি???
— কিহহ?? সত্যি তুমি বোধহয় ভাই আর মাকে ছেড়ে আসার শোক এ পাগল হয়ে গেছো হীর চলো ঘুমাবে!!
— চুপ আমি পাগল হই নি!!
— তাহলে…….
.
রাহুল আর কিছু বলার আগে হীর নিজেই রাহুলের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট চেপে ধরে রাহুল ভীষণ শক খায় প্রথম সে ভাবে নি হীর এটা করবে!! কিন্তু বেশীক্ষণ নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারেনা রাহুল নিজেও হীরের ঘাড়ে এক হাত অন্য হাত হীরের কমোরে রেখে পাগলে মতন কিস করতে থাকে হীরকে।রাহুল তৃষ্ণার্তর মতো আদর করছে তার বৌকে। অদের বিবাহিত জীবনের শুরুটা এভাবেই হয়ে যায়!
.
.
এদিকে হিরা রুমে এসে পূর্ণি ঘোমটা তুলতেই পূর্ণি ঝাড়ি দিয়ে উঠে!!
.
— এই কই ছিলে তুমি এতো লেইট কেনো??
— আসলে ….
— চুপ একদম চুপ চাপ দাড়াও!!
.
হিরা চুপ চাপ দাঁড়ায়! পূর্ণি মাথা নুইয়ে হিরার পা ধরে সালাম করে! তারপর বলে উঠে।
.
— যাও খাবার এনে দাও। খিদে পাইছে!!
— হিরা চোখ বড় বড় করে বলে উঠে!! তুমি বাসর রাতেও খাবা??
— আজব তো না খেলে বাঁচবো কেমনে?? যাও খাবার আনো বাসর ঘরে খেতে মানা নেই!!
— হিরা দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে!! ওয়েট!!
— পূর্ণি ঠোঁট চেপে হেসে বলে। আচ্ছা!!
.
পূর্ণি খাচ্ছে মন প্রান দিয়েই খাচ্ছে। হিরা অসহায় চোখে পূর্ণির খাওয়া দেখছে। তার বাসর ঘরের সপ্নে এই মেয়ে খাবার ঢেলে দিছে। ঐদিকে পূর্ণি মনে মনে বলছে। বাসর ঘরে ভালোবাসা? ৫ বছর ঘুরছি পাত্তা দেস নি এখন বোঝ কেমন লাগে। সুধে আসলে আমাকে ঘুরানোর কষ্ট দেওয়ার বিচার করে তারপর বাসর। বেচারা হিরা শেষ। পূর্ণি খাওয়া সেরে। হিরাকে ঝাড়িঝুড়ি দিয়ে নামায় আদায় করে দু রাকাত নফল। তারপর গিয়ে শুইয়ে পড়ে সে। হিরা ভোতা মুখে চেয়ে থাকে পূর্ণির দিকে পূর্ণি লুকিয়ে হেসেই যাচ্ছে!!
.
.
শিহাব নিতু তাদের ছোট বারান্দায় বসে আছে চা হাতে!! সত্যি বলতে তারা রাহুল হীরের জন্য খুশী আশ্চর্য হলো হীরের সাথে কথা বলার পড় থেকে আগের মতন হাসি খুশী নিতুকে দেখতে পারছে শিহাব।কিন্তু আগের মতন হিংসা টা আর মনে হয় নেই নিতুর মধ্যে এতুটুকুই হবে। শিহাবের আর কিছু চায় না সে!! নিতু আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে শিহাব নিতুর কে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে বলে উঠে।
.
— নিতু??
— হুম!!
— আমরাও একদিন খুব ভালো থাকবো দেখো মা বাবা ও তোমায় মেনে নিবে!!
— হয়ত!! শিহাব??
— বলো??
— তোমার হীরের কথা মনে পড়ে না তুমি তো ভালোবাসতে হীরকে আমি জানি সেটা!!
— ভালোবাসতাম এখন আমার সব তুমি!! হ্যাঁ হীরকে আমি ভালোবাসতাম। কিন্তু এখন সেটা একটা অতীত আর কিছু নয়। এখন আমি আমার স্ত্রী কে ভালোবাসতে চাই। আর কিছু নয়। আর যাকে আমি ভালোবাসতাম অতীতে। আমি তার কাছে একটা প্রতারক ছাড়া আর কিছু নয়।
.
নিতু কেঁদে জরিয়ে ধরে শিহাবকে! শুরু হয় তাদের ও আরেক নতুন জীবন! মানুষ মাত্রাই ভুল আর ভুল থেকে অনেক অনেক শিক্ষা আমরা পাই বাকি জীবন টা সুন্দর করে সাজাতে সঠিক মানুষটাকে চিনতে। হীর তার অতীতের করা ভুল থেকে শিক্ষা পেয়েছে! মা বাবা ভাইকে কষ্ট দিয়ে ভালোবেসে সুখী হওয়া কষ্ট তাদের থেকে কেউ বড় নয় আমাদের জীবনে।শিহাব হীরকে ভালোবাসতো ৫ বছর ৬ বছর ১০ বছর কিন্তু বাবা মা ভাই তার জন্ম হওয়ার পড় থেকে তাকে ভালোবাসে। তাদের না জানিয়ে শিহাবের সাথে সম্পর্ক করলেও হীর। ২য় বার হীর ভুল করেনি। সে তার ভাইয়ার কথা শুনেছে শীহাবের জীবনে পা বাড়ায়নি! এতে শিহাব ও নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। নিতু তার ভুলে মাসুল দিয়েছে!! আর সব কিছুর মাঝে হীর তার জীবনে সঠিক মানুষটিকে পেয়েছে!! ভুল থেকে আমাদের প্রতেকের শিক্ষা নেওয়া উচিৎ একি ভুল বার বার করলে জীবন অন্ধকার হয়ে যাবে!! আর ভুল গুলোকে শিক্ষা ভাবলে শিহাবের মত প্রতারক এর শিকার হয়েও রাহুলের মতন মানুষের সাথে সুখী হওয়া যায়!! যেটা হীর হয়েছে!!
.
সমাপ্ত………… ♥
[অনেক রাগ আমার উপর আপনাদের তা জানি আমি। বাট আমার কিছু বলার ভাষা নেই!! শুধু এই টুকুই বলবো প্রবলেম এ ছিলাম। ক্ষমা করবেন আমায়। আমি অতিরিক্ত খারাপ মানুষ তার উপর রাগ বেশী। বুঝিনা কে সে যার সাথে রেগে যাই। তাই আমার কথায় কেউ হার্ড হলে আমায় ক্ষমা করবেন দোয়া করে!! আমি সত্যি দুঃখিত! আর কাল থেকে এক পার্ট অনুভূতি রোজ পাবেন! আর হ্যাঁ প্রতারক লাস্ট পার্ট কেমন হলো জানাবেন যদিও জানি সাধাসিধেই লিখছি হয় তো বলার মতন কিছুই নেই। তাও জানাবেন কেমন হলো!! ধন্যবাদ এতো এতো ভালোবাসা দেওয়ার জন্য আমাকে আমার গল্প কে!!]
Roja Islam

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে