প্রতারক part 7

0
1455

প্রতারক part 7
#Roja_islam

আমার চোখ বড়বড় হয়ে গেলো।হাত পা কাঁপছে বিষণ ভাবে কাঁপছে। এই কথা যদি সত্যি হয় তো কি হবে আমার কলেজ কিভাবে যাবো আমি?? আরো অপমানিত হতে হবে!! আর যদি কেউ জেনে যায় আমার জন্য লনিকে মেরেছে তো? আমার চোখের টলমল করা পানি গড়িয়ে পড়লো। তা দেখেই রাহুল…..
.
— ইউ নো হীর ইউ আর সো স্টুপিড গার্ল??
— লনি কোথায় প্লিজ বলুন আমার ভয় করছে!!
— হাহা! তোমার কেনো ভয় করছে?? হোয়ায়?? তুমি মেরেছো লনি কে?? তাহলে ভয় পাচ্ছো কেনো??
— কারণ….!!
— ওহ জাস্ট শাট আপ হীর। তমি এমন কেনো হোয়ায়??
.
বলেই হীরের একদম কাছে চলে যায় রাহুল। আর আলত করে চোখের পানি মুছে দিয়ে এলোমেলো চুল গুলা কানের পেছন গুঁজে দেয়। তারপর কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলে।
.
— বি স্ট্রং ওকে। সব কিছু এতো সিরিয়াসলি নেওয়ার কি আছে?? লনি যা করেছে তার জন্য মৃত্যুর মতো শাস্তি সে যোগ্য। আর আমি তাকে……!
.
আমি রাহুলের কথা শুনে একটা প্রশ্নই খুঁজে পেলাম।
— আপনি কে??
.
রাহুল বাঁকা হেসে উত্তর দেয়।
— শুভাকাঙ্ক্ষী
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন


আমি বিস্ফারিত চোখে তার দিকে তাকাই। রেগে আমার মাথা খারাপ হওয়ার অবস্থা!!
— ইউউউউ ব্লাডি লাইয়ার!! মিথ্যে কেনো বললেন ফোনে??
— কি মিথ্যে বললাম!! সত্যি তো এখন বলছি যাই হোক। টান আছে আমাদের তাই তো চিনে ফেললে আমাকে?? তা বলো সামথিং সামথিং??
— নাথিং নাথিং সাচ আ কনফিউজড ম্যান!!
— ইয়াহহ দ্যাটস রাইট রাহুল চৌধুরী কে বোঝা এতো ইজি না!! রিমেম্বার!!
— তা আমায় ফোন দিয়ে কি সব বলছিলেন বলুন?
— ইউ নো হীর প্রথম আমি কাউকে কিছু বুঝাতে ব্যর্থ। আর জানো সেটা কে??
— কে??
— অবশ্যই তুমি!
— দেখুন একদম অপমান করবেন না!!কি বুঝতে চাইছেন আমি কম বুঝি!!
— ওহ রেয়ালি কি করবে তুমি তাহলে??
পুড়ো কলেজের সামনে একটা প্রতারক তোমায় গাল লাল করে দিলো। আর তুমি তাকে এভাবে দেখছিলে জেনো সে ললিপপ তাই না??
–…….
— কি বল বল ঠিক বলিনি!!
.
আমার মজা নিচ্ছে বেশ বুঝতে পারছি কিন্তু কোনো উত্তর নেই ঠিকি বলছে ছেলেটা আমি সাচ আ স্টুপিড গার্ল। ইন দিস ওয়ালর্ড।কিন্তু তাও অপমানে শরীল ফেটে যাচ্ছে আমার।
.
— এতো ভেবে লাভ নেই হীর!! তোমার ধারা কিছু সম্ভব না!!
— কি!
— প্রতিবাদ করা তোমার ধারা সম্ভব না!!
.
সত্যি কি সম্ভব না আমার ধারা?? কাউর কাছ থেকে শিখা যায় প্রতিবাদ করা যায় আমি কার কাছে শিখবো তবে!
কি করবো করবো ভেবে পাগল হওয়ার থেকে রাহুল কেই করুণ স্বরে বললাম।
— আচ্ছা প্রতিবাদ করা শিখা যায়?? একটু প্রতিবাদ করা শিখিয়ে দিন তাহলে!!
.
আমার কথা শুনে রাহুল কেমন নেশাগ্রস্থের মতো তাকায় আমার দিকে।আমি নড়েচড়ে দাঁড়াই তার চাহনি দেখে। রাহুল আমার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে বলে উঠে।
— এভাবে বলো না খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে।
.
আমার কাশী উঠে গেলো আমি খুক খুক করে কাশছি। শুধু ঠান্ডাজ্বর হলেই মানুষ কাশে না। চরম অসস্তির শিকার হলেও কাশে এই যে আমি এখন চরম অসস্তির শিকার হয়্র কাশছি। থামছেই না তার কারণ অসস্তি যাচ্ছেই না আমার উফফ। কি বেয়াদব আর অসভ্য ছেলের পাল্লায় পড়লাম আমি। কি নির্লজ্জ ছেলেরে বাবা!! আমি কাশি থামিয়ে চেঁচিয়ে বললাম।
.
— শিখাতে হবে না আপনার প্রতিবাদ। আপনার থেকে প্রতিবাদ শিখার থেকে ভালো আমি রোজ অপমানিত হই বুঝেছেন।
.
রাহুল আমার কথা বাঁকা হাসছে সাথে সেই তীক্ষ্ণ চাহনি। উফ এটাই আমায় থতমত খাওয়াতে বাধ্য। আমি আমতাআমতা করে বললাম।
— প্লিজ। দেখুন আমায় কিছু বলতে হবে না আপনার শুধু বলুন। লনি কই তাহলেই হবে।
— বলবো যদি একটা কথা শুনো!!
— কি??
— আজ তুমি ভার্সিটি যাবে আর!!
— আর!!
— নিতু শিহাব যা বলে তুমি শুধু তার পাল্টা জবাব দিবে বিনা ভয়ে। পাড়বে?
— আমি….
— না পাড়লেও পারতে হবে।
— আমি…
— দেখো আমার কথা না শুনলে আমি লনির ভাইকে বলে দিবো লনি কে তুমি মেরেছো। তারপর লনির ভাই তোমার পরিবার কে কি করবে?? বুঝতেই পারছো?? হাহা
— ব্লেকমেইল করছেন কেনো আমি দিবো পাল্টাজবাব। এ আর এমন কি।
— ভিতুরডিম!!
.
ভার্সিটি তে দেখা হচ্ছে। কোনো চালাকি করো না। আমি কিন্তু আশেপাশে ই থাকবো বলে দিলাম। তোমায় ফলো করবো সো বি কেয়ার ফুল ওকে।
— আ আ পনি যাবেন??
— ইয়াহ। বাই এন্ড গুডলাক ভিতুরডিম।
.
রাহুল চলে গেলো ভিতুরডিম ডাকটা শুনে জেদ চেপে গেলো। প্রতিবাদ করতেই হবে। অবাক বিষয় আমি কত কত ট্যান্স ছিলাম কালল থেকে আর ছেলেটা আই মিন রাহুলের সাথে কথা বলে সব মিনিটে দূর হয়ে গেলো না চাইতেও কেনো?? অদ্ভুত একদম অদ্ভুত!! যাই হোক আমাকে পারতেই হবে।
.
ভার্সিটির সামনে দাঁড়িয়ে আছি। মাকে জরিয়ে ধরে বলে এসেছি আমার জন্য অনেক অনেক দোয়া করতে। ভাইয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলো।তাই বলেছি বিয়ে করতে যাচ্ছিনা বিশ্বাস কর এক্সাম আছে তাই দোয়া চাইছি।জীবনের এক্সাম বলে কথা দোয়া চাইবোনা??মা ভাইয়াসে কি হাসি। আর আমি অসহায় বাড়ী থেকে বের হয়ে সারা রাস্তা এই বলেই এসেছি হীর তোকে পারতেই হবে পারতেই হবে হীর।
.
আল্লাহ ওর নাম নিয়ে ভার্সিটি ঢুকে কিছুদূর যেতেই শিহাব নিতু আমার দিকে আসছে দেখতে পেলাম!! বুঝতে বাকী নেই আমার জন্যই দলবল নিয়ে ওয়েট করছিলো!! প্রতারক ২টা।
.
কাছে এসেই নিতু বললো।
— কিরে লনি কই কি করেছিস বল??
— আমি কি জানি লনি কই?? সে কি আমার বোনের জামাই যে আমি দুলাভাই এর খবর রাখবো? আশ্চর্য!!
— মিথ্যে কেনো বলছিস তুই আমার হ্যাসবেন্ড কে ফাঁসাচ্ছিস।
— আমি তোর হ্যাসবেন্ড কে ফাঁসাচ্ছি। না তুই ফাঁসিয়েছিলি আমার বয় ফ্রেন্ডকে?? আর আজ বড় গলায় কথা বলছিস লজ্জা করে না তোর ??
.
আমার কথা শুনে শিহাব নিতু অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো। আমি ভেতরে ভেতর ভয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছি তাও বুঝাচ্ছি না কাউকে। শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে আমার ঠোঁট উলটে কান্না আসছে ।আমি নিজেকে নিয়ত্রণ করলাম বহু কষ্টে এর মধ্যে নিতু গিয়ে শিহাব ধরে ন্যাকা কান্না জুরে দিলো।
.
— দেখেছ শিহাব এই থার্ডক্লাস মেয়ে কি বলছে আমি তোমার ফাঁসিয়েছি? তুমি কিছু বলো।
— কি বলবে শিহাব হ্যাঁ?? আমার সাথে চলার সময় বেস্টি বেস্টি করার সময় মনে ছিলো না আমি থার্ডক্লাস। ও হ্যাঁ মনে থাকবে কি করে তখন তো তুই আমার বফ কে ফাঁসানোর চেষ্টায় ছিলি যেই কাজ হলো অমনি মনে পড়ে গেলো আমি থার্ডক্লাস। কিন্তু থার্ডক্লাস তো তুই যেকিনা বেস্ট ফ্রেন্ড এর বফ এর উপর নজর দেয়।
.
আমার কথা শেষ হতেই শিহাব চেচিয়ে উঠে। নিতুর মুখ বন্ধ!!
— ইনাফ ইজ ইনাফ হীর।আমাকে কেউ ফাসায়নি!! আমি নিজ ইচ্ছেতে ছেড়েছি তোমায় গট ইট।
— ইয়াহ। অবশ্যই নতুন কেউকে পেলে তো ছাড়বেই। তা নিতু যতো যাই হোক তুই আমার বেস্টি ছিলি তাই বলছি কি। দেখে রাখিস তোর হ্যাসবেন্ড কে। আবার নতুন কেউকে পেলে না তোকেও আমার মত নিজের ইচ্ছে তেই ছেড়ে দেয়!!
.
আমার এই কথা নিতুন চেহারার সব রঙ উঁড়ে গেলো। আমি সব ভয় ভুলে মনে পৈচাশিক আনন্দ পেলাম মুহূর্তে আমার ভেতরের অনেক কষ্ট কমে গেলো। শিহাব আবার চেঁচিয়ে উঠলো।
— কি বলতে চাইছো তুমি?? তুমি আমাদের মধ্যে আগুন লাগাচ্ছো হীর??
— না তো নিজের মনের আগুন নিভাচ্ছি। যেখানে তোমরা দুজন আমার সাথে প্রতারণা করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলে।
— আয়ায়া হীর আমার রাগ লাগছে বলো। লনি কই তোমার জন্য….
.
শিহাব কে কথা শেষ করতে দিলাম না।
আমি বললাম।
— লনি হারিয়ে গেছে তাতে তোমার প্রবলেম কি?? আশ্চর্য!!
.
শিহাব দাঁতে দাঁত চেপে বললো।
— তোমার জন্যই তো ওকে মেরেছি তাই এখন আমার প্রবলেম হচ্ছে।
— ওহ আচ্ছা তাই?? কিন্তু আমি তোমার কে??কি হই??
–………
.
আমার প্রশ্ন শুনে দুজম দুজনের মুখ চাওয়া চাওয়ি করলো। আমি বেশ বুঝতে পারছি দুই জন আমার কথায় থতমত খেয়েগেছে। আমি তাড়া দিয়ে আবার বললাম।
— কি হলো মিস্টার শিহাব আমি আপনার কে?? আচ্ছা আমিই বলছি আমি আপনার এক্স তাই তো!! তা আমি কি আদো বলেছি আমার জন্য লনিকে আপনি মারুন কাটুন। কেনো করেছেন?? এখন নিজেই নিজের প্যাড়া নিন আমায় এর মধ্যে ফাঁসাবেন না। আর হ্যাঁ কাল কি জেনো বলছিলেন। লনি কই না বললে কলেজ আসতে পারবোনা। তা কলেজ টা কি আপনার বাবার কেনা??
আর মিসেস নিতু তোর থাপ্পড় এর বিচার আমার আল্লাহ করবে। আমি চাইলেই তোকে থাপ্পড় ব্যাক দিতে পারি কিন্তু তোর গায়ে হাত দিয়ে নিজের হাত আমি নোংরা করতে চাইনা। চুপ থাকি তার মানে এই না আমি বোবা সেটাও মাথায় রাখিস।
.
বলেই ক্লাসের দিকে এগুলাম। খুব খুব শান্তি লাগছে। আমার সাথে ওরা যা করেছে তার জায়গায় এটুকু কথা হয়তো কম কিন্তু মানুষিক ভাবে নিজেকে শক্ত রাখতে প্রতিবাদ করা উচিৎ অনন্ত এই প্রতারক দের ছাড় দিতে নেই বরং আঙুল তুলে ওদের ভুল দেখিয়ে দাওয়ার দড়কার। তা না হলে ওরা সবার সাথে একি কাজ করে যাবে। এইটুকু আজ আমি বুঝতে পাড়লাম।
ক্লাস করে ভার্সিটি থেকে বেরিয়েই দেখি রাহুল…..
.
চলবে?
Roja Islam

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে