প্রতারক part 18

0
1283

প্রতারক part 18
#Roja_islam

রাহুল খুব স্পীড এ ড্রাইভ করার মধ্যেই আস্ফির কল এলো। রাহুল তাড়াতাড়ি কল পিক করে কানে ধরে।
— আস্ফি কোথায় ওরা।
— রেস্টুরেন্ট বসেছে!!
— কোনটা ???
–…………. তুমি তাড়াতাড়ি এসো ওকে ব্রো।
— ইয়াহ থাকো তুমি আমি আসছি!!
— ওকে ওকে ব্রো।
.
রাহুল ফোন কেটে আরো স্পীড়ে ড্রাইভ শুরু করে। যেমন আকাশে না মাটিতেই বিমান উরাচ্ছে রাহুল।
.
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন


বারবার ঘড়ি দেখছি আমি। কারণ শিহাব সব বলতে চাই বলে মাথা নুইয়ে ঝিম মেরে বসে আছে। আমার মেজাজ খারাপ হচ্ছে। আশ্চর্যকথা এমন করার মানে হয়। ক্রমশ আমার মধ্যে রাগ চন্ডিভড় করছে। আমি কখন কি বলে ফেলি শিহাব কে তার ঠিক নেই। প্রায় ৫ মিনিট পড় শিহাব মুখ খুলে বলে উঠে।
— হীর আমি জানি আমি খারাপ আমি মানিও আমি খারাপ। কিন্তু তুমি কি আমায় কি ক্ষমা করা যায় না!!!
.
এই কথা শুনে রাগে গাঁ ফেটে যাচ্ছে আমার আমি চিল্লিয়ে বলি এক প্রকার।
— মজা করতে ডেকেছো আমাকে??ফালতু কথা শুনতে চাইনা আমি শিহাব। কেনো এমন করেছো আমার সাথে তা জানার ইচ্ছা আছে অন্য কিছু নয়।
.
এবার শিহাব বলে উঠে।
— আমি মোগ এ পড়ে গিয়েছিলাম। নিতু তারি সুযোগ নিয়েছে হীর!!
.
আমি অবাক হয়ে বললাম।
— মানে???
.
শিহাব মাথা নিচু করে বলতে শুরু করে।
— ঐদিন আমার বন্ধু রিফাতের বার্থডে ছিলো। তাই রিফাত পার্টী দিয়েছিলো। আমি গিয়েছিলাম। কেনো জানিনা নিতু ও ছিলো পার্টিতে। তোমার খাতিরে এক্টু কথা বলে আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মেতে উঠি। ছেলেদের পার্টী ছিলো তাই এক্টু ড্রিংক ও করে ফেলি। রাত ১২ টার দিকে পার্টী শেষ হয় আমি বাড়ী যাবো বলে বেরিয়ে পড়ি রিফাত এর বাড়ী থেকে। নিচে নামতেই দেখি নিতু একা একা দাঁড়িয়ে আছে আমায় দেখেই লিফট চাইলো কাছে এসে। আমি ঢুলুঢুলু অবস্থায় কিছু বলতে পারলাম না। আমি বাইক বের করতেই আমার পিছনে চেপে বসলো নিতু। আমার অবস্থা ড্রিংক এর জন্য আস্তে আস্তে খারাপ হচ্ছিলো। তাই নিতু আমায় যেভাবে বলছিলো আমি অভাবেই করছিলাম। খুব বাজে ভাবে ড্রাইভ করে আমি ওর বাড়ী পৌঁছি। নিতু বাইক থেকে নেমে আমায় এক প্রকার টেনেই নিজের বাড়ী নিয়ে গেলো। তারপর আমার কাছে সব ধোঁয়াশা!! রাতে আর কি হয়েছিলো আমার মনে নেই। সকালে আমি নিজেকে এবং নিতুকে বিব্রস্থ অবস্থায় আবিষ্কার করি। আমার মাথা ফেটে যাচ্ছিলো এসব কি নিতু কেনো এখানে আমি কই?? এসব ভেবে। এর মধ্যে নিতু উঠে কান্না শুরু করলো। আর বললো আমি ওর সাথে জোর করেছি। আমি ড্রাংক ছিলাম বলে নিতু আমায় ওর বাড়ী নিয়ে যায় আর আমি ওর সাথে এসব করি। আমার এতোটুকু মনে ছিলো আমি ড্রিঙ্ক করেছিলাম। তাই আমি ওএ কথা মিথ্যে ভাবতে পারলাম না। আর যেই অবস্থায় নিজেকে আবিষ্কার করি তা দেখার পড়……….! আমি কোনো রকম ভাবে নিজের বাড়ী যাই কিছু ভাবতে পারছিলাম না আমি। আমার ধারা এতো বড় ভুল কিভাবে হলো কুলকিনারা পাচ্ছিলাম না। এর পড় দিন নিতু ফোন দিয়ে কান্না শুরু করলো বিয়ে করতে ওকে। আমি স্তব্ধ ছিলাম পুরোটা সময়। আমায় চুপ থাকতে দেখে নিতু চেঁচিয়ে বলে। আমার বাসায় পুলিশ নিয়ে যাবে। আমি ভয় পাই কারণ আমার বাবা কেমন তা তুমি তো জানো। এসব শুনলে আমায় মেরে ফেলতো। আমি কোনোরকম ওকে ভরসা দি। এদিকে তুমি ছিলে ঐদিকে বাবা। আর আমার মনে হচ্ছিলো নিতুর সাথেও আমি খারাপ করছি। দিন দিন ওর চাপ বাড়তে লাগলো। ভালোভাসি ভালোবাসি বলে ফোন দিয়ে জ্বালিয়ে মারতো। আস্তে আস্তে মনে হলো নিতু আমায় ভালোবাসে। আর এতোকিছুর পড় ওকে বিয়ে না করলে ভুল হবে। আমি বিয়ের জন্য রাজী হই। আর তোমায় সব বলার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু নিতু বাস সাধে। সে বলে বিয়ের আগ পর্যন্ত তোমার সাথে সব নরমাল রাখতে। আমিও কিছু বলিনা। কারণ আমি তোমার প্রতি সব সময়ি দুর্বল। আর তুমি আমার অভ্যাস ছিলে যা ছাড়া সম্ভব না। না তোমায় কষ্ট দেওয়া। ভেবেছি বিয়ের আগে বলে দিবো তাই ক্যাফেতে ডেকে বলেদি। তাও সত্যি বলার সাহস ছিলোনা তাই সব বলতে পারিনি। আর তারপর যা করেছি তোমার সাথে আমায় জেনো ভুলে যাও তাই করেছি। আমি ও চেয়েছি নিতুর সাথে ভালো থাকতে সব ভুলে। কিন্তু নিতু!!
.
আমি অবাক হয়ে বললাম।
— কিন্তু নিতু কি??
.
তারপর শিহাব নিতুর কারসাজি সব বলে আমাকে।। মানুষ এতো খারাপ কেমনে হয়। আর আমি নিতুর মতো কাউকে ফ্রেন্ড ভেবেছি ভাবতেই গাঁ রি রি করে উঠলো ছিঃ।
শিহাব আবার বলে উঠলো।
.
— আমার কি মনে হয় জানো??
.
আমি মাথা তুলে বললাম!
— কি??
.
— আমি কিছুই করি নি ঐদিন নিতুর সাথে এটা একটা নাটক ছিলো ওর। আমাকে ফাঁসানোর। কিন্তু কেনো নিতু আমায় ফাঁসিয়েছে তা আমি জানি না।
.
আমি সব শুনে হেং কিছু বলতে পারছি। এতোকিছু আমার আগেচরে হয়েছে তা ভাবতেই খারাপ কাগছে।নিরবতায় ছেয়ে গেছি দুজন। না আমার আর প্রশ্ন আছে বা শিহাবের কিছু বলার। আমি বারবার চোখ মুছতেছি। কান্না করতে না চাইলেও মাঝেমধ্যে চোখের পানি উপচে পড়ে আজ আমারো তাই। শিহাব হঠাৎ নিরবতা ভেঙে বললো।
.
— হীর আমায় ক্ষমা করা যায় না??আমি জানি তুমি অন্যকাউকে ভালোবাসো ন্না।চলো না হীর নতুন করে শুরু করি। ভুলে যাই সব।
.
আমি কি বলবো বুঝতে পারছিনা। কিছু বলা উচিৎ না হাসা উচিৎ না খুশী হওয়া উচিৎ আজ শিহাবের কথা শুনে বুঝতে পারছিনা। তাই চুপ করে আছি। আমায় চুপ দেখে শিহাবলে উঠলো।
— প্লিজ হীর একটা সুযোগ দাও আমায় সুধরানোর। আমি তোমার সব কষ্ট দূর করে দিবো।প্লিজ লাস্টবার ক্ষমা করে দাও হীর।
.
আমি আর কিছু না শুনে উঠে হাটা দিলাম। উদ্দেশ্য বাড়ী যাবো। পেছন থেকে শিহাব ডাকছে শুনতে পাচ্ছি। হয়তো পিছন থেকে আসছেও। কিন্তু আমার তাতে পাত্তা নেই আমার কেমব জানি সব ঘোলাটে লাগছে। সবাইকে প্রতারক মনে হচ্ছে। রেস্টুরেন্ট থেকে বেরুতেই দেখি। রাহুল দাঁড়িয়ে আছে তার কারের পাশে তার চোখের দিকে চোখ পড়তেই আত্মা কেঁপে উঠলো। মুখ আগুন হয়ে আছে তার। চোখে চোখ পড়তেই চোখ নামিয়ে নিলাম। তখনি পিছন থেকে শিহাব আমার হাত ধরে বলে উঠে।
.
— প্লিজ হীর আমি পাগল হয়ে যাবো আমার দোষ কি বলো। ঐ সময় যা……!
.
শিহাব আর কিছু বলার আগেই রাহুল আমার অন্য হাত ধরে টেনে নিয়ে গাড়ীর দরজা খুলে ধাক্কা দিয়ে বসিয়ে দিলো। আমি ও কিছু বলতে পারলাম না। জানালা দিয়ে শিহাবের দিকে তাকালাম। করুন চোখে তাকিয়ে আছে সে। কিন্তু আপাদত আমার কিছু করার নেই।গাড়ী চলতে লাগলো রাহুল ড্রাইভ করছে। আমি আর রাহুলের দিকে তাকাইনা জালানার দিকে তাকিয়েই আমি শিহাবকে ক্ষমা করবো কিনা ভাবছি। সত্যিই তো ঐ সময় নিতুকে বিয়ে করাই ব্যাটার ছিলো। কিন্তু শিহাব চাইলে নিতুকে বিয়ে না করলেও পারতো। কিন্তু সে এমন কিছু করেনি। আমায় ও মিথ্যে সত্যি কিছু বলেনি। তবে কি শিহাব নির্দোষ!! নিতুই সব করেছে। কিন্তু কেনো নিতু এসব করবে?? কি কারন তার!!
ভাবলাম নিতুর সাথে দেখা করতে হবে সব জানতে হবে কেনো করেছে নিতু এসব??
.
শিহাব তাকিয়ে আছে! হীরের যাওয়া গাড়ীর দিকে। চোখ থেকে দু ফোটা পানি পড়ে শিহাবের। নিজের হাত দিয়ে চোখ থেকে পানি নিয়ে মুচকি হাসে শিহাব। তারপর বিড়বিড় করে বলে উঠে।
— আমি জানি হীর তুমি আমায় ক্ষমা করবেই। আই নো ইউ!!
.
শিহাব বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ে নিতুর বাড়ীর দিকে তার সব জানতে হবে। কেনো এসব করলো নিতু?? তারো জানতে হবে আজ তার জন্য সব উল্টাপাল্টা। খবর আছে নিতুর ভাবতে থাকে শিহাব।
.
.
রাহুল রেগে চুপচাপ মুখ শক্ত করে ড্রাইভ করছে। শিহাব হীরের হাত ধরেছে তা মনে হলেই নিজের পিছনের চুল টানছে এক হাতে। বেশকিছুক্ষণ পড় রাহুল নিজের ফ্লাটের সামনে গাড়ী থামাতেই হীর জিজ্ঞেস করে উঠে।
.
.
— এখানে কেনো বাড়ী যাবো আমি!!
.
রাহুল ঘাড় বাঁকা করে চোখ রাঙিয়ে তাকায় হীরের দিকে হীর মাথা নিচু করে ফেলে। আর কি টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় হীর কে নিজের ফ্লাটে। তারপর ওকে ড্রইং রুমে বসিয়ে নিজের রুমে গিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে মাথায় পানি দেয় রাহুল। মাথা ঠান্ডা করতে। রাগে তার শরীল ফেটে যাচ্ছে কি করবে সে। মন চাইছে নিজেই মরে যেতে রাহুলের।
.
.
১ ঘণ্টা ধরে এই সোফায় বসে আছি। আর ভালো লাগছে না ঐ গুন্ডাটাকেও দেখা যাচ্ছেনা। তাই চুপিচুপি উঠে মেইন ডোরের দিকে এগুলাম উদ্দেশ্য পালিয়ে যাওয়া এভাবে বসে থাকার মানেই হয়না। কোনো! কিন্তু যেই দরজা খুলবো। ওমনি রাহুল আমায় ছ্যাঁচকা টানে দরজার সাথে চেপে ধরে শক্ত করে। আমি চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে রেখেছি। রাহুল তীক্ষ্ণ কণ্ঠে বলে উঠে।
.
.
— পালাচ্ছো স্লিপিংকুইন??
.
এই কথা শুনে আমি চোখ খুলে মাথা নাড়ালাম। মানে পালাচ্ছিনা।
রাগুল আমার কপালে কপাল ঠিকিয়ে বলে উঠে।
.
— হীর???
.
আমি রাহুলের এতো কাছে আসায় তুতলিয়ে বলি।
— জ জি জ্বী??
.
রাহুল চোখ বন্ধ করে বলে উঠে।
— আর ইউ স্টিল লাভ শিহাব???
.
আমি অবাক হই। চিন্তা করতে থাকি। সত্যি কি আমি এখনো ভুলেছি শিহাব কে এতোই সোজা কাউকে ভুলে যাওয়া?? আর আজ শিহাবের সব কথা শুনে মনে হচ্ছে তার কোনো দোষ নেই!! তাই আর কিছু না ভেবে বলে ফেললাম।
— হ্যাঁ!!!
.
.
চলবে!!
.
.
[এবার রাহুল কি করবে?? হীরকে ভাই বোনেরা?? এক্টু আপনাগো শুনতে চাই??? ?]
Roja Islam

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে