প্রতারক part 10

0
1354

প্রতারক part 10
#Roja_islam

রাহুল বাসার সামনে কার ব্রেক করে হীর এর দিকে তাকায়। ঘুমের মধ্যে ঠোঁট টাকে কেমন সরু করে রেখেছে হীর কিউট লাগছে খুব। রাহুল মুচকি হাসে। রাহুলের এক্টু ও ইচ্ছে করছেনা হীর কে জাগাতে কিন্তু ৭ টা বেজে গেছে হীর সেই সকালে বেরিয়েছে বাসা থেকে নিশ্চয় বাসার সবাই চিন্তা করছে!! সেই ভেবে রাহুর নিজের ঘারে পড়ে ঘুমিয়ে থাকা হীর এর গালে নিজের হাত ছুরিয়ে আস্তে আস্তে ডাকে হীরকে।
— হীর!! এই হীর!! হীর??
.
হীর নড়েচড়ে রাহুলের একহাত চেপে ধরে আবার ঘুমিয়ে পড়ে। রাহুল কিছু সেকেন্ড হেং মেরে বসে থাকে হীর এই কাজে তারপর বাঁকা হেসে বলে উঠে।
— স্লিপিংকুইন কেনো পাগল বানাচ্ছো?? পড়ে সামলাতে পাড়বে তো??
.
বলেই একটা শ্বাস ফেলে রাহুল তারপর চোখ বন্ধ করে বলে উঠে।
— তুমি পাগল বানাও আর না বানাও স্লিপিংকুইন আমি তো……..!
.
আর কিছু না বলে এক্টু জোরে ডাকে হীর কে রাহুল।
— হীরররররররররর!!
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন


এবার হীর লাফ দিয়ে উঠে সজা হয়ে বসে চোখ ঢলতে ঢলতে উত্তেজিত কণ্ঠে বলে।
— কি হইছে কি হইছে চোড় আসছে কি মা!!
— হ্যাঁ হ্যাঁ চোড় আসছে!!
.
বলেই হীর এর কান্ডে অবাক হয়ে চেয়ে থাকা রাহুল হো হো করে হেসে উঠে। হীর রাহুলের কথা শুনে বোকার মতো চেয়ে থাকে।
ছিঃ ছিঃ আমি এসব কি বলছিলাম আর এতোক্ষণ মরার মতো ঘুমুচ্ছিলাম কি একটা লজ্জা উফফ। আর এই ছেলেও দেখো কেমনে হাসছে। কিন্তু কত সুন্দর হাসি!!
কিন্তু এই ছেলে হাসি থামাচ্ছেই না। তাই রাগ হলো।
.
— হয়েছে হাসি??
— আর এক্টু!!
— আর এক্টু ও না!! হুহ।
— ওহ তুমি যে এতোক্ষণ। আমার কাধ কে বেড বানিয়ে রেখেছিলে তখন তো আমি কিপ্টমো করিনি। আর এক্টুও না??
— কিহহহ আপনার কাধকে বেড বানিয়েছি আমি?? কখন হ্যাঁ?? আর কিপটামো আমি করিনা! আপনি করেন আর এক্টু ঘুমুতে দিলে কি হতো?? কত্ত সুন্দর ঘুমাচ্ছিলাম দিলেন সব নষ্ট করে!!
— ভাবা গো ভাবা এতো কথা?? এটা হীর তো। প্রতিবাদ করতে বলছি বলে আমার সাথেই শুরু করেছো।
.
আমার জানি কি হলো আমি ভাব নিয়ে বললাম।
— শুনুন সেটা আমি আপনি না বললেও করতাম হুহ শুধু দেখতে চেয়েছিলাম। দুই প্রতারক কতটুকু নিচে নামতে পারে!! যদি এতোই আবলা নারী হতাম তো ওদের বিয়ে দেখতে যেতাম না। কিন্তু হ্যাঁ এটাও সত্যি আমি নিতুকে দেখে দুর্বল হয়ে গিয়েছিলাম।আর কিছুইনা।হুহ আসছে প্রতিবাদ শিখাইতে।
.
এক নিশ্বাস এ সব টুকু গড়গড় করে বলেই ফেললাম। তারপর জোরে একটা শ্বাস নিয়ে রাহুলের দিকে তাকাতেই। আমার সব ফুঁসস হয়ে গেলো।সে রেগে তাকিয়ে আমার দিকে। সব শেষ মানে সাহস কিন্তু আমি দম ধরে বসেই রইলাম। আমার মাথায় নেই আমি চাইলে দৌড়ে পালাতে পারি। বাসায় এসে পরছি আমরা কিন্তু আমি বসেই রইলাম।
.
রাহুল কিছুক্ষণ নিশ্চুপ হয়ে রইলো। তারপর কি ভেবে খেঁকিয়ে উঠলো।
— ইউউ স্টুপিড গার্ল!! এতোই যেহুতু বুঝো তো। শিহাবের কল দেখে লাফিয়ে ধরলে কেনো?? হোয়ায় ড্যাম ইট!!
.
রাহুলের চিৎকারে আতকে উঠে আমি করুণ স্বরে বললাম।
— সত্যি বলবো??
.
রাহুল ভ্রু কুঁচকে তাকালো।তারপর বললো।
— ছে ড্যাম….!
— ওকে ওকে বলছি। আমি না আসলে আপনার ভয়ে, আর প্রশ্নের চক্কোর এ কনফিউজড হয়ে গিয়ে। সব ভুলে গিয়েছিলাম শিহাব নিতুর কথা তাই এমন হয়েছে!!মানে ভুলে ধরে ফেলেছি আর ভেবেছি আগের মতোই সব আছে আরকি।
— আমি কি বাঘ না ভূত যে তুমি আমাকে ভয় পাও??
— না তো আপনি ভূত না একটা ভাল্লুক ইয়া বড় ভাল্লুক। দেখলেই ভয় করে যত্তসব। যেমন জংলের প্রাণী দের বুঝা দায়। তার আসলে মানুষের শত্রু না অন্যকিছু!! তেমনি আপনাকে দেখলেও না আমি বুঝিনা আপনি আমার শত্রুনা না অন্যকিছু!! তারও একটা কারণ আছে অবশ্য!!
— কি কারণ!!
— কারণ হলো ঐদিন ছাদে কি করলেন আমাকে কেউ…. থাক ওটা বাদ দিলাম। লনি থেকে বাঁচাতে গিয়ে আপনি কি বলেছিলেন লনিকে… উফফ সেটাও আর নাই বলি জঘন্য কথা।ওকে কিভাবে মারলে আল্লাহ ছেলেটা বেচে আছে কিনা তাও জানি না ভয়ে জিজ্ঞেস ও করা যায় না…..! তারপর নিয়ে গেলেন কোথায় আজও জানিনা!! নিয়ে ওয়াশরুমে যা হলো সেটা……….!! এর পড় থেকে গুন্ডা ছাড়া কিছুই মনে হয়না আপনাকে মন চায় ধরে আছাড় মারি বজ্জাত ছেলে কদিনেই জ্বালায় ফেলছে আমাকে উফফ আস্ত গু…………!
.
হঠাৎ আমার কি হলো যেমন লাগলো আমার হুস এসেছে। আমি চুপ মেরে গেলাম। মুখ চেপে ধরলাম ঘুম থেকে উঠে কি আমি পাগল হয়ে গেছি?? ভাল্লুক এর সামনে ভাল্লুক এর গুণ গান গাইছে। ভাল্লুক আস্ত রাখবেতো??ভেবেই রাহুলের দিকে তাকালাম সেই চিরচেনা তীক্ষ্ণ দৃষ্ট তে তাকিয়ে আমার দিকে তা দেখে। ভয়ে আত্মা শুকিয়ে যাওয়ার অবস্থা আমার। ভাবতে পারছিনা আমি কিছু। এখন কি হবে আমার ! ভাবনার মধ্যেই চোখ গেলো সামনে আমাদের বিল্ডিং এটা। মনে মনে ইয়াহুঅঅঅঅ বলে আল্লাহ কে শুকরিয়া করে। গাড়ীর দরজা খুলে একদৌড়ে বিল্ডিং এ ঢুকে লিফট ওর অপেক্ষা না করে। শিরি ভেঙে দৌড়ে নিজের ফ্লাটে কলিংবেল চাপলাম। মা দরজা খুলতেই হুরমুরি ভিতরে ঢুকে গিয়ে বললাম।
— আহহ শান্তি ভাল্লুক ধরতে পারেনি!!!
.
হীর এর মা অবাক হয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়ে তার কথা শুনে। তারপর দরজায় উঁকিঝুঁকি দিয়ে ভাল্লুক আছে না কি দেখে বললো।
— শহরে ভাল্লুক কই থেকে আসলো হীর কি বলিস তুই এসব??
.
মার কথা শুনে কি বলবো ফেসাদে পড়ে গেছি।এখন কিছু যদি একটা না বলি তো সি আই ডির মতো এটা নিয়ে খুটিয়ে খুটিয়ে প্রশ্ন করে করে মাথা চিবিয়ে খাবে একদম তাই বানিয়ে ই বললাম।
— ইয়ে মানে মা। ঐ ঐ তো ইউটিউব থেকে দেখে ভয় পেয়ে গেছি!! তাই আর কি!!
.
বলতে বলতেই আমি ড্রইং রুমে সোফায় ধপ করে বসি। ভাইয়া টিভি দেখছে চট করে পূর্নির কথা মাথায় এলো। এর মধ্যে মা পানি নিয়ে এসেছে আমার জন্য আর জিজ্ঞেস করলো।
— কিরে এতো লেট করলি কেনো আজ?? কত চিন্তা হয় জানিস??
.
মার কথা শুনে ভাইয়া কিছুটা রাগ করে বললো।
— শোন হীর যাই হোক আর কোনো দিন জেনো তোকে এতো রাত করে বাড়ি ফিরতে না দেখি। খুব বড় হয়ে গেছিস??
— সরি ভাইয়া আমি না পূর্নিকে হস্পিটাল দেখতে গিয়েছিলাম! তাই!!আর হবে না।
.
আমার কথা শুনে স্পট বুঝলাম। ভাইয়া স্তব্ধ হয়ে গেলো। কিন্তু কেনো?? ভাইয়া আর কিছুনা বলে রিমোট টা ছুড়ে ফেলে চলে গেলো বাইরে একদম। আমি বুঝলাম ভাইয়া কষ্ট পেলো পূর্নি হস্পিটাল আছে শুনে। যদি এতোই কষ্ট হয় তবে রিজেক্ট করলো কেনো নিশ্চয় কোনো ঘাপলা আছে জানতে হবে।কি ঘাপলা!!
.
— কি রে হীর পূর্নির কি হইছে মেয়েটা অনেক দিন আসেনা!!
.
মার কথায় চিন্তা থেকে বেরিয়ে বললাম।
— ওর বড় এক্সিডেন্ট হইছে মা তাই আসেনা হস্পিটাল আছে।
— তা তুই কই থেকে জানলি?? আমি তো শুনি নাই!!
— ইয়ে মানে ওর ফ্রেন্ডস দের থেকে। তাদের সাথেই তো গেলাম দেখতে। আচ্ছা আমি ফ্রেস হবো রুমে যাই।
— যা তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে আয় আমি খাবার বাড়ছি।
— আচ্ছা মা!!
.
বলেই কেটে পড়লাম না হলে পশ্নের ফুলঝুরি থেকে রক্ষে নেই আর।
.
রাহুল প্রায় একমিনিট হীরের দৌড়ের দিকে তাকিয়ে ছিলো। তারপর কিজানি হলো রাহুলের হো হো করে হাসতে লাগলো। হাসি জেনো থামছেই না। এভাবে মনে হয় রাহুল আজ পর্যন্ত হাসেনি। কিন্তু হীর এর কাজে আজ রাহুলের কম হাসির রেকর্ড ভেঙে গেলো। রাহুল ভাবছে মেয়েটা ভয়ে কেমনে দৌড়ে পালালো। তারপর রাগুল কোনো রকম হাসি থামিয়ে গাড়ী নিয়ে নিজের ফ্লাটে চলে গেলো। রাতে আবার তার পূর্নির কাছে জেতে হবে। বোন কে একা রাখেনা রাতে রাহুল। মেয়েটা অন্ধকার ভয় পায়। যদিও পূর্নির জ্ঞান নেই এখন। তাও রাহুল একা রাখেনা রাতে পূর্নিকে।
.
.
আজ দুদিন হলো আমি বিল্ডিং থেকে তো দূর ফ্লাট তো দূর রুম থেকেও কাজ ছাড়া বেরুই না। আমার বিশ্বাস ঐ গুন্ডাটা আমায় তাকে এতো কথা বলার জন্যে ছেড়ে দিবে না সেই ভয়ে কোথাও যাইনা। বারান্দায় ও না। একদম রুম লক করেরেখেছি নিজেকে।এর মধ্যে আমি খেয়াল করেছি ভাইয়া একদম চুপচাপ থাকে। সারাদিন রুমে পড়ে থাকে এখন আর বাইরে যায় না। মার সাথে শুধুশুধু ই রেগে যায়। এমনিতে ভাইয়া কোনো সময় মার সাথে এভাবে কথা বলেনা। কিন্তু ইদানীং এমন করে বুঝিনা ভাইয়ার মধ্যে কি ঝড় চলছে। ভাইয়ার সাথে কথা বললার সাহস ও করে উঠতে পারছিনা। কিভাবে বলবো কই থেকে শুধু করবো এই সবি ভাবি এখন। কিন্তু কথা বলতে হবে পূর্নির কথা বাদ দিলেও। আমার ভাই নিজেও যে ভালো নেই তা আমার বুঝতে বাকি নেই। আর কারণ টাও যে পূর্নি সেটাও!! তাই কথা তো বলতেই হবে।
.
.
বিকেলে টুংটাং ফেসবুকিং করছিলাম। আর শিহাব এর সেড স্টেটাস দেখছিলাম আর আনন্দ পাচ্ছিলাম এর মধ্যে। কেউ দরজায় জোরে জোরে ধাক্কাচ্ছে। আমি ধাক্কানোর চটে কোনোরকম দরজা খুলতেই হুরমুরিয়ে রাইসা ঢুকে বেডে গিয়ে হাত পা ছরিয়ে বসে পড়লো। আমি দরজা লাগিয়ে বললাম।
— টর্নেডোর মতো কই থেকে আসলি এতো দিন পড়??
— রাখ তোর আসা যাওয়া। জানিস!!
— না বললে কেমনে জানবো??
— ইসস বলছি। ঐ যে কিউট, হ্যান্ডছাম, ড্যাশিং টা আছে না!!
— কে আছে না!! বুঝিয়ে বল।
— আরে তোকে যে হস্পিটাল মিয়ে গেলো??
.
আমি বুঝলাম রাহুলের কথা বলছে এই লুইচ্চা মাইয়া।সুন্দর ছেলে দেখলেই হলো। সি আই ডির মতো খুটিয়ে খাটিয়ে তার বায়োডেটা বের না করা পর্যন্ত এই মেয়ের শান্তি নেই বললেই চলে। আমি বললাম।
— হ্যাঁ কি হইছে এখন??
— জানিস ও কে??
.
আমি না জানার ভাব করলাম!!
— কে??
— এই বিল্ডিং এর বাড়ি ওলার একমাএ ছেলে রাহুল চৌধুরী………!
.
এই কথা শুনে অবাক না হলেও এর পড়ে কথাটা শুনে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। রাহুল………
.
.
চলবে?
[ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন! আর একটা কথা না বললেই নয়। আমি কাউকে জোর করিনি আমার গল্প পড়তে তাই। অপেক্ষা করতেই হবে একটু গল্প পড়তে হলে। লিখিকার ও প্রবলেম আছে বুঝতে হবে।আমার কথা কষ্ট পেলে দুঃখিত আমিও কথাটা কষ্ট পেয়েই বলছি ?]

Roja Islam

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে