তুমি নামক সপ্তর্ষি মন্ডলের প্রেমে পর্ব – ১২

0
1291

#তুমি নামক সপ্তর্ষি মন্ডলের প্রেমে💖
#মিফতা তিমু
#পর্ব -১২

‘ ভাই একটা হাড়িতে কত জনের বিরিয়ানি ধরে? ‘ ওয়েটার কে জিজ্ঞেস করলেন ডাক্তার সাহেব।

‘ আপনার উপর নির্ভর করে।আপনি যদি হাফ চান তাহলে একটা হাড়িতে একজনের আর যদি ফুল চান তাহলে সেটাতে দুই জনের।কোনটা নিবেন আপনি? ‘ বললো ওয়েটার।

‘ তাহলে ভাই আপনি একটা হাফ আর একটা ফুল নিয়ে আসুন। ‘ মুচকি হেসে বললেন ডাক্তার সাহেব।

ওয়েটার আচ্ছা বলে চলে গেলো।আমি আহাম্মক হয়ে গেছি উনার কথা শুনে।হা করে চেয়ে আছি উনার দিকে।উনি আমার দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে ফেলেন।কিছুক্ষণ পর বললেন,
তাহরীম: মুখটা বন্ধ করুন মিসেস আফরিন।আপনার মুখে তো মাছি ঢুকে যাবে।মাছি খেয়েই কি পেট ভরবেন?তাহলে বিরিয়ানি কি করে খাবেন? আমি যে আমাদের জন্য অর্ডার দিলাম সেটার কি হবে?

উনার কথা শুনে আমি যেন বিস্ময়ের চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছি।উনি এসব কি বলছেন? মাথা কি ঠিক আছে?আমি শুকনো ঢোক গিলে বললাম,
আফরীন: ওয়েটার বললো ফুল হাড়িতে দুজন আর হাফ হাড়িতে একজন তারমানে আপনি তিনজনের খাবার অর্ডার করেছেন।কিন্তু আমরা তো দুজন।বাকি একজন কে খাবে?
তাহরীম: কেন আমি খাবো। ফুলটা আমার আর হাফ তোমার।তুমি যা মানুষ আমার তো সন্দেহ তুমি আদৌ হাফ হাড়ি খেতে পারবে তো?তুমি underweight….

আফরীন: আপনি ফুল হাড়ি খাবেন?
তাহরীম: হ্যাঁ তো কি হয়েছে? ছিঃ ছিঃ আফরিন তুমি তোমার বরের পছন্দ জানোনা।এতদিন হলো বিয়ে হয়েছে কিন্তু এখন অব্দি জানতে পারলে না তোমার বর ভীষণ ফুডি…
আফরীন:কিন্তু আপনি তো ডক্টর…
তাহরীম: সো হোয়াট? ডাক্তাররা কি পছন্দমত খেতে পারবে না?
আফরীন: সেটা না আসলে ডাক্তাররা অনেক হেলথ কানসাস হয়।তারা এত ওইলি ফুড খায় না আর বিরিয়ানি তো অনেক অইলি তাই আমি ভেবেছিলাম আপনি তেমন একটা খাবেন না।কিন্তু আপনি যে খাওয়ার ব্যাপারে সৌখিন জানতাম না।
তাহরীম: শেম অন ইউ আফরিন।এই তোমার ভালোবাসা তোমার বরের প্রতি? কোনো খেয়াল নেই তোমার আমার প্রতি। বরের জন্য একটু তো ভালোবাসা রাখতে পারতে নাকি?

উনার কথা শুনে ইচ্ছা করছে এখন এই হোটেল যদি বিশ তলা হতো তাহলে সেই বিশ তলা থেকে পড়ে সুইসাইড করতাম। হে আল্লাহ একে বুদ্ধি দাও।পুরোই পাগল হয়ে গেছে লোকটা।একেক সময় একেক কথা কেন বলেন উনি সেটাই বুঝতে পারিনা।

অবশেষে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর সেই কাঙ্ক্ষিত বিরিয়ানি হাজির।আমার মনটা আকুপাকু করছে।আমি খাওয়ার জন্য যতটা এক্সসাইটেড খাইতে সময় অতটা যে খেতে পারব না তা আমি জানি।আমি শুধু মুখেই বুলি বের করি কিন্তু কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা।

ডাক্তার সাহেব আমার আর উনার প্লেট টা সেট করে ওয়েটার কে বললেন সার্ভ করতে।ওয়েটার সার্ভ করতেই উনি খাওয়া শুরু করলেন।উনি দুই লাইন খাচ্ছেন আর একটা করে প্রশংসা করছেন।খাবারের মধ্যে কি কি দেওয়া হয়েছে তা নিয়েও আলাপচারিতা করছেন ওয়েটারের সঙ্গে।উনার উপর রীতিমত অনেক রাগ উঠছে আমার।আমি খেতেই পারছিনা আর উনি খেতে খেতে বকবক করছেন।

আমি যখন দেখলাম উনি কথা বলতেই ব্যস্ত তখন রেগে ওয়েটার কে বললাম,
আফরীন: ভাই আপনি এই খাবারগুলো নিয়ে যান।আমি এর বিল দিয়ে দিবো।
আমার কথা শুনে ওয়েটার ডাক্তার সাহেবের দিকে অসহায় চোখে তাকালো কারণ এখন আমার না খাওয়ার কারণে এতগুলো খাবার নষ্ট হবে। ডাক্তার সাহেব বললেন,
তাহরীম:আপনি যান আমি দেখছি।

ওয়েটার নিঃশব্দে মাথা নেড়ে চলে গেলো।উনি উনার প্লেট নিয়ে আমার পাশে এসে বসলেন তারপর আমার প্লেট থেকে এক লোকমা তুলে নিয়ে নিজের অন্যহাত দিয়ে আমার থুতনি চেপে মুখে এক লোকমা দিতে দিতে বললেন,
তাহরীম: আর যাই করো কোনোদিন খাবার নষ্ট করোনা।ভাতের একটা দানার নষ্টের জন্য তোমাকে অনেক বড় শাস্তি পেতে হবে আফরিন।তুমি খেতে পারছ নাতো?

আমি উনার কথা শুনে নিঃশব্দে মাথা নেড়ে সায় দিলাম।উনি বললেন,
তাহরীম: না খেতে পারলে আমায় বলা উচিত ছিল তোমার। যাই হোক এখন খাইয়ে দিচ্ছি খেয়ে নাও।ভালো লাগছে খেতে?
আফরিন: হুম….
তাহরীম: আচ্ছা এখন আমার জায়গায় যদি তোমার ঐ ফারহান স্যার থাকতো তাহলে আরও বেশি ভালো হতো তাইনা?

আফরিন: হ্যাঁ ভালই হতো বলুন।আপনি তো উনার ক্লাসমেট।উনি এলে আপনাদের আড্ডা দেওয়া হয়ে যেত। তাছাড়া উনার সঙ্গে অনেককিছু নিয়ে ডিসকাস করতে পারতাম।আমার কথা শুনে কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন উনি।তারপর চোয়াল শক্ত করে বললেন,
তাহরীম: নেক্সট টাইম আমার বদলে ওকে নিয়ে ঘুরতে বের হবে ঠিকাছে?
আফরিন: আরে রাগ করছেন কেন?আমি তো শুধু মজা করছিলাম।উনি কেন আসবেন আমাদের সঙ্গে?
তাহরীম: কথা বাদ দিয়ে আগে খাও।
তারপর উনার কথা মত আমি খাওয়ায় মন দিলাম।এরপর আমরা দুজনেই খেয়ে নিলাম। খাবারটা দারুন হয়েছিল বিশেষ করে ডাক্তার সাহেবের তো বেশিই ভালো লেগেছে।ডাক্তার সাহেব বিল মিটিয়ে দিয়ে আমায় নিয়ে বেরিয়ে এলেন।

‘ এবার কি করবো আমরা? ‘ প্রশ্ন বিদ্ধ চাহনিতে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলাম ডাক্তার সাহেবের দিকে।

‘ আগে খাবারটা হজম করি তারপর দেখা যাবে কি করা যায়। ‘ বললেন উনি।

‘ খাবার হজম কি করে করবো? ‘ বললাম আমি।

তাহরীম: হজম করার জিনিস খেয়ে।এখন আমরা বোরহানি খাবো।আমার ফেভারিট বোরহানি।
আফরিন: তাহলে চলুন বোরহানি আছে কিনা দেখি।
তাহরীম: আছে নাকি মানে? থাকতেই হবে। চলো….

তারপর আমরা দুজনে একসঙ্গে একটা হোটেলে ঢুকলাম।ডাক্তার সাহেব ঢুকেই আমায় নিয়ে সকলের মাঝ দিয়ে ডিঙিয়ে ভিতরে এক কোণে চলে এলেন।তারপর গলা ছেরে হাক দিলেন একটা ছেলেকে।ছেলেটা কে বললেন লস্যি নিয়ে আসতে।এখানের লস্যি খুব জনপ্রিয়।

‘ আচ্ছা ডাক্তার সাহেব আপনি তো ডাক্তার।আপনি যে এসব অইলী ফুড খান,আপনার ভয় করেনা আপনার হেলথ নিয়ে। ‘ বললাম আমি।

‘ আমি ডক্টর,আমার কাজ হলো আমার পেশেন্টদের বলা যেন তারা ওইলী ফুড না খায়।আমি ডক্টর আমার কাজ এডভাইস দেওয়া,আমি কেন আমারই দেওয়া এডভাইস মানব। ওয়েলি ফুড খাওয়া মানা আমার পেশেন্টের, আমার না। ‘ বললেন ডাক্তার সাহেব।

আমি তব্দা খেয়ে গেছি উনার কথা শুনে।এমন আজব লোক আমি আমার লাইফে দেখিনি।উনার তো কোনোকিছু নিয়েই কোনো সিরিয়াসনেস নেই।লোকটা দেখি একদিন আমায়ও পাগল বানিয়ে ছাড়বে।

লস্যি দিয়ে গেলে আমরা দুজন তাতে চুমুক দিলাম।আমি খেতে খেতে বললাম,
আফরিন: আপনি কি আপনার বদ অভ্যাসগুলো জানেন?
আমার কথায় মনে হলো ডাক্তার সাহেব অবাক হলেন।আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে বললেন,
তাহরীম:আমার আর বদ অভ্যাস?তুমি জানো আমার বদ অভ্যাস?
আফরীন: হুম জানি তো তবে আপাতত দুটো জানি।এক আপনি প্রচন্ড সিগারেট খান।আর দুই আপনি হেলথ কনশাস নন।
তাহরীম: তুমি বুঝি হেলথ কনশাস?মিসেস আফরিন তুমি হয়তো আমায় চিননা কিন্তু আমি তোমায় অনেক ভালোমত চিনি।তুমি যে কি পরিমান স্ট্রিট ফুড খেতে পারো সেটা আমার ভালোমত জানা আছে।
আফরীন: আপনি কি করে জানলেন আমার স্ট্রিট ফুড পছন্দ?

আমার অতর্কিত প্রশ্নবাণে ডাক্তার সাহেব চুপ করে গেলেন।অতঃপর খাওয়ায় মন দিলেন।খাওয়া শেষে আমরা বেরিয়ে এলাম।এবার ডাক্তার সাহেব আমায় অবাক করে দিয়ে বললেন,
তাহরীম: একটা জায়গায় যাবেন মিসেস আফরিন?
আফরিন: আর খেতে পারব না ডাক্তার সাহেব।আমার গলা অব্দি ভরে গেছে খাবার। পেটে আর জায়গা নেই আমার।

‘ এখন এর জায়গায় ফুচকা খেতে যেতে বলতাম তাহলে ঠিকই যেতেন। ‘ বললেন ডাক্তার সাহেব।

আমি উনার কথা শুনে উনার দিকে আঙুল উঠিয়ে বললাম,
আফরীন: খবরদার ডাক্তার সাহেব।আমার ফুচকা নিয়ে যদি কিছু বলেছেন তাহলে আমি কিন্তু আপনার সাথে আর কথা বলবো না।

‘ এখন এসব কথা বাদ দিন।আমার সঙ্গে আগে এক জায়গায় চলুন। ‘ আমার হাত ধরে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে বললেন কথাগুলো ডাক্তার সাহেব।

তারপর উনি ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলেন।গাড়ি পথ ধরেছে পুরান ঢাকার বাহিরের দিকে।কিছুক্ষণ পর গাড়ি থেমে গেলো।ডাক্তার সাহেব গাড়ি এক নির্জন জায়গায় দাড় করিয়েছেন।আমি উনার এহেন কাজে অবাক হয়ে গেছি।উনি নিজে গাড়ি থেকে বের হয়ে আমার হাত ধরে গাড়ি থেকে বের করলেন আমায়।আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি উনার দিকে।

আমরা গাড়ির থেকে বের হতেই হুট করে জায়গাটা হলদে রঙের জোনাকি পোকায় ভরে গেলো।মনে হচ্ছে কেউ যেন অনেকগুলো জোনাকি পোকা কে একসঙ্গে খাচা মুক্ত করেছে।এবার আমি আশেপাশে তাকালাম। একি আমরা তো একটা দীঘির পারে দাড়িয়ে আছি।আমি ডাক্তার সাহেব কে বললাম,
আফরিন: এটা আমরা কোথায় এসেছি ডাক্তার সাহেব?
তাহরীম: নীল দিগন্তের পাড়ে…
আফরীন: নীল দিগন্ত!
তাহরীম: হুম।এই দীঘির পাড় থেকে খুব সুন্দর সূর্যাস্ত দেখা যায়।একলা সময় কাটানোর জন্য খুব সুন্দর একটা জায়গা এটা।
আফরীন: কিন্তু আমরা এখানে কেন?

‘ জানেন তো মিসেস আফরিন আপনি বড্ড চঞ্চল।কোনকিছুতে চুপচাপ বসে থাকতে পারেন না।কথা আপনার বলা চাই। ‘ বললেন ডাক্তার সাহেব।

আমি উনার দিকে ছোটো ছোটো চোখে তাকালাম।ডাক্তার সাহেব আমায় ইসারা বললেন উনি দুই মিনিটের মধ্যে আসছেন বলে গাড়ির কাছে চলে গেলেন।আমি সেখানে দাড়িয়েই অপেক্ষা করতে লাগলাম।মিনিট দুয়েক পর ডাক্তার সাহেব ফিরে এলেন হাতে একটা জিনিষ নিয়ে।উনার হাতে রঙিন কাগজে মোড়ানো একটা জিনিষ।জিনিসটা নিয়ে আমার সামনে এলেন।

আমি উনার হাতে থাকা চারকোনা আকৃতির জিনিসটার দিকে তাকিয়ে আছি।উনি আমার হাতে জিনিসটা ধরিয়ে দিয়ে বললেন,
তাহরীম: আপনার জন্মদিনের উপহার মিসেস তাহরীম মেহমাদ।
আফরীন: আবার সারপ্রাইজ! আমায় সারপ্রাইজ দিতে দিতেই মেরে ফেলুন আপনি।
তাহরীম: খুলে দেখুন আপনার ভালো লাগবে।
আফরীন: সত্যি বলছেন? প্রমিজ…
তাহরীম: প্রমিজ… আই হোপ জিনিসটা আপনার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার হবে।

উনার কথা শুনে আমি খুশিতে নাচতে নাচতে রেপার টা খুললাম। রেপারটা খুলতে খুলতেই একটা মেয়ের চোখ নজরে পড়লো রেপারের ভিতরে থাকা জিনিসটায়।আমি তাড়াহুড়ো করে রেপার খুললাম। রেপার খুলতেই আমার সামনে হলদে আলোয় ভেসে উঠলো এক যুবতীর প্রগাঢ় হাস্যজ্জ্বল মুখ।আমি অবাক চোখে তাকালাম পেইন্টিংটার দিকে।পেইন্টিং এ সেই অবিকল আমার চেহারা।এই ছবিটা তো কলেজ ফাংশনের দিন তুলেছিলাম। আর্যাল তুলে দিয়েছিল আমায়।

কিন্তু এই ছবিটা তো অইল পেইন্টিং পোর্ট্রেট।তবে কি ডাক্তার সাহেব পেইন্টিং করেন? আমি প্রশ্ন বিদ্ধ চাহনি দিয়ে বললাম,
আফরীন:এটা কি আপনি একেছেন?
তাহরীম: কই শাখ?
আফরীন:আপনি পেইন্টিং করেন জানতাম নাতো।
তাহরীম: এমন কতকিছুই তো আছে যা আপনি জানেন না।
আফরিন: আচ্ছা আপনি এরকম দুরকম ব্যবহার করেন কেন ডাক্তার সাহেব?আমি তো আপনাকে বুঝতেই পারিনা।

তাহরীম: আপনি কোনদিনই আমায় বুঝতে পারবেন না আফরিন।আমি হলাম চোরাবালি, যার সঙ্গে আপনি যতটা জড়াবেন তার ঠিক ততটাই গভীরে তলিয়ে যাবেন।
আফরীন: মানে?
তাহরীম: কিছু না।পেইন্টিং টা পছন্দ হয়েছে?
আফরীন: খুব…আমি না এই ছবিটাকে সবসময়ের জন্য আমার কাছে রেখে দিবো।
ডাক্তার সাহেব কিছুই বললেন না।অতঃপর আমরা বাড়ির পথে রওনা দিলাম।গাড়িতে আবারও সেই গানটা ছাড়লেন ডাক্তার সাহেব। গানটা কানে আসতেই আবারও সেই ছেড়া স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠলো।আমি হঠাৎ এই ছেড়া স্মৃতিগুলো নিতে পারছি না।দম বন্ধ হয়ে আসছে। মাথাটা প্রচন্ড যন্ত্রণা করছে।কোনমতে মাথা চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে রাখলাম।চোখ বন্ধ করে রাখতে রাখতে কখনো যে ঘুমিয়ে পড়লাম বুঝতেই পারলাম না।

~ চলবে ইনশাল্লাহ্

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে