তুমি নামক সপ্তর্ষি মন্ডলের প্রেমে পর্ব -১৩

0
1279

#তুমি নামক সপ্তর্ষি মন্ডলের প্রেমে💖
#মিফতা তিমু
#পর্ব-১৩

‘ হ্যালো তাহরীম বাবা তুই কোথায়? তোরা কখন ফিরবি?সেই রাতে বেড়িয়েছিস কিন্তু এখনও ফিরলি না। ‘ তাহরীম কে ফোন দিয়ে তাহরীম রিসিভ করতেই কথাগুলো বললেন রহিমা বেগম।

‘ মা….মা…. আফরীন….’ কাপা কাপা কণ্ঠে ফোনের ওপার থেকে বললো তাহরীম।

তাহরীমের ভিতগ্রস্থ কণ্ঠ শুনে রহিমা বেগমের মনটা উচাটন করে উঠলেন।অশনি সংকেত এর পূর্বাভাস পাচ্ছেন উনি তাহরীমের গলায়।এইদিকে তাহরীম আর আফরীন এর খবর জানার জন্য নিহা, আকাশ, তাহসান,রিমা আর আরিদ সকলেই অপেক্ষা করছে।সকাল হতেই তাহরীম আর আফরিন না ফিরে আসাতে আকাশ কে ডেকে পাঠিয়েছি নিহা।রহিমা বেগম ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বললেন,
মা:কি হয়েছে তাহরীম?তোরা কোথায়?আফরীন… আফরিনের কি হয়েছে?
ওপাশ থেকে তাহরীম কান্না ভেজা গলায় বললো,
তাহরীম: মা কাল আমরা বাড়ির পথেই ফিরছিলাম।হঠাৎ আফরিন মাথায় হাত দিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলো।সবেমাত্র ওকে আমি ঢাকা মেডিকেল এ নিয়ে এসেছি।মা তোমরা তাড়াতাড়ি এসো।দেখো না আফরিন কথা বলছে না।তোমরা…. কথা বলতে পারলো না তাহরীম।তার আগেই ওপাশ থেকে কলটা কেটে গেলো।

হসপিটালের করিডোরে অনবরত পায়চারি করে চলেছে তাহরীম।আশেপাশের লোকেরা বারবার আড়চোখে ওকেই দেখছে।কিছু কিছু নার্স তো কানাঘুষাও করছে।মেডিক্যাল ক্যারিয়ারে অনেকদিন ধরে থাকার কারণে অনেকেই চিনে তাহরীমকে। আশেপাশের মানুষ আসতে যেতে তাহরীমকে দেখছে কিন্তু তাহরীমের সেই দিকে কোনো হুস নেই।

অনেকক্ষন পায়চারি করার পর বিরক্ত হয়ে সিটে বসে পড়লো তাহরীম।ডক্টর এখনো কেন বের হচ্ছে না সেটাই ওর প্রশ্ন।হঠাৎ ঘাড়ে কারোর হাত বুঝতে পেরে পাশ ফিরে তাকালো তাহরীম।ওর পাশে অর্ণব বসে আছে।প্রশ্ন বিদ্ধ চাহনিতে তাকিয়ে আছে ওর দিকে।ওর সেই জিজ্ঞাসু দৃষ্টি দেখে তাহরীম মাথা নামিয়ে নিলো।অর্ণব অবাক গলায় তাহরীমের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো,
অর্ণব: তুই এখানে কেন?এরকম হাল হয়েছে কেন?

নিজের পুরনো বন্ধুর আবেগমাখা বিস্ময় সূচক কথা শুনে তাহরীম সাথে সাথে অর্ণব কে জড়িয়ে ধরলো।অর্ণব অবাক হলো তাহরীমের ব্যবহারে।আজ কতদিন পর মানুষটা তাকে জড়িয়ে ধরলো।এক কালে দুজন অনেক ভালো বন্ধু ছিল কিন্তু কালের আবির্ভাবে তাদের বন্ধুত্বটা নষ্ট হয়ে গেছিলো এক জনের জন্য।সেইদিনের পর থেকে তাহরীম আর তার সঙ্গে কথাও বলে না আর কথায় কথায় জড়িয়েও ধরে না।

‘ কি হয়েছে তাহরীম?কিছু কি হয়েছে?আমায় বল তাহরীম ‘ বললো অর্ণব।
তাহরীম: আফরীন এর অবস্থা অনেক খারাপ অর্ণব। ওকে হসপিটালে এডমিট করিয়েছি।
তাহরীমের কথা কানে যেতেই অর্ণব চমকে উঠলো।ভালোবাসার মানুষটা কে শেষ দেখেছিল বিয়ের বেনারসি পড়ে বউ সাজে তবে নিজের বউয়ের সাজে নয় বরং বন্ধুর বউয়ের সাজে।সেদিন এক প্রকার ভালোবাসার কাছে হেরে গিয়েই অধিকারটা ছেরে দিয়েছিল।সুস্থ সবল মেয়েটা কে যে এতদিন পর অসুস্থ অবস্থায় দেখতে হবে জানলে হয়তো কোনদিন তাকে ছেরে দিতো না।

‘ ওকে আমি তোর ভরসায় ছেড়ে ছিলাম তাহরীম।তুই পারলি না আমার মর্যাদা রাখতে। পারলি না আমার দুষ্টু পরীর খেয়াল রাখতে।তোকে ওর থেকে নিয়ে যাবো আমি। ‘ বললো অর্ণব।

অর্ণব এর কথায় ঘাবড়ে গেল তাহরীম।অর্ণব এর থেকে একশো হাত দূরে সরে গেলো আর বললো,
তাহরীম: না অর্ণব না তুই আমার প্রিয়দর্শিনী কে আমার থেকে কেড়ে নিতে পারিস না।প্রিয়দর্শিনী শুধু আমার।এত বছর আমি অপেক্ষা করেছি শুধু ওকে পাবো বলে।তুই আমার অপেক্ষায় জল ঢেলে দিতে পারিস না।

অর্ণব: অর্ণব চৌধুরী একবার যা বলে তাই করে।আমি তো আফরিন কে তোর কাছ থেকে নিয়ে যাবই আর তুই শুধু দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারবি না।

স্বপ্নটা দেখতেই বিকট এক চিৎকার দিয়ে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠলো তাহরীম। ডাক্তার সাহেবের চিৎকারে আমিও উঠে বসলাম।তড়িঘড়ি করে বিছানা থেকে নেমে ঘরের লাইট জ্বালালাম।লাইট জ্বালিয়ে দেখলাম ডাক্তার সাহেব পুরো ঘেমে গেছে।আমি উনার কাছে দৌড়ে গেলাম।ডাক্তার সাহেব কে দেখেই বুঝা যাচ্ছে উনি অনেক ভয় পেয়ে গেছেন।

আমি তড়িৎ গতিতে ঘর ছেড়ে বাহিরে বেরিয়ে এলাম।উনার জন্য তাড়াতাড়ি এক গ্লাস পানি নিয়ে ছুটে গেলাম ঘরে।ঘরে গিয়ে দেখি ডাক্তার সাহেব এখনো একই ভাবে বসে আছেন।দৃষ্টি তার স্থির সামনে থাকা দেওয়ালের দিকে।আমি উনার কাছে গিয়ে উনার পাশে বসলাম তারপর উনার কাধে হাত রাখলাম।উনি সাথে সাথে আমায় জড়িয়ে ধরলেন। আরেকটুর জন্য পানির গ্লাসের থেকে পানি বিছানায় পড়তে পড়তে বেচেঁ গেছে।উনি আমায় শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কিছু একটা বিড়বিড় করছেন।আমি ভালো করে শুনার চেষ্টা করলাম।উনি বলছেন,
তাহরীম: আপনাকে আমি কোথাও যেতে দিবো না আফরিন… কোথাও না….আপনি কোথাও যাবেন না।

ক্রমশ ডাক্তার সাহেবের গলা পরিষ্কার হয়ে এলো।এবার উনি জোরে জোরে বলতে লাগলেন উনি আমায় যেতে দিবেন না।বুঝলাম উনি কোনো খারাপ সপ্ন দেখেছেন তাই উনার মাথায় হাত রেখে বুলিয়ে দিতে দিতে বললাম,
আফরিন: ডাক্তার সাহেব এই জান্নাতুল আফরিন কাজী বেচেঁ থাকতে কোনোদিন আপনাকে ছেড়ে যাবে না।আপনি নিজের মুখে না বললে কখনোই যাবো না আপনাকে ছেরে।

এবার উনি আমার কথা শুনে যেন একটু আশ্বস্ত হলেন।আমার দিকে তাকিয়ে প্রগাঢ় চাহনি নিক্ষেপ করে বললেন,
তাহরিম: প্রমিস তো?
আফরিন: এটা মিসেস মেহমাদের প্রমিজ।তার আগে প্রমিজ করুন আপনি আর বারবার বলবেন না যে দেড় বছর পর আলাদা হয়ে যাবো।আমার সঙ্গে দুরকম আচরণ করবেন না প্রমিজ করুন।
আমার কথা শুনে ডাক্তার সাহেব সাথে সাথে বললেন,
তাহরীম: আর কখনো আপনাকে জ্বালাবো না প্রিয়দর্শিনী।আর কখনও জ্বালাবো না।আপনার সব কথা শুনবো তবুও আমায় ছেড়ে যাবেন না।
আফরিন: যাবো না…
আমার কথা শুনে ডাক্তার সাহেব শান্ত হয়ে আমার পায়ে মাথা রেখে শুলেন।আমি উনার চুলে বিলি কেটে দিতে লাগলাম।একসময় বিলি কাটতে কাটতে কখন যে বেডের হেডে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম বুঝতেই পারলাম না।

ঘুম ভাঙলো পাখির কিচিরমিচির ডাকে। বারান্দায় সকাল হওয়াতে চড়ুই পাখি এসেছে।আজকের দিনের সূচনাটা হয়েছে এক দারুণ ভাবে।কালকে রাতে ডাক্তার সাহেবের বলা সেই কথাগুলো আমায় বেশ ভাবিয়ে তুলছে।মনে হচ্ছে ঘুম থেকে উঠে হয়তো উনি অস্বীকার করতে পারেন যেহেতু কাল বেশ ভয়ে ভয়ে কথাগুলো বলেছেন।

‘ সকাল সকাল আমার দিকে তাকিয়ে কি আকাশ কুসুম ভাবনা করা হচ্ছে মিসেস আফরিন? ‘

হঠাৎ ভাবনার মাঝে উনার গলা পেয়ে ভাবনা থেকে বেরিয়ে এলাম।উনার দিকে পূর্ণ দৃষ্টি প্রয়োগ করলাম।উনার ঠোঁটে সেই চিরচেনা হাসি।আমি বললাম,
আফরিন: কালকে রাতে কি আপনি কোনো বাজে সপ্ন দেখেছিলেন আমায় নিয়ে?
আমি ভেবেছিলাম উনি হয়তো অস্বীকার করবেন কিন্তু আমায় অবাক করে দিয়ে উনি বলে উঠলেন,
তাহরীম: হ্যাঁ দেখেছি।
আমি ভ্রু কুচকে বললাম,
আফরিন: কি দেখেছেন?
তাহরীম: তোমার শরীর খারাপ হয়েছে আর আমি হসপিটালে ওটির বাইরে তোমার জন্য ওয়েট করছি।তখন অর্ণব এলো আর আমি ওকে সব খুলে বললাম। ও বললো যে ও নাকি তোমাকে আমার ভরসায় রেখেছিল কিন্তু আমি তোমার খেয়াল রাখতে পারিনি তাই ও তোমাকে আমার কাছ থেকে দূরে নিয়ে যাবে।

কথাটা ডাক্তার সাহেব এমন ভাবে মুখ করে বললেন যে আমি না হেসে পারলাম না।আমার একটা বদ অভ্যাস আছে।আমি সিরিয়াস মোমেন্টে হেসে দেই আর আজও তাই করলাম।আমায় হাসতে দেখে ডাক্তার সাহেব রেগে গেলেন।উনি গভীর গলায় বললেন,
তাহরীম: আমি আপনাকে নিয়ে বাজে সপ্ন দেখে ভয় পেয়ে গেছি আর আপনি হাসছেন?
আফরিন: হাসবো নাতো কি করবো?আপনি নিজেই বলেন যে কয়দিন পর আমরা আলাদা হয়ে যাবো আর নিজেই সপ্ন দেখে ভয় পান।এসব সপ্ন তোআমার দেখার কথা।তাছাড়া আমরা আলাদা হয়ে গেলে তো আপনারই লাভ।

তাহরীম: আসলে আপনি বড্ড ঘাড়ত্যাড়া।কাল আমায় দিয়ে প্রমিজ করালেন যেন আমি আর আমাদের আলাদা হওয়ার কথা না বলি আর আজ আপনি নিজেই বলছেন সেই কথা।ঠিক আছে যা ইচ্ছা করুন।আর একবার যদি আমার সঙ্গে কথা বলতে এসেছেন তাহলে দেখবেন আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না বলে উনি আমায় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বাথরুমে চলে গেলেন।

আমি হাসতে হাসতে বিছানা গুছিয়ে নিলাম।ডাক্তার সাহেব কে এভাবে জ্বালাতে যে আমার বড্ড ভালো লাগে। উনি যখন রাগ করেন তখন উনার ফর্সা নাকটা লাল হয়ে টমেটো হয়ে যায় যেটা দেখলেই আমার উনার নাক কামড়ে দিতে ইচ্ছা করে তবে চাইলেই কি সব করা যায়।

আজ থেকে আবার নিউ জার্নি শুরু।অনেকদিন ধরে কলেজ যাইনা।এখন কলেজে না যাওয়ার কারণে যে নোটস গুলো পাইনি ওগুলো সব কালেক্ট করতে হবে।সব পড়া বুঝে নিতে হবে।কত কাজ আমার।এত ভাবাভাবি করলে চলবে নাকি? যাই বরং ডাক্তার সাহেব বের হলে ফ্রেশ হয়ে নী।

কিছুক্ষণ পর ডাক্তার সাহেব মুখটা কে গোমড়া করে বেরিয়ে এলেন।উনার পরণে শুধু সাদা গেঞ্জি।আমি আলমারি থেকে জামা কাপড় বের করে বাথরুমের দিকে এগিয়ে গেলাম। কী মনে হতেই পিছনে ঘুরে ডাক্তার সাহেবের কাছে এলাম।আমায় উনার কাছে গিয়ে দাঁড়াতে দেখে ডাক্তার সাহেব ভ্রু কুচকে তাকালেন আমার দিকে।আমি আচমকা উনার গাল দুটো টেনে ‘ আমার পিচ্চি বর ‘ বলেই বাথরুমের দিকে ভো দৌড় দিলাম।

ঘটনার আকস্মিকতায় তাহরীম স্তব্ধ হয়ে গেছে।একটু আগে মাত্র কি ঘটে গেলো সেটা বুঝতে ওর মিনিট দুয়েক সময় লাগলো।তারপর যখন বুঝতে পারলো আফরিন ওর গাল টেনেছে তখন ওর মুখ আপনিতেই হা হয়ে গেলো। ও বিশ্বাস করতে পারছেনা এই পিচ্চি মেয়েটা নাকি ওর গাল টেনেছে।

বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এলাম।বাহিরে এসে দেখলাম ডাক্তার সাহেব গুনগুন করতে করতে উনার শার্টের বাটন লাগাচ্ছেন। হঠাৎ উনি বাটন লাগাতে লাগাতে থেমে গেলেন তারপর শার্টের দিকে দৃষ্টি দিয়ে বলে উঠলেন ও শিট…

আমি উনার বিরক্ত মুখ দেখে বললাম,
আফরিন: কি হয়েছে ডাক্তার সাহেব?কিছু হয়েছে?
তাহরীম: আরে না না কি হবে কিছুই হয়নি।তুমি ফ্রেশ হয়েছে।রেডি হয়ে নাও কলেজে যেতে হবে।
আফরিন: আপনি বলবেন নাকি আমি একাই না খেয়ে না দেয়ে কলেজ চলে যাবো।

আমার কথা শুনে ডাক্তার সাহেব বিপাকে পড়ে গেলেন।হয়তো ভাবছেন বলবেন কি বলবেন না।অবশেষে এক প্রকার বাধ্য হয়েই ইতস্তত করতে করতে বললেন,
তাহরীম: না আসলে শার্টের বাটন টা ছিঁড়ে গেছে।
আফরিন: তো এই ব্যাপার।আমায় বলবেন না। দাড়ান আমি লাগিয়ে দিচ্ছি।
তাহরীম: আরে তোমায় কষ্ট করতে হবে না।আমি শার্টটা বদলে নিচ্ছি।
আফরিন: আরে এখানে কষ্টের কি আছে।দুই মিনিটেরই তো বেপার।আপনি দাড়ান আমি আসছি বলে আমি ড্রেসিং টেবিলের দিকে এগিয়ে গেলাম।সেখানে থাকা সুতার বক্স থেকে সাদা সুতা আর সাদা বাটন নিয়ে ডাক্তার সাহেবের শার্টে লাগাতে লাগলাম।

আফরিন এখন তাহরীমের এতটাই কাছে যে আফরিন এর নিশ্বাসের শব্দ শুনতে পাচ্ছে তাহরীম। আফরীন এর কাছাকাছি গেলেই ও বেসামাল হয়ে পড়ে।নিজেকে সামলাতে পারেনা তাইতো ওকে বলতে চাচ্ছিল না।কিন্তু আফরিন তো বাধ্য করলো ওকে বলতে।

আমি সিলাই করে সুতোটা দাঁত দিয়ে ছিড়লাম তারপর বললাম,
আফরিন: ধরুন আপনার শার্ট সিলাই হয়ে গেছে।এখন নিচে চলুন।খেয়ে বের হতে হবে।
আমার কথার বিনিময়ে ডাক্তার সাহেব মুচকি হাসি দিলেন আর আমি উনার হাসি পাত্তা না দিয়ে গোমড়া মুখে নিচে চলে এলাম।

~ চলবে ইনশাল্লাহ্

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে