তুমি চাইলে যেতে পারো পর্ব-০১+০২

0
1667

গল্প:- #তুমি চাইলে যেতে পারো পর্ব:-(০১+০২)
লিখা:- AL Mohammad Sourav

স্যার আমার মেয়েটাকে আপনি বিয়ে করবেন? আমার মেয়ে সিমি দেখতে শুনতে রূপে গুনে মাশাআল্লাহ। এবার অনার্সের প্রথম বর্ষে পড়ে। যদি আপনি বিয়ে করেন তাহলে আমি আমার মেয়েকে আপনার কাছে বিয়ে দিবো।
আমার সাথে আপনার মেয়েকে বিয়ে দিতে চাচ্ছেন? আপনি আমার সম্পর্কে সবকিছু জানেন তো?
স্যার আমি আপনার সম্পর্কে সব জানি আর সব শুনেছি। আপনি এর আগেও একটা বিয়ে করে ছিলেন কিন্তু আপনার সেই বউ আপনাকে ডির্ভোস দিয়ে চলে গেছে। যদি আমার মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি হন। তাহলে আমি আমার মেয়ে সিমিকে আপনার কাছে বিয়ে দিবো।
আপনি আমার এখানে চাকরি করেন মাত্র তিন মাস হয়ছে। আর এর মধ্যে আপনি আমার সম্পর্কে সবকিছু জেনে গেছেন?
হ্যা স্যার সবকিছু জানি। ঘটক ফ*ট*ক দিয়ে আজকাল ভালো মেয়ে খুঁজে পাওয়া যায় না। আপনি তো বিয়ে করবেন আর আমিও আমার মেয়েকে বিয়ে দিবো।
দেখুন জহির সাহেব আপনি এখনও আমার সম্পর্কে সবটা জানেন না। প্লিজ আপনি এখন যেতে পারেন।
প্লিজ স্যার আমি অনেক বড় আশা নিয়ে আপনার রুমে এসেছি। আপনি আমাকে এমন ভাবে খালি হাতে ফিরিয়ে দিবেন না।
দেখুন আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে। আমার সম্পর্কে আপনি আরও অনেক কিছুই জানেন না। সেই গুলি জানলে আপনি শুধু আপনার মেয়েকে নয় অন্য কোনো মেয়েকেই আমার কাছে বিয়ে দিতে বারণ করবেন।
স্যার আমার আর কোনো কিছু জানার দরকার নেই। আপনি প্লিজ আমার মেয়েটাকে বিয়ে করেন।
দেখুন জহির সাহেব আপনি রাজি থাকলে হবে না। আপনার মেয়েরও আমাকে বিয়ে করার জন্য সম্মতি থাকতে হবে।
স্যার আমি আমার মেয়েকে যা বলবো তাই করবে। এখন আপনি বলেন আমার মেয়েকে বিয়ে করবেন কি*না? আল নিষেধ করে দিতে ছিলো তখনি ওর মোবাইলে একটা ফোন আসে। রিসিভ করে শুধু হ্যা আর ওকে ডান বলেছে। আল ফোনটা কেটে কিছুটা নিরবতা পালন করে বলে। আচ্ছা জহির সাহেব আপনি সত্যি সত্যি আপনার মেয়েকে আমার সাথে বিয়ে দিবেন?
হ্যা স্যার সত্যি সত্যি বিয়ে দিবো।
ঠিক আছে তাহলে আজকেই বিয়ে করবো।
স্যার আজকেই বিয়ে করবেন?
হ্যা আজকেই! আপনি যেহেতু এত করে বলছেন সেহেতু আজকেই বিয়ে করবো। আমি আপনার মোবাইলে মেসেজ করে একটা জায়গার লোকেশন দিয়েছি। আপনি আপনার মেয়েকে ফোন করে বলে দিন সেই জায়গাতে চলে আসতে।
স্যার বেশী তাড়াহুরা হয়ে যাচ্ছে না?
দেখুন জহির সাহেব আপনি নিজেই প্রস্থাব দিয়েছেন তাহলে এখন এত প্রশ্ন কিসের? আমি যা বলেছি তাই করুন।
কিন্তু স্যার আপনার বাবা মা ভাই বোন ওনাদের সবাইকে তো খবর দিবেন।
বিয়েটা করবো আমি তাহলে বাবা মা ভাই বোন ওদের দিয়ে আপনি কি করবেন? আর তাছাড়া আপনি যা চাচ্ছেন তা তো হচ্ছে। আপনি যত তাঁড়াতাড়ি আপনার মেয়েকে নিয়ে আসবেন তত তাঁড়াতাড়ি বিয়েটা হবে। আর আপনার স্বপ্ন পূরুণ হবে। জহির সাহেব আর কোনো কথা বলেনি। ওনি বেড়িয়ে ওনার মেয়ে সিমিকে ফোন করেছে। সিমি ফোন রিসিভ করতেই বলে।
জহির সাহেব:- মা আমি তোমার মোবাইলে মেসেজ করে একটা লোকেশন দিয়েছি। তুমি যত দ্রুত পারো সেখানে চলে আসো।
সিমি:- বাবা কোনো সমস্যা হয়ছে?
জহির সাহেব:- নাহ কোনো সমস্যা নেই তোমাকে আসতে বলছি তাই যত দ্রুত সম্ভব চলে আসো। আর কোনো কথা বলার সুযোগ দেয়নি ফোনটা কেটে দিয়েছে জহির সাহেব। ঐদিকে সিমি টিউশন শেষ করে বাড়ীর দিকে যাচ্ছিলো। সিমি কোনো কিছু চিন্তা না করে একটা সি*এন*জি ঠিক করে উঠে পড়ে। আর এদিকে আল তার বন্ধুদের ফোন করে সবকিছু রেডি রাখতে বলে। ত্রিশ মিনিটের মধ্যে আল জহির সাহেব জায়গা মত পৌঁছে গেছে।
আল:- জহির সাহেব আপনার মেয়ে তো এখনও আসেনি?
জহির সাহেব:- স্যার আমি ফোন করে দেখছি। সিমিকে ফোন করার জন্য মোবাইলটা হাতে নিয়েছে তখনি সিমি সি*এন*জি থেকে নেমেছে। স্যার আমার মেয়ে চলে আসছে ঐ দেখা যাচ্ছে। আল সিমির দিকে না তাকিয়ে বলে।
আল:- আমি ভেতরে যাচ্ছি আপনি আপনার মেয়েকে নিয়ে ভেতরে আসুন কথাটা বলে আল চলে গেছে। জহির সাহেব ওনার মেয়ে সিমিকে নিয়ে ভেতরে গেছে।
সিমি:- বাবা এখানে কেনো নিয়ে আসলে? তখনি জহির সাহেব সিমির হাত ধরে বলে।
জহির সাহেব:- মা সিমি তুই আমাকে ক্ষমা করে দিস। সিমি কিছুই বুঝতে পারছে না। কেনো আজ হঠাৎ করে ওর বাবা ক্ষমা চাচ্ছে। তাহলে কি বাবা আমার সাথে যা অন্যায় করেছে তার জন্য ক্ষমা চাচ্ছে! সত্যি বলতে সিমি মনে মনে যা ভাবছে তার জন্য ক্ষমা চাচ্ছে না? তখন একজন এসে বলে।
আপনাদের দুজনকে স্যার ডাকছে আসুন আমার সাথে। সিমিকে সাথে নিয়ে যাচ্ছে তখনি সিমি তার বাবাকে বলে।
সিমি:- আচ্ছা বাবা আমরা এখানে কেনো এসেছি?
জহির সাহেব:- এখানে আজ তোর বিয়ে হবে। জহির সাহেবের কথা শুনে সিমি অবাক হয়ে যায়।
সিমি:- মানে কি বলছো তুমি? আমার বিয়ে আর আমি জানি না! বাবা এমন কি হয়ছে হঠাৎ করে আমার বিয়ে দিতে চাচ্ছো? বাবা আমি এই বিয়ে করতে পারবো না। তখনি জহির সাহেব সিমির হাত ধরে বলে।
জহির সাহেব:- মা তুই এমন কথা বলিস না। আমি স্যারকে কথা দিয়েছি। স্যারের সাথে তোর বিয়েটা দিবো। প্লিজ মা তুই না করিস না। আমি তোর ভালোর জন্য এই বিয়েটা দিতে চাচ্ছি। তাও সিমি রাজি হচ্ছে না। তখন ওনি একটা কথা বলে সেই কথাটা শুনে সিমি রাজি হয়ে যায়। (কি এমন কথা বলে সেইটা পড়ে জানতে পারবেন) সিমি তো এখন বিয়ের জন্য রাজি হয়ছে তবে এখন পর্যন্ত ছেলেটাকেও দেখিনি। আদৌ ছেলেটা ভালো না খারাপ তা কিছুই জানে না। শুধু মাত্র বাবার ঐ কথাটার কারণে বিয়ে করতে রাজি হয়ছে। এমন সময় কাজী সাহেব বলে। বর আর কনে দুজনে আসুন। আল আর সিমি দুজনে সামনে গেছে। সিমি এই প্রথম আলকে দেখছে। আলের দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু আল একবারও সিমির দিকে তাকাইনি। কাজী সাহেব তাঁর কিছু কাজ করেছে। আর তখন ঐখানে উপস্থিত একজন মৌলভী সাহেব ছিলো ওনি ওদেরকে ইসলামিক নিয়মে বিয়েটা পড়িয়ে দেয়।
কাজী সাহেব:- নেন এখানে দুইজনে সাইন করে দিন। আল আর সিমি দুজনে সাইন করেছে। আজ থেকে আপনারা দুইজনে স্বামী স্ত্রী। আর মিষ্টার আল সাহেব আপনাদের বাকী কাগজপত্র গুলি দুই তিন দিনের মধ্যে আমার কাছে পাঠিয়ে দিবেন? আল শুধু মাথাটা নাড়িয়ে হ্যা সূচক বলেছে। আলের বন্ধুরা আলকে জড়িয়ে ধরেছে। তখনি জহির সাহেব বলে।
জহির সাহেব:- স্যার আমার মেয়েটাকে আপনার হাতে তুলে দিলাম। আজ থেকে আপনি আমার মেয়েটার সাথে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত থাকবেন। আল হ্যা না কিছুই বলেনি শুধু বলেছে।
আল:- আপনি যা চায়ছেন তা হয়ছে। এখন আমরা আঁশি বলেই আল সিমির হাতটা ধরেছে। আলের স্পর্শে সিমির মধ্যে কেমন একটা অনুভতি তৈরি হয়ছে। সিমিকে নিয়ে আল বাহিরে এসে একটা গাড়ীতে বসিয়ে দিয়েছে। সিমি কিছু বলবে তার বিন্দু মাত্র ইচ্ছে হচ্ছে না। আলের ব্যবহার দেখে সিমি বুঝে গেছে ওর জীবনে আবারও অনেক বড় একটা ঝড় আসতেছে। তবে এই ঝড়টা যে আর অন্য সব ঝড়ের মত না। সিমিকে গাড়ীর পেছনের সিটে বসিয়ে আল সামনের সিটে বসে ড্রাইভিং করছে। কিছুটা পথ আসার পড়েই গাড়ীটা থামিয়ে আল বলে। তোমার নামটা জেনো কি?(সিমি মনে মনে বলে বাবা কতবার আমার নামটা ওনার সামনে বলছে তাও এখন আমাকে জিজ্ঞেস করছে মনে হয় স্মৃতি শক্তি কম আর নয় কানে কম শুনে) তখন আবার আল বলে তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি। তখন সিমি চেঁচিয়ে জোঁড়ে বলে।
সিমি:- আমার নাম সিমি রহমান। (সিমির চেঁচিয়ে বলার পরও আল কোনো রিয়াক্ট করেনি। সুন্দর ভাবে আস্তে করে বলে)
আল:- ও হ্যা নামটা শুনেছি তোমার বাবা বলে ছিলো। আচ্ছা তুমি নামো গাড়ী থেকে। (আলের এমন কথায় সিমি অবাক হয়ে গেছে। মনে মনে ভাবছে ওনি আমার উপর কোনো রাগ করেনি কেনো? যা খুশি তা করুক তাতে আমার কি?) তখন আল আবার বলে এই মেয়ে তোমাকে যে বলেছি গাড়ী থেকে নামতে তুমি শুনতে পাওনি?
সিমি:- গাড়ী থেকে এখানে কোথায় নামবো?
আল:- কেনো নিচে কি পানি যে নামলে তুমি ডুবে যাবে? নামতে বলেছি নামো। সিমি কিছুটা বিরক্ত হয়ে গাড়ী থেকে নেমেছে তখনি একটা মেয়ে এসে বলে ম্যাডাম আসুন আমার সাথে।
সিমি:- আপনার সাথে আমি কোথায় যাবো? তখনি আল বলে।
আল:- সে তোমাকে যেতে বলছে তুমি যাও। তোমাকে বৌ সাজানোর জন্য বিউটি পার্লারের ভেতরে নিয়ে যাবে। সিমি আর কোনো কথা বলেনি মেয়েটির সাথে ভেতরে গেছে। আল বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় চল্লিশ মিনিট পড়ে সিমি এসেছে একদম বৌ সেজে। আল এবারও সিমিকে ভালো করে দেখেনি। শুধু বলেছে। গাড়ীতে বসো। সিমি পিছনের সিটে বসেছে। আল তাঁর মত করে ড্রাইভিং করছে। সিমি লুকিং গ্লাস দিয়ে আলের দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু আল একটা বারের জন্য সিমির দিকে তাকাইনি। কিছুক্ষণের মধ্যে আল তার বাড়ীতে এসেছে। দুজনে গাড়ী থেকে নেমেছে। আল দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল চাপ দিয়ে সিমিকে উদ্দেশ্য করে বলে। তোমাকে বাড়ীর ভেতরে কেও কিছু বললে কোনো কথার উত্তর দিবে না। তুমি একদম চুপচাপ থাকবে। কি বলেছি তুমি শুনতে পেয়েছো?
সিমি:- ঠিক আছে!(কি হচ্ছে সিমির সাথে সিমি কিছুই বুঝতেছিনা) তখনি একটা মেয়ে এসে দরজাটা খুলেছে। আলের সাথে সিমিকে বৌ সাজে দেখে মেয়েটা বলে উঠে। আবার একটা মেয়েকে বৌ করে নিয়ে এসেছে? আল মেয়েটির দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়েছে তখন মেয়েটি চলে যেতে যেতে জোঁড়ে বলে উঠে আল ভাইজান আবার একটা বৌ নিয়ে এসেছে। এর মধ্যে আল সিমির হাতটা ধরেই বাড়ীর ভেতরে ঢুকেছে। তখনি আলের বাবা মা সহ পরিবারের সবাই নিচে এসেছে। আল সিঁড়ি দিয়ে উপরে যেতে ছিলো তখনি ওর বাবা বলে উঠে।
বাবা:- আল তুই আবার বিয়ে করেছিস?
মা:- এর আগেও আমাদের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করেছিস? বিনিময়ে কি হলো তোকে ডির্ভোস দিয়ে চলে গেছে। ঠিক এবারও আগের বিয়েটার মত করেছিস। আচ্ছা তুই আমাদের সাথে কেনো এমন করিস? আল একদম চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে কোনো কথা বলছে না। আলের এমন নিরবতা দেখে সিমি অবাক হয়ে যাচ্ছে। একের পর এক সবাই আলকে অনেক ধরনের কথা বলতেছে কিন্তু আল একদম চুপচাপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আলের যৌথপরিবার সবাই কানাগুসা করছে আবার আল বিয়ে করেছে! এখন দেখার বিষয় এই বৌটা কতদিন ওর সাথে সংসার করে? তখনি আল সিমিকে দেখিয়ে বলে।
আল:- ওর নাম সিমি রহমান আমার বৌ। আজ থেকে সিমি এই বাড়ীতে থাকবে। এখন সবার কি ড্রামা শেষ হয়ছে? যদি শেষ হয়ে থাকে তাহলে বলেন আমি রুমে যাবো। আলের এমন কথা শুনে আলের বাবা বলে।
বাবা:- আল তুই কাজটা একদম ঠিক করলি না। তোর জন্য আমরা কম অপমান সহ্য করিনি। বিয়ে করবি ভালো কথা অন্তত আমাদের বলতি আমরা তোকে সুন্দর ভাবে বিয়ে করিয়ে দিতাম।
আল:- বাবা আমি নিজের বিয়েটা নিজেই করেছি। যদি আপনাদের আমার বৌকে মেনে নিতে সমস্যা হয় তাহলে বলেন আমি ওকে নিয়ে বেড়িয়ে যাবো।
মা:- সবসময় নিজের কথাটা চিন্তা করিস! তোর যে একটা পরিবার আছে আর সেই পরিবারের মানুষজন আছে সেইটা তোর মনে থাকে না। যা করেছিস ভালো করেছিস।
আল:- মা এত কথা না বলে এখন বলেন আমি কি থাকবো নাকী ওকে নিয়ে বেড়িয়ে যাবো? তখনি আলের বাবা বলে।
বাবা:- বাড়ী তোর তুই যাবি কেনো? দরকার হলে আমরা সবাই চলে যাবো। যখন তোর টর্চার আর সহ্য করতে পারবো না। তখন আমরা সবাই চলে যাবো।
আল:- যা খুশি তা আপনারা করেন। এখন আমার ভালো লাগছে আমি উপরে গেলাম এই কথা বলে আল চলে গেছে। সিমি একা দাঁড়িয়ে আছে কি করবে বুঝতে পারছে না। তখনি আলের বাবা বলে।
বাবা:- এই মেয়ে তুমি যে আলকে বিয়ে করেছো ওর সম্পর্কে সবকিছু জেনে শুনে বিয়ে করেছো তো? সিমি কিছুই বলছে না। তখন আলের মা বলে।
মা:- নিশ্চয় সবকিছু জেনে বুঝে বিয়ে করেছে। আর যদি না জেনে বুঝে বিয়ে করে থাকে তাহলে নিজের সর্বনাশ নিজে করছে এতে আমাদের কি! তখন আলের বড় বোন মানে ঝিনুক বলে।
ঝিনুক:- আচ্ছা মা আল কেনো আবার বিয়েটা করেছে! ওর কি সত্যি বৌয়ের দরকার হয়? আমার তো মনে হয় না?
মা:- এখন বিয়ে করেছে দেখ কি করে! এই মালা ওকে আলের ঘরটাতে দিয়ে আয়।
ঝিনুক:- আলের ঘরে দিয়ে আসবে মানে? আলের ঘরের যে অবস্থা সেই ঘরে এই মেয়ে থাকবে কি করে?
মা:- সেইটা নিয়ে তোদের চিন্তা করতে হবে না। যে বিয়ে করেছে সে চিন্তা ভাবনা করে বিয়ে করেছে। আজিবব মেয়ে ছেলে সুন্দর দেখছে আর বিয়ে করে চলে আসছে। মালা দাঁড়িয়ে আছিস কেনো যা আলের ঘরে দিয়ে আয়।
মালা:- হ্যা মা যাচ্ছি। মালা মানে আলের ছোট বোন। ভাবি আসেন আমার সাথে। সিমিকে মালা উপরে নিয়ে গেছে। সিমি চুপচাপ হেটে যাচ্ছে। একটা বন্ধ দরজা দেখিয়ে মালা বলে। ভাবি এইটা আল ভাইয়ার ঘর। আজ থেকে আপনি এই ঘরে থাকবেন বলে মালা দরজাটা খুলে দিয়েছে। সিমি ঘরটার ভিতরে ঢুকে দেখে একদম ধূলাবালি দিয়ে একাকার। তখনি মালা বলে এই ঘরে আজ ছয় মাস পড়ে কেউ একজন থাকবে।
সিমি:- ছয় মাস পড়ে কেউ এই ঘরে থাকবে মানে! তোমার ভাইয়া এই ঘরে থাকে না? তখনি মালা বলে।
মালা:- ভাবি আপনি ভাইয়ার সম্পর্কে কিছুই জানেন না? সবকিছু না জেনেই বিয়ে করে ফেলছেন শুধু মাত্র ভাইয়ার সুন্দর চেহারা আর টাকা পয়সা দেখে? আপনার কপালে অনেক দুঃখ আছে।
সিমি:- আচ্ছা সবাই শুধু একটা কথা বলছো কিন্তু কেউ বলছো না তোমার ভাইয়া কেমন! কি তার অতীত? তখনি মালা বলে।
মালা:- বুঝতে পারছি আপনিও আগের ভাবির মত এই বাড়ীতে মাত্র অল্প কিছুদিনের অথীতি। আপনার সাথে যত কম কথা বলবো ততটাই ভালো হবে। রাতে ভাইয়া ঘরে আসবে বলে মনে হয় না। আপনি আপদত একা একা এই ঘরে রাতটা কাটিয়ে নেন সকালে দেখা হবে। কথাটা বলেই মালা চলে গেছে। আর সিমি তার মাথায় হাত দিয়ে নিচে বসে মনে মনে বলে। সত্যি কি আমার জীবনেও কোনো সুখ নেই! আমার সাথে কেনো এমনটা হয়ে থাকে? ঠিক তখনি কেউ একজন সিমির মাথায় হাত রেখেছে। সিমি তাকিয়েছে তখনি সে বলে ভয় পেওনা আমার জন্য তোমাকে এই বাড়ীতে এনেছে।

চলবে,,

গল্প:- #তুমি_চাইলে_যেতে_পারো পর্ব:-(০২)
লিখা:- AL Mohammad Sourav

বাসর ঘরে আমি মাথায় হাত দিয়ে নিচে ফ্লোরে বসে বলতেছি আমার জীবনে কি কোনো সুখ নেই! আমার সাথে কেনো এমনটা হয়ে থাকে? ঠিক তখন কেউ একজন এসে আমার মাথায় হাত রেখেছে। আমি কিছুটা অবাক হয়ে তাকিয়েছি তখনি সে বলে উঠে। তুমি ভয় পেওনা আমার জন্য তোমাকে বিয়ে করে এই বাড়ীতে আনা হয়ছে। আমি চেয়ে আছি ওর দিকে তখনি সে আবার বলে উঠে আমাকে কি তোমার পছন্দ হয়নি! আমি জানি আমাকে তোমার পছন্দ হয়নি। তুমিও কিছুদিন পড়ে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে তাইনা? তখনি সিমি বলে।
সিমি:- কে তুমি আর তোমার জন্য আমাকে বিয়ে করে আনছে মানে? তখনি সে বলে।
আমি কে সেটা তুমি খুব তাঁড়াতাড়ি জেনে যাবে তবে এখন তুমি ভয় পেওনা তোমার আশে পাশে আমি সারাক্ষণ থাকবো। কথাটা বলেই সে চলে গেছে। সিমি ডাক দিয়েছি কিন্তু কোনো রকম সারা দেয়নি সোজা চলে গেছে। সিমি উঠে দরজার বাহিরে তাকিয়েছি কোথাও দেখতে পেলো না। সিমি এখন আরও অনেকটা ভয় পেয়ে গেছে। কি হচ্ছে ওর সাথে ও নিজেই কিছু বুঝতে পারছে না। ঘরে ঢুকেই প্রথমে পড়ণের গহনা গুলি খুলে ঘরটাকে পরিষ্কার করতে আরম্ভ করেছে। ধূলা বালি দিয়ে একাকার হয়ে আছে ঘরটা। টাণা দুই ঘন্টা লাগছে ঘরটাকে মানুষের থাকার উপযোগী করতে। ক্লান্ত শরীর নিয়ে যখন সিমি ওয়াশরুমে গেছে তখনি অবাক হয়ে গেছে। মালা তো বলে ছিলো এই ঘরে ছয় মাস ধরে কেউ থাকে না তাহলে ওয়াশরুমটা এতটা পরিষ্কার কেনো? আর তাছাড়া দেখে মনে হচ্ছে প্রতিদিন এই ওয়াশরুমটা ব্যবহার করা হয়। সিমি একদম ভয় পেয়ে গেছে কোনো ভূত টুত নেই তো? সিমি তাঁড়াতাড়ি করে হাত মুখ ধুয়ে ঘরের ভিতরে এসে মনে মনে আল্লাহকে ডাকতেছে। সিমির ক্লান্ত শরীরটা একটু খাটের উপরে রেখেছে আর কখন ঘুমিয়ে গেছে ঠিক বলতে পারবে না যখন ঘুম ভাঙছে তখন চেয়ে দেখে অনেক বেলা হয়ে গেছে। সিমি মোবাইলটা হেতে নিয়ে দেখে চার্জ নেই বন্ধ হয়ে আছে। সিমি তাঁর মাকে অনেক মিস করছে। বাবা মাকে বলেছে তো আমার এই বিয়ের কথা? যদি না বলে থাকে তাহলে অনেক চিন্তা করবে আমার জন্য। এক মাত্র মা আমাকে সত্যি কারের ভালোবাসে। আর তাছাড়া সবাই আমার সাথে মিথ্যা অভিনয়টা করে গেলো। এখন পচন্ড খিদা লাগছে কিন্তু এই বাড়ীর কাওকে তো দেখা যাচ্ছে না। নাহ একটু নিচে গিয়ে দেখি বলে সিমি ওয়াশরুমে ঢুকে হাত মুখ ধুয়ে নিচে গেছে। সিঁড়ি দিয়ে নামতেছে আর অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখছে অনেক সুন্দর একটা বাড়ী একদম গোচানো পরিপাটি ভাবে সাজানো। সিমি নিচে নেমে বাম পাশে তাকিয়ে দেখ বড় একটা অনেক বড় একটা খাবার টেবিল আর চেয়ার আছে প্রায় বারোটার মত। ডান পাশে তাকিয়ে দেখে সোফাসেট সুন্দর করে সাজিয়ে রাখছে। সিমি এদিক সেদিক তাকাচ্ছে তখনি একজন বলে উঠে।
এই মেয়ে তুমি কে আর বৌ সাজে এই বাড়ীতে কি করছো? মা এই মা তখনি আলের মা এসেছে।
মা:- কিরে এমন ভাবে ডাকছিস কেনো?
মা এই মেয়েটা কে? এই বাড়ীতে কেনো এসেছে?
মা:- আরিফ তোকে তো বলতে ভুলে গেছি। তোর ছোট ভাই আল ইসলাম গতকাল রাতে আবার বিয়ে করেছে এই মেয়েকে। তখনি আরেকজন মেয়েলি কন্ঠ বলে।
কি আল আবার বিয়ে করেছে! আল যে বলেছিলো আর এমন ভাবে বিয়ে করবে না। আলের ভাবি মানে আরিফের বৌ কথা গুলি বলছে।
মা:- বড় বৌ গতকাল রাত্রে বিয়ে করে নিয়ে আসছে।
আরিফ:- মা আল আবার বিয়ে করেছে? এর আগের বউয়ের সাথে এখনো ডির্ভোসের ঝামেলা শেষ হয়নি আবার বিয়ে করে ফেলছে! মা তোমরা ওকে আদর দিতে দিতে মাথায় তুলেছো। তখন এক এক করে আলের পরিবারের সবাই এসেছে। তখনি আলের বাবা বলে।
বাবা:- আরিফ আলের ডির্ভোস নাকী হয়ে গেছে! তাহলে এখন আবার ডির্ভোসের ঝামেলা কিসের?
আরিফ:- সেটা আমার থেকে তো আপনার ছেলে ভালো করে বলতে পারবে? গতকাল আমাদের পারিবারিক উকিলের সাথে দেখা হয়ছে ওনি তো বলেছে আলের বউ অনেক টাকা দাবী করছে আর আল দিতে রাজি না। যার কারণে আলের বউ সবার নামে মামলা করার চিন্তা ভাবনা করছে। আর এখন যদি আলের বউ এসে দেখে আল আবার বিয়ে করেছে তাহলে কি হবে একবার বুঝতে পারছেন? আচ্ছা বাবা আল আবার কেনো বিয়ে করেছে? এবার যদি কোনো রকম সমস্যা হয় তাহলে আমি নিজেই ওকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিবো বলে দিলাম। আমার আর এসব ভালো লাগে না। তখনি একজন বৃদ্ধা মহিলা এসে বলে।
আচ্ছা আমি যে শুনেছি আল ইসলাম আবার বিয়ে করেছে কথাটা কি সত্যি? তখনি আলের বড় বোন ঝিনুক বলে।
ঝিনুক:- কত মানুষ কত ভাবে মরে যায় এই বুড়িটা যে কবে মরবে আল্লাহ ভালো জানে। ওনার জন্য আজ আমরা সবাই অশান্তিতে আছি।
বাবা:- আহা ঝিনুক কি বলিস এসব? ওনি কিন্তু আমার মা আর তোদের দাদী।
ঝিনুক:- আমাদের দাদী নয় শুধু মাত্র আলের দাদী। আর তুমি যদি ওনার ছেলেই হতে তাহলে তোমাকে রেখে আলের নামে এই সব সম্পত্তি স্বামীকে দিয়ে লিখিয়ে দিতো না। দাদা তো মরে গেছে যদি বেচে থাকতো তাহলে বুঝতে পারতো কত বড় ভুল করেছে।
দাদী:- জশিম কি হলো বল আমাকে আল ইসলাম কি সত্যি সত্যি বিয়ে করেছে? (আলের বাবার নাম জশিম ইসলাম)
বাবা:- আল তো বলেছে বিয়ে করছে এই তো বৌ দাঁড়িয়ে আছে। তখনি আলের দাদী সিমির কাছে গেছে। সিমিকে দেখে বলে।
দাদী:- এই মেয়ে আমার নাতীকে বিয়ে করতে কে বলছে তোকে? আমার নাতীর সম্পত্তির লোভে বিয়ে করেছিস তাইনা? আমার নাতী আমার সব কথা শুনে আমি বলে দিবো তোকে জেনো কানাকুঁড়ি না দেয়। ( আলের দাদীর কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে গেছে। সবাই ভাবতেও পারছে না আলের দাদী এমন কথা বলবে।) তখনি আলের মা বলে।
মা:- সবাই খাবার টেবিলে আসো নাস্তা করতে হবে। সবাই নাস্তার জন্য চলে গেছে আর সিমি নিচে দাঁড়িয়ে আছে ও কি করবে কিছু বুঝতেছে না। তখনি আলের মা বলে। তোমার যে বিয়ে হয়ছে তোমার বাড়ীতে সবাই জানে? সিমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। কারণ আল বলে ছিলো বাড়ীতে কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে কোনো উত্তর না দিতে। তখন আলের মা রেগে গিয়ে একটু দমকের সরে বলে। এই মেয়ে তোমাকে যে কিছু জিজ্ঞেস করেছি তার উত্তর দাও। এবারও সিমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। তখনি আলের বড় বোন ঝিনুক বলে।
ঝিনুক:- মা ওর কোনো দোষ নেই নিশ্চয় তোমার ছেলে ওকে বলে দিছে কোনো রকম কথা না বলতে। এতে করে আমাদের জন্য ভালো হয়ছে আল যদি কিছু করে তখন আমাদের কাওকে কিছু বলতে পারবে না।
মা:- এই তুমি এখানে দাঁড়িয়ে না থেকে আমাদের চোখের সামনে থেকে চলে যাও। সিমি চলে যেতেছে তখনি আলের মা বলে। আচ্ছা তুমি সারাক্ষণ বৌ সেজে ঘুরে বেরাচ্ছো কেনো? আমরা ছাড়া এই বাড়ীতে এখন কেউ আসবে না। আমরা তো সবাই তোমাকে বৌ সাজে দেখেছি দয়া করে এখন গিয়ে নরমাল ড্রেস পড়ে নাও। তখনি সিমি বলে।
সিমি:- মা আমার তো এই বৌ সাজের ড্রেস ছাড়া আর কোনো ড্রেস নেই। তখনি সবাই হেসে উঠেছে। তখন ঝিনুক বলে।
ঝিনুক:- ও মা এত বড়লোক ছেলেকে বিয়ে করেছো সে তোমাকে একটাও ড্রেস কিনে দেয়নি! শুধু সুন্দর আর বড় লোক ছেলে দেখে বিয়ে করে নিলে হয় না। ছেলেটা কতটুকু ভালো আর বিয়ের পর তোমাকে কতটা সুখে রাখবে সেই সব চিন্তা ভাবনা করে বিয়ে বসতে হয়। তোমাদের মত মেয়েদের জন্য আজ আমার ভাই আলের মত ছেলেরা মেয়েদেরকে খেলার পতুল মনে করে। ড্রেস নেই তো এখন আমরা কি করবো? যাকে বিয়ে করেছো তাকে গিয়ে বলো ড্রেস এনে দিতে। তখনি আলের বড় ভাবি বলে।
ভাবি:- যাকে বিয়ে করেছে তাঁর দেখা কবে পাবে আর কবে ড্রেস চেঞ্জ করবে? আচ্ছা তোমার সাথে আলের পরিচয়টা কি আগে থেকে নাকী গতকাল কোনো নাইট ক্লাবে দেখা হয়ছে?
আরিফ:- মনে তো হয় এক রাতে দেখা আর এক রাতে বিয়ে করছে। তা এখন তোমার বর কোথায় আছে?
ভাবি:- ওকে জিজ্ঞেস করছো কেনো ও কি করে জানবে আল কোথায় আছে! আল তো ওকে কি কারণে বিয়ে করেছে সেইটা আমার মাথায় আসছে না। আগের বৌটা কত ভালো ছিলো আর সেই বৌটাকে কি ভাবে বাড়ী ছাড়া করেছে! এমন ছেলেদের সম্পর্কে সবকিছু না জেনে বিয়ে করে বাড়ীতে চলে আসে কি করে? তখনি আলের বাবা বলে।
বাবা:- আচ্ছা সবাই এসব ফালতু আলাপ বন্ধ করে খাবারের দিকে মনোযোগ দাও। সবাই খাচ্ছে তখন সিমি উপরে দিকে চলে যাচ্ছে এমন সময় কলিং বেল ভেজে উঠছে। সিমি দাঁড়িয়ে গেছে। সিমি মনে মনে ভাবছে মনে হয় আল এসেছে। তখনি আলের মা ওনাদের কাজের মেয়ে লতাকে বলে।
মা:- লতা দরজাটা খুলে দেখ তো এই সময় কে এসেছে। লতা গিয়ে দরজাটা খুলেই অবাক হয়ে তাকিয়ে বলে।
লতা:- ভাইজান আপনি আজ বাড়ীতে এসেছেন। লতার কথা শুনে আলের পরিবারের সবাই দরজার দিকে তাকিয়েছে। সবাই চেয়ে দেখে আল এসেছে। আলকে দেখে সবাই অবাক হয়ে গেছে। আল কখনো এমন সময় বাড়ীতে আসে না। মাঝে মাঝে বাড়ীতে আসে কিন্তু রাত দশটার দিকে এসে আবার এগারোটার দিকে চলে যাই। আল এতটাই মা*তা*ল হয়ে আছে ঠিক মত দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না লতা ওকে ধরে সোফায় নিয়ে বসিয়েছে। সিমি আলকে দেখে নিচে নেমে এসেছে। সবাই খাবার রেখে আলের কাছে এসেছে।
বাবা:- আল তুই হঠাৎ করে এই সময় বাড়ীতে? (আলের বাবার কথা শুনে সিমি অবাক হয়ে গেছে) আল কোনো কথা বলার মত অবস্থা নেই তখনি সিমি বলে উঠে।
সিমি:- বাবা আগে ওনাকে রেস্ট নিতে দেন। ওনাকে দেখে মনে হচ্ছে আপনার কথার উত্তর দেবার মত অবস্থা নেই। তখনি ঝিনুক বলে উঠে।
ঝিনুক:- দেখছেন বাবা বোবার মুখে কথা ফুঁটেছে। মা কত গুলি কথা জিজ্ঞেস করেছে একটা কথার জবাব দেয়নি আর এখন নিজে থেকেই কথা বলছে।
ভাবি:- এখন নাগর এসেছে না তাই কথা ফুঁটেছে। তখন সিমি বলে।
সিমি:- দেখুন আপনারা সবাই ভুল বুঝতেছেন! ওনাকে দেখে কি মনে হচ্ছে আপনাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে। ওনি নে*শা*গ্র*স্থ ঠিক মত দাঁড়াতে পারছে না। তাহলে আপনাদের সাথে কথা বলবে কি করে?
দাদী:- জশিম মেয়েটা ঠিক বলছে এখন আল রেস্ট নিক। যখন ও সুস্থ হবে তখন আমরা ওকে সবকিছু জিজ্ঞেস করবো। আরিফ ওকে একটু রুমে নিয়ে দিয়ে আয়?
আরিফ:- ওর মত নে*শা*খু*রকে আমি কোথাও নিতে পারবো না। তখনি সিমি নিজেই আলকে ধরে দাঁড় করিয়েছে।
সিমি:- থাক কেউ ওনাকে নিতে হবে না আমি নিজেই ওনাকে রুমে নিয়ে যাচ্ছি।
ঝিনুক:- হ্যা নিয়ে যাও আমরাও দেখবো এমন ভালোবাসা কতদিন থাকে? তখন সিমি কোনো কথা না বলে আলকে ধরে দাঁড় করিয়েছে। আলকে জড়িয়ে ধরে অনেক কষ্টে আলকে নিয়ে যাচ্ছে। তা দেখে সবাই অবাক হয়ে আছে। সিমি আলকে ঘরে নিয়ে এসেছে। আলের মুখ থেকে ম*দে*র বাজে গন্ধ বের হচ্ছে তার উপর শরীর থেকে ঘামের বাজে গন্ধ বের হচ্ছে। সিমি নিজেকে অনেক কষ্টে কন্ট্রোল করতেছে। অনেক কষ্টে আলকে ঘরে এনে শুয়ে দিয়েছে। আলের শরীর থেকে সার্ট খুলেছে। মনে হচ্ছে এক বছর ধরে গোসল করে না। আজ ঘুম থেকে উঠার সাথে সাথে গোসল করতে বাধ্য করাবো। আর ঐদিকে নিচে সবাই বসে কথা বলছে।
আরিফ:- মা আমি বেরুলাম সব ঠেকা তো আমার। অফিসে সব কাজ আমার করতে হয় আর তোমার ছেলে মাঝ খান থেকে গিয়ে সব টাকা নিয়ে নেয়।
ভাবি:- তোমাকে কত করে বলি নিজেই ব্যবসা দিয়ে দাও। কি দরকার আলের সাথে ব্যবসা করার?
বাবা:- বড় বৌ এইটা আলের একার ব্যবসা না। এইটা আমার বাবার দেওয়া ব্যবসা এই ব্যবসাটাতে সবার অধীকার আছে।
দাদী:- আলকে তো আর তোমাদের দাদা ব্যবসাটা লিখে দিয়ে যায়নি? ওকে এই বাড়ীটা আর কিছু জমি জমা লিখে দিয়েছে। ব্যবসাটা আরিফকে আমি আগে পড়ে দিয়ে দিবো। আল সুস্থ হোক তখন ওর সাথে কথা বলবো।
ঝিনুক:- সবকিছু তোমার দুই নাতীকে দিয়ে দিবে আর আমার জামাই যে গাধার খাটনি খাটতেছে তার কি হবে?
বাবা:- শুধু আরিফ না তোকে আর মালাকেও কম্পানির কিছু শেয়ার দিবো। তবে বেশী শেয়ার থাকবে আরিফের নামে। আচ্ছা এখন কথা হচ্ছে আলের আগের বৌয়ের সাথে ঝামেলাটা শেষ করতে হবে।
আরিফ:- আমি উকিলকে বলেছি টাকা চাইলে টাকা দিয়ে দিবো তাও যেনো ডির্ভোস হয়ে যায়। আচ্ছা আমি বেরুলাম বলে আরিফ বেড়িয়ে গেছে। সবাই সোফাতে বসে নানান রকম।কথাবার্তা বলছে আর উপরে সিমি আলের সমস্থ শরীর ভালো করে মুছে দিয়েছে। আলের মুখের দাঁড়ি গুলির থেকে মুছ গুলি বড় বড়। সিমির ইচ্ছে করছে মুছ গুলি ছেটে দিতে কিন্তু সাহোস পাচ্ছে না। তখনি সিমিদের ঘরের দরজাতে কেউ ঠক ঠক করেছে। সিমি চেয়ে দেখে মালা এসেছে। মালাকে দেখেই সিমি বলে।
সিমি:- মালা এসো! তখনি মালা দুইটা শাড়ী সিমির হাতে দিয়ে বলে।
মালা:- আপদত এই শাড়ী দুইটা পড়েন বলে চলে যেতে ছিলো তখনি মালা দেখে আলের শরীরের সার্ট খুলে রাখছে আর সমস্থ শরীর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছা হয়ছে। তখন মালা সিমিকে বলে ভাবি আপনি ভাইয়ার কাপড় চোপড় খুলেছেন কেনো? ভাইয়া ঘুম থেকে উঠার আগেই আপনি সব পড়িয়ে দিয়েন।
সিমি:- কেনো কি করবে তোমার ভাই?
মালা:- কি করবে সেটা তো পড়ের কথা। তবে ভাই যদি তাঁর এমন অবস্থায় দেখ তাহলে আপনার ঘায়ে নির্ঘাত হাত উঠিয়ে বসবে। এক কাজ করিয়েন যখন দেখবেন ভাইয়া ঘুম থেকে উঠবে উঠবে ভাব তখনি আপনি ঘর থেকে বেড়িয়ে নিচে গিয়ে বসে থাকিয়েন। ভাইয়া একদম। এসব সহ্য করে না যে কেউ ভাইয়াকে সেবা যত্ন করুক।
সিমি:- আচ্ছা মালা একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
মালা:- ভাইয়ার সম্পর্কে ছাড়া আর যে কোনো কথা থাকলে বলেন বলবো। কিন্তু ভাইয়ার ব্যপারে কোনো কথা জিজ্ঞেস করলে বলতে পারবো না। তখনি সিমির গতকাল রাতের ঘটনাটা মনে পড়ে ওর কাছে যে এসে ছিলো তার কথা মনে পড়তেই সিমি বলে।
সিমি:- আচ্ছা মালা তোমাদের বাড়ীতে কি কোনো বাচ্চা আছে?
মালা:- না তো কোনো বাচ্চা নেই!
সিমি:- কিন্তু গতকাল রাতে আমি যখন একা ছিলাম তখনি একটা বাচ্চা এসে আমার মাথায় হাত রেখে বলে। ভয় পেওনা আমার জন্য তোমাকে এই বাড়ীতে এনেছে।
মালা:- মনে হয় আপনার মনের ভুল। আমাদের বাড়ীতে কোনো বাচ্চা নেই বলে মালা ঘর থেকে বেড়িয়ে গেছে। সিমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিয়েছে। তাহলে কি আমি কোনো ভূত দেখেছি? নাহ তা কি করে হয় নিজের চোখে বাচ্চাটাকে দেখেছি ভূতের মত তো লাগেনি। সিমি একদম স্থীর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর মনে মনে ভাছে কি হচ্ছে ওর সাথে তখনি কেউ একজন দরজার উপাশ থেকে ডাক দিয়ে বলে।
আমি কিন্তু তোমার আশে পাশে আছি তখনি সিমি দৌড়ে দরজার সামনে গিয়ে বাহিরে চায় কিন্তু কিছুই দেখতে পায়নি। সিমি অনেকটা ভয় পেয়ে যায়। সিমি একদম চুপটি করে বসে আছে আর খিদাও লাগছে অনেক কি করবে কিছুই বুঝতেছেনা। ঠিক তখনি আলের মা এসেছে।
মা:- সিমি নাও এখানে কিছু খাবার আছে তুমি খেয়ে নাও। মনে হয় তোমার অনেক খিদা লাগছে। রাতে তো কিছু খাওনি আর এখন বেলা সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে চলছে। আর আল উঠার আগেই তুমি ঘর থেকে বেড়িয়ে যাবে। সিমি কিছুই বলেনি শুধু মাথাটা নাড়িয়ে হ্যা বলেছে। আলের মা চলে গেছে সিমি খুব দ্রুত খাবার গুলি খেয়েছে। যাক অনেকটা শান্তি লাগছে। ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে মালার দেওয়া একটা শাড়ী পড়েছে। মাথাটা জিম জিম করছে আর কখন ঘুমিয়ে গেছে তা বলতে পারবে না। আর এদিকে আলের ঘুম ভাঙছে তবে এখনো ঠিক মত ম*দে*র নে*শা যায়নি। কিন্তু আল বুঝতে পারছে ওর বুকের উপরে কেউ একজন আছে। আল চেয়ে দেখে সিমি ওর বুকের উপরে শুয়ে আছে সাথে সাথেই নিজেকে সরিয়ে নিয়ে। সিমির কাঁচা ঘুমের মধ্যে থেকে টাণ মেরে দাঁড় করিয়ে নিয়ে বলে।
আল:- তোমার সাহোস হলো কি করে আমার সাথে শুয়ে থাকার? সিমি চোখ ঢলতে ঢলতে বলে।
সিমি:- তো কি হয়ছে? তখনি আল সিমিকে একটা থাপ্পড় দিয়েছে। সিমি নিচে পড়ে গেছে আর আলি সিমির কাছে গিয়ে রাগি চোখে তাকিয়ে বলে।
আল:- তোমাকে যেই কারণে এই বাড়ীতে এনেছি তুমি সেই কাজটা করবে। আর সেই কাজটা শেষ হলে তোমাকে আমি মুক্ত করে দিবো।
সিমি:- আমাকে কেনো বিয়ে করেছেন আর কি কাজের জন্য এই বাড়ীতে এনেছেন সেইটা তো আমাকে বলবেন নাকী? তখনি আল রহস্যজনক ভাবে হেসে বলে।
আল:- জানার জন্য এত আগ্রোহ কেনো? মাত্র তো একদিন হলো বাড়ীতে এসেছো। কিছুদিন থাকো সব জানতে পারবে। আর শুনো তোমাদের মত মেয়েকে আমি খুব ভালো করে চিনি। টাকার জন্য সব করতে পারো এমন কি বাবার পরিচয় চেঞ্জ করে নিতে পারো। তোমাকে এই বাড়ীতে বেশী দিন আটকিয়ে রাখবো না কাজটা শেষ হলেই তুমি যেতে পারবে। কথা গুলি বলে আল বেড়িয়ে গেছে। আর সিমি আলের কথা গুলি শুনে একদম বসে পড়ছে। আর মনে মনে বলছে। আমার সম্পর্কে আপনি যেইটা শুনেছেন সবটা ভুল শুনেছেন। যেদিন আমার সম্পর্কে সবটা জানতে পারবেন সেদিন আপনি আফসোস করবেন। তখনি আবার কেউ দরজার আড়াল থেকে সেইম আগের কন্ঠে বলে উঠে ভয় পেওনা আমি কিন্তু তোমার আশে পাশে আছি।

চলবে,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে