তুমি চাইলে যেতে পারো পর্ব-২৩ এবং শেষ পর্ব

0
1160

গল্প:-#তুমি চাইলে যেতে পারো (শেষ পর্ব)
লিখা:- AL Mohammad Sourav

আমি আপনার বৌ যখন মন চাইবে জড়িয়ে ধরবেন যখন মন চাইবে আদর করবেন আর যখন মন চাইবে কোলে নিবেন। আপনার যখন ইচ্ছে করবে তখনি ভালোবাসবেন। এসব কিছু করতে কি আমি আপনাকে কখনো বারণ করেছি? সিমির এমন কাজে আল অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে বলে সিমি তুমি কি করছো? তোমার মাথাটা ঠিক আছে তো? তখনি সিমি তাঁর ঠোঁট আলের ঠোঁটে গুজে দিয়েছে এমন সময় আনো ডাক দিয়ে বলে
আনো:- মামুনি তোমরা কি করতেছো? আনোর ডাক শুনে আল সিমিকে ঝাড়া মেড়ে ফেলে সোজা দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেছে আর সিমি তার শাড়ির আঁচল ঠিক করতেছে তখনি আনো সিমির কাছে এসে বলে মামুনি তুমি বাবাই উপরে বসে কি করছিলে? সিমি লজ্জা মুখ লাল হয়ে গেছে আনোর মুখ চেপে ধরে বলে।
সিমি:- তোমার বাবাই বুকে ব্যথা করছিলো তাই তো আমি বুকের উপরে বসে মালিশ করছিলাম।
আনো:- তাহলে বাবাই এমন ভাবে দৌড় দিলো কি করে বুকের ব্যথা নিয়ে? সিমি কিছুটা মুচকি হেসে মনে মনে বলে মেয়েটা ঠিক ওনার মত হয়ছে সব কিছু এখুনি যেনে নিবে তখন আনো বলে মামুনি বাবাইকে ডাক দাও আমি বুকের বসে মালিশ করে দিবো তাহলে খুব তাঁড়াতাড়ি ব্যথা শেষ হয়ে যাবে।
সিমি:- এখন তোমার বাবাই বুকের ব্যথা শেষ হয়ে গেছে। পড়ে যখন আবার করবে তখন তুমি মালিশ করে দিও। এখন আমার সাথে এসো বলেই আনোকে কোলে নিয়ে সিমি নিচে গেছে। আর এদিকে আল ফ্রেশ হয়ে বেরিয়েছে সিমির কথা গুলি মনে করে বার বার মুচকি হাসতেছে একা একা। আজ সকালটা একটু অন্য রকম হয়েছে আল নিচে এসেছে দেখে নাস্তার টেবিলে সবাই বসে আছে তখনি ফিরুজ এসেছে তখন বাবা বলে।
বাবা:- আরে জামাই বাবা যে এসো তা কেমন আছো?
ফিরুজ:- জ্বি আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আব্বা আপনার সাথে কিছু কথা আছে মানে সবার সাথেই যদি সবাই একটু শুনতেন তাহলে আমার জন্য সহজ হতো।
বাবা:- হ্যা তুমি বলো কি কথা?
ফিরুজ:- আমি ঝিনুককে আমাদের বাড়িতে নিয়ে যেতে চাই। মা একটু রাগি এটা আপনারা সবাই জানেন তবে যদি ঝিনুক একটু মাকে মেনে চলে তাহলে কোনো সমস্যা হবে না।
দাদী:- এটা তো সুন্দর কথা বলেছো নাত জামাই। তা আমি বলি ঝিনুককে নিজের সাথে নিয়ে যাও ঝগড়া হবে আবার ঠিক হয়ে যাবে। আর ঝিনুক তোকে বলি শ্বাশুড়ির সাথে মিলে মিশে থাকবি সামান্য ঝগড়া হলেই ব্যাগ গুচিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসবি না।
মা:- হ্যা ঝিনুক আমি যেমন তোর মা ফিরুজের মা ও তোর মা ওনাকে সবসময় সম্মান রেখে কথা বলিস তাহলে সবকিছু ঠিক ঠাক হয়ে যাবে।
ঝিনুক:- বুঝতে পারছি আমি তোমাদের বুঝা হয়ে গেছি ঠিক আছে আমি চলে যাবো আর হ্যা যার জন্য আমাকে সবাই এমন ভাবে দোষারূপ করেছে একদিন তার জন্যই তোমরা সবাই আফসোস করবে বলে দিলাম।
আরিফ:- ঝিনুক অপরকে অভিশ্বাপ দিলে নিজের উপরে লাগে তাই সবসময় চিন্তা করবি যাতে করে তোকে দেখে মানুষ হিংসা করে তোর মত হওয়ার চেষ্টা করে এমন ভাবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। আমরা সবাই সিমির এত প্রশংসা কেনো করি কারণ সিমি খুব সহজে সবার সাথে মিশে যেতে পারে আর যার ফলে সবাইকে খুব সহজে আপন করে নেয়।
বাবা:- আরিফ একদম ঠিক কথা বলেছিস। ঝিনুক খানা রেখে উঠে রুমে গিয়ে ব্যাগ গুচিয়ে চলে এসেছে ফিরুজ সবার সাথে সোফায় বসে গল্প করছে।
ঝিনুক:- আমি রেডি চলো। ফিরুজ উঠেছে সাথে মা বাবা এক কথায় বাড়ির সবাই ঝিনুকের কাছে এসেছে। ঝিনুক মন খারাপ করে চলে যাচ্ছে তখনি সিমি গিয়ে ঝিনুকের হাতটা ধরে বলে।
সিমি:- ঝিনুক আপু আমি তো আপনার ছোট মত যদি কোনো অন্যায় করে থাকি তাহলে ক্ষমা করে দিবেন। আর আপনাকে কথা দিচ্ছি আপনার ভাইকে সবসময় সুখে রাখবো কখনো সাহানার মত করে কষ্ট পেতে দিবো না এটা আপনাকে ছুয়ে আমি কথা দিচ্ছি। সিমির এই কথা শুনে ঝিনুক ব্যাগটা রেখে সিমিকে জড়িয়ে ধরে বলে।
ঝিনুক:- সিমি তুমিও আমাকে ক্ষমা করে দিও সত্যি বলতে আমার ভুল হয়ছে তোমাকে প্রথম থেকে সাপুট করলে তুমি আরও আগেই আমাদের সংসারটা গুচিয়ে দিতে পারতে। ঝিনুক আর সিমি দুজনে দুজনকে জড়িয়ে ধরে তাদের মধ্যে সুসর্ম্পকটা তৈরি করে নিয়েছে। ঝিনুক বুঝতে পারছে সিমি সত্যি খুব ভালো মেয়ে। ঝিনুক সিমিকে ছেড়ে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাহিরে এসেছে।
ফিরুজ:- আচ্ছা আব্বা আম্মা তাহলে আপনারা সবাই ভালো থাকেন আমরা আশি আর আপনারা মাঝে মাঝে যায়েন আমাদের বাড়িতে সবাইকে বলে ওরা চলে গেছে। বাড়ির ভেতরে এসে আলের বাবা মা সবাই অনেক খুশি হয়েছে যাক এবার যদি ঝিনুক সুন্দর ভাবে সংসারটা করতে পারে।
আল:- আমার মনে হয় ঝিনুক আপু আর কোনো ঝগড়া করবে না এবার সুন্দর ভাবে সংসার করবে ওনার শ্বাশুড়ির সাথে মিলে।
দাদী:- হ্যা তা ঠিক বলেছিস।
আল:- আচ্ছা আমি বেরুলাম আর ভাইয়া একটু তাঁড়াতাড়ি এসো আজ কিন্তু আমাদেন বড় চুক্তিটা করতে হবে কোহিনুরের বাবার সাথে।
আরিফ:- এবার কিন্তু আগের মত করে চুক্তি করলে হবে না। এবার ওনি অর্ডার করলে ৫০% টাকা অগ্রিম পরিশোধ করতে হবে তারপর আমরা অর্ডার নিবো
আল:- হ্যা চুক্তিটা এবার এমন ভাবেই করার কথা। আচ্ছা তুমি এসো আমি গেলাম। আল বেরিয়ে যাচ্ছে তখনি সিমি বলে শুনেন আল দাঁড়িয়ে গেছে সিমি কাছে গিয়ে বলে।
সিমি:- আমি কি দুপুরবেলা খাবার নিয়ে আসবো?
আল:- কোনো দরকার নেই আর একটা কথা বলি আমি যখন বেরুবো তখন আমাকে পেছন থেকে ডাক দিবে না কথাটা মাথায় ভালো করে ঢুকিয়ে নাও এই বলে আল বেরিয়ে গেছে আর সিমি মন খারাপ করে সিঁড়ির দিকে যাচ্ছে তখনি ভাবি ডাক দিয়ে বলে।
ভাবি:- সিমি একটু শুনো।
সিমি:- ভাবি কিছু বলবেন? তখনি ভাবি সিমির হাতটা ধরে বলে।
ভাবি:- সিমি তুমি প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও আমি তোমার সাথে সত্যি অন্যায় করেছি।
সিমি:- ভাবি যা হয়েছে সব ভুলে যান আমি তো সেই গুলি মনে রাখি নাই।
ভাবি:- সত্যি সিমি তুমি খুব ভালো আল তোমাকে বিয়ে করে একদম ঠিক করেছে। সিমি আর ভাবি দুজনে কিছুটা গল্প করে যার যার রুমে গেছে এদিকে সিমি মনে মনে ভাবছে সবাইকে তো নিজের ভাগে এনেছি ওনাকে কি করে নিজের ভাগে আনবো? আমাকেই কিছু একটা করতে হবে ওনি হয়তো লজ্জা পায় কারণ ওনি বিবাহিতা এক বাচ্চার বাবা তার কারণে আমার কাছ থেকে দূরে দূরে থাকে আর তাছাড়া আমাদের মধ্যে তো সেই রকম সম্পর্কটা তৈরি হয়নি নাহ এভাবে যতদিন যাবে ততটা দূরুত্ব তৈরি হবে এর থেকে ভালো আমিই কিছু একটা করবো এসব ভাবতেছে।

ঐদিকে আল আরিফ দুজনে মিলে কোহিনুরের বাবার সাথে বসে চুক্তির সব কাজ শেষ করেছে। আল এখন আরিফকে একটু বেশি সম্মান করে যার ফলে আরিফ আগের থেকে কাজের প্রতি মনোযোগী হয়েছে। অফিসের কাজ শেষ করে আজ এই প্রথম ওরা দুই ভাই এক সাথে বাসাতে এসেছে। ওদের দুজনকে এক সাথে দেখে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
বাবা:- আরিফ আজ কি তোরা দুজনে এক সাথে এছেসিস?
আরিফ:- হ্যা আল জোঁড় করেই ওর গাড়িতে করে নিয়ে আসলো আমার বাইক রহিছ মিয়া নিয়ে আসবে।
মা:- যাক ভালো করেছিস দুই ভাই সবসময় মিলে মিশে থাকবি। এর মাঝে আর উপরে গিয়ে শাওয়ার নিতে চলে গেছে। সিমি আনোকে নিয়ে রুমে এসেছে আল কিছুকক্ষণ পর বেরিয়েছে।
আনো:- বাবাই তোমার বুকের ব্যথা চলে গেছে? আল কিছুটা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তখনি সিমি একদম কাছে গিয়ে বলে।
সিমি:- সকালে যে আমি আপনার উপরে বসে ছিলাম সেই সময় আনো চলে এসেছিলো মনে আছে আপনার?
আল:- হ্যা কিন্তু তুমি আনোকে কি বলেছো?
সিমি:- আমি তো শুধু বলেছি তোমার বাবাই বুকে ব্যথা আমি মালিশ করেছি তার জন্য জিজ্ঞেস করছে। তখন আল গিয়ে আনোকে কোলে নিয়ে বলে।
আল:- ওরে আমার দুষ্টুমিষ্টি রাজকন্যা বাবাই বুকের সব ব্যথা শেষ বলেই আনোর সাথে দুষ্টুমি করতেছে। সিমি তাকিয়ে আছে ওদের দিকে আল আনোর সাথে গল্প করে নিচে গেছে সাথে সিমিও এসেছে তখনি ভাবি বলে।
ভাবি:- আমি সিমির কাছে ক্ষমা চেয়েছি সিমি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছে এবার আপনারাও আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন।
বাবা:- যাক ভুল বুঝতে পেরেছো সেইটাই অনেক আমাদের তো তোমার প্রতি কোনো অভিযোগ নেই তোমরা দুজন মিলে আমার দুই ছেলেকে সুখে রাখলে হবে। আমরা আর কতদিন থাকবো সবকিছু তো তোমাদের।
দাদী:- আল যে আবার আগের মত করে সবকিছু করছে এতে করেই আমি খুশি এখন আরিফের সাথে মিলে মিশে ব্যবসায় কাজ করবে আর ঝিনুকের স্বামী ফিরুজ তো আছেই সবাই সবার সাথে সুসর্ম্পক রাখলেই ভালো।
মা:- ঝিনুক ফোন করেছে ওর শ্বাশুড়ি নাকী অনেক খুশি হয়েছে ঝিনুকে অনেক আদর করে ঘরে নিয়েছে।
বাবা:- হ্যা আমি ফোন করেছি ঝিনুক সেই কথা বলেছে। সবাই এখন অনেক খুশি সবাই খাবার টেবিলে বসে কথা গুলি বলছে তখনি আনো বলে।
আনো:- দাদা ভাই তোমার যদি বুকে ব্যথা করে তাহলে আমাকে বলো?
বাবা:- কেনো তুমি কি করবে?
আনো:- তোমার বুকের উপরে বসে আমি মালিশ করে দিবো তখন তোমার বুকের ব্যথা চলে যাবে। সিমি আর আল বুঝতে পারছে আনো সবকিছু গন্ডগোল করে ফেলবে তখনি সিমি বলে।
সিমি:- মামুনি তোমার খানা কি শেষ হয়ছে আমরা রুমে যাবো চলো?
আনো:- তুমি যাও আমি বাবাই সাথে আসবো। তখনি ভাবি মুচকি হেসে আনোকে জিজ্ঞেস করে বলে।
ভাবি:- আনো বুকে যে মালিশ করলে বুকের ব্যথা চলে যায় সেটা তুমি জানলে কি করে? তখনি আল সিমির দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়েছে আর বুঝাচ্ছে বলো আরও বেশি করে তখনি আনো বলে।
আনো:- বাবাই বুকের ব্যথা করছিলো আর মামুনি বাবাই বুকের উপরে বসে মালিশ করে দিয়েছে এরপর বাবাই বুকের ব্যথা চলে গেছে। আনোর কথা শুনে সবাই মুচকি হেসে উঠছে আর সিমি আনোকে নিয়ে চলে যাচ্ছে তখনি দাদী উঠে গিয়ে সিমির কানের কাছে বলে।
দাদী:- সিমি আজ থেকে আনো আমার সাথে থাকবে দাও আনোকে তোমরা দুজনে একা থাকা বেটার আবার কখন কোন মালিশের কথা বলে ফেলে বলা তো যায়না বলে মুচকি হেসেছে সিমিও বুঝতে পারছে দাদী কি বলছে আনোকে দিয়ে সোজা উপরে গেছে। আল সিমির উপর কিছুটা বিরক্ত হয়ে রুমে গিয়ে বলে।
আল:- একটা বাচ্চা মেয়ের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় তা জানো না?
সিমি:- আমার কি দোষ! আমি কি জানতাম সিমি এমন কথা সবার সামনে বলে বসবে?
আল:- তুমি তো কিছুই জানো না। একটা ছোট মেয়ে তাকে কিভাবে ম্যানেজ করতে হবে তাও জানো না। তা আনো কোথায়?
সিমি:- দাদী বলেছে আজ থেকে আনোকে ওনার সাথে রাতে রাখবে?
আল:- তোমাকে যে বলেছি গতকাল রাতে আনোকে আমাদের সাথে রাখবে মনে নেই।
সিমি:- মনে আছে কিন্তু আজকের মত যদি সব বলে দেয় সেই ভয়ে দাদীর কাছে দিয়েছি।
আল:- মানে কি সব বলে দিবে? তখনি সিমি আলের দিকে এক পা দুই পা করে এগিয়ে আসছে তখনি আল বলে এই তুমি এমন ভাবে আমার দিকে আসছো কেনো?
সিমি:- ইচ্ছে হয়ছে তাই এসেছি বলেই একদম আলের কাছে এছেসে তখনি আল কিছুটা সরে গিয়ে বলে।
আল:- সিমি আমি বুঝতে পারছি তুমি কি চাচ্ছো কিন্তু সেইটা সম্ভব না। তখন সিমি কিছুটা চুপ থেকে বলে।
সিমি:- কেনো সম্ভব না?
আল:- আমি বিবাহিতা আমার একটা মেয়ে আছে আর তোমার উজ্জল ভবিষৎ আমার মত একটা ছেলের জন্য কেনো তুমি তোমার জীবনটা নষ্ট করবে?
সিমি:- ও এই কথা আর আমি মনে করেছি অন্য কিছু দূর এসব বাদ দেন তো আমার কপালে যদি এমন বর থাকে তাহলে আমি কি করবো বলেন?
আল:- কিন্তু তুমি নিজেকে মানিয়ে নিবে কি করে? তোমাকে আনো যখন বাহিরে মা বলে ডাকবে তখন তোমার কাছে কেমন লাগবে তোমরা বান্ধবীরা এরা তোমাকে কি মনে করবে?
সিমি:- ওরা যা খুশি তা মনে করুক আমার কি? জীবনটা আমার আমি কি ভাবে সাজাবো আর কেমন ভাবে থাকবো সেইটা আমি খুব ভালো করেই জানি।মানুষের কথার দিকে তাকিয়ে নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নেওয়াটা একদম বোকামি ছাড়া কিছুই না।
আল:- তারপরও আমার সাথে তোমার যায়না।
সিমি:- আমি আর কোনো অযুহাত শুনতে চাইনা আমি আপনাকে বড্ড বেশি ভালোবাসি আর যতদিন বেচে থাকবো ততদিন আপনার বুকে মাথা রেখেই ঘুমাতে চাই প্লিজ তখন আল আর কোনো কথা বলেনি। আল চিন্তা করছে সিমি যা বলেছে তা ঠিক মানুষের কথার জন্য নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা ঠিক না। তখনি সিমি বলে আমাকে কি ভালোবাসা যায়না?
আল:- ভালোবাসা তো যায় পড়ে কিন্তু কখনো বলতে পারবে না আমি তোমাকে ঠকিয়েছি? তখনি সিমি আলের দিকে এগিয়ে আসছে একটু একটু করে আল দাঁড়িয়ে আছে সিমি একদম কাছে এসে আলের পায়ে সিমির পা গুলি রেখেছে আলের দুইটা হাতকে সিমির কমোড়ে ধরিয়ে দিয়ে নিজের ঠোঁট গুলি আলের ঠোঁটে গুজে দিয়ে চোখ গুলি বন্ধ করে দিয়েছে আজ আল সিমির সাথে সারা দিয়েছে সিমিকে আল এক পর্যায়ে কোলে নিয়ে খাটের উপরে রেখেছে আজ তাদের মধ্যে প্রথম ভালোবাসা হয়ছে কোনো ফুল নেই নেই কোনো রকম সাজানো বিছানা তাও আজ তাদের দুজনের মধ্যে ভালোবাসাটা একদম পার্ফেক্ট ভাবে হয়ছে সিমির জীবনে প্রথম মানে বাসরও বলতে পারেন তবে আলের কথা বলার দরকার নেই কারনটা তো আপনারা সবাই জানেন। দুজনে দুজনকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ছে আজ আর মাঝে কোনো রকম দূরুত্ব নেই আজ এক বালিশে দুজনে মাথা রেখেছে।

সকালে সিমির ঘুম ভেংগে দেখে আল তার বুকে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে সিমির কাছে ব্যাপারটা খুব ভালো লাগছে আর রাতের কথা গুলি মনে করে করে মুচকি মুচকি হাসতেছে। তবে মনে মনে একটা প্রশ্ন তৈরি হয়ছে সাহানা কেনো ওনার নামে এমন মিথ্যা অপবাদ দিলো? তখনি আল সিমিকে আরো শক্ত ভাবে জড়িয়ে ধরে ঘারের মধ্যে মুখ লুকিয়ে দিয়েছে। সিমির কাছে আজ সবকিছু অন্যরকম লাগছে প্রতিদিন সকালে কত রকম ঝগড়া আর কত কাহিনি হতো আর আজ সবকিছু কেমন এ্যালোমেলো হয়ছে এই জন্যই ভালোবাসা এত সুন্দর যার প্রতিটা মুহুর্ত মনে রাখতে বাধ্য করে। সিমি ছোটো ছোটো কিস করতেছে আলের কপালে আল মিষ্টি হেসে সিমির দুষ্টুমিষ্টি ভালোবাসা গুলি উপভোক করছে।
সিমি:- আজ অফিসে যাবেন না?
আল:- ইচ্ছে করছে না আজ সারাদিন তোমাকে আনোকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাবো কি বলো?
সিমি:- সত্যি যাবেন?
আল:- হ্যা যাবো বলে সিমিকে কাতুকুতু দিতে আরম্ভ করছে আর সিমির মিষ্টি হাসির ঝনঝনিতে সারা ঘর হেসে উঠছে। আল সিমির দিকে তাকিয়ে আছে আর মনে মনে ভাবছে দেরিতে হলেও আমার সত্যি কারের ভালোবাসাটা আমার কাছে এসেছে এরজন্য আল্লাহ আপনার কাছে লক্ষ কুটি শুকরিয়া আলহামদুলিল্লাহ।
সিমি:- আমি ফ্রেশ হবো আপনি শুয়ে থাকেন বলে সিমি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসেছে আর আল সিমির জন্য যে নেকলেসটা কিনে ছিলো আজ সেইটা বের করেছে। সিমি কিছুকক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে বেরিয়েছে আজ সিমিকে মনে হয় একটু বেশি সুন্দর লাগছে আল সিমির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
সিমি:- কি আজ এত রোমান্টিক হয়ে গেলেন?
আল:- আজ কেনো জানি তোমাকে একটু বেশি সুন্দর লাগছে বলেই জড়িয়ে ধরে ঘারে চুমু দিতেছিলো তখনি সিমি বলে মামুনি তুমি তখনি আল সিমিকে ছেড়ে সোজা দৌড়ে ওয়াশরুমে আর সিমির কি হাসি কারণ সিমি মিথ্যা বলেছে আনো আসেনি সিমি বসে রেডি হচ্ছে তখনি দেখে ওর টেবিলে একটা সুন্দর নেকলেস আর সাথে লিখা বাসর রাতের উপহার যদিও তোমার ভালোবাসার কাছে এটা সামান্য কিন্তু সত্যি বলছি আমি খুব পছন্দ করে তোমার জন্য কিনেছি। কাগজটা পড়ে সিমি অনেক খুশি হয়েছে আর মনে মনে বলে এসব কিছু আমার দরকার নেই আপনার ভালোবাসা আমার সব তাও নেকলেসটা পড়েছে যেহেতু আল এতটা ভালোবেসে দিয়েছে। সিমি একদম রেডি হয়ে বসে আছে তখন আল বেরিয়ে বলে আনো কিছু দেখেনি তো?
সিমি:- সব দেখছে আপনি যা যা করেছেন?
আল:- কি?
সিমি:- জ্বি সব দেখছে তখনি আল চেয়ে দেখে দরজাটা ভিতর দিয়ে বন্ধ করা আর তখনি সিমির কাছে এসে ওকে কোলে নিয়ে বলে
আল:- আনো ঘরে আসেনি আমাকে মিথ্যা বলে ভয় দেখানো হয়ছে তাইনা বলেই সিমিকে ঘুরানো শুরু করে সিমিও খুব মজা পাচ্ছে আলের এমন কাজে।

এখন দেখতে দেখতে ওদের দুজনের মধ্যে ভালোবাসাটা তৈরি হয়েছে অনেকটা। মাস খানেক হয়েছে এখন কোনো ঝগড়া হয়না ঝিনুক মাঝে একবার এসেছিলো তবে খুব ভালো আছে আর মালা তো আবিরের সাথে খুব সুন্দর ভাবে সংসার করছে। আলের পরিবারের সবাই এখন অনেকটা ভালো আছে। আজ আলের দাদি আলকে বলেছে সিমিকে নিয়ে কোথাও থেকে ঘুরে আসতে। আল রাজি হয়েছে যাবে সবাই অনেক খুশি হয়েছে এর মধ্যে ঝিনুক এসেছে সাথে ওর শ্বশুর শ্বাশুড়ি আর ফিরুজ এসেছে সবাই অবাক হয়ে গেছে আবার কোনো ঝামালে করলো নাকী ঝিনুক তখনি ঝিনুক বলে।
ঝিনুক:- আমি জানি তোমরা কি ভাবছো তবে যা ভাবছো তা নয় আমরা সবাই এসেছি ফয়সালের বিয়ের কার্ড নিয়ে। আগামী শুক্রবার বিয়ে ওনারা আমাকেও সাথে নিয়ে এসেছে যাতে করেরে তোমরা সবাই এই বিয়েতে যাও।
বাবা:- ফয়সালের বিয়ে?
ফিরুজ:- সাহানার সাথে ফয়সালের বিয়ে হয়নি আপনারা এতদিন যা ভাবছেন আর আমরা যেইটা জানতাম সবটা মিথ্যা। সাহানা অন্য এক বড় ব্যবসায়ী আর বয়সকো লোককে বিয়ে করে কানাডা চলে গেছে। আহ পনের দিন হলো সাহানা এমন কাজ করেছে।
বাবা:- যাক যে চলে গেছে ওর কথা বলার দরকার নেই সাহানার জন্য আমাদের সবার জীবনে অনেক ঝড় ঝাপটা গেছে।
ঝিনুক:- বাবা মা তোমরা কিন্তু আসবে ওনারা তোমাদের কাছে লজ্জিত তার কারণে আমাকে সাথে নিয়ে এসেছে।
ফিরুজের মা:- বাবা আল যদি তুমি এসো আমি অনেক খুশি হবো।
আল:- আমি চেষ্টা করবো তবে আমি আর সিমি আগামীকাল রাতেই কক্সবাজার যাবো মনে হয় থাকতে পারবো না অনুষ্টানে। সবাই বুঝতে পারছে তখন আলের বাবা কথা দিয়েছে ওনারা সবাই যাবে। ঝিনুকরা চলে গেছে কারণ আরও অনেকে কার্ড দিতে হবে। সবাই এখন একটু শান্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে তখন আল বলে সিমি তুমি রেডি করে রেখো সবকিছু আমরা কিন্তু আগামীকাল রাতেই রওনা দিবো।
সিমি:- ঠিক আছে। আল নাস্তা করে অফিসে গেছে আর কিছুকক্ষণ পর পর সিমিকে ফোন করে। আলকে দেখে মনে হয় সদ্য কারো প্রেমে পড়েছে আর সিমি তার সেই প্রেমিকা। সিমিও আলের এমন কর্মকান্ডে দিন দিন অবাক হয় আর মনে মনে ভাবে ওনি কি সত্যি কারো সাথে প্রেম করে বিয়ে করেছিলো নাকী আমার সাথে মিথ্যা বলেছিলো? ওনাকে দেখে মনে হয়না ওনি আমার আগে কাওকে ভালোবেসেছে হয়ত প্রেমে একবার ব্যর্থ হয়ছে আর হারিয়ে দেখেছে হারানোর যন্ত্রনা কতটা কষ্টদায়ক। তার জন্যই দ্বীতীয় বার আর কোনো কিছু হারাতে চাইনা এই জন্য আমাকে পাগলের মত ভালোবাসে এতে করে আমারিই লাভ হয়ছে আমি তো একটা পাগল বর পেয়েছি যে আমাকে নিয়েই ভাবে এতেই আমার আনন্দ অন্য কিছুর কি দরকার।

রাতে বাসায় এসেছে আল সিমি বসে সবকিছু গুচাচ্ছে আর আল ওকে বারে বারে ডিসট্রাব করছে একটু পর পর আল সিমিকে জড়িয়ে ধরে চুমু দেয় আবার কাতুকুতু দেয় এসব সিমির কাছেও ভালো লাগছে আগামী কাল রাতেই হানিমুনে যাবে এভাবে চলতে থাকবে ওদের সংসার। যেতে যেতে সিমি থেকে গেলো আর অবশেষে আলের মন জয় করে নিলো প্রথমে কষ্টটা করতে হয়ছে আর এখন রানীর মত আছে সিমি। ওদের ভালোবাসার সংসার আর সবার সাথে সিমির সুন্দর ব্যবহার এভাবে ওরা এক সাথে সবাই মিলে থাকছে। একদিন আলের সাথে শাওনের দেখা হয়ছিলো শাওন বিয়ে করেছে সুখে আছে তবে বৌ নাকী মা বাবার সাথে থাকতে চাইনা যার কারণে আলাদা বাসা নিয়ে থাকে। এদিক দিয়ে আল সবকিছুতে জয়জয়কার হয়ছে। সুন্দরী বৌ আবার সবার সাথে মিলে মিশে থাকে সবসময় আলের প্রতি যত্নশীল আর আনোর প্রতি মায়ের ভূমিকা সবকিছু মিলে সিমির সাথে আলের সংসার জমে ক্ষীর। যতদিন যাচ্ছে ততটা ভালোবাসা তৈরি হচ্ছে আপাদত ওদের মধ্যে আর কোনো ঝগড়া নেই কেউ কাওকে বলে না তুমি চাইলে যেতে পারো বরং বলে তুমি চাইলেও যেতে পারবে না আমি তোমাকে কোথাও যেতে দিবো না।

কিছু কথা:- প্রথমে সকল প্রিয় পাঠকদের নিকট আবেদন থাকবে সবাই গঠনরূপ মন্তব্য করবেন। যদি আপনাদের কাছে খারাপ লাগে তাও বলবেন এতে করে আমি আমার ভুল গুলো খুজে বের করতে পারবো। এবার আশি গল্পের দিক দিয়ে এটা একটা সুম্পর্ন কাল্পনিক থেকে লেখা। গল্পে সিমির সাথে আলের মিলটা প্রয়োজন ছিলো তানা হলে গল্পটার পূর্নতা পেতো না। গল্পটা দাঁড়া এইটা বুঝানো হয়ছে যে একটা মেয়ে ইচ্ছে করলে একটা সাজানো গুচানো সংসারকে এ্যালোমেলো করে দিতে পারে আবার একটা অগুচালো সংসারকে গুচিয়ে সুন্দর করে দিতে পারে এইটাই মূল থিম ছিলো। আমি আমার সর্বচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছি গল্পটাকে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে লিখতে জানি’না কতটুকু আপনাদের মন মত লিখতে পারছি! যদি কোনো রকম ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকে তাহলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ইনশাআল্লাহ আবারো নতুন কোনো গল্প নিয়ে হাজির হয়ে যাবো আপনাদের মাঝে ততদিন আপনারা সবাই ভালো থাকবেন আর আমার জন্য দুআ করবেন।
।সমাপ্তি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে