তুমি চাইলে যেতে পারো পর্ব-০৩+০৪

0
861

গল্প:-#তুমি চাইলে যেতে পারো (পর্ব:-০৩)
লিখা:- AL Mohammad Sourav

তুমি দরজার আড়াল থেকে না বলে সামনে এসে বলো আমি তোমার আশে পাশে আছি তুমি ভয় পেওনা। দূর থেকে কেউ কারো পাশে থাকতে পারে না। বরঞ্চ তোমার কন্ঠটা আমাকে আরও বেশী ভয় পায়িয়ে দিচ্ছে। তখনি আবার দরজার আড়াল থেকে বলে উঠে তোমার থেকে আমি বেশী দূরে নয় খুব কাছাকাছি থাকি। আমার কন্ঠ শুনে তুমি ভয় পেওনা আমি তোমার কোনো ক্ষতি করবো না। যখন সময় হবে তখন আমি নিজেই আবার তোমার সামনে আসবো। তখনি সিমি বলে আচ্ছা তোমার নাম কি আর কেনো তুমি আমার সাথে এমন ভাবে লুকিয়ে কথা বলো। তুমি তো আমার সামনে এসেই কথা বলতে পারো এমন ভাবে কথা বলতে বলতে দরজার সামনে চলে গিয়ে দেখে কেউ নেই। অবাক হয়ে গেছে এইটুকু সময়ের মধ্যে সে কোথায় লুকিয়ে গেছে। মালা বলেছে এই বাড়ীতে কোনো বাচ্চা নেই আর আমার সাথে প্রতিনিয়ত বাচ্চাটা কথা বলে যাচ্ছে। মালা কি আমার সাথে মিথ্যা বলছে নাকী কোনো ভূতের বাচ্চা আমার সাথে খেলা করছে। নাহ আমাকে এই রহস্যটা বেড় করতে হবে বলে ঘরের ভেতরে গেছে তখনি মোবাইলের রিংটোন শুনতে পেলো। আমার মোবাইলে তো চার্জ নেই বন্ধ হয়ে আছে তাহলে কার মোবাইলে রিং হচ্ছে? তখনি চেয়ে দেখে খাটের উপরে একটা মোবাইল। সিমি মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখে শ্যালো নাম দিয়ে সেইভ নাম্বার থেকে কল এসেছে। রিসিভ করবে কি করবে না ভাবছে এর মধ্যে ফোন কেটে গেছে। সিমি মোবাইলটা হাতে নিয়ে ভাবছে শ্যালোটা কি আলের আগের বৌ নাকী অন্য কোনো মেয়ে এর মাঝে আল ঘরে ঢুকে দেখে সিমি মোবাইলটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আল কোনো রকম রিয়াক্ট না করে সুন্দর ভাবে বলে।
আল:- সিমি মোবাইলটা আমার দাও বলে হাতটা বাড়িয়েছে। আলের এমন কথা শুনে সিমি অবাক হয়ে তাকিয়েছে আলের দিকে। তখন আবার বলে কি হলো দাও মোবাইলটা। তখন সিমি মোবাইলটা দিয়েছে আর আল মোবাইলটা হাতে নিয়ে বেড়িয়ে আসতেছে তখনি সিমি বলে।
সিমি:- আমার কিছু কথা বলার ছিলো। আপনার কাছে কি সময় আছে আমার সেই কথা গুলি শুনার?
আল:- আমি জানি তুমি কি কথা বলবে। আর সেই কথা গুলির উত্তর আমার কাছে আছে। কিন্তু এখন তোমাকে কোনো উত্তর আমি দিবো না।
সিমি:- অন্তত এইটুকু তো বলেন আমি এখন কি করবো?
আল:- খাবে দাবে ঘুমাবে আর নিজের মত করে থাকবে। আপদত তোমার কাজ এইটাই বলে সুন্দর ভাবে বেড়িয়ে যাচ্ছে তখনি সিমি বলে।
সিমি:- আপনার বাড়ীর সবাই বলেছে আপনার বৌয়ের কোনো প্রয়োজন নেই তাহলে আমাকে কেনো বিয়ে করেছেন? তখন আল একটা রহস্যময় হাঁসি দিয়ে বলে।
আল:- এক কথা আমি বার বার বলতে পছন্দ করি না। আর শুনতেও পছন্দ করি না। তোমার কোনো পশ্নের উত্তর দেবার সময় এখনো হয়নি। যখন হবে তখন আমি নিজেই তোমাকে বলবো। আর হ্যা এসব ব্যাপারে কাওকে কিছু জিজ্ঞেস করোনা। সবাই তোমাকে নিয়ে হাঁসির পাত্র বানিয়ে নিবে।
সিমি:- প্লিজ আপনার পায়ে পড়ি আমাকে এমন কনফিউশনে রাখবেন না। আমি এতটা কনফিউশন আর নিতে পারছি না। আল আর কোনো কথা বলেনি সোজা নিচে চলে আসছে। আল দরজা দিয়ে বেড়িয়ে যাবে তখনি আলের বাবা ডাক দিয়েছে।
বাবা:- আল ইসলাম দাঁড়া তোর সাথে আমার কথা আছে। আল দাঁড়িয়ে গেছে। তখন ওর বাবা বলে। উকিল সাহেব বলেছে তোদের নাকী এখনো ডির্ভোস হয়নি? আর তোর বৌ নাকী অনেক টাকা দাবী করেছে?
আল:- এসব কথা ছাড়া আর কোনো কথা থাকলে বলেন। আমার হাতে সময় নেই আমার কাজ আছে। তখনি ওর দাদী বলে।
দাদী:- আল তুই তো এমন ছিলি না! তাহলে কেনো এতটা পরিবর্তন হয়ে গেলি? তোর জন্য এখন আমার মৃত স্বামীকে বকা শুনতে হয়।
আল:- আমার এই পরিস্থিতির জন্য দায় কে? কেনো আমি এমন হলাম? এর সব প্রশ্নের উত্তর তোমাদের সবার জানা। তাও কেনো আমাকে বার বার এমন কথা শুনাও।
বাবা:- আল আমি কিন্তু এখনো আমার উত্তর পায়নি।
আল:- ডির্ভোসের কাগজে ও সাইন করছে আমিও করেছি। আর তাছাড়া আদালত আমাদের ডির্ভোস মঞ্জুর করেছে। এরপরেও ও আমার কাছে টাকা চাচ্ছে। আমি বলে দিয়েছি কানাকুঁড়ি দিবো না। এখন আপনার উত্তর পেয়েছেন। তাহলে এখন আমি যেতে পারি। তখনি আলের মা বলে।
মা:- আমার কিছু কথা আছে। তখন আল মুচকি হেসে বলে।
আল:- আমি জানি আপনার কি কথা আছে। তবে আপনাদের সব কথার উত্তর দিতে আমি বাধ্য নয়।যদিও সবকিছুর উত্তর আমার কাছে আছে। কিন্তু আমি এখন কিছুই দিবো না। কারণ আপনাদের আমি এখন বিন্দু পরিমান বিশ্বাস করতে পারছি না।
মা:- আল তুই এমন কথা বলতে পারলি? আমি তোর মা আমি কখনো তোর খারাপ চাইবো।
আল:- আমার ভালো কখনো চেয়েছেন বলে মনে হয় না। তখনি আলের বড় বোন ঝিনুক বলে।
ঝিনুক:- এখন তো বলবি আমাদের সব দোষ। তোকে কি আমরা বলেছিলাম এমন ভাবে বিয়ে করতে! তুই নিজেই বিয়ে করেছিস আর নিজেই ডির্ভোসের সিদ্ধান্ত নিয়েছিস। আর ঠিক গতকালের বিয়েটাও তুই আগের বিয়েটার মত করেছিস। নিজে দোষ করবি আর পড়ে বলবি সব দোষ আমাদের।
আল:- হ্যা সব দোষ আমার। যা করেছি সব আমি করেছি। আর তোরা সবাই ধূয়া তু*ল*শি পাতা। আমি আর কোনো কথা না বলে সোজা দরজা দিয়ে বেড়িয়ে আসছি। আমি জানি আমার পরিবার আমার জন্য কি করেছে। এখন তো সবাই ভালো সাজার চেষ্টা করবে। ড্রাইভারকে বলেছি গাড়ী বেড় করতে ড্রাইভার গাড়ী নিয়ে এসেছে। আমি চাবিটা নিয়ে নিজেই ড্রাইভ করে অফিসে এসেছি। আমাকে দেখেই জহির সাহেব এগিয়ে এসে বলে।
জহির সাহেব:- স্যার সিমি কেমন আছে?
আল:- সেইটা জেনে আপনি কি করবেন? আপনি যা চেয়েছেন তা তো পেয়েছেন। আজকের পর আপনি আর কোনো সময় সিমির কথা জিজ্ঞেস করবেন না।
জহির সাহেব:- সরি স্যার। তবে ওর মা অনেক চিন্তা করছে।
আল:- আমি তো আপনাকে বলে ছিলাম সিমির মাকে বলতে যে সিমি কিছু দিনের জন্য ওর বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গেছে। আপনি কি আমার শিখানো কথাটা বলেন নাই।
জহির সাহেব:- স্যার বলেছি। কিন্তু ওর মোবাইলটা বন্ধ পাচ্ছে যার জন্য অনেক কান্নাকাটি করতেছে। আপনি যদি দয়া করে ওর মায়ের সাথে একটু কথা বলিয়ে দিতেন। তাহলে ওর মা কান্নাকাটি করা থেকে বিরত থাকবে।
আল:- সিমির মোবাইল তো ওর কাছেই আছে তাহলে বন্ধ থাকবে কেনো?
জহির সাহেব:- আমি তো মনে করেছি আপনি ওর থেকে মোবাইল নিয়ে বন্ধ করে রাখছেন।
আল:- অন্যের পার্সোনাল জিনিস আমি হাত দিয়ে ধরি না। মনে হয় মোবাইলটা সিমি নিজেই বন্ধ করে রাখছে। আর তাছাড়া এত বড়লোক বাড়ীর ছেলের বৌ হয়েছে এখন কি আর আপনাদের কথা মনে আছে। দেখুন আমার হাতে কাজ আছে আপনি দয়া করে আসুন। জহির সাহেব চলে যেতে ছিলো তখনি আল ডেকে বলে। মিষ্টার জহির সাহেব আপনার মেয়ের সাথে যে আমার বিয়ে হয়ছে এই কথাটা জেনো আমার পরিবারের কেউ ভুল করেও জানতে না পারে। যদি জানতে পারে তাহলে আমার আসল রূপটা আপনি দেখতে পারবেন।
জহির সাহেব:- স্যার আমি কাওকে কিছু বলিনি আর কখনো বলবো না। আপনি সেই দিক দিয়ে কোনো চিন্তা করবেন না।
আল:- হ্যা সেইটাই ভালো। আপনি এখন যান। জহির সাহেব চলে গেছে। আল একটা রহস্যময় হাঁসি দিয়ে চেয়ারে বসেছে। আর বাড়ীতে সিমি ঘরে বসে থাকতে ভালো লাগছেনা। তাই একটু নিচে এসেছে। নিচে মালা একাই সোফাতে বসে আছে। সিমি মালাকে দেখে ওর কাছে গিয়ে বসেছে। মালা সিমিকে দেখে উঠে যাচ্ছে তখনি সিমি বলে।
সিমি:- মালা একটু বসো তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
মালা:- দেখুন আমি আপনার সাথে বেশী কথা বলতে পারবো না। আল ভাইয়া এমনিতেই আমাদের সবাইকে অবিশ্বাস করে। ভাবি চলে যাওয়ার জন্য নাকী আমরা সবাই দায়ী। আর এখন যদি আপনি কিছুদিন পড়ে চলে যান তখন যদি জানতে পারে আমার সাথে আপনি কথা বলেছেন তখন আমাকে কথা শুনতে হবে।
সিমি:- ঠিক আছে তোমার ভাইয়ার ব্যপারে কিছু বলতে হবে না। তবে একটা কথা সত্যি করে বলবে।
মালা:- আগে শুনি কি কথা?
সিমি:- তুমি তো বলেছো তোমাদের বাড়ীতে কোনো বাচ্চা নেই কিন্তু আমার সাথে প্রতিনিয়ত একটা বাচ্চা কথা বলছে। কিন্তু বাচ্চাটা আমার সামনে আসছে না। শুধু দরজার আড়াল থেকে কথা বলে যখনি আমি দরজার সামনে যাই আর তখনি সে চলে যায়।
মালা:- আমাদের বাড়ীতে কোনো বাচ্চা নেই আর আপনি বলছেন প্রতিনিয়ত আপনার সাথে বাচ্চা কথা বলছে। বুঝতে পারছি আপনার মাথায় কোনো গন্ডগোল আছে। দেখুন ভাবি আমাদের বাড়ীতে কোনো বাচ্চা নেই মনে হয় সবকিছু আপনার মনের ভুল। তখনি ঝিনুক এসে বলে।
ঝিনকু:- মালা তোকে কতবার বারণ করেছি ওর সাথে কথা না বলতে। তাও তুই কথা বলছিস কেনো? তখনি মালা উঠে ঝিনুকের একদম কাছে গিয়ে বলে।
মালা:- আপু আমার মনে হয় এই ভাবির মাথায় কোনো গন্ডগোল আছে। ওনার সাথে নাকী একটা বাচ্চা সবসময় কথা বলে দরজার আড়াল থেকে।
ঝিনুক:- আমাদের বাড়ীতে তো কোনো বাচ্চা নেই তাহলে ও কোন বাচ্চার সাথে কথা বলে। মালা আমার মনে হয় ওর আগেও বিয়ে হয়ছে আর সেই ঘরে বাচ্চা ছিলো এখন সেই বাচ্চাটার কথা মনে করে কল্পনা করে আর নিজে নিজে বাচ্চার সাথে কথা বলে। তখনি আলের বড় ভাবি এসে বলে।
ভাবি:- ঝিনুক কি বলেছো আলের নতুন বৌয়ের বাচ্চা আছে।
মালা:- ভাবি ওনার কথা শুনে মনে হয় ওনার কোনো বাচ্চা আছে।
ভাবি:- আমারও মনে হয়ছে ওর আগেও বিয়ে হয়ছে। তানা হলে কোনো কিছু না জেনে শুনে বিবাহিত একটা ছেলেকে কোনো অবিবাহিত মেয়ে বিয়ে করতে রাজি হবে। তখনি সিমি বলে।
সিমি:- একজনের সম্পর্কে কোনো কিছু না জেনে শুনে এমন ভাবে বলা আপনাদের একদম ঠিক না। আমার কোনো বাচ্চা নেই আর আমার এর আগে কোনো বিয়ে হয়নি।
ঝিনুক:- এই মেয়ে একদম চুপ কোনো কথা বলবে না। আর শুনো এসব যদি আলের কাছে কিছু বলেছো তাহলে তার পরিনাম খুব ভয়ংকর হবে। আর মালা তোকে বলে দেয় ওর সাথে কোনো রকম কথাবার্তা বলবি না। ওকে দেখে যতটা সহজ সরল মনে হচ্ছে ততটা সহজ সরল হবে না। ও হয়তো সবকিছু জেনে বুঝে আলকে বিয়ে করে এই বাড়ীতে এসেছে।
ভাবি:- যতই জেনে বুঝে আধঘাট বেদে আসুক না কেনো কোনো লাভ হবে না। অল্প কিছুদিনের অতিথী মাত্র। আর অতিথীদের সাথে বাড়ীর সব কথা বলতে নেই বুঝলে মালা।
মালা:- হ্যা বুঝতে পারছি ভাবি।
ঝিনুক:- আলের আসল রূপটা যেদিন দেখবে সেদিন এক মুহুর্তের জন্য এই বাড়ীতে থাকতে চাইবে না। ভাবি মালা চল আমরা আমাদের ঘরে যাই। সবাই যার যার মত করে চলে গেছে তখনি সিমির মনে পড়ছে ওর মোবাইলে তো চার্জ নেই। মোবাইলটা তো চার্জ দিতে হবে। আমার কিছু জুরুরী ফোন করা দরকার বিশেষ করে মাকে আর আমি যাদের টিউশন করাই তাদের বাড়ীতে। যাই গিয়ে দেখি মালার কাছে চার্জার পায় কিনা। মালার রুমটা তো এইটা হবে আমি তো দেখেছি মালা এই রুমে ঢুকেছে। দরজা টুকা দিয়েছে তখনি মালা ভেতর থেকে বলে।
মালা:- কে?
সিমি:- আমি তোমার আল ভাইয়ার বৌ। তখনি মালা বিরক্ত হয়ে দরজার সামনে এসে বলে।
মালা:- প্লিজ ভাবি আপনি যান দয়া করে আমার কাছে কিছু জানতে চাইবেন না। আমি আপনাকে কিছুই বলতে পারবো না। এক নিস্বাঃসে কথা গুলি বলেছে।
সিমি:- মালা তোমার কিছু বলতে হবে না। আসলে হয়ছে কি আমার মোবাইলে চার্জ নেই যার কারণে মোবাইলটা বন্ধ হয়ে আছে। আমি তো চার্জার নিয়ে আসিনি যদি তোমার কাছে চেপ্টা পিনের চার্জার থাকে তাহলে আমাকে দাও আমি মোবাইলটা চার্জ দিয়ে আবার তোমাকে দিয়ে যাবো।
মালা:- আপনি দাঁড়ান আমি এনে দিতেছি। সিমি দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর মালা চার্জার নিয়ে এসে বলে। নেন চার্জার আর এইটা আপনার কাছে রেখে দিয়েন আমার কাছে আরেকটা চার্জার আছে।
সিমি:- ঠিক আছে। ধন্যবাদ তোমাকে। মালা মুখের উপর ঠাস করে দরজাটা লাগিয়ে দিয়েছে। সিমি মুচকি হেসে মনে মনে বলে এমন ভাবে আমার মুখের উপর কতজনে দরজা লাগিয়েছে এইটা নতুন কিছু না। এসব ভাবতে ভাবতে ঘরের ভেতরে ঢুকেছে আর তখনি চেয়ে দেখে ঘরটা এ্যালোমেলো হয়ে আছে। সব কিছু কেমন ছন্যছড়া হয়ে পড়ে আছে। ঘরের এই অবস্থা কে করেছে। তখনি সিমি ওর মোবাইলটার কথা মনে পড়েছে। সকালে তো মোবাইলটা বালিশের নিচে রেখেছি বলে বালিশটা সরিয়ে দেখে মোবাইলটা সেখানে নেই। আরে আমার মোবাইলটা গেলো কোথায়? আর ঘরটার অবস্থা দেখে তো মনে হচ্ছে কেউ এই ঘরে এসেছিলো তাহলে কি সে আমার মোবাইলটা নিয়ে গেছে। বলে ওয়াশরুমের দিকে নজর যেতেই দেখে ওয়াশরুমের দরজাটা খুলা দেখে মনে হচ্ছে কিছুক্ষণ আগে এখানে কেউ গোসল করে গেছে। এসব দেখে সিমি ভয়ে হাত পা কাপতে আরম্ভ করছে। কি হচ্ছে আমার সাথে তাহলে কি এই বাড়ীতে কোনো ভূত আছে ঠিক তখনি বাচ্চাটার হাঁসির শব্দ শুনতে পেলো। আর সিমি সাথে সাথে বাহিরে দৌড়ে গেছে। তখন চেয়ে দেখে সুন্দর ফুঁটফুঁটে একটা বাচ্চা দৌড়ে চলে যাচ্ছে। সিমিও ওকে ধরার জন্য দৌড় দিছে তখনি পেছন থেকে মালা এসে সিমির হাতটা ধরে নিয়ে বলে।
মালা:- এই ভাবি ছাদের দিকে দৌড়ে যাচ্ছেন কেনো? আমাদের ছাদে তালা মেরে রাখা হয়। ছাদে উঠা আল ভাইয়ার একদম করাকরি ভাবে নিষেধ আছে। আর ছাদের চাবিটা একমাত্র ভাইয়ার কাছে রাখে।
সিমি:- মালা আমাকে ছাড়ো আমি আজকে ওকে ধরে ছাড়বো।
মালা:- কাকে ধরবেন?
সিমি:- ঐ বাচ্চাটাকে।
মালা:- এখানে তো কোনো বাচ্চা নেই। তখন সিমি চেয়ে দেখে সত্যি সত্যি কোনো বাচ্চা নেই। ভাবি আপনিও যা শুরু করেছেন। যতসব ফালতু বলে মালা চলে যায়। আর সিমি মনে মনে বলে সত্যি সত্যি তো কোনো বাচ্চা নেই। তাহলে কি সব আমার মনের ভুল এসব ভাবতে ভাবতে ঘরের ভেতরে এসে ঘরটাকে গোচাচ্ছে ঠিক তখনি সিমি তাকিয়ে দেখে দরজা দিয়ে ঘরের ভেতরে একটা কিউট দেখতে মেয়ে বাচ্চা সিমির দিকে এক পা দু পা করে এগিয়ে আসতেছে।

চলবে…

গল্প:-#তুমি_চাইলে_যেতে_পারো (পর্ব:-০৪)
লিখা:- AL Mohammad Sourav

বাচ্চাটাকে দেখে সিমি একদম ভয় পেয়ে যায়। বাচ্চাটা ঘরের ভেতরে প্রবেশ করতেই লাইট অফ হয়ে গেছে। তখনি বাচ্চাটা বলে আমার সাথে দেখা হয়ছে তো? এখন তো আর তোমার ভয় নেই বলে একটা হাঁসি দেয় আর সিমি জোঁড়ে এক চিৎকার দিয়ে বলে উঠে ভূতের বাচ্চা বলেই ভয়ে অজ্ঞান হয়ে নিচে ফ্লোরে পড়ে যায়। বিকাল গড়িয়ে সন্ধা হয়ে গেছে এখনো সিমি অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। নিচে সবাই বসে গল্প করছে তখনি আলের দাদী বলে।
দাদী:- আচ্ছা আলের নতুন বৌটাকে তো আজ সারাদিনে একবারও দেখিনি! বৌটা কি আছে নাকী বাড়ী থেকে পালিয়ে গেছে।
ঝিনুক:- দাদী তুমি তো সত্যি কথা বলেছো। সেই দুপুরবেলা একটু দেখেছি আর দেখিনি। আমারও মনে হচ্ছে পালিয়ে গেছে।
ভাবি:- সে যে পালিয়ে যাবে আমি আগে থেকেই জানতাম। মেয়েটা যা মনে করেছে তাঁর কিছুই তো এখন হচ্ছে না। আর তাঁর জন্যই পালিয়ে গেছে। তখনি আলের মা এসে বলে।
মা:- কে পালিয়ে গেছে।
ঝিনুক:- তোমার আদরের ছেলের নতুন বৌ পালিয়ে গেছে। এখন তোমার ছেলে এসে দেখবে আমাদের সবার দোষ দিবে। বলবে আমরা ওকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি।
ভাবি:- মা এবার যদি আমার নামে কোনো মিথ্যা কথা বলে তাহলে কিন্তু আমি এর উচিৎ জবাব দিয়ে দিবো। ওর আগের বৌ চলে যাওয়ার পিছনে নাকী আমার হাত আছে। আমি নাকী এর জন্য দায় ছিলাম।
মা:- আলের বৌ কি সত্যি পালিয়ে গেছে নাকী আন্দাজে তোরা সবাই বলতেছিস! তখনি মালা বলে।
মালা:- আমি তো বিকালে দেখেছি ভাবিকে। ওনি দৌড়ে ছাদের দিকে যাচ্ছে যখনি আমি ওনাকে পিছন থেকে ধরি তখন ওনি বলছে আজ আমি বাচ্চাটাকে ধরে ছাড়বো আমাকে ছেড়ে দাও। জানো মা আমি সেখানে কোনো বাচ্চা দেখিনি। তখনি আলের দাদী বলে।
দাদী:- কি বাচ্চাটাকে ধরবে আলের বৌ বাচ্চটাকে দেখছে কোথায়?
মালা:- দাদী তুমি কোন বাচ্চার কথা বলছো? তখনি চেয়ে দেখে আল বাড়ীতে এসেছে। আলকে দেখে সবাই অবাক হয়ে গেছে। এত তাঁড়াতাড়ি বাড়ীতে এসেছে নিশ্চই সে জেনে গেছে বৌ যে পালিয়ে গেছে। আল বাড়ীতে ঢুকার পরেই আলের মা বলে।
মা:- আল তুই আজ এত তাঁড়াতাড়ি বাড়িতে এসেছিস! আল গম্ভীর ভাবে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে। তখনি ঝিনুক বলে।
ঝিনুক:- দেখ আল এখানে আমাদের কারও কোনো দোষ নেই। তোর বৌয়ের সাথে আমরা কেউ কোনো রকম কথা বলিনি। তোর বৌ মনে হয় তোর সম্পর্কে সবকিছু জেনে গেছে আর তাঁর জন্য পালিয়ে গেছে।
আল:- কি সিমি পালিয়ে গেছে? সিমি তো আমার সম্পর্কে কিছুই জানে না তাহলে সে পালিয়ে যাবে কেনো? আর তাছাড়া সিমি পালিয়ে যাবার মেয়ে নয়। নিশ্চই তোমরা ওর সাথে খুব বাজে ব্যবহার করেছো।
ঝিনুক:- মা দেখেছো তোমার ছেলের কথা!
ভাবি:- আমি তো আগেই বলেছিলাম সব দোষ আমাদের উপর দিবে। আর এখন ঠিকই আমাদেরকে দোষারূপ করতেছে।
আল:- যদি সিমি বলে তোমরা ওকে আমার সম্পর্কে বাজে কিছু বলেছো তাহলে আমি তোমাদের সবাইকে রাস্থায় নামিয়ে হাতে ভিক্ষার থালা ধরিয়ে দিবো। আগে যা হয়ছে তবে এবার যদি কোনো রকম ভুলবাল করে থাকো তাহলে আমি একদম সহ্য করবো না।
মালা:- ভাইয়া আমি বিকালে ভাবিকে দেখেছি। আমার মনে হয় ভাবি ঘরেই আছে একবার আগে ঘরে গিয়ে দেখা দরকার। তখন আল আর কোনো কথা না বলে সোজা ঘরের দিকে এসেছে। ঘরে ঢুকেই দেখে সিমি নিচে ফ্লোরে পড়ে আছে আর ঘরটার সবকিছু এ্যালোমেলো হয়ে আছে। সিমি তোমার কি হয়ছে বলে সিমিকে কুলে নিয়ে খাটের উপরে শুয়ে দিছে। নাকের কাছে হাতটা রেখে দেখে নিশ্বাঃস নিতেছে। একটা গ্লাসে করে পানি এনে সিমির মুখের উপরে ছিটা দিলাম। সিমি হালকা নড়াচড়া করেছে আমি ওকে ডাকতেছি। সিমি এই সিমি তখনি চোখ মেলেই উঠে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে।
সিমি:- ভূত ভূতের বাচ্চা বলে আমাকে আরও শক্ত ভাবে জড়িয়ে ধরেছে।
আল:- ভূত ভূতের বাচ্চা নয় আমি আল ইসলাম ভূত আসবে কোথা থেকে? তখন সিমি আলকে ছেড়ে দিয়েছে। সিমি সমস্থ ঘরটাকে ভালো ভাবে তাকিয়ে দেখছে লাইট ঠিক আছে। আল ছাড়া ঘরে আর কেউ নেই। তখনি আমি বলি কি হলো ভূতের বাচ্চা আসলো কোথা থেকে? সিমি চুপচাপ হয়ে আছে। আর মনে মনে ভাবছে থাক ওনাকে বলার দরকার নেই। ওনি বিশ্বাস করবে না বরঞ্চ আমার কথা শুনে আবার অন্য কিছু মনে করবে। তখনি আল বলে কি হলো আমি তো তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি?
সিমি:- আমি স্বপ্ন দেখছিলাম।
আল:- স্বপ্ন দেখছিলে মানে? আমি তো দেখলাম তুমি নিচে ফ্লোরে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে ছিলে কি হয়ছে বলো আমাকে।
সিমি:- সত্যি বলতে আমি আপনাদের বাড়ীতে আসার পড় থেকেই একটা বাচ্চা আমার সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে কথা বলে। আমি দুইবার বাচ্চাটাকে দেখেছি। আজ সন্ধার একটু আগে বাচ্চাটা ঘরে ঢুকেছিলো আর তখনি লাইট অফ হয়ে যায়। আমি ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি এরপর আর কিছু বলতে পারবো না। এর মধ্যে আলের ঘরের সামনে ওর বাড়ীর সবাই এসে দেখে সিমি বাড়ীতে আছে কোথাও পালিয়ে যায়নি ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলো। তখন আল সিমির চোখের পানি গুলি মুছে দেয় আর ওকে বলে।
আল:- ভূতের বাচ্চটাকে দেখবে? আলের কথা শুনে সিমির সাথে বাড়ীর সবাই অবাক হয়ে যায়। তখনি আলের মা বলে উঠে।
মা:- আল তুই এসব কি বলতেছিস? আমি কোনো কিছুই বলিনি শুধু সিমিকে বলেছি।
আল:- সিমি তুমি ভূতের বাচ্চাটা দেখবে।
সিমি:- হ্যা দেখবো। তখনি আল সিমির হাতটা ধরে ওকে নিয়ে যাচ্ছে। আলের পিছনে ওর বাড়ীর সবাই আসতেছে। ঘর থেকে বেড়িয়ে ছাদের দিকে যাচ্ছে আর সবাই অবাক হচ্ছে আল ছাদে যাচ্ছে কেনো? ঠিক তখনি আল স্টোর রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বলে। মামুনি দরজাটা খুলে দাও বাবাই এসেছি। সবাই অনেক আগ্রহো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কিছুক্ষণ পরেই ভেতর থেকে দরজাটা খুলেছে তখনি আমি শুধু মাত্র সিমিকে নিয়ে ভেতরে ঢুকেই দরজাটা লাগিয়ে দিয়েছি। বাহিরে সবাই এমন কান্ড দেখে অবাক হয়ে গেছে। ভেতরে ঢুকে সিমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে আমার হাতটা খুব শক্ত ভাবে ধরে রাখছে।
আল:- সিমি চোখ খুলে দেখো ভূতের বাচ্চা মেয়েটা কত কিউট। সিমি চোখ খুলে দেখে সেই বাচ্চা মেয়েটি ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। সিমি ভয়ে ভয়ে ওর দিকে হাত বাড়িয়েছে আর সাথে সাথেই মেয়েটি হু খামচির মত করে উঠেছে সিমি জোঁড়ে চিৎকার দিয়ে উঠে। সিমির চিৎকার শব্দ শুনে বাড়ীর সবাই যার যার মত করে ভয়ে নিচে চলে গেছে। ঘরে লাইট নিবু নিবু করছে তখনি আল বাচ্চাটাকে কুলে নিয়ে সিমির সামনে এসে বলে। আরে বোকা ও ভূত নয় ওর নাম আনো। তখন সিমি চোখ মেলে চেয়ে দেখে মেয়েটি আলের কুলের উপরে। সিমি মেয়েটির গালে হাত দিয়ে দেখে সত্যি সত্যি একটা মানুষের বাচ্চা ও কোনো ভূত নয়।
সিমি:- দেন তো আমার কুলে দেন বলে সিমি বাচ্চাটাকে কুলে নিয়েছে। সিমি মেয়েটিকে কুলে নিয়ে বলে। আমার সাথে এমন করেছো কেনো?
আনো:- বাবাই বলেছে এমন করতে। তখনি সিমি আলের দিকে তাকিয়ে আছে। আমাকে এমন ভাবে ভয় দেখানুর মানে কি?
আল:- বাচ্চা মেয়ের সামনে এত কথা বলতে নেই। বলে আমি বাহিরে এসেছি আর সিমি আনো’কে কুলে করে বেড়িয়ে এসেছে।
সিমি:- এইটুকু বাচ্চা মেয়ে একা একা স্টোর রুমে কি করে থাকছে?
আল:- সেটা তোমার না জানলে হবে।
সিমি:- নাহ আমার জানতে হবে। তখনি আমি ধমক দিয়ে বলি।
আল:- এই তুমি এত প্রশ্ন করো কেনো? এখন থেকে তুমি আনো’কে দেখাশুনা করবে। আজ থেকে ওর সব দ্বায়িত্ব তোমার।
সিমি:- কিন্তু মেয়েটি কে আর তার পরিচয় কি সেটা তো বলবেন?
আল:- সেটা তোমার না জানলে হবে। তোমাকে ওর জন্যই বিয়ে করে বাড়ীতে এনেছি। এখন তুমি আমার সাথে এসো বলে সিমিকে নিয়ে নিচে যাচ্ছি যখনি সিঁড়ি দিয়ে নামতেছি তখনি বড় ভাবি বলে।
ভাবি:- আমাদের সবার চলে আসাটা ঠিক হয়নি। আল যদি সিমিকে স্টোর রুমে খু*ন করে আমাদের সবাইকে ফা*সি*য়ে দেয়।
ঝিনুক:- ভাবি ঠিক কথা বলেছে। মা চলেন আমরা গিয়ে বাহির দিয়ে দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। তোমার ছেলেকে দিয়ে আমার বিন্দু মাত্র বিশ্বাস নেই।
মা:- হ্যা চল তাই করি বলে ওরা সবাই সিঁড়ির কাছে গেছে তখনি চেয়ে দেখে আল সিমি আর একটা বাচ্চা মেয়ে নিয়ে নিচে নামতেছে। সিমির কুলের বাচ্চাটা দেখেই সবাই কানাগুসা শুরু করেছে আবার আল মেয়েটাকে নিয়ে এসেছে। আমরা নিচে নেমেছি এর মধ্যে বাবা আর ভাইয়া দুজনে এসেছে। সিমির কুলে আনোকে দেখে ওর বাবা বলে উঠে।
বাবা:- আল এই মেয়েকে আবার এই বাড়ীতে এনেছিস?
আল:- কোন মেয়ের কথা বলছেন? এখানে কোনো মেয়ে নেই। যাকে আপনি মেয়ে বলছেন সে আমার মেয়ে আনো। আর আজ থেকে আনো এই বাড়ীতে থাকবে। (আলের মুখে মেয়ে কথাটা শুনে সিমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। ওনার তাহলে একটা মেয়ে আছে। আর কি কি আছে আল্লাহ ভালো যানে।) তখনি আলের মা বলে উঠে।
মা:- আল আনো’কে এই বাড়ীতে কবে এনেছিস?
আল:- এক সাপ্তাহ হয়ছে আনোকে এই বাড়ীতে এনেছি।
মা:- এক সাপ্তাহ ধরে আনো এই বাড়ীতে অথচ আমরা কেউ বলতে পারবো না!
আল:- তোমাদের জানিয়ে কি হবে। তোমরা তো আমার মেয়েটাকে এই বাড়ীতে থাকতে দিবে না। আনোকে আমি এতদিন স্টোর রুমে রেখেছি আর ওর দেখা শুনা লতা করেছে।
ঝিনুক:- কি লতা এক সাপ্তাহ ধরে ওকে দেখে রাখছে!
আল:- হ্যা এতে তোদের কোনো সমস্যা?
ঝিনুক:- আমাদের সমস্যা হবে কেনো? সমস্যা তো হবে তোর। তখনি বাবা বলে উঠে।
বাবা:- তা এখন কি ওকে ওর মায়ের কাছে নিয়ে যাচ্ছিস?
আল:- নাহ আজ থেকে আনো এই বাড়ীতে থাকবে।
মা:- এই বাড়ীতে থাকবে মানে! তোকে তো বলেছি আনো তোর মেয়ে না আর তাছাড়া আনো’র মা নিজেই বলেছে ওর বাবা অন্য কেউ। আর তুই বলিস ও তোর মেয়ে। এক মাত্র একজন মা বলতে পারে তাঁর সন্তানের জন্মদাতা বাবা কে। আর সেই মা যখন বলে আনো’র বাবা অন্য কেউ তাহলে তুই কেনো বার বার একিই কথা বলিস। (আলের মায়ের মুখের কথা শুনে সিমি আরও অবাক হচ্ছে। কি বলে ওনি নিজের ছেলের নামে কেউ এমন কথা বলতে পারে! নাহ আমাকে ধৈর্য ধরতে হবে এখন সবকিছু আস্তে আস্তে খুলাসা হচ্ছে)
আল:- মা আপনি আবার শুরু করছেন! আপনাকে আমি নিষেধ করেছি এই ব্যপারে কথা বলতে তাও আপনি বলতেছেন। আনো আমার মেয়ে আর আমি ওর বাবা আজ থেকে আনোর সব দেখাশুনা সিমি করবে।
ঝিনুক:- দুধ কলা দিয়ে কাল*সা*প পুষেছো তোমরা সবাই। আমি হলে এমন ছেলেকে ছডি ঘরে গলা*টিপে মে*রে ফেলতাম। ওর জন্য আজ আমি আমার শ্বশুর বাড়ীতে যেতে পারি না। আমার জীবনটাকে একদম বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে।
আল:- তোর ভাগ্য ভালো আমি সবকিছু মুখ বুঝে সহ্য করে নিয়েছি। যদি আমি একটু ত্যাড়ামি করতাম তাহলে তোর শ্বশুর বাড়ীর সবাইকে জেলে পাঠাতাম। তোর জন্য আমার জীবনের বারোটা বেজেছে শুধু বড় বোন বলে আমি সবকিছু নিরবে সহ্য করে গেছি।
বাবা:- আল তুই কিন্তু অতিরিক্ত বলতেছিস। তোর জন্য ঝিনকু আজ শ্বশুর বাড়ী ছাড়া আর তুই বলিস সব দোষ ঝিনুকের?
আল:- সেইটা সময় বলে দিবে কার জন্য কে ঘর ছাড়া। এখন আমি স্পষ্ট ভাবে বলে দেয় আনো আজ থেকে এই বাড়ীতে থাকবে আর আনোর সব দেখাশুনার দ্বায়িত্ব থাকবে সিমির উপর। তখনি আলের বড় ভাই বলে।
আরিফ:- আল তুই বুঝার চেষ্টা কর। বাচ্চাটা তোর না এইটা আমাদের আশে পাশের সবাই জানে। এখন যদি তুই বাচ্চাটাকে নিজের বলে সিকার করিস তাহলে আশে পাশের মানুষের কথা গুলি আমাদের শুনতে হবে। তুই তো দিনের পর দিন বাড়ীর বাহিরে থাকবি আর সব যন্ত্রনা ভুক করতে হবে আমাদের।
ঝিনুক:- আচ্ছা ভাইয়া যদি এই বাচ্চাটা ওর মেয়ে হয়ে থাকে তাহলে ও কেনো সাহানাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ডির্ভোস দিয়েছে? আর তাছাড়া আমাদের সবাইকে অপমানিত কেনো করেছে সবার সামনে?(সাহানা হচ্ছে আলের আগের বৌ যার কথা এতদিন শুনে এসেছেন এখন নামটা জানতে পারলেন)
আল:- সাহানা কি করেছে আর তোমরা সবাই কি ভুলে গেছো? সাহানা দোষ করেছে তাঁর জন্য ওকে ডির্ভোস দিয়েছি। আমার মেয়ে আনো কোনো দোষ করেনি তাহলে ওকে কেনো দূরে সড়িয়ে রাখবো। ঠিক তখনি আলের বাবা এমন কথা বলেছে তা শুনে সিমি সহ বাড়ীর সবাই একদম অবাক হয়ে আলের দিকে তাকিয়ে আছে আল কি বলে তা শুনার জন্য সবাই অপেক্ষা করছে তখন আল যা বলে তা শুনে সবাই আরও অবাক হয়ে যায়।

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে