তুমিময় নেশার আসক্তি পর্ব-০৫

0
1107

#তুমিময়_নেশার_আসক্তি
#আলফি_শাহরিন_অর্পা
#পর্ব_৫

নিশ্বাসের শব্দ অনেক বেশি প্রগাঢ় হয়ে গেল। না নেশা আর নিতে পারছে নাহ। তাই সে তাড়াতাড়ি নিজের চোখ খুললো ব্যক্তিটিকে দেখার জন্য। কিন্তু না সে তাকে দেখতে পেলো নাহ। কেননা রুমটিতে ঘুটঘুটে অন্ধকার ছিলো আর ব্যক্তিটি একটা কালো হুডি পড়ে ছিলো আবার মুখের উপর মাস্ক লাগানো ছিলো। তাই তার চেহারা দেখা যাচ্ছে নাহ। নিজের এতো কাছে কোনো পুরুষকে দেখে নেশার খুব অস্বস্তি হচ্ছে। তাই সে ভাবলো ব্যক্তিটিকে বলে দূরে সরতে। অতঃপর যদি না সরে তাহলে তাকে ধাক্কা মেরে এখান থেকে দৌড় দেবে। আর জীবনেও একা কখনো লাইব্রেরি আসবে নাহ।যখনই লোকটাকে উদ্দেশ্যে করে কিছু বলতে যাবে তখনই লোকটা তার এক হাত দিয়ে আমার মুখ চেপে ধরলো। তারপর খুব নেশালো এবং মিহি কণ্ঠে বললো-
–হুঁশ নেশাময়ী! কোনো কথা নয়। একটা কথা বলি মন ও কান খুলে শুনে রাখো খুব খারাপ ভাবে নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছি, প্রণয়ের নেশায়। আর আমাকে এই নেশা ধরিয়েছ তুমি। এর শাস্তি তোমাকে পেতে হবে। আর তোমার শাস্তি হলো সারাজীবন আমাতে বন্দী হয়ে থাকতে হবে। আমার বন্দী পিঞ্জিরার বদ্ধ পাখি হয়ে থাকতে হবে। তোমার শুরুও আমি হবো শেষও আমি হবো। আমাকে ছাড়া অন্য কারো কথা মাথায় এনো না, এর শাস্তি কিন্তু ভয়ংকর হবে তোমার জন্যও আর যার কথা মাথায় আনবে তার জন্যও।
ছেলেদের থেকে দূরে থাকবে নেশাময়ী। আজ ঔ আবির যেভাবে তোমার কাছে এসেছিল, তোমার এই হাত ধরে ছিলো আমার তখন মন চাচ্ছিল ওকে খুন করে ফেলতে। খুন করতে পারিনি তো কী হয়েছে এর শাস্তি ওকে আমি দিয়েছি। বাঁকা হেসে কথাটি বললো অজানা ব্যক্তিটি। এতোক্ষণ মনোযোগ দিয়ে তার কথাটি শুনছিলো নেশা। এরকম ভয়ংকর কথা শুনে তার হাত-পা কাপছে। এর মধ্যে অনেক সময় পার হয়ে গেল কিন্তু কারো কোনো সাড়াশব্দ পেলো না। তাই ধীরে ধীরে চোখ দু’টো খুললো, কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো সেখানে কেউ ছিলো না। তাহলে কী এতোক্ষণ সে কোনো ভ্রমের মধ্যে ছিলো? নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করলো নেশা।

–তুমি এখানে কী করছো? হঠাৎ এরকম গম্ভীর কণ্ঠ শুনে ভরকে গেলো নেশা। পাশ ফিরে দেখলো
দুই হাত ভাঁজ করে ফায়াজ দাড়ানো।
–আপনি…এখানে…কখন? ভয়ে ভয়ে প্রশ্নটি করলো নেশা।
–আমি কখন কোথায় থাকব এর জবাবদিহি কী আমি এখন তোমাকে দিবো।
–না..মানে। আপনি কী এখান থেকে কাউকে বের হতে দেখেছেন একটু আগে? লোকটির গায়ে কালো হুডি আর মুখে মাস্ক লাগানো ছিলো।
–মিস আমার মনে হয় আপনি জেগে জেগে দিবা স্বপ্ন দেখছেন। মিস আপনার তোহ দেখি বেশি বুঝার সাথে বেশি দেখারও রোগ আছে। তা আপনি জানেন না এই সময়ে কেউ লাইব্রেরিতে আসে না? তাহলে আপনি লাইব্রেরিতে করছেন কী?

ফায়াজের প্রশ্নে নেশার হুঁশ ফিরলো। ও প্রায় ভুলেই গিয়েছিল সে কেনো এখানে আসছে। তাই আর দেরি করলো যা বলার তাড়াতাড়ি বলে ফেললো-
-আই এম সরি। আমি তখনকার আমার ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। আমার আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করার আগে সবকিছু জেনে নেওয়া উচিত ছিলো। আমি ভেবেছিলাম আপনি শুধু শুধু ঐ ছেলেটিকে মারছেন আমি এটা জানতান না ঐ ছেলেটা কাউকে টিজ করছিলো।
–এটাই তোমার ফার্স্ট এন্ড লাস্ট মিসটেক হিসেবে কাউন্ট করলাম। নেক্সট টাইম এমন ভুল যেনো না হয়। এখন এখান থেকে যাও।যও!জোরে ধমক দিয়ে কথাটি বললেন তিনি। তার ধমক শুনে নেশা ভয়ে আর কিছু বলতে পারলো না।সেখান থেকে তাড়াতাড়ি চলে গেলো। সে চলে যেতেই ফায়াজ বাঁকা হাসলো।

নেশা করিডোর দিয়ে হাটছিলে আর ফায়াজকে বকাবকি করছিলো তখনই সেখানে উপস্থিত হলো রিমঝিম। সে ভ্রু নাড়িয়ে বললো-
–কীরে, ভাইয়া কে সরি বলছিস?
–হুম বলেছি। সাথে তার একগাদা ভাষণ ও শুনেছি।
–ঘুরতে যাবি।
–আরও একটা ক্লাস বাকী আছে।
–চল বাংক মারি।
— এইসব ক্লাস ফাঁকি দেঅওয়া আমার একদম পছন্দ না। এই বলে নেশা রিমঝিমকে টেনে ক্লাস করতে নিয়ে গেলো।

~ক্লাসে~
ক্লাস চলছিলো তখনই সেখানে উপস্থিত হয় ফায়াজ, রিখিয়া, কাল যে ছেলেটা ওদের বাচিয়ে ছিলো সে আর অন্যান্য কয়েকজন নাম না জানা স্টুডেন্ট। অতঃপর তারা বলতে শুরু করলো-
–আমি ফায়াজ চৌধুরী। আমি আপনাদের ভার্সিটির একজন স্টুডেন্ট সাথে আমার আরো একটি পরিচয় আছে আমি এই ভার্সিটির ভিপি, যারা জানেন না তারা যেনে রাখুন। কিছুদিনের মধ্যে ভার্সিটিতে নবীন বরণ অনুষ্ঠান আয়োজিত করা হবে। আর তোমাদের কোনো না কোনো কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস এ অংশগ্রহণ করতে হবে। সেটা নাচ হোক গান হোক বা অন্য কিছু।আর এটা বাধ্যতামূলক। মেয়েরা রিখিয়ার কাছে আর ছেলেরা নয়নের কাছে নাম লিখাবে।[ নয়ন হলো সে ছেলেটা যে কাল রিমঝিম ও নেশাকে বাঁচিয়ে ছিলো।

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে