তুমিময় নেশার আসক্তি পর্ব-০৮

0
1248

#তুমিময়_নেশার_আসক্তি
#আলফি_শাহরিন_অর্পা
#পর্ব_৮

ছেলেটির কথা শুনে নেশা ভয়ে কাঁপছে। ছেলেটি যেই ওর দিকে আস্তে আস্তে এগিয়ে আসতেছে এমন সময় সে ভাবলো না এভাবে বসে থাকা যাবে না। তোর সম্মান তোর নিজের হাতে যে করে হোক তোকে তা রক্ষা করতে হবে। কোনো মেয়ে দূর্বল হয় না। এই কথাটি নেশা বিরবির করে আশেপাশে কিছু খুঁজতে লাগলো তার ভাগ্য ভালো ছিলো তাই সে সেখানে ইটের স্তুপ আর কয়েকটা বাঁশ দেখতে পেল। তাই আর দেরি না করে সেখানে দৌড়ে চলে গেল এবং একটার পর একটা ইট উঠিয়ে ছেলেদের মারতে লাগলো। এতে করে ছেলেগুলো আহত হলো এবং ভয়ংকর রেগে গেল। তারা নেশার দিকে দৌড়ে এগিয়ে গেল নেশাও ভয়ে দৌড় দিল। দৌড়াতে দৌড়াতে নেশা হাঁপিয়ে গেছে। দৌড়ানোর এক পর্যায়ে পাথরের এক ছোট টুকরা নেশার পায়ে লাগে ফলে সে পড়ে যায় । ছেলেগুলো একটা বিশ্রী হাসি দিয়ে বললো-
–এখন তোমাকে কে বাঁচাবে মামুনি। যখনি ছেলেটা নেশার ওরনায় হাত দিতে যাবে তখনই কেউ একজন এসে ছেলেটার হাত ধরে ফেললো। নেশা চেয়ে দেখলো ফায়াজ। ফায়াজ এবার ছেলেটার হাত মোচর দিলো ফলে ছেলেটা চিৎকার দিয়ে উঠলো।
–ভুল জায়গায় হাত দিয়ে ফেলেছিস এটার শাস্তি ভোগ করতে হবে।এই বলে ফায়াজ বাঁকা একটা হাসি দিলো। তারপর উড়া ধুরা মারতে লাগলো। মারার এক পর্যায়ে ফায়াজ হাইপার হয়ে গেল এবং বললো-
–তোদের সাহস কী করে হয় আমার নেশাময়ীর গায়ে হাত তোলার? এই কথাটি শুনে নেশা চমকে উঠলো। বিষ্ময় নিয়ে ফায়াজের দিকে তাকালো। নেশাময়ী এই নামটা আমাকে ঔ অজানা ব্যক্তিটি ডাকতো। তার মানে কী ফায়াজ সেই অজানা ব্যক্তি। ততক্ষণে ফায়াজের লোকগুলো এসে পড়েছে। তারা ঔ ছেলেগুলোকে ধরে নিয়ে চলে গেল। ফায়াজ নেশার দিকে এগিয়ে গিয়ে বললো-
–চলো। অনেক রাত হয়েছে এখানে বেশিক্ষণ থাকা ঠিক না। এই বলে নেশার হাত ধরে তাকে টানতে টানতে নিয়ে গেল। আর নেশা হতভম্বের মতো চেয়ে ছিলো ফায়াজের পানে।

নেশাকে হোস্টেলে রেখে ফায়াজ এসেছে গোদাউনে। সেখানে ঐ ছেলেদের বেঁধে রাখা হয়েছে। ফায়াজ তার গার্ডদের ইশারা করলো কিছু জিনিস আনতে। অতঃপর তার গার্ডরা এক এক করে সব জিনিস আনলো সে জিনিসগুলো ছিলো কিছুটা এইরকম কয়েকটা বালতি তার মধ্যে অনেকগুলো বরফ, কয়েকটা মোটা লাঠি আর তেল। ফায়াজ প্রথমে ছেলেগুলোর উপরে বরফের পানিগুলো ঢাললো ফলে ছেলেগুলো কেঁপে উঠলো। অতঃপর হাতে লাঠি নিলো। লাঠিতে তেল মাখলো। তারপর সেটা দিয়ে ছেলেগুলোকে পিটাতে থাকলো যতোক্ষণ না তার মনটা তৃপ্ত হলো।
–অনেক বলছিলি তখন আমার নেশাময়ীকে ছাড়বি না এখন তোদের আমার থেকে কে বাঁচাবে। এই বলে আবারও পিটাতে লাগলো। অতঃপর তার গার্ডের দিকে তাকিয়ে বললো-
–এদের ততক্ষণ পিটাতে থাকবে যতক্ষণ নাহ এদের দেহ থেকে প্রাণ বেড়িয়ে যায়। এই বলে বাঁকা হাসি দিয়ে চলে গেল ফায়াজ।

রিখিয়া এয়ারপোর্টে এসেছে কাঙ্খিত ব্যক্তিকে পিক করতে। সে বার বার হাত ঘড়ি চেক করছে আর মনে মনে বিরবির করছে কখন আসবে সে।
–ময়না! এই ডাকটা শুনে রিখিয়ার ঠোঁট হাসি ফুটে উঠলো। সে দৌড়ে চলে কাঙ্খিত ব্যক্তিটির কাছে এবং জরিয়ে ধরলো।
–দাভাই! তুমি ফাইনালি এসে গেছ। তোমাকে আমি কতো মিস করেছি তুমি জানো নাহ।
–আমার পাগলী বোন আমার থেকে কিছু চেয়েছে আমি কী মানা করতে পারি।
–ধন্যবাদ দাদাভাই। এখন ফায়াজ আমারই হবে। মনে মনে এই কথাটি বলে রিখিয়া একটা বাঁকা হাসি দিলো

অন্যদিকে নেশা নিজের সাথে হওয়া দুর্ঘটনার জন্য ভয়ে কাঁপছে। তখনই তার মোবাইলে ফোন আসলো দেখলো তার চাচী ফোন দিয়েছে। নিজেকে স্বাভাবিক করে অতঃপর সে ফোনটি রিসিভ করলো।
–আসসালামু আলাইকুম চাচী।
–ওয়ালাইকুমুস সালাম। কেমন আছিস মা? ঠিক আছিস তো?
–হ্যাঁ চাচী মনি আমি ঠিক আছি আমার আবার কী হবে? আতঙ্কের সাথে কথাটি বললো নেশা।
–ঘুমিয়ে ছিলাম। তোকে নিয়ে অনেক খারাপ একটা স্বপ্ন দেখেছি। স্বপ্নটা দেখে আমার হাত-পা কাঁপছিল। কিন্তু তোর কিছু হয় নাই এটা শুনে মনে শান্তি লাগতাসে।মায়েরা বুঝি এমনই হয়। কিছু বলার আগেই তারা সব কিছু জেনে যায়। কথাটা মনে মনে ভাবতেই নেশার চোখে জল এসে পড়ল। তারপর চাচীকে উদ্দেশ্য করে বললো-
–উফফ চাচী! তুমি শুধু শুধু টেনশন নিচ্ছ। আমার আবার কী হবে। অতঃপর আরও কিছু টুকিটাকি কথা বলে নেশা ফোন কেটে দিলো।

চলবে..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে