হয়তো_ভালোবাসি Part_09

0
1748

হয়তো_ভালোবাসি
Part_09
#Writer_Eshetaq_Nora

পরেরদিন সকালে নীড় নেশার রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো

নেশাঃ আপনি এখানে কেন?আর দরজা কেন লাগালেন

নীড়ঃ আমার তোমার সাথে কিছু কথা আছে।

নেশাঃ দেখুন আপনার সাথে আমার কোন কথা নেই। আপনি প্লিজ চলে যান।

নীড়ঃ কথাটা আকাশের ব্যাপারে।

নেশাঃ কি কথা??

নীড়ঃ আকাশ একজন খ…..

ওই সময়ই নেশার ওয়াশরুম থেকে আকাশ বের হলো।আকাশ কে দেখে নীড় চুপ হয়ে গেল।

নীড়ঃ তুমি এখানে?

নেশাঃ হ্যা ওর রুমের ওয়াশরুম ক্লিন করছে তাই ও আমার রুমে এসেছে।।আপনি কি বলছিলেন বলুন।

আকাশঃ নীড় কি বলবে?

নেশাঃ ও নাকি তোমার ব্যাপারে কিছু বলবে আমাকে।

আকাশঃ নীড় আমার ব্যাপারে। কি বলবে?

নেশাঃ জানি নাহ।

আকাশঃকিছু বলবে তুমি নীড়??

নীড়ঃ নাহ মানে তুমি অনেক ভালো তাই বলছিলাম নেশাকে।

নেশাঃ তা আপনার নাহ বললে ও হবে।।আমি জানি আকাশ কেমন।

নীড়ঃ হুম তাই তো আচ্ছা আমি যাই।

[বলেই নীড় চলে গেল।। আকাশের কেন জানি একটু সন্দেহ হলো।এর আগেও নীড়কে নেশার পিছে পিছে ঘুরা লক্ষ করেছে।।কিন্তু বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে শুনে কিছু বলেনি। কিন্তু এখন তা আর হবে নাহ।কারন ইশাকে তো সে মেরে ফেলেছে]

আকাশঃ নেশা তুমি জানো আমি সরাসরি কথা বলি

নেশাঃ কি বলতে চাইছো

আকাশঃ নীড় কি তোমায় পছন্দ করে?

নেশাঃ ওইটা উনি ভালো বলতে পারবে। আমি কি করে বলবো।বলেই নেশা রুম থেকে বেরিয়ে গেল

আকাশঃ মনে মনে- আচ্ছা নীড় নেশাকে পছন্দ করে নাহ তো।যদি করে।নাহ কথা বলতে হবে।।নেশাকে দেখে তো মনে হলো নীড় ওকে পছন্দ করে তা নেশার চোখ দেখেই বুঝা যাচ্ছিলো।আচ্ছা নেশা যদি ওর কাছে চলে যায়।।নাহ এইটা হবে নাহ।।।নেশা শুধু আমার।। আর কারো নাহ।।আর কারো হতে দেবো নাহ।।

আকাশঃ নীড়

নীড়ঃ জি?

আকাশঃ তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।

নীড়ঃ কি?

আকাশঃ এইখানে নাহ চলো আমার সাথে

নীড়ঃ ওকে চলো

[নীড় কিছুটা আচ করতে পারলো যে আকাশ কি বলতে নিয়ে যাচ্ছে।।আকাশ নীড়কে একটা শুনশান জায়গায় নিয়ে গেল]

নীড়ঃ এখন বলো কি বলবে?

আকাশঃ নেশার থেকে দুরে থাকো।

নীড়ঃ মানে??

আকাশঃ আমি ভালো করেই বুঝেছি তুমি নেশাকে লাইক করো।।তাই বলে দিলাম নেশার থেকে দুরে থাকো।

নীড়ঃ বাহ ভালো বুঝেছো দেখা যায়।। কিন্তু তুমি যে ভুল।।আমি নেশাকে লাইক নাহ লাভ করি।

আকাশঃ হাও ডেয়ার ইউ???।।নেশা শুধু আমার।।। ওর দিকে কেউ তাকালে চোখ তুলে রেখে দেব।ভালোয় ভালোয় ওর পিছনে ঘুরা বন্ধ করে দেও।

নীড়ঃ আমি তো ঘুরবোই আর ওকে নিজের করে ছাড়বো।

আকাশঃ ??।নেশা আমায় ভালোবাসে।।শুধু আমায়।।আর আমি ওকে। তুমি ওর কাছে ও যেতে পারবো নাহ।

নীড়ঃ ভালোবাসা?।তোমাদের মধ্যে যদি ভালোবাসাই থাকতো তাহলে নেশাকে নিয়ে ভয় পাচ্ছো কেন যে ও আমার হয়ে যাবে।

আকাশঃ আমি ভয় পাচ্ছি নাহ।।কিন্তু তুমি ওর থেকে দুরে থাকবে।

নীড়ঃ তুমি ভয় পাচ্ছো যদি আমি নেশাকে নিজের করে ফেলি।।কারন ও তোমায় ভালোবাসে নাহ।

আকাশঃ তুমি কোন দিনই নেশাকে নিজের করতে পারবে নাহ।।আর ও আমায় ভালোবাসে।

নীড়ঃ যদি প্রমাণ করতে পারি নেশা আমায় ভালোবাসে।

আকাশঃ তাহলে নেশা তোমার।

নীড়ঃ সত্যি ??।ওকে তাহলে আমায় ১ মাস টাইম দাও। আমি নেশাকে আমার করেই ছাড়বো।

আকাশঃ ওকে দিলাম।

নীড়ঃ মনে মনে- আমি জানি আকাশ নেশা আমায় আবার ভালোবাসতে শুরু করলেও তুমি তাকে আমার হতে দিবে নাহ।।তবুও আমার একমাস টাইম দরকার। তুমি যে খুনি তার প্রমাণ দরকার আমার।।তাহলেই আমি নেশাকে তা জানাতে পারবো।

আকাশঃ মনে মনে- তুমি যদি নেশাকে তোমার প্রেমে ফেলতে ও পারো তুমি নেশাকে পাবে নাহ।।কারন আমি তোমায় বাচতেই দেবো নাহ।।।কিন্তু আমিও দেখতে চাই নেশা কি করে।।ও যদি তোমার প্রেমে পড়ে তাহলে ওর কপালেও খুব খারাপ কিছু আছে।

দুইজনেই মনে মনে কিছু ভেবে রেখেছে।।কিন্তু প্রকাশ করলো নাহ।।এখন দেখা যাক একমাসে নীড় নেশাকে পটাতে পারে কিনা।।আর পটালেই বা আকাশ কি করে।

পরেরদিন

সকালে নেশার ঘুমাতে খুব প্রবলেম হচ্ছে।মনে হচ্ছে যেন দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।।দম বন্ধের কারন খুজতে গিয়ে চোখ খুললো।আর চোখ খুলার পর যাস্ট শক।কারন তার রুম পুরো ফুলের বাগান হয়ে গেছে।।আর তাও আবার গোলাপ ফুলের।যার কারনে নেশার প্রবলেম হচ্ছে।।গোলাপ ফুলে নেশার মারাত্মক পরিমাণে এলার্জি। কম থাকলে যাও এতো প্রবলেম হয় নাহ।।কিন্তু পুরো রুমে এতো গোলাপ যে রুমই দেখা যাচ্ছে আর চারদিকে গোলাপের গন্ধে ভরে গেছে।।নেশা আর সহ্য করতে পারলো নাহ অজ্ঞান হয়ে গেল।।নীড় যেই মাত্র দরজা খুলে নেশাকে গুড মর্নিং বলতে যাবে দেখলো নেশা অজ্ঞান হয়ে নিচে পড়ে আছে।

নীড়ঃ নেশায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া
[এতো জোরে চিৎকার করলো যে বাড়ির সবাই দৌড়ে এলো ]

নীড়ঃ নেশার পাশে বসে নেশার মাথাটা কোলে নিয়ে- নেশা তোমার কি হয়েছে নেশা??

আকাশ গিয়ে দৌড়ে নেশার কাছে গেল।

আকাশঃ একি এই রুমে এতো ফুল কেন???নেশাকে এই রুম থেকে বের করতে হবে[বলে নেশাকে কোলে করে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। আর হসপিটালে নিয়ে গেল। ]

[এখন আসি আসল কথায়।নীড় নেশাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য পুরো রুম ফুল দিয়ে সাজিয়ে ছিল।সে ভেবেছিলো নেশা খুশি হয়ে যাবে।কিন্তু সে জানতো নাহ নেশার ফুলে এলার্জি। কিন্তু আকাশ যেহেতু নেশার সাথে অনেক দিন থেকেছে সে তা জানে।।আর তাছাড়াও নেশার শরীরে লাল লাল রেশ হয়ে গেছে তাই আকাশ বুঝে গেছে যে নেশার এনার্জির প্রবলেম হয়েছে তাই নেশাকে নিয়ে হসপিটালে চলে যায়।৷ ]

তাদের পিছন পিছন বাকি রা ছুটে আসে।

হসপিটালে—

ডাক্তারঃ উনার অনেক এনার্জির প্রবলেম হয়েছিলো তাই দম আটকে অজ্ঞান হয়ে যায়।।পরের বার থেকে খেয়াল রাখবেন যাতে এমনটা না হয়।

আকাশঃ ও এখন কেমন আছে ডাক্তার

ডাক্তারঃ এখন ভালো আছে।

আকাশঃ দেখা করতে পারবো?

ডাক্তারঃ হ্যাঁ পারবেন কিন্তু কথা বলবেন নাহ।।উনাকে ঘুমের ওষুধ দেয়া হয়েছে।।সো ডিস্টার্ব করবেন নাহ।।আর ডাকাডাকি করবেন নাহ।

[বলে ডাক্তার চলে গেল ]

নীড় যেই ভিতরে ঢুকতে যাবে আকাশ নীড়ের শার্টের কলার চেপে ধরলো।

আকাশঃ হাও ডেয়ার ইউ।।তোমার সাহস কি করে হয় ভিতরে যাওয়ার??

নীড়ঃ দেখ আকাশ আমাকে যেতে দাও।।আর এইটা হসপিটাল। এইখানে চিৎকার করো নাহ।।

আকাশঃ যাস্ট শাট আপ।।আমি কি করবো নাহ করবো তা তুমি শিখাবে??।।আর আমি ভালো করেই জানি তুমি এইসবের পিছনে আছো।

নীড়ঃ আমি জানতাম নাহ যে নেশার গোলাপ ফুলে এলার্জি।

আকাশ রেগে নীড় কে ঘুষি মারতে নিবে নীড় হাত টা ধরে মুচড়ে দিলো।

নীড়ঃ আমাকে ভুলেও এতো টা দুর্বল ভেব নাহ।আমি চুপ আছি।। কিন্তু তার মানে এইটা নাহ আমি তোমার করা সব কিছু চুপচাপ মেবে নেব।।তোমার এই হাত টা ভেঙে গুড়িয়ে দিতে আমার দুই মিনিট ও লাগবে নাহ।।

[বলেই আকাশের হাত টা ঝাড়ি মেরে সরিয়ে দিলো।আর দরজা দিতে ভিতরে ডুকে গেল।আকাশ কিছু বলতে যাবে তার আগেই তার মোবাইলে একটা ইম্পর্ট্যান্ট কল আসলো। যার কারনে তাকে চলে যেতে হলো৷ ]

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে