হৃদয়ের আঙ্গিনায় তুমি পর্ব-২+৩

0
870

#হৃদয়ের_আঙ্গিনায়_তুমি
#ইশা_আহমেদ
2+3
#পর্ব_২

[অনেকেই বলছেন ওইফা নামটা অদ্ভুত তাই ওইফা নামটা পরিবর্তন করে ইশরাত ওহি রাখা হয়েছে]

-“কেনো কেনো কেনো আমি নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারছি না আজকে কতো বড় একটা কাজ করে ফেললাম আমি সিট!”

ইনহাজ দেওয়ালে ঘুষি মেরে কথাগুলো বলে।সে নিজের প্রতি প্রচন্ড বিরক্ত।কি করে সে গরম কফির মগে ওহির হাতটা চুবিয়ে সে বুঝতেই পারছে না।রাগ উঠলে কিছু মাথায় থাকে না তার কি করছে সে।ইনহাজ নিজের রেস্ট রুম থেকে বের হয়ে ওহির কাছে চলে যায়।ইনহাজ ওহিকে কষ্ট দিতে চায় কিন্তু শারিরীক ভাবে নয় মানসিকভাবে।

ওহি ঘুম থেকে উঠেছে বেশ কিছুক্ষণ।ফ্রেশ হয়ে এসে বেডে বসে ভাবছিলো তার আর ইনহাজের প্রথম দেখা হওয়ার কথা।তার স্পষ্ট মনে আছে সেই দিনের কথা।

৪.
ওহি ক্লাস রুমের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলে তার বান্ধবী আহিয়ার সাথে।তখনই মাঠ থেকে চেঁচামেচির আওয়াজ পায় দু’জন।দু’জনই কৌতুহল নিয়ে মাঠে আসে।আশে পাশে শুনে জানতে পারে ইনহাজ জুহাইন খান আসছে।তারা বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামায় না।
কারণ তারা তো চেনেই না এই ইনহাজ জুহাইন খান আসলে কে! ওহি আর আহিয়া ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট। নতুন একদিন মাত্র তিনদিন ক্লাস করেছে।ওরা তেমন কিছুই চেনে না নিজেদের মধ্যে কথা বলার মাঝে তিনটা গাড়ি ঢোকে ভার্সিটিতে।যা দেখে সবাই ইনহাজ ইনহাজ করে চেঁচাতে থাকে।

যেনো মনে হচ্ছিল কোনো সেলিব্রিটি এসেছে।ওহি প্রচন্ড বিরক্ত হয়।সে ভেবেছিলো কিছু হয়তো হয়েছে এখন দেখে কোনো ছেলেকে নিয়ে।ছেলে থেকে শুরু করে মেয়েরা তো আছেই সবাই ইনহাজ ইনহাজ করছে।ওহি মনে মনে আওড়ায়,

-“এই ইনহাজ জুহাইন খানটা আবার কে?”

মাঝের গাড়ি থেকে একজন সুদর্শন পুরুষ নেমে আসে।যাকে দেখতে হিরোদের থেকে কোনো অংশে কম নয়।সিল্কি চুলগুলো বাতাসে উড়ছিলো।চোখে চশমা ছিলো আর পরনে কালো শার্ট আর কালো জিন্স।যা দেখে মেয়েরা ফিদা হয়ে যায়।ওহি আশেপাশের সবার কথা শুনে বুঝতে পারে ইনহাজ একজন পলিটিশিয়ান।আজকে ইনহাজের তাদের প্রিন্সিপালের সাথে মিটিং আছে।তাই সে এখানে।আর সে এই ভার্সিটিতেই মাস্টার্স করছে।পুরো ভার্সিটির মেয়েদের ক্রাশ।

কিছু মেয়ে ইনহাজের সাথে কথা বলতে এগিয়ে আসে।কিন্তু সে সেগুলো পাত্তা না দিয়ে চলে যায়।যা দেখে আহিয়া বিরক্তিকর কন্ঠে ওহিকে বলে,,,,,

-“লোকটা সুন্দর বলে কি মাথা কিনে নিয়েছে নাকি!এভাবে মেয়েগুলোকে পাত্তা না দিয়ে চলে যাওয়া ঠিক হয়নি।এতো অহংকার ভালো না।”

ওহি এতোসময় ফোন ঘাটছিলো।ফোন ব্যাগে ঢুকিয়ে বিরক্তিতে নাক মুখ কুঁচকে বলে,,

-“উফ তুই এইসব ফালতু লেইম বিষয় নিয়ে চিন্তা করছিস কেনো!লোকটার ও ভীষণ ভাব সাথে মেয়েগুলোও বেহায়া।এইসব কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ক্লাসে চল গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস আছে ”

আহিয়াকে হাত ধরে টেনে ওহি ক্লাসে নিয়ে যায়।ক্লাস শেষ করে বের হয়ে ক্যান্টিনে গিয়ে বসে দু’জন।ক্যান্টিনে কফি খেয়ে এ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে কিছু ক্ষন কথা বলে ভার্সিটি থেকে বের হওয়ার জন্য বের হয়।ভার্সিটি থেকে বের হওয়ার সময়ই সে কিছু একটায় বেঁধে ইনহাজের গায়ের উপর পরে।ইনহাজ তখন ফোনে কথা বলছিলো কারো সাথে।হঠাৎ কেউ তার গায়ে পরায় ফোনটা হাত থেকে পরে যায়।

দ্রুত সরে আসে ওহি।কিছুটা লজ্জা আর অস্বস্তিতে সে আহিয়াকে নিয়ে চলে আসে সেখান থেকে।ইনহাজ বোকার মতো চেয়ে থাকে ওহির পানে।রাফিন ছুটে এসে বলে,

-“স্যার আপনার কোথাও লাগেনি তো দাড়ান মেয়েটাকে দেখাচ্ছি মজা”

ইনহাজ গম্ভীর কন্ঠে বলে,
-“তার প্রয়োজন নেই এটা জাস্ট একটা এক্সিডেন্ট ছিলো”

৫.
-“ওহি”

ইনহাজের ডাকে অতীত থেকে ফিরে আসে ওহি।ইনহাজকে দেখে অভিমান,ঘৃনায় মুখ ফিরিয়ে নেয় সে।ইনহাজ ওহিকে বলে,,

-“দেখো রেগে গেলে আমার মাথা ঠিক থাকে না।তাই উল্টাপাল্টা করে ফেলেছি।তুমি ভেবো না আমি তোমায় সরি বলতে এসেছি!”

ওহি তাচ্ছিল্য হাসলো।অতঃপর বললো,,,
-“আমি জানি মিস্টার খান আপনি সরি বলার মতো মানুষ নন।আর আমি আপনাকে নিয়ে ভাবি না”

ইনহাজ বাঁকা হাসলো তারপর ওহির দিকে ঝুঁকে বলল,,
-“বেশি ভাবতে যেও না হারিয়ে যাবে আমার মাঝে”

ওহি ভড়কে গেলো।নিজেকে সামলে ইনহাজকে ধাক্কা দিয়ে তার থেকে সরিয়ে বলে,,,
-“জীবনেও আপনার মতো মানুষের মাঝে আমি হারাবো না”

ইনহাজ ঠোঁট প্রশস্ত করে হাসলো।ওহি ইনহাজকে এইভাবে হাসতে দেখে বিরক্ত হলো।ইনহাজ ওহিকে বলে,,,

-“নিচে চলো খাবে।সকাল থেকে না খাওয়া,খেয়ে নিবে চলো।না খেয়ে অসুস্থ হলে আমার সাথে লাগবে কি করে”

ওহি পাত্তা দেয় না ইনহাজের কথায়।সে নিজের মতো বসে থাকে।ইনহাজ কিছুক্ষণ ওহির গতিবিধি পর্যবেক্ষন করে। ওহির কাছে গিয়ে ওকে কোলে তুলে নেয়।ওহি নেমে যাওয়ার চেষ্টা করে। ইনহাজ হাতের বাঁধন হালকা করতেই ওহি ভয়ে ইনহাজের গলা জড়িয়ে ধরে।ইনহাজ বাঁকা হাসে ওহির কান্ডে।সে নিচে নিয়ে গিয়ে তাকে টেবিলে বসিয়ে দেয়।খাবার সামনে দিয়ে খেয়ে নিতে বলে।

খাবার দেখে নাক সিটকায় ওহি।টেবিলে সালাদ সুপ,সাথে পাস্তা সাজানো আছে।যা ওহি পছন্দ করে না মোটেও।সে নাক মুখ কুঁচকে বলে,,

-“এই খাবার কোনো মানুষ খায়”

ইনহাজ ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায় ওহির কথায়।সে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,,
-“তো কি এই খাবার গরু ছাগল খায় ইডিয়েট”

ওহি সরু চোখে ইনহাজের দিকে তাকিয়ে বলে,,
-“হ্যা খায় আপনার মতো গরু ছাগল”

ইনহাজ রেগে যায় ওহির কথায়।ইনহাজ দাঁতে দাঁত চেপে বলল,,,
-“গরু ছাগল যখন খায় তাহলে খেতে হবে না যাও।খাওয়ার হলে খাও নাহলে যেতে পারো রুমে”

ওহির খুব ক্ষিধে পেয়েছে।তাই সে কোনো কথা না বলে চুপচাপ খেয়ে নেয়।ইনহাজ ওহির আড়ালে বাঁকা হাসে।ওহি খেয়ে উপরে রুমে চলে যায়।ইনহাজ খেয়ে সোফায় বসে পরে,একটা ওয়াইনের বোতল নিয়ে এসে বসে।সে প্রায়ই খায় এগুলো।কষ্টগুলো দূর করতে।

ওহির নতুন জায়গায় ঘুম আসছিলো না তাই সে রুম থেকে বের হয়।বিশাল বাড়ি ইনহাজের এখনো ঘুরে দেখা হয়নি।ওহি ভাবছে,আচ্ছা ইনহাজ কেনো তার পরিবারের সাথে থাকে না।তার বাবাকে কেনো পছন্দ করে না সে।ওয়াফা নিচে নামতেই ইনহাজকে ড্রিংক করতে দেখে।মদের বিশ্রি গন্ধ নাকে এসে লাগে ওহির।নাকমুখ কুচকে তাকায় সে ইনাহজের দিকে সে ইনহাজের দিকে এগিয়ে যায়।

ইনহাজ ওহির দিকে তাকায়।ওহি চমকে ওঠে ইনহাজের চোখ দেখে।অসম্ভব লাল হয়ে আছে।তার ভয় লাগে।সে তবুও ইনহাজের কাছে গিয়ে ওর থেকে কিছুটা দূরে বসে বলে,,

-“আআ..পনি এই বিশ্রি জিনিস খাচ্ছেন কেনো?”

ইনহাজ ওহির দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্য হেসে বলে,,
-“এইগুলো আমার কষ্টগুলো দূর করার জন্য খাচ্ছি।”

ওহি অবাক হলো।ইনাহজকে দেখে কেনো দিক থেকেই মনে হয় না সে এমন।নতুন রূপ দেখলো সে ইনহাজের।ওহি বেশি ক্ষন থাকে না ইনহাজের কাছে।তার ভয় লাগছিলো যদি ইনহাজ তার সাথে উল্টাপাল্টা কিছু করে।তাই রুমে এসে দরজা লক করে ঘুমিয়ে পরে।

চলবে~

#হৃদয়ের_আঙ্গিনায়_তুমি
#ইশা_আহমেদ
#পর্ব_৩

৪.
রোদে আলো চোখে পরতেই পিটপিট করে তাকালো ওহি।নিজেকে ইনহাজের রুমে আবিষ্কার করলো।উঠে বসে চারপাশে চোখ বুলিয়ে নিলো।নাহ কোথাও ইনহাজ নেই।স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো ওহি।ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হলো। বিয়ের পর থেকে ওহি ইনহাজের জামাকাপড় পরছে।ওহির বিরক্ত লাগছে।একটা মানুষের কি কান্ডজ্ঞান নেই নাকি।

জোড় করে বিয়ে যখন করে এনেছে তখন তার প্রয়োজনীয় সবকিছু এনে তো দিবে।ওহি ফ্রেশ হয়ে ওড়না পেচিয়ে রুম থেকে বের হয়।ইনহাজ টেবিলে বসে আছে।ওহি সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে বলে,,

-“মিস্টার খান আপনি এতোটা কিপ্টা তা তো ভাবিনি”

ইনহাজ ওহির কথায় ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়।ওহির দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে বলে,,

-“মানে কি বলছো তুমি”

ওহি ইনহাজের সামনের চেয়ারে বসতে বসতে বলল,,,
-“আপনি জোর করে বিয়ে করে এনে সেই এক কাপড় পরিয়ে রেখেছেন।কালকে তো আবার নিজের টিশার্ট পরতে দিয়েছেন।”

ইনহাজ ওহির কথায় দাঁতে দাঁত চেপে বলে,,
-“স্টুপিড!কাবার্ড খুলে দেখেছো একবারও হ্যাঁ।”

ওহি বিরক্ত হয়ে বলে,,,
-“তো আপনি বলেননি কেনো আমাকে?আর যখন ড্রেস ছিলো তো টি শার্ট কেনো দিয়েছিলেন পরতে”

ইনহাজ বিরক্তিকর কন্ঠে বলে,,,
-“তুমি যখন ঘুমিয়ে ছিলে তখন ড্রেসগুলো আনা হয়েছে ইডিয়ট”

ওহি আমতা আমতা করে বলল,,”ওহ”

ওহি খাবারের দিকে তাকিয়ে বিরক্ত হয়।আবারও কাস্টার্ড আর সুপ সাথে দুধ।সে নাক মুখ কুঁচকে ইনহাজকে বলে,,,

-“মিস্টার খান আপনি কি আমাকে এই খাবার খাইয়ে মেরে ফেলতে চাইছেন”

ইনহাজ ওহির দিকে তাকালো।বোঝার চেষ্টা করলো কি বলছে ও।অতঃপর দাঁতে দাঁত চেপে বলে,,

-“এইসব হেলদি ফুড এগুলো খেলে মানুষ মারা যায় না। শরীরের জন্য ভালো”

ওহি আমতা আমতা করে বলে,,,
-“ধূর যাই হোক আমি এগুলো খাই না প্লিজ সার্ভেন্টকে বলুন আমাকে পরোটা ভেজে দিতে।”

ইনহাজ বিরক্তি নিয়ে সার্ভেন্টকে ডেকে ওহি যা খাবে তাই করে দিতে বলে।সার্ভেন্ট কিছুক্ষণ পরে ওহির বলা খাবারগুলো নিয়ে আসে।ওহি খুশি হয়ে খেতে থাকে।ইনহাজের খাওয়া শেষ হতেই সে উঠে উপরে চলে যায়।ওহি ও দ্রুত খেয়ে নেয়।এই টিশার্ট পরে থাকতে পারছে না আর।বিরক্ত লাগছে।রুমে এসে দেখলো ইনহাজ নেই। সে কাবার্ড খুললো জামা নিতে।কাবার্ড খুলে তব্দা খেয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ওহি কিছু সময়।

একটু আগে তার মোটেও ইনহাজকে কিপ্টা বলা ঠিক হয়নি।এখানে শাড়ি থেকে শুরু করে ওহির প্রয়োজনীয় প্রায় সবই ছিলো।সে ওখান থেকে একটা কালো রঙের থ্রি পিছ বের করে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো চেঞ্জ করতে।কিছুক্ষণ বাদে বের হতেই সে ইনহাজকে দেখতে পেলো।ইনহাজ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পারফিউম লাগাচ্ছে।

ইনহাজ আয়নার ভেতর থেকে এক পলক তাকালো ওহির দিকে।তারপর নিজের কাজে আবার মন দিলো।ওহি ভালোভাবে নিজেকে পর্যবেক্ষণ করে নিলো।নাহ সব ঠিক আছে।

ওহি ইনহাজের দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বলল,,
-“আমি বাসায় যেতে চাই”

ইনহাজ চুল ঠিক করছিল।ওহির কথায় থেমে যায়।ওহির দিকে তাকিয়ে বলে,,
-“তুমি নিজের বাড়িতেই আছো।আর কোথায় যাবে?”

ওহির রাগ হয় ইনহাজের আজাইরা কথা শুনে।ওহি রাগি কন্ঠে বলে,,,
-“আমি আমার বাবার বাড়ি যাওয়ার কথা বলছি মিস্টার খান”

ইনহাজ আবারও নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পরল।কোনো উত্তর দিলো না।ওহির রাগ আরো বেড়ে গেলো।ওহি ইনহাজের কাছে গিয়ে ওর কলার চেপে ধরে বলে,,

-“সমস্যা কি আপনার আমি কিছু বলেছি আপনায়।জোর করে বিয়ে করেছেন আর এখন বাবার বাসায়ও যেতে দিতে চাইছেন না।আমার প্রশ্নের জবাব দিন”

ইনহাজ ভীষণ রেগে যায়।সে ওহির কাছ থেকে নিজের কলার ছাড়িয়ে নেয়।ইনহাজের কলার ধরা মোটেও পছন্দ না।ইনহাজ ওহির বাহু চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে চিল্লিয়ে বলে,,,

-“তোমার বড্ড সাহস।সেদিন বলেছিলাম না কলার ধরা আমার পছন্দ না তারপর ও তুমি তাই করলে এখন তোমার সাথে কি করা যায় বলো তো”

ওহি ভয় পেলো।কিন্তু নিজেকে স্বাভাবিক রেখেছে।বাহু চেপে ধরায় ব্যাথা পাচ্ছে অনেক।চোখে পানি চলে এসেছে।ইনহাজকে ছাড়ানো চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয় ওইফা।সে ব্যাথাতুর কন্ঠে বলে,,

-“প্লিজ ছেড়ে দিন আমার লাগছে খুব”

ইনহাজ আরো জোরে চেপে ধরল।ওহি ‘আহ’ বলে চেঁচিয়ে উঠলো।ইনহাজ ওকে ছেড়ে দিয়ে হনহন করে রুম থেকে চলে গেলো।ওহি বসে কাঁদতে থাকে।আর বিড়বিড় করে বলে,,

-“আপনি মানুষ নন মিস্টার খান একটা অমানুষে পরিনত হয়েছেন”

ইনহাজ বেরিয়ে নিজের রেস্ট রুমে যায়।সেখানে বসে নিজের মাথা ঠান্ডা করে।এরপর বাঁকা হেসে ওহির কাছে চলে আসে।ওহি কাঁদছিলো তখনও বসে বসে।ইনহাজ ওহির কাছে এসে আলতো স্বরে বলল,,,

-“আমি নিয়ে যাবো তোমায় রেডি হও”

ওহি কাঁদা ছেড়ে ইনহাজের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে।ওহি দুই হাত দিয়ে বাচ্চাদের মতো করে চোখ মুছে বলল,,
-“সত্যি আপনি আমায় নিয়ে যাবেন।মিস্টার খান?”

ইনহাজ রুম থেকে বের হতে হতে গম্ভীর কন্ঠে বলে,,
-“৫ মিনিটের ভেতরে রেডি হয়ে নিচে নামো”

ইনহাজ রুম থেকে বের হয়ে যায়।ওহি খুশি হয়।সে চুল ঠিক করে পার্স নিয়ে নিচে চলে আসে।ইনহাজ সোফায় বসে গম্ভীর মুখে ফোন টিপছে।ওহি ভেংচি কাটে ইনহাজের আড়ালে।ইনহাজের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,,

-“হয়ে গিয়েছে চলুন”

ইনহাজ এক পলক ওহির দিকে তাকিয়ে উঠে দাঁড়ায়।ফোন পকেটে পুরে হেঁটে বাইরে চলে যায়।ওহি বিরক্ত হয় ভীষণ।সেও বাড়ির বাইরে আসে।বাইরে এসে চমকে ওঠে।কালো পোশাক পড়া গার্ডরা সব বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে আছে।ওহি ভড়কে যায় এতো গার্ড দেখে।ভেতর থেকে মোটেও সে টের পায়নি যে এতোগুলো গার্ড বাড়িটা সুরক্ষার কাজে নিয়োজিত।

ওহির সামনে কালো রঙের একটা গাড়ি এসে থামে।কাঁচ নামিয়ে ইনহাজ গম্ভীর কন্ঠে বলল,,,
-“উঠে এসো”

ওহি উঠে বসে।ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দেয়।ওহির বুক ধুকবুক করছে।সে জানে তার বাবাই কেমন রাগি মানুষ।কি করবে সে।ইনহাজও সুবিধার নয়।ওহিদের বাড়ি যত কাছে আসছে ওহির ভয় বেড়ে যাচ্ছে।শান্তির নিরের সামনে গাড়ি থামে।ইনহাজ নেমে ওহিকে টেনে নামায় গাড়ি থেকে।

ওহি কাচুমাচু হয়ে ভেতরে ঢোকে।আশরাফ রহমান ড্রয়িংরুমে বসে চা খাচ্ছেন আর পেপার পরছেন।ওহি ভেতরে ঢোকে সাহস করে।ওহি ভয় পাচ্ছে কারণ সে পুরো দুইটা দিন বাড়ি ফেরেনি।কিন্তু তার বাবাই কি তাকে খোঁজেনি নাকি।অবাক বিষ্ময় ভয় মিশ্র অনুভূতি নিয়ে সে বলে,,,

-“বববববববাবাই”

#চলবে~

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে