স্বপ্নীল ১৪

0
1249

স্বপ্নীল
১৪

সবাই হ্যালিপ্যাডে দাঁড়িয়ে আছে।সূর্যোদয় হওয়ার অপেক্ষা। চারদিকে শো শো বাতাসের শব্দ। সামনের পাহাড় গুলো সাদা মেঘ ডুবে যাচ্ছে খুব দ্রুত।মেঘগুলো কে তুলোর পাহাড় মনে হবে।সূর্য উঠছে এবার।খুব আয়োজন করে।সাদা মেঘের ভিতর দিয়ে।আলোর রেখায় সাদা মেঘ গুলো চিক চিক করছে।সূর্য মেঘের উপরে উঠে গেলো। আর পুরো মেঘ ছড়িয়ে গেলো তাদের পাশে।এত সৌন্দর্য! নীল বিশ্বাস করতে পারতো না, না দেখলে।পুরো সময়টা চুপ করে বসে দেখা ছাড়া আর কোনো কথা আপনার মুখে আসবে না।

সূর্য উঠে গেছে তাই সবাইকে ফিরে আসতে হবে রিসোর্ট। নাস্তা করে ফিরতে হবে।সকাল ১০টার মধ্যেই চান্দের গাড়ি ছাড়বে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্য। ব্যাগ গুছিয়ে চান্দের গাড়িতে উঠতে সবার একটু খারাপ লেখেছে।সাজেকের দুপুর, সাজেকের বিকেল,সাজেকের পূর্নিমার রাত।কংলাক পাহাড়ের স্মৃতি সবাইকে ফিরে যাওয়ার পুরো সময় টাকে সবাইকে বিষন্ন করে তুলেছে।এসব চেয়ে নীলের একটা স্মৃতি তারা করবে তাকে।আর সেই স্মৃতি হলো মধ্যরাতের মাউথ অর্গানের সেই সুরওয়ালা। তার খুব কান্না পাচ্ছে। তার সুরওয়ালা কে একবার দুইনয়ন ভরে দেখতে ফেলে না। আর কখনো দেখা হবে কি জানে না সে।কিন্ত তার মন বলছে অবশ্যই কোনো ভাবে তার সুরওয়ালা সাথে দেখা হবে।কিন্তু ব্রেন বলছে, কিভাবে সম্ভব? সে তো সুরওয়ালাকে চেনে না জানে না।
এই জায়গাটা ছেড়ে যেত তার খুব কষ্ট হচ্ছে। ইচ্ছা করছে এখানে থেকে যেত।এখানে থেকে তার সুরওয়ালাকে খুজে বের করে বাড়ি ফিরবে।

ফেরার পথে সেনাবাহিনীর চেকপোস্টের সামনে গাড়ি রেখে সবাই কিছুক্ষন ঘুরে আসল স্টোন গার্ডেন থেকে।ছোট একটা জায়গা নিয়ে তৈরী করা স্টোন গার্ডেন।ওখানে দেখার মতন মূলত রয়েছ ছোট একটি ব্রিজ ও বড় একটি দোলনা।তবে সবার কাছে ব্রিজ থেকে দোলনা টা বেশি ভালো লেগেছে,পাহাড়ের গাঁ ঘেষে তৈরী করা হয়েছে যার ফলে, ওখানে চড়ার পর ভালো একটি অনুভূতি কাজ করে।তবে ওখানে বসার পর যখন দোলনাটি সামনে যায় তখন খুব ভয় লাগে সবার” মনে হয় এই বুঝি সামনে পাহাড়ের নিচে পড়ি যাচ্ছে”।

গার্ডেন থেকে বের হয়ে গাড়িতে করে আবার যাত্রা শুরু করে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্য। আবার সেই পুরানো পথ আকাঁবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা।প্রচণ্ড রোদের সাথে গা ভাসিয়ে চলা এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়।দুটি চেক পোস্ট সহকারে দিঘিনালা পৌছাই দুপুর দুইটায়।গাড়ি থেকে নেমে ফ্রেশ হয়ে দুপুরে খাবার খেয়ে নেয় তারা দিঘিনাল বাজারে।খাবার শেষ করে যাত্রা শুরু করে রিসাং ঝর্না দেখার জন্য।

খাগড়াছড়ি জেলায় রাঙামাটি উপজেলার সাপমারা গ্রামে অবস্থিত একটি পাহাড়ি ঝর্ণা।খাগড়াছড়ি শহর থেকে এর দুরুত্ব প্রায় ১০ কি.মি.। এই ঝর্ণার প্রায় উচ্চতা ১০০ফুট।রিসাং শব্দটি এসেছে খাগড়াছড়ির মারমা সসম্প্রদায়ের ভাষা থেকে।মারমা ভাষায় রিং শব্দের অর্থ পানি আর ছাং এর অর্থ উঁচু স্থান হতে কোনো কিছু গড়িয়ে পড়াকে বুঝায়। অর্থাৎ রিসাং শব্দ দ্বারা উঁচু স্থান হতে জলরাশি গড়িয়ে পড়াকে বুঝায়।এর অপর নাম তেরাং তৈকালাই।

খাগড়াছড়ি জেলায় সদর ১১কি.মি. আর রাঙামাটি উপজেলায় ১০কি.মি. দুরুত্বে খাগড়াছড়ি -ঢাকামূল সড়ক হতে আর ১কি.মি দক্ষিণে রিসাং ঝর্ণা অবস্থিত। মূল সড়ক থেকে পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে,ঝর্ণার পথে ২৩৫ ধাপের সিঁড়ি দিয়ে নামতে হয়।বর্ষাকালে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় ঝর্ণার শব্দ শুনা যায়।উঁচু পাহাড়ের গাঁ ঘেঁষে যেতে যেতে যে কার দৃষ্টি আটকে যাবে পাহাড়ি সবুজ সমারোহ।

-“এই ঝর্ণাটি কত সালে আবিষ্কৃত হয় জানা যায়।”
নীল এরকম প্রশ্ন শুনে সবাই দাঁড়িয়ে যায়। ধূসর ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে,
-“তুমি কি এই ঝর্ণার ইতিহাস জানতে এসেছো এখানে।ইতিহাস নিয়ে পড়ছো না কি
-“তা, না,
ধূসর কিছু বলতে নিলে প্রাচ্য তাকে থামিয়ে বলে,
-” নীলের সব বিষয় একটু আগ্রহ বেশি।তাই জানতে চেয়েছে।।
তারপর প্রাচ্যকে উদ্দেশ্য করে বলে,
-“আনুমানিক ১৯৯৩-৯৪ সালে এই প্রাকৃতিক ঝর্ণাটি আবিষ্কৃত হয় বলে জানা যায়,জুম চাষের সুবাদে ঝর্নাটি সবার নজরে আসে।”
নীল ছোট করে বলে,
-“ও”

-“দ্রুত পা চালিয়ে আস”।স্বপ্ন তাড়া দিয়ে বলে সবাইকে।

রিসাং ঝর্ণা যাওয়ার পথে ট্রেকিং সময় চোখে পড়ে রাস্তা দুই পাশে সবুজের সমারোহ।দুইপাশে নাম না জানা অচেনা অনেক গাছ রয়েছে।তার মাঝখান দিয়ে চিকন একটা রাস্তা দিয়ে সবাই হেঁটে যাচ্ছে।তারপর সামনে পড়ে সিঁড়ি।২৩৫সিঁধি অতিক্রম করে তারা পৌঁছে যায় রিসাং ঝর্না। এত গুলো সিঁড়ি অতিক্রম করে সবাই হাঁফিয়ে যায়। ঝর্ণা দেখে সেই কষ্ট দূর হয়ে যায়।নীল ছুটে চলে যায় ঝর্ণার কাছে।সবাই তাকে পিছু ডেকে বলে সামধানে যেতে।কারণ এখানে বর্ষাকালে জায়গাটা পিচ্ছিল থাকে।
১০০ফুট উঁচু পাহাড় থেকে নিচে গড়িয়ে পড়ছে ঝর্নার জলধারা।ঝর্ণার সেই জলধারা নিচে দাঁড়িয়ে আছে নীল।শীতল পানিতে এত ক্ষন ট্রেকিং করা সব ক্লান্তি দূর করছে। পাহাড়ের মাঝে ঝর্ণা দেখে দেখে সব ক্লান্তি যেন দূর হয়ে গেছে। তার কষ্ট যেন সফল হয়েছে।পানি গতি পথ ঢালু হওয়ায় প্রাকৃতিক ওয়াটার স্লাইডিং – এর সৃষ্টি হয়েছে,যা এই ঝর্ণার প্রথম আকর্ষণ। শুধুই ঝর্ণা টি নয়,ঝর্ণার অভিমুখ সমগ্রযাত্রা পথটা দারুণ

রোমাঞ্চকর।ঝর্ণার পথে পাহাড়ের ঢালু রাস্তা,আর সিঁড়ি এবংচারদিকের সবুজের সমারোহ বেশ আকর্ষণীয়।

বৃষ্টি ছিল না তারপরে ও যে পরিমান পানি ছিল তাতে নীল ভালোভাবে অনুভব করা যাচ্ছে বৃষ্টির সময় কি পরিমাণ পানি হতে পারে এখানে।ঝর্ণার পানিতে সবাই গা ভাসিয়ে দিয়ে শরীর কে শীতল করছে।নীল সবাইকে পানি ছিটাচ্ছে। পানিতে খেলা করছে। কেউ তার এই ছেলেমানুষি গুলো অপরুপ ভাবে তাকিয়ে আনন্দ উপভোগ করছে।নীলকে দেখে স্বপ্নর মনে ছন্দের শব্দ ঝট বেঁধেছে।

“তোমার শরীর ভিজিয়ে দিবে ঝর্ণার জল,স্রোতধারা
উছলে উঠা আবেগ এসে করবে তোমায় আত্নহারা
তোমার কাছে ছুটবো আমি এক নিমিষে ডুব সাঁতারে
চতুর্দিকে আলোক শিখা ছুটবেই এই পাথারে,

নীল পানির ছিঁটা মারে স্বপ্ন মুখে তাতে তার ধ্যান ভেঙে যেয়ে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে লজ্জা পেয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে মাথার চুল হাতড়াতে থাকে।কিছক্ষন পর চোখ তুলে তাকিয়ে দেখে নীল হাসছে।সেই পাগল করা হাসি যেন তা বুকে এসে লাগছে।তাতে যেন বুকের বাঁ পাশ টা চিন চিন করে উঠে।

ঝর্ণা দেখা শেষ করে সবাই আবার গাড়িতে চড়ে বসে।কারণ এখন তাদের দুইটো জায়গা ঘুরে দেখা বাকি আছে।

★★★
এদিকে পশ্চিম আকাশে সুর্য মামা হারিয়ে যাচ্ছে পাহাড়ের মাঝে।চারপাশে অন্ধকার হতে শুরু করেছে।মনে হচ্ছে কিছুক্ষণে মধ্যে দিনের আলো নিভে যাবে।ইতিমধ্যে চলে আসল খাগড়াছড়ি শহরের আরেক পরিচিত জায়গা তারেং।তারেং হচ্ছে এমন একটি জায়গা যেখান থেকে পুরো খাগড়াছড়ি শহর কে দেখা যায়।তারেং দেখে খাগড়াছড়ির নিউজিল্যান্ড পাড়া ভালোভাবে দেখা যায়।উপর থেকে নিচের মানুষ গুলো দেখা যায় ক্ষুদ্র পিপালিকার মত। সন্ধ্যার আলো নিভে যাচ্ছে আর ঝিঝি পোকার আলোর মত দেখা যাচ্ছে দূরের এই শহরে লাইট গুলো।তারেং দেখে বেরিয়ে সবাই চলে যায় আলুটিলা দেখতে। অপরুপ বাংলার নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলা ভূমি পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলা। এনৈস্বর্গিক ভরপুর পর্যটন সম্ভাবনাময় ওপাহাড়ের রানি খ্যাত পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলায় পর্যটন স্পর্ট আলুটিলা গুহা।পাহাড়বাসিদের কাছে যেমনই পরিচিত তেমনই দেশ-বিদেশীদের পর্যটক কাছে শতবছরের বটমূল ও আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র,রহস্যময় গুহার কারণে ‘আলুটিলা’খুব পরিচিত।
খাগড়াছড়ি শহর হতে প্রায় ৮ কি.মি পশ্চিমে মাটিরাঙা উপজেলায় আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে একটি রহস্যময় গুহা।স্থানীয় একে বলে মাতাই হাকড় বা দেবতার গুহা।তবে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে অবস্থিত বলে পর্যটকরা একে আলুটিলা গুহা নামে চিনে।এটি খাগড়াছড়ির একটি নামকরা পর্যটন কেন্দ্র।এটি একটি চমৎকার পিকনিক স্পর্ট।তাই এখানে সারাবছর ভিড় লেগে যায়।এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয়, যা হৃদয় ছুয়ে যায়।আলুটিলা খাগড়াছড়ি জেলার সব চেয়ে উঁচু পর্বত।নামে এটি টিলা হলে ও মূলত এটি একটি পর্বতশ্রেণী। আলুটিলার পূর্ব নাম ছিল আরাবারী পর্বত।এর সর্বোচ্চ উচ্চতা সমুদ্র সমতল হতে প্রায় ৩০০০ ফুট।আকাশ, পাহাড় আর মেঘের মিতালী এখানে মায়াবী আবহ তৈরী করে।আলুটিলা রহস্যময় সুগঙ্গে যেতে হলে প্রথমই সবাইকে পর্যটন কেন্দ্রের টিকেট কেটে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়েছে। ফটেকের দুইপাশে দুটি শত বর্ষী বট বৃক্ষ আছে যা সবাইকে স্বাগত জানায়। গুহার ভিতরে সূর্যের আলো ভিতরে যেতে পারে না তাই যাবার পূর্বে মশালের ব্যবস্থা করে নেয় স্বপ্ন।যাতে ভিতরে কোনো অসুবিধা না হয়। এই সুউচ্চ পর্বতের সর্পিল আকারে আকাঁবাকাঁ রাস্তার দু’ধারে সবুজ বনাঞ্চল সারি সারি উঁচু নিচু পাহাড় আর লুকিয়ে থাকা মেঘ যা সবার মন কে চুরি করে নিয়েছে।রাস্তা দিয়ে মিনিট খানেক হাঁটলেই চোখ পড় বে একটি সুরু পাহাড়ি পথ।পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নিচে নেমে গেছে এই পথটি।।এই পথটি বেয়ে নিচে নামলে চোখ পড়বে একটি ছোট ঝর্ণায়।ঝর্ণার পানি নেমে যাচ্ছে ঝিরি বরাবর। তবে এখানে পাহাড় লোকজন ঝর্ণার পানি আটকে রাখার জন্য বাঁধ দিয়েছে।তারা এই পানি খাবার ও অন্যান্য কাজ ব্যবহার করে থাকে।পাকা রাস্তা শেষ হয়েছে এবার সবাইকে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে হবে।প্রায় ৩৫০টি সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলে পরে পাওয়া যাবে কাঙ্ক্ষিত সেই আলুটিলা গুহা।আলুটিলা গুহা যাওয়ার জন্য আগে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নিচে নামতে হতো গুহা মুখে।কিন্তু এখন বাংলাদেশ পর্যটন কেন্দ্র কর্পোরেশন একটি পাকা রাস্তা করে দিয়েছে।যার ফলে খুব সহজেই হেঁটে যাওয়া যায় গুহা মুখে।
এটি একেবারেই পাথুরে গুহা,তাই খুব সামধানে পা ফেলে সামনে এগুতে হয়।কারণ সুড়ঙ্গ ভিতরে কোনো আলো নেই। সুরঙ্গের তলদেশ পিচ্ছিল ও পাথুরে। এর তলদেশে ছোট একটি ঝর্ণা প্রবহমান। গুহাটি দেখতে অনেকটা ভূ-গর্ভস্থ টানেলের মত যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৫০ ফুট। গুহাটির উচ্চতা মাঝে মাঝে কম হওয়া নতজানু হয়ে হেঁটে যেতে হয়। নীল মশাল হাতে নিচে হেঁটে যাচ্ছে সে উচ্চতা দিকে খেয়াল না রেখে এতে যাচ্ছিল বেখেয়ালে মাথা বাড়ি খেতে নীলে স্বপ্ন তার মাথার উপর দিয়ে হাত রেখে দেয়।তার মাথা গিয়ে স্বপ্ন হাতে ঠেকে।সে পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখে স্বপ্ন।
-“খেয়াল করে হাঁটবে তো। যেখানে উচ্চতা কম যেখানে নতজানু হয়ে হাঁটবে।
প্রাচ্য বলতে থাকে,
-“এক্ষুনি তো একটা বিপদ ঘটিয়ে ফেলতি।”
এটা বলে সামনে ঘুরে হাঁটতে নিলে পা ফসকে পড়ে যায়। ব্যাথা ‘আহ্’ করে ঊঠে । সবাই হেঁটে তার পাশে যায়।তৃণ বার বার তাকে উঠানো চেষ্টা করে কিন্তু ব্যথা কুঁকড়ে উঠে।
-“দেখে হাটবি না “।
তৃণ ধমক দিয়ে উঠে।স্বপ্ন তার ঘাড়ে হাত রেখে শান্ত হতে বলে।প্রাচ্য উদ্দেশ্য বলে,
-“ব্যাথা কোথায় পেয়েছিস ”
প্রাচ্য কাঁদো কাঁদো গলায় বলে,
-” পা ব্যথা করছে,অনেক জায়গা ছিঁড়ে গেছে।”
এটা বলে হাত কনুই দেখায়।যা পাথরে সাথে লেগে ছিঁড়ে গেছে।তৃণ প্রাচ্য পায়ে হাত দিলে প্রাচ্য হাত সরিয়ে ফেলে।তৃণ বুঝতে পারে কালকে রাতের ঘটনার জন্য এখনকার ন বোধ হয় প্রাচ্য রেগে আছে।তাই শান্ত কন্ঠ বলে,
-“দেখে শুনে হাঁটলে এমন হত না।”
-” হাঁটতে পারবি তো। ” স্বপ্ন বলল
প্রাচ্য উঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করতে নিলে ব্যাথা কুকঁড়ে যায়।তাই আবার বসে পড়ে।ব্যাথাতুর কাতর হয়ে বলে,
-“বোধ হয় আমার পা টা মোচকে গেছে।এখন আমি হাঁটবো কি করে?”
ধুসর শান্ত্বনা দিয়ে বলে,
-“আমরা তিনজন থাকতে তোর এত চিন্তা কিসের। আমাদের মধ্যে কেউ একজন তোকে কোলে করে নিয়ে যাবে।”
তৃণ বলে উঠে,
-“আমি নিয়ে যাবো।”
প্রাচ্য আপত্তি জানিয়ে বলে,
-“আমি কিছুতে তৃণ কোলে করে যাবো না।ধূসর তুই আমার কোলে নেয় তো।”

এটা বলে ধূসর দিলে হাত বাড়িয়ে দেয় সে।ধূসর কোলে নিতে গেলে তাকে সরিয়ে প্রাচ্য কোলে তুলে হাঁটা ধরে গুহার ভিতরে তৃণ। আকস্মিক এমন করবে তৃণ প্রাচ্য বুঝতে পারেনি।প্রথম তৃণ ঘাড় খামচিয়ে ধরে প্রাচ্য তাকে কোলে তোলার জন্য।তারপর হয়রান হয়ে থেমে যায়।

পা ফসকে গেলে আহত হতে হবে। তবে অন্য কোনো ভয় নেই। গুহাটি একে বারেই নিরাপদ। আলুটিলার এই মাতাই হাকড় দেবতা গুহা সত্যই প্রকৃতি একটি আশ্চর্য খেয়াল।গুহাটির ভিতরে জায়গা জায়গা পানি জমে আছে, রয়েছে বড় বড় পাথর। গুহাটির এই পাশ দিয়ে ঢুকে ওই পাশ দিয়ে বের হতে সময় লাগে ১০-১৫মিনিট মত।

চলবে…
# Kawsar_sorna

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে