সিঁদুর রাঙা মেঘ পর্ব-০৬

0
1197

#সিঁদুর রাঙা মেঘ
#সুুরাইয়া_সাত্তার_ঊর্মি
পর্ব_৬

চিত্রা এবার পেইজ উল্টাতেই হতভম্ব। পরের পেইজ গুলো খালি। চিত্রার মাথা আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। কুহুর সাথে কি হয়েছিল? এখন কিভাবে জানবে? চিত্রা ঘড়ির দিকে তাকালো রাত— ০৩ঃ২০ বাজে। চিত্রা উঠে দাঁড়ালো। ভাবলো, আরো একটি ডায়রি নিশ্চয় আছে! সে আবার লাইব্রেরি রুমে গেল। হন্তদন্ত হয়ে বইয়ের প্রতিটা তাক খুঁজতে থাকলো, পেল না। শেষ-মেষ হতাশ হয়ে চেয়ারে বসে পড়লো। কি ভেবে আবার টেবিলের ড্রয়ার চেক করলো। খুশিতে তার চোখ চকচক করছে। ডায়রিটা পেয়ে গেল।সে ডায়রিটা হাতে নিলো। খুলতেই আবারো দেখতে পেল,গোটা গোটা অক্ষরে লিখা ” সিঁদুর রাঙ্গা মেঘ ২”
চিত্রা এবার খুশিতে কেঁদেই ফেললো যেন। সে আবার পড়তে শুরু করলো…..।

ইউসুফরা সবাই বাসায় ফিরে এলো। সারা রাস্তা তারা দেখতে দেখতেই এসেছে কুহুকে আর পায়নি। ভেবেছে হয়তো চলে এসেছে সে। কিন্তু তাড়াতাড়ি আসার কথা না। ইউসুফ এসব ভাবতে ভাবতে উপরে উঠার জন্য সিঁড়িতে পা বাড়ায়। তখন মিশু বলে উঠে,,
—” মা কুহু এসেছে?”
হল রুমে তখন সবাই বসা। মিশুর কথায় কে কি উত্তর দেয় তা জানার জন্য ইউসুফ দাঁড়ালো। মাইশা তখন বাসার সবার সাথে বসে গল্প গুঁজব করছে। উনি হেসে বলল,,

—” না তো! তোদের সাথে না গেল? আবার চলে আসবে কেন?”

ইউসুফের মাথায় চিন্তার ভাজ পড়লো। এতখনে চলে আসারি কথা? মিশু আবার বলল,,

—” না মা ও আগেই বের হয়েছিল। ওর নাকি শরীর খারাপ লাগছিল। আমরা রাস্তায়ও দেখতে দেখতে আসলাম কিন্তু পেলাম না।”

এবার সবার মুখে চিন্তার ছাপ ফুঁটে উঠলো। ইউসুফ উপরে না গিয়ে এবার তার মার পাশ ঘেষে বসলো আর ফোন টিপতে লাগলো। তারো চিন্তা হচ্ছে এবার। কুহু না আসা পর্যন্ত সে উপরে যেয়ে শান্তিতে বসতেও পারবে না।
–” মা আমি আবার যেয়ে দেখে আসচ্ছি! ”
মিশু বাহিরের দিকে পা বাড়াতেই মাইশা ধমকে উঠলো,,
—” তুমি এত রাতে বাহিরে যাবে না।”
—” মা আমার টেনশন হচ্ছে!”
পাশ থেকে হুর বলে উঠে,,
–” আন্টি ও তো বাচ্চা না তোমরা এত টেনশন কেন করছো। ও একা আসবে ডিসিশন নিয়েছে। না বুঝে তো নেয় নি? আর ছোট খুকিও না হারিয়ে যাবে!এতো টেনশেনের তো কিছু দেখছি না।”
মিশুর রাগ লাগলো খুব। হুর কেমন কথা বলছে এসব? এমনিতে তো তাদের জন্য এত কেয়ার করে আর কুহুর কথা যতবার আসচ্ছে তার যেন সহ্যই হচ্ছে না। মিশু একটু শক্ত কথায় বলল,,
—” কুহু আমাদের বোন ভাবি। তোমার কিছু হয় না তাই তোমার গায়ে লাগচ্ছে না। মেয়ে মানুষ এত রাতে এখনো বাসায় আসেনি। আমরা টেনশন করবো না? এ কেমন কথা বলছো তুমি?”
মিশু আর হুরের মাঝে এক প্রকার তর্কই বাঁধতে শুরু হয়। এদিকে ইউসুফের রাগ উঠতে থাকে। মেয়েটি সত্যি বড় অসভ্য হয়ে যাচ্ছে। এবার পেলে সত্যি গাল ফাটিয়ে দিবে। ভেবেই উঠে দাঁড়ালো, সেই খুঁজবে এখন। অবস্থা খারাপ বুঝতে পারে আয়শা। সুমিও ততখনে ডুকরে উঠে।তখন আয়শা বলল,,

—” ইউসুফ বাবা দেখে আয় না কুহু কই?

আয়শার কথা শেষ হতেই ইউসুফ মাথা নাড়িয়ে বেড়িয়ে যায়। হুরুরে তখন রাগে পিত্তি জ্বলে উঠে। দু টাকার মেয়ের জন্য এত কিসের আদিখ্যেতা ওদের? শুনেছে তার বাবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। আর থাকে ছোট শহরে। ছোট শহরে মানুষ গুলোই হয়তো এমন ন্যারো মাইন্ডের হয়? আচ্ছা এ মেয়ে ইউসুফকে আবার কেড়ে নিবে না তো? নুশরার কাছে সে শুনেছিল। চারবছর আগে ইউসুফের সাথে বিয়ে কথা ছিল। বিয়ের দিন নাকি পালিয়েও গেছিলো বিয়ে করবে না বলে!এ কথা শুনার পর থেকেই ইনসিকিউর ফিল করছে সে। তাইতো সহ্য হচ্ছে না তার কুহু নামের ব্যক্তিটিকে। হুর রাগ থামাতে পাড়লো না। সে মাইশাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
—” আন্টি তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।”
বলে উঠে গেল হুর। গম্ভীর মুখ খানা হুরের দেখেই মাইশা কিছু আন্দাজ করে ফেললো। মিশুরও বুঝতে বাকি নেই কিছু। ওর কাছে এখন হুরকে হিন্দি সিরিয়ালের কুটনি বউদের মতো লাগচ্ছে।মুখ ভেঙ্গচালো মিশু।

ইউসুফ সদর দরজায় আসতেই দেখতে পেল কুহু একটি ছেলের সাথে ভিতরে আসচ্ছে। ইউসুফের কঁপালের রগ দাঁড়িয়ে গেল যেন। হাতের আঙ্গুল গুলো মুষ্টিবদ্ধ করে দাঁড়িয়ে রইল।আগে এমনিতেই রেগে ছিল। এখন একটি ছেলের সাথে দেখে আরো গা জ্বলে উঠলো তার। মুহূর্তেই অগ্নিমূর্তি ধারণ করে ফেললো একেবারে।

কুহু ইউসুফকে দেখে খানিকটা ভয় পেয়ে গেল। তবু ধীরে পায়ে হেটে ইউসুফকে ক্রস করতেই। ইউসুফ তীব্র ক্রোধের সাথে বলল,,

—” হাতে পায়েই বড় হয়েছিস? বুদ্ধিশুদ্ধি কি হয় নি? লজ্জা-হায়ার সাথে সাথে বুদ্ধিও খেয়ে ফেলেছিস?রাত-বিরাতে এখন ছেলেদের সাথে সময় কাঁটাতেও দ্বিধা হচ্ছে না তোর?”

কুহু চকিতে তাকলো।
–ভাইয়া..!

ইউসুফের এমন তিক্ত কথায় কান গরম হয়ে গেল তার।চোখ দিয়ে নোনা জল গড়িয়ে পড়তে লাগলো মুখ ফুঁটে কিছু বলতেও পাড়লোনা। ইউসুফের কন্ঠে শুনতে পেয়ে সকলেই বের হয়ে আসে বাসা থেকে। সদর দরজায় কুহুকে দেখে এক গাদা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় সবাই।

—” আসসালামু আলাইকুম।”

পিছন থেকে একটি পুরুষালি কন্ঠে সবাই পিছনে তাকায়।হাসি হাসি মুখে একটি সুদর্শন ছেলে দাঁড়িয়েছে। সবাই অবাক হয়ে সালামের উত্তর নিল। কুহুর সাথে এই ছেলে কে? তখন সবার চিন্তা ধারার ভুল করে দিয়ে হুর বলে,,

—” ভাইয়া কোথায় ছিলে?”

সবাই এখন হুরের দিক তাকিয়ে। আয়শা বলল,,
—“তোমার ভাই!”
হুর মাথা নাড়ায়,,
—“হে। আমার চাচার ছেলে। আজ এসেছে থাইল্যান্ড থেকে। তা ভাইয়ে তোমার দেড়ি হলো কেন?
তূর্য বলল,,
—“আমিতো আসচ্ছিলামিরে বনু। রাস্তায় এই আপুটিকে পাই। কিছু ছেলে উনার মাথার পিছনে আঘাত করে কোথায় যেন নিয়ে যাচ্ছিল। আমাকে আসতে দেখে পালিয়ে গেল। আর এদিকে উনার হুশ ছিল না। কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। আশাপাশে যাদের পেলাম তাদের জিগ্যেস করলাম উনাকে কেউ চিনে কিনা বা ঠিকনা জানে কি না, কেউ বলতেই পাড়লনা। একা ফেলে আসার সাহসও পাচ্ছিলাম না। তাই মোড়ের চায়ের দোকানে তাকে বসাই আর চোখে মুখে পানি দিতেই হুশ ফিরে।তখন জানতে পারি এই বাসার মানুষ তাই নিয়ে এলাম সাথে।”

সবাই এবার তূর্যকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। কুহুকে সাহয্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ দিলো। কিছুক্ষণ বসে কথা বলে তূর্য হুরকে নিয়ে বিদায় হলো। এদিকে কুহুর অবস্থা খারাপ। দাঁড়িয়ে থাকা দায়। শরীরে তাপমাত্রা যেন অস্বাভাবিক ভাবে বাড়চ্ছে। তখন ছেলে গুলো মাথায় বাড়ি দেয়াতে কিছুটা ফেঁটে গেছিল। তূর্য তখন ব্যান্ডেজ করিয়ে দিয়েছে। কুহু আর বসে থাকতে পাড়লো না রুমে চলে আসলো। পরনের কাপড় চেন্জ করে খাটে বসতেই সুমি রুমে এলো।হাতে তার কিছু মেডিসিন। কুহুকে তিনি মেডিসিন দিয়ে কাঠ গলায় শুধু এটুকু বললেন,,

—“ইউসুফের থেকে দূরে থাকবি।”

কুহু অবাক হয়ে সুমির দিকে তাকালো। সুমি আর দাঁড়ালো না চলে গেল। কুহু এবার কেঁদে দিল। আজ কুহুর সাথে এত বাজে একটি ঘটনা ঘটতে ঘটতে বাঁচলো এতে কারো কোনো হেলদুল নেই? অথচ এমন একদিন ছিল, যেদিন কুহু মরতে মরতে বেঁচে ছিল। আর এই বাড়ির মানুষ গুলো যেন পাগল পাগল হয়ে গেছিল আর আজকে?

কুহু মনে করতে লাগলো সেই দিনটির কথা,,

স্কুলে গণ্ডি পেরুতেই কুহুকে পাঠিয়ে দিল ময়মনসিংহ মামা বাড়ি। ছোট থেকে কুহুর বাবার শখ তিনি তার দুই মেয়েকে প্রতিষ্ঠিত করবে। এবিষয়ে না খোশ ছিল সুমি। স্বামির সাথে এ নিয়ে ঝগড়াও করেছেন বহুত। তার মতে,,

—” মেয়ে যথেষ্ট বড় হয়েছে। আর পড়াতে হবে না। এত টাকা খরচ করে কি করবে? মেয়েতো শ্বশুর বাড়ি যাবে! শুধু শুধু টাকা নষ্ট!”

তখন আসাদ তার বউয়ের কথার প্রতিবাদ করে বলেছিলেন,,
–” আমি চাই না আমার মেয়েরা সারা জীবন চুলো গুঁতোক। আমি চাই তারা পড়াশোনা করে নিজে পায় দাঁড়াক। স্বাবলম্বী হোক। বিয়ের পর তাদের স্বামি কেমন হবে কে জানে? পড়াশোনা শিখা থাকলে অত্যন্ত নিজে কিছু করে খেতে পাড়বে। ”
আসাদের এমন লজিক দেখিয়ে কথা বর্তার সাথে সুমি কখনো পারেন না। তাতে তার ক্ষোভ থেকেই যায়।সেই কারণে তিনি কুহুকে শহরে দিতে আসেন নি। আসাদ আসেন, মেয়েকে নিয়ে। মূলত তিনি মেয়ে হোস্টেলে রাখতে চাইছিলেন কিন্তু তাতে নাহর খুব রাগ করে।তার মতে,,
—“আমার এতে বড় বাড়ি থাকতে নাতনী আমার হোস্টেলে উঠবে? অসম্ভব। ”
শাশুড়ির সাথে কথা না পেরে কুহুকে এখানেই রেখে যায়। এবং ভর্তি করিয়ে দেয় ইউসুফের ভার্সিটির সামনের কলেজে। মূলত সেই কলেজটি সেই ভার্সিটির আন্ডারে।

ছোট থেকেই ইউসুফকে কুহু ভয় পেত। ইউসুফও কুহুকে তার মেজাজের উপর রাখতো! কুহুকে এ বাসায় পা রাখার পর থেকেই যেন ইউসুফের পার্মানেন্ট কাজের লোক হয়ে উঠলো। কুহুর প্রথমে রাগ উঠতো। পরে তা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেল।

একদিন ইউসুফ খেতে বসে বলল,,
—“কুহু কাল কলেজে যাস না।”
কুহু ভ্রু কুচকালো,,
–“কেন ইউসুফ ভাই?”
–“আমি না করেছি তাই!”
কুহুর রাগ লাগলো। কাল তার এক বান্ধবীর জম্মদিন। সে কথা দিয়েছে কুহু আসবে। কুহু রেগে বলল,
–” আপনি বললেই হলো? আমি যাবো তো যাবোই। আপনি বলার কে?
ইউসুফ তখন বাম হাতে কুহুর পিঠে পড়ে থাকা বেনুনীটা টেনে হাতে পেঁচিয়ে কিছুটা টান দিলো। কুহু ব্যথায় কুকিয়ে উঠে মুখ দিয়ে “আহ্” শব্দ বেড়িয়ে এলো। ইউসুফ সেদিকে পাত্তা না দিয়ে বলল,,
–” বেশি কথা শিখে গেছিস না। গেলে একেবারে ঠেঙ্গ ভেঙ্গে হাতে ধরিয়ে দিবো।”
বলেই খাবারের মাঝেই হাত ধুয়ে উঠ গেল। এদিকে কুহু কান্না করার অবস্থা। মনে মনে ভাবলো। ইউসুফ কাল বের হয়ে গেলেই পড়ে সে বের হবে।

যেইভাবা সেই কাজ। ইউসুফ পরের দিন বের হতেই। কুহুও বেড়িয়ে গেল। ভার্সিটির এক নাম্বার গেট পার করতেই কুহু এক জটলার মাঝে পড়ে গেলো। এখানে দু দলের ঝগড়া চলছিল তখন। ঝগড়ার এক পর্যায় মারামারি লেগে যায়। তখন বাহিরের কিছু লোক এসে দোকান পাঠ আর রিকশা এসব ভাঙ্গা শুরু করে। কুহু তখন রিকশা ওয়ালাকে ফিরিয়ে যেতে বলল। কিন্তু ততখনে খুব দেড়ি হয়ে গেছে।
কুহুদের রিকশায় হামলা করে বসেছে তারা। রিকশা ওয়ালা রিকশা ছেড়েই পালিয়েছে। কুহু তখন হতবুদ্ধি। কি করবে ভেবেই এক লাফে নেমে রাস্তার এক কর্ণারে চলে আসলো। তখনি দেখতে পেল সেই রিকাশাটিতে এক দল আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। কুহু এবার ভয় আত্মকে উঠলো। ব্যগ থেকে কোনো রকম ফোন বের করে তার সেই বান্ধবীকে কল করতেই সে জানালো আজ ভার্সটির রাস্তায় গন্ডোগোল তাই তারা আসে নি। কুহু যেন বেকুব বসে গেল। মনে পড়লো ইউসুফের বলা কথা। তখন না শুনে যে ভুল করেছে তার মাশুল এটা। কুহু এবার হাটা ধরলো। কিন্তু লাভ হলো না। পুলিশ আসতেই তাদের সাথে শুরু হলো আরেক দফা হানাহানি। কুহু কি করবে এখন? ভেবে ইউসুফকে ফোন দিয়া শ্রেয় মনে করলো। পড়ে আবার ভাবলো ইউসুফ জানলে তাকে আস্ত রাখবে না কি করবে এখন? কুহুর এসব ভাবতে ভাবতে ইউসুফের ফোনে মিসড কল চলে গেছিলো। সেকেন্ডই কল দিলো সে। কুহু ফোন তুলে কেঁদে দিল। অপাশ থেকে ইউসুফ বিচলিত হয়ে বলল,,
—” বাবুইপাখি কাঁদচ্ছিস কেন? কি হয়েছে? আর তুই কই এত চিল্লাচিল্লি হচ্ছে কেন? কথা বলছিস না কেন??

কুহু কিছুই যেন বলতে পারছে না কান্না গুলো সব দলা পাইকিয়ে গলায় আটকে আছে যেন। তবুও খুব কষ্টে
কাঁপা-কাঁপা কন্ঠে বলে উঠলো,,

—” ভাইয়া আমি কলেজে এসেছিলাম আর…!”

কুহু তার কথা আর শেষ করতে পাড়লো না শুরু হলো ইউসুফের ঝাড়ি। নিরবে কুহু শুধু হজম করে অসহায় গলায় এইটুকু বলল,,

—” প্লীজ হেল্প মি ইউসুফ ভাই।”

ওপাশে তখন ইউসুফ চুপ হয়ে গেল কুহুর কাতর কন্ঠে। কিন্তু কিছু মিনিট অতিবাহিত হতেই শুনতে পেল কুহু গগনবিদারী চিৎকার।

ইউসুফ সেখানেই থমকে গেল যেন। কি হয়েছে তার বাবুইপাখির সাথে ভাবতেই মাথা ফাকা হয়ে যাচ্ছে তার। কোনো রকম ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেই দেখতে পেল কুহুর নিথর দেহ এম্বুলেন্সে উঠানো হচ্ছে। ইউসুফের যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। পায়ের নিচ থেকে যেন মুহূর্তেই মাটি সরে গেল। কুহুর শরীরে লাল রক্ত গুলো দেখে ইউসুফের শরীরে শিরা-উপশিরা ঠান্ডা হয়ে উঠলো বরফের নেয়।ইউসুফ যেন নড়তেই পাড়ছিল না। ইউসুফ তখন হেলে পড়তেই তার সাথে আসা দুই বন্ধু জায়েদ আর সাবিত ধরে ফেললো। কুহুর তখন যেন হালকা হুশ ছিল দূর থেকে ইউসুফকে দেখে হাত উঁচু করে ডাকলো। ইউসুফ তখন যেন শরীরে সব ভার ছেড়ে দিয়েছে। নিজের ভালবাসার মানুষটিকে এমন রক্তাক্ত অবস্থা দেখে ইউসুফের যেন কলিজা ছিঁড়ে যাচ্ছে। কোনো রকম ভাড় শরীর টা টেনে বন্ধুদের সাহায্য কুহুর কাছে পৌঁছালো। কুহু তখন কাঁদচ্ছিল। চোখ গুলো বুজে বুজে আসচ্ছিল যেন! ইউসুফ যেন পাথর হয়ে রয়েছে। কুহু শুধু ইশরায় একটি বাচ্চাকে দেখিয়ে বলল কোনো রকম,,

—” ওর বাবা-মার কাছে পৌঁছে…”

আর কিছু বলতে পারে না কুহু জ্ঞান হারায়। কুহুর আর সাড়া শব্দ না পেয়ে ইউসুফ পাগলের মতো চিৎকার করে উঠে।

চলবে,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে