সিঁদুর রাঙা মেঘ পর্ব-৩১+৩২+৩৩ এবং শেষ পর্ব

0
2251

#সিঁদুর_রাঙা_মেঘ
#সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি
পর্ব-৩১,৩২,৩৩(শেষ পর্ব)

চিত্রা আর ইউজারসিফ বাসা থেকে বের হলো। ইউজারসিফ বলল,,
—” সো আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন? ”
চিত্রা হেসে ফেললো। মাথা নাড়িয়ে বলল,,
—” প্রশ্ন উত্তর জানার জন্য আসা নয়। কৌতূহল বলতে পাড়েন।”
ইউজারসিফও হাসলো। চিত্রা বলল,,
—” আসি তাহলে, ভাল থাকবেন।”
চিত্রা দু কদম এগিয়ে যেতেই ইউজারসিফ বাঁধা দিল। বলল,,
—” আমি পৌঁছে দিই।”
—” না না কষ্ট করতে হবে না। আমার বাসা পরের গলিতেই। আমি হেঁটে যেতে পারবো। আপনাকে এল রেডি অনেক জ্বালিয়ে ফেলেছি।”
—” তেমন কিছু না। কিন্তু হে আপনার সাথে পরিচিত হয়ে ভাল লেগেছে অনেক। আগে কখনো এমন ডেস্পারেট কাউকে দেখিনি, সামন্য গল্পের উপর ডিপেন্ড করে এত দূর আসা।”
চিত্রা হাসলো। বলল,,
—” আমিও অবাক হই। আমি যখন পড়তে শুরু করি গল্প তখন ভাবিনি এমন পাগলামো করবো। কিন্তু হে বলতে হয় ইউসুফ দাদু তার বাবুইপাখিকে অনেক ভালোবাসে।”
ইউজারসিফ মাথা নাড়ায়,,
—” আমিও মানি তা, ইনফ্যাক্ট আমরা সবাই মানি!”
চিত্রা হাসলো। তারপর বলল,,
—” আসি তাহলে।”
ইউজারসিফ বলল,,
—” পথের সাথী হতেই পাড়ি? ”
চিত্রা এবার আর অমত করলো না। কোথাও না কোথাও সেও চায় ইউজারসিফের সঙ্গ।

হাঁটার মাঝে অনেক কথা বার্তা হলো তাদের। একে অপরের সম্পর্কে অনেক কিছু যেনে নিলো তারা।
বাসার কাছে পৌঁছে দিয়ে চলে গেল ইউজারসিফ। চিত্রা ইউজারসিফের যাওয়ার তাকিয়ে রইলো। বুকের মাঝে চিন চিন ব্যাথা হতে লাগলো। কিন্তু কেন?

—” তো লাষ্ট পর্যন্ত তোর ইচ্ছে পূরণ হলোই।”
মোহোনার কথায় আনমোনে উত্তর দিলো চিত্রা,,

—“হুম!”
মোহোনা চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলল,,
—“তো আর কি ভাবছিস?
—” আমার মাঝে ইউজারসিফের জন্য অনুভূতির সৃষ্টি হচ্ছেরে। সেটাকি আদো ঠিক না ভুল বুঝতে পাড়ছি না।”
মোহোনা আবাক হয়ে বললো,,
—” ভুল হবে কেন? ”
—“যদি একতরফা হয়?”
—” গাধা একতরফা কেন হবে? ইউজারসিফের চোখেও তোর জন্য গভীর অকুলতা আমি দেখেছি। সেও তোকে পছন্দ করে।নয় তোকে নিয়ে এখানে সেখানে ঘুরতো না। না তোকে তার পছন্দের জায়গায় নিয়ে যেত!”
চিত্রা লাজুক হেসে বলল,,
—” জানিস তার সেই ডীপ ব্লু আইসের দিকে তাকাই না…। মনে হয় তাতে ডুবে যাচ্ছি আমি।”
মোহোনা হেসে ফেললো বোনকে লাজুক হাসতে দেখে। তারপর টিপুনি কেঁটে বলে উঠে,,
—” ও মা গো টুরু লাভ..!”
চিত্রা ফিক করে হেসে দেয়। দুজনের মাঝে তখন হাসির রোল পরে যায়। ঠিক সেই মুহূর্তে মোহোনাদের বাড়ির কাজের মেয়ে এসে একটি পার্সেল দিয়ে বলে যায় চিত্রার জন্য এসেছে। চিত্রা চিন্তায় পড়ে গেল। অপরিচিত এক জায়গায় পার্সেল কে পাঠাতে পারে তাকে? নাওয়াজ না তো? ভেবেই ভয়ে শুকনো ঢুক গিললো সে। কঁপালে তার বিন্দু বিন্দু ঘাম। তা দেখে ভ্রুকুচকে মোহোনা বলল,,
—” কি হলো? এভাবে ঘামছিস কেন? ”
চিত্রা ঘাম মুছে চাপা হাসার চেষ্টা করে বলল,,
—” তেমন কিছু না।”
—” তাহলো খোল।”
চিত্রা খুললো। বিস্ময়ে তার চোখ বড় বড় হয়ে গেল সে। মোহনাও তাই। দুজনে এক সাথে বলে উঠে,,
—“WOW”
একটি প্রিন্সেসদের মতো গাউন ডীপ ব্লু কালার।তার সাথে ছোট একটু চিরকুট। চিত্রা তা খুললো। পড়তেই তার মুখ লাল অভায় আবৃত্তি হলো। যেন টমেটো। মোহনা তখন চিরকুট কেরে নিয়ে বলল,,
—” দেখি দেখি কে দিয়েছে…এমন লজ্জায় মরে যাচ্ছিস যে?”
মোহোনা চিরকুটটি পড়তে লাগলো,,

“”আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা থাকে
সাত সাগর আর তের নদীর পারে
ময়ূর পঙ্খী ভিড়িয়ে দিয়ে সেথা
দেখে এলেম তারে
সাত সাগরের পারে।।
সে এক রূপ কথারই দেশ
ফাগুন সেথা হয়না কভু শেষ
তারারই ফুল পাপড়ি ঝড়ায়
সেথায় পথের ধারে।।
সে রূপ কথারই দেশে
যে রঙ আমি কুড়িয়ে পেলেম প্রাণে
সুর হয়ে তাই ঝড়ে আমার গানে।
তাই খুশির সীমা নাই
বুঝি বাতাসে তার মধুর ছোঁয়া পাই
জানিনা আজ হৃদয় কোথায়
হারায় বারে বারে।।”

Waiting For You…
ইউজারসিফ

—” আমার স্বপ্নের দেখা রাজকন্যা
চিত্রা সাথে সাথে দু হাতে মুখ ঢেকে ফেললো। মোহোনা তাকে জড়িয়ে ধরে বললো,,

—” দেখেছিস বলেছিলাম না ও তোকে ভালবাসে। সত্যি হলোতো।”

পর্ব_৩২
আইফেল টাওয়ারের নিচে ওয়েট করছে ইউজারসিফ। হাতের তার এক গুচ্ছো লাল গোলাপ। হোয়াইট সুটের সাথে ডীপ ব্লু সার্ট, হাতে দামী ঘড়ি, ব্ল্যাক শু। চুলগুলো জেল ধারা সেট করা। আজ যেন তাকে মাত্রাতিরিক্ত সুন্দর লাগছে। ডীপ কালার চোখ জোড়া অস্থির হয় এদিক সেদিক তাকাতে লাগলো শুধু। খুঁজে যাচ্ছে তার সেই রাজকন্যাকে। কখন আসবে? এত সময় কেন লাগচ্ছে? আচ্ছা তার দেয়া গিফট সে পেয়েছেতো? নাকি পায়নি? সে তো অ্যাড্রেস মেসেজ করেছিলতো সে। তাহলে? এত কেন লেট করছে?”

ইউজারসিফ আকাশের দিকে তাকালো। আজ আকাশে সিঁদুর রাঙা মেঘ করেছে। কি সুন্দর না লাগচ্ছে? মনে পড়লো তার দাদা-দাদীর সেই মুহূর্তের কথা। দাদা-দাদির গল্পটি সেও পড়েছিল। মনের মাঝে এক ভাললাগা কাজ করলো। বিড়বিড় করে বলল,,
—“হে আল্লাহ। আমার দাদুর লাভ স্টোরির মতো আমার লাভ স্টোরিটও স্বার্থক করিও প্লীজ!”
ইউজারসিফ চোখ বুঝে আরো পার্থনা করলো। যখন চোখ মেললো তখন ইউজারসিফ যেন হা হয়ে গেল। তার সামনে তার রাজকন্যা ঠিক রাজকন্যার মতো সেজেই এসেছে। ইউজারসিফ তাকিয়ে রইলো চিত্রার লজ্জা মাখা মুখটির দিকে। ডীপ ব্লু ড্রেসে তাকে আরো অপরূপা লাগচ্ছে। ইউজারসিফ চেয়েই রইলো শুধু।

চিত্রার লজ্জা হাজার গুন বাড়চ্ছে। বুকের মাঝে ধ্রীম ধ্রীম আওয়াজটি তীব্রতর হচ্ছে।ইউজারসিফের এমন গভীর দৃষ্টিতে সে তার চোখ মেলাতে পাড়ছেনা। কেমন মাতাল মাতাল চাহনি তার।

চিত্রা ইউসুফের সামনে দাঁড়ালো। ইউসুফ নেশাকাতুর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল,,
–“ভিউটিফুল!”
চিত্রা লজ্জা পেল। এতটা যে কান দুটি গরম হয়ে গেল।
ইউজারসিফ মুচকি হেসে বলল,,
—” লজ্জা পেলে তুমি টমেটোর মতো লাল হয়ে যাও। কখন যেন খেয়ে ফেলি।”
এতখন তাকিয়ে ছিল চিত্রা। লজ্জা পেয়ে মাথা নত করে ফেললো সে। ইউজারসিফ সেই মুহূর্ত নষ্ট করতে চাইলো না। এক হাটু গেরে মাটি বসে লাল গোলাপে তোড়াটি সামনে ধরে বলল,,
—” আমার শরীরে অর্ধাঙ্গিনী হবে? থাকবে এ বুকের মনি কোঠায়? চলবে হাত ধরে যতই হোক না কাটা ভড়া পথ? হবে তো আমার বিশ্বাস? যদি হও? স্বাক্ষী হবে এই বিশাল আকাশ আর সেই সিঁদুর রাঙা মেঘের ভেলা।”
হাত এগিয়ে দিলো ইউজারসিফ । ছলছল নয়নে দৌঁড়ে বসে থাকা ইউজারসিফকে ঝাপটে ধরে বলল,,
—“, ভালবাসি”
ইউজারসিফ আবেশে চোখ বুঝে নিলো। চিত্রাকে ঝাপটে ধরে দূর আকাশের দিক তাকিয়ে দু আঙ্গুল উচিয়ে চুমু দিল। মনে মনে বলল,,
—” ধন্যবাদ আল্লাহ। ”

৩ মাস পর…!
চিত্রা ইউজারসিফের ধুমধাম করে বিয়ে হয়েছে আজ।তারা রুমে আছে। বৃষ্টি বিলাস ছাদের উপর বসে আছে ইউসুফ। বাংলাদেশের মাটিতে আজ কত বছর পর পা রেখেছে তাই মনে নেই তার। ইদানীং অবশ্যি সব ভুলে যায় সে। ভুলে শুধু তার বাবুইপাখিকে।

—” দেখলি বাবুইপাখি? আমাদের ইউজারসিফও বিয়ে করে নিলো। ”
—“হে দেখলাম তো! মেয়েটি খুব সুন্দর!”
—” তোর থেকে কম কিন্তু!”
—” কি যে বলো না!”
ইউসুফ হাসলো। ছোট একটি শ্বাস ত্যাগ করে বলল,,
—” তোকে ছাড়া আর পাড়চ্ছি না বাবুইপাখি। সব দ্বায়িত্ব শেষ। এবার যাবার পালা।”
কুহু বলল,,
—” আমিও আছি তোমার অপেক্ষায়। দুনিয়ায় তো আর সংসার করার ভাগ্য হলো না। না হয় মরার পর টুনটুনির সংসার করবো!”
ইউসুফ চেয়ে রইলো কুহুর দিক। বলল,,
—” তোর হাতটা ধরি?”
কুহু হেসে ফেললো। বলল,,
—” আত্মাকে দেখা, ছোঁয়া যায় না।”
—” আমিতো দেখি তোকে!”
কুহু হাসলো। বলল,,
—” আমি তোমার জীবন থেকে চলে গেছি। কিন্তু তুমি আমাকে তোমার হৃদয় আর মাথা থেকেই যেতে দিচ্ছো না। তা আমাকে দেখো!একবার যদি মন থেকে ভাবো, আমি নেই। কোথাও নেই। দেখবে আমাকে আর দেখতে পাবেনা।”
ইউসুফ রেগে গেল। বলল,,
—” তুই মজা করছিস!”
—” মোটেও না! ট্রাই তো করো?”
ইউসুফ ট্রাই করলো। হারিয়ে গেল কুহু। ইউসুফের বুকে ধক করে উঠলো। বাবুইপাখি বলে চিৎকার করতে লাগলো। ছাদের এ প্রান্ত ও প্রান্ত ছুটতে লাগলো। মাটিতে পরে থাকা অর্ধ ইটে না দেখে হোটচ খেলো ইউসুফ। সাথে সাথে মুখথুবড়ে নিচে পরে গেলো। সাথে সাথে নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে লাগলো। সে সময় চিত্রাদের বাসার কাজের মেয়ে ইউসুফকে খেতে ডাকতে আসলো। ইউসুফের এ হাল দেখে চিৎকার শুরু করলো। চিত্রা, ইউজারসিফ সহ বাড়ি সবাই উপরে উঠে এলো। সম্রাট তার বাবাকে দেখে কেঁদেই দিলো।

হাসপাতালে আনা হলো ইউসুফকে। মাথায় চোট পেয়েছে ভিষণ। রক্ত পড়া কমছেই না। ডাক্তার জানালো,,

—” অবস্থা ক্রিটিক্যাল। ”

ধপ করে বসে পড়লো ইউজারসিফ। ছল ছল চোখে তাকিয়ে রইলো অপারেশন থিয়েটারের দিকে। লাল বাতিটি কি সুন্দর জল জল করছে। পাশে এসে বসলো চিত্রা। কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলল,,

—” দাদা ঠিক হয়ে যাবেন চিন্তা করো না!”

ইউজারসিফ নিজেকে শক্ত করলো। সবাইকে এখন তাকেই সামলাতে হবে। চিত্রাকে এক হাতে জড়িয়ে বলল,,

—” হুম৷ দাদা জলধি ঠিক হবেন।”

পর্ব-৩৩
চারিদিকে ফুলের গন্ধে মো মো করছে। বৃষ্টি বিলাসের বিরাট ছাদটি আজ হাজার আলোয় আলোকিত। দূর আকাশের তারা গুলোও আজ যেন কাছে এসে ধরা দিচ্ছে। রূপালি থালাও আজ পিছিয়ে নেই। পূর্নিমার আলো গায়ে মাখাতে নেমে এসেছে হাজার গুন নিচে।

—-” তোমার বুকে আজ কত বছর পর মাথা রাখলাম ইউসুফ ভাই।”

ইউসুফ হেসে ফেললো, কুহু আবেগে আপ্লুত হয়ে যাওয়া কন্ঠে। কুহু ইউসুফের চোখে পিটপিট করে তাকিয়ে বলল,,

—“হাসছো যে?”

ইউসুফ কুহুর দিক ঝুকে বলল,,

—” তুই আমাকে তুমি বলছিস!”

কুহু লজ্জা পেল। লজ্জায় বুড়ো আঙ্গুল কামড়ে ধরলো। ইউসুফ আবার হাসলো। কুহুকে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে।বলল,,

—” এ লাজুক মুখখানা দেখার জন্য কত অপেক্ষা করেছি!”

কুহু বিড়াল ছানার মতো মুখ লুকিয়ে রাখলো ইউসুফের বুকে। ইশশ..! কি শান্তি এ বুকে। ইউসুফ কুহুর চুলের মাঝে হাত চালিয়ে দিলো। বলল,,

—” আমাদের আর কেউ আলাদা করতে পাড়বেনা বাবুইপাখি!”

কুহু মাথা তুলে পলকহীন দৃষ্টিতে তাকালো। চোখের কোন বয়ে জল টুকু খুব শান্ত পূর্ণ ভাবে পড়ে গেল। ঠোঁটে তার কিঞ্চিৎ হাসি। তাকিয়ে দেখলো তার বিলাই চোখ ওয়ালা ইউসুফ ভাইয়ের মুখে। ঠোঁট জোড়া নাড়িয়ে বলল,,

—-” ভালবাসি!”

ইউসুফ বাঁকা হাসলো তার গালের টোল পড়া হাসি। কুহুকে কাছে টেনে নিলো খুব করে। মাদকতা কন্ঠে ঢেলে দিয়ে বলল,,

—” ভালবাসি বাবুইপাখি।”

ইউসুফ মারা গেছে আজ ১৫ দিন। ইউসুফের রুমে ইউজারসিফ বসে আছে। দৃষ্টি তার গন্তব্যহীন। ছোট বেলার কাঁটানো মুহূর্ত নাড়া দিচ্ছে খুব। ইউসুফ কতই না আদর, ভালবাসা, সোহাগ করেছে তাকে। আর আজ সে নেই। কিন্তু তবুও মনে হচ্ছে ইউসুফ যেন ইউজারসিফের গা ঘেসে বসে আছে। ইউজারসিফ উদাস ভঙ্গিতে বলল,,

—-” দাদা আমাকে মনে রেখেছোতো? তোমার বাবুইপাখিকে পেয়ে আমায় ভুলে যাওনি তো??”

ঠিক সেই মুহূর্তে যেন শূন্য থেকে আওয়াজ এসে ইউজারসিফের কানে কানে বলল,,

—” তুইতো আমার প্রতিছবি। তোকে কিভাবে ভুলে যাই? সেই স্পর্ধা কি আমার আছে দাদু ভাই?”

ইউজারসিফ হাসে। বিড়বিড় করে বলে,,

—-” মিস করছি তোমায় দাদা। খুব খুব খুব..!”

আবারো চুপ হয়ে গেলো ইউজারসিফ।

—-” খাবে না?”

চিত্রার কথায় ছোট শ্বাস ছাড়ে ইউজারসিফ। বলে,,

—” হুম চলো।”

খাবার টেবিলে ইউজারসিফের বাবা বলল,,

—-” এবার আমাদের দেশ ছাড়া উচিত! ”

ইউজারসিফ খানিক চুপ থেকে বলল,,

—-” আমি যাবো না। এখানেই থাকবো।”

তার মুখের উপর আর কিছু বলল না কেউ। এক মাত্র ছেলে যা চাইবে তাই দিবে। কিন্তু তাদের ফিরতে হবে। সব যে পড়ে আছে সেই দূর দেশে। তারাও খুব দ্রুত ফিরবে নিজ দেশে। নিজ মাটিতে। থাকবে ছেলের সাথে।

ইউজারসিফ ছাদের কার্নিশে রাখা দোলনায় বসে রয়েছে। তার বাবা-মা চলে গেছে আজ চার দিন।চিত্রা ইউজারসিফের গা ঘেঁষে বসে পড়লো। ইউজারসিফ তার দিক একবার তাকিয়ে মাথা নত করে নিঃশব্দ শ্বাস ছাড়ে। চিত্রা ইউজারসিফে কাঁধে মাথা রেখে বলে,,

—” দেখো দূর আকাশে সিঁদুর রাঙা মেঘ করছে। ”

ইউজারসিফ সাথে সাথে তাকালো। চিত্রা আর ইউজারসিফের চোখে ভেষে উঠলো কুহু আর ইউসুফের মুখখানি। তারা যেন হাসি মুখে তাকিয়ে দেখছে তাদের। ইউজারসিফ মনে মনে বলল,,

—” দাদু-দাদা ভালো থেকো ওপারে!

🕊️সমাপ্ত🕊️

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে