মনের গহীনে শুধুই তুমি পর্ব-১৯+২০

0
1213

#মনের_গহীনে_শুধুই_তুমি
#পর্ব_19+20
#Mst_Meghla_Akter_Mim

রোদ ফিক করে হেসে ফেললো ছেলে গুলোর মুখ দেখে। ছেলে গুলো রোদের পা ধরে বললো,” স্যার আমাদের মেরে ফেলবেন না। বাড়িতে আমাদের বউ বাচ্চা আছে স্যার।”

রোদ ওদের উঠিয়ে বললো,” কি করছেন টা কি আপ্নারা? আমার পায়ে হাত কেনো দিচ্ছেন? আর আমি কখন বললাম মেরে ফেলব!”

–“বললেন যে আর সুযোগ পাবো না?”

রোদ মৃদু হেসে ছেলে দুটোর কাঁধে হাত রেখে বললো,”আপনারা ভুল করেছেন কিন্তু তার শাস্তি মৃত্যু নয়। আসলে পথে ঘাটে মেয়ের প্রতি নোংরা নজর দেয়া ঠিক নয়। আপনার বাড়ির বউ কিংবা বোনের দিকে কেউ নোংরা নজর দিলে খারাপ তো লাগে তাইনা? তেমনই আপনারা যখন একই কাজ করেন সে কথা মনে থাকে না। ও করে বলেই আমি করব এই মানসিকতার জন্য সমাজে এতো খারাপ কাজের বিস্তৃতি। ”

ছেলে গুলো মাথা নিচু করে আছে। অপরাধ বোধে যেনো মোর্চা যাবে তেমন অবস্থা। আস্তে করে বললো,

–” স্যার আর জীবনে এমন কাজ করব না। ”

রুদ্র পাশ থেকে কিছু বলার জন্য এতক্ষণ প্রস্তুতি যেনো নিচ্ছিব। ওদের কথা শেষ হতে না হতে বললো,

–” বাড়িতে বউ আছে কিন্তু তার দিকে কোনো নজর নেই! সে কি খাচ্ছে কি পড়ছে সেদিকে কোনো লক্ষ্য নেই কিন্তু বাহিরের মেয়ের দিকে লোভ লালসার নজর গেলো না। রোজগার করো না কিন্তু এইসব করে বেড়াও। আর আরেকজন তুমি! তোমার মা অসুস্থ কিন্তু তা মনে থাকে না?”

ছেলে দুটি কাঁদো কাঁদো অবস্থা। কখনো গভীরভাবে সবকিছু ভেবে দেখেনি মনে হয়। রুদ্র থমক দিয়ে বললো,

–” চুপ কেনো এখন? উত্তর দাও। ”

ছেলে দুটি কেঁপে উঠলো। রোদ রুদ্রের কাঁধে হাত দিয়ে বললো,” থাক আর কিছু বলিস না। ”

তারপর ছেলে দুটি কে বললো,” আপনাদের খারাপ কাজের ফল হয়তো আপনাদের পরিবার ভোগ করছে। প্রকৃতি আপনি যা করবেন তাই আপনাকে ফিরিয়ে দিবে। আজ থেকে আপনারা আমাদের প্রয়োজনীয় খবরাখবর দিবেন। বলতে পারেন অনেক তথ্য যা আমাদের পাওয়া সম্ভব না কিন্তু যারা সাধারণ মানুষ তারাই তাদের সাথে মিশে থেকে জানতে পারে। শুনেছি আপনারা কিছুই করেন না। তাই বলতে পারেন আপনাদের একটা কাজ দিলাম। এতে আপনাদের কারো মায়ের চিকিৎসার সমস্যাও থাকবে না আর আপনি আপনার স্ত্রী কে যথাযথ সম্মান দিবেন তো? ”

ছেলে গুলো কাঁদো কাঁদো হয়ে বললো,” স্যার আপনি অনেক ভালো স্যার। আজ থেকে আমার স্ত্রী কে আর কোনো কষ্ট দিবো না। ”

আরেকজন বললো,” স্যার সত্যি আপনি খুব মহান। একটা চাকরির জন্য পথে পথে ঘুরেছি কিন্তু চাকরি পাই নি। কারন আমাদের টাকা নেই। ”

রুদ্র আর রোদ ওদের আশ্বস্ত করলো। দুজনে মুচকি হাসি দিলো। অপরাধী যখন তার অপরাধ বুঝতে পারে এর চেয়ে বেশি আনন্দের আর কিছুই হয় না। আমাদের সমাজে যতো অপরাধী তারা কিন্তু নিজ ইচ্ছাই অপরাধী হয়নি। তাদের শিক্ষা আবার কখনো কখনো কারো অবিচার ই তাদের অপরাধী বানিয়ে দেয়। ছোট অপরাধ করা থেকে তাদের আটকানো দরকার নাহলে পরবর্তী তে আরো বড় অপরাধ করে ফেলবে।
_______________
মেঘ বিছানা গুছিয়ে রাখছে আর নিজ মনে মুচকি মুচকি হাসছে। বিছানায় রোদের গায়ের গন্ধ যেনো মেঘ কে মাতাল করে তুলছে। রোদের ভেজা মুখ বারবার মেঘের চোখের সামনে ভেসে উঠছে। মেঘের মন বলছে সে রোদ কে ভালোবাসে। কিন্তু মুহূর্তেই মেঘের মুখের স্নিগ্ধতা হারিয়ে গেলো। মনের মধ্যে নাড়া দিলো সেই সত্যি যা রোদ বলেছিলো। রোদ একজন কে ভালোবাসে কিন্তু কে সে? মেঘের বারবার সেই মেয়েকে দেখার ইচ্ছা জাগছে যাকে রোদ না দেখেও ভালোবাসে। ভালোবাসার মানুষের ভালোবাসার মানুষকে তো দেখতে ইচ্ছা করবেই। মেঘ মনে মনে বলছে যাঁকে রোদ ভালোবাসে তার থেকে শুনবে কি মায়ায় বাঁধলে রোদ কে পাওয়া যায়। মেঘ বসে ভাবছে,

“একদিন আমি ভেবেছিলাম কাউকে ভালোবাসা সম্ভব নয় কিন্তু আজকে মন কেনো বলছে আমি ভালোবেসেছি? রোদের মায়ায় আমি জড়িয়ে পড়ছি। কিন্তু আমার জীবনে ভালোবাসা মানায় না বোধহয় তাই রোদ অন্য কাউকে ভালোবাসে। তবে ভালোবাসা মানেই ভালোবাসা অন্য কারো থেকেও পেতে হবে তা নয়। রোদ কে ওর ভালোবাসার মানুষের কাছে দিয়ে আমি চলে যাবো বহুদূর। এইটাই আমার ভালোবাসা। যাইহোক… ”

মেঘের চোখের কোণে পানি এসেছে। পানি মুছে মেঘ উঠে দাঁড়াতেই বেডের উপরের দেয়ালে চোখ পড়লো আবার। মেঘের মনে আবারো কৌতুহল জাগ্রত হল সেই সাদা কাপড়ের নিচে কি আছে তা জানার। মেঘ মনে মনে বলছে,

–” আপ্নার ভালোবাসার মানুষকে খুঁজে বের করার কি কোনো উপায় এই জিনিসটা ই? আমি জানি আপনার রহস্য আলমারি থেকেই পাওয়া যাবে কিন্তু আপনি না চাইলে আমি আলমারি তে হাত ও দিবো না। কিন্তু সাদা কাপড়ের নিচে কি আছে জানতে তো কোনো বাঁধা নেই।”

মেঘ কাঁপা হাতে কাপড় টা সরাতে নিলো, তখনই আয়রা এসে বলে উঠলো,

–” ভাবি দেখো কে এসেছে। ”

মেঘের আজও আর দেখা হলো না। শুধু বুঝতে পারলো একটা ছবি আছে কিন্তু পুরোটা দেখতে পারেনি, শুধু দেখেছে সাদা জামা পড়ে আছে কেউ। মেঘ আয়রার কথায় হাত সরিয়ে নিয়ে মুচকি হেসে বললো,

–“কে এসেছে আয়রা?”
মেঘ বারবার দেয়ালের ছবিটির দিকে তাকাচ্ছে। যখন ই কিছু জানতে যাচ্ছে তখনই কিছু না কিছু হচ্ছে ই। আয়রা ভেতরে এসে হাসি দিয়ে দরজার দিকে আঙুল দিয়ে বললো,

–“ওই দেখো ভাবি।”

মেঘ তাকিয়ে দেখলো প্রতীক হাসান আর মিমি হাসান দাঁড়িয়ে আছে। মেঘ উনাদের দেখে খুশিতে আটখানা হয়ে গেলো। আয়রার দিকে একবার তাকালো। দৌড়ে গিয়ে প্রতীক হাসান আর মিমি হাসান কে জড়িয়ে ধরলো। খুশিতে যেনো মেঘের মুখ থেকে কথায় বেরোতে চাইছে না। মেঘ উনাদের ঘরে এনে বললো,

–“মাম্মা – পাপ্পা তোমরা আমাকে তো ভুলেই গেছো। আজ কিভাবে মনে পড়লো হ্যাঁ?”

আয়রাও উনাদের সাথে বসে আছে। মেঘ মুখ ফুলিয়ে ফেললো। মিমি হাসান মেঘের গালে হাত দিয়ে বললো,

–“নিজের মেয়েকে কি ভুলে যাওয়া যায়? আর আমরা তোকে ভুলে যাবো ভাবলি কেমন করে?”

–“ভুলেই তো গেছো নাহলে এতদিন একবারও তো দেখা করতে আসলে না। ”

” ঠিক তোমায় উনারা ভুলেই গেছিল। আজকেও তো আসতো না। আমি জোর করে নিয়ে আসছি।” – রোদ শার্ট এর হাতা ফোল্ট করতে করতে ঘরে এসে বললো।

মেঘ ওর বাবা – মা আর রোদের দিকে একবার তাকিয়ে বললো,

–” সত্যি পাপ্পা? তাহলে ঠিক তোমরা ভুলেই গেছিলে। তোমাদের আজ দেখে ভাবলাম যে তোমরা নিজের ইচ্ছায় এসেছ কিন্তু আমি তো দেখছি তাও না। বিয়ে হয়েছে বলে যে আমি তোমাদের পর হয়ে গেছি তা বুঝতে পারলাম।”

মেঘ মন খারাপ করে নিচের দিকে তাকালো। প্রতীক হাসান মেঘের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,

–” মেয়ের বাড়িতে হুট করে আসা যায় কি বল মা? আর তুমি তো জানো আমি কতটা busy থাকি। রোজ কতগুলো অপারেশন থাকে। ”

মেঘ বললো,” সব জানি। অজুহাত দিতে হবে না আর কাউকে। ”

রোদ পকেটে দু হাত রেখে বললো, “মা – বাবা আপনাদের মেয়ে তো প্রচণ্ড অভিমানী আর রাগী।”

রোদের কথা কানে আসতেই মেঘ যেনো ফোস করে রোদের দিকে তাকালো। রোদ হাসার চেষ্টা করে বললো,

–” না আপনাদের মেয়ের একটুও রাগ নেই। তো মেঘ বাবা – মা এর উপরে রাগ করতে নেই। উনারা তোমাকে খুব ভালোবাসে বুঝেছো। আর উনারা তো তোমাকে অনেক মিস করেছে তাই আমাকে কল করেছিলো যাতে তোমাকে নিয়ে যাই। কিন্তু আমি ভাবলাম হুট করে উনাদের সামনে এনে তোমাকে surprise দেয়া যাক!”

মেঘ একটু শান্ত হয়ে বাবা – মায়ের দিকে তাকালো জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে। উনারাও হ্যাঁ সম্বোধন করলো। মেঘ রাগ করার ভান করে বললো,

–” ঠিক আছে! এবারের মত মাফ করে দিলাম কিন্তু নেক্সট টাইম আমায় ভুলে গেলে আর কথা নেই তোমাদের সাথে।”

” হুম মা মেনে নিলাম। “- বলে মিমি হাসান মেঘ কে বুকে টেনে নিলো।

আয়রা, রোদ হাসছে। মেঘ মিমি হাসানের থেকে সরে অতি উৎসাহের সঙ্গে বললো,

–“তোমরা এসেছ একদিক থেকে খুব ভালো হয়েছে। মামনি এসেছে জানো? আর আমার একটা ছোট ভাই ও পেয়েছি খুব মিষ্টি ও। মনে হয় সত্যি সত্যি আমার ভাই। এ বাড়িতে এসে আয়রা কে বোন হিসেবে পেয়েছিলাম আবার একটা ভাই ও পেলাম।”

কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই মেঘ গড় গড় করে কথাগুলো বললো আর ওর মুখে হাসি ফুটে উঠলো। প্রতীক হাসান রোদের দিকে তাকালো। রোদ একবার চোখের পলক ফেললো। উনাদের দেখে মনে হচ্ছে চোখে চোখে উনারা কথা বলছে। মিমি হাসান কিছুই না বুঝে বললো,

–” আমি কিছুই বুঝলাম না। কে এসেছে? কার কথা বলিস?”

মেঘ কপালে হাত দিয়ে বললো, “তাই তো তোমরা তো চিন না। চলো নিচে চলো তোমাদের সাথে আলাপ করিয়ে দেই।”

–“আয়রা মামনি কোথায়?”

আয়রা মুখে হাসি টেনে বললো, “আন্টি সকাল দশ টায় কি যেনো নামাজ পড়ছিল। এখন মনে হয় পড়া শেষ নিচেই আছে। ”

মেঘ মুচকি হেসে বললো,” চলো তাহলে। ”

মিমি হাসান আর আয়রা মেঘের সাথে গেলো কিন্তু প্রতীক হাসান বললো,” মা আমি একটু রোদের সাথে কথা বলে আসছি।”

মেঘ আর কিছু বললো না। মেঘ মিমি হাসানের সাথে নীল ইসলাম, মৌ ইসলাম আর প্রিন্সের আলাপ করিয়ে দিলো। কয়েক মিনিট পর প্রতীক হাসান আর রোদ এসে সবার সাথে বসল। মৌ ইসলাম একটু হেসে মিমি হাসান কে বললো,

–“ভাবি আপ্নার মেয়ে কিন্তু আমারও মেয়ে হুম? আপনার মেয়ে ভাগ হয়ে গেছে।”

কথাটা মৌ ইসলাম মজার ছলে বললেও মিমি হাসানের মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেলো। মনে হচ্ছে সত্যি যেনো মেঘ কে কেউ কেড়ে নিচ্ছে। মিমি হাসান মেঘের হাত শক্ত করে ধরলো। মেঘ উনার আচরণে আশ্চর্য হয়ে বললো,

–“মাম্মা কি হলো তোমার? ”

মৌ ইসলাম ব্যাপার টা বুঝতে পেরে বললো, “ভাবি আমি মজা করলাম। আপ্নার মেয়ে আপ্নার ই। আমি জানি সন্তানকে হারানোর কি যন্ত্রণা।”

মৌ ইসলামের মুখ মলিন হয়ে গেলো। মিমি হাসান নিজেকে স্বাভাবিক করে বললো, “সরি ভাবি। আসলে আমার মেয়েটার ব্যাপারে আমি খুবই ভয় পায়।”

সবাই একটু নীরবে হাসল আর আবারো সবাই গল্প করতে শুরু করলো। কিছুক্ষণ পর মৌ ইসলাম, নীল ইসলাম আর প্রিন্স ওদের বাড়ির উদ্দেশ্য রহনা হল। উনারা যাওয়ার পর প্রতীক হাসান আদিল চৌধুরী কে বললো,

–“বেয়ায় আজকে মেঘ কে আমরা নিয়ে যেতে পারি? বেশ কয়েকদিন হল আমরা মেয়েটা কে ছেড়ে আছি।”

আদিল চৌধুরী বললো, “এভাবে কেনো বলছেন বেয়ায়? মেঘ আমাদের বাড়ির বউ হওয়ার আগে আপনাদের মেয়ে তাই এভাবে অনুমতি নিবেন না। কিন্তু মেঘ ওখানে গেলে আমার বাড়িটা বেশ ফাঁকা ফাঁকা লাগবে।”

–” মেঘ না থেকে আমাদের বাড়ি ও খুব ফাঁকা লাগে। কিন্তু চিন্তা করবেন না বেশিদিন থাকবে না। আর আমার তো মনে হয় মেঘ ই বেশিদিন থাকতে পারবে না! ”

আদিল চৌধুরী অবাক হয়ে বললো,” কেনো কেনো? ”

প্রতীক হাসান রহস্যের হাসি দিয়ে বললো,” বেয়ায় এটা বলা যাবে না ক্রমশ প্রকাশ্য।”

উনাদের কথার মাঝেই মেঘ চিৎকার করতে করতে আসছে আর ধমক দিয়ে আদিল চৌধুরী কে কয়েকটা ওষুধ দিয়ে বললো,

–” বাবা আপনি এত ভুলো মনের কেনো বলবেন? ওষুধ কে খাবে? প্রেসার বেড়ে গেলে তখন কি হবে হ্যাঁ?”

আদিল চৌধুরী ওষুধ খেয়ে বললো,” তুমি আছো ই তো। ”

মেঘ প্রতীক হাসানের পাশে বসে বললো,” আমি নেই। আপনি তো আপনার বাড়ির অতিথি! হুট করে একদিন চলে যাব।”

আদিল চৌধুরীর মুখ মলিন হয়ে আসলো। মেঘ উনার মন ভালো করার জন্য হেসে উঠে বললো,

–” বাবা আজকে যেমন আমি পাপ্পা দের সাথে যাবো তখন কি করবেন? সেটা বলছি। ”

আদিল চৌধুরী হাফ ছেড়ে বললো, “ও তাই বল। তুমি চিন্তা করো না আমি দু একদিন মনে করে খেয়ে নিবো। ”

মেঘ উঠে রোজা চৌধুরীর কাছে গিয়ে অনুমতি নিলো। রোজা চৌধুরী আর মিমি হাসান গল্প করছিলো। মেঘ আর উনাদের বিরক্ত না করে চলে আসলো। অনেকক্ষণ রোদ কে দেখা যাচ্ছে না। এদিকে ওদিকে তাকিয়ে রোদ কে না দেখতে পেরে ঘরে যাওয়ার জন্য এক সিরি মারাতেই রোদ সামনে পড়লো। মেঘ রোদের দিকে তাকিয়ে আছে ।রোদ ভ্রু কুচকালো মেঘ মুখ বিষ করে রোদ কে ইশারা করলো। রোদ কিছু না বুঝে হাত নাড়িয়ে বললো,

–“কি?”

মেঘ মন খারাপ করে বললো,” চলুন আমার সাথে ঘরে, একটু কথা আছে ।”

“ও আচ্ছা।” বলে রোদ আর মেঘ ঘরের দিকে পা বাড়াল। ঘরে গিয়ে হুট করে মেঘ দরজা লাগিয়ে দিলো।
.

“দরজা লাগালে কেনো?” – রোদ অবাক হয়ে বললো। মেঘ রোদ কে বসিয়ে বললো,

–” আপনি পাপ্পা-মাম্মা কে মা – বাবা বললেন কেনো? আপনি তো আন্টি – আঙ্কেল বলে ডাকতেন।”

রোদ ভ্রু কুঁচকে বললো, “সে কথাও মনে আছে? বাবার বাড়িতে যাওয়ার চেয়ে এ কথা কেনো বললাম তা শোনা বেশি জরুরি বুঝি?”

–” হ্যাঁ তাই! কেনো বললেন বলুন?”

রোদ উঠে দাঁড়িয়ে মেঘের পায়ের কাছে বসে মেঘের দু হাত ধরে বললো,” আমার বাবা – মা যেমন তোমার থেকে বাবা – মা ডাক শুনে খুশি হোন তেমনই তোমার বাবা মারও তো ইচ্ছা হয় তার জামাই তাদের মা বাবা বলে ডাকবে। ভাবলাম আমরা দুজন দুজন কে না মানলেও তারা তো মানেন। আর তুমি আমার পরিবারের খুশির জন্য এখনও রয়ে গেছো তাই ভাবলাম আমারও কিছু তো করা দরকার।”

মেঘের মুখ কালো হয়ে গেলো। ও ভেবেছিল রোদ হয়তো ওকে মেনে নিতে শুরু করেছে কিন্তু ওর ধারণা ভুল হলো। রোদ তো কেবল ই কৃতজ্ঞতা থেকে ডেকেছে। মেঘ মন খারাপ করে উঠে দাঁড়িয়ে বললো,

–” ও..”

রোদ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকল। মেঘ ও চুপ করে আছে শুধু চোখ থেকে কয়েক ফোটা পানি পড়লো কিন্তু তা রোদ দেখতে পারেনি। রোদ নীরবতা ভেঙে বললো,

–” চুপ করে কেনো?”

মেঘ কান্না মাখা গলায় বললো, “কিছুনা।”

বলেই দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। রোদ ওর যাওয়ার পানে তাকিয়ে বললো,

–” কষ্ট পেলে মেঘ? এই কষ্ট টার মানেই কি তাহলে ভালোবাসা? ক্ষমা করে দিও আমায়। এইসব এখন আমাদের জন্য অনেক জরুরী।”

মেঘ কোনোমতেই একা যেতে চাইলো না তাই আয়রাও ওর সাথে গেলো। কিন্তু যাওয়ার আগে মেঘ আর রোদের সাথে একটাও কথা বলেনি।
_____________
আয়রা আর মেঘ বাগানে ঘুরছে। বাগানে পেয়ারা থেকে শুরু করে সব ফলের গাছ আর ফুলের গাছ রয়েছে। আয়রা বাগান ঘুরে দেখে বললো,

–” ভাবি বাগান টা অনেক সুন্দর। আচ্ছা ভাবি কে এই বাগান টা করেছে? আন্টি?”

মেঘ গাছ থেকে দুটো পেয়ারা পেড়ে একটা আয়রার হাতে দিয়ে বললো, “মাম্মা করেছে আর আমি ফুলের বাগান টা করেছি।”

আয়রা পেয়ারার দিকে তাকিয়ে বললো, “গাছ থেকে পারা পেয়ারা বেশ দেখতে তো? আচ্ছা ভাবি তোমাদের বাড়িতে আর কেউ নেই? ”

মেঘ আর আয়রা পেয়ারা খাচ্ছে। মেঘ মুখে হাসি টেনে বললো,” না ননদীনি আর কেউ নেই। পাপ্পা প্রায় সময়ে হাসপাতালে ব্যস্ত থাকে আর বাড়িতে আমি আর মাম্মা। ”

আয়রা আস্তে করে বললো, “ও! ভাবি দিহানের বাড়ি কোথায়? ”

মেঘ আয়রার দিকে তাকালো আর মনে মনে বললো,”তাহলে এই ব্যাপার।”

কিন্তু মুখে তা না বলে স্বাভাবিক ভাবে বললো,” দিহানের বাড়ি আমাদের বাড়ির পাশের বাড়ি ই। আমার বয়স যখন দশ বছর তখন থেকে আমরা এখানে থাকি। দিহানের মা অনেক ভালো জানতো। যাবে ওদের বাসায়? ”

আয়রা যেনো লজ্জা পাচ্ছে। মেঘ মুখ চেপে হেসে আয়রা কে সামান্য ধাক্কা দিয়ে বললো,” কি ব্যাপার আমার ননদীনি?”

বলে সামনে দিকে তাকাতেই দেখলো দিহান বাইক রেখে ওদের বাড়ির ভেতরে যাচ্ছে আর দু হাতে দুইটা ব্যাগ! মেঘ আয়রা কে বললো,

–” দেখেছ দিহান অনেক বছর বাঁচবে। ওর কথা বলতেই ও হাজির।”

আয়রা উতলা হয়ে উঠলো। মেঘ আর আয়রা বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে দেখলো দিহান ঘেমে একাকার। ফ্যানের নিচে বসে বাতাস খাচ্ছে। মেঘ একটু গলা খাকরি দিতেই দিহান ওদের দিকে তাকিয়ে হাসি দিয়ে বললো,

–“বাড়িতে এসে তো আমার কথা ভুলেই গেছিস! বাগানে গেছিলি আন্টি বললো তাই আগে বাতাস খেয়ে নিচ্ছি। আয় বস।”

মেঘের পেছনে আয়রা দাঁড়িয়ে আছে। মেঘ সরে গিয়ে আয়রাকে দেখিয়ে বললো, “দিহান আমি একা না কে এসেছে দেখ!”

দিহান তাকিয়ে আয়রা কে দেখলো। আয়রা কে দেখে দিহান ওর দিকে তাকিয়ে ই উঠে দাঁড়ালো। আয়রা অ্যাস কালারের থ্রি পিজ পড়েছে, দিহান ওর দিক থেকে চোখ সরাতেই পারছে না। আয়রা লজ্জায় নিচের দিকে তাকিয়ে আছে দু একবার চশমা ঠিক করছে। মেঘ ওদের পরিস্থিতি দেখে মৃদু হেসে বললো,

–“তোমরা কথা বলো আমি আসি!”

আয়রা মেঘের হাত ধরে বললো, “আমরা কি কথা বলব? তুমিও থাকো না তিনজন গল্প করি।”

–“আমি আর থাকি কেমন করে? মাম্মা একা রান্না করছে একটু হেল্প লাগবে নাকি শুনে আসি।”

মেঘ রান্না ঘরের দিকে পা বাড়াল। এ দিকে দিহান আস্তে করে বললো, “আয়রা বস।”

আয়রা দিহানের পাশে বসে লজ্জা মাখা কন্ঠে বললো,”কেমন আছেন আপনি? ”

আমি ভালো আছি,” তুমি কেমন আছো? ”

–“হুম ভালো আছি। ”

এর পর দুই মিনিট দুজনের মধ্যে নীরবতা কাজ করলো তারপর দুজন একসাথে কিছু একটা বলতে নিলো। দিহান মাথা চুলকে বললো,

–“আগে তুমি বল।”

আয়রা বললো, “আগে আপনি ই বলুন তারপর আমি।”

দিহান আয়রার দিকে তাকিয়ে বললো,” তোমাকে আজ খুব সুন্দর লাগছে আয়রা।”

কথাটি শুনে আয়রা দিহানের দিকে তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে নিলো। পুরো লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। আস্তে করে বললো, “ধন্যবাদ!”

দিহান স্বাভাবিক হয়ে বললো,” এখন তুমি কি বলতে চাইছিলে তা বল? ”

আয়রা দিহানের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়িয়ে বললো,”উত্তর যদি পাই তাহলেই বলব। ”

–” ঠিক আছে বল।”

–“আপনি যাকে ভালবাসেন তাঁকে বলেছেন আপ্নার মনের কথা?”

দিহান মৃদু হেসে বললো, “খুব শীঘ্রই বলবো। ”

আয়রা কোনো উত্তর দিলো না। এতক্ষণ মেঘ ওদের কথা শুনছিল রান্না ঘরের পাশে থেকে। রান্না ঘরে কোনো কাজ নেই তাই মিমি হাসান দিহানের জন্য শরবত বানিয়ে দিলো আর মেঘ তা নিয়ে আসছে। দিহান কিছু বলতে যাবে তার আগেই মেঘ গ্লাস সামনে ধরে বললো,

–” খেয়ে নে। ”

মেঘ কে দেখে দিহান বললো,” আয়রা এসেছে ওকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে যাস নি কেনো?”

মেঘ বসে বললো, “এলাম তো কিছুক্ষণ আগে। যাবো তো তোদের বাড়িতে চিন্তা করিস না।”

–“যাবো তো না। তুই এখনই আয়রা কে নিয়ে আয় আমি একটু আগে বাড়িতে যায় একটা কাজ আছে।”

–“ওকে যা। ”

দিহানের বাড়িতে আয়রা আর মেঘ ঘুরতে গেলো। আয়রার বাড়িটা খুব সুন্দর লেগেছে। দিহানের মায়ের সাথে অনেক গল্প করলো ওরা। আসার সময়ে দিহান আয়রা কে একটা বই দিলো আর বললো যাতে বই টা আয়রার বাড়িতে গিয়ে পড়ে। আয়রা বই প্রেমি আর সে বই যদি মনের মানুষ দেয় তাহলে তা নিতে আপত্তি থাকতে নেই মনে হয়।
_____________

রাত এগারো টা বাজে। আয়রা ঘুমিয়ে পড়েছে কিন্তু মেঘের চোখে বিন্দু মাত্র ঘুম আসছে না। আজ সারাদিন রোদের সাথে কথা বলেনি আর রোদ ও কল করেনি। মেঘের প্রচণ্ড মন খারাপ করছে মানুষ টা তাকে একটু তো ভালোবাসতে পারে! রোদ সারাদিন খেয়েছে কি না তাও জানে না জানতে খুব ইচ্ছা করছে। পরক্ষণেই অভিমানী কন্ঠে মেঘ একা একা বললো,

–“করব না কল উনি যা করে করুন।”

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো এগারো টা ত্রিশ বেজেছে। মন মানছে না আর। রোদ কে একবার কল করতেই রিসিভ করলো। মেঘ শান্ত গলায় বললো,

–“ঘুমান নি এখনো?”

–“না ঘুম আসছে না। তুমি ঘুমাও নি কেনো?”

–“এমনি। খেয়েছেন ঠিকভাবে সারাদিন? শরীর খারাপ নাকি? ”

রোদ একটু হেসে বললো, হ্যাঁ খেয়েছি আর ঠিক আছি আমি। কিন্তু আজ কি এমন হলো যে ঘুম পরীর ঘুম নেই? আর তুমি খেয়েছ? ”

মেঘের বলতে ইচ্ছা করছিলো সে রোদের জন্য ঘুমাতে পারছিল না। কিন্তু সে কথা বলতে মন যে সাই দিচ্ছে না। মেঘ আবারো বললো,

–“হ্যাঁ খেয়েছি। দিনে ঘুমিয়েছিলাম তাই ঘুম আসছে না। আপনার কেনো ঘুম আসছে না জানতে পারি?”

–” অবশ্যই জানতে পারো। আমি একজনের কথা ভাবছিলাম। ”

মেঘের মন খুশিতে ভোরে গেলো ॥মেঘ ভাবলো রোদ হয়তো ওর কথায় ভাবছে। অনেক খুশি নিয়ে বললো,

–“কার কথা?”

রোদ আবেগ মিশ্রিত কন্ঠে বললো,” পায়েলের কথা! মানে আমি যাঁকে ভালোবাসি তার কথা ভাবছি। ”

পায়েল নাম শুনে মেঘের মনের মাঝে কেমন যেনো হয়ে উঠলো। চোখে নোনা জল চলে আসলো। কান্না লুকানোর চেষ্টা করে বললো,

–“ও! তার নাম তাহলে পায়েল!”

–“হুম..”

মেঘ জানালার পাশে গিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ পর বললো,” পায়েল নাম টা আমার খুব পরিচিত জানেন তো! ”

–“কিভাবে? তোমার কারো নাম পায়েল?”

মেঘ চোখের জল মুছে বললো,” না! রাখি ঘুম পাচ্ছে।”

–“ওকে। শুভ রাত্রি।”

মেঘ ফোন রেখে কান্না করছে। কিছুক্ষণ পর একা একা বললো, “জানি না কে আপ্নার পায়েল কিন্তু আমি জানতে চাই। আপনাকে আমার পাওয়া হবে না কিন্তু আমার নামে কাউকে আপনি ভালবাসেন এইটাই আমার কাছে অনেক বড় পাওনা। আমারও আরেক নাম যে পায়েল! কিন্তু জানিনা কে রেখেছিল নাম টা! কেউ আমাকে এ নামে চিনেও না আর ডাকেও না কিন্তু ছোট বেলা থেকে আমি জানি এইটা আমার আরেক নাম। পাপ্পা কেউ জিজ্ঞেস করেছিলাম উনি বলেছিলেন আমাকে নাকি ছোট বেলায় পায়েল বলে ডাকত তাই আমার এই নাম টা মনে পড়ে এতো। ”

পুরো রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিলো মেঘ। সকাল বেলা ব্রেক ফাস্ট করেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হল। মিমি হাসান আর প্রতীক হাসান অনেক জোর করলো কিন্তু তবুও কোনো কথায় শুনল না। বললো পরে আবার আসবে কিন্তু এখন ওর বাড়িতে যাওয়া খুব জরুরী। প্রতীক হাসান কেনো যেনো জোর করলো না বেশি।
_______________
দশ টার সময় মেঘ আর আয়রা বাড়িতে আসলো। এত তাড়াতাড়ি বাড়িতে আসা দেখে রোজা চৌধুরী বললো,

–“আজকেই চলে আসলি মা?”

আয়রা বললো, “আম্মু ভাবি তো জোর করে চলে আসলো। কি যেনো কাজ আছে বললো।”

মেঘ বললো, “মা আপনাদের ছেড়ে ভালো লাগছিল না। আর আমার প্রাক্টিকাল নোট গুলো ও তৈরী করতে হবে তাই চলে আসলাম। বাবা কোথায়? বাড়ির সবাই কোথায়?”

রোজা চৌধুরী বললো, “তোমার বাবা আর চাচ্চু অফিসে গেছে। রোদ সেই ভোর বেলা বেরিয়ে গেছে। আর ইহু আর ইশা মনে হয় টিভি দেখছে। ”

মেঘ একটু হেসে বললো,” আপনি একা বসে বোর হচ্ছিলেন মনে হয়। আমরা আসায় তো ভালোই হলো। ”

–” তা অবশ্য। আচ্ছা যাও আগে ফ্রেশ হয়ে আসো। ”

–” আচ্ছা মা।”
_____________
মেঘ ফ্রেশ হয়ে এসে রোজা চৌধুরীর থেকে রোদের আর এ বাড়ির সবার গল্প শুনছিল।আয়রাও ওদের সঙ্গে আছে। কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে আয়রা ঘরে চলে গেলো। আর এদিকে মেঘের কাছে ভিডিও কল করলো মৌ ইসলাম আর প্রিন্স। কল রিসিভ করতেই প্রিন্স আর মৌ ইসলাম হাতাহাতি শুরু করলো কে আগে কথা বলবে তা নিয়ে। মেঘ আর রোজা চৌধুরী ওদের কান্ড দেখে হাসছে। মৌ ইসলাম বললো,

–“মেঘ আগে আমার সাথে কথা বলবি তো?”

প্রিন্স চিৎকার করে বলছে, “না আপু আগে আমি তারপর মাম্মা।”

মেঘ হাসছে। বললো,” থাম দুজন। সবাই একসাথে কথা বলব তাহলেই তো হল।”

মৌ ইসলাম মাথা নাড়িয়ে বললো, “মেনে নিলাম। আগে বল বাসায় কখন আসলি? এত তাড়াতাড়ি চলে আসলি যে?”

–“মামনি এমনিতে ভালো লাগছিল না তাই চলে এলাম।”

প্রিন্স বললো, “আপু ভালো হয়েছে এখন আমাদের বাড়িতে চলে আসো।”

মৌ ইসলাম প্রিন্স কে সরিয়ে দিয়ে বললো,” আগে আমায় বলতে দে।”

বলে বললো,” রোজা তুই কই?”

রোজা চৌধুরী বললো,” হ্যাঁ বল এখানেই আছি।”

–‘শোন তোরা সবাই আমাদের বাড়িতে আজকে আসবি। আজ আস্তে পারবি তো?’

রোজা চৌধুরী একটু ভেবে বললো,” আজ না রে। রোদের বাবার আজকে importam মিটিং আছে আর রোদও নাকি আজ রাতের আগে ফিরবে না বলে গেছে।”

মৌ ইসলাম মুখ বাঁকা করে বললো,” তোর সমস্যা তো লেগেই থাকে সেই ছোট থেকে। তুই সর এখন কাল আসবি সবাই কে নিয়ে। মেঘ কে দে।”

–“এখন তো আমি তোর কেউ না। নে কথা বল।”

রোজা চৌধুরী মেঘ কে ফোনে দিলো। মৌ ইসলাম বললো,

–” হিংসুটে তোমার শাশুড়ি খুব বুঝলে। কিন্তু তাই বলে ভেব না খারাপ! বেস্ট ফ্রেন্ড তো আমার তাই আমাকে নিয়ে হিংসুটে।”

মেঘ হেসে বললো,” হুম মামনি জানি তো।”
_______________

আয়রা ঘরে গিয়ে বই টা দেখছে। বই টা ভালো করে খেয়াল করে দেখলো বই টি হুমায়ুন আহমেদের ‘বৃষ্টি বিলাস’ ! এই বই কি আয়রার খুব পছন্দের। অনেক উল্লাস নিয়ে বই টি নিয়ে খুলে কয়েক পৃষ্ঠা পড়তেই বই এর ভেতরে একটা কাগজ দেখতে পেলো। কাগজ টি নীল রঙের আর উপরে লেখা আছে “নীল সুখ”! আয়রা কাগজ টি হাতে নিয়ে খুলতে চেয়েও খুলছে না। হাত কাঁপছে, কি আছে এর ভেতরে? সে ভাবনা নাড়া দিচ্ছে বারবার। তবুও সাহসা মনে কাগজ টি খুলে ফেললো আয়রা। কাগজ নয় এইটা এইটা একটা চিঠি কিন্তু কি লেখা আছে না পড়তে ই আয়রার চোখ যেনো অন্ধকার হয়ে আসছে। তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে এক গ্লাস পানি খেয়ে বসলো আর চিঠি টি পড়তে শুরু করলো।

.
.
চলবে……..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে