ভালোবাসিবো খুব যতনে পর্ব-২৪+২৫

0
511

#ভালোবাসিবো_খুব_যতনে
#Ayrah_Rahman
#part_24

__________________

” তাহরিম কাজ টা কি তুই ঠিক করলি ? কখনো যদি পূর্ণা জানতে পারে এই সকল কিছুর মাস্টার মাইন্ড তুই, সব কিছু র পিছনে তোর হাত তাহলে ক্ষমা করতে পারবে তো তোকে ! ”

রুদ্রের কথায় খানিকটা নড়েচড়ে দাঁড়ালো তাহরিম , শুভ্র রঙের টি শার্ট গায়ে ধুসর রঙের টাউজার পরে ছাদের এক কোনে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে মুখ করে বুকের উপর দু হাত গুজে এক মনে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলো সে , হঠাৎ পিছন থেকে রুদ্রের কন্ঠ শুনতে পেয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকালো,

শুভ্র রঙের টি শার্ট আর ব্ল্যাক টাউজার পরে পকেটে হাত দিয়ে ভ্রু কুচকে তাহরিমের দিকেই তাকিয়ে আছে,

তাহরিম হাসলো তবে কোন উত্তর করলো না , তাহরিমের কাছ থেকে আশানুরূপ উত্তর না পেয়ে খানিকটা এগিয়ে গেলো রুদ্র , ছাদের রেলিঙের ভর দিয়ে উঠে বসলো রেলিঙের উপর

” কি হয়েছে তোর ? ”

তাহরিম সামনের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেই ছোট করে বলল ,

” বিকেলের আকাশ টা খুব সুন্দর তাই না রুদ্র ? ”

” তুই কি কথা ঘুরাচ্ছিস তাহরিম ? জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে তুই আমাকে কি উত্তর দিস হে ? ”

” কিছু না ”

” পূর্ণ কোথায় ? ”

” ঘুমাচ্ছে ”

কিছু ক্ষন নিরব থেকে মনে মনে প্রশ্নের প্যাটার্ন সাজালো রুদ্র , প্রশ্ন সাজানো শেষে গলা ঝেড়ে বলল ,

” তোদের বিয়ের খবর টা তুই ই ছড়িয়েছিস তাই না ? ”

” হুম ”

তাহরিমের সাবলীল উত্তর , রুদ্র হয়তো এত সহজে স্বীকারুক্তি আশা করে নি তাই কিছু টা থম মেরে বসে থেকে বলল ,

” আমার তো এখন মনে হচ্ছে তোদের বিয়ের কাজ টা ও প্রি প্ল্যানিং ”

তাহরিম আড় চোখে রুদ্রের দিকে তাকালো , রুদ্রের উৎসুক দৃষ্টি তাহরিমের চোখ এড়ালো না , সে ভ্রু বাকিয়ে হাসলো ,

” তোর কি মনে হয় , কাজ টা কি আমার? ”

” হুম , হান্ড্রেড পার্সেন্ট ”

” তাহলে ধরতেই পারিস কাজ টা আমার ”

” কিন্তু কেন? ”

” তুই ভালো করে ই জানিস রুদ্র, তাহরিম তালুকদার কারণ ছাড়া কোন কাজ করে না আমি যা করেছি তার পিছনে অবশ্যই একটা কারণ আছে ”

” হে সেটাই তো জানতো চাচ্ছি , কি কারণে তুই এ কাজ করেছিস ”

” প্রথমত পূর্ণার সেফটি , দ্বিতীয়ত ভালোবাসা ”

রুদ্রর ভ্রু কুচকালো ,

” তুই কি সিউর তুই পূর্ণ কে ভালোবাসিস ? নাকি কয়েকদিন পর তোর এই ভালোবাসা হাওয়া হয়ে যাবে ! ”

” যদি কাউকে দেখার পর হৃদ স্পন্দন খনিকের জন্য থমকে যায় , তাকে দেখতে না পেয়ে যদি ধীরে ধীরে শ্বাসকষ্ট রোগ টা দিন কে দিন বাড়তে থাকে , মাঝ রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যদি তাকে দেখার তীব্র বাসনা জাগে , চোখের ঘুম গুলো অকাতরে বিলিন হয়ে যায় , তার কথা চিন্তা করে যদি একটা নির্ঘুম রাত অবলীলায় পার করা যায়, এই লক্ষন গুলো কে যদি ভালোবাসা মনে হয় তোর তাহলে আমিও বলব ” আই এম ইন লাভ ”

” বাহ্ বেশ বলেছিস তো, এখন তো আমার মনে হচ্ছে তোর মন্ত্রীগীরি ছেড়ে কবি হওয়া দরকার ”

তাহরিম হাসে , রুদ্র লাফ দিয়ে রেলিঙ থেকে নেমে তাহরিমের দিকে কিছু ক্ষন তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে হেসে বলল ,

” তো বিয়ে তো করেই নিলি বাসর টা সাজানোর ব্যবস্থা করব নাকি ভাইজান ? ”

তাহরিম ঘাড় বেকিয়ে আড় চোখে রুদ্রের দিকে তাকালো ,

” আমার বাসর নিয়ে তোর এতো মাথা ব্যথা কেন , নিজে তো এখন বুড়ো হয়ে যাচ্ছিস বিয়ে টিয়ে কিছু করছিস না , আবার কথা বলিস , নির্লজ্জ ছেলে ”

রুদ্র অবাক হলো , ভীষণ রকম অবাক হলো ,

” তুই কাকে নির্লজ্জ বলছিস তাহরিম ? , নির্লজ্জের জন্য যদি কেউ অস্কার পেতো তাহলে নিঃসন্দেহে প্রাইজ টা তুই ই পেতি ”

” হুম সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে নিচে চল ”

বলেই গটগট পায়ে নিচে নেমে এলো তাহরিম , রুদ্র তাহরিম এর চলে আসার দিকে তাকিয়ে ঠোঁট উল্টে দাঁড়িয়ে আছে , তাহরিমের কোন কারণে কি মন খারাপ ? নাকি কোন বিষয় নিয়ে চিন্তিত ? আর নাকি আমাকে এভয়েড করলো !

” এই সন্ধ্যায় ছাদে একা একা দাঁড়িয়ে থাকা ভালো না, পেত্নি ধরে , তাড়াতাড়ি নিচে নেমে আয় রুদ্র ”

নিচ থেকে তাহরিমের কন্ঠ শুনতে পেয়ে দ্রুত পা চালালো রুদ্র , এর ব্যবহার দেখে মনে হয় এর সাথে সবসময় ই আমি আঠার মতো লেগে থাকি মধ্যে দিয়ে যে ছ ছটা বছর আমরা আলাদা ছিলাম , মনে হয় ভুলে গেছে ! এই ছেলের থেকে যে আমি বয়সে কত বড় সেটা বেমালুম ভুলে যায় , দু আনার সম্মান ও দেয় না বেদ্দপ ছেলে

সেই দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে এসে বিছানায় গা হেলিয়ে দেওয়া মাত্র ই এক রাশ ঘুম এসে চোখে ভর করেছিলো , চোখ দুটো বন্ধ হতেই আর কিছু টের পায় নি ,

ঘুম ভাঙতে ই কানে ভেসে এলো আজানের ধ্বনি , ভ্রু কুচকে বোঝার চেষ্টা করলাম এটা কোন ওয়াক্তের আজান , বাইরে অনেক টা অন্ধকার হয়ে গেছে , মাগরিবের আজান !

শুয়া থেকে উঠে বসলাম , এমন সময় দরজা ঠেলে রুমে প্রবেশ করতে করতে তাহরিম বলল ,

” গুড মর্নিং ”

” গুড ম.. ” বলতে গিয়েও আটকে গেলাম , ভ্রু কুচকে তাকালাম উনার দিকে ,

” এই ভর সন্ধ্যা বেলা আপনার কোন এঙ্গেল এ মর্নিং মনে হচ্ছে ? ”

উনি রিডিং টেবিলে ধাক্কা দিয়ে দাঁড়াতে দাড়াতে বললেন ,

” তুমি যা ঘুম দিয়েছিলে , কেউ রাতের বেলা ও এত ঘুম ঘুমায় না ”

” তোওও আপনার এতে সমস্যা কি? , আমি কুম্ভকর্ণের মতো ছ মাস ঘুমালেও আমার আফসোস মিটবে না সেখানে এটা তো কম সময় , সে যায় হোক আপনি এই রুমে কি করেন ? ”

” হ্যা হ্যা সেটাই তুমি তো আবার কুম্ভকর্ণের জমজ বোন , মিল তো থাকবেই , আর আমার রুমে আমি আসব না তো কে আসবে শুনি ? ”

আমি চোখ বড়ো বড়ো করে বললাম ,

” এটা আপনার রুম? ”

” তা নয়তো কি ! আমার বাড়িতে আমার রুম থাকবে এটাই তে স্বাভাবিক ”

আমি কিছু একটা চিন্তা করে বললাম ,

” কিন্তু তানজিম যে আমাকে এই রুমে নিয়ে এসে বলল এটা আমার রুম ! ”

আমার কথা শুনে উনি ঠোঁট টিপে হেসে বললেন ,

” খারাপ কি বলেছে ? ভালোই তো বলল ! যেহেতু আমি তোমাকে বিয়ে করেছি সেহেতু তুমি আমার বিয়ে করা বউ , আর বউ তার স্বামীর ঘরে থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক ”

আমি কথাটা শুনে কিছুক্ষন চিন্তা করে বললাম ,

” আপনি কোথায় থাকবেন এখন ? ”

” কেন আমার রুমে ”

” তাহলে আমি কোথায় থাকব? ”

” কেন এই রুমে ! ”

আমি কিছু বললাম না , আমার মাথায় চলছে অন্য চিন্তা , তাই কিছু না বলে ফ্রেস হতে চলে গেলাম ,

ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে দেখি রুমে কেউ নেই , তাই কাজ না থাকায় এই রুম টাই ভালো ভাবে পর্যবেক্ষন করেছিলাম ,

রুমটা বেশ অনেক টা বড়, রুমের একপাশে সোফা তার পাশেই একটা ডিভান, একটা রিডিং টেবিল সেখানে বেশ অনেক গুলো মোটা মোটা ইংরেজি বই হয়তো মন্ত্রী সাহেব পড়েন , একটা ড্রেসিং টেবিল আর আলমারি , বুকশেল্ফ । আমি ধীরে ধীরে বুকশেল্ফ এর সামনে গেলাম।

বুকশেল্ফ এর বই গুলো নজরে আসতেই নাক মুখ কুচকে ফেললাম,

এহহে কি আজাইরা মোটা মোটা বইয়ে ভরা এই বুক শেলফ , ময়না তদন্ত করেও মনে হয় বাংলা ভাষা কিংবা উপন্যাস টাইপ কিছু পাওয়া যাবে না , অদ্ভুত , মানুষ এমন রসকসহীন বই কেমনে পড়ে, হাউউ!

” উপর থেকে বিবেচনা করলে সবসময় যে ঠিক হবে এমন তো কোন কথা নেই মিস পূর্ণ ! ”

চলবে …

#ভালোবাসিবো_খুব_যতনে
#Ayrah_Rahman
#part_25

_____________________

” তাই তো বলি আপনি এমন নিরামিষ কেন ? এসব ছাইপাঁশ মোটা মোটা ইংরেজি বই পড়লে আমিষ টা আসবে কোথা থেকে , তাও যদি হতো ইংরেজি সাহিত্যের ! তাও তো না ”

তাহরিম ভ্রু কুঁচকালো , ভীষণ অবাক ও হলো অতঃপর বাঁকা হেসে এগিয়ে এলো বুক শেলফ এর দিকে , আমি তখন ও আপন মনে বই গুলো দেখছি , যদি ভাগ্য ভালো থাকে তাহলে একটা বই পেতাম পড়ার মতো , ছোট বেলা থেকে ই আমার বইয়ের প্রতি বেশ ভালো লাগা কাজ করে তবে পাঠ্যপুস্তক নয় , উপন্যাস টাইপ বই পড়তে বরাবর ই আমার ভালো লাগে ,

উনাকে কোন বাংলা উপন্যাসের বই আছে নাকি তা জিজ্ঞেস করার জন্য পিছনে ঘুরে কিছু বলব তার আগেই খেয়াল করলাম উনি আমার ভীষণ কাছে , আমাকে বুক শেলফ এর সাথে চেপে ধরে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে ,

আমার ভীষণ রাগ হলো , নাক ফুলিয়ে ফোসফাস করতে করতে বললাম ,

” এটা কি হলো ? ”

উনি কিছু না জানার ভান করে আমাকেই উল্টো প্রশ্ন করলো,

” কি হলো এটা ? ”

” আপনি কি আমাকে অকালে হার্ট অ্যাটাক করিয়ে মেরে ফেলতে চান ? এভাবে যখন তখন গা ঘেঁষাঘেষির মানে কি ? এভাবে চেপে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন কেন হে? ”

উনি চোখ ছোট ছোট করে আমার দিকে তাকিয়ে বলল ,

” তুমি না বললে আমি নিরামিষ, তাহলে নিরামিষ মানুষ কে এতো ভয় পাচ্ছো কেন ? আমি কোথায় তোমার গা ঘেঁষা ঘেঁষি করলাম ? তুমি ই না উল্টো আমার জায়গা দখল করে বসে আছো ”

” হ্যা তো নিরামিষ ই তো , নিরামিষ না হলে কি কেউ এমন উদ্ভট বই পড়ে! আর আমি আপনার জায়গা দখল করেছি মানে কি হে ? আমাকে কি মনে হয় আপনার ? ”

” এটা কার রুম ? ”

” কেন আপনার ”

” তুমি কোথায় দাঁড়িয়ে আছো? ”

” রুমেই তো ”

” তাহলে কি বুঝলে , আমার রুমে তুমি দাঁড়িয়ে আছো, তার মানে তুমি আমার রুমের জায়গা দখল করো নি বলছো ? ”

আমি ভ্রু কুচকে কিছু বলতে নিবো তার আগেই কেউ ডাকতে ডাকতে রুমের ভেতরে ঢুকলো ,

” ভাবিজান ওও ভাবিজান ঘরে আছো নি ” বলেই সামনের দিকে তাকিয়ে আমাদের এভাবে দেখে দুই হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করতে করতে বলল ,

” সরি সরি সরিইইই , আমি বোধ হয় ভুল টাইমে এন্ট্রি নিয়েছি , যা হোক ভাইয়া কুটনা বুড়ি থুক্কু বড়ো চাচি এসেছে আর সাথে উনার চামচা না মানে তার মেয়ে নাতাশা আপু আসছে , আম্মু তোমাকে নিচে ডাকছে ”

বলেই চলে যেতে নিলে আমি পিছনে থেকে ডাক দিলাম , এতক্ষণে উনি আমাকে ছেড়ে দুরে সরে দাঁড়ালো ,

” তানজু দাড়াও তো কথা আছে ”

তানজিম পিছনে ঘুরে দাড়ালো ,

বলেই উনার দিকে তাকালাম , ভ্রু বেকিয়ে বললাম ,

” কি হলো আপনি এখানো দাঁড়িয়ে আছেন কেন ? আপনাকে না নিচে ডাকছে যান না কেন? ”

” কোন ভাবে কি তুমি আমাকে তাড়িয়ে দিতে চাচ্ছো না কি পূর্ণ ? ”

উনার কথা শুনে তানজিম লাফ দিয়ে উঠে আমার কাছে এসে বলল ,

‘ হে হে ভাই , তোমাকে তাড়িয়ে দিচ্ছে তাও যাচ্ছো না কেন ? ইসস কি লজ্জা কি লজ্জা ! ‘

বলেই দু হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললো , আমি মুখ টিপে হাসলাম , উনি আমার দিকে চোখ রাঙিয়ে গটগট পায়ে রুম থেকে চলে গেলেন ,

উনি চলে যেতেই তানজিম মুখে হাত রেখেই চোখ থেকে দু আঙুল ফাঁক করে আশে পাশে তাকিয়ে দেখলো তাহরিম আছে না কি ,

অতঃপর মুখ থেকে হাত সরিয়ে আমার দিকে তাকালো, দুজন ই খিল খিল করে হেসে উঠলাম ,

” বাহ্ বেশ দিয়েছো তো ভাবিজান , আর শুনো তোমাকে যা বলতে আসলাম ”

আমি ওর গাল টেনে বললাম ,

” হুম বলো শুনছি ”

” ওই যে বললাম না নিচে কুটনা বুড়ি আসছে ওনি আমার বড় চাচি আর তোমার সতিন না মানে নাতাশা বাতাসা থেকে দুরে থাকবা , সব সময় মানুষের খুঁত ধরতে ব্যস্ত থাকে ”

আমি মুচকি হেসে বিছানায় বসতে বসতে বললাম ,

” ও নিয়ে তুমি ভেবো না ভাইজান , আমি ঠিক সামলে নেবো ”

তানজিম আমার পাশে ধপ করে বসে বলল,

” আরে ভাবি তুমি এতো হালকা ভাবে নিও না , তোমার উপর তো ওই কুটনা বুড়ির আলাদা নজর আছে , তোমাকে অপমান করতে এক বিন্দু ও ডিসকাউন্ট দিবে না ”

” কেন কেন ? ”

” আরে বুঝলে না! চাচি চেয়েছিলো ওই নাতাশা বাতাসা রে এই তালুকদার বাড়ির বড় বউ করতে কিন্তু ভাইয়ার তো এক কথা সে ওই ঢঙ্গি কে বিয়ে করবে না , আর চাচি ও ছাড়বার পাত্রী না , এখন যখন শুনছে ভাইয়া বিয়ে করে ফেলছে অমনি চলে এলো কুটনামি করতে , এক্ষুনি তোমার ডাক পড়বে দেইখো ”

” ওকে দেখা যাক , আজ পর্যন্ত পূর্ণা কে অপমান করে কেউ পার পায় নি আজও পাবে না , দেখো কি হয় ”

ওমনি ফুল এসে আমায় বলল

” ভাবিজান খালাম্মা আপনারে নিচে যাইতে কইছে ”

” আচ্ছা ফুল তুমি যাও আমি আসছি ”

ফুল মাথা নাড়িয়ে চলে গেলো ,

” আচ্ছা ভাবি তুমি ফুলকলি রে শুধু ফুল ডাকো কেন? ”
” ফুল নাম টা আমার ভালো লাগে তাই ডাকি ”

আমি উঠে দাড়ালাম , ওরনা টা ভালো ভাবে মাথায় দিয়ে নিচে নেমে এলাম , আমি পিছনে পিছনে তানজিম ,

নিচে নামতেই চোখে পড়লো ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে থাকা একজন মহিলার উপর , গড়ন তার হালকা পাতলা, গায়ের রং কালো না হলেও বেশ একটু চাপা , চুল গুলো স্ট্রেইট করা , বুঝলাম বয়স হলেও মহিলার মনের রঙ এখনো যায় নি, না হলে এই বুড়ো বয়সে কেউ ভ্রু প্লাক , চুল স্ট্রেইট করে নাকি ! যা হোক আমি তার সামনে গিয়ে লম্বা একটা সালাম দিলাম ,

” আসসালামু আলাইকুম চাচি আম্মা ”

উনি আমার দিকে তাকিয়ে নাক কুঁচকে বললেন ,

” ওয়ালাইকুম সালাম , তুমি আমাকে চাচি আম্মা ডাকছো কেন? এসব খ্যাত সম্বোধন প্লিজ আমাকে করবে না বুঝতে পেরেছো ? কল মি আন্টি ”

উনার কথা শুনে আমি বিরবির করে বললাম ,

” ভাগ্যিস আপু ডাকতে কয় নায় ”

কথা টা বলেই বেক্কেল মার্কা একটা হাসি দিলাম, আমার পাশে তানজিম দাঁড়িয়ে থাকায় আমার বিরবির করা কথা গুলো ও স্পষ্ট শুনতে পেলো , উল্টো দিকে ঘুরে হাসি আটকানোর চেষ্টায় আছে সে ,

আমি এবার ওই ঢঙ্গি আন্টির পাশে বসে থাকা তার মেয়ের দিকে তাকালাম ওই নাতাশা না বাতাসা ,

মিনিমাম কয়েক বস্তা আটা ময়দা মেখে আসছে , আটা ময়দার নিচে চাপা পরে আছে চেহারা , যেমন মা তার তেমন মেয়ে , যা হোক এসব চিন্তা করে আমার লাভ নাই ,

মনে মনে কথা গুলো চিন্তা করে ই এক সাইডে সরে গেলাম , আমার পাশে এসে দাড়ালো তানজিম ,

তানজিমের মা আই মিন আমার বর্তমান শাশুড়ী মা বসে ওদের সাথে কথা বলছে তাহরিম তালুকদার তো এই পৃথিবীতে ই নাই , এক পাশে সোফায় বসে মোবাইলে গেইম খেলায় ব্যস্ত ,

তানজিম আমার কানে ফিসফিস করে বলল ,

” ভাবিজান দেখছো ওই কুটনা বুড়ি টা তোমাকে কিভাবে স্ক্যান করছে , মানে কি বুঝতে পারছো? ”

আমিও মজা করে ফিসফিস করে বললাম ,

” উহুম বুঝলাম না তো , মানে কি? ”

” মানে তোমার খুঁত ধরার চেষ্টা করছে , দেইখো একটা না একটা খুঁত তো বের করবেই ”

আমি মুচকি হেসে মজা করে বললাম ,

” আমি মানুষ , তাই আমি কখনোই নিখুঁত হতে পারব না , তাহলে চলো আমরা ও উনার খুঁত ধরার চেষ্টা করি , যখন উনি বলবে তখন আমি ও বলব , আইডিয়া টা কেমন দেবর জি ? ”

আমার কথা শুনে তানজিন দাঁত কেলিয়ে হেসে বলল,

” ঝাক্কাস ভাবি জান , Let’s Start ”

বলেই ও মুখ টিপে হাসলো সাথে আমিও , আমি মুচকি হেসে সামনে তাকাতেই দেখি তাহরিম তালুকদার আমাদের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে হয়তো কিছু চিন্তা করছে ,

Tahrim be like : পুরান পাগলের ভাত নাই নতুন পাগলের আমদানি !

চলবে …

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে