প্রেমের পাঁচফোড়ন ২ পর্ব-৫+৬

0
2095

প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#পর্ব_৫
#Writer_Afnan_Lara
🌸
এই এই গান শুরু হয়ে গেছে মনে হচ্ছে,দৌড় দে
.
রুপা আহানার হাত ধরে দৌড় দিলো
দুজনে কনসার্টের মাঝখানে চলে আসছে দৌড়াতে দৌড়াতে
আহানা মাথা উঁচু করে তাকালো সামনের দিকে,শান্তকে দেখে চোখ কপালে তুলে ফেললো সে
চোখটা ডলে আবারও তাকালো
নাহহহহ চোখ তো ঠিক আছে!
তাহলে এটা সেই লোকটা!আবার গানও পারে
.
কিরে?জোস না?
.
কচুর গানের মতন লাগে
.
কচুর গান মানে?
.
মানে প্রতি লাইনের সুরে আমার হাত পা চুলকাচ্ছে তাই এটা কচুর গান গাইতেছে লোকটা
যে মেইন শিল্পী তার কন্ঠেই ভাল্লাগছে,এই লোকটা গানকে কচু বানাই দিয়েছে
আমার তাই হাত পা চুলকাচ্ছে
.
ধুর এসব কি বলিস,কি সুন্দর লাগছে উনার গলায়,আহ শান্ত!!!বাই দ্যা ওয়ে নওশাদ কোথায়!আজ মিট করেই যাবো তার সাথে
ব্র্যান্ডেড লিপস্টিক দিয়ে আসছি শুধুমাত্র নওশাদের সাথে কথা বলবো বলে,তবে আগে শান্তর সাথে কথা বলার ট্রাই করবো
.
আহানা মুখ বাঁকিয়ে পিছন ফিরে চলে যেতে নিতেই সবার ধাক্কা ধাক্কিতে আবারও আগের জায়গায় চলে আসলো
বিরক্তি নিয়ে সে এদিক ওদিক তাকিয়ে যাচ্ছে,শান্ত গান শেষ করে দর্শক সবার দিকে তাকালো ভালো করে
তাদের মাঝে একজনকে সে চিনতে পারলো
প্রথম থেকে ৩টা সারির পরের সারি অর্থাৎ ৪র্থ সারিতে আহানা দাঁড়িয়ে আছে
মুখ বাঁকিয়ে,তার চোখ ও শান্তর দিকে
শান্ত সেদিকে চেয়ে ব্রু কুঁচকে মাইকটা হাতে নিলো
.
হ্যালো এব্রিওয়ান!!
আমি আজকে আপনাদের সাথে একটা কথা শেয়ার করতে চাই,আজ এই কনসার্টে আমার হেটার্স ও এসেছে,তাও আমার গান শুনার জন্য,থ্যাংকস টু হার!
.
সবাই চিল্লাই বলতেছে সে কে!
.
আহানা ঢোক গিলে চোরের মত এদিক ওদিক তাকাচ্ছে,কারন কথাটা তার গায়েই লাগছে
শান্ত মুচকি হেসে স্টেজ থেকে নেমে চলে গেলো
.
বেয়াদ্দপ একটা!!আর একটুর জন্য গণধোলায় খেতাম আমি
.
এই আহানা চল না প্লিস!প্লিস!
শান্ত আর নওশাদের সাথে কথা বলবো একটু প্লিস চল না
.
আমি কেন যাবো?তুই যা
.
আমি একা গেলে কেমন দেখায় প্লিস আয় না
.
আহানা এক শর্তে রাজি হলো,শান্তর সাথে রুপা যখন দেখা করবে তখন আহানা রুপার সাথে যাবে না
রুপা তাই রাজি হলো
নওশাদ আর রিয়াজ ভিডিওতে ফোকাস করতেছে,এখন অাপলোড করবে
.
এক্সকিউজ মি🙈আপনি কি নওশাদ শেখ?
.
ইয়েস!
.
আমি রুপা রহমান,আপনার সাথে দেখা করার অনেক ইচ্ছা ছিল আমাদের!!প্লিস একটা পিক তুলতে পারি আপনার সাথে?
.
নওশাদ হেসে হাতের ক্যামেরাটা রিয়াজের হাতে দিয়ে ছবি তুলার জন্য পকেট থেকে ফোন বের করতেই ওর চোখ গেলো আহানার দিকে,দূরে সে দাঁড়িয়ে আছে
তারপর রিয়াজের হাত ধরে দূরে নিয়ে গিয়ে বললো এটা “সেই মেয়েটা না?”
.
রিয়াজ মাথা বাঁকিয়ে আহানার দিকে তাকালো,আহানা দূরের একটা পিলারের সাথে লেগে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে,পরনে ঘাড়ো নীল রঙের জামা,ওড়নাটা গলায় একপাশে ঝুলিয়ে চুলগুলো সামনে দিয়ে রেখেছে আর হাতে একটা ব্যাগ
.
তুই মেয়েটার ভালো করে একটা ছবি তুলে নে,শান্তকে হাতে রাখতে হলে এই পিকগুলো কাজে লাগবে আমাদের
.
ঠিক বলেছিস
.
আচ্ছা মিস রুপা,ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড আমরা কি এখানে কফি খেতে যেতে পারি,5th ফ্লোরে?
.
ওয়াও তাই!!!
.
আসুন,আপনার বান্ধুবীকেও বলুন আসতে
রুপা এক দৌড়ে আহানার হাত ধরে বললো আসতে
.
ঐ লোকটা নাই তো?
.
না কোথাও তো দেখলাম না,তুই চল
.
ওকে
.
আহানা যমুনা ফিউচার পার্কের 5th ফ্লোরটা ঘুরে ঘুরে দেখতেছে
রুপা গালে হাত দিয়ে নওশাদকেই দেখে যাচ্ছে,আর রিয়াজ লুকিয়ে আহানার ছবি তুলতেছে
.
আহানা এদিকে আয়,কফি এসে গেছে
.
আহানা এসে বসতেই দূর থেকে শান্তকে দেখতে পেলো সে ফোনের দিকে তাকিয়ে আসতেছে সে,সাথে একটা ছোট মেয়ে ও আসতেছে
মেয়েটার চেহারা দেখে মনে হয় শান্তর বোনটোন হবে,চেহারায় অনেক মিল
শান্ত ফোনের দিকে তাকিয়ে তারপর নওশাদ রিয়াজের দিকে তাকিয়ে চেয়ার টেনে বসে গেলো
.
শান্ত গেস হোয়াট!!মিট রুপা এন্ড আহানা!!
.
কে আহানা?
.
শান্ত পাশে তাকিয়ে দেখলো আহানা দাঁতে দাঁত চেপে উঠে চলে যাচ্ছে
রুপা ওর হাত ধরে আটকিয়ে কিসব বলতেছে ওকে,মনে হয় থাকার জন্য রিকুয়েস্ট করতেছে
.
এই মেয়েটা এখানে কেন?
.
আমরা ডেকেছি,ভাবলাম তোর চেনাজানা মেয়েটা আমাদের সাথে কফি খাক,আর রুপা আমার ফ্যান তাই ফ্যানকে তো এই টুকু কদর করায় যায়
.
ফ্যান?এই মেয়েটা আমার শত্রু,আমার গান শুনতেছিলো এমন ভাব করে যেন সে লিরিক্স বুঝতেছে না
মনে হয় স্টেজে এসে আমাকে সরায় দিবে আর নিজে গান গাবে
.
ভাইয়া এই আপুটা কে?একটা ছবি তুলি?
.
নিতু!দরকার নেই,কিসের ছবি?মা কে যদি কিছু বলছো তো তোমার খবর আছে,ভুলে যাও এসব,আর তোরাও বলিহারি! এই মেয়েকে আমি চিনি এটা তোদের বললো কে?

আহানা প্লিস আমার জন্য একটু থাক!কফি খেয়েই চলে যাবো, প্লিস থাক না
.
লোকটা ভালো না,তুই বুঝিস না কেন!আমি থাকবো না
.
এ্যা এ্যা😭তুই আমার বেস্টি না,আমার মন রাখস না😭
.
ফাইন!
.
আহানা হেঁটে গিয়ে চেয়ার টেনে দুম করে বসলো
শান্ত ফোন থেকে চোখ তুলে ওর দিকে তাকালো সাথে সাথে
রুপা ঢুলে ঢুলে বললো “আমি আপনাদের সবার সাথে একটা ছবি তুলি?”
.
তুলেন!
.
রুপা ছবি তুলতেছেই আর আহানা শান্তর দিকে একবার দুবার তাকাচ্ছে,এমন ভাবে তাকাচ্ছে যেন কাঁচা গিলে খাবে
শান্ত তো চেয়েই আছে ওর দিকে
সকালের টায়ার পাঞ্চারের কথা মাথা আসতেই মন চাচ্ছে ওরে জ্যান্ত কবর দিয়ে দিতে
.
ভাইয়া আপুটা ওমন করে তাকাচ্ছে কেন তোমার দিকে?
.
মিরকির অসুখ তো তাই,জুতা শুকালে সব ঠিক হয়ে যাবে
.
আহানা চোখ রাঙিয়ে বললো”আপনার তো চোখই নষ্ট,কাঁচামরিচ কুচি করে চোখে মাস্ক হিসেবে লাগিয়ে রাখলে চোখ ঠিক হবে আপনার”
.
ও মাই গড সত্যি?
.
আহানা নিতুর প্রশ্নে কিছু বললো না,নিতুর দিকে তাকিয়েই হাতের কাছে যে কফির মগ পেলো সেটা হাতে নিয়ে এক চুমুক দিয়ে আর গিলতে পারলো না,একটুও মিষ্টি নাই,অনেক কষ্টে গিলে এখন ড্যাবড্যাব করে সেদিকে চেয়ে আছে,এই কফিতে কি ওরা চিনি দিতে ভুলে গেলো?
.
ওয়েটার!!আরেকটা কফি দিয়ে যান,,উইথ আউট সুগার,আমারটা কাকে নিয়ে গেছে
.
আহানা রাগে গজগজ করতে করতে উঠে চলে গেলো
.
আরে আহানা দাঁড়া যাইস না আরেকটু থাক
.
আহানা আর থাকলো না. চলে গেলো সোজা
.
যাক বাঁচলাম!
.
শুন শান্ত!আহানার অনেক ছবি তুলেছি আমরা,এবার আমাদের কথামত ট্রিপে যাবি তো নাহলে পিকটা আন্টির হাতে যাবে
.
গেলে যাক,আমার মা এরকম ত্যাজের মেয়েকে পছন্দ করবে না কোনোদিন
.
আহানা বাসায় এসে ব্যাগটা রেখে দৌড় দিয়ে চলে গেলো টিউশনি করাতে

মা জানো ভাইয়া আজ শপিং মলে একটা মেয়ের সাথে যে ঝগড়া করতেছিলো
.
মা মুচকি হেসে নিতুর দিকে চেয়ে ব্রু কুঁচকালো
.
মা ভাইয়া আমাকে ছবি তুলতে দেয়নি,তবে নওশাদ ভাইয়া বলতেছিলো তার কাছে নাকি ছবি আছে
কথাটা শুনে মা মাথা নাড়ালো
.
শান্ত বিছানায় হেলান দিয়ে ইউটিউবে তার গানটার ভিডিও দেখতেছে
.
স্যার আসবো?
.
রিপা?আসো
.
স্যার নিতু মামণির পরীক্ষার রেসাল্ট বের হয়েছিলো আজ
.
কি গ্রেট আসছে?
.
বাংলাতে ৫০,আর বাকি সব প্লাস আসছে কিন্তু বাংলায় নাম্বার কম আসছে
.
ও বাংলায় এত খারাপ কেন??৩টা টিচার রাখছি কি জন্যে?নিতুকে ডাকো
.
নিতু মাথা নিচু করে দূরে দাঁড়িয়ে আছে তারপর পা টিপে টিপে আসলো,শান্তর সামনে এসে দাঁড়ালো সে
.
কি ব্যাপার নিতু?এসব কি শুনছি?তুমি বাংলায় এত কম নাম্বার পেলে কি করে?
.
ভাইয়া আমাকে যে টিচার বাংলা পড়ায় উনি বেশির ভাগ ইংরেজিতে কথা বলেন,আমার বাংলা বুঝতে problem হয়
.
রিপা তুমি এক কাজ করো নিউ টিচার খুঁজো ওর জন্য,এখন যে বাংলা টিচার আছে সে বাদ
এমন একজন টিচার আনবা সে যেন শুদ্ধ বাংলা ভাষায় কথা বলে এবং মার্জিত ভাবে নিতুকে বাংলায় পারদর্শী করে তুলতে পারবে
.
ওকে স্যার
আপনার কথামত আমার চেনাজানা একটা মেয়ে আছে,আমার ছোট বোনকে পড়ায়,বাংলায় অনেক ভালো,আপনি যদি বলেন তো তাকে আনাই?
.
ওকে,আনো,সমস্যা নেই,তবে সন্ধ্যা ৬টায় আসতে বলবা,আমি নিজের চেখে দেখবো কেমন পড়ায়
.
ঠিক আছে স্যার
.
রিপা রুম থেকে বেরিয়ে তার মাকে ফোন করলো
.
হ্যালো মা,আহানা কি আজকে রুনাকে পড়াতে এসেছে?
.
হুম,পড়াচ্ছে তো,কিন্তু কেন জিজ্ঞেস করছিস
.
শান্ত স্যারের ছোট বোনকেও পড়াতে হবে,বাংলায় একটু খারাপ তো তাই,আহানাকে ফোনটা দাও তো
.
আহানা মা ধরো রিপা তোমার সাথে কথা বলতে চায়
.
হ্যালো রিপা আপু
.
আহানা?কেমন আছো?
.
ভালো আছি,তুমি কেমন আছো?
.
ভালো,আসলে একটা কথা বলার জন্য ফোন করলাম,তুমি কি আমার স্যারের বোনকে বাংলা পড়াতে পারবা?
.
হুম পারবো,কখন পড়াতে হবে?
.
সন্ধ্যা ৬টা থেকে
.
আমার জন্য একটু কষ্টের হবে
.
স্যার মোটা অঙ্কের টাকা দিবে,স্যারের একটামাত্র বোন,কোনোমতে সব ছেড়ে এটায় ঢুকে যাও,তোমার কথা মাথায় আসতেই আমি তোমাকে কল করলাম
.
ঠিক আছে,আমি আসবো
.
আচ্ছা তাহলে কাল থেকে এসো কেমন!!

আহানা আজ বাসায় ফিরার সময় মায়ের জন্য তেতুল কিনলো,আচার বানাবে,মায়ের তেতুল অনেক পছন্দ,আর তেতুল খেলে মায়ের প্রেসারের কারণে মাঝে মাঝে যে মাথা ঘুরানি উঠে সেটা চলে যাবে
বাসায় আসতেই মায়ের হাতে তেতুল দিলো সে
মা তো রেগে গেলো,তেতুলের পিছনে টাকা খরচ কেন করেছে সেটাই বলে যাচ্ছেন উনি
.
আহানা মুচকি হেসে বিছানায় পা তুলে বসলো হাতে মুড়ির বোয়াম নিয়ে আর হেসে হেসে বললো”আরে মা!আমি একটা ভালো বেতনের টিউশনি পেয়েছি,রিপা আপু ফোন করে জানালো”
.
তাই নাকি,তাহলে তো ভালো
.
কিন্তু সমস্যা আছে,সন্ধ্যা ৬টায় যেতে হবে প্রতিদিন
.
সে সমস্যা নাহ,৭টায় বাসায় ফিরে আসলে আর কোনো সমস্যা নাই,তুই হ্যাঁ বলে দে
.
হুম বলছি আপুকে যে কাল থেকে আসবো
.
আমি কাঁকরোল দিয়ে ইলিশ মাছ রেঁধেছি,তোর খালা আজ ইলিশ মাছ আনছে,হাত ধুয়ে খেতে বস,মুড়ি নিয়ে বসেছিস কেন?
.
কি?কাঁকরোল??আবার ইলিশ মাছ?
যাও আজ আমি ভাতই খাবো না,তুমি জানো আমি তরকারিতে কাঁকরোল আর মাছের মধ্যে ইলিশ খাই না আর তুমি সে দুটোই একসাথ করে রাঁধলে?
.
কি করবো,বাসায় তরকারি ছিল না,গাছ থেকে কাঁকরোল ছিঁড়ে এনে রেঁধেছি
.
আমি শুধু ভাত আর ঝোল দিয়ে খাবো,আগে বলো খালা কই?
.
তোর খালা খেয়ে দেয়ে আবার চলে গেছে
.
আহানা মুখটা ফ্যাকাসে করে ঝোল দিয়ে শুকনা ভাত খাচ্ছে,মা বারবার বলতেছে একটু খেয়ে দেখ,বেশ লাগছে খেতে তরকারিটা
.
না সে খাবেই না
আহানা এমন একটা জাতি যে ইলিশ মাছ পছন্দ করে না

রিপা আমার ইলিশ কই??সব দেখি মিট আইটেম,আমি না বললাম আজ ইলিশ খাবো!
.
স্যার ম্যাডাম রাঁধতেছে,আপনি একটু বসুন
.
রাঁধতেছে মানে,কেমনে রাঁধতেছে,আর তুমি মাকে যেতেই বা কেন দিলা?
শান্ত দৌড়ে গেলো রান্নাঘরের দিকে
মা হুইলচেয়ারে বসেই ইনডাকশান ওভেনকে তার সামনে একটা ছোট টেবিলের উপর রিপাকে দিয়ে রাখিয়ে শান্তর জন্য ইলিশ রাঁধতেছেন
শান্ত স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে মায়ের পাশে গিয়ে বসলো
.
তারপর রিপার দিকে চেয়ে বললো “মা এসব তোমাকে দিয়ে এরেঞ্জ করালো কি করে?”
.
রান্নাঘরের সামনে এসে হাত দিয়ে ইশারা করতেছিলো তাই আমি এমন করে ব্যবস্থা করে দিয়েছি
.
আর করবা না,মায়ের শরীর ভালো না,দরকার নেই এত কিছুর
.
স্যার আপনার ইলিশ মাছ এত পছন্দের যে আজ আমি বুয়াকে দিয়ে ৪আইটেম বানিয়েছি ইলিশ মাছের আর তার পরেও ম্যাম ইলিশ মাছের আরেকটা আইটেম বানাচ্ছে
.
হুম,আমি ইলিশ দিয়ে সারাজীবন ভাত খেতে পারবো অন্য কিছু বাদেই
.
মা মুচকি হেসে শান্তর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন,তারপর ডাইনিংয়ে এসে শান্তর সাথে উনিও খেতে বসলেন,রিপা চামচে করে ইলিশ মাছ ভাজাটা শান্তর পাতে দিয়ে চলে যাওয়া ধরতেই দেখলো শান্তর মা এক চামচ ইলিশ মাছ ভাজার তেল শান্তর পাতে দিচ্ছেন
রিপা হা করে চেয়ে আছে,শান্ত কিছু বলছেও না
অথচ খাবারে তেল একদম কম খায় শান্ত,কি জানি,শান্ত স্যারের পছন্দ অপছন্দের লেভেল সব উদ্ভট,আমি এতবছর ধরে এখানে জব করি,আজও বুঝে উঠতে পারি না
চলবে♥

প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#পর্ব_৬
#Writer_Afnan_Lara
🌸
আজ সারাদিন আহানার ব্যস্ততার ভিতর দিয়ে কেটেছে সব
সকালে বাচ্চাদের পড়িয়ে ভার্সিটিতে যাওয়া তারপর ভার্সিটি ছুটি হলে ২টা টিউশনি
সব শেষ করে বিকালে বাসায় ফিরে একটু ঘুমিয়ে সে এবার গেছে রিপার দেওয়া ঠিকানায়,আজ থেকে নতুন টিউশনি শুরু
.
বেশ বড় বাড়ি!ভালো বেতন পাবো মনে হচ্ছে,এটার বেতন ভালো হলে বাকি যে ২টা টিউশনি আছে সেগুলো ছেড়ে দিব,এত জার্নি ভালো লাগে না
গেটে দারোয়ান ও আছে দেখছি,রিপা আপু কত বড় উপকার করলো আমার
আহানা এগিয়ে গিয়ে বললো সে এই বাসার মেয়েকে পড়াতে এসেছে
.
ও আপনি নিতু মা মণিরে পড়াতে এসেছেন?দাঁড়ান আমি রিপা আপাকে ডাকতেছি
কথাটা বলে দারোয়ান চলে গেলো বাসার ভিতরে
.
আহানা এদিক ওদিক তাকাচ্ছে বাসার,বাসার সামনে একটু জায়গাও খালি নাই যেখানে সূর্যমুখী ফুল নাই
এটা আবার কেমন বাড়ি!মানুষের গোলাপ পছন্দ হয় আবার একসাথে অনেক ফুল পছন্দ হয় আর বাগান করে সেটা দিয়ে এখানে দেখি চারিদিক হলুদ আর হলুদ,আজব বাড়ি তো!
এখান থেকে একটা ফুল নিয়ে যাব যাওয়ার সময়,সূর্যমুখী ফুল আমার তেমন পছন্দ না কিন্তু এতগুলো থেকে একটা নিয়েই যেতেই পারি!দেখতে ভালোই
ওমা!!!!গন্ধরাজ ফুল
আহানা গেট খুলে দৌড় দিলো সেদিকে,বাড়ির একদম শেষ প্রান্তে গন্ধরাজ ফুলের লম্বাতে বিরাট বড় সারি,একদম হাফ কিলোমিটার হবে,এত সুন্দর লাগছে,সবুজের উপর সাদা আর সাদা,সব ফুল ফুটে আছে
বেশ লাগতেছে দেখতে
আহানা একটা ফুল নিয়ে কানে গুজে পিছন ফিরে তাকালো,গোল করে বিরাট একটা খোলামেলা বারান্দা,মনে হয় যেন বারান্দার সামনে ইচ্ছে করেই গন্ধরাজের সারির বিস্তার করা হয়েছে যাতে বারান্দায় বসে অনায়াসেই ঘ্রান নেওয়া যায়
আহানা আরও দুটো ফুল নিয়ে এগিয়ে গেলো,গন্ধরাজ ফুল ওর অনেক পছন্দের,আরেকজনের বাগান বলে বেশি নিলো না
আহানা সামনের দিকে এসে দেখলো বাসার ভেতর থেকে রিপা আসতেছে হাসিমুখে
আহানা আজ প্রথমদিন বলে ৬টা বাজার আগেই চলে এসেছে
.
যাক আহানা এসেছো তাহলে!এই এক মিনিট!সরো সরো সরে দাঁড়াও,স্যার আসতেছে
আহানা রিপার কথামত সরে দাঁড়ালো
শান্ত কার নিয়ে ঢুকেতেছে গেট দিয়ে,প্রতিদিন এসময়ে সে অফিস থেকে ফেরে
রিপা বললো স্যারের সাথে কথা বলিয়ে দিবে কিন্তু পরে,স্যার এখন ফ্রেশ হতে যাবে
শান্ত ফোনে কথা বলতে বলতে চলে গেলো বাসার ভিতর
আহানা পাশের সূর্যমুখী ফুলগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখছে,শান্তর দিকে খেয়াল করলো না
এগুলা থেকে নাকি তেল বের হয়,আমি কি এক বোতল তেল নিতে পারবো??তাহলে রান্নার তেল কিনতে হবে না কয়েকদিনের জন্য
রিপা আহানাকে ভিতরে আসতে বলে সেই কখনই চলে গেছে
আহানা এদিক ওদিক তাকিয়ে পা টিপে টিপে সূর্যমুখীর বাগানে ঢুকে পড়েছে
একটা ফুলের মাঝখানে হাত দিয়ে টিপেটিপে সে মাটিতে বসে পড়েছে তাও তেল বের হচ্ছে না,পরে মনে করার চেষ্টা করলো রুপাদের বাসায় ডিসকভারি চ্যানেলে দেখেছিলো সূর্যমুখীর তেল কি করে বের করে
সব ভুলে গেছে সে
খানিকটা মনে আছে,তাই নিজের বুদ্ধি দিয়ে মনমতো এবার ফুলটাকে কিলাচ্ছে সে
সূর্যমুখীর বাগানটা বরাবর যে রুমটার সামনে সেটা হলো শান্তর রুম
শান্ত রুমে ঢুকে দরজা লক করে হাতের ব্যাগটা সোফায় রেখে টাই খুলতে খুলতে বারান্দার পর্দা সরিয়ে বারান্দায় চলে আসলো
তারপর টাইটা রুমের ভিতরের দিকে ছুঁড়ে মেরে শার্ট খুলে ফেললো তারপর তার নজরে পড়লো বাগানের দিকে একটা সূর্যমুখী ফুল বারবার নড়তেছে
শান্ত ব্রু কুঁচকে সেদিকে চেয়ে রইলো তারপর গায়ের গেঞ্জি খুলতে খুলতে সেদিকে ভালো করে খেয়াল করলো,একটা মেয়েকে দেখা যাচ্ছে সে গোল হয়ে মাটিতে বসে সূর্যমুখী ফুলকে বসে বসে কিলাচ্ছে
মেয়েটা কে?
.
আহানা কিছুই পেলো না, তেল তো দূরে থাক
শেষে কয়েকটা সূর্যমুখীর বিজ নিয়ে হাঁটা ধরলো
.
শান্ত দারোয়ানকে ডাক দিয়ে বললো বাগান চেক করতে
তারপর গোসল করতে চলে গেলো সে
আহানা গায়ের জামা থেকে মাটি ঝেড়ে বাসার ভিতর ঢুকতেছে
রিপা ওকে নিয়ে নিতুর রুমে চলে গেলো
নেভি ব্লু কালারের রুমটা,ছোটখাটো রুম,বড় বড় মানুষের আকারের দুটো টেডিবিয়ার আছে সেখানে,ফ্লোরে বসিয়ে রাখা
একটা গোলাপি আরেকটা নীল,একটা ছোট বিছানা আর টেবিল আর একটা আলমারি আছে সেখানে
আহানা গিয়ে চেয়ার টেনে বসলো
রিপা নিতুকে ডেকে আনতে গেছে,সে তার মায়ের রুমে এখন
নিতু তার রুমে এসে সালাম দিয়ে চেয়ার টেনে বসতেই আহানাকে দেখে চমকে গেলো
আহানাও তাকে দেখে চমকে একেবারে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পড়েছে
.
এটা তো সেই মেয়েটা যে কাল ঐ অসভ্য লোকটার সাথে ছিল
.
আরে তুমি আহানা আপু না?
.
আহানা ঢোক গিলে বললো”সরি,আমি ভুল করে চলে আসছি”
আহানা ব্যাগ নিয়ে এক দৌড় মারলো
রিপা গিয়ে ওকে আটকালো তখনই
.
আরে আরে কই যাও,কি হয়েছে সেটা তো বলবা,এরকম চলে যাচ্ছো কেন?নিতু কে চেনো তুমি?
.
আহানা ব্রু কুঁচকে বললো”মাফ করে দিও,আমি এই টিউশনি করাতে পারবো না!”
.
শান্ত তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে মুছতে দারোয়ানের সাথে কথা বলতেছে,দারোয়ান জানালো নিতুকে যে নতুন ম্যাডাম পড়াতে এসেছে সে সূর্যমুখী বাগানে ঢুকেছিলো
.
শান্ত ঠিক আছে বলে পিছন ফিরতেই দেখলো আহানা ভূত দেখার মত তাকিয়ে আছে ওর দিকে তারপর চোখ নামিয়ে দৌড় দিলো
শান্ত কিছু বুঝে উঠতে না পরেে বললো”দাঁড়ান”
.
আহানা থেমে গিয়ে দোয়াদরুদ পড়া শুরু করে দিয়েছে
.
আপনি আমার বাসায় কি করতেছেন?
.
আপনাকে কেন বলতে যাবো?
.
আজব তো,আমার বাসায় আসছেন আর বলতেছেন আমাকে কেন বলতে যাবেন?
.
আমি কি করবো না করবো সেটা আপনাকে বলতে হবে?
.
আপনার কথার একটু সৌন্দর্য নাই,অলওয়েজ বিচ্ছিরি ভাবে উত্তর দেন
.
তো যখন এটা জানেন তখন আমার সাথে কথা বলতে আসেন কেন আপনি?স্টুপিড!
.
কি বললেন?আমি স্টুপিড?বের হোন আমার বাসার থেকে,বেয়াদব মেয়ে একটা,আকরাম মিয়া!! এরে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করো
.
রিপা আর নিতু মুখে হাত দিয়ে চেয়ে আছে শান্ত আর আহানার দিকে
আহানা চোখ বড় করে শান্তর দিকে চেয়ে থেকে বললো”আমাকে অপমান করলে আমিও অপমান করি”
কথাটা বলে সে চলে গেলো
.
শান্ত ওর চলে যাওয়া দেখছে আর মনে মনে ভাবছে আবার ফিরে আসবে নির্ঘাত আমাকে অপমান করার জন্য
আহানা সূর্যমুখী বাগান থেকে কাদা মুঠো করে নিয়ে এগিয়ে আসতেছে
শান্ত রিপা আর নিতুর দিকে তাকিয়ে ধমক দিয়ে বললো”নাটক হচ্ছে এখানে?যাও এখান থেকে”
কথাটা শেষ না করতেই ওর সারা গায়ে কাদা এসে পড়লো
চোখ বন্ধ করে সে পিছন ফিরলো,তারপর রাগে গজগজ করতে করতে তাকালো
আহানা দাঁত কেলিয়ে বললো”চলে যাচ্ছি!আমাকে অপমান করলেন তাই আমিও করলাম,মানুষকে বলতে পারবো মিঃশান্তকে কাদা লাগিয়ে তার বাসা থেকে বের হতে পেরেছি”
.
ইউ স্টুপিড!
শান্ত এগিয়ে যেতেই মা এসে পড়লো সেখানে,হুইলচেয়ার নিজে চালিয়েই ড্রয়িং রুমে এসে পড়েছেন তিনি
.
আহানা চমকে উনার দিকে কিছুক্ষন চেয়ে রইলো,উনাকে কোথায় যেন দেখেছে সে,মনে করতে পারছে না,বারবার মনে হচ্ছে মহিলাটি তার চেনা
.
মা দেখো আমি মাত্র গোসল করেছি আর এই মেয়েটা কি করেছে
.
মা আহানার দিকে চেয়ে রয়েছেন তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে
৭বছর আগে এই মেয়েকে তিনি দেখেছেন!আরে এ তো আহানা!!!কিন্তু মুখ দিয়ে কিছু বলতে পারলেন তিনি,তার যে কথা বন্ধ হয়ে গেছে
তিনি শুধু মুচকি হেসে কাঁদতে কাঁদতে হাত দিয়ে আহানাকে কাছে ডাকলেন
আহানা তাকিয়ে আছে হতবম্ভ হয়ে,মনে আসতেছেই না এই মহিলাকে সে কোথায় দেখেছে,তাই এগিয়ে এসে হাঁটু গেড়ে বসলো সে
শান্তর মা কাঁদতে কাঁদতে আহানাকে জড়িয়ে ধরেছেন
শান্ত,নিতু রিপা সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে
উনি কেঁদেই যাচ্ছেন
.
মা?তুমি উনাকে চিনো?
.
মা কাঁদার জন্য কিছু ইশারাও করতে পারছেন না,শুধু রিপার দিকে তাকিয়ে রান্নারুমের দিকে ইশারা করলেন,তার মানে কিছু আনতে আহানার জন্য
রিপা তাই করলো
আহানার এইটুকু মনে পড়লো তার আন্টি হোন ইনি,তবে কিসের আন্টি,কোথাকার আন্টি তা মনে করতে পারলো না সে
.
উনি চোখ মুছে আহানার হাত মুঠো করে ধরে আছেন এখনও,তারপর শান্তকে ইশারা করলো তাকে নিজের রুমে দিয়ে আসতে
শান্ত আবার ফ্রেশ হতে চলে গেছে
মায়ের এমন ভাব দেখে মনে হয় আহানাকে কত আগে থেকে চেনেন তিনি,কিন্তু সে তো আহানাকে চেনে না
শান্ত ফ্রেশ হয়ে এসে মাকে কোলে তুলে বিছানায় হেলান দিয়ে বসালো
মা আলমারির দিকে ইশারা করলো,তারপর হাত দিয়ে পৃষ্ঠা উল্টানোর মত করে বুঝাতে চাইলো আলমারি থেকে এমন কিছু বের করতে যেটা বইয়ের মত
শান্ত আহানার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আলমারি খুললো
আহানা বোকার মত সবদিক দেখে যাচ্ছে
আন্টির বারান্দা দিয়ে লম্বাতে গন্ধরাজের সারিটা দেখা যায়
রুমটা খয়েরী রঙ করা,বেশ দেখতে,পরিপাটি একদম
শান্ত আলমারি খুঁজে একটা হালকা পাতলা লাগেজ বের করলো,বই পেলো না
তারপর লাগেজটা নিয়ে মায়ের সামনে রাখতে গিয়ে আহানাকে ধমক দিয়ে বললো”সরুন এখান থেকে,দেখেন না এটা রাখতেছি,,পিলারের মত দাঁড়িয়ে আছে!
.
আহানা ব্রু কুঁচকে দূরে সরে দাঁড়ালো
শান্ত লাগেজটা খুলে একটা পুরোনো ফটো এলবাম বের করলো
শান্তর বাবার ফ্রেন্ডজোন নিয়ে তোলা একটা ছবি খুঁজে বের করলেন মা
১০জনের একটা ছবি,সবার গায়ে নীল কোর্ট
এলবামটা খুঁজে তারপর শান্তর বাবার গলায় হাত রাখা একটা লোককে ইশারা করে দেখালেন তিনি শান্তকে
শান্ত চিনতে পারলো না
আহানা মাথা উঁচু করে তাকিয়ে বললো”আরে এটা তো আমার বাবা”
.
শান্ত চোখ বড় করে আহানার দিকে তাকালো তারপর মায়ের দিকে তাকালো,মা মাথা নাড়িয়ে আবার কেঁদে দিলেন
শান্ত এখনও চিনতে পারলো না লোকটাকে,কি করে চিনবে,এই ছবি যখন তোলা হয়েছে তখন সে আমেরিকা ছিল
প্রায়ই ১০বছরের মতন সেখানে ছিল সে,তবে যতদূর মনে আছে তার বাবার একজন বন্ধু ছিল,আয়াত হক নাম,
ছোটবেলায় তার মেয়েকে একবার পানিতে ফেলে দিসিলাম আমি,তখন মনে হয় মেয়েটার বয়স ৪বছর ছিল
তাহলে ইনি কি সেই আঙ্কেল?
মা উনি কি আয়াত আঙ্কেল?
.
মা মাথা নাড়ালেন
.
শান্ত চোখ বড় করে আহানার দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবলো”এই মেয়েকে ছোটবেলায় একবার পানিতে ফেলে দিসিলাম আর বড় হয়েও ফালাইছি পানিতে,কি মিল!
.
মা আহানাকে হাত দিয়ে ডেকে পাশে বসালেন
আহানা বাবার ছবিটা ধরে সাথেসাথে কেঁধে দিলো
.
মা এবার নিজের কান্না থামিয়ে আহানাকে বুকে ধরে চুপ করে রইলেন আর আহানার মাথা মুছতে লাগলেন
আহানা তার এই আন্টিকে কত দেখেছে কত রাত আন্টির সাথে সে ঘুমিয়েছে আর আজ এতবছর পর হঠাৎ দেখে সে প্রথমে চিনতেই পারলো না তাকে
শান্তর মা আহানার বাবার ছবিতে আঙ্গুল দিয়ে বারবার কি যেন বলার চেষ্টা করছেন
আহানা আন্দাজেই বললো “বাবা ও মারা গেছে”!আমরা আপনাদের অনেক খুঁজেছি,পরে বাবার লাশ নিয়ে চলে যাওয়ার সময় এম্বুলেন্সের লোক থেকে জানলাম যে রিয়াদ আঙ্কেল ও কার এক্সিডেন্টে মারা গেছিলেন,সেই একই কারে বাবাও ছিলেন,তারা দুজনে একসাথে একটা জায়গায় যাচ্ছিলো,আমি আর মা আপনাদের অনেক খুঁজেছি কিন্তু আপনাদের বাসায় এসে জানলাম আপনারা গ্রামের বাড়ি চলে গেছন,ফোন ও বন্ধ ছিল আপনাদের
ওদিকে বাবাকেও কবর দিতে হতো আর আমরা আপনাদের গ্রামের বাড়ি কোথায় সেটা জানতাম না তাই আমরা চলে গিয়েছিলাম বাবার লাশ নিয়ে,এর পরে অনেকবার খুঁজেছি তাও আপনাদের পাইনি
.
শান্ত গম্ভীর গলায় বললো “আমি আমেরিকা থেকে যেদিন ফিরেছি সেদিনই সব ঘটেছে,নিতুর জন্ম আর বাবার মৃত্যু! বাবাকে একটিবার জীবিত অবস্থায় দেখলাম না আমি
বাবা কল করে বলেছিল হসপিটালে আসতেছি সেখানে দেখা হবে
বাবাকে গ্রামের বাড়ি কবর দিয়ে আমরা ২মাসের মতো সেখানে ছিলাম তারপর আবার ফিরে এসে কয়েকবছর পর নতুন বাসা নিয়েছিলাম,তাই হয়ত আমাদের পান নাই”
.
আহানা শান্তর মায়ের ইশারা বুঝতেছে না কিছুই
.
শান্ত বললো”আপনার মায়ের কি খবর সেটা জানতে চাচ্ছে মা”
.
আমার মা ভালো আছে,বাবা মারা যাওয়ার পর কত ঝড় যে গেছে আমাদের পরিবারের উপর দিয়ে,এখন ভালোই আছি,আন্টি আমাদের বাসায় আসবেন একদিন
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে