প্রেমের পাঁচফোড়ন ২ পর্ব-১+২

0
3507

প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#সূচনা_পর্ব
#Writer_Afnan_Lara
🌸
কৃষ্ণ আইলা রাধার কুঞ্জে
ফুলে বাইলা ভোমরা
ময়ূর বেশেতে সাজুইন রাধিকা
চুয়া-চন্দন-ফুলের মালা
সখিগণে লইয়া আইলা
কৃষ্ণ দিলায় রাধার গলে
বাসর হইল উজালা
বাসর হইল উজালা গো
বাসর হইলো উজালা
ময়ূর বেশেতে সাজুইন রাধিকা♥
.
জাস্ট ওসাম!!!এই ভিউর সাথে গানটা গেয়ে জাস্ট ফাটিয়ে দিয়েছিস শান্ত!!
.
নওশাদ ঠিক বলেছে,মনটাই ভালো হয়ে গেছে
এব্রিওয়ান!! পুট ইউর হ্যান্ডস টুগেদার
.
গাইস অনেক হইছে!
এবার আমি যাই,এমনিতেও ভোরবেলায় জাস্ট তোমাদের জন্য আমি এই আড্ডাতে নাম দিয়েছি এবং এসেছিও,এবার আমি ঘুমোতে যাই,হ্যাভ ফান
.
শান্ত প্লিস আরেকটু থাক!
.
নো ওয়ে!

আমি আর এই পৃথিবীতে থাকার যোগ্য না,আমি এই পৃথিবীতে আর বাঁচতে চাই না,এই জীবনের চেয়ে মরণ ভালো
পাহাড়ের উপরের ঘাসগুলো কেমন পিচ্ছিল হয়ে আছে ,বেছে বেছে চিম্বুক পাহাড়ের উপরে উঠসি এটা নাকি বান্দরবনের বিখ্যাত পাহাড়,লাফ দিলে নির্ঘাত মৃত্যু
আমার প্রচুর ভয় করছে কিন্তু নাহ আজ সুইসাইড করেই ছাড়বো
এই জীবন আর রাখবো না আমি
আহানা তোমাকে পারতেই হবে
কিন্তু এটা এতো পিচ্ছিল কেন এমনিতেও আমার সাহস কম তার উপর সুইসাইডের জায়গাটা এত ভয়ঙ্কর হলে কেমনে হয়,বাপরে বাপ!!!
.
আহানা পিছন ফিরে রোডের দিকে চলে গেলো
রোড শুকনা,এখান থেকে লাফ দিতে সহজ হবে,ভয় ও লাগবে না,এবার মরবোই মরবো,যে করেই হোক
আহানা চোখ বন্ধ করে বড় একটা শ্বাস নিয়ে আকাশের দিকে তাকালো
আল্লাহ মাফ করে দিও আমাকে,আমি বাধ্য হয়ে এমনটা করতেসি তুমি তো সব জানো,এবার যেন ঠিকঠাক ভাবে মরতে পারি
১!২!৩!!
.
আআআআআ!
.
এএএএএএই!
.
আহানা শান্তর জ্যাকেট টেনে ধরে চোখ বন্ধ করে আছে,এই নিয়ে কতবার যে সুইসাইড করতে চেয়েছে পারতেছেই না,ভয় ও করে আবার জীবন তাকে বাঁচতেও দেয় না,মরবে কি মরবে না সেটাই ঠিক করতে পারে না সে
আজ আবার বেঁচে গেলো
.
এই?বেঁচে আছেন নাকি মরে গেছেন,ইজ ইট ব্রেইন স্ট্রোক অর হার্ট এটাক?নাকি স্পট ডেড?কোনটা?
মরে গেছেন?না মরলে আমার বুক থেকে মাথা তুলুন নাহলে ধাক্কা মেরে সত্যি সত্যি পাহাড় থেকে ফেলে দিবো
.
আহানার হুস আসতেই শান্তকে ছেড়ে দূরে সরে গেলো সে
শান্ত হাত দিয়ে নিজের থুতনির কিনারায় থাকা চাপা দাঁড়ি ঘষে জ্যাকেটের কলার থেকে সানগ্লাস নিয়ে পরতে পরতে গালটা একটু বাঁকা করলো কিছুটা তাচ্ছিল্য করেই
তারপর আহানার পা থেকে মাথা পর্যন্ত একবার দেখে নিলো
.
চেহারা তো মাশাল্লাহ!! তো মরার শখ জাগছে কেন?তাও আমার সামনে,আপনাকে এখন না বাঁচালে আমার জাহান্নামেও জায়গা হতো না,কেন যে হাঁটার সময় এদিকে তাকাতে গেলাম আমি!আজব সাজব মানুষ থাকে বান্দরবনে
বান্দরবনের বান্দর একটা!
.
আহানা চুপ করে শান্তর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে
শান্ত জ্যাকেটের চেইন টানতে টানতে কিছুদূর যেয়ে থেমে পিছন ফিরে আবারও তাকালো আহানার দিকে
.
নেক্সট টাইম মরার আগে এত সময় নষ্ট করবেন না,সোজা জায়গায় দাঁড়িয়ে এক লাফ দিবেন
স্টে এন্ড জাম্প,ওকে?এই যে এমন করে!
সোজা নিচে গিয়ে পড়বেন,চোখ খুলে দেখবেন আপনি মরে গেছেন,হাত এক জায়গায় মাথা আরেক জায়গায় পা তো কোথায় পড়বে বুঝতেই পারবেন না
.
আহানা মুখ বাঁকিয়ে বললো”আমি বান্দরবনের বান্দর না!আমি ঢাকাইয়া মাইয়া”
.
হোয়াটএভার!যেমন করে শিখাইলাম তেমন করে সুইসাইড করেন,১০০% মরবেন,গ্যারান্টি দিতে পারি
.
কথাটা বলে শান্ত মুখ বাঁকিয়ে চলে গেলো
আহানা শান্তর চলে যাওয়া দেখছে,তারপর পাহাড়ের নিচের দিকে তাকিয়ে বুকে থুথু দিয়ে নাউজুবিল্লাহ পড়তে পড়তে উল্টো পথে হেঁটে চলে গেলো
.
শান্ত হোটেলে ফিরে নিজের রুমে এসেই শুয়ে পড়েছে,খুব ঘুম পাচ্ছে তার,ভোরবেলা উঠা অনেক টাফ!আর শীতকাল হলে তো কথাই নেই,জাস্ট ভোরবেলার দৃশ্য দেখার জন্য নওশাদ রিয়াজ আর সূর্য মিলে আমাকে এত ভোরে উঠালো আবার গান ও গাইতে হবে,ঘুমের ঘোরে কি গান গাইছি কে জানে!
এখন ঘুম হবে কোনো কথা হবে না!

ধুর!আজও সুইসাইড করা হলো না আর ঐ লোকটা যেভাবে করতে বললো আমার তো এখন আরও ভয় করছে,কি করবো!! কেমনে করবো!
.
এই আহানা!
.
কি?
.
তুই এত ভোরে কই গেসিলি??তোকে খুঁজতে খুঁজতে আমার জান বের হইয়া আইছিলো
.
আমি আসলে একটু ঘুরতে গেসিলাম
.
ম্যাম যদি জানে তুই টিমের সাথে না বেরিয়ে একা বের হয়েছিলি তো ধরে কেলানি দিতো
.
হুম,ম্যাম এখনও ঘুমায়,জানা আছে আমার
.
এখন চল ঘুমাবি,আমাকে না বলে বের হবি না,তোর আম্মু আমাকে বলছে তোকে দেখে রাখতে
.
মা ফোন দিয়েছিলো?
.
না,কেন তুই ফোন নেস নি সাথে করে
.
সুইসাইড করতে আবার কেউ ফোন নেয় নাকি
.
কিছু বললি?
.
না কিছু বলিনি,চল যাই

এই শান্ত উঠ!আর কত ঘুমাবি?আরে আমরা এখন নাস্তা করে ঘুরতে বের হবো
.
তোরা যা আমি ৫মিনিটে আসতেসি
.
চল আমরা যাই
শান্তর ৫মিনিট মানে ২মিনিটেই রেডি হয়ে আমাদের আগেই রেস্টুরেন্ট পৌঁছাবে
.
হুম!
.
শান্ত ফ্রেশ হয়ে জ্যাকেট পরে বেরিয়ে পড়লো নওশাদ রিয়াজের সাথে,রেস্টুরেন্টে বসে রুটি মুখে দিতেই চোখে পড়লো ভোরবেলার সেই বান্দরবনের বান্দরটাকে
মানে আহানাকে
একটু দূরেই সে দাঁড়িয়ে আছে,তার আশেপাশে অনেকগুলো মেয়েও আছে
সে উঁকি দিয়ে পাহাড়ের নিচের দিকে তাকাচ্ছে বারবার,আবার মাথা উঁচু করে পাহাড়ের উপরেও তাকাচ্ছে
এখনও সুইসাইড করেনি??
এসব ভীতুর ডিম আবার সুইসাইডের ডিসিশান নেয়!এটা তো মেন্টাল রুগী,এরে পাবনায় ভর্তি করানো উচিত
.
কিরে শান্ত কি ভাবিস এতো?
.
নাথিং!
.
মাগো মা,সুইসাইডের অন্য পন্থা খুঁজতে হবে,পাহাড় থেকে লাফ দিলে যদি পা ভেঙ্গে যায় আর আমি না মরি?তাহলে সংসার চালাবে কে?
মরলে একেবারেই মরতে হবে আর না মরলে যেন হাত পা না ভাঙ্গে
এমন কিছু আছে যাতে সাথে সাথে মরা যাবে?
.
শান্ত!!জিপে উঠ
.
শান্ত আহানার দিকে তাকিয়ে দুষ্টুমির একটা হাসি দিয়ে জিপে উঠলো,আহানা এখনও শান্তকে দেখতে পায়নি সবার সাথে রেস্টুরেন্টে গেলো নাস্তা করতে
আহানাদের ভার্সিটি থেকে সবাই মিলে বান্দরবন এসেছে ঘুরতে,সব মেয়ে,ম্যাডাম ২জন আর স্যার ২জন ও এসেছেন সাথে
আর শান্ত আর তার কিছু ফ্রেন্ড একসাথে ঘুরতে এসেছে

হ্যালো তাহসিন??মাকে গিয়ে দেখে আসছো?কি অবস্থা মায়ের?
.
স্যার,, ম্যাম ইজ ফাইন,আমি নার্সকে টাইমলি ঔষুধ দেওয়ার কথা বলে আসছি
.
ওকে,কোনো কিছুতে যাতে ভুল না হয়
.
স্যার ডোন্ট ওয়ারি
.
ওকে বাই!
.
গান ধর সবাই,কেমন নিরামিষ হয়ে আছিস তোরা ব্যাপার কি??জাঁতি ধরে ধরে গান গাওয়াইতে হয়, আর সয়ং শিল্পি আমাদের সাথে থাকার পরও সে গান করে না,শান্ত কিসের রাগারাগি তোর আমাদের সাথে?
.
রাগ নয় রিয়াজ!মায়ের জন্য চিন্তা হচ্ছে তার উপর তোরা ভোর বেলায় উঠিয়ে দিয়ে আমার মাথা ব্যাথা বাড়িয়ে দিয়েছিস
এখন গান গাওয়ার মুড নাই,তোরা গান কর
.
তা হচ্ছে না
আমরা টোন লাগাচ্ছি তুই গান গাইবি দরকার হলে আমরা তোর সাথে গলা মেলাবো
আর নওশাদ ইউটিউবের ব্লগটার কি হলো,আমরা জিপে উঠেছি ১০মিনিট হয়ে এসেছে আর তুই এখনও ক্যামেরা ধরলি না
.
আরেহ দেখ না আমাদের সাথে অনেকগুলো মেয়ের দলের জিপ ও আসতেছে মনে হয়
.
তোর জন্য আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে ভিউজ কমতেছে,ক্যামেরা দে বেয়াদ্দপ!আমি ভিডিও করবো তুই শান্তর সাথে গান ধরবি
.
ফাইন,আমার এই ভাঙ্গা গলায় তোর এই ভিডিওতে কত ভিউ আসে আমিও দেখবো
.
তোর কাউ কাউ কেটে শান্তর গানটা রাখবো আর তোর কাউ কাউর টোনটা যোগ করে দিব😎
.
রিয়াজ তোরে এখন আমি জিপ থেকে ধাক্কা মেরে ফালাইবো
.
এই তোরা থামবি?আমার মাথা ছিঁড়ে যাচ্ছে আর তোরা ক্যাঁচক্যাঁচ করেই যাচ্ছিস!
.
ওকে আই কোয়াইট!!রিয়াজ ভিডিও কর
.
ওকে!শান্ত গান ধর
.
!!.!!!.!!!
কৃষ্ণ প্রেমের প্রেমিক যারা
নাচে, গায়, খেলে তারা
কুল ও মানের ভয় রাখে না
ললিতা আর বিশু খা
ললিতা আর বিশু খা গো
ময়ূর বেশেতে সাজুইন রাধিকা
.
ওকে গাইজ আমরা এখন এসে পড়েছি “দেবতাখুমে”!!!
দেখো এখানে পানি আর পানি😱
.
লাইন এটা কেটে বল”দেখেন এখানে কত সুন্দর পানি!!”
তোর উল্টা পাল্টা ডায়ালগে মানুষ কমেন্ট সেকশানে ফানি কমেন্ট করে
.
শান্ত তুই আমারে ধর না হলে এই রিয়াজরে আজ আমি পানিতে চুবাবো
.
আমি বসে তোর চুবানি খাবো তাই না??
.
তোদের দুটোকে এখন আমি পানিতে চুবাই ধরেই রাখবো উঠাবো না আর!সারাদিন সাপ বেজির মতন ঝগড়াই করস তোরা!
.
“দেবতাখুমে”এসে জিপ থামলো অবশেষে,শান্ত জিপ থেকে নিচে পা রাখতেই দূরের কিছু মেয়ে জ্বলে উঠেছে
শান্ত বুঝতে পেরে মুচকি হেসে সানগ্লাস খুলতেই মেয়েগুলো এবার লাফিয়ে উঠলো
.
নওশাদ এরকম ঢুলিস না,মেয়েগুলো শান্তকে দেখে এরকম করতেসে
.
হ😒আমি তো ঢুলতেসি ঐ যে আরেক জিপে করে এক দল মেয়ে আসতেসে সেদিকে তাকিয়ে
.
শান্ত সানগ্লাসটা হাতে নিয়ে মেয়েগুলোর পাশ দিয়ে হেঁটে চলে গেলো
.
ইসসসসস!
.
ইস!
হাউ কিউট!!
.
শান্ত গায়ের জ্যাকেট খুলে ভেলার কাছে এসে দাঁড়ালো
চিকন বাঁশ দিয়ে তৈরি ভেলা,একটা ভেলায় কমপক্ষে ১২/১৩টা বাঁশ আটকানো হয়েছে,বাঁশগুলো রঙিন,ঘাড়ো হলুদ রঙের,কমলা রঙের ও আছে
দর্শনার্থীদের বসার জন্যই বাঁশগুলোকে সুন্দর করে সেট করানো হয়েছে
নৌকার চেয়েও ভেলাতে বসতে জোস একটা ফিলিং আসে
যাদের ইচ্ছা তারা ভেলায় বসবে আর যাদের ইচ্ছা নাই তারা নৌকায় বসবে
শান্ত নিচু হয়ে জিন্সটা হাত দিয়ে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত উঠালো তারপর চশমাটা জ্যাকেটে ঢুকিয়ে জ্যাকেটটা কোমড়ে গিট্টু দিয়ে বেঁধে নিয়ে ভেলায় এসে বসে পড়লো
পা রাখতেই ভেলাটা প্রথমেই নড়েচড়ে উঠেছে,শান্ত মুচকি হেসে হাত দিয়ে পানি ছুঁয়ে দেখলো
নওশাদ ঢোক গিলে এক পা এগোচ্ছে তো ৩পা পিছাচ্ছে
রিয়াজ ওকে ধরে টেনে নিয়ে আসতেছে,তারপর ভয়টা কাটিয়ে শান্তর নৌকায় উঠে পড়েছে তারা
এবার হবে ভেলা ড্রাইভ👌
রেডি,স্টেডি,গো!!!!
দুপাশে পাহাড়,মাঝখানে সরু পানির পথ,একের পর এক ভেলা সেখান দিয়ে পার হয়ে যাচ্ছে
মনে হয় ট্রাফিক জ্যাম,জায়গাটা এত ফেমাস যে এখানেই দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি
শান্ত হাতে বাঁশ নিয়ে ভেলা বাইতে বাইতে এগোনো শুরু করে দিয়েছে
নওশাদের এবার বেশ লাগতেছে,এতই ভালো লাগতেছে যে সে বাঁশ দিয়ে পানি ডিঙাতে ডিঙাতে স্পীড বাড়িয়ে দিয়েছে ভেলার
শান্ত পিছন ফিরে বললো “তোরে সত্যি সত্যি এবার ফালাবো পানিতে”
.
সরি,এক্সাইটমেন্ট ধরে রাখতে পারলাম না
.
এক কাজ কর তুই চালা,আমরা বসে বসে মনোরম দৃশ্য দেখি,তোর এই এক্সাইটমেন্টের কারণে আমরা একটা ভেলা ড্রাইভার পেয়ে গেলাম
.
মেয়েগুলো ফোন বের করে ভিডিও করতেছে,বাসায় গিয়ে জুম করে বারবার দেখবে শান্তকে
আসলে তারা শান্তকে আরও আগেও দেখেছে,ইউটিউবে তাদের একটা চ্যানেল আছে যেখানে সাবস্ক্রাইবার অনেক বেশি,বলতে গেলে ফেমাস একটা চ্যানেল,সেই সূত্রেই কম বেশি অনেকেই শান্ত,নওশাদ আর রিয়াজকে চেনে
.
আহানাদের জিপ এসে সবে থামলো দেবতাখুমে,আহানা পানির দিকে তাকিয়ে ভাবলো এখানে পড়লে তো বেশি কষ্টের মৃত্যু হবে না তাই না?আর আমি তো সাঁতারও জানি না
হ্যাঁ সুযোগ বুঝে আরেকটা ট্রাই করতে হবে,একদম মাঝখানে গিয়ে লাফ দিয়ে দিব,তার জন্য একা একটা ভেলায় উঠতে হবে
চলবে♥

প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#পর্ব_২
#Writer_Afnan_Lara
🌸
এই রুপা শুন,তুই তিয়াসাদের সাথে উঠ আমি একা ভেলায় উঠবো
.
তোর মাথা কি ঠিক আছে?একা উঠবি?জীবনে ভেলা চালিয়েছিস?নির্ঘাত পানির মাঝখানে গিয়ে পড়বি তুই,তোর কিছু হলে আমি আন্টিকে কি জবাব দিব?
.
আরে হ্যাঁ আমি কত চালিয়েছি,,আমাদের বাসার পাশের সেই পুকুরটায় অনেকবার ভেলা চালিয়েছি আমি
তুই প্লিস আমাকে একা একটা ভেলার ব্যবস্থা করে দেস না প্লিস প্লিস
.
আচ্ছা দেখতেছি,দাঁড়া
.
রুপা ম্যামের সাথে কথা বলে অনেক রিকুয়েস্ট করলো পরে ম্যাম বললো বারতি টাকা লাগবে,কারণ উনারা একটা ভেলায় ৩জন ৩জন করে বুক করেছেন,আহানা একা উঠতে চাইলে তাকে তার ভাড়াটা দিতে হবে
.
রুপা এসে আহানাকে ব্যাপারটা জানালো,আহানা নিজের হাতের পার্সের টাকা গুনে হিসেব টিসেব করে বললো “ঠিক আছে”
ব্যস একা একটা ভেলায় উঠার বন্দবস্ত হয়ে গেলো তার
বড় করে আবারও শ্বাস নিয়ে সে ভেলায় উঠে বসলো,ভেলাটা এত নড়তেছে যে তার কলিজা কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেছে
এখন না পারছে উঠে আসতে না পারছে চালাতে
তার সাথের সবাই ভেলা চালানো শুরু করে দিয়ে সামনেও চলে গেছে এতক্ষণে
প্রতি এক ভেলাতে ৩জন করে বসেছে সবাই
আহানা ঢোক গিলে চালানো শুরু করেছে অবশেষে
একদম কিছুদূর এসে চোখ বন্ধ করে লাফটা দিয়েই দিলো শেষমেষ
সেই ছেলেটা বলেছিল সময় নষ্ট না করতে,তাই আর এক সেকেন্ড ও দেরি করলো না আহানা
চোখ খুলে দেখলো সে মরে নাই এখনও,হাত পা সব ঠিক আছে
আসলে দেবতাখুমের শুরুতে যে পানি থাকে সেটা ওতটা গভীর না,গলার নিচ পর্যন্ত,আপনি পড়লেও ডুববেন না
আশেপাশের সবাই যারা ভেলাতে করে যাচ্ছিলো তারা আহানার দিকে বোকার মতন চেয়ে আছে
আহানা নিজেও বোকার মতন সবার চাহনি দেখে যাচ্ছে পরে যখন বুঝলো তার এবারের সুইসাইডের প্ল্যানটাও নষ্ট হয়েছে তখন সবার দিকে তাকিয়ে দাঁত কেলিয়ে হেসে দিলো সে
যারা এতক্ষণ চেয়ে ছিল তারাও হেসে দিলো আহানার দাঁত কেলানি দেখে
আহানা কখনও লজ্জাকর কোনো সিচুয়েশনে পড়লে নিজেই হেসে দেয় যার কারণে অন্যরাও তাকে লজ্জা দেওয়ার মত কিছু বলার সাহস করে না তারাও হেসে দেয়
তো আপাতত সে ভেলাটা ধরে পানি থেকে উঠার চেষ্টা করতেছে
গায়ের হালকা হলুদ রঙের লং ফ্রকটা ভিজে গেছে,এখন তার নিজের কাছেই অনেক খারাপ লাগতেছে
মরলে মরতাম আবার বাঁচতে গেলাম কেন,সুইসাইড করতে গিয়ে যারা বেঁচে যায় তারপর যে সিচুয়েশনটা তাদের সামনে আসে সেটা অনেক লজ্জাকর,যেমন এখন আমাকে লজ্জায় পড়তে হলো,এই জামা শুকাবে কখন,কিরকম বিচ্ছিরি লাগতেছে আমাকে,ধুর!
আহানা অনেক কষ্টে ভেলায় উঠে বসলো,তারপর চুলগুলো জুটি করা থেকে খুলে পিঠের উপর ছেড়ে দিয়েছে যাতে ভেজা পিঠ না দেখা যায়
সে চায় না কেউ তাকে ভেজা জামায় এরকম বিচ্ছিরি লুকে দেখুক
ওড়নাটা গায়ে পেঁচিয়ে গাপটি মেরে সে বসে আছে কি করবে সেটাই ভাবতেছে,বাকিরা সবাই তাদের ভেলা চালানোয় বিজি হয়ে পড়েছে,এতক্ষণ সার্কাস দেখতেছিলো আই মিন আহানার কাণ্ডকারখানা দেখতেছিলো
আহানা মুখটা ফ্যাকাসে করে বাঁশটা হাতে নিলো আবার
ভেলায় উঠার আগেই পানির গভীরতা চেক করা উচিত ছিল আমার,শুধু শুধু এখন এত কিছু হলো,টাকাও নষ্ট হলো আর ভিজেও একাকার হলাম
আহানা বাঁশ দিয়ে পানি বাইতে বাইতে যাচ্ছে,মাঝে মাঝে থেমে থেমে গায়ের ওড়না দিয়ে গা ঢাকতেছে
হঠাৎ গা ঢাকার সময় দুম করে মাথায় কি যেন পড়লো তার,একটা কালো জ্যাকেট,জ্যাকেটটা ভালো করে দেখে সে উপরে তাকালো
৩টা ছেলে পাশেই একটা ভেলায় দাঁড়িয়ে পাশে বিরাট পাহাড়টার সাথে লেগে ছবি তুলতেছে একজন আরেকজনের
তার মধ্যে একজনকে সে চিনতে পারলো
এটা তো সেই ছেলেটা যে সকালে ওকে বাঁচিয়েছিল
শান্ত এদিক ওদিক তাকিয়ে তারপর নিচে তাকালো
আহানা বোকার মতন হাতে জ্যাকেটটা নিয়ে ওর দিকে চেয়ে আছে
ও ইচ্ছে করেই আহানার গায়ে নিজের জ্যাকেটটা ফেলেছিলো
.
তারপর গাল ফুলিয়ে বললো”জ্যাকেটটা পরে আমাকে উদ্ধার করেন,যেমন করে শিখাইলাম তেমন করে সুইসাইড করতে পারেন নাই?
জামা শুকাইলে আমাকে খু্ঁজে বের করে আমার জ্যাকেট আমাকে ফেরত দিবেন
বাই দ্যা ওয়ে আমার চোখের সামনে কোনো মেয়ে বিপদে পড়লে আমি হেল্প করি
যাই হোক আপনার মরতে মন চায় তাই তো?
এই যে এই পাহাড়টা দেখছেন এটাতে উঠে লাফ দিয়া দেন
দুম করে পানিতে পড়বেন,নিচের পাথরের সাথে মাথা ফেটে আপনি ডেড!!
নিন! জলদি করেন”
.
আহানা জ্যাকেটটার দিকে চেয়ে রেগেমেগে শান্তর গায়ে সেটা ছুঁড়ে মারলো তারপর বললো”কি সমস্যা আপনার?? আমি যেমন ইচ্ছা তেমন করে মরবো,আপনার এত কি?আরেকদিকে ফিরে থাকলেই তো হয়,আপনাকে কে বলেছিল সকাল বেলা আমাকে বাঁচাতে!”
.
কেউ বলে নাই,আমি দেখে ফেলছিলাম
তখন যদি আমি আপনাকে দেখেও না বাঁচাতাম তাহলে আমার গুনাহ হতো
.
খুব ধার্মিক গিরি দেখাচ্ছেন,তা মাথার টুপি কই?
.
শুনেন!মাথায় টুপি পরলেই সেটা ধার্মিকতা প্রকাশ করে না
.
১০০হাত দূরে থাকেন আমার থেকে,আমাকে হেল্প করতে আসবেন না একদম,ঢং দেখায় যত্তসব
.
কি বললেন?আমি ঢং দেখাই??
শান্ত রেগে আহানাকে ধাক্কা মেরে পানিতে ফেলে দিলো
তারপর বললো-“কিছু কিছু মেয়ে হেল্প পাওয়ারও যোগ্য না”
.
এই শান্ত এটা তুই কি করলি?আর মেয়েটা কে?চিনস নাকি?শুরুতেই এমন ঝগড়া করতেছিস কেন,আল্লাহ!!!
মেয়েটা মরে যাবে তো
.
কচু মরবে,এই মেয়ের হচ্ছে কই মাছের প্রাণ
১০০বার সুইসাইড করার ট্রাই করেছে একবারও মরে নাই,আজ ও মরবে না দেখিস
.
আহানা পানিতে বসে গাল ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে শান্তর দিকে
.
ওকে গাইস চলো আমরা ফিরে যাই
.
শান্ত তার হাতের জ্যাকেটটা নিয়ে আবারও আহানার গায়ে ছুঁড়ে মেরে ভেলায় বসে বাঁশ হাতে নিয়ে ভেলা বাইতে বাইতে চলে গেলো
আহানা রাগে গজগজ করতেছে,শেষে কতগুলো ছেলে ভেলা নিয়ে ওর সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সিটি মারতে মারতে যাচ্ছে দেখে বাধ্য হয়ে সে জ্যাকেটটা পরে নিলো

কিরে বললি না যে মেয়েটা কে?
.
কেউ না,একটা বান্দর আর কিছু না,এটাই ওর পরিচয়
.
আহানা ভেলা থেকে নেমে এদিক ওদিক তাকালো শান্তকে কোথাও দেখতে পেলো না তারপর জ্যাকেটরা হাতে নিয়ে হাঁটা ধরতেই তার ভার্সিটির সবাইকে খুঁজে পেয়ে গেলো সে
.
রুপা চোখ বড়বড় করে বললো”কিরে তোর হাতে এটা কার জ্যাকেট?”
.
কারোর না
.
কারোর না মানে?এটা আবার কেমন কথা
.
যার জ্যাকেট তার নাম “কারোর না”
.
তোর মাথা গেছে,যাই হোক আগে বল এরকম ভিজেছিস কি করে?
.
ঐ আসলে ভেলা থকে পড়ে গেছিলাম আমি
.
এই জন্যই বারবার বলছি একা একা ভেলায় উঠিস না এখন হলো তো?চল এখন,আরেক জায়গায় যাবো আমরা
.
আহানা পিছন ফিরে একবার তাকালো
শান্তকে পেলে ওর মুখে জ্যাকেটটা মেরে চলে আসবো আমি,বেয়াদব একটা ছেলে,আমাকে অপমান করলো,আমি মরি তো ওর এত কি আমাকে বাঁচানোর,বেয়াদব একটা!
.
শান্ত এসে জিপে বসেছে,নওশাদ ক্যামেরা ধরেছে ওর দিকে
শান্ত “দেবতাখুম” নিয়ে কিছু তথ্য বলে যাচ্ছে দর্শকদের
হঠাৎ বাম পাশ থেকে ওর জ্যাকেটটা এসে ওর মুখের উপর পড়লো দুম করে
শান্ত এক হাত মুঠো করে রেখেছে রাগে,কাজের সময় কেউ ডিস্টার্ব করলে মানুষটাকে খুন করতে মন চায় ওর
রেগে মুখ থেকে আরেক হাত দিয়ে জ্যাকেটটা সরিয়ে পাশে তাকিয়ে দেখলো আহানা মুখটা বাঁকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেখানে
কোমড়ে হাত রেখে বললো”আমাকে খোঁচা মারলে আমিও খোঁচা মারবো,আমাকে অপমান করলে আমিও অপমান করবো,আমাকে পানিতে ভিজাইলে আমিও পানিতে ভিজাবো
এটা বলেই আহানা পিছন ফিরে চলে গেলো
.
শান্ত এখনও রাগী লুক নিয়ে সেদিকে চেয়ে আছে
.
কিরে শান্ত! লাস্টে বললো যে পানিতে ভিজাবে,কই ভিজাইলো
.
শান্ত তাচ্ছিল্য করে হাসি দিয়ে জ্যাকেটটা পরতে পরতে বললো”বললেই হলো আর কি,এসবের জন্য সাহস লাগে,শান্তকে টেক্কা দেওয়া এত সহজ না
.
আসতেছে রে,বামে তাকা
.
রিয়াজের কথা শুনে শান্ত বামপাশে তাকালো,আহানা হনহনিয়ে এগিয়ে আসছে,হাতে ওড়না
শান্ত ভেবেছিল পানি আনতে গেছে এখন দেখি ওড়না খুলে আসতেছে
আহানা শান্তর কাছে এসে হাত থেকে ওড়নাটা গুটিয়ে নিয়ে শান্তর মাথার উপর ধরে চিপে দিলো
ভেজা ওড়না থেকে এক গাদা পানি এসে সব শান্তর গায়ে
নওশাদ রিয়াজ মুখে হাত দিয়ে চেয়ে আছে সেদিকে
শান্ত আশ্চর্য হয়ে গেছে,এটা কি হলো!!
আহানা ওড়নাটা এবার ঝেড়ে গায়ে দিয়ে মুখ ঘুরিয়ে চলে গেলো আর কিছু বললো না
.
রিয়াজ বললো”এই মেয়েটার সাহস কত দেখলি তোরা!
তারপর শান্তর ক্রোধ দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে বললো”শান্ত থাক বাদ দে এসব,চল আমরা যাই”
.
শান্ত পকেট থেকে রুমাল নিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বললো”এরে আমি ছাড়মু না!!মেয়েটার যে জিপ আছে ওটা ফলো কর”
.
শান্ত বাদ দে না প্লস
.
না নওশাদ”! বাদ দিব না,মেয়ে হয়ে এত সাহস দেখায় আমাকে,এরে তখন না বাঁচাইলেই হইত,এর তো মরাই উচিত!
.
এবার আহানাদের জিপ যাচ্ছে আলীর গুহার দিকে,এটাকে আলীর সুড়ঙ্গ ও বলা যায়
রহস্যময় একটা গুহা,বান্দরবন জেলার আলীকদম উপজেলায় অবস্থিত গুহাটি
মাতামুহুরি ও টোয়াইন নামক একটা খালের পাশ ঘেষে গুহাটির উৎপত্তি,এই গুহা নিয়ে রহস্যের কোনো শেষ নেই,মোট মিলিয়ে ৩টি গুহা এখানে,সবগুলো একসাথে দেখতে হলে ২ঘন্টা সময় লাগতে পারে
গুহাটির আগে কিছুদূরে এসে এক এক করে সব জিপ থামতেছে
প্রথমে সিঁড়ি বাইতে হবে,তারপর পাহাড় বাইতে হবে
সবাই হাতে হাতে মশাল নিয়ে তৈরি কারণ গুহাটির ভিতর ঘুটঘুটে অন্ধকার
ভিতরে ঢুকলে সরু পথ ও আছে যার কারণে হামাগুড়ির ও প্রয়োজন পড়বে
আহানা ভয়ে ভয়ে ঢুকতেছে,সিঁড়ি শেষ হতেই অন্ধকার শুরু
কেমন স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ,গা গুলিয়ে আসতেছে,সবাই একজন আরেকজনের হাত ধরে হেঁটে এগিয়ে যাচ্ছে ভিতরের দিকে
হঠাৎই আহানার হাত ধরে কেউ ওকে কিনারায় টেনে নিয়ে গেলো,মুখে হাত রাখায় আহানা জোরেও চিৎকার দিতে পারলো না
বুকের ভেতরটা ডিপডিপ করতেছে,আহানা তার হাতের মশালটা উঁচু করে সামনে তুলতেই দেখলো শান্ত মুখটা গম্ভীর করে ওর দিকে চেয়ে আছে
.
আপনি?আবার?কি হইছে,হাত ছাড়ুন আমার
.
আপনার খুব মরার শখ তাই না?
.
ততততো?
.
তো আমি আপনাকে এই চিপায় এই খুঁটির সাথে বেঁধে চলে যাবো,এখানে থাকতে থাকতে এমনিতেই মারা যাবেন,কঙ্কাল হয়ে যাবেন একদম,ইজি না?
.
বেকুবি বন্ধ করেন,আমি কেমনে মরবো না মরবো সেটা আপনি কেন ডিসাইট করবেন,হাত ছেড়ে দিন ভালো হচ্ছে না কিন্তু
.
আমার সাথে যুদ্ধে নেমে আপনিও ভালো কিছু করেননি
.
আহানা শান্তকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে মশালটা সামনে ধরলো
খবরদার!আর একবার আমাকে ধরতে আসলো পুড়িয়ে দিব
.
শান্ত মুচকি হেসে এগিয়ে আসতেছে
আহানা ঢোক গিলে পিছোতে পিছোতে পাহাড়ের সাথে লেগে গেছে একেবারে
.
সরি বলেন আমাকে তারপর মাফ করবো কি করবো না সেটা ভাববো
.
কেন বলবো??
.
কারণ আপনি আমার সাথে মিসবিহেভ করছেন
.
আপনি কি করছিলেন মনে আছে?
আমাকে পানিতে ফেলে দিসিলেন,সেটা কি করে ভুলবো?
.
আপনি আমার হেল্পকে ঢং বলছিলেন
.
তো কি বলবো,আমি মরি না মরি আপনার এত কি?নিজের চরকায় তেল দিতে পারেন না?
.
শান্ত রেগে আরও এগিয়ে আসতে যেতেই ওপাশ থেকে ম্যাম আর বাকিরা ডাক দিলো সবাইকে একজোট ও থাকতে,এমনকি কয়েকজন এদিকে আসতেছে আহানাকে খোঁজার জন্য
আহানা সুযোগ পেয়ে ততক্ষণে চলেও গেছে সেদিকে
.
শান্ত আর এখানে সময় নষ্ট করলো না,নওশাদ আর রিয়াজের কাছে ফিরে গেলো,মেয়েটা শুধু শুধু দিনটায় নষ্ট করে দিয়েছে আমার,রাগটাও কমাতে পারলাম না
.
কিরে শান্ত?কি করলি?কেলানি দিতে পারলি?
.
না,মানুষ এসে গিয়েছিল
.
বাদ দে তাহলে চল আমরাও মশাল হাতে গুহাই ঢুকি
.
হুম
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে