প্রেমময় আসক্তি ২ পর্ব-০২

0
1318

#প্রেমময়_আসক্তি_২ ❣️
#পর্ব_২
#নন্দিনী_চৌধুরী

২.

নীলাদ্র গান শেষ করে আবার সো শুরু করলো। এভার সবার কুইজের উত্তর গুলো দেখবে সে।

নীলাদ্র: ওকে আমরা আমাদের কুইজের উত্তর গুলো পেয়েছি যার মধ্য আমরা ৩টা উত্তর পেয়েছি সঠিক। আর এই ৩টা উত্তরের মাঝে একটা উত্তর একদম অন্য রকম ভাবে একজন দিয়েছে। আর এই উত্তরের মাধ্যম্যে আজকের কুইজের বিজয়ী সে। সবার আগে আমি আপনাদের তার উত্তরটা বলবো।

তো আগে বলি কুইজে ৩য় যে হয়েছে সে হলো,

মিরপুর থেকে ইশা। তার উত্তর ছিলো ভালোবাসলে ভালোবাসার মানুশকে ভরসা ও ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতে হয়।

২য় হয়েছেন ভোলা থেকে ইমন। তার উত্তর ছিলো ভালোবাসার মানুষকে শাশন ও ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতে হয়।

১ম বিজয়ী যে আমাদের আজকের কুইজের সে হলো ঢাকা থেকে রোদেলা। তার উত্তর ছিলো,,ভালোবাসার মানুষকে বিশ্বাস, ভরসা, শাশন, ভালোবাসা সব দিয়ে আগলে রাখতে হবে। এই ৪টি জিনিশের মাঝে একটি বাদ দেওয়া যাবেনা। একটা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার মুল এই ৪টা জিনিশ। ভালোবাসাকে আগলে রাখতে হলে এই ৪টা জিনিশ মাথায় রাখতে হবে। তাই ভালোবাসার মানুষকে আগলে রাখতে হলে এই ৪টি জিনিশ দিয়েই আগলে রাখতে হবে।

আসলে তার উত্তরটি আমার অনেক ভালোলেগেছে। আমি এরকম একটা আনকোমন উত্তর চাচ্ছিলাম। আমদের আজকের কুইজের বিয়জী উনি। যদিও তার নাম্বার দেননি তিনি যে কল করবো। তবুও আপনাকে অভিনন্দন মিস রোদেলা।

চলুন এবার তাহলে একটা ভালোবাসার গান শুনে তারপর ফিরে আসি।

রোদেলা কান থেকে হেডফোনটা খুলে রেখে দিলো। সে উত্তরে যা লিখেছে বাস্তবে সে কি সেটা করতে পেরেছে। তার কি উচিত ছিলো আদ্রিয়ানকে একবার নিজের দিকে বলার সুযোগ দেওয়ার। কিন্তু সেতো দেয়নি। রোদেলা আসতে করে উঠে আলমারির থেকে আদ্রিয়ানের ছবিটা এনে বুকে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরলো।

সকালে,,,,
নীলাদ্রের বাবা সোফায় বসে চা খাচ্ছে। মিসেস খান এসে তার পাশে এসে বসলো।

মিসেস খান: শুনো।
মিস্টার খান: হ্যাঁ বলো।
মিসেস খান: আজকে কিন্তু বাড়িতে কিছু স্পেসাল মানুষ আসছে।
মিস্টার খান: কারা?
মিসেস খান: তুমি ভুলে গেছো?
মিস্টার খান কিছুক্ষন চুপ করে ভাবতে লাগলেন তারপর চিৎকার করে বললেন,
মিস্টার খান: ও মাই গড আমি একদম ভুলে গেছিলাম। আজকে আরিয়ানরা আসছে। শেম ওফ মি। আমি কিভাবে ভুলতে পারি এটা।
মিসেস খান: আচ্ছা বাবা বুঝলাম। তা ওদের রিসিভ করতে যাবেনা?
মিস্টার খান: হ্যাঁ আমি ও নীলাদ্র যাবো।
মিসেস খান: আচ্ছা যেও তাহলে।
মিস্টার খান: হ্যাঁ। তুমি ওদের জন্য রেডি করে রেখো সব কিছু।
মিসেস খান: আচ্ছা ঠিক আছে।

বিকালে,,,,,
নীলাদ্র আর ওর বাবা এসেছে এয়ারপোর্টে। তারা অপেক্ষা করছে তাদের কাংখিত মানুষগুলোর জন্য। কিছু সময়ের মাঝে নীলাদ্র ওর বাবাকে বললো,

নীলাদ্র: ড্যাড ওইযে।

নীলাদ্রের বাবা তাকালো সামনে। একজন তার বয়সী লোক সাথে একজন মহিলা আর তাদের পিছনে আসছে একটা ছেলে। ব্লাক কালারের শার্ট পরা যার উপরের দুটো বোতাম খুলা। চোখে কালো সানগ্লাস, হাতে কালো ঘড়ি পরা। নীলাদ্র তাকে দেখেই তার দিকে এগিয়ে গিয়ে তাকে জরিয়ে ধরে খুশি হয়ে বলে,

নীলাদ্র: ভাই আই মিস ইউ।
ছেলেটা নীলাদ্রকে জরিয়ে ধরে বলে,
ছেলেটা: আই মিস অউ টু।

মিস্টার খান তাদের দিকে এগিয়ে এসে মিস্টার হাসানকে জরিয়ে ধরলেন।

মিস্টার হাসান: আরিয়ান তুমি আর নীলাদ্র কি আলাদা আসবে?
আরিয়ান: ইয়াহ বাবা। আমি নীল এখন একটু ঘুরবো তারপর বাসায় যাবো।
মিস্টার খান: আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে আমরা এগোলাম।
আরিয়ান: ওকে চাচ্চু।
মিস্টার হাসান আর মিস্টার খান চলে আসলেন।
নীলাদ্র: ব্রো কই যাবা বলো।
আরিয়ান: উম চল যাবো একটা জায়গায়।
নীলাদ্র: ওকে।

আরিয়ান আর নীলাদ্র গাড়িতে উঠে আর বেরিয়ে পরে।

আবরার হাসান আরিয়ান। মিস্টার হাসানের এক মাত্র ছেলে। একজন নাম করা সিংগার। দেশ বিদেশের সবাই তাকে চেনে। আরিয়ানের বাবা আর নীলাদ্রের বাবা দুইজন ভাই। নীলাদ্রের বাবার এতো সাকসেসের পিছনে আরিয়ানের বাবার অনেক অবদান আছে। আরিয়ান আর নীলাদ্র ৩ বছরের ছোট। তবে দুইজনের অনেক ভাব। একদম আপনা ভাইয়ের মতো দুইজন দুইজনের সাথে থাকে।

______________________________

রোদেলার জন্য একটা মেয়েকে আনা হয়েছে। মেয়েটার নাম হলো রাত। মেয়েটা একদম নিজ ইচ্ছায় রোদেলার জন্য এসেছে। রাফসান একবার বলায় রাজী হয়ে যায় মেয়েটা। রাফসান রাতকে নিয়ে রোদেলার রুমে আসে। রোদেলা তখন ঘুমিয়ে আছে। রাফসান রাতকে সব বুঝিয়ে দিয়ে চলে আসে। রাত রোদেলার পাশে এসে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় আর মনে মনে বলে,,

রাত: কোথায় এই সময় স্বামীর ভালোবাসা পাওয়ার কথা। তা না কি হয়ে গেলো মেয়েটার জীবনে।

রুবা বাসায় আরাভের কথা জানিয়েছে। রুবার বাবা অমত করেছেন এতে। তিনি রুবার বিয়ে অন্য কোথাও দেবেন। তিনি বলেছেন আরাভকে ভুলে যেতে। রুবা এখন এই চিন্তায় কিছু ঠিক করতে পারছেনা। রুবা আরাভের সাথেও কথা বলছেনা দুইদিন ধরে। আরাভ কল দিলে কল ধরছেনা। রুবা বুঝতে পারছেনা সে কি করবে।

আরিয়ান আর নীলাদ্র কিছু জায়গা ঘুরে বাসায় আসলো। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে নেয়। তারপর খাবার খেয়ে নেয় দুইজনে। নীলাদ্র রেডি হচ্ছে রেডিও স্টেশনে যাওয়ার জন্য। তখন রুমে নন্দিনী আসে।

নন্দিনী: এই লাভ স্টেশন করে কি লাভ যদি নিজে রুমান্টিক না হতে পারো।
নীলাদ্র: মানে?🙄
নন্দিনী: মানে বাসায় যে আমি আছি তাতো চোখেই লাগেনা।
নীলাদ্র এভার নন্দিনীর দিকে ঘুরে ওর কোমরে হাত রেখে ওকে কাছে টেনে নিলো। নন্দিনী লজ্জায় লাল হয়ে যায়। নীলাদ্র নন্দিনীর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে,

নীলাদ্র: আর তো কয়েকটা দিন। তারপর তো আপনি মেডাম আমার সাথে বন্ধি হয়ে যাবেন। তখন পালানোর জায়গা পাবেননা।
নন্দিনী নীলাদ্রের কথায় অনেক লজ্জায় পায় তাড়াতাড়ি নিজেকে নীলাদ্রের থেকে ছাড়িয়ে নেয়। তারপর নীলাদ্রকে ভেংচি কেটে বেরিয়ে আসে ওর রুম থেকে। নীলাদ্র তা দেখে হেঁসে দেয়।

______________________

আরিয়ান সোফায় বসে আছে। নীলাদ্রকে বের হতে দেখে আরিয়ান ওকে বলে,

আরিয়ান: কই যাচ্ছিস?
নীলাদ্র: রেডিও স্টেশন। ১২টায় সো আছে।
আরিয়ান: আমিও যাবো তোর সাথে।
নীলাদ্র: Wow Great. তুমি গেলেতো ভালো হবে। তুমি আমার আজকের সো এর স্পেসাল অথিতি হয়ে যাবে।
আরিয়ান: আচ্ছা চল।

নীলাদ্র আরিয়ানকে নিয়ে বেরিয়ে আসলো। আরিয়ান একটা হুডিওয়ালা জ্যাকেট মাস্ক সানগ্লাস পরেছে। আরিয়ান দেশে আসছে এটা সব টিভি নিউজে ইতিমধ্য প্রচার হয়ে গেছে। তাই সে এখন কারো সামনে পরতে চাচ্ছেনা। নীলাদ্র আর আরিয়ান রেডিও স্টেশনে চলে আসলো। নীলাদ্র তার সো রুমে আরিয়ানকে নিয়ে আসলো। তারপর শুরু করলো তার সো।

নীলাদ্র: Hello Everyone. চলে আসলাম আজকে আবার তবে আজকে আমি একা না। আজকে আমাদের এই Love To Heart Connection সো তে একজন বিষেশ অতিথি আছে। যার গানের জন্য সবাই পাগল। Yes The On And Only Abrar Hasan Ariyan. আজকে আমাদের সো এর অতিথি। সো মিস্টার আরিয়ান ওয়েলকাম টু মাই সো।

আরিয়ান: ধন্যবাদ। আমার এখানে এসে অনেক ভালো লাগছে।

রোদেলা আরিয়ানের নাম আর গলা শুনে চমকে যায়। তবুও সেদিকে পাত্তা না দিয়ে সো শুনতে থাকে।

নীলাদ্র: ওকে সো আজকে আমরা আমাদের সো শুরু করবো আপনার একটা গান দিয়ে।
আরিয়ান: ওকে।

নীলাদ্র একটা গিটার এগিয়ে দিলো আরিয়ানের দিকে। আরিয়ান চোখ বন্ধ করে গান শুরু করলো।

“বিষাদের দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমেছে”
“চাঁদ নামেনি এখনো প্রানহীন সন্ধ্যাতারা ফুঁটেছে”
“ইচ্ছে স্বপ্ন মিশে গেছে আঁধারে ”
“তোমার চলে যাওয়া বদলে দিয়েছে আমাকে”
“অহেতুক তুমি ছুঁটেছো”
” মিঠি সস্তি খুঁজেছো”
“তোমার আমার ব্যাবধান এখনো সর্বোচ্চ ”
“আয়নায় চেয়ে দেখো চোখ কি বলে”
“ঠোঁটে হাঁসি নেই তোমার ”
“আমি আজ নেই বলে”

আরিয়ান গানটা শেষ করে চোখ খুললো। নীলাদ্র তারপর আরেকটা গান বাজালো।

রোদেলা আরিয়ানের গান শুনে চুপ হয়ে গেছে। গানের প্রতিটা লাইনে যেনো আরিয়ান কোনো চাঁপা কষ্ট অনুভব করাচ্ছিলো।

সো শেষ করে আরিয়ান আর নীলাদ্র ক্লাবে গেলো।

রাত রোদেলা কিছু খাইয়ে ঘুম পারালো।

সকালে,,,,,

আরিয়ানের আজকে একটা গানের কনসার্ট আছে। ওর ম্যানেজার ওকে জানাইয়েছে সকালে। বিকালে কনসার্ট আছে। আরিয়ান ফোনে ম্যানেজারের সাথে কথা বলে ব্রেকফাস্ট করতে নিচে যায়।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে