প্রাণেশ্বরী পর্ব-২২+২৩

0
674

#প্রাণেশ্বরী
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat
#পর্ব-২২

“কিছু কি বলেছেন?”

প্রাণের মনোযোগ সামনে হওয়ায় ছন্দের কথা তার কর্ণকুহরে স্পষ্টভাবে পৌঁছায়নি। যার দরুণ প্রশ্নটি করে সে। ছন্দ তৎক্ষনাৎ নাকচ করে বললো, “না তো!”

প্রাণ আর প্রশ্ন করলো না। সামনে তাকিয়ে অপার্থিব দৃশ্যটি দৃষ্টিতে বন্দী করতে চাইলো। মৃদু কন্ঠে বললো, “আমার দেখা বেস্ট সানসেট এটা।”

ছন্দ হেসে বললো, “আমারও। তাই তো প্রত্যেকবার এর টানে চলে আসি এখানে।”

প্রাণ আশেপাশে একবার তাকালো, “কিন্তু এখানে কোন মানুষ নেই কেন?”

ছন্দ মাথার পিছনে হাত গলিয়ে বললো, “বিকেলের পর এখানে আর ভিজিটরস আসে না। যার জন্য কেউ জানেও না এখানের সানসেট ভিউ এত সুন্দর। জানলে এখানে দাঁড়ানোরও জায়গায় পেতান না। আর না শান্তিতে দৃশ্যটা উপভোগ করতে পারতেন।”

ছন্দের কথায় যুক্তি খুঁজে পেল প্রাণ। এখানকার নীরবতা সাথে প্রকৃতির মোহমুগ্ধতা সংবলিত হয়েছে বিধায় এতটা মনে ধরেছে তার। অন্যথায় শত মানুষের ভিড়ে দুদণ্ড দাঁড়াতে পারতো না সে। অস্বস্তি,বিরক্তিতে আবৃত হতো। তবে একটা প্রশ্ন মস্তিষ্কে টনক নাড়তেই প্রাণ বলে উঠলো, “কিন্তু আপনি জানলেন কিভাবে?”

ছন্দ হেসে বললো, “হুট করেই।”

“মানে?”

“একবার একটা ম্যাচ হেরেছিলাম খুব বাজেভাবে। তাই মন ভালো করতে এখানে ঘুরতে এসেছিলাম। তবে কে জানতো সৈকতের পাড়ে বসে বসেই এমন এক মনভুলানো দৃশ্য আবিষ্কার করে ফেলবো?”

প্রাণ প্রশ্ন করে না আর। তার অজানা সব উত্তর জেনে নিয়েছে সে। অকস্মাৎ ছন্দ বলে উঠলো, “পানিতে পা ভিজাব আসেন।”

ছন্দের প্রস্তাবে প্রাণ সম্মতি জানাতেই দুইজন গিয়ে বসে পাড়ের দিকে।

____

আঁধার গভীর হয়ে এসেছে ইতোমধ্যে, কেওড়াবাগান জুড়ে পিনপতন নীরবতা। শীতল হাওয়ায় উড়ছে রমণীর ছোট ছোট চুলগুলো, মাঝে-সাঝে চোখের সামনে এসে বিরক্ত করার চেষ্টা করছে তাকে। কিন্তু ব্যর্থ হচ্ছে প্রতিবার। কেন না রমণীটির সম্পূর্ণ ধ্যাণ যে অন্যদিকে, ঐশ্বরিক মায়ায় আচ্ছাদিত সৈকতের কলকাকলিতে। এ যেন তার কল্প রাজ্যের খুবই কাঙ্ক্ষিত এক জায়গায়, শত দেখেও তৃষ্ণা মিটবে না। অথচ তার পাশে বসে থাকা মানবটি প্রকৃতির অপরূপ লীলা উপেক্ষা করে দেখে চলেছে তাকে। অনুদ্ধত, মুগ্ধ দৃষ্টিতে। কিছুক্ষণ এভাবেই কেটে যাওয়ার পর মানবটি বলে উঠলো, “যাবেন না?”

ছন্দের প্রশ্নে প্রাণের ধ্যাণ ভাঙ্গে। সে পাশ ফিরে তাকায়, মন্থর কন্ঠে বললো, “আরেকটু থাকি?”

ছন্দ একবার সময়ের দিকে নজর বুলায়, রাত আটটা বাজে। জনমানবহীন সৈকতে তারা দুইজন শুধু, থাকাটা এখন একদম অনুচিত। তাই ছন্দ জোর দিয়ে বললো, “আটটা বেজে গিয়েছে, এখন না গেলে নৌকা চলে যাবে।”

প্রাণ বিমর্ষ কন্ঠে বললো, “অহ!”

ছন্দ হয়তো বুঝলো প্রাণের অনুভূতি, তাই বললো, “আপনি চাইলে আবার আরেকদিন আপনায় নিয়ে আসব কিন্তু আজ উঠতে হবে আমাদের।”

প্রাণ দ্বিরুক্তি করলো না৷ মাথা দুলিয়ে পানি থেকে পা উঠিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলো। মাটি পিচ্ছিল হওয়ায় পা ফসকে পড়ে যেতে নিলে ছন্দ তার হাত শক্ত ধরে ফেলে এবং নিজের দিকে টেনে আনে। মুহূর্তে দুইজনের দূরত্ব ঘুচে আসে, মুখ চলে আসে সন্নিকটে। দৃষ্টি বিনিময় হয় নিবিড়ভাবে। ছন্দ ঈষৎ হেসে বললো, “ধীরে-সুস্থে উঠুন।”

প্রাণ দ্রুত নিজেকে সামলে সরে আসে। ক্ষীণ কন্ঠে বললো, “সরি!”

ছন্দ কথা না বলে উঠে দাঁড়ায় এবং প্রাণের দিকে হাত এগিয়ে দিয়ে বললো, “আসুন!”

প্রাণ লম্বা নিঃশ্বাস ফেলে ছন্দের হাত ধরে উঠে দাঁড়ালো। অতঃপর এগিয়ে গেল নৌকার দিকে।
.
গুলিয়াখালীর পাড়ে এসে নামতেই ছন্দ এদিক-সেদিক তাকিয়ে রিজার্ভ করা সিএনজিটি খুঁজতে থাকে। কোথাও সিএনজিটি দেখতে না পেয়ে কল দেয় সে। কিন্তু ফোন রিসিভ করে না কেউ। তিন-চারবার ফোন লাগাতেই ফোন সুইচড অফ বলা শুরু করে। ছন্দ ঘটনা বুঝতে পেরে মাটিতে পড়ে থাকা এক পাথরে লা’থি মা’রে৷ অস্ফুটস্বরে বলে উঠলো, “শি’ট ম্যান!”

প্রাণ সন্দিহান কন্ঠে জিজ্ঞেস করল, “কি হয়েছে?”

ছন্দ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললো, “সিএনজিটা আমাদের রেখেই চলে গিয়েছে।”

প্রাণের দৃষ্টি বড় হয়ে আসে। স্বতঃস্ফূর্ত কন্ঠে বললো, “কিন্তু কেন?”

ছন্দ বললো, “তা আমি কিভাবে জানবো?”

প্রাণের কপালে ভাঁজ পড়ে। পুনরায় প্রশ্ন করে উঠলো, “যাব কিভাবে এখন? অন্য সিএনজি পাওয়া যাবে না?”

ছন্দ আশেপাশে তাকিয়ে বললো, “সম্ভব না। এভাবেই এখানে সন্ধ্যার আগে সিএনজি পাওয়া যায় না। আর এখন তো সিএনজি বা অন্য কোন ট্রান্সপোর্ট পাওয়া অসম্ভব ব্যাপার।”

“এখন?”

“জানি নাহ! এই ঘটনা এড়ানোর জন্যই সিএনজি চালককে বেশি টাকা দিয়ে এখানে অপেক্ষা করতে বলে গিয়েছিলাম। কিন্তু সে যে এমন বা’ট’পা’র বের হবে কে জানতো? আগে কখনো হয়নি এমন, তাই ভাবিনি এসবও হতে পারে।”

চিন্তাভাবনার মাঝে প্রাণ বো’কা মত একটি প্রশ্ন করে বসলো, “হেঁটে যাওয়া যাবে না?”

ছন্দ অপার বিস্ময় নিয়ে বললো, “আপনার কি মাথা খারাপ? কতখানি রাস্তা জানেন? হেঁটে গেলে দুইদিনেও পৌঁছাতে পারবো কি-না সন্দেহ। তার উপর সামনের এলাকাও নিরাপদ না।”

প্রাণ মৌন রইলো। বিভ্রান্ত দৃষ্টিতে চারপাশ দেখতে থাকলো। এখানে থাকা-খাওয়ার মত কোন ব্যবস্থাই নেই, কিভাবে কি করবে তারা কে জানে? ছন্দ কতক্ষণ এদিক-সেদিক পায়চারী করতে থাকলো। প্রাণ তা দেখে বললো, “কাউকে ফোন করে বলা যায় না?”

ছন্দ পাশ ফিরে তাকালো, “কাকে করবো? আমার পুরো টিম আজ সকালেই ঢাকা চলে গিয়েছে, বাকি আছি শুধু আমি।”

প্রাণ ছোট করে বললো, “অহ।”

ছন্দ নিজেকে কোনরকম ধাতস্থ করে প্রাণকে বললো “আপনি এখানে দাঁড়ান। আমি দেখছি কিছু একটা ব্যবস্থা করা যায় কি-না।”

“আচ্ছা।”

ছন্দ এবার একটু এগিয়ে গিয়ে খোঁজ চালালো। এদিকে ছন্দ যেতেই প্রাণের চৈতি কথা মনে পড়লো। তাই সে বিলম্ব না করে তার সাথে কন্টাক্ট করার জন্য ফোনটা বের করলো। কিন্তু ভাগ্য খারাপ থাকলে যা হয়, ফোন অন করতে গিয়ে বুঝতে পারলো ফোন বন্ধ তার, চার্জ শেষ বোধহয়। প্রাণ বিতৃষ্ণায় ‘চ’ উচ্চারণ করার মত শব্দ করে উঠলো। এখন ছন্দ কিছু না করতে পারলে সারারাত হয়তো দাঁড়িয়েই পার করতে হবে তাদের।
কিয়ৎক্ষণ পর ছন্দের দেখা মিলে৷ প্রাণের নিকট আসতেই সে জিজ্ঞেস করলো, “কোন ব্যবস্থা হয়েছে কি?”

ছন্দ মাথা নেড়ে বললো, “আজকের রাতটা নৌকায় কাটাতে হবে আমাদের। আপাতত এই জোগাড়ই করতে পেরেছি আমি, এর বেশি কিছু সম্ভব না।”

প্রাণ কিছু বলতে চাচ্ছিল কিন্তু পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে মৌন থাকলো। ছন্দ জিজ্ঞেস করল, “তাহলে যাওয়া যাক?”

প্রাণ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলল, “হুম।”
.

নক্ষত্রবিহীন অম্বরের মধ্যস্থলে এক ফালি চাঁদ মিটিমিটি হাসছে যেন। চাঁদের সৌন্দর্য তুলতে সমুদ্র তুলে ধরে বাস্তব আয়না।আঁধারকে উজ্জীবিত করতে এক ঝাঁক জোনাকি ডানা পেলে উড়ছে ভাবলেশহীন। টিমটিম আলোয় জ্বলছে প্রকৃতি। নিস্তব্ধতা গলিয়ে দূর থেকে ভেসে আসা শিয়ালের ডাক আর ঝিঁ ঝিঁ পোকার সুর। সাথে সৈকতের প্রবাহমান স্রোত তুলছে অন্য আরেক সুর। প্রাণ পা দুটো স্রোতস্বীনির বুকে ডুবিয়ে মোহগ্রস্ত দৃষ্টিতে আকাশ দেখছে। অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রীতিকর সব ঘটনার মাঝে এমন এক দৃষ্টিনন্দন, চিত্তাকর্ষক রাত উপহার পাবে তা সত্যি অকল্পনীয় ছিল। দুরূহ হাসিটা আজ তার ঠোঁট কোণ থেকে সরতেই চাইছে না। বহুদিন পর, আনকোরা এক শান্তি অনুভব হচ্ছে বক্ষস্থলে। এখন লাগছে, যা হয়েছে ভালোই হয়েছে। অন্যথায় এই সুন্দর রাতটি দেখা থেকে বঞ্চিত হতো সে। কিন্তু অন্যদিকে, প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্য পুনরায় উপেক্ষা করে মানবটি দেখে চলেছে প্রাণবন্ত রমণীটাকে। কারণবিহীন। সে নিজের মনকে তৃপ্ত করছে নাকি চোখকে জানা নেই। তবে প্রকৃতি তার এমন নিষ্ঠুর আচরণে অসহায়বোধ করলো। চিৎকার করে জিজ্ঞেস করে উঠলো, “কে বেশি সুন্দর?” মানবটি যদি সেই প্রশ্ন শুনতে পেত নিঃসন্দেহে বলে উঠতো মনোহারিণী কন্যাটির নাম।
কতক্ষণ এভাবে কেটে গেল জানা নেই কারো। তবে পাকস্থলী মোচড় দিয়ে উঠা মাত্র সকল ধ্যাণ কেটে গেল। ছন্দ নিজের ব্যাগ থেকে শুকনো সব খাবার বের করে এগিয়ে গেল প্রাণের পাশে৷ ভাগ্যিস তখন সীতাকুণ্ড থেকে কিছু খাবার কিনে নিয়েছিল, নাহলে রাত বোধহয় না খেয়েই পার করতে হতো। দু’প্যাকেট চিপস ও বিস্কুট প্রাণের দিক এগিয়ে বললো, “আপাতত এর চেয়ে ভালো ডিনার এরেঞ্জ করা পসিবল না, তাই এগুলাই খেয়ে নিন। খিদা পেয়েছে নিশ্চয়ই।”

প্রাণ নীরবে নিয়ে নেয় সেসব। চিপসের প্যাকেট প্রথমে খুলে খেতে শুরু করে সে। তবে নয়ন জোড়া তার জোনাকি দেখতে ব্যস্ত৷ হঠাৎ মনের দুয়ারে কড়া নাড়ে কিছু স্মৃতি। তখন তার পাঁচ বছর, মায়ের সাথে কোন এক কাজে সিলেট গিয়েছিল সে। সেখানেই প্রথম জোনাকি দেখেছিল। কতটা না খুশি হয়েছিল সে জোনাকি দেখে। অতঃপর মায়ের নিকট জোনাকি ধরার সে কি বায়না। তার মাও প্রতিবারের মত তার বায়না পূরণ করতে একটা জোনাকি ধরে এনে তার হাতে দিল। কতটাই না খুশি হয়েছিল সে। মাকে বলেছিল সে বার বার আসতে চায় এখানে৷ মাও তার রাজি হয়েছিল। ওয়াদা করেছিল তাকে প্রত্যেক গ্রীষ্মে জোনাকি দেখাবে। কিন্তু তবুও এরপর আর কখনো তার জোনাকি দেখার সুযোগ হয়নি। হতোই বা কিভাবে? জীবন তো তখন তার বিষন্নতা,একাকিত্বের চাদরে জড়িয়ে পড়েছিল, হারিয়ে গিয়েছিল বায়না ধরার মানুষটি। বাহিরের জগৎ দেখার সময় ছিল বা কই?
সুন্দর মুহূর্তের মাঝে হঠাৎ তিক্ত,অপ্রিয় স্মৃতিগুলো হানা দিতেই হাসিটা মিলিয়ে যায় তার৷ নিজেকে সামলাতে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললো সে। ছন্দের কাছ থেকে পানির বোতলটা নিয়ে এক ঢোকে খানিকটা পানি খেয়ে ফেললো সে। হঠাৎ করেই ছন্দ তার সামনে একটি জোনাকি এনে বলল, “হাতে দেন।”

প্রাণ বিস্ময়কর দৃষ্টিতে তাকালো। বললো, “এটা কখন ধরলেন আপনি?”

ছন্দ হেসে বললো, “যখন আপনি তাদের দেখতে ব্যস্ত ছিলেন, তখন। এখন জলদি নিন।”

প্রাণ ছন্দের দিক তাকিয়ে হাত উঠাতেই তার জোনাকিটা দিয়ে দেয়। সাথে সাথে প্রাণ আরেক হাত অন্য হাতটি ধরে নেয়, যাতে তা উড়ে না যায়৷ নিজের হাতের মুঠোয় কিছুক্ষণ রেখে, হাসি মুখে জোনাকিটিকে শূন্যে উড়িয়ে দিল সে। অতঃপর আকাশের পানে তাকিয়ে থেকে বলল, “আপনি আজ ফিরে গেলেন না কেন?”

ছন্দ ভাবান্তরহীন কন্ঠে বলল, “এখানে আসব বলে।”

প্রাণ যৎসামান্য সময় নিস্পন্দ থেকে বলল, “আমার মায়ায় পড়া কিন্তু বারণ, জানেন নিশ্চয়ই?”

ছন্দের ভ্রু কুঁচকে বলল, “আপনার মায়ায় পড়তে চাইছে কে? নট মি এট অল।”

প্রাণ উত্তর করলো না। কিয়ৎক্ষণ নীরব থেকে বলে উঠলো, “ধন্যবাদ!”

ছন্দের কপালে এবার ভাঁজ পড়লো “কিসের জন্য?”

“মায়াময় প্রকৃতির সাথে আমার পরিচয় করার জন্য।”

ছন্দ প্রত্যুত্তরে মিষ্টি হাসলো শুধু।

______

সকাল হতেই ছন্দের সিএনজির ব্যবস্থা করে ফেললো। ঘন্টার দুই-একের মাঝেই পৌঁছে গেল হোটেল। ছন্দের থেকে বিদায় নিয়ে প্রাণ নিজের রুমে ঢুকতেই চৈতিকে দেখতে পেল। চৈতি উঠে দাঁড়িয়েছে ইতোমধ্যে। প্রাণের সামনে দাঁড়িয়ে উদ্বিগ্ন কন্ঠে জিজ্ঞেস করে, “কাল সারারাত কোথায় ছিলেন আপনি ম্যাম? জানেন কতটা টেনশনে ছিলাম আমি? ফোনও অফ ছিল আপনার।”

“কাম ডাউন, চৈতি। ঠিক আছি আমি।”

প্রাণ ঠিক দেখে চৈতি নিজেকে সামলে নেয়। অতঃপর বলে, “ছিলেন কোথায় আপনি? আরেকটু দেরি করলে হয়তো আমি ফিল্ম ক্রিউ মেম্বারদের জানাতাম সব। এভাবেই কাল রাতে যা ঘটেছে তারপর বেশ ভয়ে ছিলাম আমি।”

প্রাণ ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে, “কাল কি হয়েছে?”

চৈতি থেমে বলে, “জেসিকা সু’ই’সা’ই’ড করেছে, ম্যাম।”

#চলবে

#প্রাণেশ্বরী
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat
#পর্ব-২৩

চৈতি থেমে বলে, “জেসিকা সু’ই’সা’ই’ড করেছে, ম্যাম।”

প্রাণ কম্পিত কন্ঠে জিজ্ঞেস করে, “কখন? কিভাবে?”

চৈতি ধাতস্থ কন্ঠে বলে, “কাল রাতে! তার বাসা থেকেই পুলিশ তার লা’শ উদ্ধার করেছে।”

প্রাণ স্তব্ধ নয়নে তাকিয়ে থাকে চৈতির পাণে। বিষয়টা সে কোনভাবেই হজম করতে পারছে না। সর্বাঙ্গে তার বয়ে চলেছে হিম স্রোতের ধারা। শিউরে উঠছে সে ক্ষণে ক্ষণে। হাতের লোম দাঁড়িয়ে গিয়েছে ইতোমধ্যে। বল হারাচ্ছে মন-মস্তিকের। প্রাণের অবস্থা শোচনীয় হতে দেখে চৈতি দ্রুত এগিয়ে গিয়ে তাকে ধরে বিছানায় এনে বসায়। টেবিল থেকে এক গ্লাস পানি নিয়ে এগিয়ে দেয় তার দিকে। প্রাণ গ্লাসটা হাতে নিয়ে এক নিঃশ্বাসে সবটুকু পানি খেয়ে ফেললো। তারপর চৈতির দিক তাকিয়ে তার মোবাইলটি দিতে বলে। চৈতি নিজের ফোনটি এগিয়ে দিতেই প্রাণ নিউজফিড চেক করলো। জেসিকার আ’ত্ম’হ’ন’নে’র খবরটি আ’গু’নে ন্যায় ছড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নতুন করে হাজারো হেডলাইন তৈরি হচ্ছে তাকে নিয়ে। কয়েকটা পোস্টে তার মৃ’ত মুখশ্রীর ছবিও দিয়েছে৷ কি বি’ভ’ৎ’স এই না দেখাচ্ছে তাকে। চোখের নিচে জমে আছে গভীর কালি, ফ্যাকাশে মুখখানা শুকিয়ে শী’র্ণ, শরীরের হাড্ডি সব ফুটে উঠেছে, গলদেশের দিক গাঢ় কালচে দাগ। তাকে কোন মু’মূ’র্ষু রোগীর চেয়ে কম লাগছে না। বুঝাই যাচ্ছে, একদিনের সিদ্ধান্তেই এই পদক্ষেপ নেয়নি সে। কিন্তু তবুও কেউ করুণা, দুঃখ বা শোক প্রকাশ করছে না তার প্রতি। তার মৃ’ত্যুর খবরেও বি’ক্ষো’ভ’ই প্রকাশ করেছে সবাই। সকলের একই মন্তব্য, “এক পাপ থেকে বাঁচতে আরেক মহাপাপ করেছে সে। শেম অন হার।”
কেউ কেউ আবার বলছে, “যে কাজের জন্য মানুষের নিকট হতে অবজ্ঞা, লাঞ্ছনা,অপমান সহ্য করতে হয়, এমন কাজ করেছেই বা কেন? আর এখন এসব থেকে মুক্তি পেতে সহজ পথ বেছে নিল?” চারদিকে তাকে নিয়ে এমন হাজারো ঘৃণ্য মন্তব্য।
জেসিকার ছবিটি এপলক দেখার পরই প্রাণ দ্রুত দৃষ্টি সরিয়ে নিল। মোবাইলটা ছুঁড়ে বিছানার আরেকপ্রান্তে ফেলে দিল। মুহূর্তেই প্যানিক করতে শুরু করল। মৃ’ত্যু জিনিসটা সে সহজভাবে নিতে পারে না। তার কাছে মৃ’ত্যু মানে অভিশাপস্বরূপ। সহ্য করতে পারে না একদম এটা। আর যদি সে-টা হয় জানা-পরিচিত কারো তাহলে তো আরও না। ফোবিয়ার মত কাজ করে তার। অথচ মেয়েটা নিজের মৃ’ত্যুকেই ভয় পায় না। অদ্ভুত তাই না?
প্রাণকে প্যানিক করতে দেখে চৈতি দ্রুত তাকে শান্ত করার চেষ্টা করল। কিন্তু ব্যর্থ হলো। সাহাস্যের জন্য কাকে ডেকে আনবে বুঝে উঠতে পারলো না। উপরন্তু, রুম থেকে বের হওয়ার সাহসটা হলো না তার। সে বের হলে যদি প্রাণের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়, এই ভয়ে। সে ক্রমান্বয়ে প্রাণকে স্থির করার চেষ্টা করতে থাকলো। কিন্তু লাভ হলো না। প্রাণ ধীরে ধীরে অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করল। কোনভাবে সে সবকিছুর জন্য নিজেকে দায়ী মানছিল। নিতে পারছিল না সে বিষয়টা।যার ফলে রিয়্যাকশন বেশি দেখা দিচ্ছিল।
চৈতি জানে এখন প্রাণকে সামলাতে পারলে একমাত্র আশা বেগম পারবেন, তাই বিলম্ব না করে তাকেই কল লাগালো সে। কিন্তু আফসোস অপরপ্রান্তে কেউ ফোন রিসিভ করলো না। সে লাগাতার ফোন লাগিয়ে যায়, তবে কাজ হলো না। এমন সময় দরজা করাঘাত পড়ল, চৈতি আশার কিঞ্চিৎ আলো দেখতে পেয়ে দ্রুত ছুটে গেল দরজার নিকট। দরজা খুলতেই ছন্দ বলে উঠল, “আপনার ফো….”

ছন্দ পূর্ণ বাক্য শেষ করার পূর্বেই চৈতি ব্যগ্র কন্ঠে বলে, “ছন্দ স্যার! প্লিজ হ্যাল্প। ম্যামের কন্ডিশন অনেক সিরিয়াস। আপনি প্লিজ ভিতরে আসুন।”

ছন্দ বিহ্বলিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, “কি হয়েছে তার?”

চৈতি তাড়া দিয়ে বলে, “প্রশ্ন পড়ে করবেন, আগে ভিতরে আসুন।”

ছন্দ দ্বিরুক্তি করলো না, ত্বরান্বিত গতিতে ঢুকে পড়লো ভিতরে৷ প্রাণকে অস্বাভাবিক আচরণ করতে দেখে তার মনে পড়ে গেল সেই রাতের কথা। আশঙ্কা দেখা দিল মনের গহীন। সাথে অপ্রিয় এক ভয়। সে ত্বরিত বেগে এগিয়ে প্রাণের পাশে গিয়ে বসলো, প্রাণের গালে এক হাত দিয়ে চাপড় মেরে জিজ্ঞেস করতে থাকে “মিস. ল্যাভেন্ডার কি হয়েছে আপনার? আপনি এমন করছেন কেন?”

প্রাণ আনমনে বিরবির করতে থাকে। তবে প্রাণ কি বলছে তা স্পষ্টভাবে কিছুই বুঝতে পারলো না ছন্দ। তাই বার বার জিজ্ঞেস করতে থাকলো কি হয়েছে৷ অকস্মাৎ চৈতি বলে উঠল, “আপনি একটু ম্যামকে দেখুন স্যার। আমি এখনই আসছি।”

কথাটা বলেই চৈতি দৌড়ে বেরিয়ে গেল রুম থেকে। এদিকে ছন্দ ব্যস্ত হয়ে পড়ল প্রাণকে সামলাতে৷ শেষে কোনভাবেই প্রাণকে স্থির করতে না পেরে তাকে নিজের বক্ষঃস্থলের মাঝে চেপে ধরলো ছন্দ৷ কোমল, সন্তর্পণ হাতে প্রাণের মাথায় হাত গলিয়ে দিয়ে তাকে ক্ষান্ত করার প্রয়াস চালালো। এই উপায়টা কাজেও দিল বোধহয়। প্রাণ ধীরে ধীরে অনুদ্ধত হতে শুরু করলো। এর মাঝেই চৈতি ফিরে এলো কিছু মেডিসিন নিয়ে। ছন্দের বক্ষপটে প্রাণকে স্থির হতে দেখে অবাক না হয়ে পারলো না। কেন না, আশা বেগম বাদে প্রাণকে এমতাবস্থায় সামলানো সকলের নিকট দুরূহ বিষয়বস্তু। অথচ এই সুসাধ্যকে সাধ্য করে ছন্দ প্রাণকে সামলাতে সক্ষম হয়েছে। চৈতি কিছুক্ষণ বিস্ময়বিহ্বল হয়ে মূর্তির ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকে। অতঃপর তার মস্তিষ্কের টনক নাড়তেই কথাবার্তা বিহীন ঔষধের পাতা থেকে দুটো টেবলেট বের করে জোর করে খায়িয়ে দিল প্রাণকে। কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানেই সে ছন্দের বুকেই নিস্তেজ হয়ে পড়লো। ছন্দ তা দেখে বলল, “কিসের ঔষধ দিলে তুমি তাকে? হঠাৎ তিনি এমন নিস্তেজ হয়ে পড়লেন কেন?”

চৈতি মাথা নিচু করে বলে, “আপনাকে বা কাউকে সে-টা জানানোর অনুমতি নেই আমার, স্যার। শুধু এতটুকু জানাতে পারি, ম্যামের ভালোর জন্যই ঔষধগুলো দেওয়া হয়েছে। আর ওটার ইফেক্টের কারণেই ম্যাম নিস্তেজ হয়ে পড়েছেন।”

ছন্দ তীর্যক দৃষ্টিতে তাকায়, “কিন্তু আমি জানতে চাই কিসের টেবলেট এগুলা। আর কেন দেওয়া হচ্ছে তাকে?”

চৈতি মাথা নিচু করে বলে, “সরি স্যার! বাট আই কান্ট।”

ছন্দ কিছু বলতে চাইছিল কিন্তু এর আগেই চৈতির ফোন বেজে ওঠলো৷ কল স্ক্রিনে ভাসলো আশা বেগমের নাম। চৈতি দ্রুত ফোন তুলল এবং কথা বলতে শুরু করল। কিয়ৎক্ষণের মাঝেই সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলল আশা বেগমের নিকট। অতঃপর ওপাশ থেকে তিনি কি বললেন শোনা গেল না তবে একটু পর চৈতি ফোনটা ছন্দের দিক এগিয়ে বলল, “আশা ম্যাম কথা বলতেন চান আপনার সাথে। নিন!”

ছন্দ জিজ্ঞাসুক দৃষ্টিতে তাকালো। একহাতে প্রাণকে সামলে অন্যহাতে ফোনটি কানে তুলে নিল সে। সালাম দিয়ে কথা বলা শুরু করলো। এরপর তাদের কি কথা হলো তা জানা গেল না, তবে ছন্দের অশান্ত মন শান্ত হলো। প্রশ্নের উত্তরও বোধহয় পেল। কথা শেষে ছন্দ ফোনটা চৈতিকে ফেরত দিয়ে দিল। পাল্টা কোন প্রশ্নই করলো না তাকে৷ সে আর কোনদিক না তাকিয়ে খুব সন্তপর্ণে প্রাণকে বিছানায় শুয়ে দিল। পকেট থেকে তার ফোনটি বের করে পাশে রেখে দিল। কাল রাতে প্রাণই তার কাছে ফোনটা দিয়েছিল রাখতে, কিন্তু হোটেল এসে ফেরত নিতে ভুলে গিয়েছিল বোধহয়। তাই সে ফেরত দিতে এসেছিল, কিন্তু এখানে এসে এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে কে জানতো? ছন্দ প্রাণের দিকে নিষ্পলক,নিরাসক্ত নয়নে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ। ঘুমন্ত তাকে কতটা না নিষ্পাপ লাগছে। দুনিয়ার সকল মায়ায় যেন এসে ভড় করেছে তার মুখখানিতে। হুট করেই তার মনের মাঝে সুপ্ত এক ইচ্ছা জায়গা নিল৷ বাস্তবে সেই ইচ্ছেটা পূরণ করার তীব্র আকাঙ্খাও জাগলো তবে নিজেকে সংবরণ করলো। পরমুহূর্তেই সে উঠে দাঁড়ালো। প্রাণের দিক তাকিয়ে দীর্ঘ এক নিঃশ্বাস ফেলে বেরিয়ে গেল রুম থেকে।

_______

প্রাণ ঢাকায় ফিরে এসেছে সপ্তাহ খানেক হতে চলল। সেদিন প্রাণের শরীর খারাপ ছিল বলে বিকেলের মধ্যেই রওনা দিয়ে ফেরত চলে আসে তারা। শুটিংয়ের কাজও শেষ হয়ে গিয়েছিল বিধায় কেউ তাদের ফেরা নিয়ে প্রশ্ন করেনি। ছন্দও তাদের সাথেই ফেরত চলে আসে। ফ্লাইট থেকে নামার আগ পর্যন্ত একসাথে থাকে তারা। পুরো পথ ছন্দ প্রাণের দিক খেয়াল রেখেছিল এমনকি চেয়েছিলও প্রাণকে বাসায় পৌঁছে দিতে। কিন্তু প্রাণের অসম্মতির জন্য পারে না। যার ফলে ফ্লাইট থেকে নামার পর দুইজন যে যার পথে চলে।

এদিকে, ‘সুখনীড় ভিলা’-তে ফেরত আসার পর প্রাণ বেশ চুপচাপ হয়ে যায়। কোন এক কারণে নিজের মনের মধ্যে গেঁথে নেয় তার জন্যই জেসিকার এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যার জন্য, সে ডিপ্রেশনে পড়ে যায়। এই সময়টা জুড়ে আশা বেগম খুব যত্নের সহিত প্রাণকে আগলে রাখে। তাকে একমূহুর্তের জন্য একা ছাড়েনি। বুঝায় তাকে জেসিকার মৃ’ত্যুর জন্য সে দায়ী না। মেন্টালি,ফিজিকালি ফুললি সাপোর্ট করে তাকে। হয়তো আশা বেগমের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে প্রাণ দ্রুত রিকোভার করে। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে আশা বেগমের বলায় আসল ঘটনা বুঝতে পারে।

সেসময় জেসিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত চরমভাবে অপদস্ত হচ্ছিল। তার বাবা-মাও তাকে একা ফেলে দিয়েছিল, ত্যাজ্য উপাধি দিয়ে। হাতে থাকা সব কাজ তার চলে যায়, ব্যান হয়ে যায় ইন্ডাস্ট্রি থেকে। তার নাম-খ্যাতি, ক্যারিয়ার, ফ্যামিলি,ফ্যান-ফলোয়ার সব নিমিষেই হারিয়ে যায়। যা সে মেনে নিতে পারেনি। প্রথম দিকে এসব নিয়ে অবাধ পাগলামি করলেও একসময় নীরব হয়ে যায় সে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে গৃহবন্দী করে ফেলে নিজেকে। ফ্রাস্ট্রেশন, ডিপ্রেশন, অ্যাংজাইটি নামক ভ’য়ং’ক’র বস্তু বাসা বাঁধতে শুরু করে তার মাঝে। একাকিত্ব হ্রাস করে ফেলে তাকে পুরোপুরি। কথায় আছে, যেমন কর্ম তেমন ফল। জেসিকাও ঠিক তার কর্মের ফল পাচ্ছিল। এন্টারটেইনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রির জৌলুসে নিজের গা এভাবেই ভাসিয়ে ফেলেছিল যে, এখানে নিজের নাম,জোশ স্থাপন করতে বিপথে চলে গিয়েছিল। হাত ডুবিয়েছিল কাঁদায়। কিন্তু সে ভুলে গিয়েছিল অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যেমন সাত-আকাশে উঠাতে জানে ঠিক তেমন করে নামাতেও জানে। সব সত্য প্রকাশ হওয়ার পর চারদিকে তাকে নিয়ে এত এত ট্রোল, উপহাস, সমালোচনা নিতে পারছিল না সে। বিশেষ করে নেটিজেনদের মন্তব্যগুলো। নিজের অবনতি মেনে নিতে না পেতে একসময় মেন্টালি আনস্টেবল হয়ে পড়ে। আর সেই ঘোরের বসেই আ’ত্ম’হ’ন’নে’র পথটি বেছে নেয় সে। ঠিক কি পরিমাণ লাঞ্ছনা,অবজ্ঞা সহ্য করতে হলে মানুষ মুক্তির আশায় এমন একটি পথ বেছে নেয় তা হয়তো কল্পনারও উর্ধ্বে।তবে জেদিকা তার সু’ই’সা’ই’ড নোটে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায়নি। সে সেচ্ছায় জী’ব’ন ত্যা’গ করছে বলেই জানিয়েছিল। সে সাথে, প্রাণের সাথে করা অন্যায়ের জন্য সকলের নিকট ক্ষমাও চেয়েছিল। তো এখানে কোথাও প্রাণের দোষ ছিল না। জেসিকার নিজের কর্মফল থেকে পালাতেই পুনরায় আরেক ভুলপথ অবলম্বন করে।
আশা বেগমের যুক্তিটা প্রাণ মেনে নেয়। অতঃপর ধীরে ধীরে নিজের ব্যস্ত জীবনে ফিরে আসতে শুরু করে।
.
তখন সাঁঝের সময়। অন্তরিক্ষ জুড়ে পাখিদের ছুটাছুটি। ব্যস্ত রাস্তায় হর্ণের বিকট ধ্বনির রে’ষা’রে’ষি। প্রাণ কাওরান বাজারের জ্যামে বিরক্তির সহিত বসে৷ ঘন্টা খানেক হতে নিল কিন্তু জ্যাম ছাড়ার কোন নাম গন্ধ নেই। কি এক অবস্থা! প্রাণ সময় কাটাতে ফোন হাতে নিতেই অপরিচিত এক নাম্বার থেকে মেসেজ আসে৷ সে মেসেজটি ওপেন করতেই দেখতে পায় তাতে লেখা,
“প্রাণ, আমি নয়ন। জানি তুমি আমার সাথে কোনপ্রকার কথাবার্তা বলতে ইচ্ছুক না কিন্তু তাও বলছি সময় করে একটু মিট করতে পারবে? তোমার সাথে আমার গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা আছে। প্লিজ না কর না। ইট ইজ মাই লাস্ট রিকুয়েষ্ট টু ইউ।”

#চলবে

[কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ।]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে