প্রতারক part 20

0
1340

প্রতারক part 20
#Roja_islam

মুহূর্তেই রাগ চন্ডি ভড় করলো আমার উপর চোখে পানি বাহাতের পিঠ দিয়ে মুছে আমিও রাহুলের পিছন পিছন গেলাম। উদ্দেশ্য কামড় দেওয়ার বিচার কামড় দিয়েই করবো। গুন্ডাটা যদি হয় ভ্যাম্পপায়ার তো আমি ভ্যাম্পপায়ারনী হুহ। দুতালায় নামতেই দেখি রাহুল নেই। এক্টুও ভয় পেলাম না এতো রাতে একটা হস্পিটালে ঘুরঘুর করছি আমি তাও। কারণ মাথায় যে প্রতিশোধ এর নেশা উঠেছে। প্রতিশোধের নেশা উঠলে মানুষ সব ভুলে যায় আমি ভুলে গেছি।ভয় ডর সব ভুলে গেছি। একা একাই নিচ তালায় এসে পড়লাম। হ্যাঁ রাহুল কে দেখতে পাচ্ছি। হস্পিটালের এক সাইডে তার কারের সাথে হেলান দিয়ে আকাশ দেখছে নির্জন রাস্তায় দাঁড়িয়ে। শয়তানীমার্কা হাসি দিয়ে এগিয়ে গেলাম তার কাছে।
.
রাহুল দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে। কতই না মেয়ে তার পিছন ঘুরলো কিন্তু সে কিনা কি সব করছে একটা মেয়ের জন্য। রাগে গাঁ শিরশির করছে রাহুলের!! এমন না যে রাহুল ছ্যাঁকা ফীল করছে। কিন্তু হীরকে বুঝানো রাহুলের ধৈর্য্যের বাধ ভেঙে যাচ্ছে। আর যার ফলস্বরূপ হীরকে দেখলেই রাহুলের মাথা নষ্ট হয়ে যায়। আর রাহুলের মন চায় তুলে নিয়ে হীরকে বিয়ে করে। হানিমুন সেরে ফেলতে। তারপর ঠাশ করে থাপ্পড় দিয়ে জিজ্ঞেস করতে নেমেছে শিহাবের ভূত মাথা থেকে ইডিয়ট??? এগুলা চিন্তার মধ্যেই কাধে ব্যথা অনুভব করে রাহুল। তাই আকাশ থেকে চোখ নামিয়ে নিজের দিকে তাকাতেই রাহুলের চোখ ছানাবড়া। একি দেখছে রাহুল!! হীর তার কাধে কামড় দিচ্ছে??? রাহুল কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে যায়। তার বিশ্বাস হচ্ছে না হীর বাচ্চা দের মতো কামড় ব্যাক দিতে একা একা এখানে এসেছে??
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন


হীর মন মতো দাঁত বসিয়ে দিয়ে নিজের রাগ কমিয়ে মাথা তুলে তাকায় রাহুলের দিকে তারপর। সুন্দর করে হেসে বলে।
— আমার প্রতিশোধ নেওয়া হয়ে গেছে। কি ভেবেছেন আপনিই শুধু কামড় দিতে পারেন হুহ আমি পারিনা??আমি ও দিতে পারি দেখিয়ে দিলাম হুহ।আমার কাজ শেষ সো আমি যাচ্ছি?? বায় বায় ভ্যাম্পপায়ার!!
— রাহুল হীরের কথায় বিস্ফারি ভাব কাটিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠে।এসেছো নিজের মর্জিতে। বাট যাবে আমার মর্জিতে। বলেই বাঁকা হাসে রাহুল।
— হীর আমতাআমতা করে বলে। দেখুন আপনি কামড় দিয়েছেন আমি ও দিয়েছি শোধবোধ। আপনি ভ্যাম্পপায়ার হলে আমি ভ্যাম্পপায়ারনী বুঝেছেন। নেক্সট টাইম কামড়া কারড়ি করতে এলে। আমি দাঁত বসিয়ে দিবো হুহ।
— রাহুল মুচকি হেসে বলে উঠে।ঠিক আছে কামড়া কামড়ি করবো না। আমি এখন অন্য কিছু করবো।
— হীর চেঁচিয়ে উঠে। এই আপনার সমস্যা কি?? কেনো গুন্ডামি করেন শুধু আমার সাথে?? হুহ??
— ঠিক আছে আর গুন্ডামি করবোনা রোমেন্স করবো!!
— ম মা মানে??
— দেখতে পাবে!!! বলেই রাহুল হীর কে ছ্যাঁচকা টানে ধাক্কা দিয়ে গাড়ীর সাথে ঠেকায়।
— হীর চেঁচিয়ে উঠে। এই গুন্ডা কি করছেন ছাড়ুন আমি চিৎকার করবো কিন্তু??
— রাহুল নেশাগ্রস্ত কণ্ঠে বলে উঠে। গোঁ অন চিৎকার করে দেখাও!!!
— ভা………..!
.
হীর চিৎকার দেওয়ার আগেই রাহুল হীরের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট চেপে ধরে মুখ বন্ধ করে দেয়। হীর সাথে সাথে চোখ খিঁচে বন্ধ করে। রাহুল কে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করে। তাতে রাহুল হীরের দুই হাত তার হাত দিয়ে দুই দিকে কারের সাথে চেপে ধরে। আর নিজের ঠোঁটের বিচরণ হীরের ঠোঁটে ক্রমশ বাড়িয়ে দেয়।তাতে হীর পাথরে পরিণত হয়। হীরের সাথে ঠিক কি হচ্ছে ভাবতেই তার বন্ধ চোখের কোণা বেয়ে দু ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ে। হীরকে শান্ত হতে দেখে রাহুলের হীরের ঠোঁট মুক্ত করে দিয়ে। হীরের কোমড় চেপে ধরে নিজের সাথে মিসিয়ে। হীরের কপালে কপাল ঠেকায় রাহুল। হীর কাঁদছে তা দেখে রাহুল বলে উঠে।
— সরি!! এক্সট্রেমলি সরি!!! এই টুকু বলেই হাসে রাহুল। তারপর মুখ গম্ভীর করে বলে উঠে। ভুলেও ভেবোনা আমি এমন কিছু বলবো। বরং শুনে রাখো শিহাবের ভূত তোমার মাথা থেকে না যাওয়ার আগ পর্যন্ত তুমি আমার সামনে এলে আমি এই কাজ রিপিট করবো। মাইন্ড ইট।
.
এই জঘন্য টাইপ কথা শুনে রাগে গাঁ পিত্তি জ্বলে উঠলো। আমি রাহুলকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম নিজের থেকে তারপর চেঁচিয়ে বললাম।
— যাবে না আমার মাথা থেকে শিহাবের ভূত। কেনো করলেন এমন????
— হ্যাঁ যাবে নাই তো খুব ভালো তো শিহাব তোমার তাই না??
— হ্যাঁ তাই আপনার মতো অসভ্য না!!
— হ্যাঁ আমি অসভ্য। আমায় আরো অসভ্য হতে বাধ্য করোনা। নেক্সট টাইম দেখা হলে আমার উত্তর চাই। অনেক ছাড় দিয়েছি তোমায় আর না!
— আমি অবাক হয়ে বললাম। উত্তর কিসের উত্তর??
— আই লাভ ইউর!!!
— অহ আচ্ছা তাহলে শুনে রাখুন। আপনার মতো অসভ্যকে আই লাভ ইউ টু আমি বলবো না!!
— তো কাকে বলবে শিহাবকে যে তোমার সাথে প্রতারনা করেছে তাকে?? নাকি লনিকে যে তোমার সাথে……! উফফ সেটা নাই বলি আর। শুনে রাখো!! আমায় তুমি আই লাভ ইউ। বলো আর না বলো উত্তর আমার হ্যাঁ চাই। তা না হলে আমার সামনে এসোনা। মনে জেনো থাকে ইউ ডাম্প!!
— হীর এসব শুনে রেগে বলে উঠে।আপনি আস্ত অসভ্য বেয়াদব আর গুন্ডা ছেলে!! আপনাকে আমি না কেউ ভালোসবে না।
— যা বলার বলো বাট আমার সামনে পড়লে উত্তর হ্যাঁ চাই গট ইট??
— কোনো দিনি ই না!!
— দেখা যাবে।
.
বলেই রাহুল রাহুল তার ব্রায়বেড হওয়া ফোন্টা হীরের সামনে রিসিভ করলো। লাউড স্পিকার দিয়ে। যার ফলস্বরূপ হীর ছোট ছোট চোখ করে চেয়ে রইলো রাহুলের দিকে। কারণ ফোনের ওপাশ থেকে একটা মেয়ের কণ্ঠ ভেসে আসছে।যার কথা গুলা এমন!!
— হ্যালো!! রাহুল বেবি ওয়ের আর ইউ। আই মিস ইউ হানি। আই রেলি লাভ ইউ। প্লিজ বিলিভ মি সুইটহার্ড। প্লিজ ক্যাম ব্যাক হেই আর ইউ……!
.
এই সব শুনে হীরের কান্না কেমন জেনো বেরে গেলো যা দেখে রাহুল বাঁকা হেসে ফোন কেটে দিলো। কোনো উত্তর না দিয়ে।তারপর হীর কে উদ্দেশ্য করে বললো।
— বায় মাই স্লিপিংকুইন!!
.
বলেই রাহুল হন হন করে উপরে চলে গেলো। আর আমি বাচ্চাদের মতো কাঁদছি কেনো কাঁদছি জানা নেই আমার। রাহুল এর অসভ্যতায় কাঁদছি নাকি। রাহুলকে অন্যকেউ আই লাভ ইউ বলছিলো বলে তা ভেবে পাচ্ছিনা আমি। মন চাইছে নিজের মাথার চুল নিজেই ছিড়ে ফেলি কে বলেছিলো??নিচে আসতে ভেবে নিজের প্রতি রাগ হচ্ছে খুব। কেউ ঠিক বলেছে প্রতিশোধ নিতে গেলে নিজেরি লস। আমার তাই হলো। ভেবে কান্না বেড়ে গেলো। না প্রতিশোধ নিতে আসতাম আর না নিজের ফার্স্ট কিস এভাবে জোর পূর্বক হতো তাও এই গুন্ডাটা করলো। ছিঃ ?
.
.
এদিকে পূর্নি কে জড়িয়ে ধরে রেখে নিজের বুকে হিরা।পারলে কলিজায় ঢুকিয়ে রাখতো হিরা পূর্নিকে। পূর্নির কান্না থামলেও। এক্টু পড় পড় দীর্ঘশ্বাস ফেলছে আর হেচকি তুলছে মেয়েটা। পূর্নি গুটিসুটি মেরে হিরার বুকে লেপ্টে থাকা অবস্থায় ই মাথা তুলে হিরার দিকে তাকালো। হিরাও কেঁদেছে আজ।এতো দিন পড় পূর্নিকে দেখে নিজেকে সামলাতে পারেনি। হিরার চোখ মুখ ও ফুলে গেছে। পূর্নি মুচকি হেসে বললো।
— তুমি কিন্তু এখনো আমায় বলোনি??
— হিরা অবাক হয়ে বললো। কি??বলিনি??
— কপাল কুচকালো পূর্নি। ভুলেই গেলে?? আচ্ছা আমি ই বলছি। আই লাভ ইউ বলোনি!! এখনো না হুহ।
— হাসলো হিরা তারপর পূর্নি মুখোমুখি বসে পূর্নি গাল দু হাতে ধরে বললো। আই লাভ ইউ। আই লাভ ইউ পূর্নি। অনেক ভালোবাসি তোমায় সেটা বলে বুঝাতে পারবোনা। শুধু এই টুকুই বললো। যতোটা ভালোবাসলে কাউকে ছাড়া বাঁচা যায় না। আমি ঠিক তটাই ভালোবাসি তোমায়। তোমাকে ছাড়া বাঁঁচবোনা যে!!
— পূর্নির ঠোঁটে হাসি চোখে পানি নিয়ে বলে উঠে। আমিও খুব ভালোবাসি আমার রাগী পাগল টাকে। ছেড়ে যেও না প্লিজ।
— হিরা পূর্নিকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠে। আর কখনো এই ভুল করবোনা। কখনো ছেড়ে যাবোনা তোমায়।
.
বলেই!!!!
হিরা হাল্কা হেসে পূর্নির কপালে ঠোঁট ছোঁয়ায়। পূর্নির মনে হচ্ছে আজ সে আকাশের চাঁদ টা হাতে পেয়েছে। কতোই না চোখের জল ফেলেছে এই দিন টার অপেক্ষায়। একবার প্রিয় মানুষ টার মুখে ভালোবাসি কথাটা শুনবে বলে!! আজ পূর্নি মরে গেলেও কোনো কষ্ট নেই। প্রসান্তির হাসি পূর্নির মুখে আজ।
.
.
চলবে!
[গল্প শেষের দিকে ☺]

Roja Islam

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে