প্রতারক part 16

0
1428

প্রতারক part 16
#Roja_islam

২ দিন পাড় হয়ে গেছে। আমি রাহুল কে কল দিয়ে দিয়ে মরছি কিন্তু ব্যাটা গুন্ডার কোনো পাত্তা নেই পুড়াই লাপাত্তা সে। এদিকে আমি ভাইয়ার করুণ চেহারা দেখে আমার বুক ফেটে কান্না আসে। কারণ কেউ না বুঝলেও আমি বুঝি ভালোবাসার মানুষ দূরে থাকলে কতটা কষ্ট হয়। আর ভাইয়ার অবস্থা খুব খারাপ। চোখের নিচে কালোদাগ পড়ে গেছে পূর্নির টেনশন এ। ভাইয়া ভেবেই নিয়েছে যে রাহুল তাকে মানবে না। এদিকে মা আমার পিছু পড়ে গেছে ভাইয়া এমন কেনো করছে কি হয়েছে বলতে। আমিও চিন্তায় চিন্তায় শেষ শেষে রাহুল ও প্রতারনা করবে আমাদের সাথে??
.
কিন্তু না রাহুল আমাদের সবার হাজার চিন্তায় এক বালতী পানি ঢেলে দিয়ে সকালসকাল নিজের বন্ধুকে নিয়ে আমাদের বাসায় আসে। শুক্রবার থাকায় ভাইয়া ও আজ বাসায় ছিলো। আমি ভাইয়া মা তিন জনি তাদের দেখে অবাক হলাম। মা রাহুল কে চিনতে পেরে অনেক আপ্পায়ন করছে। আর এই সেই গল্প করছে আর ভাইয়া বার বার নখ কামড়াচ্ছে আর আমার দিকে ভীরু চোখে তাকাচ্ছে। আমার ভাইয়ার অবস্থা দেখে হাসি পাচ্ছে প্রচুর আমি ভাইয়ার কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললাম।
— ভাইয়া যদি রাহুল মার কাছে বিচার দিতে আসে তোর নামে তো??
.
ভাইয়া চোখ মুখ কুঁচকে ফিসফিস করে বললো।
— কি বিচার দিবে আমি কি করেছে??
— ভুলে গেছিস তোর জন্যই তো পূর্নি এক্সিডেন্ট করেছে। সেটাই যদি বলে তো।
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন


ভাইয়া ভয়ে কেশে দিলো। আমি মুখ চেপে হাসছি। এর মধ্যে দেখি রাহুল আমার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসছে। এটা দেখার সাথে সাথে আমার ও কাশী উঠে গেলো। মা রাহুলের বন্ধুর সাথে কথা বলছিলো। আমাদের দুই ভাই বোন দের কাশতে দেখে বিরক্তি হয়ে বললো।
— কি শুরু করলি তোরা?? কাশছিস কেনো পানি খা।
.
আমি মা নাড়িয়ে ভাইয়াকে নিয়ে আমার রুমে চলে গেলাম। তারপর দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে হো হো করে হেসে দিলাম।ভাইয়া আজ অনেক দিন পড় হাসছে। তাও কি বোকামো করে।
.
ঐদিকে মাকে রাহুল সব বলে বুঝিয়ে।। আমি রুমে বসে দেখলাম মা পূর্নির এক্সিডেন্ট ভাইয়ার জন্য হয়েছে শুনে কাঁদছে। আসলে মা আর পূর্নির সম্পর্ক অনেক ভালো। পূর্মি বাসায় এলে দুজন চা করে গল্প করতো আমায় ফেলেই। আর এমন কোনো দিন নেই পূর্নি এলে মা নিজে না খাইয়ে দিয়েছে।আর তারি ছেলে জন্য পূর্নির জন্য এমন হয়েছে তা মা মানতে পারছেন না। পড়ে মা শান্ত হয়ে রাহুলের সাথে কথা বলে মার কোনো আপত্তি নেই। মার কথা তার ছেলে আর পূর্নি ভালো থাকলেই হবে।
.
আমি অবাক হয়ে রাহুলের কথা শুনছি এতো ভদ্রতার সাথে মার সাথে কথা বলছে আর আমার সাথেই তার যত গুন্ডামি। আস্ত খবিস একটা।
.
দুপুরবেলা রাহুল আর তার বন্ধুকে খাইয়ে দাইয়ে বিদায় দেয়। এর মধ্যে ভাইয়ার সাথে রাহুল একটাও কথা বলেনি হয়তো চাপা রাগ আছে। ভাইয়া অবশ্য অনেকবার কথা বলতে চেয়েছে কিন্তু রাহুল খারুছটা কথায় পাত্তা দেয়নি। ভাইয়া কথা বলতে না পেয়ে আমার দিকে করুণ চোখে তাকিয়েছিলো শুধু।রাহুল রা চলে গেলেই আমার কাছে আসে ভাইয়া।ভাইয়া কি বলবে বুঝতে পেরে বললাম।
— দেখ ভাইয়া আস্তে আস্তে সব ঠিক হবে এতো তারার কি আছে। বিয়ে তো ঠিক হয়েছে না চিন্তা করিস না কথা না বলে থাকতে পারবেনা।
— সেটা কথা নয় কিন্তু আমি সরি বলতে চাই। যে কেউয়ি তার বোনের সাথে এমন করলে তা মেনে নিবেনা। জানি কিন্তু সরি বলার সুযোগ ও তো দিলোনা আমায়!!
— হু ব্যাটা আস্ত বজ্জাত। তাও বোনের বিয়ে তোর সাথে দিতে রাজী হইছে তাই মনে হয় তোর সাত কপালের ভাগ্যো!!
— না পূর্নি আমায় ভালোবাসে সেটাই আমার সাত কপালের ভাগ্যো। তাই তো রাহুল রাজী না হয়ে পারেনি কিন্তু আমি সরি বলতে চাই হীর।
— শোন ভাইয়া সরি বললেই সব ঠিক হয়ে যায় না। তুই পূর্নিকে খুশী কর রাহুল তোকে ক্ষমা করতে বাধ্য বুঝেছিস!! কারণ পূর্নিকে তুই কষ্ট দিয়েছিস তুই ই ভুলিয়ে দিবি। এটাই হয়তো রাহুল আশা করে তোর থেকে তাই তোকে ক্ষমা করছেনা।
— হ্যাঁ তুই ঠিক বলেছিস। আমি আর পূর্নিকে কষ্ট দিবোনা। সব ভুলিয়ে দিবো ওকে। কিন্তু ওর দেখাই তো পাচ্ছিনা কিছু কর!! বিয়ে ঠিক হলে কি হবে বৌকে যদি চোখের দেখাই দেখতে না পারি??
— হিহি অপেক্ষা কর অপেক্ষার ফল মিষ্টি হয়।
.
বলেই ভাইয়ার গাল টানলাম ভাইয়া চোখ রাংগিয়ে চলে গেলো। আমি বুঝলাম বোনের মুখে এসব শুনে ভাইয়া লজ্জায় রেগে গেলো। আমি হাসছিলাম ভাইয়ার কথা চিন্তা করে আজ সারাদিন ভাইয়ার থেকে করুণ কেউ ছিলোনা বেচারা। রাহুল আচ্ছা বিচার করছে ওর। যাই হোক বোন টাকে তো দিচ্ছে আমার ভাইকে। চিন্তার মধ্যেই ফোন এলো হুবুজুবু হয়ে ফোন রিসিভ করলাম কানে দিতেই। গুন্ডাটার গম্ভীর কণ্ঠ।
— ছাদে এসো ফার্স্ট!!
— আমি…..
.
আমি কিছু বলার আগেই কেটে দিলো। তাই বাধ্য হয়ে চুপিচুপি ছাদে গেলাম। ছাদে পা রাখতেই রাহুল কোমর জরিয়ে ধরে দেয়ালে চেঁপে ধরলো আমায় ঘটনায় আমি হতভম্ব হয়ে গেলেও প্রথম পড়ে ছুটাছুটি করতে শুধু করি। রাহুল কোনো দিকে পাত্তা না দিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে!! শেষে আমি কিছুই না করতে পেরে বললাম।
— কি করছেন আপনি? ছাড়ুন প্লিজ!!
.
রাহুল ডোন্ট ক্যায়ার ভাব নিয়ে আমার গলায় শব্দ করে চুমু খেলো। আমার চোখ বড়বড় হয়ে গেলো। চুমুর শব্দে আমি জেনো তব্দা খেয়ে গেলাম। মাথা ঝিমঝিম করছে। আর রাহুল বাঁকা হাসছে!! আমার আড়চোখে দেখছি আস্ত ফাজিল পুড়া। এই বাঁকা হাসি দেখি কই থেকে রাগচন্ডি ভর করলো আমার উপর দিলাম এক ধাক্কা। কিন্তু রাহুল নিজেই সরে গেলো ধাক্কা তার শরীলে লাগেনি। আমি রেগে চলে যাবো। রাগুল খপ করে আমার হাত ধরে হ্যাঁচকা টানে আমার পিঠ তার বুকে ঠেকালো। আর কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বললো।
— একটা কথা বলতে চাই!! হীর শুনবে??
.
আমি কি শুনবো?? রাহুলের নিশ্বাস আমার কানে না সারা শরীল হিম করে দিচ্ছে। আমি ছুটতে চাচ্ছি।আমি কিছু শুনতে চাইনা এখান থেকে পালালে বাঁচি। কিন্তু নিজেকে ছাড়াতে আমি ব্যর্থ। রাহুল আমায় আরো চেপে ধরে তার সাথে। আর মৃদু চিৎকার দিয়ে বলে উঠে।
— স্টপ মুচড়ামুচড়ি ওকে!! না হলে সারারাত এভাবেই ধরে রাখবো আমি।
.
আমি পড়লাম মহা বিপদে কি চায় এই গুন্ডা। একটু আগে একে ভদ্র বলেও ভুল করেছি। এই ছেলে জীবনেও ভদ্রনা। আস্ত অসভ্য ছেলে কি ভাবে আমায় ধরে আছে ভাবতেই শরীল শিরশির করছে। তাড়াতাড়ি এই গুন্ডার থেকে ছুটতে হবে ভেবেই বললাম।
— কি বলার বলুন প্লিজ আর ছাড়েন আমাকে।
.
রাহুল আবারো আমার কানে তার ঠোঁট ছুয়িয়ে বলে উঠে।
— এভাবেই বলবো আমি!!
.
আমি কয়টা গালি দিলাম মনে মনে তারপর বললাম।
— তাড়াতাড়ি বলুন প্লিজ!!
.
রাহুল বাঁকা হেসে বললো।
— কেনো প্রবলেম হচ্ছে??
.
আমি দাঁতে দাঁত চেপে বললাম।
— না বলুন।
.
রাহুল এভার আমায় ছেড়ে সামনে এসে বললো।
— লজ্জা করছে!!
.
আমি কটমট করে তাকালাম তার দিকে অসভ্য ছেলে লজ্জা দিয়ে জিজ্ঞেস করে লজ্জা করছে নাকি। খবিস গুন্ডা। আমি চুপ করে রইলাম চোখ বুজে দৌড় দিবো রাহুলের কথায় থমকে গেলাম। রাহুল মৃদু চিৎকার করেই বললো।
— আই লাভ ইউ হীর!!
.
এই কথায় আমি থমকে রাহুলের দিকে তাকিয়ে দেখি রাহুল চোখ বন্ধ করে আছে মুখটা লাল হয়ে আছে হাত মুঠি বদ্ধ করে রেখেছে। আমি অবাক হয়ে গেলাম রাহুলের কথায় নয় রাহুলের এই আচরণ এ ব্যাটা গুন্ডা কি লজ্জা পাচ্ছে?? হঠাৎ এমন কথা আর এমন সিচুয়েশনেও আমি রাহুল লজ্জা পাচ্ছে কিনা ভাবছি ভেবেই আমি দৌড়ে নিচে চলে গেলাম। আর ভাবতে লাগলাম রাহুল কি বললো এটা সে তো সব জানে তারপর ও।
.
হীর চলে যেতেই রাহুল চোখ খুলে জোড়ে একটা শ্বাস ছাড়লো। জীবনে প্রথম কাউকে আইলাভ ইউ বলেছে রাহুল এটা একটু খানি কথা। বিরাট কাজ ছিলো এটা রাহুলের কাছে। ভাবতেই রাহুলেরি অবাক লাগছে তার মতো ইগোস্টিক আর এ্যটেটিউট অলা বয় নাকি চোখ মুখ বন্ধ করে আই লাভ ইউ বললো ছিঃ। বলেই রাহুল ধুপধাপ পা ফেলে নিচে গেলো গাড়ীর কাছে। রাহুলের বন্ধু নাহিদ তার ওয়েট করছে। নাহিদ রাহুলকে দেখেই হাসছে। রাহুল নিজের উপর রেগে দাড়াম করে গাড়ীর দরজা খুলে গিয়ে গাড়ীতে বসলো। সাথে নাহিদ ও। নাহিল রাহুলের দিকে তাকিয়ে হেসেই যাচ্ছে রাহুল তা দেখে রেগেই বললো।
— প্লিজ স্টপ ইয়ার।
.
নাহিদ এবার জোরেই হেসে বললো।
— ওরা দুই ভাই বোন দেখি তোদের দুই ভাই বোন কে পাগল করেই ছাড়লো? পূর্নি তো ভালোবেসে নিজেই গাড়ীর নিচে পড়লো। আর এখন তুই তুই কি করবি তাই ভাবছি রে।
.
নাহিদের কথার উত্তরে রাহুল বাঁকা হেসে বললো।
— আমি জয় করবো। এই প্রতারক প্রতারক খেলাম আমিই জীতবো। ওয়েট এন্ড সি!!!
.
নিহাদের মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেলো সে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বললো।
— যাই করিস বুঝে শোনে দোস্ত।
.
রাহুল ড্রাইভ করতে করতেই এদিক ওদিক তাকিয়ে বললো।
— রাহুল কাঁচা খালোয়ার না রিমেম্বার না!!

.
উত্তরে নাহিদ বাঁকা হাসলো। রাহুলের রোগ রোগ তার জানা তাই আর কিছু বলার ইচ্ছা জাগলোনা নাহিদের।
.
এদিকে আজ দুদিন পড় বাসায় এলো শিহাব। কিন্তু কাউর সাথে কথা বলে নি নিজের ভুলের মাসুল সমেদ হীরের সেই কান্না মাখা চেহারা শিহাব ভুলতে পারছেনা।
না পারছে সব ভুলতে এখন জেনো শিহাবের শুধু হীরের কথা ভাবতেই
দিন যায়।
.
নিতুর মা নিতুর থেকে সব শুনে গিয়েছিলো হস্পিটাল কিন্তু কেউ উনার সাথে কথা বলতে নারাজ। অপমান করে তারিয়ে দেয় নিতুর মাকে শিহাবের বাবা। এদিকে নিতুও কেঁদে কেটে অস্থির তার যে সব কুল গেলো। নিতু তিন দিন যেই ছেলের সাথে ছিলো। সেই ছেলে তাদের পার্সোনাল ভিডিও বানিয়ে নিতুকে সেন্ড করেছে। আর ব্ল্যাকমেল করছে মোটা অংকের টাকার জন্য। নিতু ভয়ে শেষ কি করবে এখন সে। নিতুর মা দুদিন ধরে নিতুর জন্য চিন্তিত। এর মধ্যে নিতু এসব কথা কাকে বলবে বুঝতে পারছেনা নিতু। তার ইচ্ছা হচ্ছে আজ মরে যেতে নিজের উপর নিজেই ছিঃ ছিঃ করছে নিতু। এদিকে নিতুকে কলের উপর কল দিয়ে যাচ্ছে সেই ছেলে ভয়ে ফোন ধরছেনা নিতু।
.
.
এদিকে আমি হুরমুর করে নিচে এসে দেখি মার সামনে ভাইয়া মাথা নিচু করে বসে আছে। আমি অবাক হলাম এই সিন দেখে। আমায় দেখেই মা চেঁচিয়ে উঠে!!!
.
চলবে?
[সরি একবালতী আমি তাড়াতাড়ি গল্প শেষ করার চক্কোর এ একবারো গল্প সুন্দর করে শেষ করতে পারিনা তাই এবার গল্পের জন্য যা যা চিন্তা করেছিলাম সব দিয়ে লিখে শেষ করবো। তাই কিছু পর্ব বাড়বে তবে বোরিং হলে জানিও?? ধন্যবাদ সবাইকে এতো ভালোবাসা দেওয়ার জন্য আমার গল্পটাকে ?আর আজ মনেহয় অনেক অগোছালো হইছে একবার পড়েও দেখিনি তাই ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন?]
@Roja Islam

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে