প্রতারক part 14

0
1263

প্রতারক part 14
#Roja_islam

ভাইয়া বলছে আমি চুপ করে শুনছি।
.
— আমরা এই বাড়ী আসার পড় থেকেই পূর্নি আমার পিছন পড়ে ছিলো!! আমায় দেখলেই এটা ওটা বলতো। দুষ্টুমি করতো আমি ভাবতাম ও ছোট তাই এমন করে। কিন্তু না এভাবেই অনেক গুলা বছর পেরিয়ে যায়। আর আস্তে আস্তে পূর্নিও চেঞ্জ হয়ে যায় কি জানি কি রকম বিহেভিয়ার ছিলো ওর কিন্তু আমি এসব পাত্তা দিতাম। কিন্তু প্রবলেম স্টার্ট যখন পূর্নি কলেজে উঠে ও আমাদের ক্যাম্পাস এ চলে যেতো আমার বন্ধ দের সাথে কথা বলতো আমায় নিয়ে এটা ওটা জিজ্ঞেস করতো। ওদের থেকে নাম্বার নিয়ে ফোন দিয়ে মাথা খারাপ করে দিতো। আমার খুব রাগ হতো এসব কেনো করেও?? এই ভেবে!! কিন্তু বাড়িওয়ালার মেয়ে তাই কিছু বলতেও পারতাম না!! কিন্তু ও ফোন দিলে ঝাড়ি দিয়ে রেখে দিতাম। এভাবে ও ভার্সিটি উঠে যায়। এই এতো দিন পূর্নি আমায় কি কি ভাবে জ্বালিয়েছে তোকে আমি বলে বুঝাতে পাড়বোনা। শুধু শুধুই ফোন দিয়ে এখানে যেও না ওখানে যেও না। রাতে দেরি করে ফিরোনা। আমি অবাক হতাম এই মেয়ে কতো ছোট তাও তুমি করে বলে সাহস কত রাগ আরো বাড়তে থাকলো দিন দিন ওর উপর। ভার্সিটি উঠে ওর সাহস আরো বেড়ে গেলো। এক দিন ওর নাম্বার বল্ক করে দেওয়ায় হাত কেটে পিক পাঠায় অনলাইন এ। তারপর আমি ঠিক করি ওর কি প্রবলেম সামনাসামনি জিজ্ঞেস করবো। ওকে ডেকে দেখা করি নিজেই। সে দিন আমি পাঁচ বছর এর রাগ ওর উপর ঢালি অনেক খারাপ বিহেভিয়ার করি কারণ আমি অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিলাম। ওর জন্য বন্ধুরা মজা করতো সারাদিন ওকে নিয়ে।খাওয়া দাওয়া ঘুম হারাম করে দিতো মেয়েটা ফোন দিন দিয়ে মেসেজ দিয়ে। আর কিছু হলেই নিজের ক্ষতি করতো। এসব রাগ মনে আর পুষতে পারিনি তাই ঐদিন ওকে অপমান করি। এতো অপমান করার পড় আমি ভেবেছিলাম। ওর মাথা থেকে আমার ভূত চলে যাবে কিন্তু এই মেয়ে আমায় অবাক করে আমার সামনেই বলে ভালোবাসি তোমাকে।
এই কথা শুনে রেগে আর কিছুনা বলে আমি চলে আসি সেখান থেকে। এতোকিছুর পড়েও ওর পরিবর্তন হয়নি বিন্দু মাত্র। আমি ও হাল ছেড়ে দেই। ফোন দিলে ঝাড়তাম না আর কথা বলতাম। বুঝাতাম আমার ক্যাম্পাসে জেনো না যায়। মেনে নেয় পূর্নি সব ভালোই ছিলো। রেগে যাওয়া আমি দুর্বল হয়ে পড়ি পিচ্ছি চঞ্চল মেয়েটার উপর। কিন্তু ওকে বুঝাতাম না কিছুই।
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন


আমি এবার বললাম।
— সব ঠিক থাকলে এসব কি করে হলো??
— আসলে আমি কিছু জানিনা। কিন্তু আমি ঐসময় তোর জন্য খুব চিন্তিত ছিলাম। দুদু বার মার জন্য বেঁচেছিস তুই। আমার মাথায় তোর কি হয়েছে এসব ই ঘুরপাক খেতে। একদিন চিন্তিত হয়ে বিল্ডিং থেকে বেরুচ্ছিলাম তো। বাড়িওয়ালা আন্টি মানে পূর্নির মা পিছন থেকে ডাকে আমায়। আমি উনার কাছে যাই আর সালাম দি। কিন্তু উনি উত্তর না নিয়ে আমায় অনেক কথা শোনায়। যেমন উনার মেয়েকে ফাঁসানোর সাহস কই পাই পূর্নির থেকে জেনো দূরে থাকি এইসব কথা আরো অনেক কিছু বলে আমায়। আমি চুপচাপ শুনে চলে আসি সেখান থেকে। তারপর থেকে পূর্নির ফোন ধরতাম না সব যায়গা বন্ধ করে দিয়েছিলাম যোগাযোগ করার। আমি ভেবেছিলাম পূর্নির সাথে আমার যান না। ও আমার থেকে হাজার গুন ভালো ছেলে পাবে। আর তাছাড়াও ওর জন্য আন্টি এতো কথা শুনিয়েছিলো আমায় সেটা মেনে নিতে পারিনি। কিন্তু পূর্নি পাগল হয়ে যায় কথা বন্ধ হওয়ায়। আমার ক্যাম্পাস যেতো রোজ সিন ক্রিয়েট করতো। আর একদিন রেগে আমি সবার সামনেই থাপ্পড় মাড়ি ওকে। অনেক অপমান করি। আর বলি আমি তোমায় পছন্দ করিনা বুঝোনা কেনো……। সেদিন পূর্নি কষ্ট পেয়েছে অনেক যানি কিন্তু আমি শক্ত ছিলাম। পূর্নি কিছুনা বলে চলে যায় সেখান থেকে তার এক দিন পড় থেকে আমি অনেক ট্রায় করি ওর সাথে কথা বলার কিন্তু পারিনি। ওকে কষ্ট দিতে গিয়ে নিজেই মরছিলাম ভেতর থেকে আমি। এর পড় ঐদিন তোর মুখে এসব শুনে আমি………!!
.
আমি কিছুনা বলে ভাইয়ার মাথায় হাত রাখলাম। ভাইয়া চুপ করে আছে। কিছুক্ষণ পড় আমি বললাম।
— আন্টির কথা শুনে তুই মেয়েটার সাথে এমন করে মোটেও ঠিক করিসনি!!
— আমি জানি হীর কিন্তু। ওর সাথে আমাদের যায় না হীর। পূর্নির ফ্যামিলি রিচ ওরা চাইলে পূর্নিকে অনেক অনেক ভালো যায়গায় বিয়ে দিতে পাড়বে আমি শুধু শুধু ওর লাইফ নষ্ট করতে চাইনি। পূর্নি আবেগে ছিলো। আমি এসব কড়লে ওর ভ্রম কেটে যাবে ভেবেছি..?
— হাসালি ভাইয়া পূর্নির ভেতর তোর জন্য যা ছিলো সেটা আবেগ হলে মরতে যেতো না পূর্নি। তুই ঠিক করিসনি।
— জানিনা কি করেছি আমি হীর কিন্তু এসব কিছুর পড় বুঝেছি ওকে ছাড়া আমি বাঁচবোনা! কিছুতেই না পূর্নি নামের ডিস্টার্ব আর পেইন আমার সব সময় চাই। হীর আমি তোকে অনেক জিজ্ঞেস করতে চেয়েছিলাম পূর্নি কোন হস্পিটাল আছে কিন্তু……!
.
আমি হেসে বললাম!
— পারিসনি তো??
— না!! হীর নিয়ে যাবি আমায় ওর কাছে প্লিজ।আমি আর পারছিনা নিজের ভুলের মাশুল দিতে।
— রাহুলের সাথে কথা বলতে দে তারপর। ঐ ব্যাটা তো তোকে পাড়লে মেরে ফেলতো।
— মেরে ফেললেই ভালো হত উপযুক্ত শাস্তি পেতাম। কি করে পারলাম আমি হীর ওর সাথে এমন করতে?? পূর্নি আমায় কোনোদিন ক্ষমা করবে না নিশ্চয়।
— চিন্তা করিস না ভালোবাসলে অবশ্যই ক্ষমা করবে। কিন্তু একটা পয়েন্ট পূর্নির মা জানলো কেমনে তোর কথা??
— আমি জানি না। পূর্নির বান্ধবী দের সাথে কথা বলে ছিলাম কাল জিজ্ঞেস করেছি আন্টি জানলো কিভাবে আর পূর্নি কোন হস্পিটাল আছে। কিন্তু অবাক বিষয় ওরা কেউ কিছুই জানেনা যে পূর্নি এক্সিডেন্ট করেছে।
— হ্যাঁ আমি তো ঐদিন মিথ্যে বলেছি পূর্নির ফ্রেন্স দের সাথে ওকে দেখতে গিয়েছি।
— হ্যাঁ সেটা তো আজ জানলাম। কিন্তু রাহুল ই বা তোর জন্য এতো করছে কেনো আর আমায় মেনে নিতে রাজী কেনো??
— আমার জন্য হয় তো মানুষত্ব থেকে করেছে যা করেছে। আর তোকে মেনে নিবে বোনের জন্য। কারণ বোন কে ভালোবাসে অনেক রাহুল। সেটা বুঝেছি আমি!!
— হয় তো!!
.
আরো অনেক কথা বলতে বলতে আযান দিয়ে দেয় ভোরের। আমি ভাইয়া অবাক হয়ে আকাশে তাকাই। কালো থেকে নীল আভা ফুটে উঠছে আকাশের বুক। পাখিদের কিচিরমিচির ডাক কানে আসছে। সাথে ঠান্ডা বাতাস আর রাত ভয় ভাইয়া আমি কষ্ট ভাগ করতে পেরে সকাল টা যেমন নতুন নতুন লাগছে। আমি অবাক হয়ে আশপাশ দেখছি। ভাইয়া আমায় বললো।
.
— শোন হীর??
— বল!!!
— আর কখনো কিছু লুকাবিনা আমার থেকে তুই মনে থাকবে??
— থাকবে!!
— আর হ্যাঁ শিহাব যদি কিছু করে সবার আগে আমায় বলবি!!
— আচ্ছা বলবো। এখন চলো নিচে যাই মা খুঁজবে আমি রাহুলের সাথে কথা বলে নিয়ে যাবো তোমায় পূর্নির কাছে!!ওকে??
.
ভাইয়া আমার কথা শুনে করুণ স্বরে বললো।
— সব ঠিক হয়ে যাবে তো হীর!!
— ভাইয়া চিন্তা করিস না তোর কপালে ঐ ডিস্টার্ব ই লিখা আছে!!
.
ভাইয়া আমার কথা শুনে হাসলো। আর বললো।
— আমার জন্য কতো কিছু করছিস। কিন্তু আমি তোর কষ্ট বুঝিনি হীর।
— ভাইয়া তুমি না জানতে কিভাবে আমার হেল্প করবে?? এসব বাদ দাও আমি ভুলে যাবো সব। তুমি শুধু দোয়া করিও বুঝেছো??
— হুম। চল নিচে যাই।
.
হীর নিজের রুমে ঢুকে ফোন হাতে নিয়ে দেখলো প্রায় হাজার কল এসেছে রাহুলের নাম্বার থেকে।হীর ঢোগ গিললো দুইটা।
.
আল্লাহ মালুম কি আছে কপালে এতো কল। না জানি গুন্ডাটা কি করে। না কি আর করবে গুন্ডা টা এতো ও খারাপ না রাহুল মুচকি হেসে মেসেজ দেয় রাহুল কে হীর।
.
.
সারারাত শিহাব বাড়ী ফিরে নি সেই নিয়ে নিতুর কোনো মাথা ব্যথা নেই। সারারাত ফোন আলাপে ব্যস্ত ছিলো নিতু। সকালে বাইরের চেঁচামিচি শোনে। রাগে গজগজ করতে করতে বাইরে গেলো সে। যেতেই গালে পাঁচ আঙুল বসিয়ে দেয় নিতুর শাশুড়ি।নিতু অবাক হয়ে রেগে কিছু বলবে। তার আগেই নিতুর শ্বশুর চেঁচিয়ে উঠে।
— এই অপবিত্র মেয়ে বিয়ে করেছে তোমার ছেলে দেখো। আমি বারবার বলেছি এই মেয়ে ভালোনা।
.
নিতু অবাক হয় এসব শুনে। নিতু তার শাশুড়ির দিকে তাকিয়েই আতকে উঠে। রেগে ফেটে যাচ্ছেন তিনি। নিতুর শাশুড়ি নিতুর মুখের উপর কিছু ছবি ছুঁড়ে মারে। নিতু একটা ছবি হাতে নিয়ে দেখেই চুপসে যায়। নিতুর শাশুড়ি তেতে উঠে বলে।
— কেনো করলি এমন আমার ছেলের সাথে??? হ্যাঁ!! ছিঃ ঘেন্না করছে আমার। আমার স্বামী রাজী না থাকা স্বত্বেও আমি তোকে আমার বাড়ীর বৌ করে তুলি। আর তুই আমার ছেলেকে ফাঁকি দিয়ে পরপুরুষ এর সাথে ফূর্তি করিস বাইরে গিয়ে!!
.
নিতুকে অপমান এর উপর অপমান করতে থাকে শিহাবের মা বাবা। নিতু মাথা নিচু করে আছে সে এভাবে ধরা খাবে ভাবেনি। এর মধ্যে ড্রইং রুমে। উষ্কখুষ্ক চুলে চোখ মুখ ফোলা অবস্থায় শিহাব উপস্থিত হয়। শিহাব চমকে যায় সকাল সকাল সবাইকে ড্রইং রুমে দেখে। শিহাব কে দেখে তার বাবা তাচ্ছল্য হেসে বলে।
— দেখেছো রুবি তোমার ছেলের কি অবস্থা?? হাহা শিহাব তোর জন্য কিছু আছে বাবা। আজ সকালে নিউজপ্যপারের সাথে সেই গিফট এসেছে।
.
শিহাব ভ্রু কুচকায় বাবার কথায়। এদিকে নিতুর শরীরের লোম লোম কাঁপছে ভয়ে। কি হবে শিহাব এসব দেখলে?? শিহাব তার মার দিকে তাকিয়ে বললো।
— মা কি হচ্ছে এখানে বাবা কি বলছে।
— তোর গুণধর বৌ এই নে দেখ কি করে বেড়ায়।
.
বলেই শিহাবের হাতে ছবি ধরিয়ে দিলো। শিহাব ছবিটা দেখে স্তব্ধ। এর মধ্যে শিহাবের নিজের ফোনে টুংটাং একটা শব্দ হলো।তাতে শিহাবের খেয়াল নেই শিহাব পায়ের নিচে মাটি নেই শিহাব ধপ করে মাটিতে বসে পড়লো।। শিহাব এর মা আঁচলে মুখ গুজে কাঁদছে। তা দেখে শিহাবের বাবা বললো।
— বুঝলে রুবি এখন ছেলের কষ্ট দেখে কান্না করে লাভ কি?? ছেলে মেয়ে ভুল করতে গেলে তাদের সঠিক পথ দেখাতে হয়। কিন্তু তুমি তো ছেলের কথায় ই নাচো ঠিক ভুল জ্ঞান দেওয়ার বদলে। আজ তার ফল দেখো!!!
.
বাবার কথা শুনে শিহাব হু হু করে কেঁদে দেয়।যাই হোক শিহাব ভাবেনি নিতু তার সাথে এমন করবে?? নিতু স্টাং হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাথা নিচু করে।
.
.
এদিকে রাহুলের কাছে মেসেজ আসে আস্ফির।
— ডান ব্রো।
.
মেসেজ পড়ে বাঁকা হাসে রাহল। তারপর হীর কে মেসেজ দিয়ে একটা রেস্টুরেন্ট এ আসতে বলে সেখানেই কথা হবে। ফোন রেখে ওয়াশরুম যায় রাহুল। রাগে মাথা ফাটছিলো রাহুলের কিন্তু হীরের মেসেজ পেয়ে নিজেকে শান্ত করে রাহুল।
মেসেজে হীর এই টুকুই লিখেছে।
— কথা বলতে বলতে রাত পার হয়ে গেছে গুড নিউজ আছে দেখা করে বললো সব।
.
এই গুড নিউজের কথা শুনে রাগ কমে রাহুলের। ফ্রেস হয়ে নিজেকে ব্ল্যাক এ জড়িয়ে নিয়ে। স্টাইলের সাথে বেরিয়ে পড়ে রাহুল।
.
.
চলবে??
[ভুল ত্রুটি বলিয়া আমায় লজ্জা দিবেন না প্লিজ আমি নষ্ট একটা ফোন দিয়ে গল্প লিখছি আপাদত। বাইরে যাওয়া নিষেধ তাই ঠিক ও করাতে পারছিনা ফোন। তাই ভুক ক্ষমা করবেন প্লিজ ♥]
Roja Islam

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে