পারফেক্ট কাপল পর্ব-০৮

0
1126

#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ৮
#ইনান

পতুলের মতো বসে আছি পার্লারের মেয়েরা আমাকে সাজাচ্ছে । আর বসে থাক পসিবল হচ্ছে না । ২ ঘন্টা ধরে সাজাচ্ছে । কী সাজাচ্ছে আল্লাহ জানে

অনেক কষ্টে কিছুক্ষণ সহ্য করে থাকা গেলেও এখন সম্ভব না । তাই না পেরে বলে উঠলাম

“আর কতক্ষণ লাগবে
“ম্যাম শুধু চোখে কাজল আর ঠোটে লিপিস্টিক দিলেই হয়ে যাবে
“তারাতারি করুন প্লীজ
“জ্বী ম্যাম

আবারো কাঠের পতুলের মতো বসলাম । চোখে কাজল আর ঠোঁটে লিপিস্টিক লাগাতেই ১৫ মিনিট লাগিয়েছে ।

সাজানো কমপ্লিট করে বসে আছি । আমার সাথে রিমি আর ইশা বসে আছে । ওরা কী নিয়ে যেন চোখে একে অপরকে ইশারা করছে

“তোরা কী নিয়ে ইশারা করছিস
আমার কথায় ইশা সোজা হয়ে বসে গলা পরিষ্কার বলে

“অগ্নি ভাইয়া কী জানে ?

ইশার কথা শুনে ওদের দিকে তাকিয়ে বাকা হাসলাম । ওরাও আমার দিকে তাকিয়ে রহস্যময় হাসি দিল ।
.
.
.
বাসর ঘরে বসে আছি । কিছুক্ষণ আগেই আমাকে অগ্নির ঘরে বসিয়ে দিয়ে গেছে অগ্নির বোন অনি । অনি মেয়েটা খুব মিষ্টি আর মিশুকে । আমাকে অনেক সহজেই আপন করে নিয়েছে ।

দরজা খোলার শব্দে ভাবনা থেকে ফিরে আসলাম । অগ্নি দরজা খোলে ভিতরে ঢুকে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেল । ও এমন ভাবে গেছে মনে হয়েছে ও ছাড়া এই রুমে আর কেউ নেই

“বেটার ভাব দেখো মনে হচ্ছে ও ছাড়া এই ঘরে আর কেউ নাই । বজ্জাত লোক আইছে আমারে এটিটিউড দেখাতে

আমি আনমনে ওকে বকে যাচ্ছিলাম । তখন অগ্নি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে বলে

“আমাকে বকা শেষ হয়ে থাকলে আপনি ফ্রেশ হয়ে আসতে পারেন ।

আমি একটা ভেংচি কেটে কালো রং এর শাড়ি নিয়ে চলে গেলাম ওয়াশরুমে শাওয়ার নিতে ।

ফ্রেশ হয়ে এসে নিজের চুল গুলো ঠিক করে নিলাম । শাওয়ার নিয়ে এখন নিজেকে হালকা লাগছে ।

“ঘুরতে যাবে ?
অগ্নির কথা বুঝতে না পেরে বলে উঠলাম
“হে?
“বলছি ঘুরতে যাবে
“এখন ?
“হ্যা যাবে ?
“হ্যা যাবো
“ওকে চলো

আমি আর অগ্নি চলে গেলাম । আজকে আর গাড়ি নিলাম না । হাটতে ভালোই লাগছে । ল্যাম্পপোষ্টের আলোতে নতুন দম্পতি হেটে যাচ্ছে । আমার কাছে মুহূর্তটা ভালোই লাগছে
.
.
.
আকাশ রেগে বসে আছে । সে কিছুতেই একটা হিসাব মিলাতে পারছে না । রাগে তার গা জ্বলে যাচ্ছে

“আমি রেড মাফিয়া টিম এর কিং অথচ আমার শত্রু দল ডার্ক মাফিয়া টিম এর কিং আর কুইন কাউকে চিনি না । কিন্তু একজন আমার সন্দেহে ছিল সে অগ্নি চৌধুরী । কিন্তু ওর কর্মকান্ডে বোঝা যায় ও এগুলোর সাথে জড়িত না

এগুলো বলে দেয়ালে জোরে নিজের হাতে পান্চ মারলো । এতে হাত কেটে গেছে কিন্তু সেদিকে তার বিন্দু মাত্র ভ্রুক্ষেপ নাই ।
.
.
.
ডার্ক মাফিয়া টিম
একটা ২২/২৩ বছরের ছেলে আর ২০/২১ বছরের মেয়ে কালো ড্রেস পড়ে কক্ষে প্রবেশ করতেই সেখানে সকল কালো পোশাক পড়া লোকের মাথা নিচু করে ফেলে । তা দেখে মেয়েটা বলে উঠে

“মানলাম আমরা কিং আর কুইন কিন্তু তার জন্য মাথা নিচু করার কোন মানেই হয় না পরের বার এরকম করলে সবকটাকে গুলি করে মারবো

কুইন এর কথা শুনে কিং হালকা হাসে । যারা মাথা নিচু করে দাড়িয়ে ছিল তারাও হাসছে । তাদের মাঝে একজন কিং এর ঘনিষ্ট লোক সাব্বির উঠে বলে

“কুইন হোয়াট আ জোকস মারলেন
সাব্বিরের কথায় কুইন তার দিকে তাকিয়ে বলে
“সাব্বির ভাইয়া আপনার কী গুলি খাওয়ার ইচ্ছা আছে
“না বোন আমার এখন ও বিয়ে হয় নি ।
সাব্বিরের কথায় কিং গিয়ে ওকে পান্চ মেরে বলে
“তুই জীবনে শোধরাবি না

তখন আরেকজন কমেডি ম্যান অভি এসে বলে
“আমি শোধরে গেছি

সবাই ওর দিকে তাকিয়ে হেসে দেয় । অভি,সাব্বির আর কিং হলো খুব ভালো বন্ধু ।

অভি সোজা এসে কুইনকে সালাম করে দূরে দাড়িয়ে হাত পেতে আছে ।তা দেখে কিং বলে

“কী রে তুই এভাবে ফকিরের মতো হাত পেতে আছিস কেন ?
“টাকা দে
“কুইন ওকে ২ টাকা দিয়ে দাও তো
“শালা কিপটা

এই বলে অভি তার হাত সরিয়ে নেয় । কিং আর কুইন হেসে দেয় । কিছুক্ষণ মজা করার পর কিং আর কুইন নিজের জায়গায় বসে ।

“রেড মাফিয়া কিং এর খবর কী ?
কিং এর কথায় একটা ছেলে এগিয়ে এসে বলে
“কিং ও এখন ও আপনার পরিচয় খোজছে ।

“বাহ শত্রুকে দেখার এতো ইচ্ছা । আচ্ছা কালকে আমার শত্রুর কাছে একটা চিঠি পাঠিয়ে দিও যে খুব শীঘ্রই ও আমাকে দেখতে পাবে

তখন কিছু একটা ভেবে কুইন বলে উঠে
“রেড মাফিয়ার কুইন কে ?
“এখন ও জানতে পারি নি

লোকটার কথা শুনে কুইন রেগে উঠে দাড়িয়ে যায় । আর হুংকার ছেড়ে বলে

“যত তারাতারি সম্ভব ঐ কুইন এর খবর আমি চাই
“জ্বী কুইন
.
.
.
মাত্র বাইরে থেকে এসে ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পরলাম । ক্লান্ত থাকায় খুব তারাতারি ঘুমিয়ে গেলাম । অগ্নি ফ্রেশ হয়ে এসে আমাকে আষ্ঠে পৃষ্টে জড়িয়ে ধরে আছে ।

“আরে কী করছেন আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে
“তোমার কষ্ট হচ্ছে না আমি জানি
“ঘোড়ার ডিম জানেন । ছাড়ুন আমায়
“চুপচাপ ঘুমাও নয় তো কিস করবো

এই লোকটার উপর বিশ্বাস আছে উনি এটা করতে পারবে । তাই চুপ হয়ে গেলাম । আমাকে চুপ হয়ে যেতে দেখে মুচকি হেসে অগ্নি ঘুমিয়ে গেলো ।
.
.
.
সকাল ৮ টায় ঘুম ভেঙে গেল আমার কিন্তু উঠবো কী করে এই মহারাজা আমাকে এমন ভাবে জড়িয়ে ধরে আছে যে আমি একটু নড়তেও পারছি না

“এই যে শুনছেন
“অগ্নি শুনছেন
অগ্নি হালকা নড়ে আবার ঘুমিয়ে যায় । কী ঘুমরে বাবা আমি রেগে অগ্নিকে চিমটি কাটতে লাগলাম । এবার সে বিরক্ত হয়ে চোখ খোলে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে যায় আর আমি বেক্কলের মতো তার দিকে তাকিয়ে আছি ।

চলবে ?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে