পারফেক্ট কাপল পর্ব-০৭

0
1267

#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ৭
#ইনান
আমি রেডি হয়ে ছাদে যাচ্ছি । কারণ অগ্নি আমায়
ছাদে যেতে বলছে । কিন্তু প্রবলেম হচ্ছে গিয়ে
নিয়ান । নিয়ান আমার পিছন পিছন আসছে । এবার
বিরক্ত হয়ে বললাম
“কী চায় ? এভাবে পিছন পিছন আসছিস কেন ?
“তুই অগ্নি ভাইয়ার সাথে ঘুরতে যাচ্ছিস না
আমি ওর কথা শুনে একটা ভাব নিয়ে বললাম
“হুম! তো ?
“এখন তুই আমাকে ২০০ টাকা দিবি
“তোকে টাকা কেন দিবো ?
“তুই আমাকেই টাকা দিবি নয় তো আমি গিয়ে
সবাইকে জাগিয়ে দিবো
“উফ এই নে টাকা
ওর হাতে ২০০ টা ধরিয়ে দিয়ে আমি চলে আসি ।
এখন ওর সাথে ঝগড়া করার মুড আমার নেই । আমি
ছাদে আসতেই অগ্নি আমাকে ফোন দিল ।
“হ্যালো ।
“এসে গেছো ছাদে ?
“হুম এসে গেছি
“ছাদের কিনারায় এসে দেখো একটা মোটা দড়ি
টানানো আছে ঐটা বেয়ে নিচে নেমে আসো ।
“আমি দড়ি বেয়ে নামবো কেন ?
“কারণ মেইন দরজা দিয়ে বেরুতে গেলে দারোয়ান
তোমায় বেরুতে দিতো না । এখন চুপচাপ নেমে
আসো ।
আমি ফোনটা কেটে দিয়ে ছাদের কিনারায় আসলাম ।
দড়িটা ধরে কিনারায় দাড়িয়ে আছি । নামার সাহস
হচ্ছে না । অগ্নির দিকে তাকাতেই সে ইশারা করছে
নেমে আসতে । আমি মনে মনে আল্লাহর নাম নিয়ে
নিচে নামলাম । ভয়ে হাত পা কাপছে আমার
“আরে এতো ভয় পাও কেন ?
“আপনি কী বুঝবেন! একটুর জন্য আমার জানটা
বেরিয়ে যায় নি ।
“হুম হয়েছে এবার চলো
“হুম চলুন ।
অগ্নি আমাকে ফ্রন্ট সিটে বসিয়ে সে গিয়ে
ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি ড্রাইভ করতে শুরু করে ।
.
.
.
সত্যি রাতের বেলা ঘুরার মজায় আলাদা । চারদিকে
নিস্তব্দ জনমানব শূন্য । আমার খুব ভালো লাগছে
। সময়টা যদি এখানেই থেমে যেতো । প্রিয় মানুষটা
পাশে বসে থাকলে কার না ভালো লাগে ।
হ্যা আমি অগ্নিকে ভালোবেসে ফেলছি । এই ছয়
দিনে ওকে আমি ভালোবেসে ফেলছি । আমি অগ্নির
দিকে তাকালাম । অগ্নি আড় চোখে আমার দিকে
তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে ।
“বউ কিছু বলবে
আমি নিজের দৃষ্টি সরিয়ে বললাম
“না
“কিন্তু আমার কেন জানি মনে হচ্ছে তুমি আমাকে
কিছু বলতে চাও
“তো আমি কী করবো ?
“কিস করো
ওর কথা শুনে ওর দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালাম
। কিন্তু পরক্ষণেই চোখ নামিয়ে নিলাম । ও
আবারো মুচকি হেসে ড্রাইভ করতে থাকে ।
.
.
.
লন্ডন
সারাঘর তছনছ করছে একটা মেয়ে । আকাশের কাছ
থেকে অগ্নির বিয়ের খবর শুনে ও রাগে ফুসছে ।
তখন একজন মধ্য বয়স্ক লোক ঘরে এসে মেয়েটার
কাধে হাত রেখে বলে
“মিলি মামনি শান্ত হও ।
হ্যা মেয়েটার নাম মিলি বয়স ২০ । মিলি অগ্নির
ফুপাতো বোন । মিলির যখন ১২ বছর তখন
থেকেই সে অগ্নিকে পছন্দ করে । আর আকাশ এবং
মিলি তারা একই ভার্সিটিতে পড়ে এবং তারা ফ্রেন্ড
। এবার গল্পে যাওয়া যাক ।
“আমায় কিভাবে শান্ত হতে বলছো পাপা । ঐখানে
আমার অগ্নির বিয়ে হয়ে যাচ্ছে ।
“উফ মামনি আজকাল ১টা কাগজে সাইন দিলে বিয়ে
হয়ে যায় আরেকটা কাগজে সাইন দিলে ডিভোর্স হয়ে
যায় ।
“তার মানে
“ওদের বিয়ে হবে ঠিক আছে কিন্তু ডিভোর্স হতে
কতক্ষণ ।
মিলি তার বাবার কথা শুনে একটা হাসি দিয়ে তার
বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে
“ইউ আর দ্যা বেস্ট পাপা
“আই নো মাই প্রিন্সেস
.
.
.
সকাল
ঘুম থেকে উঠে দেখি ১১ টা বাজে । অনেক রাত করে
ঘুমানোর জন্য উঠতে দেরি হয়ে গেছে । আমি
তারাতারি উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম । আমি ফ্রেশ
হয়ে এসে দেখি আকাশ আমার রুমে বসে আছে ।
“কীরে তুই এখানে কী করছিস ?
“তোর সাথে অগ্নির ব্যাপারে কিছু বলার আছে ।
“কী কথা ?
“অগ্নি কোন ভালো ছেলে নয় । সে ডার্ক মাফিয়া
টিম এর কিং ।
“আকাশ ও খুব ভালো ছেলে আর তোর কালকের
ঘটনা আমি ভুলে যাই নি । তুই ভাবলি কী করে
অগ্নির মতো সহজ সরল ছেলে মাফিয়া হবে ।
“নিধি আমি তো…
“ব্যস আকাশ বেরিয়ে যা এইখান থেকে ।
আকাশ রেগে বেরিয়ে যায় রুম থেকে । আকাশ চলে
যেতেই একটা বাকা হাসি দিয়ে চলে গেলাম নিচে কারণ
খুব ক্ষুধা লেগেছে আমার ।
খাবার খেয়ে ছাদে চলে গেলাম আমি
.
.
.
আকাল রাগে ফুসছে । যদি পারতো সব কিছু শেষ
করে দিতো । রাগে ওর পুরো শরীর কাপছে ।
“শুধু অগ্নিকে বিশ্বাস করিস । কেন তুই আমাকে
বিশ্বাস করিস না
রাগে ফুলদানিটা আছড় মেরে ভেঙ্গে ফেলল । আর
নিজের রুম থেকে বের হয়ে গেল
.
.
.
রাতে
আজকে আমার মেহেদি অনুষ্ঠান । হাতে মেহেদি
লাগাচ্ছে সেই কখন থেকে বসে আছি । রিমি আর ইশা
আমাকে মেহেদি দিয়ে দিচ্ছে
“কীরে আর কতক্ষণ লাগবে ?
“এই তুই চুপ করে বস তো
“ধুর ভাল্লাগছে না
“তুই মুখ বন্ধ কর তাহলেই তারাতারি শেষ হয়ে
যাবে
“এই নিয়ে তুই ৭০ বার জিজ্ঞেস করছিস ।
আমরা নিজেরা ফিসফিস করছিলাম । তখন আকাশ
হাতে মাইক নিয়ে এসে আমার কাজিনদের মধ্যে
কয়েকজন নাচবে ।
সে যায় হোক নাচ দেখে কিছুক্ষণের জন্য চুপ হয়ে
রইলাম । এই ফাকে ইশা আর রিমি মেহেদি দেওয়া
শেষ করে ফেলছে ।
.
.
.
ফ্যান ছেড়ে মেহেদির হাত গুলো উপরে তুলে শুয়ে
আছি । তখনি আমার ফোনটা বেজে উঠলো ।
“ধুর এই মুহূর্তে আবার কে ফোন দিল
উঠে গিয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি অগ্নি ফোন
দিছে । কিন্তু হাতে মেহেদি ধরবো কী করে ? তখনি
ঐদিক দিয়ে ইশা যাচ্ছিল
“ইশা
“হ্যা বল
“ফোনটা একটু ধরে দিবি
“জিজু ফোন দিছে বুঝি
“হয়েছে তোর ।
ইশা মুচকি হেসে ফোনটা ধরে লাউড স্পিকার দিয়ে
চলে যায় । আমি অগ্নির সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে
ফোনটা রেখে শুয়ে পড়লাম । হাতের মেহেদি শুকিয়ে
যাওয়ার পর হাত ধুয়ে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে