ধূসর শ্রাবণ পর্ব-০২+০৩

0
1187

#ধূসর শ্রাবণ
#লেখিকা:#তানজিল_মীম💚
#পর্ব-০২+০৩

আজ শুভ্র আর বর্ষার বিয়ে। পুরো বাড়ি জুড়েই যেন বিয়ের ধুম পড়ে গেছে। চারদিকে গান বাজনা সাথে অনেক মানুষের আলাপন। যদিও দু’সপ্তাহের মধ্যে খুব বেশি ঝাঁকঝমক করে বিয়েটা দিতে পারে নি কেউ। তারপরও সাধারণের মধ্যে অনেকটাই উচ্ছাসিত পরিবেশ হয়েছে এখন। বাড়ি ভর্তি করা লোকজনের আনাগোনা সাথে বাচ্চাদের হই হুল্লোড় সবকিছুতেই যেন এক অন্যরকম আনন্দকর মুহূর্ত।’

কিন্তু এই আনন্দকর মুহূর্তটাকে উপভোগ করতে পারছে না শুভ্র। সে তো এসবের ভিড়ে নিজেকে আঁড়াল করে বাড়ির ছাঁদে বর বেসে এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছে চুপচাপ। মন মেজাজ খুবই খারাপ তাঁর। দাদুর ওপর ভীষণ রাগ হচ্ছে শুভ্রের। বিয়ের আসর ছেড়ে পালিয়ে যেতে খুবই ইচ্ছে করছে তাঁর আবার ভাবছে ফেমেলির সম্মানও তো আছে। কিন্তু বর্ষার নামটা মাথায় আসলেই তো রাগ আসে তাঁর। কি করে সারাজীবন কাটাবে সে বর্ষার সাথে। আকাশ পানে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেললো শুভ্র। এমন সময় শুভ্রের বন্ধু অনিক দৌড়ে এসে দাঁড়ালো শুভ্রের পাশ দিয়ে তারপর বললো,

‘ কি রে দোস্ত এইভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? নিচে চল তোকে ডাকছে সবাই। আর কিছুক্ষনের মধ্যেই তোর আর বর্ষার বিয়ে কোথায় আনন্দ করবি তা না এখানে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছিস। বিয়ে-টিয়ে করার ইচ্ছে নেই নাকি।’

বলেই হেঁসে ফেললো অনিক। অনিকের হাসি দেখে খুব সিরিয়াস ভাবেই বললো শুভ্র,

‘ আমার সত্যি এই বিয়ে করার ইচ্ছে নেই।’

শুভ্রের কথাটাকে খুব বেশি পাত্তা না দিয়ে হেঁসে বললো অনিক,

‘ আমার সাথে মজা নিচ্ছিস নাকি।’

অনিকের কথা শুনে বিরক্ত প্রকাশ করে গম্ভীর কণ্ঠ নিয়ে বললো শুভ্র,

‘ তোর কি আমাকে জোকার মনে হচ্ছে, অনিক।’

শুভ্রের এবারের কথা শুনে অনিক বেশ সিরিয়াসভাবেই বললো,

‘ তুই কি সত্যি এই বিয়েটা করতে চাস না, শুভ্র?’

‘ না! আমার ইচ্ছে করছে আমি এখনই এখান থেকে পালিয়ে লন্ডনে ফিরে যাই।’

শুভ্রের এবারের কথা শুনে অনিক যেন সত্যি অবাক। তাঁর মানে শুভ্র সব সিরিয়াস ভাবেই বলছে। অনিক হতাশা ভরা কন্ঠ নিয়ে বললো,

‘ এভাবে বলছিস কেন তোর কি বর্ষাকে পছন্দ নয়?’

‘ না। আমার বর্ষাকে ভালো লাগে না, কোনো কালেই লাগে নি। আর আমার মনে হয় না সামনের দিনগুলোতে আমার ভালো লাগবে।’

‘ এভাবে বলছিস কেন?’

‘ তুই বুঝতে পারছিস না আমি চাই না আমাদের বিয়েটা হোক। আমার বর্ষাকে পছন্দ নয়। এই ছোট্ট বিষয়টা তোরা কেন বুঝতে পারছিস না।’

শুভ্রের কথা শুনে বিষন্নমাখা কন্ঠ নিয়ে বললো অনিক,

‘ এভাবে বলিস না দেখবি বিয়ে হয়ে গেল সব ঠিক হয়ে যাবে। আর বর্ষা খুব ভালো মেয়ে।’

‘ আমি বলিনি বর্ষা ভালো না। বর্ষা যথেষ্ট ভালো কিন্তু আমার ওকে ভালো লাগে না।’

‘ এই কথাগুলো বাড়ির সবাইকে কেন জানাস নি।’

‘ জানাতে চেয়েছিলাম তো বর্ষার সাথেও কথা হয়েছিল কিন্তু হুট করে দাদুর এই অসুস্থতাই সবকিছু পাল্টে দিল।’

উওরে শুভ্রের কাঁধে হাত দিয়ে বললো অনিক,

‘ টেনশন নিস না দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে। পৃথিবীতে কত মানুষ আছে। যারা বিয়ের আগ পর্যন্ত তাঁর জীবনসঙ্গীর মুখটাও ঠিকভাবে দেখে নি। আমার মা বাবাই তো বিয়ের আগে নাকি তাঁরা একে অপরকে চিনতো না, জানতো না কিন্তু দেখ বিয়ের কতবছর হয়ে গেল তাঁরা এখনো একসাথে আছে। আসলে সবই হলো ভাগ্য আল্লাহ যার ভাগ্যে যা লিখেছে তাই হবে। তোর জন্য হয়তো বর্ষাকে বানানো হয়েছে।’

‘ কিন্তু আমি তো চাই না বর্ষাকে?’

‘ কে বলতে পারে এই বর্ষাই একদিন তোর জীবনের সবটা হয়ে যাবে। আর তুই তো ধরতে গেলে বর্ষাকে ঠিক চিনিসও না এতবছর বিদেশে ছিলি সেইভাবে তো দেখিস নি মনে হয়। বর্ষা খুব ভালো মেয়ে শুভ্র তোকে খুব ভালো রাখবে দেখিস।’

‘ এতই যখন ভালো ভালো করছিস তাহলে বিয়েটা তুই কেন করছিস না?’

শুভ্রের কথা শুনে ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায় অনিক। হাল্কা হেঁসেই বলে,

‘ তুই না থাকলে ঠিকই করতাম।’

অনিকের ঠাট্টার ছলটাকে সিরিয়াসলি নিয়ে বললো শুভ্র,

‘ আমায় একটা হেল্প করবি?’

‘ কি?’

‘ আমি আজ আর এক্ষুণি বিয়ের আসর ছেড়ে পালিয়ে যাবো আর আমার বদলে তুই বর্ষাকে বিয়ে করবি।’

শুভ্রের কথা শুনে অনিক চোখ বড় করে করে বললো,

‘ তোর কি মাথা ঠিক আছে শুভ্র?’

‘ প্লিজ দোস্ত আমায় একটু হেল্প কর না। আমি পারবো না বর্ষার সাথে থাকতে।’

‘ তুই কি পাগল হয়েছিস বাড়ি ভর্তি লোকজন। আর দাদু ভীষণ কষ্ট পাবেন শুভ্র।’

‘ এই মুহূর্তে আমি দাদুকে নিয়ে ভাবতে চাই না অনিক। তুই শুধু বল তুই এই বিয়েটা করতে রাজি।’

‘ তুই বুঝতে পারছিস না শুভ্র এটা অন্যায়।’

উওরে অনিকের হাত ধরে মিনতির স্বরে বললো শুভ্র,

‘ আমি ন্যায় অন্যায় বুঝতে চাই না অনিক তুই শুধু ওকে বিয়ে করে নে,প্লিজ।’

‘ এমনটা হয় না শুভ্র।’

‘ কেন হয় না তুই তো বললি বর্ষাকে তোর ভালো লাগে তাহলে বিয়েটা করলে প্রবলেম কোথায়?’

‘ আমি এমনটা কখন বললাম আমি শুধু বলেছি বর্ষা খুব ভালো মেয়ে।’

‘ ওই একই হলো, প্লিজ করে নে না বিয়েটা তাহলে আমি বেঁচে যাই।’

‘ কিন্তু শুভ্র?’

‘ কোনো কিন্তু নেই। এমন তো কত গল্পেই হয় বিয়ের আসর ছেড়ে বউ পালিয়ে যায় আর কনের বন্ধুর সাথে হিরোর বিয়ে হয়। আমাদের গল্পে না হয় উল্টোটা হলো বর পালিয়ে যাবে আর বরের বন্ধুর সাথে কনের বিয়ে হবে।’

শুভ্রের কথা শুনে চোখ বড় বড় করে বললো অনিক,

‘ তুই কি এতদিন বিদেশ বসে সিরিয়াল দেখতিস নাকি যে এই গল্পের থিম বলছিস।’

‘ তোর যা মনে হয়। তবে আপাতত অতশত জানি না দোস্ত আমি এখনই এই বিয়ের আসর ছেড়ে পালিয়ে যাবো আর তুই আমার হয়ে বর্ষাকে বিয়ে করে নিবি। জানি এতে হয়তো আমার ফেমেলির সবাই আমার উপর রেগে যাবে। যেটা একসময় চলেও যাবে। লাগলে আগামী ১০ বছরে দেশেই ফিরবো না। কিন্তু এই বিয়েটা হয়ে গেলে আমার বর্ষার দুজনের জীবনই নষ্ট হয়ে যাবে অনিক।’

‘ তোর কথা আমি বুঝতে পারছি শুভ্র কিন্তু তুই যেমনটা চাইছিস এটা ঠিক না।’

‘ ঠিক বেঠিক কিছু বুঝতে চাই না আমি। তুই শুধু আমায় বল আমি চলে গেলে তুই সবটা সামলে নিয়ে বর্ষাকে বিয়ে করে নিবি।’

উওরে হতাশা ভরা চোখ নিয়ে শুধু তাকিয়ে রইলো অনিক শুভ্রের মুখের দিকে। কি করবে না করবে সব যেন মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে তাঁর। এমনটা নয় সে বর্ষাকে পছন্দ করে না। কিন্তু বিয়ে করার কথা এমনটা সে কখনোই ভাবি নি।’

_______

কনে বেসে আয়নার সামনে বসে আছে বর্ষা। তাঁর পাশেই পার্লারের মেয়েরা তাঁকে সাজাতে ব্যস্ত যদিও প্রায় সাজগোছ শেষ তাঁর। এই দু’সপ্তাহে বাড়ির সবাইকে এই বিয়েটা না করার কথা বলতে চেয়েছিল বর্ষা কিন্তু দাদুর আবদারের কথা মনে পড়তেই আর কিছু বলতে পারে নি সে। তবে মনে মনে যতটা না খুশি খুশি লাগছে বর্ষার তাঁর থেকেও বেশি কষ্ট হচ্ছে এই মুহূর্তে। শুভ্রকে সে ভালোবাসে হয়তো মুখ ফুটে কখনো বলেনি বা বলার সুযোগ পায় নি। ছোট বেলা থেকেই সে জানতো তাঁর শুভ্রের বিয়ের কথা। যদিও তখন সে এই বিয়ে,স্বামী, সংসার কি কিছুই বুঝতো না তবে যবে থেকে বুঝতে পেরেছে বিয়ে স্বামী সংসার ভালোবাসা জিনিসটা আসলে কি তখন থেকেই একটু একটু করে শুভ্রের জন্য অনুভূতি জমিয়েছে সে। ভালোবাসতে শুরু করেছে এমনিতেও শুভ্রকে তাঁর ছোটবেলা থেকেই ভালো লাগতো। কিন্তু সেসব ভাবলে এখন খারাপ লাগে বর্ষার। কারন সে শুভ্রকে ভালোবাসলেও শুভ্র তাঁকে ভালোবাসে নি। আর তাঁকে হয়তো শুভ্র কখনই ভালোবাসবে না তাহলে মাঝখানে এই বিয়েটা কেন? যদিও মনে মনে খুশিও হয়েছে বর্ষা বিয়েটা হচ্ছে বলে। এমনটাও তো হতে পারে বিয়ের পর শুভ্রের মন ঘুরে যাবে আর তাঁকে খুব করে ভালোবাসবে। এমন তো কতই মানুষই থাকে যারা বিয়ের সময় বউকে ভালোবাসে না কিন্তু বিয়ের পর সময়ের সাথে সাথে সত্যিকার অর্থে খুব করে ভালোবেসে ফেলে তাঁর জীবনসঙ্গীকে। দীর্ঘ নিশ্বাস ফেললো বর্ষা। মনটা একদমই ভালো নেই তাঁর, কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে সবকিছু। শুভ্রকে আধও তাঁকে কোনোদিন ভালোবাসবে। আবার মনে হয় শেষ পর্যন্ত বিয়েটা হবে তো। কেমন যেন ভয় ভয় লাগছে বর্ষার। অস্থিরতা ফিল হচ্ছে খুব। এমন সময় হতভম্ব হয়ে তাঁর রুমে ঢুকলো অনিক। কিছুটা অস্থিরতা নিয়েই বললো সে,

‘ তোমার সাথে কিছু কথা ছিল বর্ষা?’

হুট করেই অনিকের ভয়েস শুনে হাল্কা চমকে উঠলো বর্ষা। তক্ষৎনাত নিজেকে সামলে নিয়ে বললো বর্ষা,

‘ জ্বী বলুন ভাইয়া।’

উওরে পার্লারের মেয়েগুলোর দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ আমি তোমার সাথে একা কিছু কথা বলতে চাই, বর্ষা।’

অনিকের কথা কিছুটা অবাক হয়েই বললো বর্ষা,

‘ ওহ!’

এতটুকু বলে পার্লারের মেয়েগুলোর দিকে তাকিয়ে বললো সে,

‘ আমার সাজটা কি কমপ্লিট হয়ে গেছে আপুরা?’

উওরে তারাও বললো,

‘ হুম, আমরা বাহিরে যাচ্ছি আপনারা কথা বলুন।’

এতটুকু বলে তাঁরাও একে একে বেরিয়ে যেতে লাগলো রুম থেকে। বর্ষাও পার্লারের মেয়েগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে এগিয়ে গেল অনিকের কাছে তারপর বললো,

‘ জ্বী এখন বলুন ভাইয়া। কি বলবেন আপনি?’

বর্ষার কথা শুনে অনিক কিছুটা অস্থিরতা নিয়ে বললো,

‘ আসলে হয়েছে কি বর্ষা?’

‘ জ্বী ভাইয়া বলুন কি হয়েছে? দাদু কি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েছে?’

‘ না তেমন কোনো ব্যাপার নয় ব্যাপারটা হলো শুভ্র..

সঙ্গে সঙ্গে চিন্তিত কন্ঠ নিয়ে বললো বর্ষা,

‘ কি হয়েছে শুভ্রের?’

‘ আসলে শুভ্র চলে গেছে বর্ষা।’

অনিকের কথা শুনে বর্ষা অবাক হয়ে বললো,

‘ চলে গেছে মানে কোথায় গেছে?’

উওরে মাথা নিচু করে সব ঘটনার কথা খুলে বললো অনিক। শুধু তাঁকে যে বিয়েটা করতে বলেছে এটা বাদে। সব শুনে বর্ষার চোখ ছলছল করতে শুরু করলো সে ভাবে নি শুভ্র এইভাবে বিয়ের আসর ছেড়ে চলে যাবে।’

অনিক আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই সেখানে উপস্থিত হলো বর্ষার মা। মেয়ের দিকে এগিয়ে এসে বললেন উনি,

‘ তোর কি হয়েছে ব..

এতটুকু বলেই ভিতরে অনিককে দেখে বেশ অবাক হয়ে বললো বর্ষার মা,

‘ অনিক তুমি এখানে?’

উওরে কিছুটা আমতা আমতা করে বললো অনিক,

‘ হয়েছে কি আন্টি শুভ্র বর্ষার একটা পিক তুলতে বলেছিল তাই আর কি একটা পিক তুলতে এসেছিলাম।’

অনিকের কথা কিছু বর্ষার মা হেঁসে ফেললো। তারপর বললো,

‘ ওহ কিন্তু ওকে যে নিচে ডাকছে আচ্ছা তাড়াতাড়ি ওর একটা পিক তুলে নেও তারপর আমি ওকে নিয়ে যাবো।’

উওরে অনিকও আর উপায় না পেয়ে বর্ষার একটা ছবি তুলে বললো,

‘ হয়ে গেছে আন্টি। আমি এক্ষুনি শুভ্রকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।’

অনিকের কথা শুনে বর্ষার মাও বলে উঠল,

‘ ঠিক আছে ঠিক আছে। চল বর্ষা।’

এতটুকু বলে বর্ষার হাত ধরে নিয়ে যেতে লাগলো বর্ষার মা। আর অনিক জাস্ট হতাশা ভরা চোখ নিয়ে তাকিয়ে রইলো বর্ষার মুখের দিকে। আর বর্ষাও তাকালো অনিকের মুখের দিকে। বুকের ভিতর হাহাকার শুরু হয়ে গেছে তার। এবার কি হবে বাড়ি ভর্তি লোকজন। দাদুর সম্মান, মা বাবার সম্মান কিভাবে কি সামলাবে সে। এক বুক অভিমান এসে ভর করলো বর্ষার মনে। বুক ভরা অভিযোগ নিয়ে মনে মনে বললো বর্ষা,

‘ এটা কি করলেন আপনি? এখন আমি কি করবো শুভ্র? কিভাবে সামলাবো সবটা!’

#চলবে…..

#ধূসর_শ্রাবণ💚
#লেখিকা:#তানজিল_মীম💚
#পর্ব-০৩

হতভম্ব হয়ে আছে পুরো বিয়ে বাড়ি কারন বিয়ের আসরে কনে আসলেও বরের কোনো খবর নেই। চারদিকে মানুষের সমালোচনা কানা ফুঁসা শুরু হয়ে গেছে অলরেডি। শুভ্রের বাবা বর্ষার বাবা দুজনেই প্রায় অপ্রস্তুত বিষয়টায়। তাঁরা ভাবে নি এইভাবে হুট করেই বিয়ের আসর ছেড়ে কোথাও চলে যেতে পারে শুভ্র। অনেকবার কলও করা হয়েছে শুভ্রকে কিন্তু প্রত্যেকবারই সেটা বন্ধ বলছে বারংবার। সবাই বেশ চিন্তিত বিষয়টায় হুট করে কোথায় চলে গেল শুভ্র। আর গেলই যখন বলে কেন গেল না।’

অন্যদিকে বিয়ের আসরে চুপচাপ বসে আছে বর্ষা। সবার এমন কানা ফুঁসা, সমালোচনা শুনে ভীষণভাবে কান্না পাচ্ছে তাঁর। এতদিন শুভ্রের প্রতি জমা তাঁর সব ভালোবাসাগুলো যেন ঘৃনায় পরিনত হয়েছে। নিজেকে যেন বেহায়া বলে মনে হচ্ছে কেন সে দাদুর কথা রাখতে গিয়ে ফেমেলিটাকে সাথে নিজেকেও এমন সমালোচনার সস্তা পাত্র বানিয়ে ফেললো। ঠাটিয়ে নিজের গালে কয়েকটা থাপ্পড় মারতে পারলে হয়তো খুব ভালো লাগতো। হুট করেই বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো বর্ষা। অভিমানের ভাড়ি পাহাড় নিয়ে একটু একটু এগিয়ে যেত লাগলো সে দাদুর কাছে। তাঁর থেকে কয়েককদম দূরেই একটা চেয়ারে বসে আছেন উনি। চোখে মুখে বিস্ময়ের ছাপ তাঁর। বর্ষা দাদুর দিকে এগিয়ে গিয়ে চুপটি করে বসলো দাদুর পাশ দিয়ে তারপর বললো,

‘ দাদুভাই?’

হুট করেই বর্ষার ভয়েসটা কানে আসতেই আস্তে আস্তে চোখ তুলে তাকালেন বর্ষার দিকে শুভ্রের দাদু। তারপর বললেন,

‘ হুম বলো দাদুভাই।’

‘ জানো তো দাদু জীবনটা হলো এলেমেলো বার্তা আসার কলিংবেল। কখন যে হুট করে কি বা কে আসবে বোঝাই যায় না। এই যে দেখছো বিভিন্নপদের মানুষ বিভিন্ন কথা বলছে। আসলে কি বলো তো মানুষের রুচিটাই হলো এমন। কেউ কেউ সহজ বিষয়টাকেও জটিল করে নেয় আবার কেউ কেউ কঠিন বিষয়টাকেও সহজভাবে নেয়। যেমন ধরো এইখানের মানুষজন কেউ কেউ বলছে আমি বেহায়া, অপয়া। আবার কেউ কেউ শুভ্রকে নিয়েও সমালোচনা করছে, শুভ্র অন্য মেয়ের সাথে পালিয়ে গেছে, নিজের সার্থের জন্য ফেমেলিকে ছেড়ে গেছে। আবার কেউ কেউ পুরো ফেমেলিটাকেই খারাপ ভাবছে। আবার দেখো না এই এত এত সমালোচনার মাঝে কেউ আবার আমায় নিয়ে চিন্তা করছে আমার ভবিষ্যত কেমন হবে, আবার শুভ্রকে বলছে হয়তো এমন কিছু হয়েছে যার জন্য শুভ্রকে বাধ্য হয়ে বিয়ের আসর ছেড়ে যেতে হয়েছে। সবই মানুষের আনুমানিক ধারনা। কেউ সঠিক জিনিসটা জানে না তারপরও আপন মনে একেকটা জিনিস ভেবে এক একজন একএক কথা বলছে।’

বর্ষার কথার আগামাথা গোড়া কিছু বুঝতে না পেরে বলে উঠল দাদুভাই,

‘ তুমি এইসব কি বলছো দাদুভাই আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।’

উওরে নিশ্চুপ স্বরে বলে উঠল বর্ষা,

‘ হুম বলছি তবে তুমি আমায় কথা দেও কথাটা শোনার পর তুমি সবটা সহজভাবেই মেনে নিবে জটিলতা বানাবে না।’

‘ আগে কথাটা কি সেটা তো বলবে তুমি কি জানো শুভ্র কোথায় গেছে?’

উওরে নিজের মাথাকে উপর নিচ করে নাড়িয়ে সমর্থন জানালো বর্ষা। বর্ষার কথা শুনে দাদুভাইসহ বাকি সবাইও অবাক হলো বর্ষার মা তো এগিয়ে এসে বললো,

‘ তুই জানি শুভ্র কোথায় গেছে?’

মায়ের কথা শুনে বর্ষাও মায়ের দিকে একপলক তাকিয়ে দাদুর হাত ধরে বললো,

‘ হুম জানি।’

বর্ষার কথা শুনে দাদুভাইও বেশ খানিকটা অবাক হয়ে বললেন,

‘ তাহলে বলো কোথায় গেছে শুভ্র?’

উওরে মাথা নিচু করে বললো,

‘ হুম বলছি।’

বর্ষার কথা শুনে সবাই বেশ আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে রইলো বর্ষার দিকে। তাঁরা তো অবাক হচ্ছে এটা ভেবে শুভ্র বর্ষাকে বলে গেছে কোথায় গেছে। কিন্তু বর্ষা তাদের এখনো কিছু বললো না কেন। বর্ষাকে চুপ থাকতে দেখে দাদুভাই আবারো বলে উঠল,

‘ কি হলো দাদুভাই তুমি বলছো না কেন শুভ্র কোথায় গেছে?’

দাদুর কথা শুনে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে নিশ্চুপেই বলে উঠল বর্ষা,

‘ আসলে হয়েছে কি দাদু, শু?’

আর কিছু বলার আগেই সেখানে উপস্থিত হলো শুভ্র। সবাইকে উদ্দেশ্য করেই বললো সে,

‘ কিছু হয়নি দাদুভাই এই তো আমি চলে এসেছি।’

সঙ্গে সঙ্গে বর্ষা অবাক চোখে তাকালো শুভ্রের দিকে। বর্ষার সাথে সাথে বাকি সবাইও তাকালো শুভ্রের মুখের দিকে। শুভ্রের বাবা তো চটজলদি এগিয়ে গেল শুভ্রের দিকে তারপর বললো,

‘ কোথায় গিয়েছিলে তুমি কাউকে কিছু না বলে?’

উওরে মাথা নিচু করে বললো শুভ্র,

‘ আমি খুব দুঃখিত বাবা আসলে আমার এক বন্ধু আসার পথে এক্সিডেন্ট করে ওকে দেখতেই গিয়েছিলাম ভেবেছিলাম তাড়াতাড়ি চলে আসতে পারবো। কিন্তু একটু লেট হয়ে যাবে বুঝতে পারি নি। আই এম সরি বাবা।’

শুভ্রের কথা শুনে বিস্মিত হয়ে বললো শুভ্রের বাবা,

‘ একটা ফোন তো করতে পারতে।’

বাবার কথা শুনে পকেট থেকে নিজের ভাঙাচোরা ফোনটা দেখিয়ে বললো,

‘ রাস্তায় পড়ে ভেঙে গেছে বাবা তাই আর কি?

শুভ্রের কথা আর মোবাইলটার অবস্থা দেখে শুভ্রের বাবাও আর কিছু বলতে পারলো না। কিছুক্ষন নিশ্চুপ থেকে বললো,

‘ ঠিক আছে চলো এখন! সেই কখন থেকে বর্ষা তোমার জন্য অপেক্ষা করে বসে আছে।’

উওরে মৃদু হাসলো শুভ্র। তারপর সেও এগিয়ে গেল বর্ষার কাছে। বর্ষা শুধু নির্বিকার হয়ে তাকিয়ে রইলো শুভ্রের মুখের দিকে। সে বুঝলো না শুভ্র ফিরে কেন আসলো। তাহলে কি সে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু কি এমন হলো যে শুভ্র ফিরে আসলো।’

বর্ষার ইচ্ছে করছে সে নিজেই এই বিয়েটা ভেঙে দিক। কিন্তু আশেপাশের লোকজন এতক্ষণ যা যা বললো সেটার প্রতি উওর হিসেবে শুভ্রের এখানে আসাটাই হয়তো মুখ্য জবাব। কিন্তু এখন যদি সে বিয়েটা ভেঙে দেয় তাহলে লোকজন আবার তাদের দিকে আঙুল তুলবে। মাঝে মাঝে পরিস্থিতি আমাদের এমন এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে রাখে যে, আমরা চাইলেও কিছু করতে পারি না। সমালোচনা জিনিসটা এতটাই বাজে যে মাঝে মধ্যে তাদের চুপ করানোর জন্য নিজেকে বেহায়া হতে হয়। নিজের কাছে নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে করতে হয়। শুভ্রকে সে ভালোবাসে, তাই বেহায়ার মতো শুভ্র রিজেক্ট করার পর ও বিয়েটায় সে রাজি হয়েছিল, বিয়ের আসরে এসে বসতে চেয়েছিল তাঁর মন। তাই বিয়ের বেসে সেজেছিল আজ। কিন্তু শুভ্র যা করলো এতে তাঁর মন ভেঙে গেছে পুরোপুরি। এতক্ষণ সে ভালোবাসার জন্য বেহায়া সেজেছিল। আর এখন মানুষের সমালোচনাকে ঠেকাতে বেহায়া হবে আর একবার। বর্ষার মন ভিতর থেকে ভেঙেচুরে গেছে পুরোপুরি।’

হঠাৎই হাতে কারো স্পর্শ পেতেই চমকে উঠলো বর্ষা সাথে নিজের ভাবনা থেকে বেরিয়ে সামনে তাকালো সে। তাঁর সামনেই সাদা পর্দার আঁড়ালে অপরপাশে বসে আছে শুভ্র। কিছুক্ষনের আগেই মায়ের হাত ধরে দাদুর কাছ থেকে সরে এখানে বসেছে সে। শুভ্রের পাশেই বসে আছে কাজী সাহেব বিয়ে পড়াতে শুধু করেছেন উনি।’

অতঃপর কবুল বলার মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হলো শুভ্র আর বর্ষার। সাথে তাঁরা আবদ্ধ হলো বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধনে। বর্ষার মনে অনেক প্রশ্ন?

‘ শুভ্র তো চলে গিয়েছিল তাহলে ফিরে কেন এলো? কি এমন হলো যে তাঁরা সুস্থ সবল ফোনটা এভাবে ভেঙে চুরে গেল। কি এমন হয়েছে যার জন্য শুভ্র লন্ডন না গিয়ে ফিরে এসে তাঁকে বিয়ে করলো? সত্যি কি শুভ্রের বন্ধুর এক্সিডেন্ট হয়েছে নাকি অন্যকিছু।’

প্রশ্নগুলো মাথায় এসে আঁটকে যাচ্ছে বারংবার। কোথায় পাবে এই প্রশ্নের উত্তর। শুভ্র কি দিবে তাঁকে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর। বিষন্ন মাখা মুখ নিয়ে তাকালো বর্ষা শুভ্রের মুখের। শুভ্রও তাকালো তাঁর পানে, তক্ষৎনাত চোখ সরিয়ে ফেললো বর্ষা শুভ্রের ওপর থেকে। কেন যেন এই মুহূর্তে শুভ্রকে দেখতে ইচ্ছে করছে না তাঁর।’

________

পুরো ভার্সিটি ঘুরে তন্নতন্ন করে হিয়াকে খুঁজছে শিফা। কিন্তু পুরো ভার্সিটির কোথাও তাঁকে খুঁজে পাচ্ছে না সে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে আসলো তাও মেয়েটার কোনো খোঁজ নেই। হিয়া নামক এই মেয়েটা যে হুটহাট কোথায় চলে যায় বুঝতে পারে না শিফা। কয়েক ঘন্টা আগে একবার হাওয়া হয়ে গিয়েছিল এখন আবার হাওয়া হয়ে গেছে। এসব ভাবতে ভাবতে এগিয়ে যাচ্ছিল শিফা। এমন সময় ভার্সিটির লাইব্রেরির সামনে দিয়ে যেতে গিয়ে হঠাৎই বিকট শব্দ আসলো লাইব্রেরির ভিতর থেকে। তক্ষৎনাত কৌতুহলী এগিয়ে গেল শিফা লাইব্রেরির ভিতরে। তারপর যা দেখলো তাতে তাঁর চোখ বড় বড় হয়ে গেল। কারন তাঁর থেকে কয়েক কদম দূরে কতগুলো এলেমেলো ভাবে নিচে পড়ে থাকা বইয়ের মাঝে মাথায় কার্টন দিয়ে ঢেকে দাঁড়িয়ে আছে একটা মেয়ে। শিফা বুঝতে পেরেছে সে যে মেয়েটাকে তন্নতন্ন করে খুঁজে চলেছে সেই এই। কোমড়ে হাত দিয়ে চটজলদি দৌড়ে এগিয়ে গেল শিফা হিয়ার কাছে তারপর বললো,

‘ এভাবে বই নিয়ে হাডুডু না খেলে বাসায় বসে একটু পড়তেও তো পারিস।’

শিফার কথা শোনার সাথে সাথে মুখ থেকে কার্টনের বড় প্যাকেটটা মাথা থেকে সরালো হিয়া। এলেমেলো চুল সাথে চোখে ব্যাঁকাভাবে পড়া মোটা ফ্রেমে চশমা গায়ে পেস্ট কালার জর্জেট থ্রি-পিচ পড়ে পুরো পাগল পাগল লাগছে তাঁকে। হিয়ার এমন অবস্থা দেখে চোখ বড় বড় করে বললো শিফা,

‘ এসব কি অবস্থা করেছিস নিজের।’

উওরে নিজের মাথার চুল সাথে চশমাটা ঠিক করতে করতে বলে উঠল,

‘ আর বলিস না একটা উপন্যাস খুঁজতে এসে এমন অবস্থা হয়েছে নিজের।’

‘ কি?’

‘ তাহলে বলছি কি ভেবেছিলাম একজন বড়সড় রাইটারের গল্প পড়লে হয়তো মস্তিষ্কটা একটু পরিষ্কার হবে। কিন্তু হলো কি ওই শালার কার্টনটার জন্য আমার সব গেল।’

‘ কেন ওটা কি করেছে?’

‘ কি করেনি সেটা বল কার্টনটাকে বই ভেবে দিয়েছিলাম টান সাথে সাথে সব বইগুলো এসে পড়লো নিচে আর কার্টনটা এসে পড়লো আমার মাথায়।’

বর্ষার কথা শুনে চোখ বড় বড় করে বললো শিফা,

‘ যখন টান দিবি তখন দেখে টান দিবি না।’

শিফার কথা শুনে মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলে উঠল হিয়া,

‘ দেখেই তো দিয়েছিলাম কিন্তু হলো টা কি দেখতেই তো পাচ্ছিস। প্লিজ দোস্ত আমায় একটু হেল্প কর না।’

‘ আমি পারবো না তুই নির্মল ভাইয়াকে ডাক দে?’

‘ একদম ঠাটিয়ে একটা দিবো ওই ভিলেনটাকে কেন ডাকতে যাবো আমি?’

‘ এইভাবে বলতে পারলি উনি তোকে কত ভালোবাসে বল!’

‘ ভালোবাসে না ছাই কালকেও একটা ছেলেকে মেরেছিল জানিস।’

‘ সেটা তো তোর জন্যই ওই ছেলে তোর গায়ে টার্চ করেছিল বলেই না।’

‘ ওই ছেলের কোনো দোষ ছিল না আমি ঠিকভাবে হাঁটতে না পেরে পড়ে যেতে নিয়েছিলাম তাই ধরেছিল ছেলেটা।’

‘ কিন্তু সেটা নির্মল ভাইয়াকে কে বোঝাবে। তবে ভাইয়া তো আবার সুস্থ করে দিয়েছিল তাই না।’

উওরে বিষন্ন মাখা মুখ নিয়ে বললো হিয়া,

‘ একজন ডাক্তারের কাজ কি? অসুস্থ রোগীকে সুস্থ করা আর নির্মল ডাক্তার হয়ে কি করে সুস্থ মানুষকে অসুস্থ বানিয়ে আবার সুস্থ করে এটা কোনো কথা।’

‘ কিন্তু এগুলোর সবগুলোই তো তোর জন্য।’

‘ আমার জন্য মানে আমি বলেছি এমনটা করতে।’

‘ বলিস নি ঠিকই কিন্তু ভালোবাসি বলতে তো পারিস।’

‘ তোর কি মাথা খারাপ হয়েছে ওই ভিলেনটাকে আমি ভালোবাসি বলতে যাবো।’

‘ তুই না বললেও ভাইয়া বিয়েটা কিন্তু তোকেই করবে।’

‘ করতে আসুক না আমিও বিয়ের আসর ছেড়ে পালিয়ে যাবো।’

এতটুকু বলে বেশ বিস্মিত কন্ঠ নিয়ে বললো,

‘ জানিস আজ কি হয়েছিল?

উওরে খুব সিরিয়াস ভাবেই বললো শিফা,

‘ কি?’

‘ বলবো আগে আমায় এই বইগুলো উঠাতে সাহায্য কর না হলে বলবো না।’

‘ 😒😒😒

‘ ওভাবে তাকালে কিন্তু বলবো না।’

হিয়ার কথা শুনে কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো শিফা,

‘ তুই আবার আমায় কৌতূহলের কথা রেখে কাজ করাচ্ছিস।’

উওরে দাঁত কেলানি হাসি দিয়ে বললো হিয়া,

‘ এমন কর কেন তুই আমার বেস্টু না তাড়াতাড়ি চল না গুছিয়ে ফেলি বইগুলো না হলে দারোয়ান দাদু ভার্সিটির গেট লাগিয়ে চলে যাবে।’

হিয়ার কথা শুনে নিরুপায় হয়ে বললো শিফা,

‘ ঠিক আছে চল তাড়াতাড়ি।’

শিফার কথা শুনে হিয়াও খুশি হয়ে ওর গাল টেনে দিয়ে বললো,

‘ আমার মিষ্টি বেস্টু।’

‘ হুম হয়েছে হয়েছে কাজ শেষ হলে কিন্তু কথাটা বলতে হবে বলে দিলাম।’

‘ হুম বলবো বলবো তোকে বলবো না তো কাকে বলবো বল।’

‘ হুম ঠিক আছে ঠিক আছে।’

এতটুকু বলে লাইব্রেরি জুড়ে নিচে পড়ে থাকা বইগুলো গুছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো হিয়া আর শিফা।’

প্রায় আধ ঘন্টা পর পুরো কাজ শেষ করে বললো শিফা,

‘ এবার তাহলে বল কি হয়েছিল আজ?’

‘ হুম বলবো চল যেতে যেতে বলছি।’

এতটুকু বলে লাইব্রেরি থেকে বের হলো হিয়া আর শিফা। তারপর হাঁটতে হাঁটতে বলে উঠল হিয়া,

‘ আজ এয়ারপোর্টে গিয়েছিলাম আমার কাজিন সৈকতকে আনতে আর তখন….

#চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে