তোমাকে_চাই (Season 2)পার্ট_৪

0
1955

তোমাকে_চাই (Season 2)পার্ট_৪
#আরবি_আরভী
উনি যেইভাবে আমাকে তাচ্ছিল্য করেন তা থেকেই বোঝা যায় আমি উনার জীবনে কতটুকু জায়গা দখল করে আছি),,,,, কিন্তু রেহান ভাইয়া আমাকে অবাক করে দিয়ে নির দিধায় ডাক্তার সাহেবকে বলে উঠলেন,,,,,
-এটা আমার বউ
-ও আচ্ছা,,,,,,উনাকে এই ঔষধগুলো সময়মতো খাওয়াবেন।। সুস্থ না হলে মাথার এক্স-রে করতে হবে,,
-ঠিক আচ্ছে,,
রেহান ভাইয়ার কাধে শুয়ে থেকে আমি তাদের সব কথা শুনছি।। মনের ভেতর লাডু ফুটছে আজকে উনার মুখে যা শোনলাম তার জন্য একদম প্রস্তুত ছিলাম না।। মাথাটা ব্যাথা করছে কিন্তু কেন জানি ঠোঁট থেকে আমার মুচকি হাসিটা সরছেই না বারেবারে উনার মুখে আমাকে বউ বলার কথাটা মনে পরছে??
হসপিটাল থেকে বের হয়ে দুজন রিকশার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম আমি উনার ডান হাতটা শক্ত করে আকড়ে ধরে আছি আর উনি একটু পর পর শুধু জিজ্ঞাসা করছেন আমার কেমন লাগছে, কিছু খাব কি না, হাটতে পারবো তো,,, ইত্যাদি ইত্যাদি।। আমি মাথা নেড়ে নেড়ে উনাকে উত্তর দিচ্ছি,,,, কিছুক্ষন পর একটা রিকশা এলে আমরা দুজনে রিকশায় চেঁপে বসি আমি মাথাটা উনার কাধে এলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে আছি।।কিছু দূর যাওয়ার পর হঠাৎ রেহান ভাইয়ার মোবাইলটা বেজে ওঠে উনি কোনরকমে জিন্স থেকে ফোনটা বের করে দেখেন ঐশীর কল,,, রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে স্পষ্ট কন্ঠে আলাপ শুরু হল,,,,,,
-হ্যালো ,,,,,,,জান কি কর??
-রিকশায় আছি বাড়ি ফিরছি ওকে পরে কথা হবে,,,বায়,,,,
তাদের এই আদিখ্যেতার কথা শোনে আমি আর নিজেকে সামলাতে পারচ্ছি না।। এত্ত কি কথা মেয়েটার সাথে আর সে কে যে তাকে প্রতিটা কথার উত্তর দিতে হবে।। মাথা ব্যাথার কথা ভুলে উনার কাধ থেকে মাথাটা সরিয়ে চেচিয়ে তাই বলেই ফেললাম,,,,
-কে এই মেয়ে,,,, এত্ত কি ভাব ওর সাথে আপনার হুম্মম????
চেচাঁমেচির শব্দ শোনে রিকশাওয়ালা বারেবারে আমাদের দিকে তাকাচ্ছেন কিন্তু ভাব করছেন যেন তিনি কিছুই দেখেন না,,, রেহান ভাইয়া আমাকে শান্ত করার লক্ষ্যে নরম কন্ঠে বলে উঠলেন,,,,,,
– জোরে কথা বল না মাথা আরো বেশি ব্যাথা করবে,,,, আমরা বাসায় পৌঁছে কথা বলি কেমন,,,,
আমার রাগের তীব্রতা বেড়ে গেল।। কোনভাবেই নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছি না।। উনার সাথে এক রিকশায় বসে থাকাটাও যেন এক মহামারীর ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে তাই আর দেরি না করে ভীষণ রেগে রিকশাওয়ালাকে বলে উঠলাম,,,
-এই যে,,,, রিকশা থামান আমি নামবো,,
-মামা তুমি চল ওর কথা শোনার দরকার নেই,,
-আমি রিকশা থামাতে বলেছি,,,
-আরে মামা তুমি চল,,
আমি যতবার বলছি রিকশা থামাতে ততবার রেহান ভাইয়া রিকশাওয়ালাকে বাধা দিয়ে চলতে বলছেন।।এদিকে রিকশাওয়ালা পরে গেছে এক মারপ্যাঁচে কার কথা শুনবে,, শেষ-মেষ রেহানের কথারই প্রাধান্য দিলেন যেহেতু আমার শরীরটা ভালো না।। সারা পথ আমি গম্ভীর মুখ নিয়ে বসে আছি রেহান অবশ্য আমাকে এটা-ওটা বলে নরমাল করার চেষ্টা করছেন কিন্তু কোন লাভ নেই কারন আমি ঐশীর ব্যাপারটা ভুলতে পারছি না,,,,বাড়ি পৌঁছাতেই আমি লাফ দিয়ে রিকশা থেকে নেমে নিজের মতো করে হাটতে লাগলাম উনি রিকশাওয়ালাকে বাড়াটা দিয়ে দৌড়ে এসে শক্ত করে আমার হাতটা ধরে বিনয়ী কন্ঠে বলতে লাগলেন,,,,
-নিসা প্লিজ শোন,, আমি তোকে সবটা বলব কিন্তু তার আগে তোর মেজাজটা ঠান্ডা কর প্লিজ?
আমি তারকাছ থেকে এক জাটকা দিয়ে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে রুক্ষ সরে বলে উঠলাম,,,
-ছাড়েন আমাকে,,,,,একদম স্পর্শ করবেন না বলে দিচ্ছি,,, আপনার কোন কথা শোনার প্রয়োজন নেই আমার,,,, আমি কে বা হই আপনার যে আমাকে সব বলতে হবে,,,যার আপনে জান হোন তার কাছে গিয়ে সব মনের কথা খোলে বলুন,, ??
উনি আর কিছু বলবেন তার আগেই আমি সেখান থেকে গায়েব হয়ে রুমে এসে ধপাস করে বিছানায় শুয়ে পড়ি।।। মাথা ব্যাথা থাকায় শুতেই গভীর নিদ্রায় চলে যাই।।
সকালে উঠে প্রকৃতিটাকে নতুন করে অনুভব করছি।। রাতে ভালোই হল ঘুমটা।। সবকিছু একদম ফ্রেশ মোডে আছে তাই ভাবলাম একটু ছাদে গেলে মন্দ হয় না?,,,,আর দেরি না করে হন- হন করে ছাদে উঠে দেখি আমার গুণধর রেহান ভাইয়াও সেখানে আছেন ব্যায়াম করছেন আর পাশ ফিরে কার সাথে যেন একটু পর পর বিরবির করে কথা বলছেন।।যাইহোক উনাকে দেখে আমার মনে কেমন যেন একটা অনুতাপ সৃষ্টি হল। কালকে রাতে কত খারাপ ব্যবহারই না করেছি উনার সাথে কি যেন একটা বলতে চেয়েছিলেন তাও শোনিনি ।। যাক আজকে এই ফ্রেশ সকালে তার সব কথা শোনব এবং আমাদের মাঝে থাকা সব বিপত্তি দূর করব ইনশাআল্লাহ ?।। কথাগুলো ভেবে ছাদের দরজা থেকে পা টা সামনের দিকে এগুতেই আমাদের পাশের বিল্ডিংয়ের ছাদে এক সুন্দরী রমণীর উপস্থিতি লক্ষ্য করলাম যা দেখে আমার চোখগুলো একদম ছানাবড়া।। তাহলে ব্যাটা এত্তখন যাবৎ এই মেয়ের সাথে ছাদ টু ছাদ প্রেম আলাপ করছিল?,,, আমি একটু আড়ালে গিয়ে তাদের কথোপকথনের ব্যাখা শোনে বুজলাম যে মেয়েটাই উনাকে নানান প্রশ্ন করছে আর উনি লক্ষী ছেলেটির মতো প্রশ্নগুলোর উত্তর দিচ্ছেন,,, যা আমার মেজাজটাকে ৪২০ করে দিচ্ছিল।।
একদম মানতে পারছিলাম না তাদের এই প্রেমালাপটাতাই দৌড়ে গিয়ে রেহানকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ন্যাকাম কন্ঠে বলে উঠলাম,,,
-জান,,,, তুমি এখানে?? তুমি জানোনা তোমাকে না দেখলে আমি ঠিকমত ব্রেকফাস্ট করতে পারি না,,,
রেহান ভাইয়া বাকরুদ্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছেন।। হয়তো বুজতে পারছেন না কিভাবে উনি রিয়েক্ট করবেন আর মেয়েটাকে দেখে তো মনে হল তিনি যেন আকাশ থেকে পরেছেন,,, হা করে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে ,,,(ঈর্ষানিত হচ্ছে তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে),,, কিন্তু আমি এমন ভাব করছি যেন আমাকে আর রেহান ভাইয়াকে ছাড়া ওখানে আর কারো অস্তিত্ব নেই,,,,, বিষয়টায় আরো একটু মরিচ মেখে রেহান ভাইয়ার সামনে গিয়ে তার গাল গুলো টেনে বলতে লাগলাম,,,,
-অলে অলে অলে আমার বাবুটা,,,, আমার জামাইটা,,,, আই লাভ ইউ জামাই??
রেহান ভাইয়া মূর্তির মতো দাড়িয়ে রাগান্বিত কন্ঠে ফিস ফিস করে একনাগাড়ে বলেই চলছেন ,,,
-থাম নিসা দেখ মেয়েটা কিভাবে তাকিয়ে আছে,,, খারাপ ভাবছে কিন্তু,,
আমি তার বুকে মাথা রেখে মেয়েটার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে বলে উঠলাম,,
-দেখুক তাতে কি শাকচুন্নিরা দেখবে আর জ্বলবে,,,
মেয়েটা আমাদের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে যেন মঙ্গল গ্রহের দুটি প্রাণীকে একসাথে দেখছে এমনি চেহারার ভাব তার?,,,,,মনে মনে ভাবছি ভালোই হয়েছে ড্রামাটা করে শাকচুন্নিটা আচ্ছামত শায়েস্তা হয়েছে দেখছি??,,,,,,,,,,,,,, কিন্তু আমার এই ন্যাকামর ১২ টা বাজলো যখন রেহান ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরে থাকা অবস্থায় চাচি ছাদের দরজায় থেকে আমাকে ডেকে উঠলে,,,,??,,,,,,,,
চলবে

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে