তুমি নামক অক্সিজেন পর্ব-১৫+১৬

0
1387

#তুমি_নামক_অক্সিজেন
#পর্ব_১৫
Tahrim Muntahana

আমার ছেলে যখন বলল আমরা মেয়েকে দেখেছি আগে তখন ভাবলাম কিভাবে। এখানে এসে তো সারপ্রাইজ হয়ে গেলাম। আমার প্রিয় খেলা বাস্কেটবল চ্যাম্পিয়ন আমার ঘরের বউ হবে ভাবতেই কেমন শান্তি লাগে। এখন আপনারা যদি চান তাহলে এগোবে -সাগরের বাবা

আমার মেয়েটা দেখতে পারেনা জেনেও আপনারা এই প্রস্তাব টা রাখলেন। কিন্তু সমাজের মানুষ কি বলবে আপনাদের। তখন তো মানুষ অনেক কথা শুনাবে যখন দেখবে আপনাদের বউমা দেখতে পারে না -নিশি চৌধুরী

আন্টি আমি একটা কথা বলি আমি রিয়াকে ভালোবেসেছি। সুতরাং শুধু রুপ দেখে নয় আচার ব্যবহার গুন এসব দেখেও আর সব থেকে বড় কথা ওর মনটা দেখে আমি ভালোবেসেছি। আর প্রতেবেশী কে কি বললো তাতে কিছু যায় আসে না আমার। এই কথা দিতে পারি যে আবাদত আমাদের সামনে কেউ ওকে ঠেস দিয়ে কথা বলতে পারবে না। আগলে রাখবো সবসময়। আমি আপনাদের সাথেই কথা বললাম কারণ আমি চাই না কারো থেকে শুনে সবাই আমাকে ভুল বুঝুক। এখন সব আপনাদের ইচ্ছে -সাগর

আমাদের একটু সময় দিন -হৃদয় চৌধুরী

রিয়া কিছু বলতে যাবে তার আগেই হৃদিতা ওকে থামায়।

পাপা ছোট আব্বু বাবাই ছোট আম্মু মম আমাকে বিশ্বাস করোতো -হৃদিতা

আম্মু তোমাকে তো চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারি -রিয়ান চৌধুরী

ওনারা যে আজকে আসবে আমি আগে থেকেই জানি। আর হৃদরাজকে তো তোমরা ভালো করেই জানো তার বন্ধু কখনো খারাপ হতে পারে বলো। সাগর ভাইয়া নিজেদের বিজনেস সামলাই ভালো ফ্যামেলি ভালো ছেলে বিশেষ করে ভালো শশুড় শাশুড়ি আর কি চাই বলো। আমি যতদূর জানি রিয়ুর মনেও সাগর ভাইয়ার প্রতি সফট কর্নার আছে। সেটা রিয়ু স্বীকার করুক বা না করুক। আমি একান্তই চাই এই বিয়েটা হোক। এখন তোমাদের ইচ্ছে -হৃদিতা

হৃদান ও চোখ দিয়ে আশ্বাস দিলো সবাইকে। আর কেউ না বলার কিছু পেলো না। নিশি আর পরশির খুব পছন্দ হয়েছে মুখ দেখলেই বুঝা যাচ্ছে কিন্তু চৌধুরী বংশের ছেলেদের টলানো খুব কঠিন মুখটা গম্ভীর করে বসে আছে।

পাপা আমারো মনে হয় হৃদিপাখি যা বলছে ঠিক। তুই কি বলিস নাশু -পরশ

আমি কি বলবো ভাইয়া তোমরা যা করো তাই হবে -নাশিন

সাগর শুকনো ঢোক গিললো। খুব ভয় করছে কারণ তিন চৌধুরী বংশের বর্তমান মাথাদের মুখটা এখনো আগের ন্যায় গম্ভীর। এমন সাগর একটা বাচ্চাদের মতো কাজ করে বসলো

আই প্রমিস শশুড় আব্বু, শশুড় বাবাই, বড় শশুড় আব্বু আপনাদের মেয়েকে কোনোদিন কষ্ট দিবো না। খুব খুব খুব ভালোবাসবো। ঝড়ের রাতেও যদি বলে ফুচকা খেতে ইচ্ছে করছে আমি যেভাবেই হোক খাওয়াবো। কনকনে শীতেও যদি বলে তার জন্য পুকুরে নেমে শাপলা ফুল আনতে তাও আনবো। মাঝরাতেও যদি বলে আপনাদের সাথে দেখা করবে তখনি ছুটে চলে আসবো। যখন বাচ্চা হবে তখন একটুও কাছ থেকে সরবো না। সব আবদার পুরণ করবো। তার হাতে মার খেতেও রাজি, শীতে বাইরে ঘুমাতেও রাজি, গরমে রোদের মধ্যে দাড়িয়ে থাকতেও রাজি এখন শুধু আপনাদের রাজি হওয়া বাকি

সাগর একনাগাড়ে কথা গুলো বলে সোফায় বসে পড়লো। ওর দিকে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আহনাফ রিয়ান হৃদয় চৌধুরী ওর দিকে ভ্রু কুচকে গম্ভীর হয়ে তাকিয়ে আছে তা দেখে সাগর একটা মেকি হাসি দিয়ে কাচুমাচু করা শুরু করলো। ওর অবস্থা দেখে ওরা তিনজনই এ ওর মুখ চাওয়াচাওয়ি করে হঠাৎ উচ্চস্বরে হেসে উঠলো। সাথে সাথে সবাই হেসে উঠলো রিয়া এক জায়গায় দাড়িয়ে মুচকি মুচকি হাসছে। এদের হাসি দেখে সাগর বেক্কল বনে গেল। শেষ মেষ নিজেও হাসতে শুরু করলো তা দেখে ওরা পারে না হেসে মাটিতে গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা।
সবাই বিয়েতে মত দিয়েছে। হৃদিতার ইচ্ছে এখন শুধু আকদ করে রাখবে সময় হলে বড় করে অনুষ্ঠান করবে। সবাই তাতে সায় দিয়েছে। আজকে আংটিও পড়িয়ে গেছে। কাল আকদ খুব সিম্পল ভাবে। বাইরের কোনো মানুষ থাকবে না। তাই আলো আর নিয়নের আর যাওয়া হলো না হৃদিতাদের সাথেই সবাই ওদের বাড়ি রওনা হলো। ছোট করে হলেও কিছু মেহমান তো হবেই। সবাই বাড়িতে গিয়ে কাজে লেগে পড়েছে। আলোর শশুড় বাড়ির কিছু অথিতি আসবে রাইসা রাহি রোহানি আধির সাহিলের অল ফ্যামিলি আসবে। সাগরের কাকারা আসবে। পিয়াসের ফ্যামিলি আসবে। হৃদিতা তো খুব খুশি রিয়ুর জন্য। হৃদান বাংলাদেশের বিজনসটা ভালোকরে বুঝে নিয়েছে আজকে। পাপা কে আর কষ্ট দিবে না। পরশ নাশিন কেউ অফিসে নিয়ে গিয়েছে। নাশিনের ও তো ভবিষ্যত আছে।

অবশেষে রিয়ুর জীবনে কাঙ্খিয় সময় টা আসলো। লাল বেনারসি শাড়ি তে অপ্সরির থেকে কম মনে হচ্ছিলো না। সাগর সেই কখন থেকে দেখেই যাচ্ছে এখানে যে বড়রাও আছে তার খেয়ালি নেই। ওর অবস্থা দেখে সবাই মিটিমিটি হাসছে। ভালো ভাবেই আকদটা হয়ে গেলো। এখন রিয়া আর সাগরকে আলাদা কথা বলতে পাঠিয়েছে। বউয়ের সাথে সময় কাটাক একটু। কিন্তু সাগর একটা কথাও বলছে না বড্ড অভিমান হয়েছে তার।

কি হলো কথা বলবেন না

চুপ

রাগ করেছেন বুঝি। আচ্ছা আই এম সরি

চুপ

একটা মানুষকে কিছু বলতে চাইছিলাম না মানে মনের কথা সে যেহেতু কথা বলবেই না তাহলে চলে যাই

রিয়ার কথা শুনে সাগর ফট করে রিয়ার দিকে তাকায়। মুখে হাসি ফুটেছে। অবাক ও হয়েছে রিয়া কে এর আগে এইভাবে কথা বলতে দেখে নি। রিয়াও আজকে বেশ অবাক কাল থেকে ও ঠিক একবছর আগে যেমন স্বাভাবিক ছিলো সারাদিন দুষ্টুমি করতো কাল থেকে তাই করছে।

কি বলবে বলো

আমি এক বছর আগে কারো থেকে কিছু লুকাতাম না। কিন্তু এই এক বছরে অনেক নতুন অভ্যেস হয়েছে কাউকে মনের কথা বলি না। যে আমি একটু ব্যাথা পেলেই বাড়ি মাথায় তুলতাম সে আমি হাজার কষ্টেও এখন কাউকে বলি না। কিন্তু কেমন করে জানি বুঝে যায় ভাইয়ারা আর হৃদি চাইলেও লুকাতে পারি না। কিন্তু এখন যেহেতু স্বামী শাশুড়ি দুজন ই স্পষ্টভাষী তাই ভাবছি আগের ফর্মে ফিরে যাবো

তারপর

ধরেন আমি এখন আগের ফর্মে ফিরে এসেছি তাই বলছি আমি আপনাকে ভালোবাসি, বেশি ভালোবাসি আপনার কথাকে কারণ দেখতে তো পারি না কথার প্রেমেই পড়ে গেছি

সাগর তো অবাক হয়ে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছে। কি বলবে কিছুই বুঝতেছে না। রিয়া দেখতে না পারলেও বেশ বুঝতে পারছে সাগরের মনোভাব তাই মুচকি মুচকি হাসছে। সাগরের যখন বোধ তখন দৌড়ে গিয়ে রিয়াকে জাড়িয়ে ধরলো।

আমি তোমাকে বলে বুঝাতে পারবো রিয়ুপাখি আজকে আমি কত খুশি। আজকে তুমি সারাজীবনের জন্য আমার হয়ে গেলে। আজ থেকে আমিও তুমি নামক অক্সিজেন নিয়ে বাঁচবো। থাকবে তো তুমি নামক অক্সিজেন হয়ে?

থাকবো তো সারাজিবন আপনার হয়েই থাকবো কথা দিলাম। আমিও যে আপনি নামক অক্সিজেনে বাঁচতে চাই

নো আপনি না তুমি

না আমার লজ্জা করে

উমমহু তুমি

আচ্ছা তুমি

দেটস লাইক মাই অক্সিজেন

এইভাবে কিছুক্ষন দুইজনে খুনসুটি করে বের হয়ে আসলো ঘর থেকে। সাগর রা আজকে হৃদিতাদের বাড়িতেই থাকবে।
_______________________

কেটে গেছে বেশ কয়েকটা দিন। সবার জিবন চলছে যার যার মতো। নিয়ম করে প্রত্যেকদিন পড়াশুনা এক্সারসাইজ প্রেকটিস ভালোবাসার মানুষের সাথে সময় কাটানো সব হয়। হৃদিতা বাড়ির ছাদে বসে আছে হৃদান ফোন দিয়ে জানিয়েছে সে আসবে।

হৃদপরী
হুমম

আজকে এখন তোমাকে আমি যে কথা বলবো সে কথা শুনে তুমি এখনি আমাকে চুমু খাবে

মুটেও না একদম লুচুগিরি করবে না

আমি সত্যি বলছি

আচ্ছা বলো কি কথা

তারপর হৃদান যা বললো তাতে হৃদিতা কিছুক্ষনের জন্য থমকে যায়। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে…

চলবে….?

#তুমি_নামক_অক্সিজেন
#পর্ব_১৬
Tahrim Muntahana

হসপিটালের করিডরে চিন্তাযুক্ত মুখে কেউ বসে আছে কেউ পায়চারি করছে। রিয়াকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে প্রায় একঘন্টা আগে। এখন অপরেশন চলছে। ক্রিটিক্যাল অপারেশন। সেদিন হৃদান হৃদিতাকে জানিয়েছিলো রিয়ার জন্য ম্যাচিং হার্ট পাওয়া গেছে। হৃদিতা খুশিতে হৃদানকে সত্যি সত্যিই চুমু দিয়ে বসে। তার কয়েকদিনের মধ্যেই রিয়াকে হাসপিটালাইস করা হয়। দুটো অপারেশন একসাথে। হার্ট ট্রান্সফার আর চোখের অপারেশন। হৃদিতারা ছাড়া কেউ জানে না হার্টের অপারেশনের ব্যাপারে তাই বড়রা বেশী টেনশন করছে না। সাগর একপাশে মাথা নিচু করে বসে আছে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে ছেলেটা ভেতরে ভেতরে গুমডে মরছে। অপারেশন থিয়েটারে যাওয়ার আগে রিয়া সাগরকে বলেছিলো –

আমি চোখ খুলে কিন্তু হৃদিরানী পরশ ভাইয়া, নাশিন ভাইয়া আর তোমাকেই আগে দেখবো প্রিয়

হ্যাঁ দেখবে তো রিয়ুপাখি। আমি আছি তোমার সাথে। কথা দাও সারাজীবন থাকবে

জানিনা ফিরবো কিনা ফিরলে অবশ্যই তোমার সাথে সারাজীবন কাটাবো

এমন করে বলো না রিয়ুপাখি বড্ড ব্যাথা করে বুকে। কিছু হবে না তোমার। আমার কাছে ফিরবে তুমি

তাই যেন হয়

তুমি হয়তো জানো না যে তোমার অসুস্থতার কথা সম্পূর্ণ আমি জানি তাই ভয় হচ্ছে রিয়ুপাখি ছেড়ে যাবে না তো বড্ড বেশী ভালোবাসি

আমিও ভালোবাসি প্রিয়। এবার আসি

আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই রিয়াকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয় তারপর থেকে সাগর থম মেরে বসে আছে। আর দুই ভাইতো সমানে পাইচারি করছে অল্প কিছুক্ষনেই সবার হাল নাজেহাল। রাহি ওরা হৃদিতাকে সামলাচ্ছে। আর পিয়াস সোহান পরশদের। ওদের ও খুব টেনশন হচ্ছে। হৃদান ও আছে হৃদিতার পাশে। একটু একটু পর ফুপিয়ে কেঁদে উঠছে তাই হৃদান ওর পাশ থেকে উঠেনি।
প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা পর ওটির রুমের লাইট নিভে গেল ডাক্তার বের হয়ে আসলো। সবাই ডাক্তার ঘিরে ধরে আছে। তা দেখে ডাক্তার মুচকি হাসলো। ওদের ভালোবাসা আসলেই খুব স্বচ্ছ। একজনের কিছু হলে আরেকজন হৃদয়হীন হয়ে যায়।

অপারেশন সাকসেসফুল। দুটো অপারেশন ই অনেক সুন্দর ভাবে করতে পেরেছি। রিয়া মামুনি ঠিক আছে এখন, জ্ঞান ফিরবে না আজকে। ঘুমের ডোজ দেওয়া হয়েছে। কাল জ্ঞান ফিরলে চোখের ব্যান্ডেজ টাও খুলে দেওয়া হবে

সত্যিই ! -হৃদিতা

হ্যাঁ মামুনি আসলে প্রথমে একটু ভয়েই ছিলাম একটু এদিক সেদিক হলেই বিপদ। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমত আর তোমাদের প্রত্যেকর ভালোবাসার জন্যই অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে। কিন্তু একটা প্রবলেম আছে

কি প্রবলেম আঙ্কেল -পরশ

অপারেশনটা খুব ক্রিটিক্যাল ছিলো ওনাকে অনেকদিন হসপিটালে থাকতে হবে। হাটতে পারবে না ক্ষত থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে। দূর্বলতার পাশাপাশি হার্টের প্রবলেম ও আছে সদ্য অপারেশন হয়েছে ক্ষতটা সারতে দেরী হবে।

কবে বাসায় নিয়ে যেতে পারবো – নাশিন

এত তাড়াতাড়ি না। অপিরেশন টা কিন্তু হার্টের তাই আমার মনে হয়না ছয় মাসে রিকোবার হবে। আর হাটতে যেহেতু পারবে তাই বাসায় নিয়ে রিস্ক নিয়ে লাব নেই। প্রত্যেকদিন চেকাপ মেডিসিন এসব করতেই হবে যতক্ষন না ক্ষত শুকায় আর হাটতে পারে। এখন আসি চিন্তা করো না।

ডাক্তার চলে গেল ওরা সবাই একটা স্বস্থির নিশ্বাস নিলো। নাশিন আর পরশ হসপিটালে থেকে সবাইকে বাসায় পাঠিয়ে দিলো বাসার সবাইকে তো বোঝাতে হবে না জানি কি রিয়েক্ট করে শুনে। বাসার সবাই সব শুনে কিছুক্ষনের জন্য চুপ করে ছিলো কিই বা বলবে ওদের কে টেনশনে না রেখে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা কেমন ম্যানেজ করলো এসব ভেবে কেউ আর কিছু বললো না শুধু আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করলো।
আগের মতোই চলছে সব। রিয়াকে সবাই প্রত্যেকদিন দেখতে আসে। একেক দিন একজন করে ওর সাথে থাকে। অরনী সোহা পিয়ানি সোহান ওরাও যায়নি। আগে থেকেই বাংলাদেশে নিজস্ব বাসা ছিলো আর বাংলাদেশ থেকে যেতে ইচ্ছে করলো না বলে কেউ যায় নি। অগত্যা ওদের বাবা মা রাই সব কিছু হ্যান্ডেল করে বাংলাদেশে চলে আসলো। কেটে গেছে মধ্যে আরো ৫ টা মাস। আর মাত্র দুদিন বাকি কম্পিটিশনের। আগের দিন দৌড় প্রতিযোগিতা পরের দিন বাস্কেটবল। সবাই খুব টেনসনে আছে কি হবে। হৃদান পরশ নাশিন তিনজনে হৃদিতা রাইসা রাহি রোহানি আধির সাহিল ওদের কে খুব সেইফটিতে রেখেছে। যেখানেই যাবে সেখানেই পিছে পিছে গার্ড থাকবে কিন্তু ওরা কেউ জানে না এই বিষয়ে। ওরা খুব করে প্রেকটিস করছে। জিততে তো হবেই। অন্যদিকে হিয়া আর সিয়া দুইজনে মিলে প্রেকটিস করছে। হৃদিতাকে টেক্কা দিতে নিজেও দৌড়ে নাম দিয়েছে হিয়া। আর সিয়া তো বাস্কেটবলে আছেই। হিয়া সিয়া মনে করেছে হিয়ার কথাটা হৃদিতারা কেউ জানে না তাই এসব ভেবে শয়তানি হাসি হাসে। অনত্র হৃদিতা ওদের খবর দেখে আর বাঁকা হাসে।
দুইদিন অনেক কাজের মন্যে দিয়ে গিয়েছে। মাঝখানে হৃদিতারদের উপর একটা এ্যাটাক হয়েছিলো। গার্ডরা কি করবে সবগুলোকে এমন ভাবে মেরেছে গেট গেট করে সব সত্যিই বলে দিয়েছে তা রেকর্ড করে নিয়েছে হৃদান। সিয়া খুব ভয়ে আছে কারণ ও নিজেও জানে হৃদিতার সাথে পারবে না। তাই অন্য প্লেন করেছে হৃদিতাকে থামানোর।

আজকে দৌড় প্রতিযোগিতা। স্পেশাল গেস্ট হিসেবে এসেছে আহনাফ চৌধুরী হৃদয় চৌধুরী রিয়ান চৌধুরী হৃদান চৌধুরী। ওরা এমনিই আসতো কিন্তু ওদের স্পেশাল গেস্ট হিসেবে ইনভাইট করেছে তাই গেস্ট হিসেবেই এসেছে। হৃদিতা ভেতরে গেছে ড্রেস চেন্জ করতে। আগে আগেই গেছে সবকিছু পর্যবেক্ষন করবে পরে। সবাই বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। জার্সি পড়ে নিয়েছে হৃদিতা চুল উপরে খোপা করে কাঠি দিয়ে এমন ভাবে বেঁধেছে যাতে টান দিলেও না খুলে। এমন সময় হৃদান আসলো। হৃদিতা হৃদান কে দেখে মুচকি হেসে নিজের কাজ করতে লাগলো। হৃদান পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। তারপর অনেক কিছু বুঝিয়ে কপালে ভালোবাসার স্পর্শ দিয়ে শুভেচ্ছা জানালো। দূর থেকে এসব দেখে একজন রেগে ফেটে পড়ছে। হৃদান হৃদিতাকে নিয়ে বের হয়ে আসলো। আসার সাথে সাথে রিপোর্টার রা ঘিরে ধরলো হৃদিতা বিরক্তি নিয়ে তাকালো।

এখন না পরে কথা হবে আপনাদের সাথে। আমি একবার যখন বলেছি যে ইন্টারভিউ দিবো তো দিবো তাই অযথা এসব না করে বসে থাকুন আর খেলা দেখুন। বাই

বলেই বেরিয়ে এলো মধ্য থেকে রিপোর্টার রাও চুপ করে বসে রইলো। পিয়ানি সোহা অরনী ওরা সবাই ওদের ফ্যামিলিকে নিয়ে এসেছে। রিয়াও এসেছে আজ। ও এখন হাটা চলা করতে পারে। হৃদিতার পাপা মম মামুনি আলো আনহা রাহি রোহানী রাইসা আধির সাহিল ওদের সবার বাবা মা সবাই এসেছে। খেলার মাঠে সময়ের আগে ঢুকা বারণ কথাটা শুনেই হৃদিতার খটকা লাগলো। তাই ও সব নিষেধ ভেঙে ভেতরে ঢুকে গেল। তা দেখে কয়েকজন এগিয়ে আসলো

হেই আপনি কি করছেন ভেতরে আসলেন কেন খেলার শুরু হওয়ার আগে ভেতরে প্রবেশ নিষেধ। বাইরে যান প্লিজ

আমি জায়গাটা চেইক করবো। তাই চুপ থাকুন না হলে চাকরী থাকবে না আপনার

হোয়াট আপনার সাহস তো কম না আমি ইচ্ছে করলে আপনাকে এখনি খেলা থেকে বাদ দিতে পারি জানেন

হৃদিতার রাগ উঠে গেল। রক্ত লাল চোখে তাকালো লোকটার দিকে লোকটা ভয়ে পিছিয়ে গেল একটুপর নিজেকে স্বাভাবিক করে কিছু বলতে নিবে তার আগেই

আমাকে বার করার কারো সাধ্য নেই। যে সিএমের চামচা গিরি করছেন তাকে পৃথবী থেকে সরিয়ে দিতে আমার একটা ইশারায় যথেষ্ট সেখানে সিএম পদ তো নিছক তুচ্ছ। তাই চুপ থাকুন আমাকে আমার কাজ করতে দিন

লোকটি আর কিছু বলতে পারলো না ভয় পেয়ে গেছে। কিন্তু লোকটি এটাও বুঝলো না যে মেয়েটিকে খেলার স্পটে দেখেই সিএম ভয় পেয়ে গেল কেন আর ওকেই বা তাড়াতাড়ি পাঠালো কেন।

হৃদিতা প্রথমে সবার দৌড়ের লাইন টা চেইক করে নিজের লাইনটার দিকে গেল মধ্যে খানে এসেই কিছু একটা দেখে ভ্রু কুচকে তাকালো। জিনিসটি হাত দিয়ে ধরতেই রাগে মুখমন্ডল প্রচন্ড রকমের লাল হয়ে গেল। হিংস্রতা নিয়েই চিৎকার করেই সিএমকে ডাকলো। কেউ কেউ গল্প করছিলো কেউ কেউ ঘুরে দেখছিল স্পট টা হঠাৎ চিৎকার শুনেই সবাই সেদিকে ভিড় করলো। সাথে হৃদান ওরাও আসলো গিয়ে যা দেখলো তাতে ওরা শকড হয়ে তাকিয়ে রইলো………..

চলবে…?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে