তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_৪

0
1851

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_৪
#মেঘ_বালিকা
.
.
এক ঘন্টা যাবত ড্রইং রুমে বসে আছি…মেজাজ খুবই খারাপ এই মুহুর্তে…পাশে তাসিন বসা..সামনে টিভি চলছে কি ছাতার মাথা দেখছে সরি দেখছে না চালিয়ে বসে আছে…আর আপন মনে ফোন টিপছে…রিমোটটাও ধরতে দিচ্ছে না আমাকে আবার উঠতেও দিচ্ছে না..উঠতে গেলেই হাত টেনে আবার বসিয়ে দিচ্ছে..রাগে আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে…এর কি আমাকে জ্বালানো ছাড়া আর কোনো কাজ নেই…রান্না ঘরেও যেতে পারছি না..শ্বাশুরি মা বারন করে দিয়েছে..শুনেছে আমার শরীর খারাপ তাই রেস্ট নিতে বলেছেন…এখন মনে হচ্ছে আমি সত্যি সত্যিই অসুস্থ হয়ে পরবো…আর বসে থাকা সম্ভব হচ্ছে না…হাতটাও শক্ত করে ধরে রেখেছে..ছুটাতেও পারছি না…এইবার কিছু একটা করতেই হবে..যেই ভাবা সেই কাজ..হাতটা মুখের সামনে এনে দিলাম জোরে সোরে একটা কামড় বসিয়ে…কামড় দিয়ার ফলে তাসিন কিছুটা চিৎকার দিয়ে ওঠে…তাসিনের চিৎকার শুনে রান্না ঘর থেকে আমার শ্বাশুরি মা আর রহিমা খালা দৌড়ে আসে…আর এইদিকে আমি হাত থেকে ছাড়া পেতেই দিলাম এক দৌড়….
.
.
এদিকে তাসিনের মা আর রহিমা খালা এসে তাসিনকে হাজারটা প্রশ্ন শুরু করে দিলো..সে এভাবে কেনো চিৎকার করলো!!কিছু হয়েছে কিনা..পরে গেছে কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি…তাসিন কোনো রকম কথা এড়ানোর জন্য বললো,,,,
-আম্মু তেমন কিছু না..ওই একটা বড় মশা হঠাৎ এমন ভাবে হাতে কামড় দিলো যে না চাইতেই চিৎকার দিয়ে ফেলেছি…
.
-কি বলিস কই দেখি দেখি…(বলে তাসিনের হাত দেখার জন্যে এগিয়ে এলো)
.
-আহ আম্মু তেমন কিছু হয়নি তো তুমি শুধু শুধুই চিন্তা করছো…
এবার রহিমা খালা বলে উঠলো…
-বাপজান হাতটা দেখবার দেও…তেমন কিছু না হইলে তো তুমি এমবায় চিল্লাইতা না…কোনো সাধারন মশা হইলে এমনে কামড়াই তো না..দেখাও হাতে কিছু লাগাই দিই তাইলে পরে আর সমস্যা হইবোন না…
-আহ খালা এইবার তুমিও শুরু করলে…(বেশ বিরক্তে নিয়েই কথা বললো তাসিন)
তারপর আর কাউকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে উপরে চলে গেলো…তাসিনের মা আর রহিমা খালা তার যাওয়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে আবার যার যার কাজে চলে গেলো…
.
.
তাসিন রুমে বসে রাগে ফুসসে…এই মুহুর্তে তনুকে সামনে পেলে সে চিবিয়েও খেয়ে ফেলতে পারবে..
-কতো বড় সাহস আমাকে কামড় দিয়ে পালিয়েছে…পালিয়ে আর কতোক্ষন থাকবে এখানে তো আসতেই হবে ওকে….(রাগে ফুসতে ফুসতে বলে তাসিন)
.
.
তাসিনের বাবার রুমে সামনে দাড়িয়ে আছি মানুষটা সারাদিন বইয়ে মুখ গুজে বসে থাকে…বয়স বাড়ায় তাসিনকে ব্যবসার সকল দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন…এখন তাসিনই ব্যবসার সকল দিক সামলায়…আর তিনি সারাদিন বই নিয়ে পরে থাকেন…বাসায় কে আসলো কে গেলো..কখন কি হলো তার কোনো খোঁজই সে জানে না…বইয়ের মধ্যেই সারাদিন ডুব দিয়ে থাকে…বই-ই এখন তার সব….
.
দরজার সামনে দাড়িয়ে বলে উঠলাম,,,,
-বাবা আসবো!!
আমার কথা শুনে বই থেকে মুখ তুলে আমার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বলে উঠলেন,,,,
-বাবার রুমে আসতে আবার পারমিশন নিতে হয় নাকি রে পাগলি মেয়ে!!!আয় মা ভিতরে আয়…
আমি ভিতরে ঢুকে তার পাশে গিয়ে বসলাম…
-কিরে মা এখানে কেমন লাগছে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো?
-না বাবা আপনাদের মতো বাবা-মা থাকতে আর অসুবিধা কিসের!(মুচকি হেসে)
-যাক মা শান্তি পেলাম চিন্তায় ছিলাম নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারবি কিনা…শোন মা আমাদের কখোনো পর ভাবিস না..নিজের বাবা-মাই মনে করিস..কোনো অসুবিধা হলে তোর এই বাবাকে বলবি বুঝলি!!!
-জ্বী বাবা….
.
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন

অনেকক্ষন যাবত দরজার বাইরে দাড়িয়ে আছি..ভিতরে ঢুকার সাহস পাচ্ছি না…কিন্তু কতোক্ষন বাইরে দাড়িয়ে থাকবো ভিতরে তো ঢুকতেই হবে আর ঢুকার পর আমার সাথে কি হবে ভাবতেই গলা শুকিয়ে যাচ্ছে…তখন কামড় দিয়ে দৌড় দিয়েছিলাম কিন্তু এর ফল কি হতে পারে তা ভাবিনি..রুমের ভিতরও অন্ধকার ভিতরে কেউ আদোও আছে কিনা জানি না..রুমে ঢুকবো কি ঢুকবো না এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎই একজোড়া হাত আমাকে টেনে ভিতরে নিয়ে গেলো আর দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো…আমি ভয়ে আমার চোখ জোড়া বন্ধ করে দিলাম…বেশ বুঝতে বুঝতে পারছি কাজটা কার…ছুটার জন্যে হাজারও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি কিন্তু তার শক্তির কাছে আমি পেরে উঠছি না..ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে কাঠ…হঠাৎই ঠোঁটে কিছু একটার স্পর্শ পেলাম…তারপর আস্তে আস্তে ঠোঁট ছেড়ে গলায়…হঠাৎ গলায় ব্যাথা অনুভব করলাম..শয়তান খাটাস টা খুব জোড়ে আমার গলায় কামড় বসিয়ে দিয়েছে এতোটাই জোড়ে যে আমি ব্যাথায় ‘আহ’ করে শব্দ করে উঠলাম..কিন্তু আর কিছু করতে পারলাম না তার আগেই ও আমার মুখ চেপে ধরে আর আমার কানের কাছে ওর মুখটা এনে বলে,,
-আর কখনো এমন কিছু করার সাহস দেখিয়ো না…তাহলে তার পরিনতি হবে এর থেকেও ভয়ংকর…
ওর কথা বলার সময় ওর গরম নিশ্বাস আমার ঘাড়ের উপর পরছিলো যার ফলে আমি বার বারই কেপে উঠছিলাম..কিন্তু ওর শেষ কথাটা শুনে আমার কাপাকাপি অফ হয়ে গেলো…আমার ছটফটানিও অফ হয়ে গেলো..কথাটা বলে ও আমাকে ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে গেলো…আর আমি বোকার মতো দাড়িয়ে রইলাম…
.
.
আয়নার সামনে দাড়িয়ে কামড়ের জায়গাটা দেখছি..ইশশ একদম রক্ত জমাট বেধে গেছে..রাক্ষস একটা…এই মুহুর্তে আমার খুব কান্না পাচ্ছে…কেউ যদি এটা দেখে কী ভাববে…লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে…আগের ৫টা বিয়ে না ভেঙ্গে যদি তার মধ্যে থেকে একটারে বিয়ে করে নিতাম তাহলে হয়তো এখন সুখে সংসার করতাম..আমার কপালটাই খারাপ…হঠাৎই ফোনটা বেজে উঠলো..ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি আম্মু ফোন করেছে..তারপর ফোনটা রিসিভ করে কিছুক্ষন আম্মুর সাথে কথা বলে ফোনটা রেখে ব্যালকনির দিকে পা বাড়ালাম..ব্যালকনিটা খুব সুন্দর একদম আমার মনের মতো…পাশে একটা দোলনাও আছে..তারপর দোলনায় বসে চারপাশের পরিবেশটা উপভোগ করতে লাগলাম..এতোক্ষন মন খারাপ থাকলেও আম্মুর সাথে কথা বলে এখন মনটা একদম ফ্রেশ লাগছে…চোখটা বন্ধ করে দোলনায় গা এলিয়ে দিলাম…
.
.
.
.
চলবে……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে